কলেজের বড় আপু
1⃣st
Sûmøñ Ãl-Fãrâbî
.
আগামী কাল আমার জীবনে প্রথম কলেজে যাবো। ভাবতেই কেমন জানি নিজেকে বড় বড় লাগছে। স্কুল জীবনে কতো স্বপ্ন দেখছি এই কলেজেকে নিয়ে। কলেজে পড়বো। পড়ালেখার থেকে আড্ডাবাজি বেশি করবো । সেই সব স্বপ্নগুলো আমার পূরণ হতে যাচ্ছে।।।
তাড়াতাড়ি করে ঘুমিয়ে যাই নয়তো দেরি হয়ে যাবে কলেজে যেতে। আমি তো আবার ঘুম কুমার।
পরের দিন সকালবেলা
– সুমন এই সুমন
– আম্মু যাও তো বিরক্ত করো না। কলেজকে নিয়ে সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছি।
– কলেজকে নিয়ে শুধু স্বপ্নই দেখ। কলেজ আর যাওয়া লাগবে না।
– কি বলো এসব?
– তোর কলেজ কয়টায়??
– নয়টায়।
– ওহহ। তাহলে তোরে একটুপরে ডাকি।
– সময় মেইনটেইন করতে শিখো। অসময়ে শুধু ডাকাডাকি করো
– হুম তাই তো। এখন ৮:৩০ বাজে যখন ৯ টা বাজবে তখন তোকে ডাকবো।
– কি বলো এসব আগে ডাকবে না?
– কি করে ডাকবো ৭:৩০ থেকে শুনছি তুই কলেজ কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিস । কিন্তু এদিকে যে কলেজ যেতে হবে সেটা তো ভুলে গেছিস। তো কি স্বপ্ন দেখলি ? কলেজে খুব ভালো করে মন দিয়ে পড়বি এটাই তো?
– আরে ওসব কিছু না। বন্ধুদের সাথে কিভাবে আড্ডা দিবো সেটা।।।
– তবে রে হারামজাদা। আগে যদি জানতাম যে তুই এই স্বপ্ন দেখিস তবে তোরে ঝাড়ু দিয়ে তুলতাম।
– কপাল ভালো যে তুমি জানো না। এখন সরো কলেজ যাবো।।।
তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে কলেজে যাওয়ার সময়
– আম্মু কই তুমি?
– কি হইছে
– দোয়া করো আজ প্রথম কলেজে যাচ্ছে তোমার ছেলে।
– যা বাবা। ভালো করে লেখাপড়া করিস।
– এই দোয়া তো সারাজীবন করে এলে। একটু অন্য রকম দোয়া করতে পারো না
– মানে? কি রকম?
– এই যেমন ধরো যা বাবা যা দোয়া করছি কলেজে গিয়ে যেন তোর gf এর অভাব না হয়।
– ওহহ। তুই দারা আমি ঝাড়ুটা নিয়ে আসছি।
– কেন আম্মু ঝাড়ু কেন?
– দোয়ারা স্পেশাল তো তাই স্পেশাল ভাবে করতে হবে।
– না থাক লাগবে না। অন্য দিন দিও। এখন গেলাম
তাড়াতাড়ি করে কলেজে গেলাম। আজ প্রথম দিনেই লেট। না জানি স্যার কেমন হবে আর কিভাবে রিয়েক্ট করবে? দৌড়ে কলেজে গেট দিয়ে ঢুকে একটু সামনে আগাতেই থমকে গেলাম। এতো বড় কলেজে আমার রুম কোনটা কিভাবে বুঝবো? আশে পাশে তো কেউ নেই কাকে বলবো?
কিছু দূরে কয়েকজন মেয়ে বসে আছে। তাদের কাছে গেলাম
– এই যে আপু শুনছেন
– কে রে?
– আপু আমি
– তা তো দেখতেই পাচ্ছি তুই মি. ক্যাবলা কান্ত। বল কি বলবি?
– আপু আমি ইন্টার ১ম বর্ষ তো আমায় একটু বিজ্ঞান বিভাগটা দেখিয়ে দিবেন?
– দিবো। তবে এর আগে তোকে একটা কাজ করতে হবে?
– কি কাজ?
– ঐ মেয়েটাকে গিয়ে বলবি তুই ওকে ভালোবাসিস?
– কিন্তু আপু কেন?
– যদি তুই বলিস তবে তোকে দেখিয়ে দিবো
– কিন্তু আপু আমার তো ক্লাস শুরু হয়ে গেছে
– সমস্যা নেই। স্যার তোরে কিছুই বলবে না। তুই যা গিয়ে বলে আয়।
– আমি পারবো না আপু।
– কেন রে তুই ছেলে না।
– হুম। তাহলে পারবি না কেন??
– আগে কাউকে বলিনি।
– এবার বলবি।
– আমি পারবো না আপু।
– তুই যদি না বলিস তবে তোকে কান ধরে দাড় করিয়ে রাখবো
– কেন আপু?
– কারণ তুই সিনিয়রআপুরসাথে বেয়াদবী করছিস।
– কখন
– কানে ধর
– এই না আপু আমি যাচ্ছি।
আল্লাহ রক্ষা করো। জীবনে প্রথম বার যাচ্ছি কাউকে কিছু বলতে। খুব টেনশন হচ্ছে কপালটাও ঘামছে। কিছু করার নাই
ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম।
– এই যে আপু শুনছেন
– হ্যা বলুন।
– কিভাবে যে বলবো?
– কি কিভাবে বলবেন?
– আসলে
– আসলে কি
– আমি
– আমি কি?
– আমি আপনাকে
– আমাকে কি
– আমি আপনাকে
– তারপর কি সেটা বলবেন তো
– আমি আপনাকে ভালোবাসি।
– ঠাসসসসসস
(মারলো নাকি? হ্যা তাই তো )
– মারলেন কেন?
– তোর সাহস হয় কি করে তুই আমায় প্রোপজাল দিস।
– সরি।
– এখন এখানথেকে ভাগ।
গালে হাত দিয়ে চলে আসলাম।
– কি রে বলছিস?
– হ্যা।
– কি বললো?
– কিছুনা।
– তাই।
– আপু আমার রুমটা
– তিন তলায় উঠে সোজা কর্নার.
আমি চলে আসছি এমন সময় আবার পিছনে থেকে ডাকলো
– এই শোন
– হ্যা আপু
– স্যার যদি কিছু বলে তবে বলিস নীলাদ্রি আপুর সাথে ছিলাম।
– আচ্ছা।
গালে হাত দিয়ে দৌড়ে তিন তলায় উঠলাম।
– স্যার আসবো
– কে তুমি?
– স্যার আমি ইন্টার ১ম বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
– ওহ। আসো।
– ধন্যবাদ স্যার।
– এই শোনো
– হ্যা স্যার
– একটু ঐ দিকে ঘোড়ো তো
– আচ্ছা স্যার
– তোমার গালে এসব কিসের দাগ?
– ও তেমন কিছু না স্যার।
– ওহহ। প্রথম দিনেই কেউ লেট করে
– আসলে স্যার নীলাদ্রি আপুর সাথে ছিলাম তো তাই
– ওহহ আচ্ছা। এখন বুঝলাম গালের দাগগুলো কিসের। ওকে তুমি বসো।
– ওকে স্যার।
– তবে ওদের পাল্লায় আর পড়ো না।
– ওকে স্যার।।।
পুরো ক্লাসের সবাই এমন করে তাকিয়ে আছে যেন আমি চিড়িয়াখানা থেকে পালিয়ে আসা হনুমান।
.
.
.
.
.
.
To be continue