কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব : ১৩+১৪
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
– এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে ❓
– তাইলে কি আরো শক্ত করে ধরব।
– তুমি সব কিছু নিয়েই এতো মজা করো কেন ❓
– কারণ মজা করতে আমার ভাল লাগে।
– বাদ দাও তো এসব এখন একটু ভাল করে জড়িয়ে ধরতে দাও।
– তুমি তাড়াতাড়ি ছাড়ো তো কাজ আছে অনেক । তাছাড়া যে কেউ দেখে ফেলতে পারে যে কোন সময় ।
– কেউ দেখবে না গো কারণ সবাই ঘুমাচ্ছে এখন।
– বাবু রে ❓
– হুমম বাবু।
– একটা কথা বলি ❓
– হুমম বলো।
– আমার না খুব মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করছে ❓
– দেখ ফ্রিজে মিষ্টি আছে খেয়ে নাও।
– আমি ফ্রিজের মিষ্টি খাব না।
– তাইলে কিসের মিষ্টি ❓
– আমি তোমার মিষ্টি খাব। ( কিছুটা হাসি কন্ঠে)
– আমি মিষ্টি কোথায় পাব ❓( অজানা এক মনোভাব নিয়ে)
– ফাজলামি বাদ দাও। আমাকে মিষ্টি দিতেই হবে।
– না পারব না।
– মিষ্টি না দিলে আর কথা নেই যাও। ( ডানাকে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা সরে গেলাম )
– আচ্ছা।
– কি আচ্ছা ❓
– আমি কথা না বললে থাকতে পারবে ❓
– হুমম পারব।
– কতদিন পারবে ❓
– ২দিন।
– ২ দিন কেন ❓আমি যদি আর কখনও কথা না বলি ❓
– আমার কারো উপর রাগ বা অভিমান হলে তার সাথে ২ দিন কথা না বলে থাকতে পারি। কিন্তু ২ দিনের বেশি পারি না। কিন্তু তোমার সাথে এক সেকেন্ড কথা না বললে দম বন্ধ হয়ে আসে।
– তাইলে যে বললে ২ দিন কথা না বলে থাকতে পারব।
– তোমার সাথে ২ দিন কথা না বলে বেঁচে থাকতে পারব কিন্তু ২ দিনের বেশি হলে মারা যাব।
– এই অল্পতেই এতো ভালবাসা ❓
– কাউকে চিনতে বা বুঝতে বেশি সময় লাগে না। তাঁর সাথে সামান্য গভীরভাবে সময় কাটালেই বুঝা যায় মানুষটা কেমন।
– তো আমাকে কেমন মনে হয় ❓
– তোমার মতো এতো পাষাণ রিদয়ের মানুষ হয় না।
– তাইলে আমার রিদয় পাষাণ ❓( অবাক হয়ে)
– হুমম।
– কিভাবে ❓
– আমাকে একটুও সময় দাও না। সব সময় অফিস আর কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকো।
– তাইলে এই ব্যাপার ❓ ( আবার শক্ত করে পিছন জড়িয়ে ধরে)
– জান একটা গুড নিউজ আছে ❓( ডানার বাম কাঁধে মুখ রেখে )
– কি নিউজ জান ❓
– তোমার আমাদের ভার্সিটিতে চান্স হয়ে গিয়েছে।
– সত্যিই ❓( পিছন ফিরে খুশির দৃষ্টিতে)
– হুমম।
– কোন সাবজেক্ট ❓
– বাংলা।
( বাংলা বলার ফলে যেন ডানা ডাবল খুশি হয়ে গেল। খুশির ঠেলায় জড়িয়ে ধরে তাঁর ঠোঁটেয় ছোয়া জড়িয়ে আমার ঠোঁট। )
– তুমি আমাকে আগে কেন জানালে না বিষয়টা ❓( কোমড়ে হাত রেখে রাগে লুকে)
– আরে বাবু আমি মাত্র জানতে পারলাম। মাত্র ফোনে এসএমএস আসল।
হঠাৎ করে জান্নাতের হাসি মাখা এই মুখখানি হঠাৎ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল।
– এই বাবু কি হয়েছে ❓
– আজকে যদি আম্মু বেঁচে থাকত তাইলে কতো না খুশি হতো।
– আরে বাবু তুমি এখন মন খারাপ করলে কি আম্মু ফিরে আসবে।
তুমি কান্নাকাটি না করার চেয়ে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো আল্লাহ যেন আম্মুকে জান্নাত বাসি করে।
– হুমম বাবু। কেন যে তাঁরা আর ফিরে আসে না ❓
– এটাই বিধাতার নিয়ম। সবাইকে মেনে নিতেই হবে।
– হুমম।
– একটু জড়িয়ে ধরো মন ভাল হয়ে যাবে।
।।
– গুড মর্নিং আম্মু ❓
– মর্নিং বাবা।
– আমার মামুনি টা কখন ঘুম থেকে উঠবে ❓
– এই তো বাবা একটু পড়েই।
– ঘুম কেমন হলো আমার আম্মুর ❓
– ভাল না!!!!!!
– কেন আম্মু ❓
– তাঁরপর জান্নাত রাতের সব কথা তুলে ধরল তাঁর বাবা কাছে।
– আমি এই বিষয়টা নিয়ে রেজনের বাবার সাথে কথা বলব।
– ওকে বাবা।
– তুমি থাকো তোমার জন্যে কপি করে নিয়ে আসি।
– ওকে বাবা থ্যাংকস।
।।
– তুমি জড়িয়ে ধরো ❓
– না পারব না।
– তাহলেআর কিন্তু কোন দিন কথা বলব না।
বলে চলে আসব তাঁর আগেই ডানা পিছন থেকে……………..
।
চলবে
।
কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব : ১৪
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
– তুমি জড়িয়ে ধরো ❓
– না পারব না।
– তাহলেআর কিন্তু কোন দিন কথা বলব না।
বলে চলে আসব তাঁর আগেই ডানা পিছন থেকে হাত ধরে একটানে বুকে জড়িয়ে নিল।
– এই ছাড়ো তো ভাল লাগছে না ( একটু আদর বেশি পাওয়ার আশায়)
– একটা মিষ্টি দেয় ❓
– না পেট ভরে গেছে মিষ্টি লাগবে না আমার। ( অভিনয় করার চেষ্টা)
– লিপে দেবো কেমন ❓
– আমার লিপে খুব ব্যাথা অনুভব করছি জান্নাত আজকে রাতে স্বপ্ন মিষ্টি দিয়ে গেছে। ( রাগান্বিত করার চেষ্টা। ডানা রাগলে কেমন যে ভাল লাগে সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। )
– কিহহহহহ কে কিস করছে ❓( রাগী কন্ঠে)
– জান্নাত।
– জান্নাত কোথায় কিস করছে ❓
– লিপ ।
– দাঁড়া তোর দুটি ঠোঁটই কেটে নিব। (ডান হাতে চাকু আর বাম হাত দিয়ে ঠোঁট ধরে আছে)
– আমার লিপ কেটে নিলে তুমি কোথায় কিস করবে ❓( কোন মতো সামান্য ছাড়িয়ে নিয়ে)
– আমার কিস করা লাগবে না। তোকে কেন জান্নাত এই ঠোঁটে কিস করবে আমি এই ঠোঁট কেটে নিব।এই ঠোঁটের অধিকার শুধু আমার ।
– আমার কি দোষ জান্নাত হঠাৎ স্বপ্নে এসে কিস করে চলে গেল।
– তুমি ঠোঁট কাটলে জান্নাতের ঠোঁট কেটে নিয়ে আসো। জান্নাত কেন কিস করবে বলো ❓( বাঁচার উপায় খুঁজতেছি)
– আগে তোর ঠোঁট কাটব তাঁরপর ওই হারামজাতি জান্নাতের।
– তোর
ঠোঁটে শুধু কিস করার অধিকার আমার আছে অন্য কারো নেই বুঝলি। অন্য কেউ এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করলে তাকে খুন করে ফেলব।) ( ঠোঁটে হালকা কিস করে)
– কিন্তু জান্নাত তো প্রায় প্রায়ই কিস করে ( একটু বেশি রাগ চড়িয়ে দেওয়ার জন্যে)
– আমি যে কি করব কিছুই মাথায় আসতেছে না ❓ ( কলার ধরে রেগে লাল মরিচের বর্ন ধারণ করেছে ডানার মুখ)
– আরে কষ্ট হচ্ছে তো।
– হলে হোক তাতে আমার কি ❓
– আমার কষ্ট হলে তোমার খারাপ লাগবে না। ( কিছু অভিমান করে)
– হুমম লাগবে তো।
– আমার খুব কষ্ট হচ্ছে গো। কলার ছাড়ো।
– তুই বল আর এই হারামজাদি জান্নাতের কথা আমার কাছে বলবি না ।
– ওকে জান বলব না।
– আচ্ছা জানু।
– হুমম।
– অফিসে কি যাব ❓
– জানিনা।
– তুমি বলো।
– যাও।
– তুমি বলছো।
– তুমি যদি অফিসে না যাও তাইলে ও ভাববে তুমি ভীতু। তুমি হয়তো ভয়ে অফিসে আসো নাই এটা ভাবতে পারে। তুমি ওর থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলবে।
– হুমম জান।
– আজকের তো আমার চা দিলে না।
– তোমার চা বানানোর জন্যেই এতো সকালে রান্নাঘরে এসেছি।
– কখন পাব আমার জানের হাতের চা।
– তুমি রুমে যাও আমি চা নিয়ে আসতেছি।
– ওকে জান। (গালে একটা কিস করে দৌড়ে চলে আসলাম)
আপনার ভাবছেন দৌড়ে কেন চলে আসলাম কারণ কিস দেওয়া সময় সামান্য কামড় দিয়েছি।
।।
।।
।।
কতক্ষণ পড়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হতে প্রস্তুতি নেওয়া সব শেষ।
বাসা থেকে বের হবে তাঁর আগে ডানা সামনে এসে হাজির।
– আমার চাওয়া পাওয়ার কি তোমার কাছে কোন দাম নেই ❓
– কি সব বাজে কথা বলছো। তুমি আমার সব। আর তুমি বলছো তোমার চাওয়া পাওয়ার দাম নেই আমার কাছে।
– আমার চাওয়া পাওয়ার তোমার কাছে মূল্য থাকলে এভাবে আমার ইচ্ছা না পূরণ করে চলে যেতে না।
– কি ইচ্ছা যেন ❓
– এটাও ভুলে গেছো।
– স্যরি জান আমার কাছে থেকে তোমার সামান্য চাওয়া পাওয়ার মধ্যে ছিল যে আমি যখন অফিসে যাব তখন রোজ একটা করে পাপ্পু দিয়ে যাব।
– তাইলে পাপ্পু না দিয়ে চলে যাচ্ছো কেন ❓
– স্যরি জান। প্লিজ ক্ষমা করে দাও।
– ক্ষমা করে দিতে পারি একটা শর্তে ❓
– কি শর্ত জান ❓
– কাজ ঠিক ঠাক মতো করা লাগবে।
– আমার কাযে কোন প্রকার ভুল ত্রুটি হলে দরকার পড়লে আবার করব।
– সুযোগ মানুষের জীবনে একবারই আসে। সেই সুযোগ টা সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপে কাজে লাগাতে হয়।
– ওকে কাছে আসো কাজ শুরু করি।
।।
অন্যদিকে জান্নাত অফিসে গিয়ে ।
– ম্যানেজার সাহেব ❓
– জ্বী স্যার।
– আপনাদের রেজন স্যারকে দেখছি না।
– স্যার তো এখনও অফিসে আসে নি।
– রেজন সাহেব কে ফোন দিয়েছিলেন। কোন সমস্যা হলো না তো আবার।
– স্যার এখন কি ফোন দিব ❓
– না।
– ওকে স্যার।
– আপনি এখন আসতে পারেন।
– ওকে স্যার।
– ম্যানেজার সাহেব ❓( পিছন থেকে)
– হুমম স্যার।
– আমার জন্যে এক কাপ ঠান্ডা কপি নিয়ে আসুন।
– ঠিক আছে।
।।
– এই কামড় দিবে না কিন্তু।
– ওকে দিব না।
ডানাকে সামান্য হাত ধরে টান দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলাম ।
ডানার ঠোঁটের দিকে আমার ঠোঁট অগ্রসর করছি ডানাও তাঁর ঠোঁট আমার দিকে অগ্রসর করছে।
দুজনেরই নিশ্বাস ভারী হয়ে যাচ্ছে। একজনের নিশ্বাস অন্যজন নিরব ভঙ্গিতে অনুভব করতে পারছি।
এক সময় দুই জোড়া ঠোঁট মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল।
এক পর্যায়ে প্রায় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ ছেড়ে দিতে নারাজ।
হঠাৎ কারো কন্ঠে কিছু কথা শুনতে পেলাম।
– অফিসে লেট হয়ে যাচ্ছে।…………………..
।
চলবে
।