#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:৬
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
আজকের সব রান্নাবাড়া ত্বায়িহা করছে।
সব খবার টেবিলে রাখা,,
এদিকে সবাই ডাইনিং টেবিলে খাবার খাওয়া শুরু করছে,,,
সবার খাওয়া শেষের দিকে ত্বায়িহা নিজে।
সবার জন্য আজ যে পায়েস রান্না করছে তা নিয়ে আসে,,,
ডাইনিং টেবিলের সামনে এসে ত্বায়িহা থ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,,,
ওর হাত থেকে পায়েসের বাটিতা পড়ে যায়,,,
কাচের বাটি ভাঙ্গার শব্দে সবাই টেবিল খেথে উঠে ত্বায়িহার কাছে চলে আসে।
ত্বায়িহা হঠাৎ কান্নাকাটি শুরু করে,,
তা দেখে মীরজাফর বলে,,,
জুরাইন তোমার বউ কে এখান থেকে নিয়ে যাও।দেখো কি অবস্থা করছে আশেপাশে।
জুরাইন অনেক সংকোচের সাথে ত্বায়িহার হাত ধরে ওকে উপরে নিয়ে যায়,,,
ত্বায়িহাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলে।
ত্বায়িহা :ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে জুরাইন বিছানার একপাশে বসে কি ভাবছে।।
ওর পাশে গিয়ে দাড়িয়ে থাকে
জুরাইন :ত্বায়িহা কে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে যায়।
ত্বায়িহা :দু চোখ লাল হয়ে আছে,,,
এতোটা রেগে আছে।।।
তারপর মনের সুখে জুরাইনের বুকের উপর দু হাত দিয়ে কিল ঘুশি দিতে থাকে আর কান্না করতে থাকে।
জুরাইন :চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে ত্বায়িহা কে বাধা দিচ্ছে না।
কেনো বা দিবে সে যে তার অপরাধী!!!
ত্বায়িহা :জুরাইনের পাঞ্জাবির কলার্ট ধরে ওর বুকের মাঝে মুখ গুঁজে কান্না করছে।
আর বলে এভাবে আমাকে কি করে চিট করতে পারলে,,,
কেউ নিজের বউয়ের সাথে এমন পরপুরুষ হয়ে বন্ধুত্ব করে???
এমনি তো সামনে আসতে পারতেন।
কেনো আমার এতো কাছে থেকে দূরে থাকেন।
জুরাইন :কোনো উওর দিচ্ছে না।তা দেখে…
ত্বায়িহা :আপনি জানেন কতো বড় পাপ করতে যাচ্ছিলাম আমি।
আরে নিজের বর কে ভালবাসি,,
কিন্তু তা জানি না,,,
কেনো এমন করে লুকিয়ে থাকেন কিসের জন্য,,,
বন্ধু সেজে কেনো আসছেন আমার জীবন??
জুরাইন :এবার ত্বায়িহা কে নিজের থেকে আলাদা করে একটু দূরে গিয়ে দাড়িয়ে বলে,,,,
আমি তোমার জীবনে কখনো #ক্ষণিকের_বসন্ত হয়ে আসতে চায় নি।।
বাবা আমাকে বেল করিয়ে আনছে ঠিকি,,
আমি তোমার থেকে দূরে থাকতে বাড়িতে আসি নাই,,,
খামার বাড়ি সোজা চলে গেছি।।
কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস দেখো,,
সেই তোমাকেই ওখানে আমার জীবনে অচেনা বন্ধু হয়ে আসতে হলো,,,
কেউ কারো পরিচয় জানতে চায় নি যদি জানতাম তাহলে আজকের দিন দেখতে হতো না।
ত্বায়িহা :সেখানে না হয় পরিচয় জানতাম না,,,
এখানে এসে তো জানতেন আমি আপনার বউ না কি তাও জানতেন না???
জুরাইন :হুম অনুষ্ঠানের দিন রাতে রুমে এসে তোমাকে দেখে ঠিক করি,,,
তোমাকে আমার থেকে দূরে রাখবো,,,
আমার এ অন্ধকার জীবনে জড়াবো না।
ত্বায়িহা :তার মানে পরেরদিন সকালে খামার বাড়িতে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার আপনি ইচ্ছে করেই করছেন।।
জুরাইন :হুম,,সবটা তোমাকে দূরে রাখতে।
ত্বায়িহা :একবার ও ভাবলেন না যে এতোটা ক্লোজ হয়ে আমি কতোটা কষ্ট পাবো??
জুরাইন :হুম,,,
সেই জন্য দূরে থাকো কম কষ্ট লাগবে,,,
আমি আবার জেলে গেলে একা থাকতে সুবিধা হবে,,,
ত্বায়িহা :আমি আপনার ভালবাসি তা কি বোঝেন আপনি?? না কি বোঝেন না???
জুরাইন :আমাকে আমি ভালবাসা তে তো একবার ও বলি নাই,,,
কে বলছে ভালবাসতে আমাকে ঘৃণা করো,,,
আমি খুঁনি শুধু ঘৃণা পাবার যোগ্য।।।
ত্বায়িহা :হ্যা আপনি একজন খুঁনি,,
আর কোনো খুঁনিরে এই ত্বায়িহা ভালবাসাতে পারে না,,,
আপনার মতো খুঁনিকে তো শুধু ঘৃণা করা যায়।আজ থেকে তাই করবো।
জুরাইন :একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে রুম থেকে বাহিরে বাগানে গিয়ে ঘাসের মাঝে শুয়ে থাকে,,,
উপরে খোঁলা আকাশ,,,
পাশে সবুজ প্রকৃতি,,,
এই নীরবতা এরা ছাড়া আর কেউ বুঝবে না।
ত্বায়িহা :রুমের জানালার ধারে দাড়িয়ে আকাশ দেখছে,,
হঠাৎ নিচে তাকিয়ে দেখে জুরাইন মাঠের মাঝে শুয়ে আছে।।
কারণ ওদের রুমের পাশে বাগান তাই জানারা দিয়ে দেখা যাচ্ছে।।।
আজ দুজনাই নির্ঘুম রাএি যাপন করছে।।
কিন্তু কেউ কারো মনের কষ্ট বুঝতে পারছে না।
‘
‘
‘
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে যায়,,
দুজনা একি বাড়িতে থাকে,,
একি ছাদের নিচে কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলে না।
এই সুযোগ টা মীরজাফর খুব সুন্দর মতো কাজে লাগায়।
মীরজাফর রহিম মিয়াকে দিয়ে ত্বায়িহাকে তার রুমে ডেকে পাঠায়।
ত্বায়িহা :চাচাজি আমাকে ডেকেছেন???
মীরজাফর :হুম,, বউমা তোমার সাথে জুরাইন কে নিয়ে কিছু কথা বলতে চায়।
ত্বায়িহা :চুপচাপ মাথা নিচু করে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। তা দেখে..
মীরজাফর :আমি জানি তোমার একজন খুঁনির সাথে একি ছাদের নিজে থাকতে কষ্ট হচ্ছে,,
মানে লাগছে,,,
আমারো লাগছে,,
তুমি চায়লেই জুরাইন কে আবার জেলে পাঠাতে পারো
ত্বায়িহা :প্রশ্ন সূচক দৃষ্টি নিয়ে চাচাজির দিকে তাকিয়ে থাকে।
মীরজাফর :তুমি ওর বউ,,তুমি যদি চাও তাহলে আবার ও জেলে ফেরত চলে যাবে।,,,
শুধু জেলখানা তে গিয়ে বলবে জুরাইনের সাথে থাকতে তোমার ভয় কর,,,
তাহলেই হবে।বাকিটা তুমি বুদ্ধিমান তুমি বুঝবে।
ত্বায়িহা :মীরজাফরের কথা মতো ওর রুম থেকে বাহির হয়ে,,,
সোজা থানায় গিয়ে মীরজাফরের শেখানো কথা গুলা বলে বাড়িতে চলে আসে।
এদিকে সবাই হল রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছিল,,,
ঠিক সে সময় কিছু পুলিশ এসে জুরাইন কে ধরে নিয়ে যায়,,,,
জাবিন চৌধুরী বাধা দিকে গেলে,,,
পুলিশ গুলা বলে,,তার নামে নালিশ জানানা হয়ছে তাই তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি বলে নিয়ে যেতে থাকে।।।
জুরাইন :শুধু ত্বায়িহার দিকে তাকিয়ে এমন একটা হাসি দেয় সে হাসিতে যেনো ত্বায়িহার কলিজায় মোচর দিয়ে ওঠে।।
জুরাইন কে নিয়ে যাবার পর জাবিন চৌধুরী উকিলের কাছে ফোনদেয় সেখান থেকে জানতে পারে,,ত্বায়িহা নালিস করছে তাই ওকে ধরো নিয়ে যাচ্ছে
জাবিন চৌধুরী :ত্বায়িহার সামনে এসে বলে,,,
তোমাকে আমার ছেলের বউ করে আনছি ওকে বাঁচাতে,,
কিন্তু তুমি আবার তাকে সেই অন্ধকার পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলে।।
কোন মেয়ে নিজের স্বামীর জন্য এভাবে কবর খুরতে পারে ভাবা যায় না।
জেসমিন চৌধুরী :আমি জানতাম এ মেয়ে কোনোদিন আমার ছেলের বউ হবার যোগ্য ছিলোনা তা আজ আমার ছেলেকে আবার জেলে দিয়ে প্রমাই করে দিছে।।
জারা :কান্না করতে করতে বলে,,,,
ভাবী তোমার থেকে এমন কিছু আশা করি নাই।। তুমি আমার ভাইয়াকে আবার সেই জাহান্নামে রেখে আসতে পারলে।।
সবাই মন খারাপ করে নিজেদের রুমে চলে যায়।
জিরান এসে ত্বায়িহার হাত ধরে গাড়িতে করে খামার বাড়িতে নিয়ে আসে।।
গাড়ি থেকে নেমে সোজা খামার বাড়ির ভেতরে এসে দুজন দুজনার সামনা সামনি বসেে,,
তারপর বলতে শুরু করে,,,
যানো তুমি আজ যাকে জেলে পাঠালে ,,,
সে কি সত্যি খুনের আসামি কি না??
একবার ও তার সম্পর্কে জানতে চায়ছো?
না কখনো ভাইয়ার কথা শুনতে চাওনি,,
আজও জানতে চাও না তবুও বলছি।।
শোনো তাহলে,,
আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে এ কাহিনী শুরু হয়।
মা বাবা আমি জারা দাদু চাচাজি দেশে ছিলাম,, সবাই খুব খুশি কারণ ভাইয়া আজ দেশে আসবে।
তাকে আনতে এয়ারপোর্টে বড় চাচাজি আমাদের অফিসের পিএ মেঘাকে পাঠাই।।
সবাই বাড়িতে তার স্বাগতমের অপেক্ষায় ছিলাম।
(আর জানি নাহ,,তারপর বাকিটা ইতিহাস😂)
‘
‘
‘
চলবে…..