#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:১০
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
জুরাইন কে আদালতকক্ষে আনা হয়ছে তার বিচারকার্য করার জন্য।
চৌধুরী বাড়ির সবাই সেখানে উপস্থিত শুধু মীরজাফর আর ত্বায়িহা ছাড়া।
জুরাইন :কাঠগড়াতে দাড়িয়ে তার দু চোখ শুধু ত্বায়িহা কে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না।
কিন্তু আদালতকক্ষে তার পরিবারের সবাই আছে,,
‘
‘
‘
ত্বায়িহা :চাচাজি আমরা তো ঘরে বসেই বিচারের ফল জানি তাই যাবার দরকার পড়ে নাই।
মীরজাফর :ঠিক বলছো।।
তারপর সে তার রুমের প্রজেক্ট চলু করে তাতে আদালতের সব কিছু দেখা যাচ্ছে।
কারণ সেখানে তার একজন কর্মচারীর কাছে হাইড ক্যামেরা আছে,,
সেখানে থেকে সব কিছু সরাসরি দেখছে।
ত্বায়িহা :চাচাজি আজ জুরাইনের ফাঁসীর রায় দিলে পার্টি করবো।
মীরজাফর :তা আর বলতে অবশ্যই।
তারপর ওরা নানা রকমের খাবার খাচ্ছে আর বিচারকার্য দেখছে।।
এসবের মাঝে ত্বায়িহা মীরজাফরের সব কুকীর্তি শুনে নেয়।
ঐ দিকে সব কিছু জুরাইনের বিপক্ষে কোনো প্রমাণ জুরাইন কে আজ ফাঁসীর হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না।
একটুপর জজসাহেব তার রায় দিবে।
সব কিছু ক্লিয়ার জুরাইনের ফাঁসি দিবে।
এমন সময় ত্বায়িহার ফোনে কল আসে,,,
সে লাউড স্পিকারে দিয়ে রিসিভ করে।
অপরজন :মেম জুরাইন সাহেবের যদি ফাঁসি হয়ে যায় তাহলে তার সব সম্পত্তি এতিমখানা সহ নানারকম সামাজিক চ্যারিটেবল ফান্ডে ডোনেট
হয়ে যাবে এমন কি আপনার ও কোনো সম্পত্তি থাকবে না।
মীরজাফর :জুস খাচ্ছিল এ কথা শুনে জুস তার গলায় বেধে যায়।
তার পিঠে ত্বায়িহা দুই চারটা কিল দেয় মনের মতো,,তারপর নেকামি করে বলে চাচাজি এখন ভাল লাগছে তো😟
মীরজাফর :ত্বায়িহার কথার উওর না দিয়ে জোড়ে চিৎকার করে বলে এসব সম্ভার নয়।
ত্বায়িহা :নেকা কান্নাকাটি করে বলে,,,
চাচাজি গো আমার এ কি সর্বোনাশ হবে,,,
না থাকবে বর না থাকবে ঘর,,,
যে টাকার জন্য বর ছাড়ছি সে টাকা যদি না পায় তখন কি হবে গো😭😭😭
সে সময় সেখানে উকিলবাবু এসে বলে সব সম্ভব কারণ সেদিন আপনারা পুরা উইল শেনেন নাই।
মীরজাফর : মানে কি কী বলতে চান।
উকিল :জুরাইনের বিয়ের এক বছরের মধ্যে যদি কোনো কারণে মারা যায়।
তাহলে তার সব কিছু এমনি কি তার বউয়ের ভাগের সব কিছু দান হয়ে যাবে।
এমনকি জুরাইন বেঁচে থাকার সময় তার বউয়ের যদি বাচ্চা না হয় দুই বছরের মাঝে।
তাহলে সে সম্পত্তি ভোগ করতে পারবে না সে সারাজীবনেও।
ত্বায়িহা 🙁 কেমন দিলাম,,,কাটা ঘাঁয়ে নুনেরছিটে,, বর ও থাকবে এমনকি সংসার ও করবো ভাবা যায় ত্বায়িহা তুই এসব করছিস। 🙈🙈
তাও কি না সংসার করবো মীরজাফরের সামনে শয়তান ইবলিশ একটা,, মনে মনে)
মীরজাফর :হায় হায় উকিল এখন তো আমার তীরে এসে তরী ডুবাই দিলে😡😡
উকিল :স্যার আমার কিছু করার ছিল না,,
কারণ এটা আমার জানার বাহিরে ছিল,,
জুরাইনের আজ ফাঁসি হলে আপনার সব কিছু শেষ হয়ে যাবে,,,
যা করার তাড়াতাড়ি করেন।
মীরজাফর :আমার এতোদিনের সাজানো খেলা জুরাইন মরে নষ্ট করতে পারে না,,,
যদি ওকে ফাঁসী তে ঝোলাতে পাড়ি বাঁচাতেও আমি পারবো।
ত্বায়িহা :(আমি ও এটাই চায়ছিলাম তুই নিজে নিজের পায়ে কুড়াল মারিশ,,নিজেকে শাস্তি তুই নিজে দিবি আমি শুধু লাটাই ঘুরাবো।।
আর আজ থেকে সেটাই হয়ছে😈😈মনে মনে)
মীরজাফর :ত্বায়িহার মাথায় হাত দিয়ে বলে,,,
চিন্তা করো না,,,সম্পত্তির সাথে বর কে পাবে,,,
বলে সে সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে ত্বায়িহা আদালতে চলে যায়।
জুরাইন কে সে চোখের ভাষা দিয়ে বোঝায় তোমার কিছু হবে না আমি আছি তো।।
:
:
:
এদিকে কোর্ট রুমে জর্জসাহেব তার বিচারের রায় শোনাবে এমন সময় মীরজাফর এসে বলে থামেন জর্জসাহেব যে খুনের জন্য আপনি ফাঁসির রায় দিবেন তার অাগে সে খুন সে করছে কি না তা তো দেখে নিন।
এরপর মীরজাফর বসে থাকে,,,
উকিলবাবু জর্জ সাহেব কে বলেন,,,
যে মেয়েন খুনের জন্য এতো কাহিনী আসলে সে মেয়ে মরে নাই বেঁচে আছে তাহলে এতো কিসের বিচার মাই লর্ড।
তাই বলে আদালতের সবার সামনে মেঘা এসে উপস্থিত হয়।
মেঘাকে দেখে সবাই খুব অবাক,, কেউ কেউ তো ভুত দেখার মতো ভয় পাইছে।।
মেঘা এসে বলে :আমার খুনের দ্বায়ে সে কেনো ফাঁসী তে ঝুলবে আমি তো বেঁচে আছি।।।
সে আমাকে খুন করে নাই,
সৈয়দ মীরজাফরের চৌধুরীর পরিবারের মান সম্মান নষ্ট করার জন্য এ সব নাটক করছে কেউ,,,
আর আমি এতোদিন হাসপাতালে কোমায় ছিলাম,,,
আজ জ্ঞান ফিরছে আর তাড়াতাড়ি জুরাইন কে বাঁচাতে চলে আসছি।
জর্জ সাহেব :সব প্রমাণ আর স্বাক্ষির ভিত্তিতে জুরাইন কে সম্মানের সাথে সে কেস থেকে মুক্তি দিয়ে দেয়।।।
আর বলে যারা জুরাইন কে ফাঁসিয়ে তার সুন্দর জীবনে কালি লেপে দিতে চেয়েছে,,, পুলিশ যেনো যতো তাড়াতাড়ি পাড়ে তাদের খুঁজে বাহির করে।বলে সেখান আদালতের কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করে।
জুরাইন :আদালতকক্ষের বাহিরে এসে সবাই কে জড়িয়ে ধরে।।
ত্বায়িহা :জুরাইন কে জড়িয়ে ধরতে যাবে,,
ঠিক তার আগেই মেঘা জুরাইন কে জড়িয়ে ধরে,, বলে আমি জানি তুমি এতো বছর আমাকে খুব মিস করছো আর করবে না,,,
এই তো আমি চলে আসছি দেখো সোনা।
জুরাইন :মেঘাকে না ধরে শুধু পাথরের মতো দাড়িয়ে থাকে আর ত্বায়িহার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকে।
‘
‘
ত্বায়িহা : এসব দেখে ত্বায়িহা চুপচাপ সেখান থেকে চলে যায়।
যাবার সময় খুব কান্না করে,,,
যার জন্য নিজে ভিলেন রুপে আসলাম সে কিনা আজ অন্য কারো,,,
তবুও সে ভাল থাকলেই আমার ভাল।
আমি তো তার ভালবাসা কোনোদিন ছিলাম না,,,
হঠাৎ বসন্তের মতো সে না হয় #ক্ষণিকের_বসন্ত হয়ে আমার জীবনে আসছিল।
তাতে কি,,,
আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগেও তোমাকে মীরজাফরের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়ে যাবো।
এখন সে আঘাত প্রাপ্ত বাঘ না জানি কোন দিক দিয়ে আবার আঘাত করবে।।
কিন্তু তোমার সামনে কি আমি স্টং থাকতে পারবো??
তোমাকে আর মেঘাকে একসাথে কি করো সহ্য করবো জানি না।
‘
‘
‘
এদিকে বাড়িতে এসে সবাই খুব খুশি বাড়ির ছেলে আজ বাড়িতে ফিরে আসছে।।
সে উপলক্ষে কিছুদিন পর পার্টির আয়োজন করা হবে।
মেঘা জুরাইনের কাধে মাথা দিয়ে পরম শান্তি তে বসে আছে।
জেসমিন :মেঘা তুমি অসুস্থ,, রুমে গিয়ে আরাম করো,, সুস্থ না হলে সব কিছু আবার দেখাশোনা করবা কি করে বলো তো???
মেঘা : আন্টি আমি জুরাইনের সাথে থাকলে ভাল থাকবো।ওর সাথে থাকতে ভাল লাগছে আমার।
জাবিন চৌধুরী :তা আমরা বুঝি,,
কিন্তু তার আগে তোমাকে সুস্থ হতে হবে,,,
সো যাও তাড়াতাড়ি রেস্ট করো ভেতরে গিয়ে।
মেঘা আর কিছু না বলে সেখান থেকে রুমে চলে যায়।।
জাবিন চৌধুরী :ত্বায়িহা কে নিয়ে কিছু ভাবছি তুই,,,মেঘা আর ত্বায়িহা দুজন তো এক সাথে তোর জীবনে থাকতে পারে না।
জেসমিন :জুরাইনের এতো ভাবার কিছু নাই,,,ওই ফাজিল মেয়ে ত্বায়িহা কে ডিভোর্স দিয়ে তুই মেঘাকে বিয়ে করে সুখে সংসার করবি।
জুরাইন কোনো উওর না দিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে যায়।
তখন জিরান এসে জুরাইনের পথ আটকে দাঁড়িয়ে বলে।
জিরান :একটা কথা ভুলে যাবি না,,,তোমাকে মুক্ত করার পেছনে ভাবীর হাত আছে,,,কিন্তু তোমার ভালবাসা মেঘা আপু সে ফিরে আসছে।
জুরাইন :তা তোরা এখন আমার থেকে কি চায়ছিস বলতো??।
জিরান :কিছু না,,,মেঘা আপুকে ভাবীর কথা বলে দিলে ভাল হয়।
জুরাইন :মেঘা অসুস্থ ও ত্বায়িহার কথা শুনে যদি আরও অসুস্থ হয়ে যায়,, সে রিস্ক নিতে চায় না।
জিরান :মেঘা আপুর জন্য ভাবীর সাথে কোনো অন্যায় করো না,,,শুধু এতোটুকু ভেবে দেখো।
‘
‘
জুরাইন নিজের রুমে ঢুকে দেখে সেখানে ত্বায়িহা নেই।।
জুরাইনের আজ মনটা ভাল নেই,,,
অতীত বর্তমান সামনে,,,
সে কাকে বেছে নিবে জানে না।
বুকের মাঝে কেউ একটা বিশাল বড় পাথর চাপা দিছে সে পাথর সরাতে কাউকে খুব প্রয়োজন।
তাই সে রাতের বেলা বাড়ি থেকে বাহিরে চলে যায়।।।
( এখন বেচারা হিরো কি করবে জানি না,গল্পটা নিয়ে আপনাদের কি মতামত জানাতে ভুলবেন না,,ভুলে গেলে আমার কি😟😟)
‘
‘
‘
চলবে….