কি ছিলে আমার পর্ব – ১৭

#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব-১৭

সেই দিনের ঘটনা,

দিনের দ্বিতীয় প্রহরেই আসার কথা ছিল পাত্র পক্ষের। স্বাভাবিক ভাবেই দেখাসাক্ষাৎ পর্ব হওয়ার কথা থাকলেও পরে শোনা গেল চেইন পরিয়ে যাবে বলছে ছেলের পরিবার। মামা যে পাত্রের বায়ো পাঠিয়েছেন সেই ছেলে ছবির চেয়েও দ্বিগুণ সুন্দর সামনাসামনি । ছেলেটা ছবিতে ফরমাল লুকে ছিল বলেই হয়ত বয়স্ক লাগছিলো কিন্তু সামনে থেকে ইরশাদের চেয়েও ছোট মনে হয়। মানে মৈত্রীর পাশে একদম পারফেক্ট জুটি বলেই মনে হলো নোরার। ফুপি সেদিন যেতে দেয়নি তাকে মৈত্রীদের ঘরে। ফুপির কথা, অল্প সুন্দরী মেয়ের পাশে অতি সুন্দরী মেয়ে থাকলে নাকি লোকের চোখে অল্প সুন্দরী মেয়েদের পছন্দ হবে না। আর ফুপির ধারণা মতে নোরা অতি সুন্দরী সে গেলে হয়ত পাত্রপক্ষ মৈত্রীকে দেখে পছন্দ করবে না। নোরা হেসেছিলো ফুপির কথায় আর মনে মনে বলছিলো, তাহলে তো আমার অবশ্যই যাওয়া উচিত নইলে তোমার হবু ছেলের বউ অন্যকারো ছেলের বর্তমান বউ হয়ে যাবে।

মৈত্রী অরুণিমার হাতেই সেজেগুজে গিয়েছিল পাত্রপক্ষের সামনে। মৈত্রীর মামী তাকে সেখানে নিজে নিয়ে গিয়ে বসালেন। পাত্র সরাসরি মৈত্রীর দিকে তাকিয়ে রইলো মিনিট খানেক সময় নিয়ে। আর এই সময়টুকুই মৈত্রী না দেখেও টের পেয়েছে সেই দৃষ্টি আর তাতেই ভেতরে ভেতরে অস্ব-স্তি বোধ করেছে। তার মুখে সেই অ-স্বস্তি ভাসলো না একদমই। কিন্তু পরমুহূর্তেই তার অ-স্বস্তিকে অ-শা-ন্তিতে বদলে দিলো পাত্রের বলা একটা কথা, “আমরা কি একটু কথা বলতে পারি?”

“ওহ শিওর! তোমাদের তো আলাদা একটু সময় দেওয়াই যায় আফটারঅল চেনা জানারও একটা ব্যাপার আছে।” মৈত্রীর মামী অতিমাত্রায় স্মার্টনেস প্রকাশ করতেই যেন ব্যস্ত হলেন। মৈত্রীর মন বলছিলো মুখের ওপর বলে দিতে, “নাহ আমি কোন কথাই বলতে চাই না এই লোকটার সাথে। আমি তো চাই নিচতলার বেলকোনির মানুষটাকে। সেই বিড়ালচোখা, পাখি পোষা শান্ত, স্নিগ্ধ মানুষটার সাথে কথা বলতে। তোমরা কেউ প্লিজ তাকে এনে দাও।”

মনের কথা মুখে আসে না মৈত্রীর এটাই যেন তার জীবনের অভিশাপ। তার গোটা জীবনে সে কাছের মানুষ আপন মানুষদের হারিয়েছে মুখ ফুটে কিছু না বলতে পারায়। মায়ের মৃ-ত্যু-তে ভে-ঙে পড়া ছোট্ট মৈত্রী প্রাণ মায়ের ঘ্রাণ পেয়েছিল ছোট খালার গায়ে৷ খালামনির রাত দিন যখন শুধুই মৈত্রীর নামে বাঁধা তখন বাবা নিজের প্রয়োজন আর মৈত্রীর প্রয়োজনেই বিয়ের তাগিদ দেখালেন। ছোট খালাকে বিয়ের কথা নানীর ছিল কিন্তু বাবা মানেননি। নানী বারবার মৈত্রীকে বুঝিয়েছিলেন বাবাকে বলো তুমি খালামনিকেই মা হিসেবে চাও। নাহ, মৈত্রী পারেনি এ কথা বলতে অথচ এখন বোঝে সে বললেই বাবা তার কথা মেনে নিতো। শুধু মাত্র মুখ খুলতে না পারায় দায়েই বড় ফুপি তার অ-স-ভ্য ছেলের কু-নজর থেকে মৈত্রীকে বাঁচাতে পারেনি। মনে পড়ে আজও কিশোরী মৈত্রীর আপন ফুপাতো ভাইয়ের কাছে মলেস্ট হওয়ার সেই য-ন্ত্র-ণা-দায়ক ঘটনা। সে মুখ খুলতে পারেনি বলেই আজও অপরাধী নির্দ্বিধায় তারই আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় যখন তখন। মুখ খুলতে না পারার দো-ষেই তো হারিয়েছিলো জীবনের প্রথম প্রেম তু-ষা-রকেও। আর এত এত হারানোর য-ন্ত্র-ণা-য় দগ্ধ হয়ে মৈত্রী এখন পাথরের ন্যায়। পাত্রের সঙ্গে যখন নিজের ঘরের বেলকোনিতে দাঁড়ালো মৈত্রী ঠিক তখনই তার বুকের ভেতর মু-চ-ড়ে উঠলো ইরশাদ নামের উষ্ণ হাওয়া। শীতের আদ্র বিকেল এক লহমায় ভিজে উঠলো চোখের কো-ণের উষ্ণ জলে৷ পাত্র খেয়াল করেনি সে জল তবে খেয়াল করেছিল নিচ তলার বেলকোনি থেকে উঁকি দেওয়া শ্বেতাঙ্গ এক নারীকে। সেই উঁকি দেওয়া মুখটা দেখেই মৈত্রীর বেলকোনির আলাপ শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল। তারা বসার ঘরে ফিরে যেতেই পাত্রের মা চেইন পরাবেন বলে শোর তুললেন। সে কথা বাড়ির নিচ তলা থেকে উপর তলা সবাই জানলো কিন্তু সন্ধ্যাক্ষণে কি হলো কে জানে চেইন পরানো আর হলো না। পাত্রপক্ষ চলে গেল, চলে গেলেন মৈত্রীর মামাও৷ মামী থেকে গেলেন সেদিনের জন্য এবং সন্ধ্যার পরই জানা গেল পাত্রের পছন্দ হয়নি মৈত্রীকে। কারণ হিসেবে দর্শানো হলো মেয়ের নীরব থাকাটাকে তাদের মানসিক রো-গ বলে মনে হয়েছে। মৈত্রী জানলো সবটা তবুও কষ্ট হয়নি তার কিন্তু ক-ষ্ট হলো মামীর কথায়, “এবার একটু চেঞ্জ হও মৈত্রী৷ এভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের ত চোখ কান বন্ধ করে থাকলে কি করে চলবে! বিয়ে দিতে হবে না, এভাবে থাকলে তো হয় না দেখলেই। বাবা, মামাদের যতোই পয়সা থাকুক মেয়ে কিন্তু শতভাগ নিঁখুত না হলে কপালে দূর্গ-তি থাকেই মনে রেখো কথাটা।”

মামীর বলা কথাগুলোতে ভীষণরকম ধা-রা-লো খোঁচা আছে তা সেদিন মৈত্রী ছাড়া আরও একজন বুঝেছিলেন। তাই মৈত্রী যখন মামীর কথায় কষ্ট পেয়ে চুপচাপ ছাঁদে চলে গেল তখন অপর ব্যক্তিটি সামনে এলেন। সেই ব্যক্তিটি ছিলেন রোকসানা বেগম। তিনি মৈত্রীর মামীর জন্য তখন কফি নিয়ে মাত্রই ঢুকেছিলেন গেস্ট রুমে। মৈত্রী যখন মামীর বলা কথাগুলো গিলে নিয়ে বেরিয়ে গেল তখনই রোকসানা বেগম বললেন, “আসলেই মৈত্রী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নইলে কেউ বাপের খেয়ে অন্যের অপমান সহ্য করে! তাও কিনা এমন মানুষের যে কিনা মা ম-রা মেয়েটিকে অসুস্থ অবস্থায় নিজের বাড়ি রাখতে চাইতো না সেবা করতে হবে বলে। এমনও নির্বো-ধ মানুষ আছে যে কিনা নিজের যোগ্যতা আছে জেনে পরের কাছে পয়সার খোঁটা শোনে! মৈত্রী তো মানসিক রোগী তাই এমন আত্মীয়কে জবাব না দিয়ে কান্না করতে বেরিয়ে যায়৷ মৈত্রীর জায়গায় আমি হলে এতক্ষণে বয়সের হিসেব না করেই ঠা-স করে একটা লাগিয়ে বসতাম যেন জীবনে দ্বিতীয় বার কাউকে জ্ঞান দেওয়ার আগে সেই থা-প্প-ড়ের কথা ভাবে।”

মৈত্রীর মামী ‘থ’ হয়ে গেলেন রোকসানার কথা শুনে৷ কতগুলো বছর ধরে তারা সবাই শা-সি-য়ে রাখছে মৈত্রীর বাবাকে শুধু মাত্র এই বলে, কোনরকম বা-ড়া-বা-ড়ি করলে মৈত্রীকে তারা নিয়ে যাবে নিজেদের কাছে। আইন তো তাদের এখন পকেটে আছে রাজনীতির দাপটে। কিন্তু কে জানতো রোকসানার এই অ-গ্নি-মূর্তি একদিন বেরিয়ে আসবে এমন করে!

মৈত্রী কান্না করতেই ঘর ছেড়ে ছাঁদে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। বাইরে হিম শীতল হাওয়া গরম কাপড়বিহীন গায়ে কাঁ-টা দিয়ে উঠলো মৈত্রীর। কিন্তু বুকের ভেতর যন্ত্রণার যে পাহাড় চেপেছে সে ভারেই সে বাহ্যিক সেই আবহাওয়াও ভুলে গেছে। গলা ফা-টি-য়ে কাঁদতে ইচ্ছে করে তার, কারো কাঁধে মাথা রেখে, কাউকে জা-প-টে ধরে বলতে ইচ্ছে করে, আমি অনুভূতিহীন নই আমারও প্রতিক্রিয়াবোধ আছে শুধু প-রি-স্থি-তি আমাকে বো-বা করে দিয়েছে। মা-হীন জীবনে আমি কাউকে বেশিক্ষণ আঁকড়ে রাখতে পারিনি এই নির্বাক হওয়ার অ-প-রাধেই তো! কিন্তু এই অ-প-রা-ধ আমি জেনে বুঝে করিনি শুধু হয়ে গেছে আমার দ্বারা। আমি ভাবতাম আমি না বললেও আমার আপন মানুষগুলো আমাকে বুঝে নেবে। কিন্তু দিনশেষে প্রমাণ পেলাম মুখ না খুললেই কিছুই পাওয়া যায় না। নানী ঠিক বলেছেন, না কাঁদলে মা’ও নাকি সন্তানকে দুধ দেয় না তবে নির্বাক থাকলে তাকে কেন কেউ ভালোবাসবে? তাকে কেন কেউ নিরবতায় স্বাভাবিক ভাববে! মৈত্রী যখন নীরব কান্নাকে ছাপিয়ে আর্তনাদ করে কাঁদতে চেষ্টা করলো ঠিক তখনই এসে সামনে দাঁড়ালো ইরশাদ। কাকতালীয় নাকি ইচ্ছাকৃত জানে না মৈত্রী তবুও ইরশাদের এই আগমনটাই যেন ছিলো তার প্রতিরো-ধ ভেঙে দেওয়ার মূল মন্ত্র। ইশাদের বলা বাক্যটাই ছিলো নীরব মৈত্রীর কান্নাকে সরব করার চাবিকাঠি৷ ইরশাদ শুধু প্রশ্ন করেছিলো, “এভাবে কাঁদছো কেন মৈত্রী?”

এই এক প্রশ্নই যেন মৈত্রীকে বদলে দিল ঝড়ের বেগে। সে দিগবিদিক জ্ঞান শূন্য হয়েই ইরশাদের কোমর জড়িয়ে শব্দ করে কেঁদে উঠলো। সে কান্না নির্লিপ্ত মৈত্রী কত কি যে বলে দিয়েছিল এক দমে তা বোধকরি, মৈত্রীর নিজেরও জানা নেই৷ কান্নার দমকে অ-স্প-ষ্ট হলেও ইরশাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি সেই কথাগুলো। তার কি হলো কে জানে সেই মুহূর্তে মৈত্রীর দু গালে হাত রেখে শুধু একটাই প্রশ্ন করেছিলো, “তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? একদম মিথ্যে জবাব দেবে না৷ আমার চোখে চোখ রেখপ সত্যি জবাবটা দিয়ে দেবে। আবারও প্রশ্ন করছি, ভালোবাসে আমাকে?”

মৈত্রীর ঠিক সে মুহূর্তেই মনে হলো জীবনে মুখ না খুলে তো অনেক কিছুই হারালো আজ কি তবে মুখ খুলেই একবার নিজের ভাগ্যকে পরীক্ষা করে নেবে! সত্যিই মৈত্রী সেদিন ভাগ্যকে পরীক্ষা করতে ইরশাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলো, “হ্যাঁ ভালোবাসি।”

“ভেবে বলছো? আমি একবার হাত ধরলে আজীবন বাঁ-ধা থাকতে হবে এই হাতে৷ আমি ভালো বাসতে পারবো কি পারবো না তা জানি না তবে একবার আমার জীবনে জড়িয়ে গেলে আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবে না তাই জবাবটা আরেকবার ভেবে দাও৷ এই হবে তোমার শেষ ভাবনা।”

পৌষের শীতল কুয়াশামাখা আঁধারে সে রাতে কেউ যেন অ-গ্নি বো-মা ছুঁড়েছিলো মৈত্রীর গায়ে৷ কত শীতল, কত গম্ভীর কাঠখোট্টা ছিল সেই প্রশ্নটা তবুও মৈত্রী সকল ভ-য়, অ-স্থিরতা সব ভুলে এক বাক্যে জবাব দিয়েছিলো, “ভেবে নিয়েছি আমি আজীবন ভালোবেসে যাব।”

এ কথার পর আর এক সেকেন্ডও দেরি করেনি ইরশাদ৷ সে মৈত্রীর হাত মুঠোয় পুরে টেনে বিয়ে গিয়েছিল মৈত্রীদের দোতলায়। কলিং বেল বাজাতেই রোকসানা দরজা খুলেছিলেন এবং তিনিই খেয়াল করেছেন ইরশাদের হাতে মৈত্রীর হাত৷ মনে মনে বুঝি একটু হেসেছিলেন তিনি মৈত্রীর মামীর কথা ভেবে। সত্যি বলতে, মৈত্রী সৎ মেয়ে এ নিয়ে কখনোই কোন ক্ষো-ভ ছিলো না রোকসানার। সে বরাবরই নীরব দর্শকের মত মৈত্রীর জীবনে কিন্তু মৈত্রীর নানা বাড়ির কাউকেই তার পছন্দ নয়। সে ইরশাদ মৈত্রীকে একসাথে দেখে ইচ্ছে করেই অনেকটা জোরে বললেন, ” ইরশাদ তুমি! তোমার সাথে মৈত্রী কেন?”

রোকসানা যেমনটি চেয়েছিলেন ঠিক তেমনটিই হয়েছে। মৈত্রীর মামী বসার ঘর থেকে দৌড়ে এসেছেন প্রায়। ইরশাদ তখনও হাত ছাড়েনি মৈত্রীর। রোকসানার কথার জবাবে ইরশাদ শুধু জানতে চাইলো, আঙ্কেল ঘরে আছেন?

রোকসানা মাথা নেড়ে ‘হ্যা’ বলতেই ইরশাদ ভেতরে ঢুকে সোজা গেল মৈত্রীর বাবার ঘরে। আধশোয়া, কপালে হাত ফেলে রেখেছিলেন মুজিব দুশ্চিন্তায়। মেয়েকে নিয়ে পাত্রপক্ষ থেকে যেসব মন্তব্য আসে তা নিয়ে এবার সে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছে। আসলেই কি তার মেয়ের মাঝে অনেক ত্রুটি! কই তার তো কখনো মনে হয়নি তেমন?

ইরশাদ নরম গলায় সালাম দিতেই কপাল থেকে হাত সরিয়ে তাকালেন মুজিব। মিনিট না গড়াতেই টের পেলেন তাঁর শরীরের শিরায় শিরায় এক আ-ত-ঙ্ক। তাঁর মেয়ের হাত ধরে রেখেছে ইরশাদ! কেন?

সব প্রশ্নের উত্তর পেলেন আরও মিনিট দশেক পরে যখন ইরশাদের বাবা-মাও এসপ হাজির হলো মৈত্রীদের ঘরে। ইরশাদ কোন রাখঢাক ছাড়াই সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিলো মৈত্রীর বাবাকে। সে তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্যও সব রকম পন্থা জানিয়ে দিলো। ইরশাদ তার বাবা মায়ের কাছেও একইভাবে অনুমতি চাইলে ফখরুল সাহেবই প্রথমে বললেন, ছেলের খুশির বাইরে আমার কাছে কিছুই নেই।

ইরিনকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি দোনোমনা করছিলেন একটু। কিন্তু নোরা কেমন করে যেন ফুপির মগজ ধো-লা-ই করে পাঁচ মিনিটেই জবাব পাল্টে দিলো। মৈত্রীর বাবার কোন আ-প-ত্তি না থাকলেও আপত্তি তুলল মৈত্রীর মামী৷ তিবি তার স্বামীকে ফেন করে কত কি বলতে লাগলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকলো না তার কোন কথা। অবশেষে খুব সাধারণভাবেই মৈত্রী ইরশাদের সম্পর্কের নাম বদল হয়ে গেল। আকস্মিক সবটা ঘটায় ইরিন বাধ্য হয়ে নিজেরই এক আংটি এনে মৈত্রীকে পরিয়ে দিলেন। ইরশাদের অনুরোধ রাখতে বিয়ের জন্য বড় কোন আনুষ্ঠানিকতার সুযোগ রইলো না। পনেরো দিন পরই ছোটো খাটো আয়োজনে হয়ে যাবে বিয়েটা। ইরিনের কখনোই আত্মকেন্দ্রিক মেয়ে পছন্দ নয় তার ছেলেদের জন্য৷ সে তো মনে মনে ভেবে রেখেছিল ইরশাদ, ময়ূখের জন্য সে বউ আনবে চঞ্চল, দুষ্টুমনা হাসিখুশি মেয়ে। মৈত্রী তো তার পছন্দের কাতারেই ছিলো না কোন দিন৷ বাড়িওয়ালার মেয়ে, স্বামীর মুখে বলা বন্ধুর মেয়ে হিসেবেই যেটুকু আদর সে করতো। এখন কিনা ছেলের বউ হয়ে ঘরে থাকবে এমন মেয়ে! ভাবতেই যেন নিঃশ্বাস আটকে আসে ইরিনের।

ময়ূখ বিকেল থেকে আম্মাকে ফোন করেও লাইনে পায়নি৷ একবার ফোন করলো নোরা ধরে বলল আম্মা আজ মৈত্রীদের ঘরে৷ আজও নাকি কেউ দেখতে এসেছে তাকে৷ আর এ কথা জেনেই তো উ-ন্মা-দ হয়ে উঠেছে ময়ূখ। আম্মার সাথে কথা বলেই তাকে জানতে হবে ঘটনা কতদূর। কিছুদিন আগেও মনে হতো মৈত্রী তার শুধুই মোহ কিন্তু এখন বোঝে এটা শুধুই মোহ না৷ মৈত্রী তার জন্য অন্য কিছু, অনেক কিছু, ভীষণরকম বিশেষ কিছু।

চলবে
(রি-চেক করা হয়নি ভুল থাকলে ক্ষমা করবেন। ঘুমু চোখেই মন্তব্য করে যাবেন কিন্তু নইলে খবর আছে 🥺😑)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here