ক্যাসিনো পর্ব -৪০+৪১

#ক্যাসিনো
©লেখিকা_মায়া
#পর্ব_৪০

আব্বু ডাক টা ভেসে আসার সাথে সাথে ,, আফজাল শরীফের চোখ বিদ্যুৎ এর ন্যায় সামনে থাকা কন্ঠস্বরের মালিক কে দেখে । অকল্পনীয় কিছু দেখলেও যত টা মানুষ চমকায় তার চেয়ে দ্বিগুণ চমকে যায় আফজাল শরীফ শাহানা কে দেখে।
শাহানার চোখ দিয়ে পানি টপ টপ করে পড়ছে। পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে। শাহানা আল্লাহর কাছে মিনতি করছে এটা যেন এক দুঃস্বপ্ন হয় শুধু। ঘুম ভেংগে গেলেই যেন এসব উধাও হয়ে যায়।
আবার যেন তার কাছে বাবাই অসাধারণ মানুষ থাকে। এক জন ভালো বাবার খ্যাতি সে অর্জন না করতে পারলেও সে তো বরাবর তার বাবাকে অনেক ভালোবেসে এসেছে।
আফজাল শরীফ শুকনো ঢুক গিলে। তার এই রূপ যেই আপন মানুষ দেখেছে। তাকেই সরিয়ে দিয়েছে সে। শাহানা কে সে মারতে পারে না কিছু তেই না। সে তার নিজের রক্ত। এসব কি ভাবছে সে? শাহানা কে দেখেই প্রথমে এসব ভাবনা কি ভাবে আসতে পারে তার? আফজাল শরীফ শাহানার কাছে যায়। দুই হাঁটু গেড়ে তার সামনে বসে। হাত দিয়ে শাহানার গাল দুটো ছুয়ে দিয়ে বলে, আমার প্রিন্সেস !! আম্মু কি ভাবে আসলে তুমি এখানে?? বিচলিত কন্ঠে বলে, মারের দাগ এসব তোমার গালে?? আফজাল শরীফ হুংকার দিয়ে লোক গুলোর উদ্দেশ্য বলে,কে মেরেছে আমার প্রিন্সেস কে?? কে মেরেছে তোমাদের মধ্যে?? কার সাহস এতো বড় আমার কলিজার গায়ে আঘাত করেছে!!
শাহানা শুধু বাবার দিকে চেয়ে রয়েছে। তার কাছে মনে হচ্ছে। তার শরীরে এক ফোঁটা শক্তি নেই,অবশ হয়ে পড়েছে শরীর। সে যে কথা বলবে এই শক্তি টুকু ও যেন সে পাচ্ছে না। অদৃশ্য কোন শক্তি যেন তার কন্ঠনালী চেটে ধরে রেখেছে।

নিশান বিস্ফোরিত নয়নে শুধু আফজাল শরীফ আর শাহানা কে অবলোকন করছে। নিজের বাবাকে এই রকম নোংড়া রুচির মানুষ কে দেখে তার কত খানি কষ্ট হচ্ছে তা হয়তো সে উপলব্ধি করতে পারছে। কিন্তু তার ভয় এখন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এখন কি হবে এটা ভেবে ভেবে। তাদের এখান থেকে বের হওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল। বাচ্চা গুলো কে বাঁচানো গেল না । এখন কি শাহানা কে ও ছাড়বে না তারা?? নিজের চিন্তা সে ছেড়ে দিয়েছে। মা বাবা আর নির্জনীর কি হবে সে না থাকলে। তা ভাবতেই আতংকে উঠছে তার মন।

আফজাল শরীফের এমন আচারনে সবাই ভুত দেখার মত বিস্মিত হয়েছিল এতো ক্ষন কিন্তু এখন,তার এমন হুংকারে থরথর করে কাঁপতে থাকে তারা। ভীতু কন্ঠে এক জন এগিয়ে এসে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, বস্ আমরা বুঝতে পারিনি উনি আপনার মেয়ে ছিল। আমাদের মাফ করে দেন। হঠাৎ আফজাল শরীফ উঠে দাঁড়িয়ে। নিজের ব্লেজারের পকেট থেকে একটা গান বের করে লোক টির সামনে তাক করে বলে তুই মেরেছিস আমার মেয়েকে ?? লোক টি বড় বড় চোখ করে নত জানু হয়ে বলে, বস্ আমরা বুঝতে পারিনি মাফ করে দেন। দয়া করুন।
আফজাল শরীফের রাগ তরতর করে বাড়তে থাকে,তার পর একে একে সবার দিকে তাক করে ঝংকার গলায় বলে,, তুই মেরেছিস আমার মেয়েকে? নাকি তুই? এই তুই মেরেছিস?? ফুলের টোকা অব্দি পড়তে দেয় না আমার কোন সন্তানের গায়ে আর তোরা আমার মেয়ের গায়ে মারের দাগ বসিয়ে দিয়েছিস?? পরপর তিনটি গুলি করে প্রথম লোকটির বুকে। ঝাঝড়া হয়ে যায় তার বুক,গল গল করে রক্ত পড়ছে,ধপ করে মাটিতে পড়ে যায় সেই লোকটির প্রানহীন দেহ টা। শাহানা প্রথম গুলির আওয়াজে কানে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয় ভয়ে। বরাবর সাহসী মেয়ে টা আজ বড্ড ভীতু হয়ে পড়েছে তার বাবার এমন রূপ দেখে। নিজের মনে বার বার আওড়াচ্ছে তার বাবা এক জন খুনি পাচারকারীর বসের মেয়ে। তার বাবা কোন সরল সাদা মনের মানুষ নয়! আম্মু কি তাহলে এই জন্য বলতো আব্বু এক জন দানব ।‌
শিরীনের প্রতি টা কথার মানে সে এখন বুঝতে পারছে। কেন তার মা আর বাবার মাঝে এতো দূরত্ব! তাহলে বাবার মুখোশের পিছনের এই মানুষ টা কে মা দেখে ফেলেছিল? কেন তাহলে এই মানুষ টার জন্য স্টেপ নেয়নি তার মা। শাহানার ভয় এবার রাগে পরিনত হয়ে যায়। তার চোখের সামনে এক জন কে খুন করলো তার বাবা।‌ তাহলে তার চোখের অগচরে কত কুৎসিত কাজ সে করেছে তার হিসাব কি হবে?? শাহানা ক্ষনে ক্ষনে শকড হয়ে পড়ছে । কাল থেকে তার জীবন এক ভয়ঙ্কর ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। এক জন মানুষ ক্যাসিনো খেলায় যেমন প্রতি টা মিনিট ভয় ভীতি তে থাকে এর পর কি হবে এর পর কি এই ভেবে ভেবে । এক শুল্কাই থাকে,এই বুঝি সে হেরে গেল তার সব কিছু শেষ হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লো। এতো ভয় ভীতি নিয়েও সে খেলে যায়। ঠিক তেমন নিশানের অবস্থা হয়ে আছে,তার জীবন ক্ষনে ক্ষনে রং পাল্টে ধুসর হয়ে যাচ্ছে। এর পর আবার কি রং ধারন করে তা ভাবতে ভাবতেই মাথা টা তার ঝিম ধরে যাচ্ছে।

এর আগেও সে খুন হতে দেখেছিল সেই পাহাড়ে। ভুল পথ দিয়ে যেতে যেতে সে আশেপাশের ভিডিও রেকর্ডিং করছিল। মান সে গ্রামে যাবে এই রেকর্ড টা নির্জনী কে দেখাবে। সে কত খুশি হবে এসব দেখে তা ভাবতেই ভালো লাগছে। কখন ও সে টাকা পয়সার মালিক হলে । মা বাবা নির্জনী আর শাহানা কে নিয়ে ও মাঝে মাঝে এই রকম জায়গায় বেড়াতে আসবে। অনেক পথ পাড়ি দেওয়ার পর ও কারো নাগাল পাচ্ছে না নিশান। তার কাছে এবার মনে হচ্ছে সে ভুল রাস্তায় চলে এসেছে। হঠাৎ সে করে নিশানের কানে গুলির আওয়াজ আসে। ভিতরে ভয় কাজ করতে থাকে। আবার ভাবে হয়তো কেউ পাখি শিকার করছে। কিন্তু পাখি মারার বন্দুকে এতো জোরে আওয়াজ হয় না তো। নিশান কৌতুহল দমিয়ে না রাখতে পেরে সামনে এগিয়ে যায়। তার পাহাড়ের এক বড় ঝোপের আড়ালে কয়েক জন মানুষ কে দেখা যায়। নিশান আড়াল থেকে তাদের দেখতে থাকে। তিন জন মানুষ কে বেঁধে রাখা হয়েছে হাতে পায়ে দরি দিয়ে,মুখে টেপ মারা। মাটি তে একটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে, নিশানের আত্মাপুরি শুঁকে যায়। শুকনো কয়েক টা ঢুক গিলে সে, নিশান নিজের ক্যামারা দিয়ে সব কিছু রেকর্ড করতে থাকে। তখনি পর পর তিন জন কে নিশানের চোখের সামনে মেরে ফেলা হয়। আর তাদের লাশ গুলো কে পাহাড়ের খাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। নিশান ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। এতো ক্ষন সে দেখতে পারেনি কে খুন গুলো করছে,কারন ৭_৮ জন লোক সেই মানুষটির সাইটে দাঁড়িয়ে ছিল। যার কারণে সেই মানুষটি আড়াল ছিল। কিন্তু অন্য লোক গুলো সবাই লাশ গুলো কে ফেলে দেওয়ার জন্য সাহায্য করতে লাগলো তখন সেই মানুষটির সাইটে থেকে লোক গুলো সরে যাওয়ার কারণে এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেই লোক গুলো কে। এতো ক্ষন এ কাউকে খুন হতে দেখে যতখানি ভয় পেয়েছিল,তার থেকে দুগুন ভয় পায় সেই মানুষটি কে দেখে। সে আর কেউ নয় আফজাল শরীফ নিজে।
শাহানার বাবাকে সে সরাসরি কখনো না দেখলেও শাহানা তার মা বাবার ছবি দেখিয়েছিল তাকে। নিশানের শরীর থরথর করে কাপছে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসতে চাচ্ছে। ঠিক তখনই আফজাল শরীফের ফোন বেজে উঠে। ফোন ধরেই বলতে আরম্ভ করে,মেয়ে গুলো কে নিয়ে আমি এখনি বের হচ্ছি। না আজ রাতেই ওদের পাচার করতে হবে। এখানে একটা ঝামেলা হয়েছে,এমপি আমাদের সাথে টক্কর নিতে এসেছিল,তাই তাকে সমেত তার দুই জন পা চাটা কুত্তা কে ও উপরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এখন এসব উটকো কেস টা তুমি দেখো। আমি মেয়ে গুলোর ব্যবস্থা করি।

নিশান এসব শুনে আর এক দন্ড সেখানে আর দাঁড়াতে পারে না। ছুটে চলে যায়। আর তখনই আফজাল শরীফ কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে যায়। আর সেই রাস্তা টা ফলো করতে করতে এগিয়ে যেতে থাকে সত্যি কি কেও ছিলো কিনা এখানে। শেষ পর্যন্ত সে দেখতে পায় নিশান কে যে দৌড়ে পালিয়ে যেতে চাচ্ছে। আর তখনই আফজাল শরীফ নিজের গান তাক করে নিশানের দিকে,গুলি যেই ছুড়তে যাবে,শাহানা কে সামনে থেকে দৌড়ে আসতে দেখে লুকিয়ে পড়ে আফজাল শরীফ। নিশানের সিক্স সেন্স বলছিলো কেউ তার পিছনে আসছে আর বার বার ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে। সে বার বার এই বিষয় টা শাহানা কে বলতে চেয়েছিল কিন্তু নিজের বাবার এমন কুৎসিত সত্যতা সে জানতে পারলে কি অবস্থা হবে তা ভাবতেই আতকে উঠতো সে। কারো সাথেই যখন এই বিষয় টা সে শেয়ার করতে পারছিল না। তখন খুব ডিপরেশনে ভুগতে থাকে সে। সব কিছু তেই খিটখিটে ভাব চলে আসে। সবার সাথে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হয়ে যেতে লাগে। আর ভার্সিটিতে সেদিন আফজাল শরীফ কে দেখে খুব ভয় পেয়ে যায় নিশান। আবার নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তা করতে থাকে সে। কিন্তু শাহানার ভালোবাসায় নিশান নিজেকে আর গুটিয়ে নিতে পারলো না। সে দিন রাতে নিশান প্রচুর ভাবে। অন্যায় কে কখনই এভাবে প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। অন্যায় কে যে প্রশ্রয় দেয় সে নিজেও সেই অন্যায়ের সমান ভাগিদার হয়। মেহমেত কেও সে এই বিষয়ে সব বলতে চেয়েছিল কিন্তু এক অজানা ভয়ে সে বলতে পারেনি। যদি এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তাহলে নিশানের পরিবার ও ক্ষতি হতে পারে। তাই যা করতে হবে গোপন রেখে। নিশান শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়। সে এই ভিডিও পুলিশ কে দিবে । আর সব ক্রিমিনাল দের শাস্তি হবে। এবং কে এই ফুটেজ দিয়েছে তা যেন সব সময় গোপন থাকে।‌
যেই ভাবা সেই কাজ,নিশান পুলিশের কাছে যায় এবং এই ফুটেজ টা দিয়ে তাদের সবাই কে এরেস্ট করতে বলে। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য এই ফুটেজ টাই সব থেকে বড় প্রমান । এবং তার পরিচয় যেন গোপন থাকে সেই বিষয়ে ও পুলিশ অফিসার ইকবাল কে বার বার রিকোয়েস্ট করে। এবং তিনি নিশান কে ভরসা দিয়ে বলে সে তার পরিচয় গোপন রাখবে। আর সব ক্রিমিনাল কেই সে এরেস্ট করবে।আর তাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলাবে।
পরবর্তি দিনে নিশানের ভালোই কাটে। এতো দিনের মাথার বুঝা যেন তার হালকা হতে থাকে।‌আর শাহানার সাথে সেই সময় গুলো কাটানোর পর তার আগের সব কিছু ভুলে যায়। নিশান মনে করে তার জীবন আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই ঠিক হলো না। সব এলোমেলো হয়ে গেল। নিঃশেষ হয়ে গেল তার।

চলবে_______????#ক্যাসিনো
©লেখিকা_মায়া
#পর্ব_৪১

আফজাল শরীফ খুব উতলা নিয়ে,, শাহানার সেবা করছেন। দ্রুত শাহানা কে মাটি থেকে উঠিয়ে চেয়ারে বসে দেয়। তার পর এক বোতল পানি এনে তাকে পান করতে দেয়। একটু আগে যেই মেঝেতে কারো লাশ পড়ে ছিল, রক্তে পুরো মেঝে লাল রং ধারন করেছিলো। তা মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাবধানে কেউ বুঝতেই পারবে না এখানে কোন খুন হয়েছিল। শাহানা শুধু রোবটের মত আফজাল শরীফের কথায় উঠছে বসছে। শাহানা কে দেখে মনে হতে পারে সে অনুভূতিহীন মানুষ। যার কোন আবেগ ভয় কিছু নেই। আফজাল শরীফ এক জন লোক কে বরফ নিয়ে আসতে বলে। সেই বরফ শাহানার গালে আলতো করে চেপে করছে।‌
আফজাল শরীফ কে এমন উতলা সে এর আগে দেখেনি। অন্য সময় হলে হয়তো শাহানা খুব বেশি খুশি হতো তার বাবার এমন আচারনে। কিন্তু এখন সে খুশি তো নয়,তার কাছে বাবার প্রতি টা কাজ বিরক্ত আর রাগ লাগছে। নিজের সন্তান কে কেউ মেরেছে বলে। একটু আগে খুন সে করেছে। আর কত বাবা মায়ের বুক খালি করে , ঐ ছেলে মেয়ে গুলো কে তুলে নিয়ে এসেছে। এই দুনিয়ার সবাই স্বার্থবাদী। নিজের টাই কেউ নজর দিতে পারবে না। কিন্তু অন্যের টাই খাবলে খেতে না পারলেও লোলুপ দৃষ্টি ঠিকি দিবে।
নিশানের কথা হয়তো শাহানা ভুলেই গেছে। নিশানের মনের অবস্থা এখন এমন। সে কোন বড় পাহাড়ের চূড়ার খাদে দাঁড়িয়ে আছে। সে পিছনেও যেতে পারছে না। কারন পিছনে রয়েছে এক মাংসাশী প্রাণী যে তাকে খেয়ে ফেলবে,আর সামনে ও এগোতে পারবে না । কারন চূড়ায় থেকে পড়ে গেলেও তার নির্ঘাত মৃত্যু। মানে এখন তার চতুর দিকে মৃত্যুর ভয়ে কুকড়ে যাচ্ছে। বেশি ভয় পাচ্ছে শাহানা কে নিয়ে। আফজাল শরীফের বানী শুনে মনে হলো সে তাদের এখানে উঠিয়ে নিয়ে আসার অনুমতি দেয়নি। তাহলে কে তাদের এখানে নিয়ে এসেছে???

আফজাল শরীফ মেয়ের একটা হাত ধরে বলে,,দেখো মামুনি, তুমি কাল থেকে যা যা দেখে এসেছো,,তা সব ভুলে যাও। মনে করো এসব দুঃস্বপ্ন হ্যাঁ!! সেটা তোমার জন্যই মঙ্গলজনক হবে। আমি এখনি তোমাকে বাসা তে পৌঁছে দিয়ে আসবো। শিরীন অনেক চিন্তা করছে হয়তো। ঐ জন্য কাল রাত থেকে ফোন দিয়েছে আমাকে । আমি ব্যস্ততার কারণে ফোন তুলতে পারিনি। শাহানা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তার পর স্থির কন্ঠে বলে, আচ্ছা আব্বু তুমি কি আমাকে, ছোট বাচ্চাদের মত কি ভুলে যেতে বলছো?? আমার কি কোন খেলনা ভেঙে গেছে? নাকি হারিয়ে গেছে,যার জন্য আমি কষ্ট পাচ্ছি আর তাই তুমি ঐ খেলনা টাকে ভুলে যেতে বলছো?? হঠাৎ শাহানার কন্ঠ ঝাঁঝালো হয়ে গেল কথায় জোর দিয়ে বলে,কি ভুলে যেতে বলছো আব্বু তুমি?? যে তুমি এক জন খুনি?? এক শিশু,আর নারী পাচারকারী??
তুমি এই সব ভুলে যেতে বলছো আমায়??
আফজাল শরীফের ভিতর টা মোচড় দিয়ে উঠলো, শাহানার মুখে খুনি, পাচারকারী উপাধি টা শুনতে কেন জানি তার খুব খারাপ লাগছে। উনি কি বলবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না। শাহানা নিজের মনোবল শক্ত করে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে,, আমাদের এখানে কেন উঠিয়ে নিয়ে এসেছো তুমি?? নিশান কে দেখিয়ে বলে,দেখো শুধু আমাকে ওরা মারেনি। নিশান কেও কত মেরেছে!! আর ঐ ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়ে গুলোকেও কুত্তার মত মেরেছে। আফজাল শরীফ চিন্তিত স্বরে বললেন,, আমি তোমাদের উঠিয়ে নিয়ে আসার অনুমতি দেয়নি আর আমি তো জানি না তোমাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে?? শুধু শুনেছিলাম,,ঐ ছেলে টা কে উঠিয়ে নিয়ে আসার কথা।
কেন নিশান কে এখানে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে কি উদ্দেশ্যে?? শাহানা গলা খাদে ফেলে,,ছলছল চোখে মিনতির স্বরে বলে আব্বু আমি সব ভুলে যাবো ,, তুমি যা বলবে সেটাই করবো, কিন্তু ঐ বাচ্চা গুলো আর নিশান কেও ছেড়ে দাও। তাহলে আমি এখনি বাড়ি চলে যাবো। প্লিজ আব্বু ছেড়ে দাও ওদের। আল্লাহর দোহাই লাগে।

তখনি ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে এক জন সুদর্শন পুরুষ। ধূসর রঙের ব্লেজার, ভিতরে কারো। রঙের শার্ট। প্যান্টের পকেটে এক হাত দিয়ে রাজার বেশে প্রবেশ করে। ছেলে কার বয়স ও খুব বেশি হবে না..২৭_২৮ বছর বয়স। চোখের মণি আর মাথার চুল দেখে যা বুঝা যায়,,সে বাংলাদেশী নয়। পুরুষ টি ঘরে প্রবেশ করেই মুচকি একটা হাসি দিল। তার পর সবার উদ্দেশ্যে বলল

good morning everyone..
Can I go in if you don’t mind?
আফজাল শরীফ লোক টি কে দেখে আতংকে উঠলেন। বার কয়েক শুকনো ঢোক গিললেন। লোক টি আফজাল শরীফের সামনে দাঁড়াতেই। এক জন এসে চেয়ার দিলো তাকে বসতে। আফজাল শরীফ কে দেখে তারা যতটা না ভয় পায় । তার চেয়ে ও অধিক ভয় পাচ্ছে এই লোক টি কে। লোক টি আফজাল শরীফের উদ্দেশ্য বলে! good morning বাবা।

বাবা ডাকটা শুনে নিশান আর শাহানা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইল সেই ছেলেটির দিকে।

তখন লোকটি আবার বলতে থাকে। actually হয়েছে কি বাবা। আমি শুধু ঐ ছেলে টাকে উঠিয়ে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু পরে জানতে পারি। তার সাথে একটা মেয়েও আছে। তাই দুই জন কেই নিয়ে আসতে বলি। এমনিতেই মেয়ে সর্ট ছিল। তাই ভাবলাম একেই আমাদের কাজে লাগাতে পারবো। কিন্তু সত্যিই জানতাম না এটা শেহনা ছিল। I am really sorry বাবা। আফজাল শরীফ চোখ মুখ শক্ত করে রেখেছে। তার ভিষন রাগ হচ্ছে। এই রাগে এখনি পুরুষ টিকে খুন‌ করার ইচ্ছে হচ্ছে তার। আফজাল শরীফ কখনো কাউকে ভয় পায় না। শুধু দুই জন কে ভয় পায় এই পুরুষ টিকে। আর শাহানা কে ভয় পাইতো নিজের এই অসাধু ব্যবসায়ীর কথা গোনাক্ষরেও যেন শাহানা জানতে না পারে।
এক মাত্র এই মেয়েটাই যে দিনে এক বার কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে তার ভালো মন্দ, খেয়েছে কিনা? আর এই মেয়েটা কেই সে দেখেছে,টাকার লোভী না হতে। যার কোন দামী জিনিসের উপর আগ্রহ নেয় শুধু মা বাবার ভালোবাসা, আর সময় ছাড়া কোন কিছু চায়নি সে এতো বড় হওয়ার পর ও। শাহানা কে কোন এক কারণে নয় অনেক কারনেই আফজাল শরীফ তাকে ভালোবাসে। কিন্তু কখনো অতিরিক্ত প্রকাশ সে করেনি। আজ তার ভয় হচ্ছে খুব!! আরো একটা বিষয়ে সে ভয় পাচ্ছে,শাহানা অনিতের পরিচয় পাওয়ার পর ,সে কি নিজেকে সামলে রাখতে পারবে??

আফজাল শরীফ ধরা গলায় বলে,,কেন তুমি নিশান কে নিয়ে এসেছো?? তোমাকে বলা হয়নি,,?? ওহহ আমি তো অফিসার কে মানা করেছিলাম যেন তোমায় কিছু না বলে আমিই হ্যান্ডেল করতাম বিষয় টা।
অনিত উঠে দাঁড়িয়ে,, নিশানের কাছে গিয়ে,,কেডস পরা পায়ে নিশানের পেটে জোরে এক লাথি মারে। নিশান ব্যাথায় কুঁকড়ে যায়,, নিঃশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছে তার। চোখ বন্ধ করে রেখেছে সে। আচমকা এমন কিছু হবে তা শাহানা কিংবা আফজাল শরীফ কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। নিশানকে লাথি মারতে দেখে। শাহানা জোরে চিৎকার করে উঠে নিশানের কাছে যায়। নিশান এই নিশান!! তোমার কিছু হয়নি। তাকাও আমার দিকে।

শাহানার রাগ তরতর করে বেড়ে যায়। অনিত কে ধাক্কাতে লাগে। এক ইঞ্চি ও তাকে সরাতে পারেনি তবু ও ধাক্কাচ্ছে আর বলছে। তোমার সাহস কি করে ওর গায়ে হাত তোলার?? এই কে তুমি হ্যাঁ?? তোমাকে আমি মেরেই ফেলবো।‌বলেই শাহানা পড়ে থাকা একটা লাঠি তুলে যেই অনিত কে মারতে যাবে। তখনি অনিত এক পা সরে দাঁড়ায়। শাহানার মার তার গায়ে না লাগায় আরো রাগে ফুঁসতে থাকে সে। শাহানা বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে।
অনিত নিজের প্যান্টের পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে দিয়ে মাথা টা কাত করে বলতে থাকে। who I am??? তুমি জানতে চাও?? আফজাল শরীফ অনিত কে আটকায় বলে চলো এখান থেকে তুমি বাইরে,, তোমার সাথে কথা আছে আমার!! প্লিজ বাবা,, আর কত লুকাবে?? ওকে জানতে দিলে সমস্যা কোথায়?? সব কিছুই তো জেনে গেছে! আর বাকি টুকু জানলে কি সমস্যা??
অনিত প্লিজ!! আফজাল শরীফের চোখে মুখে অসহায়ের ছাপ।

অনিত মুচকি হেসে বলে,, listen sehna ,I am your step brother… and you are my step sister…

শাহানার হাত থেকে লাঠি টা পড়ে যায়। সৎ ভাই!! শাহানা বাবার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে, আব্বু কি বলছে ও?? এই লোক টা আমার সৎ ভাই?? তোমার দ্বিতীয় স্ত্রী আছে??? excuse me !! ওটা সেকেন্ড নয় ফাস্ট হবে!!

আফজাল শরীফ চোখ বন্ধ করে নেয়। তার কাছে মনে হচ্ছে, কোন যাতাকলে তাকে আধা পিষানো করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর বাকি পিষানোর দায়িত্ব দেওয়া হলো শাহানা কে। তার এই প্রশ্নের উত্তর এ আজ তাকে যাতাকলে পিষে মেরে ফেলবে। কি বলবে তিনি?? যে তার প্রথম স্ত্রী আছে। সাথে আছে ৩জন সন্তান একটা অনিত আর দুই টা মেয়ে .. অরনি,অন্তরা।

আফজাল শরীফ কিছুই বলতে পারলেন না।
অনিত ,,আজ যেন নিজের বুকে পুষে রাখা যত ক্ষোভ রাগ সে শাহানা কে কষ্ট দিয়ে পুষিয়ে নিবে। তার বাবার উপরে সে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে তা সে আজ শাহানার উপর দিয়ে আফজাল শরীফের উপর কষ্ট গুলো ঢালবেন। কষ্টের শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাবেন আফজাল শরীফ কে।

অনিত নিজেই বলতে লাগলো,, তোমার মাকে বিয়ে শুধু করেছিল,,তার বাবার জোরাজুরিতে। কখনই তোমাকে আর তোমার মাকে ,, নিজের মনে করেননি বাবা। কারন আমার বাবা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল আমার মাকে। আমার মা এক জন বিদেশীনি । আর আদিম যুগের লোক আই মিন আমার দাদু তিনি আমার মাকে মেনে নিতে নারাজ।‌তাই তার বাবার কথা রাখতে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিল তোমার মাকে। কিন্তু আমার বাবা আমার মাকে ছেড়ে দেননি। মাসের ২০দিন আমাদের সঙ্গেই থাকেন। তার তিন ছেলে মেয়ে আছে।
কথা গুলো বলে বাঁকা হাসে,অনিত,আজ তার ভিষন শান্তি লাগছে।

শাহানা ধপ করে মাটিতে বসে পড়ে ,চাপা কান্না আর কষ্ট তার ভিতর টা দগ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
শাহানা নিজের মাথা চেপে ধরে। আর কোন কথা সে শুনতে চাচ্ছে না। তার আব্বু এক জন প্রতারক, খুনি,বেঈমান, শিশু পাচার কারী। শাহানার গা রিরি করছে এটা ভাবতেই যে আফজাল শরীফ তার বাবা। ঘৃন্নায় আফজাল শরীফের দিকে তাকাতেও ইচ্ছে করছে না তার।

শাহানা কিছু ক্ষন থম মেরে বসে থাকলো । তার পর চট করে উঠে পড়ে,, ।
তার পর ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে। মিস্টার আফজাল শরীফ!! বাচ্চা গুলোর ঘরের চাবি দেন আমাকে। আমি সবাই কে মুক্ত করে নিশান কে নিয়ে চলে যাবো।
নিজের মেয়ের মুখে নিজের নাম শুনে,, খুবই কষ্ট পেলেন আফজাল শরীফের। এই প্রথম তার কাজের জন্য তার অনুসূচনা হচ্ছে। কেন এই পাপাচারী তে লিপ্ত হয়েছিল সে??
বুকের ভেতর টা পুরে যাচ্ছে তার।

অনিত আয়েশি ভঙ্গিতে বলে,,কি বললে তুমি। বাচ্চা গুলো কে মুক্ত করবে?? হাহাহা। সিরিয়াসলি। তুমি তাদের কে ছাড়াতে পারো না। আর কজন কে ছাড়াবে তুমি?? ১২০ জন‌ শিশু এবং নারী পাচার হবে আজ।‌এখানে তো রয়েছে হয়তো ২০টা ।‌বাকি গুলো কে কি ভাবে পারবে?? আর সব থেকে বড় নিশান কে নিয়ে কোথায় যাবে তুমি??? নিশান!! যে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ফুটেজের কারণে আমাদের এতো বড় সাম্রাজ্য কে ধ্বংস করে দেওয়ার অস্ত্র তার কাছে ছিল। যে নিজেই এখন বড় প্রমান হয়ে রয়েছে আমাদের কে শেষ করে দেওয়ার জন্য। তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

ফুটেজ কিসের ফুটেজ?? তার পর অফিসার নিজে শাহানা কে পুরো ঘটনা ব্যাঙ্গ করে বলতে লাগলেন। শাহানা এবার বুঝতে পারছে,, নিশান কেন এতো ভয় পেয়ে ছিল তাহলে। তার বাবার আসল রূপ সে আগেই জেনেছিল। কিন্তু তাকে কেন বলা হয়নি??
শাহানা কিছু বুঝতে পারছে না। আরো ৮০জন বাচ্চা কে তারা বন্দি করে রেখেছে!! কত টা পাশবিক আর নিকৃষ্ট এই মানুষ গুলো। যার মধ্যে তার বাবাও আছে।

শাহানা কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। কিছুই মাথায় আসছে না তার।

শাহানা নিশান কে পানি খাওয়াচ্ছে। খুব শান্ত কন্ঠে আফজাল শরীফের উদ্দেশ্য বলে,, প্লিজ আব্বু এসব ছেড়ে দাও,, ঐ বাচ্চা গুলো কে ছেড়ে দাও। আর নিশানের ও ক্ষতি করো না তোমরা প্লিজ। আমি কথা দিচ্ছি ও কখনো এই বিষয়ে আর কোন স্টেপ নিবে না।‌আর আমি ও সব ভুলে যাবো। প্লিজ আব্বু ছেড়ে দাও ওদের। নিশান আমার হাসব্যান্ড আব্বু। ওর ফ্যামিলিতে ও ছাড়া কেউ দেখার নেই। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ও এখানে এসেছে। প্লিজ যেতে দাও ওদের।
আফজাল শরীফ মেয়ের এমন আহাজারি সহ্য করতে পারছেন না। আর বেশ অবাক হলেন এটা জেনে যে নিশান কে সে হাসব্যান্ড পরিচয় দিচ্ছে।
নিশান তোমার হাসব্যান্ড কিভাবে হতে পারে। আমি ওকে বিয়ে করেছি আব্বু। প্লিজ বাচ্চাদের ছেড়ে দাও। আল্লাহ চাইলেই তোমাদের মাফ করে দিবেন। যত ভুল করেছো সব মাফ করে দিতে পারেন তিনি। প্লিজ আব্বু এই পাপাচার থেকে সরে এসো। ঐ ছেলে মেয়ে গুলো কে মুক্ত করে দাও।
আফজাল শরীফ মেয়ের কাছে এসে হাত দুটো নিজের বুকে টেনে বললেন। আমায় মাফ করে দাও মামুনি। বাচ্চা গুলো কে আমি ছাড়তে পারবো না। শাহানার শেষ আশা টা তেওঁ জল ঢেলে দিলো। শাহানা হাত সরিয়ে নিয়ে আফজাল শরীফের ব্লেজারের পকেট থেকে গান নিয়ে নেয়। তার পর উঠে দাঁড়িয়ে,,একে একে সবার দিকে তাক করে বলে। আমি বলছি বাচ্চা গুলো কে মুক্ত করে দাও আর আমাদের যেতে দাও। নয়লে এক জন ও বাঁচবে না। সবাই কে মেরে ফেলবো আমি। আর তোমাকেও আব্বু।

সবাই চমকে যায়। আর আফজাল শরীফ হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। অনিত ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে, গান তো ঠিক মত ধরতেই পারো না আর তুমি চালাবে গান?? শাহানা,, ক্ষোভে ফেটে পড়ে,গুলি চালিয়ে দেয়। আর গুলি গিয়ে লাগে আফজাল শরীফের হাতে।
তখনি,অনিত নিজের ব্লেজারের পকেট থেকে একটা গান বের করে সুট করে শাহানার দিকে।‌ শাহানার গুলি গিয়ে লাগে তার পেটে পরপর দুইটা গুলি করে অনিত। শাহানা পেটে হাত দিয়ে ধপ করে মাটিতে পড়ে যায়। আচমকা এমন কিছু তে সব যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। নিশান চিৎকার করে উঠে। শাহানার কাছে যায়। তার মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে নেয়। শাহানা অন্তিম ক্ষনের শ্বাস ফেলছে। আফজাল শরীফ মেয়ের কাছে ছুটে যায়। মামুনি তোমার কিছু হবে না। তোমাকে এখনি হসপিটালে নিয়ে যাবো আমি। শাহানা বাবার হাত চেপে ধরে। তার পর বড় বড় শ্বাস নেয় কয়েটা। তার পর অস্ফুট স্বরে বলে, নিশানের দিকে তাকিয়ে,আব্বু প্লিজ নিশানের কোন ক্ষতি করো না যেন। ওর পরিবার শেষ হয়ে যাবে। বাচ্চা গুলো কে ছেড়ে দিও আব্বু। শাহানার নিশানের দিকে তাকায়। তার পর আবার চোখ বন্ধ করে নেয়, খুব কষ্টে চোখ খুলে, তার পর বলে, তোমার সাথে ৬০ বছর বাঁচতে পারলাম না আমি। আমাকে ক্ষমা করে দিও,ভিষন ভালোবাসি তোমায়!! নিশান কাঁদতে কাঁদতে বলে তোমার কিছু হবে না।‌কিছুই না। আমি কিছু হতে দিবো না তোমার। নিশান শাহানা কে জরিয়ে ধরে। শাহানা আর কোন সারা শব্দ করছে না। নিশান শাহানা কে বুক থেকে সরিয়ে দেখে, শাহানা তাকিয়ে আছে তার চোখের কোণ বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো। সে তার নিশ্বাস নিশানের বুকেই করেছে। নিশানের আত্মচিৎকারে ঘরের দেওয়াল গুলোও কেঁপে উঠে।

অনিত এটাই চেয়েছিল। শেষ করে দিতে চেয়েছিল শাহানা কে। ভাই নাকি এক জন বোনের রক্ষক হয়!! কিন্তু সেই ভাইয়ের হাতে মৃত্যু বরণ করে শাহানা। হোক না সে সৎ তবু ও তো ভাই সে

চলবে______?????

গঠন মূলক মন্তব্যের আশাবাদী 🙂🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here