#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব -৭
আবারও অ-স্থির লাগছে ভেতরে ভেতরে উ-ত্তে-জনা কাবু করছে মৈত্রীকে। সে তার পুরনো পন্থা আবারও বিড়বিড় করতে লাগলো, এক, দুই, তিন, চার…..
ইরশাদ এবার সরাসরি তাকালো মেয়েটার দিকে। আজ প্রথম নয় আরও কয়েকবার সে লক্ষ্য করেছে মেয়েটার সাথে দেখা হওয়ার কয়েক সেকেন্ড এর মাঝেই সে এমন ঠোঁট নাড়ে। কি বলে মেয়েটা অমন করে! তাকেই কি কিছু বলে নাকি অন্য কোন ব্যাপার, হতে পারে মেয়েটার কোন সমস্যা আছে। ইরশাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই শেলিকে বলল, “কি কিনছো শেলি?”
ইরশাদ প্রশ্ন করছে তাকে! তার ক্রাশ জানতে চাইছে কি কিনছে! ব্যস তাকে আর পায় কে? লজ্জায় ওড়নার আঁচল টেনে মুখের সামনে ধরে বলল, “বার্গার আর হটডাগ কিনমু আমরা।”
“ওহ আচ্ছা। ওটা হটডগ হবে।”
“জ্বে ভাইয়া আমি জানি ওইটার নাম৷ আপায় আমারে শুদ্ধটাই শিখাইছে কিন্তু ডগ অর্থ কুত্তা বইলা আমি ওই খাওনরে হটডাগ কই।”
একটু হেসে ইরশাদ বলল, “আচ্ছা বুঝলাম। এখানকার বার্গারগুলো বেশি ভালো। আচ্ছা চলি, আমি আবার এক জায়গায় যাব৷… এতোটা অস্থিরতা কি স্বাভাবিক! ”
একটু থেমে শেষের বাক্যটা মৈত্রীর একদম কাছ ঘেঁষে যাওয়ার সময় বড় ধীরে আর ফিসফিসিয়ে বলে গেল ইরশাদ যেন, মৈত্রী ছাড়া আর কেউ না শুনতে পারে৷ মৈত্রী শুনেছে এবং বুঝতেও পেরেছে কথাটা যে তার উদ্দেশ্যে। সে ভ-ড়কে গেছে এ কথা শুনে৷ সত্যিই তো এতোটা অ-স্থিরতা কি আদৌ স্বাভাবিক! সে কেন এমন অ-স্থি-র হয়ে উঠে? ইরশাদ চলে যেতেই স্বস্তির শ্বাস নিতে পেরেছে মৈত্রী। শেলিকে বলল, “এখানে বসে খাবি তুই?”
এই প্রশ্নে শেলি দারুণ খুশি হয়েছে। সে তো এমনটাই চাইছিল। এখানে খেলে মৈত্রী আপা তাকে শুধু হটডাগ না সাথে কোকও কিনে দিবে কিন্তু বাড়িতে নিয়ে গেলে তো তখন সে যেচে কোক চাইবে না। এমনিতেই আজকে জুতার সাথে চুড়ি আর একটা লিপস্টিকও কিনেছে। মৈত্রী আপার সাথে মার্কেটে এলে তো শেলির কপাল খু-লে যায় সবসময়।
সকালের রৌদ্রজ্বল ওয়েদার দেখে ভেবেছিল সুন্দর দিন। মেহের আজ প্ল্যান করেছে বিকেলে ভাইকে নিয়ে পছন্দের এক রুফটপ রেস্টুরেন্ট যাবে উত্তরায়। সাথে যাবে তার দুই বান্ধবী যার মধ্যে একজন আবার ময়ূখকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু দুপুর গড়াতেই আবহাওয়া আমূল বদলে গেছে। ঈশান কোণে কালো মেঘ জমেছে, সূর্যের আলোটাও ম্লান এখন। এদিকে ময়ূখও সেই যে সকালে ঘুমিয়েছে এখনো ঘুমেই আছে সে। রাতভর নাকি গাড়িতে ঘুম আসেনি তাই ক্লান্তিতে শরীর ভে-ঙে আসছে। মেহের আজ স্কুলে যায়নি এজন্য আব্বুকে দিয়ে স্কুলে কথা বলিয়েছে। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে ছুটি নেওয়া তাই বোধহয় সফল হবে না। মন খারাপ করে সে নিজের বিছানায় হাত পা মেলে শুয়েছিল। জরিনা খালা তার ঘরে ঢুকে বলল, “ওই লুই-চ্চা ছেড়াডা কয়দিন থাকব গো মেহের?”
“জরিনা খালা আমার ভাইকে লু-ইচ্চা বলবা না একদম।”
ক্রো-ধান্বিত কণ্ঠে বলে উঠলো মেহের। এই জগলু সবসময় এভাবেই কথা বলে আর ভাইও যে কেন মহিলার সাথে ফা-জলামো করে বুঝে পায় না। ভাই না তার! তার ভাইকে কেউ লু-চ্চা, ছেড়া বলে ডাকলে কি সে সহ্য করতে পারে? জরিনা খালা মেহের ধ-মকে কিছুটা চমকে গেলেও থামলো না। সে আবারও বলল, “আমি ভুল কি কইলাম৷ ময়ূরডা তো সকল সমায় কেমুন কইরা কথা কয়, হুনলে লুই-চ্চা লু-ইচ্চা লাগে।”
“উফ জগলুওওওও বোঝো না কেন ভাই মজা করে তোমার সাথে। আর ভাইয়ের নাম ময়ূর না ময়ূখ কতদিন বলতে হবে তোমায়!”
এ পর্যায়ে মেহের বির-ক্ত হয়ে বোঝাতে চাইলো জরিনা খালাকে। জরিনাও এবার ভয় পেলো মেহের ক্ষে-পে গেলে তাকে দৌঁড়াতে হবে।
“আইচ্ছা আইচ্ছা আর কমু না কিছু।”
হাতে ঝাড়ু, মুখে পান সুতি শাড়িটা কোমরের ডান দিকে অনেকটা উঁচু করে গুঁজে রাখা জরিনার। সে মেহেরের ঘর থেকে বেরিয়ে নিচতলায় নামার জন্য পা বাড়াতেই দেখলো ময়ূখ দাঁড়িয়ে আছে তার ঘরের দরজায়। উদোম গা, থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট আর উসকোখুসকো চুলের ময়ূখ ঘুম কা-টেনি অবস্থায় আধখোলা চোখে তাকালো জরিনার দিকে। বরাবরের মতোই জরিনাকে দেখে মাথায় তার দু-ষ্টু বুদ্ধি এলো। আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে ফ্যাসফ্যাসে গলায় ডাকলো, “জগলুওওওও, শোনো তো। আজকেও তোমায় চমৎকার লাগছে।”
“হ্যায়!”
“বলছি শাড়ি এমন উঁচু নিচু কেন গো তোমার একদম বলিউড হিরোইনদের লেগ ওপেন গাউনের মত!” ময়ূখের মুখে মিটমিটিয়ে হাসির ছটা দেখতেই জরিনা ভীতু হলো। তার মনে হলো আবারও এই লুই-চ্চা তার দিকে কু-দৃষ্টি দিয়েছে তাই আত-ঙ্কিত চোখে তাকে দেখে বিড়বিড় করতে লাগলো, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা…. আর কে পায় জরিনাকে। জরিনার দৌঁড় দেখে দরজায় দাঁড়ানো ময়ূখ হো হো করে হেসে উঠলো তখনি কানে এলো অপ্রিয় কণ্ঠস্বর।
“কেন শুধু শুধু ওকে নিয়ে মজা করো এ নিয়ে সে বা*জে কথা বলে বেড়ায়।”
ময়ূখ কথাটা শুনে সিঁড়ি গোড়ায় দাঁড়ানো মানুষটিকে এক পলক দেখলো৷ কিন্তু জবাব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা মনে করলো না সে। দরজা থেকে সরে ঘরে ফিরতে যাচ্ছিলো তখনই মানুষটি উদগ্রীব কণ্ঠে বলল, অনেক বেলা হয়েছে খাবার খেয়ে নাও নয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বে।
ময়ূখ সে কথায় তো-য়াক্কা না করে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করল। আপাতত তার কাজ আম্মাকে ফোন করা। পৌছানোর পর ইরশাদকে জানানো হয়েছিল আর কথা হয়নি বাসায়। কিন্তু আগে গোসল জরুরি ভেবে ময়ূখ বাথরুমে ঢুকে সোজা গোসল সারল। জামা কাপড় বদলে আম্মাকে ফোন দিয়ে কথা বলল কিছুক্ষণ । ইরশাদ আর বাবার কথা জানতে চাইলে ইরিন বলল দুজনেই বাইরে আছে। সে নিজেও এখন ঘরে নেই দোতলায় এসেছেন মৈত্রীর কাছে। ‘মৈত্রী’ নামটা শুনতেই ময়ূখের চোখ দুটো কেমন জ্বল জ্বল করে উঠলো। মনে পড়ে গেল দিনমণির অস্তাচলে ভূলোকের রঙটা যেমন রক্তিম হয় তেমনি র*ক্ত-রঙা লাগে বেলকোনিতে দাঁড়িয়ে থাকা ওই স্বল্পভাষী মিত্রকে। ‘মিত্র!’ নিজ মনেই হেসে উঠলো ময়ূখ। এ কি ভাবছে সে, ওই মেয়েটা হবে মিত্র? অসম্ভব! যে মুখ খুলে দুটো কথার জবাব কাউকে দেয় না দিলেও যার কথার সুরে কোমলতার রেশ মাত্র নেই সে কি করে হবে কারো মিত্র! মেয়েটার নামের অর্থ বন্ধুত্ব হলেও নামের অর্থের ছিটেফোঁটা আভাসও নেই তার স্বভাবে ভেবে ভেবে মুচকি হাসলো। হু এই প্রথম ময়ূখ শব্দহীন হাসিতে ঠোঁট প্রশস্ত করলো। ফোনের ওপাশে ইরিন ডেকে চলছে, “বাবু কথা বলিস না কেন, তুই খাবার খাসনি কেন?”
মৈত্রী হাত পা তুলে বসেছিল সোফায়। তার পাশেই শেলি একটা বাটিতে করে কাজু আর পেস্তাবাদাম এনেছে গোটা কয়েক। দুজনে একসাথে বসে সেগুলোই মুখে পুরছিল। কিন্তু ইরিনের মুখে ‘বাবু’ ডাক শুনতেই মৈত্রী বি-ষ-ম খেলো, শেলির মুখ থেকেও একটা বাদাম পড়ে গেল নিচে। মৈত্রী মুখে কিছু না বললেও শেলি ঠিকই বিড়বিড় করলো, “বুইড়া ছেমরা হেরে কয় বাবু! আল্লাহগো হেই ছেমরা যদি বাবু হয় তাইলে আমরা তো অহনও মা’র পেডেই আছি।”
মৈত্রীর বি-ষ-ম দেখে ইরিন কান থেকে ফোন সরালো, ব্যস্ত কণ্ঠে শেলিকে বলল, “ওকে একটু পানি দাও শেলি।”
রোকসানা বেগম ততক্ষণে চা নিয়ে চলে এসেছেন সোফার রুমে। তিনি চায়ের ট্রে টেবিলে রেখে নিজেই পানি এনে মৈত্রীর মুখের কাছে ধরল। কাশি থেমেছে, একটু স্থির হয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে মৈত্রী পানির গ্লাসটা ধরলো। কৃতজ্ঞতার চোখে একবার তাকালো রোকসানা বেগমের দিকে। মৈত্রীকে কিছুটা ধাতস্ত দেখতেই ইরিন আবার ফোন কানে তুলে বললেন, বাবু তুই খাওয়া দাওয়া করে নে আমি আবার রাতে কল দেব।
দুপুরের পর প্রায় প্রতিদিনই ইরিন এক ঘন্টা ভাতঘুম দেন। কিন্তু আজ আর সে সুযোগ হয়নি বলা চলে রোকসানার প্রয়োজনেই সে না ঘুমিয়ে দোতলায় এসেছেন। রোকসানা কখনো হাতে তৈরি কাঁচা সেমাই রান্না করেননি। চালের গুঁড়ো দিয়ে নকশি পিঠা বানিয়েছেন কিন্তু কখনো সেমাই তৈরি করেননি৷ ইরিনের ঘরেই মিশু খেয়েছিল সেই সেমাই সেই থেকেই তার আবদার৷ আজ চালের গুঁড়ো, নারকেল, গুড় সবই ঘরে থাকায় তিনি ইরিনের কাছে শিখতে চেয়েছেন। ইরিনও সোৎসাহে চলে এসেছেন সেমাই তৈরি করা শেখাতে। আগ্রহ নিয়ে মৈত্রী আর শেলিও বসে আছে তা দেখার জন্য কিন্তু এখনও তা শুরুই করতে পারছে না তারা৷ প্রথমে ময়ূখ ফোন দিলো, তারপর চালের গুঁড়ো নিয়ে বসতেই কল দিলো ইরশাদ। ইরিনের হাত ফ্রী নেই এদিকে শেলি নারকেল কুরানোতে ব্যস্ত। রোকসানাও রান্নাঘরে বিধায় মৈত্রীকেই তুলতে হলো কলটা। সে ফোন তুলে ইরিনের কানে ধরতেই ইরশাদ বলল, “আম্মু কোথায় তুমি জলদি আসো মাছ এনেছি।”
“মাছ!”
“এমন রিয়াক্ট করছো কেন! আব্বু কিনে পাঠিয়েছেন এগুলো।”
“উফ্ তোর আব্বু এমন কেন করে আমার সাথে? আমি ব্যস্ত দোতলায় মৈত্রীদের ঘরে। আমি চাবি পাঠাচ্ছি তুই মাছগুলো রান্নাঘরে রেখে দিস আমি পরে কে-টে নেব।”
কল কা-টতেই ইরিন তাকালেন মৈত্রীর দিকে। কোমরে ছোট্ট একটা চাবির গোছা সেটা দেখিয়ে মৈত্রীকে বললেন, ” মামনি চাবিটা একটু তোমার ইরশাদ ভাইয়াকে দিয়ে আসো তো।”
‘ইরশাদ ভাইয়া!’ এই সম্মোধনটা শুনলেই মৈত্রী ভীষণরকম অপ্রস্তুত হয়। তার ভেতরটা চঞ্চল হয়ে তাকে আ-জব সব ভাবনায় ঠেলে দেয়। এখনও ব্যতিক্রম নয় কিন্তু তার তো পুরনো অভ্যাস সে কখনোই নিজের ভেতরকার প্র-তিক্রিয়া বাহিরে প্রকাশ করতে পারে না। এখনও তাই হলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই সে চাবিটা হাতে নিলো৷ বসা থেকে উঠে দরজার কাছাকাছি তাকিয়ে দেখলো মিশুকে পাওয়া যায় কিনা! নাহ, কোথাও মিশুর টিকিটাও নেই। হাত মুঠো করে আঙ্গুল মুচড়ে আবারও তা শিথিল করে অ-স্থির-তাকে কাটানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালাতে চালাতেই সে নেমে এলো নিচতলায়। সিঁড়ির শেষ ধাপে পা রেখেই তাকালো সামনে দাঁড়ানো যুবা পুরুষটির দিকে। সাদা, কালোর ফরমাল পোষাকে সবসময় পরিপাটি এক সাজের মধ্যে অবস্থান এই ব্যক্তির। দু হাতে দুটো মোটামুটি রকম পলি ব্যাগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে দুটোতেই মাছ আছে৷ লোকটার বয়সটা ত্রিশ ছুঁই ছুঁই কিংবা তারও বেশি অথবা কম মৈত্রী জানে না। সত্যি বলতে সে চেষ্টা করেও আন্দাজ করতে পারে না বয়সটা কেমন হবে এই লোকের শুধু মনে হয় সব দিকে থেকে সে জেন্টেলম্যান।
“তুমি চাবি নিয়ে এসেছো?”
“জ্বী”
ছোট শব্দে জবাব মৈত্রীর।
“আচ্ছা , খুলে দাও ক’ষ্ট করে” কথাটা বলতে গিয়ে দু হাত উঁচিয়ে ব্যাগ দুটো দেখালো ইরশাদ। কথার সাথে ঠোঁটে মিশে আছে তার নির্মল হাসি। পুরুষ মানুষকে বোধহয় গ*ম্ভীরতার মাঝে কখনো সখনো হাসতে দেখলেই ভালো লাগে। সারাক্ষণ ক্যা-বলার মত হাসতে থাকা পুরুষ একদমই ভালো লাগে না মৈত্রীর। ইরশাদের এই ভদ্রতাসূচক হঠাৎ হাসিটাই কেমন যেন মনের ভেতর টুপ করে গেঁ-থে যায়। সে ইরশাদের কথা মতই দরজা খুলে দিলো। ইরশাদ ভেতরে ঢুকে মাছ নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে হাত ধুতে ধুতে মৈত্রীকেই বলল, “চলে যেওনা।”
মৈত্রী বুঝলো না কথাটা৷ সে কেন আর থাকবে দাঁড়িয়ে? ইরশাদই আবার বলল, আমি এক্ষুনি আবার বের হবো তুমি একটুখানি ক-ষ্ট আবারও করো, ঘরটা লক করে চাবিটা নিয়ে যাও সাথে আম্মুকে দিও।”
একনাগাড়ে কথা বলতে বলতে ইরশাদ হাত ধুয়ে নিয়েছে। ন্যাপকিনে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। সে যাওয়ার সময় আবারও পিছু ফিরে বলল, থ্যাংকস মৈত্রী।
ইরশাদের সেই পিছু ফিরে তাকানোটাই যথেষ্ট ছিল মৈত্রীর উ-ত্তেজনায় সংখ্যা গণনার কারণ। বুক ধড়ফড় নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতে উঠতে গুনতে লাগলো, এক, দুই,তিন,চার……..
চলবে