কালোরাত পর্ব ৩

#কালোরাত
(৩য় র্পব )
লেখকঃ নিঝুম জুনায়েদ

… অমানুষ টা আবার কালকে রাতের মতো শুরু করেছে । আমাকে একটা হাইনার মতো ছিড়ে খাচ্ছে অমানুষ টা । আর আমি কান্না করতে করতে অনেক বলছি আমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু অমানুষ টা কিছুতেই শুনছে না ।

যখন আমি আমি অমানুষ টার কাছে থেকে ছাড়া পেলাম । আর হাতের কাছে একটা বড় কি যেনো লোহার কি ছিলো তাই দিয়ে বাড়ি মেরেছি ।
আর তখন অমানুষ টা ধপাস করে নিছে পড়ে যায় ।

এটা দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম ………


যখন অমানুষ টা নিছে পড়ে গেলো আমি অনেক ভয় পেলাম আর সাথে সাথে উনাকে বিছানায় তুললাম কিন্তু তার কোনো সেন্স নাই । এখন কি করি কি করি ভাবতেছি । এতো রাতে ত ডাক্তারও নাই আর রুমে মনে হয় মেডিসনও নাই ।
কিছু না ভেবে অমানুষ টার মুখে মুখ ভরে শ্বাস দিতে ছিলাম কিন্তু কিছুক্ষন পরে দেখি অমানুষ টা আবার জেগে উঠেছে আর আমাকে আবার ঝাপটে ধরেছে ।
আবার আগের মতো শুরু করেছে ।
আমাকে একদম ছিড়ে খাচ্ছে । মনে হচ্ছে বনের কোনো হাইনা একটা হরিন কে ছিড়ে ফুড়ে খাচ্ছে ।
ও যখন আমায় ছেড়ে দিলো আমি তখন বসে বসে কান্না করতেছি ।

একটা মানুষ কিভাবে এতো খারাপ হতে পারে । আমি তো তার স্ত্রী আমার সাথে যদি ভালো ব্যবহার করে তাহলে এমন জোর করা লাগে । একটু ভালোবাসলেই বা কি হয় ।

কিছুক্ষন পর

জুনায়েদঃ তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না ( পাগলামু ভাব নিয়ে _)
ফারজানাঃ ……( কান্না করেই যাচ্ছি )
জুনায়েদঃ ও ফারু কথা বলো না কেনো
ফারজানাঃ কি নামে ডাকলেন ( অবাক হয়ে তাকিয়ে )
জুনায়েদঃ কিছুনা ফারজানা বললাম ( থতমতো খেয়ে )
ফারজানাঃ নাহ আপনি অন্য নাম বলেছেন ( কান্না করেই যাচ্ছে )
জুনায়েদঃ নাহ ফারজানাই বলেছি তো
ফারজানাঃ মিথ্যা কথা কেনো বলছেন ?
জুয়ানায়েদঃ মিথ্যা কথা বলছিনা । একটু এই দিকে এগিয়ে আসো ত ।
ফারজানাঃ নাহ আমি যাবোনা ।
জুনায়েদঃ প্লিজ ফারজানা তোমার কিছু করব না ।
ফারজানাঃ তাহলে ডাকছেন কেনো ?

জুনায়েদঃ আমি একটা উপহার দিতে চাই ।
ফারজানাঃ কি উপহার ?
জুনায়েদঃ এই যে এই শাড়িটা ( হাতে একটা নীল শাড়ি দেখিয়ে )
ফারজানাঃ এটা কেমন চেনা চেনা লাগছে ।
জুনায়েদঃ ধুর চেনা লাগবে কেনো এটা ত আমি আজকে কিনে এনেছি ।
ফারজানাঃ নাহ এই শাড়ি ট আ আমি অনেক বছর আগে দেখেছি সেম এমনি হবে ।
জুনায়েদঃ ওহ আরে এমন শাড়ি তো অনেক থাকে তাই না ।
ফারজানাঃ হুম ।
জুনায়েদঃ এবার তো নিবে ।
ফারজানাঃ হুম দেন ।
জুনায়েদঃ আমার কাছে এসো আমি তোমাকে শাড়ি পরিয়ে দিবো ।
ফারজানাঃ নাহ আমি যাবোনা ।
জুনায়েদঃ আমার রাগ হয়ে যাবে কিন্তু ( চিল্লাইয়ে )
ফারজানাঃ আচ্ছা আসছি ( ভয়ে ভয়ে )

অমানুষ টা এখন আমায় শাড়িয়ে পরিয়ে দিচ্ছে আর আমি ভাবছি এই শাড়ি টা আমি কোথায় যেনো দেখেছি অনেক আগে । আর ফারু নামে ডাকলো না আমার শুনতে ভুল হয়েছে । অমানুষ টা কি সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছে মনেই হচ্ছেনা এই মানুষ টা কিছুক্ষন আগের আমার ওপর অত্যাচার করতে ছিলো । শাড়ি পরানো শেষে আমার কপালে চুম্মু দিয়ে বললো ।

জুনায়েদঃ হুম আমার নীল পরী কে সাজানো হয়ে গেছে ।
ফারজানাঃ মানে ?
জুনায়েদঃ কিছু না । এখন ঘুমাও ।

আমি অমানুষ টার কথা মত ঘুমাতে গেলাম কিন্তু ঘুমানার সময় আবার অমানুষ টা বললো তার বুকে মাথা রেখে নাকি ঘুমাতে হবে ।
ভয়ে ভয়ে অমানুষ টার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেলাম । না জানি আবার কি করে ।
… আমি এখনো অমানুষ টার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছি ভোর হয়ে গেছে । অমানুষ উঠে যাওয়ার আগে আমাকে আস্তে আস্তে তার বুকে থেকে নামিয়ে আমার কপালের চুল সরিয়ে ভালোবাসার পরশ একে চলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ।

আমি কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা যে মানুষ টা ভালোবাসতে পারে আবার রাত আসলে সেই মানুষ টা একটা হিংস্র হাইনা হয়ে যাচ্ছে ।


ফ্রেশ হয়ে নিছে গেলাম দেখি সবাই বসে আছে আমার জন্য ।


আমি যেই খাবার মুখে তুলতে গেছি তখনি দেখি অমানুষ টা আমার দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে ।
ভয়ে হাত থেকে ভাত পড়ে গেলো । …

ফারজানাঃ ভুল হয়ে গেছে মাফ করে দেন আমার না মনে ছিলোনা ।
জুনায়েদঃ ঠিক আছে । হা করো ।
তুবা রুবাঃ ভাইয়া আজকে ভাবি আমাদের খাইয়ে দিক না আম্মু তো এখনো আসেনি ( দুই ননদ এক সাথে )
জুনায়েদঃ আম্মু কোথায় গিয়েছে ( চিল্লাইয়ে )
তুবাঃ আম্মু কালকে খালার বাসায় গেছে এখনো আসেনি ।
জুনায়েদঃ ফারজানা ওদের তুমি খাইয়ে দাও আমি গেলাম রেডি হতে আর তুমিও রেডি হও আজকে তুবা রুবা আর আমরা বাইরে ঘুরতে যাবো ।

এই কথা শুনে আমার মন টা নেচে উঠলো । যেই অমানুষ টা ওপরে চলে গেছে আমি তখনি নাচতে শুরু করেছি আমার নাচ দেখে রুবা বলে উঠে ……

রুবাঃ ভাবি তুমি এভাবে নাচতেছো কেনো ?
ফারজানাঃ হিহি আমার কিউট আপু তুমি কিছু বুঝবানা ।
রুবাঃ আমাদের খাইয়ে দিবা না ?
ফারজানাঃ হুম দিবো তো ।
তুবাঃ ভাবি আমার না খুব খিদে লাগছে মনে হচ্ছে পেটে ইন্দুর ঢুকেছে । ( ফিক করে হেসে দিয়েছে )
ফারজানাঃ ওরে আমার কিউট সুইট দুটা বোন উম্মাম্মাহহহহ ।
… ওদের খাইয়ে দিয়ে ঘুরতে গেলাম অনেক মজা করেছি । অমানুষ টা কিছুই বলেনি যা যা আব্দার করেছি সব পূরণ করেছে । …
কিন্তু যখনি রাতের কথা মনে পড়ছে মন টা খারাপ হয়ে যাচ্ছে । …

বিছানায় বসে আছি কারন একটু পরেই অমানুষ টা আমার ওপর ঝাপিয়ে পড়বে ।
হুম অমানুষ টা আসছে কিন্তু আজকে হাতে একটা ধারালো ছুরি নিয়ে ঢুকছে ।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম অমানুষ টা কি আমায় মেরে ফেলবে । …

কিছুক্ষন পরে কালকের মতো সিগারেটের আগুনের ছাপ দিতে লাগলো আজকে অনেকক্ষণ ধরে এমন করলো ।
অমানুষ এটা লেখেছে JUNA । মনে হয় ওর নাম লেখবে আবার কত না জানি এমন করবে ভাবতেই কেমন জানি লাগছে । এমন করার পর আগের মতোই পোড়া জাগায় মলম লাগিয়ে দিলো ।

এমন অবস্থায় অমানুষ টা আমায় একটু ছাড়লো না । আমার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো ।

……
কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে আলমারি থেকে একটা কালো শাড়ি বের করে বলে ফ্রেশ হয়ে এটা পরে নিতে ছাঁদে যেতে হবে ।

ফ্রেশ হতে গেলাম না জানি অমানুষ টা আবার কি করে বসে ।
… ফ্রেশ হয়ে আসলাম তখনি অমানুষ টা আমাকে এক টানে তার বুকে নিয়ে চার ঠোট এক জাগায় করে দেই আর আমার চোখ বেধে ফেলে ।
এখন আমার খুব ভয় করছে অমানুষ টা কি আমাকে ছাঁদে থেকে ফেলে দিবে ।

আমাকে ধরে ছাঁদে নিয়ে গেলো । যখন ছাঁদে পোছালাম তখন মনে হচ্ছে আমার পাশে অনেক মানুষ কথা বলছে আর যেই আমার চোখের বাধন খুলে দিয়েছে তখনি শুভ জন্ম দিন কথা টা অনেক জনের মুখে থেকে ভেসে আসছে । হ্যা আমার পাশে অনেক মানুষ আমার মা বাবাও তাদের মধ্যে । আজকে ২২ই জুন আমার জন্ম দিন ছিলো আর আমারই মনে নাই আর এই অমানুষ টা কিভাবে জানলো ।

কেক কাটা হলো সবার আগে আমি এই অমানুষ টার মুখেই কেক খাইয়ে দিলাম কারন আমি যে অমানুষ টার প্রেমে পড়ে গিয়েছি । অমানুষ টা যখন আমাকে কেক খাইয়ে দিলো সবার সামনে আমি ওকে জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলাম । আর তখনি সবাই হাত তালি দিতে লাগলো ।

আজকের মতো এতো খুশি আমি কোনো দিন হয় নাই ।
অমানুষ টা প্রতি রাতে যতো কষ্ট দিয়েছে এখন কিছুই মনে হচ্ছে না ।


সবাই চলে গেলো কিন্তু তুবা আর রুবা এক পাশে বসে আছে । তাই দেখে আমরা দুজনি ওদের কাছে চলে গেলাম ।

জুনায়েদঃ কিরে তোরা এখনো এখানে বসে আছিস যে ?
তুবাঃ এমনি বসে আছি তোমার কি ?
জুনায়েদঃ মুখে মুখে কথা বলা কই থেকে শিখলি ?
রুবাঃ কবু না আমরা ।
জুনায়েদঃ যা নিচে যা ( চোখ রাঙ্গিয়ে)
তুবা রুবাঃ তোমার চোখ রাঙ্গানো দেখে আর আমরা ভয় পাইনা ।
…… তুবা আর রুবার কথা শুনে ফিক করে হেসে দিয়েছি আর অমনি অমানুষ টা আমার দিকে অবুলার মতো তাকিয়ে আছে । …

ফারজানাঃ আচ্ছা আপু তোমরা ঘুমাবে না এখনো জেগে আছো যে ।
তুবাঃ তোমাকে একটা জিনিস দেওয়ার জন্য বসে আছি ।
ফারজানাঃ কি দাও তাহলে ।
তুবাঃ তাহলে বলো ভাইয়া কে দেখাবানা ।
জুনায়েদঃ ঐ দেখাবেনা ।
রুবাঃ তুমি আমাদের মধ্যে কেনো কথা বলছো হু ।
ফারজানাঃ আপনি একটু চুপ করেন ।
জুনায়েদঃ হুম ( রেগে গিয়ে )
ফারজানাঃ এবার দাও আমি তোমার ভাইয়া কে দেখাবোনা ।
রুবাঃ সত্যি ?
ফারজানাঃ হুম সত্যি ।
তুবাঃ এই যে এটা ভাইয়াকে দেখাবানা কিন্তু ।
ফারজানাঃ হুম এবার তোমরা নিচে চলে যাও ।
তুবা রুবাঃ বাই বাই ভাবি ।
ফারজানাঃ বাই ।

ওরা চলে যাওয়ার পরে অনেকক্ষণ ছিলাম ছাঁদে ।

রুমে আসলাম এসেই অমানুষ টা ধুপ করে বিছানায় শুয়ে পড়েছে আমি তার পা টা ঠিক করে দিলাম । একটু পরে আমিও ওর বুকের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম ।
… সকালে ফ্রেশ হয়ে উনি অফিসে চলে গেলেন আর আমি রুমে একা একা বসে আছি আর তখন তুবা রুবার উপহারের কথা মনে পড়ে গেলো ।

প্রথমে ওপরে খাপ খসিয়ে দেখলাম একটা ডাইরি আর ওপরে লেখা আছে বড় অক্ষরে জুনায়েদ ।
আর
আমি যেই পৃষ্টা উল্টিয়েছি তখন অবাক হয়ে গেছি কারন প্রথম পৃষ্টায় আমার ৮ বছর আগের একটা ছবি বাধানো আর পাশে যেই চোখ পড়েছে আরো অবাক হয়ে গেছি ……
……
……
…… চলবে ……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here