গল্পঃ ডাক্তার_বউ
পার্ট_১১_১২ শেষ
সবাই গুরুগম্ভীর ভাবে এটা নিয়ে চিন্তা করছে কি করা যায়।ছেলেটার নামে অনেক রিপোর্ট আছে।কিছু না করে ফেলে তার আগেই এটার ব্যবস্থা করতে হবে।পরে কোন ঘটনা যদি ঘটে যায় কিছু করা যাবেনা।
সবাই যার যার মনের ভাবনা প্রকাশ করছে আর আমি এক জায়গায় দাড়িয়ে ঘামতেছি।
—কিরে সাগর তুই এমন ঘামছিস কেন?
মায়ের কথা শুনে চমকে উঠেছি
–প্রচুর গরম পড়েছে তো তাই।
–তোর মাথা ঠিক আছে?
—মাথায় দিয়ে বললাম ঠিকি তো আছে।
–মাথার ওপর ফ্যান চলতেছে আর তোকে গরম লাগছে?
–গরম মনে হয় আমার ওপর রাগ করছে।
–কি সব যাতা বলছিস??কি হয়েছে তোর?
কি করে বলি আরিয়ার বিয়ের চিন্তা করছে সবাই আমার মনের ভিতরে তখন খরার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।
—কিছুনা।
বড়দের সবার কথাতে একটা কথা বুঝলাম।আরিয়ার বিয়ে দিতে হবে।না হলে সমস্যা।এখন কার সাথে দিবে এটাই ভাববার বিষয়। কারন বেশি দেরি করা যাবেনা।কিছু ঘটার আগেই সব কাজ শেষ করতে হবে।
আরিয়ার মন খারাপ।তার কত স্বপ্ন ছিল সে একদিন ডাক্তার হবে।মানুষের সেবা করবে।কিন্তু তা আর হবেনা।একটা বখাটের ভয়ে তাইবলে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিবে।খুব কান্না করতে ইচ্ছা করছে আরিয়ার।
সবার সিদ্ধান্ত হলো আরিয়ার মামাতো ভাই এর সাথে তার বিয়ে হবে।এটা শুনে আমার বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করতে পারছি।মনে হচ্ছে দিলটা বুকের ভিতর থেকে লাফ দিয়ে বেরিয়ে ফ্যানের সাথে লটকে যাবে।
আমার আর এখানে থাকা সম্ভব না।যাকে ভালোবাসি তার বিয়ে অন্য কারো সাথে হবে শুনে কি করে থাকি।কেউ থাকতে পারবেনা।
আমি আমার বাড়িতে চলে এলাম।এসে বাথরুমে ঢুকে অনেকখন গোসল করলাম।আমার যখন মন খারাপ থাকে বা কষ্ট পাই তখন অনেকখন গোসল করি।
গোসল করে বেরিয়ে।ছাদে চলে গেলাম।আকাশ ভরা তারা।সাথে থালার সমান চাদ।কিন্তু আমার কাছে তখন পুরা আকাশ অন্ধকার দেখাচ্ছে।মনে হচ্ছে চারিদিকে অন্ধকার আমার কাছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা নাই।
যা হচ্ছে তা নিরবেই মেনে নিতে হবে।মনের গহিনে তখন ভাবনার দুয়ারে চলে গেছি।সে ভাবনা রোবটিক।কোন শব্দ নেই।নিস্তব্ধ এক পরিবেশ।
হঠান শরীরে ঝাকুনি অনুভব করলাম তাকিয়ে দেখি মা দাড়িয়ে কি যেন বলছে।আমি শুনতে পাচ্ছিনা।আচ্ছা আমি কি মরে গেছি?শুনতে পাচ্ছিনা কেন কিছু??
গালের ওপর ঠাস করে একটা শব্দ হলো।এবার সব শুনতে পাচ্ছি।তার মানে বেচে আছি।
–আমাকে মারলে কেন??
–কতখন থেকে কথা বলছি।যা বলছি তা শোনা বাদ দিয়ে আবার ভাবনার জগতে যাচ্ছিস?
–আমি মরে গেছি না বেচে আছি তা ভাবছিলাম।
আরেটা থাপ্পর
–ব্যাথা লাগছে?
–হু
–তাহলে বেচে আছিস।এবার নিচে চল।
–নিচে যাবনা।অন্ধকার আকাশ দেখতে ভালো লাগছে।আকাশে চাদ নেই তারা নেই কত সুন্দর।
–মা আমার দিকে অবাক চোখে তাকাচ্ছে।
–এভাবে অবাক চোখে তাকাচ্ছো কেন??
–ভাবছি তোকে কতখন মারা লাগবে।
আরেকটা থাপ্পর।
–মা তুমি এভাবে কথায় থাপ্পর মারছো কেন??আমার লাগেনা বুঝি।
–তোক না মারলে সোজা হবিনা।আকাশে চাদ তারা সব আছে আর তুই বলিস কিছু নাই?
–সতি আছে??
আরেকটা থাপ্পর।
আমার মনে হচ্ছে কান্না শুরু করে দেই।কিন্তু ছেলে মানুষ তাই কান্না করতে পারছিনা।একটু স্যাড মুডে থাকতে চাই তাও থাকতে দিবেনা।আমি না হয় কষ্টা ঐ গুলে বলছিলাম।তাই বলে এতো মারা লাগবে?
আমার রুমে নিয়ে এসে মা বললো
–এই পান্জাবী টা পড়ে নে।
–এই রাতে কেন পড়বো?
–আরিয়ার বিয়ে আজ রাতে।তার বিয়ের অনুষ্ঠানে কি এভাবেই যাবি?
–আজকেই বিয়ে?
–হ্যা আজকেই।
–আমি যাবনা।তোমরা যাও।
–কেন যাবিনা?
–এমনি।
আরেকটা থাপ্পর
–এবার যাবি??না আরো দিবো?
–ব্ল্যাকমেইল করছো তাই যাচ্ছি না হলে যেতাম না।
–তারাতারি রেডি হয়ে নে।
বলে মা রুম থেকে বের হয়ে গেল।আমি মনের দুঃখে ছাদে একা একা দাড়িয়ে ছিলাম।বাট মা চায় দুঃখ টা আরো বেশি হোক তাই জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।
মনের সব কষ্ট নিয়ে রেডি হলাম।তারপর মায়ের সাথে।আরিয়ার বাড়িতে গেলাম।
বিয়ের সব আয়োজন শুরু হয়েগেছে।সবাল মনে তখন একটু হলেও খুশি বিরাজ করছে।আর আমার মনে কষ্টের নদি বয়ে যাচ্ছে।না কাওকে বলতে পারছি না কা্ওকে বুঝাতে পারছি।
আমি গিয়ে এক পাশে দাড়িয়ে আছি।কেউ আমার সাথে কোন কথা বলছেনা।আমি মনে মনে একটু শান্তি পেলাম।যাই হোক কষ্টের দিনে একা চুপচাপ তো থাকতে পারছি।সব আয়োজন শেষ।আরিয়াদের পরিচিত কয়েকজন লোক এসেছে।আর প্রতিবেশি কয়েকজন।
আরিয়াকে সাজিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে।নীল বেনারসি পড়ে তাকে নীল পরীর মতো লাগছে।চোখে কাজল।চোখের দিকে তাকালে যকোন ছেলে ঘায়েল হয়ে যাবে।
আচ্ছা আমি খুশি হচ্ছি কেন??এই সাজে তো আরিয়া অন্যের ঘরে চলে যাবে।তাহলে তো কষ্ট পেতে হবে আমাকে।মনটা খারাপ করে।অন্যদিকে তাকালাম।আরিয়াকে দেখবনা।
কিন্তু ঐ যে ছেলের মন কুত্তার লেজের মতো।হাজার দড়ি দিয়ে বাধলেও সোজা হয়না।তেড়ি তেড়িই থাকে।
এত সুন্দর সাজে না দেখে থাকা যায়?তাই আমি আবার তার দিকে তাকালাম।আরিয়া মাথা নিচু করে আছে।হয়তো লজ্জা পাচ্ছে।বাট আমি পাচ্ছিনা।আমি এক ধ্যানে দেখছি।আর তো কোন দিন দেখা হবেনা।তাই আজকেই দেখি মন ভরে।সারা জীবনের জন্য।
–সাগর ভাই আপনি ঐ ভাবে আমার আপুর দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?.
আরিয়ার ভাই এর কথা শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছি।এমন প্রশ্ন করবে আমি ভাবতেও পারিনি।
–তোমার আপুকে কেন দেখতে যাব??আমার কি কাজ নাই?আমি তোমার আপুর কাপড় দেখছিলাম।
–কাপড় কি অন্য কেউ পড়ে আছে?
–তোমার বোনকে দেখিনি।
–আমি তো দেখল্ম হা করে তাকিয়ে আছেন??
–কেন রে হা করে তাকিয়ে থাকলে সমস্যা?
–হ্যা।সমস্যা আমার আপুর পেট খারাপ করবে।
এই ব্যাটা আমার থেকেও বড় জিনিস।এর কাছে থাকলে মান ইজ্জত বলে কিছু থাকবেন্।সব পাংচার হয়ে যাবে।তাই তার কাছে অন্য জায়গায় গেলাম
আরিয়া বসে আছে।বাট জামাই কোথায়??কিছু বুঝতে পারছিনা।কোনটা জামাই।
কাজি সাহেব এসে গেছে।কাজি জামাই কে ডাকতে বললে।
মা আমাকে ডাকছে।
–কি হয়েছে মা?
–আরিয়ার পাশে বস
–আমি কি জন্য বসবো?
–তোর সাথে বিয়ে তাই?
–মিথ্যা কেন বলো??আমি নিজে কানে শুনেছি তার মামাতো ভাই এর সাথে বিয়ে।
–আরিয়া ওটা না করে দিয়েছে।আর তোকে বিয়ে করতে চেয়েছে।
–আমাকে??
–হ্যা।তোকে।
আমার মাথা ঘুরতেছে।মনে হচ্ছে চারিদিকে সব কিছু ঘুরতেছে।কখন যে মাথা ঘুরে পড়ে গেছি বুঝতেই পারিনি।
যখন চোখ খুলি দেখি আরিয়া সামনে দাড়িয়ে।আর তার হাতে একটা গরুর ইন্জেকশন।
চলবে………
লেখাঃSagor Islam Raj( ভালোবাসার কবি)
গল্পঃডাক্তার বউ
অন্তিম পর্ব
চোখ খুলে আরিয়ার হাতে ইন্জেকশন দেখে আমি তো ভয় খেয়ে গেছি। আমার ইন্জেকশন দিতে ভয় লাগে।আর আরিয়া ইন্জেকশন নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
–আপনি এই ইন্জেকশন দিয়ে কি করবেন??
–তোমাকে দিব।
–কেন??আমি ইন্জেকশন দেইনা।
–তুমি দাওনা তো কি হয়েছে আমি দিব।
–না আমি দিবনা।
বলে উঠে পালাতে যাব তখন আরিয়া আমাকে ধরে ফেলেছে।
–পালাচ্ছো কোথায়?
–আমার বাড়িতে যাবো।থাকবনা এখানে।
–আমিও তো যাব একটু পর তোমার বাড়িতে।
–আপনি কিজন্য যাবেন?
–ওমা শ্বশুড় বাড়িতে যাবনা তো কার বাড়িতে যাব?
–আপনি খারাপ ডাক্তার।এত বড়বড় ইন্জেকশন মানুষ কে দেন।আপনাকে কে বিয়ে করবে।
–তুমি করবে।আর এখন করবে।
–আমি করবনা।
হাতে ইন্জেকশন নিয়ে
—এটা তাহলে তোমাকে দিতে হবে।
–না আমি দিবনা।
–তাহলে এখন আমার সাথে চলো।
–কোথায় বিয়ে করতে।
—আমার বিয়ে করার বয়স হয়নি।
বলতে যা দেরি এক চড়।
–মারলেন কেন?
আরেক চড়।
—-এত চড় মারছেন কেন??
–যখন আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছি। তখন তোমার সমস্যা হচ্ছে?তোমার মতো একটা পিচ্ছি ছেলেকে আমি বিয়ে করছি।ঠিক আছে আমি আমার মামাতো ভাইকেই বিয়ে করছি। তুমি থাকো এখানে।
আমি আরিয়ার হাত ধরে ফেলেছি।
–ওই বেটার সাথে বিয়ে করতে দিলে তো করবেন।
–কে করতে দিবেনা শুনি।
–আমি করতে দিবনা।
–তুমি তো আমাকে বিয়ে করবেনা।
–কে বলছে করবনা।এখনি করবো।
আরিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বাহিরে যাচ্ছি।
–এই কি করছো?সবাই কি ভাববে।
–যার যা ভালো লাগে ভাবুক।
–আমার লজ্জা লাগছে।
–কাপড় দিয়ে মুখ ধেকে নেন।তাহলেই আর লজ্জা লাগবেনা।
আমাকে এই ভাবে আরিয়াকে নিয়ে বাহিরে আসতে দেখে সবাই হা করে আছে।মনে হচ্ছে আরিয়াকে কোলে করে নিয়েই তাদের মুখের মধ্যে ঢুকে যাই।
আমি যেভাবেই আরিয়াকে নিয়ে আসিনা কেন তাদের অবাক হবার কি আছে।
আরিয়াকে বাহিরে নামিয়ে দিলাম।তার মা তাকে নিয়ে গেল।আমি আমার জয়গাতে চলে এলাম।কাজি সাহেব তার কাজ আরম্ভ করলো।যখন কাজি সাহেব কবুল বলতে লাগলো তখন দুনিয়ার সব কথা মাথার মধ্য ঘরছে।
সাগর তোর স্বাধীন জীবন শেষ।আজ থেকে বাহিরে বেশি ঘুরতে পারবিনা।কোন মেয়ের দিকে তাকাতে পারবিনা।কাওকে ভালো লাগতে পারবিনা।কোথায় কি করছিস সব কইফিয়ত দিতে হবে।
যেখানেই যাবি সেখানেই বউকে বগল দাবা করে নিয়ে যেতে হবে।আর তুই বেশি তেড়িবেড়ি করলে তোকে গরুর ইন্জেকশন দিবে।তোর জীবন তামাতামা হয়ে যাবে।
বিয়ে সাদি করে যে অকালে মরে সে।
এসব কথা মাথার মধ্যে ঘুরছে।বিয়ে যদি যদি না করতে চাই তাহলে তিন চারটা ইন্জেকশন একবারে দিবে।ইন্জেকশন খাওয়ার থেকে বিয়ে করাই ভালো।তাই কবুল টা বলে দিলাম।
অন্য বিয়েতে মেয়ে মানুষ দেরি করে বলে।বাট আমার বিয়েতে আমি দেরি করে বলেছি।আরিয়া তো ৪জি স্পিডে কবুল বলছে।
আমি এখন থেকে ডাবল।
আমি আমার বন্ধুদের ফোন দিয়ে কান্না শুরু করলাম
–কি রে সাগর কান্না করছিস কেন?
–দোস্ত চাকরিটা চলে গেল তাই।
–চাকরি কিসের চাকরি?কি করে গেলো?
—-ঐ যে সিঙ্গেল গ্রুপের সভাপতি ছিলাম।সেটা আর নাই রে।
–নাই কেন?
–বিয়ে করছি।
–কাকে।
–আরিয়াকে।
–একবার ও বললিনা।
–মিথ্যা কথা কেন বলিস?
–কই মিথ্যা বললাম।
–মাত্রই তো বললাম।ববিয়ে করছি।আর বলছিস বলিনি।
–বিয়ের আগে কেন বলিসনি।
–বিয়ের আগে আমার বিয়ে আমিও জানতাম না।
–তাহলে কখন জানলি?
–বিয়ের পরে।
–ফাজলামু করিস?
–না না।তুই রাখ।এখন বউয়ের সাথে রোমান্স করতে হবে।
বলেই ফোন কেটে দিয়েছি।
তারপর আরিয়াকে তার বাড়ি থেকে আমার বাড়িত্র নিয়ে আসলাম।আসার সময় আরিয়ার সাথে একটাও কথা হয়নি।বাড়িতে এসে আমার রুমে ঢুকতে যাব।কিন্তু দরজা খুলছেনা।
বাহির থেকে লক করা ছিল।সেটা খুললাম বাট দরজা খুলছেনা।ভেতর থেকে লক হয়েছে মনে হয়।কিন্তু ভিতর থেকে লক হলো কি করে?ভুত টুত ঢুকেনি তো?
প্রথম দিনেই আমার রুমে ভুত।এখন কি হবে আমার।আরিয়া পাশে দাড়িয়ে।না পাড়ছি পালাতে।বউ না হলে কখন পালাতাম।বউ বলে ভুতের কাছে রেখে পালাচ্ছিনা।
আবার থাকতেও পারছিনা ভয়ে।কি করি এখন।ঘরের মধ্যে ঘুটঘাট শব্দ হচ্ছে।কেমন অল্প হাসির শব্দ পাচ্ছা।আজকে আর রক্ষা নাই।গল্পে পড়েছি রাজকুমারিদের ভুতেরা ভালো বাসতো আর তাদের কে যারা মারতে পারতো তারা রাজকুমারিদের বিয়ে করতো।
আমি তো বিয়ের আগে কাওকে মারিনি।তাহলে কি বিয়ের পরে ভুত এসে হাজির হলো।এখন কি করি?পালাবো??
পালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি এমন সময় দরজা খুলে গেল।দরজা খুলা দেখে আমি আরিয়ার কলে উঠে গেছি।দেখি আমার বন্ধুরা বের হচ্ছে রুম থেকে।
–তোরা আমার রুমে কি করছিলি?
–তোর বিয়ে আর আমরা আসবনা বল এটা হয় বল।
–তোরা সত্যি আমার বন্ধু তো??
–কেন কি মনে হচ্ছে।?
–ভুত মনে হচ্ছে।
—আমরা জীবন্ত মানুষ।তুই ভাবির কোল থেকে নাম।বেচারি হাফিয়ে গেছে।এই চিকন শরীর নিয়ে তোকে ধরে আসে।
–আমি বউ এর কোলে আছি?
-না আমার কোলে।
–তোর কোলে থাকলে আমি এই পার কেন?
–তাকিয়ে দেখ কোথায় আছিস।
তাকিয়ে দেখি আরিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আর রাগে ফুসতেছে।আমি আরিয়ার কোল থেকে নেমে তাকে নিয়ে ঘরে গেলাম
দেখি পুরা ঘর সাজানো।এই ঘর আবার কে সাজালো।
–আমরা সাজিয়েছি।
আমার বন্ধুদের কথা শুনে পিছে তাকাই।
–আমার বিয়ের কথা তোদের কে বলছে?
–তোর মা।আর আমারা এসে ঘর সাজানো তে ব্যস্ত ছিলাম।তাই তোর বিয়েতে যেতে পারিনি।
–আর আমাকে বললি কেন তোদোর বলিনি।
বলে তাদের তাড়ানি দিছি।আর ওরা পালিয়েছে।
বিয়ে বাড়ির সব কাজ সম্পন্ন।এখন ঘুমানোর সময়।
আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে।খেয়ে রুমে গেলাম।দেখি আরিয়া মাথায় ঘোমটা দিয়ে বেডে বসে আছে।আমার বুকটা কাপতেছে।বিয়ে তো জীবনের প্রথম করছি আবার সিনিয়র মেয়েকে।
আজ থেকে আমার একার বেড রুম আরেকটা মেয়ের সাথে শেয়ার করতে হবে।আমি আরিয়ার পাশে গিয়ে দুরু দুরু বুকে গিয়ে বসেছি।
অনেকখন কোন কথা বলিনি।চুপচাপ ছিলাম দুজনে।কারো মুখে কোন কথা নাই।প্রথম বিয়ে তাও সিনিয়র মেয়েকে করলে এমনি হয়।
–আপনার ঘমটা একটু সরান।
–কোন কথা নাই।
–কি হলো কিছু বলছেননা যে।
–তোমার বউ এর ঘোমটা তুমি সরাবে আমি কেন সরাতে যাবো?
–বউ এর ঘোমটা স্বামী সরাই?
–তো অন্য করে সরাই নাকি?
–আমি এর আগে বিয়ে করিনি তো তাই জানিনা।
–আমি কি আগে বিয়ে করছি?
–জানা মতে। না।
–তাহলে আমি কি করে জানলাম?
–আপনি মনে হয় বিয়ে করছিলেন আগে।
আরিয়া ঘোমটা ফেলে আমার দিকে রাগে কটমট করছে।আর একটা ইন্জেকশন বের করেছে।
–এটা আবার এখানে কেন?
–তোমার মতো ফাজিলকে ঠিক করার যন্ত্র এটা।
–আমি কি করছি??
–আমি আগে বিয়ে করছি।এটা কে বলছে?
–আমি বলেছি।
–তাহলে ইন্জেকশ কাকে দিব?
–আপনাকে দেন।শুনেছি বউ কষ্ট পেলে স্বামীকে লাগে আর স্বামী কষ্ট পেলে বউকে লাগে।
–আল্লাহ গো আমি আমি কাকে বিয়ে করেছি গো।
–কাকে আবার সাগর কে।
–তোর একদিন কি আমার একদিন।
বলেই আরিয়া আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়েছে।আর আমার ওপর ইন্জেকশন নিয়ে বসে আছে।
–আরে আরে কি করছেন এটা?
–তোর ফাজলামু দুর করবো।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
–ছিছিছি জামাই কে তুই বলছে।
–তোর জামাই এর গুষ্ঠি বেচি।তুই আর ফাজলামু করবি বল?
–করলে কি হবে?
–এই গরুকে দেয়া ইন্জেকশনটা এখন তোকে দিব।
–না না।এটা করবেননা।আমার ভয় লাগে।
–তাহলে বল আর ফাজলামি করবি?
–আর করবনা।ফাজলামু।
–আমার সামনে কান ধরে উঠ বস কর।
–পারবনা।
—দিব ইন্জেকশন?
–না না।করছি।
শালা বিয়েটাই করা ভুল হয়েছে।বাসর রাতে কোথায় রোমান্স করবো।না কান ধরে উঠবস করাচ্ছে।৩০ বার করার পর।আরিয়া থামতে বললো
–থামো।এখানে এসো।
–কি
–আমার খুদা লাগছে।খাবার নিয়ে এসো।
–রাতে খাননি?
–না।সেদিকে কি কারো খেয়াল আছে?
–আমার আছে।আপনি বসেন।আমি নিয়ে আসছি।
তারপর আরিয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম।রুমে ঢুকে দেখি কেউ নাই।ফাকা ঘর।আমার বউটা আবার পালায়নি তো?কি সব ভাবছি।আজে বাজে।
আরিয়া বাথরুম থেকে বের হলো।কাপড় চেন্জ করে।
বিছানাতে বসে অর্ডার শুরু।
–এখন খাইয়ে দাও।
আমি আগে পিছে তাকাচ্ছি।
–আগে পিছে কি দেখছো?
–দেখতেছি কাকে খাইয়ে দিতে বললেন।
–তোমাকে বলেছি।
–আমি জীবনে কাওকে খাইয়ে দেইনি।
–তো কি হয়েছে।এখন আমাকে দিবে।
তারপর আরিয়াকে খাইয়ে দিতে লাগলাম।বিয়ের প্রথম দিনেই এত কিছু করছে।বাকি জীবনে কি করবে।তার ঠিক নাই।
আরিয়াকে খাওয়ানো শেষ করে।বাথরুমে গিয়ে আমিও কাপড় চেন্জ করে।আসলাম।দেখি আরিয়া বসে আছে।
আমাকে দেখেই বললো
–এখানো বসো।
আমি গিয়ে আরিয়ার পাশে গিয়ে বসলাম।
–আজ থেকে তুমি আমাকে তুমি করে বলবে।আর আপনি করে নয়।
–ঠিক আছে তুমি করে বলবো।
–কোন মেয়ের দিকে তাকাবেনা।কারো সাথে ফাজলামু করবেনা।আর যত মেয়ে বন্ধু আছে সব বাতিল।
–এত কিছু আজ থেকেই।
–আজ থেকে মানে।এখন থেকে।
–ঠিক আছে।আমার সিনিয়র বউ যখন বলেছে।তখন রাখতেই হবে।
–এই তো গুড জামাই।
–এত কিছু শুনবো তার বদলে আমি কি পাবো?
–কি পাবে?এই নাও প্রতি দিন পাবে তাহলে।
বলেই আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার বুকের ওপর মাথা দিয়ে।আছে।আজ থেকে তুমি আমার সম্পত্তি। সো তার দেখ ভাল আমাকেই করতে হবে।
বলেই আমার ঠোঠে তার ঠোট লাগিয়ে দিছে।
আরো জানার জন্য বসে আছেন নাকি??কারেন্ট অফ হয়েগেছে।সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
সমাপ্ত
লেখাঃ Sagor Islam Raj(ভালোবাসার কবি)
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী গল্প দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।