গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ১১

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_১১
.
.
🦋
লোক গুলোকে আঘাত করার সময় প্রাণো ওই রিং পড়া আঙ্গুলটায় বেশ ব্যাথা পায়৷ হাত ঝাড়তে ঝাড়তে রুমে এসে দ্রুত ফ্রেস হয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দেখে স্মরণ গম্ভির মুখে আকাশে দিকে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণো হাসি মুখে স্মরণ কে কিছু বলতে যাবে তার আগে স্মরণ গম্ভির গলায় প্রশ্ন করে….” এতো সময় কোথায় ছিলে প্রাণ?”

” কোথায় আবার ওয়াশরুমে ফ্রেস হচ্ছিলাম৷” মিষ্টি করে হেসে বললো প্রাণো ৷

স্মরণ স্থির দৃষ্টিতে প্রাণোর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে প্রাণোকে আবার বলে উঠলো ,” তোমার ডান হাতে কি হয়েছে ? দেখেতো মনে হচ্ছে বেশ ফুলে গেছে৷ ”

প্রাণো স্মরণের কথা শুনে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি তার হাত ফুলে গেছে ৷ বিশেষ করে আঙ্গুল গুলো,

” আসলে ওয়াশরুমে ঢুকার সময় দরজায় হাতে চাপ লাগে ৷ মচকে গেছে বোধ হয়৷ ”

প্রাণো রুমে এসে লাগেজ খুলে একটা স্প্রে বের করে ৷ স্মরণ রুমে এসে দেখে প্রাণো বা হাত দিয়ে ডান হাতের ব্যাথা পাওয়া অংশে স্প্রে করার চেষ্টা করছে কিন্তু ঠিকঠাক ব্যাথার জায়গায় স্প্রে করতে পারছে না৷ স্মরণ কোন কথা না বলে প্রাণোর হাত থেকে স্প্রে টা নিয়ে নিজে স্প্রে করে দেয়৷

” থ্যান্কিউ স্মরণ ৷ ”

” ওয়েলকাম ৷ আচ্ছা প্রাণ বাইরে যাবে? জ্যোৎস্না রাত আর পরিবেশ টাও বেশ সুন্দর যাবে আমার সাথে ?”

” প্রাণো মিষ্টি করে হেসে হ্যাঁ বলে৷”

দরজা লক করে স্মরণ প্রাণো বেড়িয়ে পড়ে৷ স্মরণের ইচ্ছে করছে প্রাণো হাত টা তার হাতের মুঠোয় নিয়ে হাটতে কিন্তু সে অধিকার এখনো সে পাইনি তাই নিজের ইচ্ছে কে দমন করে হাটতে লাগলো৷ কিছু দুর যেতে প্রাণো স্মরণের হাত ধরে খুশিতে আত্তহারা হয়ে বলতে লাগলো, ” স্মরণ দেখ কতো জোনাকি৷ চারিদিক টা জোনাকির পিট পিট আলোয় চারিদিক আলোকিত হয়ে আছে৷ স্মরণ কোন দিকে না তাকিয়ে প্রাণোর দিকে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণোর হাস্যজ্জ্বল মুখ টা দেখে স্মরণ মুগ্ধ হয়ে দেখছে ৷ প্রাণো হুট করে দুটো জোনাকি পোকা হাতের মুঠোয় ধরে স্মরণের সামনে এসে বাচ্চাদের মতো করে বলে উঠলো ,” দেখো স্মরণ আমি জোনাকি পোকা ধরেছি৷ ” ধিরে ধিরে হাতের মুঠোয় খুলে দিতে জোনাকি পোকা দুটো উড়ে গেল ৷ তা দেখেই প্রাণোর মুখ অন্ধকার হয়ে গেল৷ স্মরণের প্রচন্ড অবাক লাগছে এটা দেখে প্রাণোর মতো মেয়ের ভিতর এতোটা বাচ্চামি লুকিয়ে আছে৷ প্রাণো কে মন খারাপ করতে দেখে স্মরণ বলে ওঠে ,” প্রাণ এখানে দু’মিনিট ওয়েট করো ৷ আমি এখুনি আসছি৷”

স্মরণ হুট করে কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়৷ প্রাণো স্মরণের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো৷ স্মরণ পাচঁ মিনিট পর এসে পেছন থেকে প্রাণোর চোখ এক হাত দিয়ে চেপে ধরে ৷

” প্রাণো তোমার দু’হাত এগিয়ে দেও কোন কোশ্চেন না করে৷”

প্রাণো হাত দুটো এগিয়ে দিতে স্মরণ প্রাণোর হাতে একটা কাঁচের বোয়াম তুলে দেয়৷ তারপর চোখ থেকে হাত সরিয়ে ফেলে ৷

” এবার চোখ মেলে তাকিয়ে দেখো প্রাণ৷ ”

প্রাণো চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে ওঠে৷ স্মরণ যে তার মন ভালো করতে এমন কিছু করবে তা প্রাণো স্বপ্নে ও ভাবতে পারেনি৷ কাঁচের বোয়ামে অনেক গুলো জোনাকি পোকা ৷ ছোট ছোট আলো গুলো জ্বলছে নিভছে ৷ প্রাণো কাঁচের বোয়াম টা হাতে নিয়ে স্মরণের দিকে তাকিয়ে বলল, ” তোমাকে আমি থ্যান্কিউ বলবো না স্মরণ ৷ কারণ ছোট্ট একটা থ্যান্কিউ দিয়ে তোমাকে ছোট করতে চাই না৷ জানো স্মরণ আমার মন খারাপ হলে সব সময় দাভাই আর প্রিয়ু এমন হুট হাট সারপ্রাইজ দিতো আমার মন ভালো করার জন্য,”

” উম আজ থেকে না হয় আমিও তোমার দাভাই আর প্রিয়ুর সাথে যোগ হলাম ৷”

” কিন্তু কেন স্মরণ? আমাকেই বা কেন এতো ইম্পোটেন্স দিচ্ছো?”

” ভালোবাসি বলে ”

” কিহ!”

আনমনে কথাটা বলে চমকে যায় স্মরণ৷ দ্রুত নিজেকে সামলে বলে, ” কারণ তুমি আমার বন্ধু লাইক বেস্টফ্রেন্ড ৷”

” হুম আর আমি খুব লাকি তোমার মতো এমন একজন বেস্টফ্রেন্ড হিসেবে পেয়ে৷”

” তুমি খুশি তো?”

” ভিষণ ৷ আমার জীবনের সেরা মুহূর্তের মধ্যে আজ এটার যোগ হলো সাথে তুমিও৷”

স্মরণ প্রাণোর গাল দু’টো টেনে দিয়ে বললো ,” থ্যান্কিউ সো ম্যাচ প্রাণ ৷ আমাকে এতোটা আপন করে নেওয়ার জন্য,”

” বার বার থ্যান্কিউ বলো না তো ৷ ফ্রেন্ডশিপে নো স্যরি নো থ্যান্কস ওকে৷”

” ওকে”

” চলো এখন ফেরা যাক ৷ আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে ৷ মনে হচ্ছে পেটের ভিতর ইদুর বিড়াল কাবাডি কাবাডি খেলছে৷”

প্রাণোর কথা শুনে স্মরণ দাড়িয়ে পড়ে হাসতে লাগলো ৷ স্মরণ কে দাড়াতে দেখে প্রাণো স্মরণের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো৷

রুমে এসে দেখে স্মিতা সাগর নিলয় ঐশী সাফা আকাশ হাজির ৷

” কোথায় গিয়ে ছিলে তোরা কতোক্ষণ অপেক্ষা করছি তোদের জন্য..” রেগে বলবো স্মিতা..

” বাইরে হাটতে গিয়ে ছিলাম৷ যাই হোক খাবার এনেছিস তো?”(প্রাণো)

” হুম ওইতো টেবিলের উপর রেখেছি ৷ আর স্মরণ ভাইয়া আপনার খাবারও এনেছি আপনারা খেয়ে নিন আমরা একটু বাইরে থেকে হেটে আসছি৷” (সাফা)

” ওকে তবে দুরে কোথাও যাবে না তোমরা ওকে?”

” আরে স্মরণ টেনশন করছিস কেন? আমরা ছেলেরা তো আছি নাকি!” (সাগর)

” এটাই তো ভয়ের সাগর যে তোরা আছিস ৷ তোরা না থাকলে এতোটা টেনশন করতাম না বুঝলি?”

” সালা হারামি কি বললি তুই?” রেগে গিয়ে বললো নিলয়৷

” আরে ভাইয়া রেগে যাচ্ছেন কেন? স্মরণ ফান করছে আপনার সাথে বুঝতে পারছেন না?” হাসতে হাসতে বললো প্রাণো ৷

” বাহ আপু তুমি তো দেখছি বেশ চিনে গেছো স্মরণকে?”

” আরে ভাইয়া বন্ধু তো বন্ধুকে চিনবে তাই না? এখন দ্রুত বের হোন আমি খেতে বসবো ভিষণ খিদে লেগেছে৷”

” ওকে ওকে চল সবাই দুই বন্ধু কে এক সাথে থাকতে দে তোরা৷”

সাগর ফান করতে করতে বেড়িয়ে গেল৷ প্রাণো স্মরণ দুজনে হাত ধুয়ে খেয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ গল্প করে স্মরণ চলে গেল৷

পরেরদিন সবাই নাস্তা করে বেড়িয়ে পড়লো ঘুরতে ৷ আঁকা বাঁকা পথে হাটতে লাগলো স্মরণ প্রাণো আকাশ ঐশী সাগর স্মিতা সাগর ৷

প্রাণো সারাক্ষন স্মরণের সাথে ছিলো ৷ দুজনে হাত ধরে হাটতে হাটতে হাতের ইশারায় এটা ওটা দেখাচ্ছিলো৷ হাটতে হাটতে পাহাড়ি এলাকায় ঢুকে পড়ে যেখানে প্রচুর আদিবাসীদের ঘড়বাড়ি দেখতে পায় প্রাণো স্মরণ৷ পেছন পেছন বাকিরাও আসতে লাগে৷ দুপুরে রিসোর্টে ফিরে আসে ৷

দুপুরে লাঞ্চ সেরে সবাই রেস্ট নিতে যে যার কটেজে চলে যায়৷

_______________

” সাদমান তোমাকে কতো বার বলবো প্রাণোর নাম এবাড়িতে কেউ নিবে না৷” কথা গুলো রেগে বলে খাবারের প্লেট রেখে উঠে গেল টেবিল থেকে প্রাণোর বাবা জুনাইদ কবির ৷

স্বামীকে না খেয়ে উঠে চলে যেতে দেখে রেগে নিশিতা বেগম সাদমান কে বলে, ” কি দরকার ছিলো সাদমান এখন প্রাণোর প্রসঙ্গ তোলার? মানুষটা রেগে না খেয়ে উঠে গেল৷”

” মা তুমি ও বকছো আমাকে? আর প্রাণোর কথাটা তোমরা কেউ ভেবে দেখছো না৷ ” সাদমানের কথা শেষ হতে পেছন থেকে জুনাইদ কবির হুংকার ছেড়ে বলে উঠলো , ” তোমার বোন কি আমার মান-সন্মানের কথা ভেবেছে সাদমান? আমাদের মুখে চুনকালি লাগিয়ে বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়েছে এটাকে তুমি কি বলবে?”

” বাবা আমি মানছি প্রাণো তোমাদের চোখে অন্যায় করেছে কিন্তু প্রাণো যদি বিয়েটা করতো তাহলে প্রাণো হাজার গুন বেশি অন্যায় করতো৷ ”

” মানে কি বলতে চাইছো সাদমান? বোনের দোষ লুকাতে বানিয়ে বলছো এই সব তাই না?”

” না বাবা আমি এক বর্ণ মিথ্যে বলছি না ৷ প্রাণো যদি বিয়েটা করতো তাহলে সত্যি অন্যায় করতো৷ ছোট বোনের ভালোবাসার মানুষকে বড় বোন বিয়ে করবে এটা তো অন্যায় বাবা৷ ”

জুনাইদ কবির সোফায় বসে পড়লো সাদমানের কথা শুনে, সাদমান তার বাবার পাশে বসে বলতে লাগলো, ” বাবা আমাকে প্রিয়া বিয়ের দিন সবটা জানিয়েছে৷ সাজিত ছেলেটার সাথে তিন বছর ধরে রিলেশন ছিলো কিন্তু হুট করে প্রিয়ার সাথে ব্রেকয়াপ করে ফেলে আর তারপর প্রাণোকে বিয়ে করার জন্য প্রপোজাল পাঠায়৷ প্রাণো সব টা জেনে আর বিয়ে করতে রাজি হয়নি ৷ আর পালানো ছাড়া তখন আর কোন পথ খোলা ছিলো না ৷ প্রাণো জানতো ও যদি একবার পালাতে পারে তাহলে বিয়েটা প্রিয়ার সাথে হবে৷ নিজের ছোট বোনের ভালোবাসা ছিনিয়ে নিতে চাইনি বলে পালিয়ে ছিলো প্রাণো ৷ এখন তুমি বলো প্রাণো তোমার মেয়ে কি কোন ভুল করেছে?”

জুনাইদ কবির কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থেকে উঠে দাড়িয়ে বলে, ” প্রাণোকে বাড়িতে ফিরে আসতে বল সাদমান৷ আর প্রিয়াকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা কর৷ ” এতোটুকু বলে গটগট করে হেটে নিজের রুমে চলে গেল জুনাইদ কবির ৷

সাদমান আর তার মায়ের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ৷ সাদমান দেরি না করে প্রাণোর নাম্বারে ডায়াল করে৷

প্রাণো ঘুম ঘুম চোখ মেলে তাকিয়ে ফোনের স্কিনে দাভাই নাম টা জ্বল জ্বল করে ভেষে উঠতে দেখে দ্রুত কল রিসিভ করে কানে ধরে বলে, ” হ্যালো দাভাই বলো?”

” বনু বাবা তোকে বাড়ি ফিরে আসতে বলেছে৷ ”

কথাটা শুনে প্রাণোর চোখের ঘুম মুহূর্তে ভ্যানিস হয়ে গেল ৷ দ্রুত উঠে বসে ভুল শুনলো কিনা তা যাচাই করার জন্য আবার বলে উঠলো , ” কি বললে দাভাই?”

“বাবা তোকে বাড়িতে ফিরে আসছে বলেছে প্রাণো”

” তার মানে বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে দাভাই?”

” হ্যাঁ বনু বাবা তোকে ক্ষমা করে দিয়েছে কিন্তু…..”

” কিন্তু কি দাভাই বলো আমাকে?”

” প্রিয়াকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বলেছে৷”

” ওহ এই বেপার৷ দাভাই আমি আজ রওনা দিচ্ছি বাকিটা না হয় বাড়িতে গিয়ে বুঝে নিবো৷ ”

” ওকে তাহলে রাখছি আর সাবধানে আসবি৷ ”

সাদমান কল কেটে দিয়ে অন্য নাম্বারে ডায়াল করলো৷ এদিকে প্রাণো ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে অলরেডি চারটা বেজে গেছে ৷ তাই লেট না করে ঐশী স্মিতা সাফা কে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সব জামা কাপড় প্যাক করতে বলে ৷ তারা কিছু জানতে চাইলে প্রাণো জানায় আজ তারা ফিরে যাবে তার বাবা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে৷ স্মিতা সাফা ঐশী নিজের জামা কাপড় প্যাক করে নেয় ৷ প্রাণো তার দাভাইয়ের বন্ধুর সাথে কথা বলে সব ফর্মালিটি মিটিয়ে নিয়ে কটেজে ফিরে এসে দেখে নিলয় আকাশ সাগর স্মরণ তারাও ব্যাগ প্যাক করে নিয়ে দাড়িয়ে আছে৷
প্রাণো ভ্রু যুগল কুচকে স্মরণ কে প্রশ্ন করে,” তোমরা কি কোথাও যাচ্ছো?”

” হ্যাঁ, আমরা আজ ঢাকা ফিরে যাচ্ছি ৷ আমার একটা ইম্পট্যার্ন্ট কাজ পড়ে গেছে তাই যেতে হচ্ছে৷ ”

” ওহ আমরাও তো আজ ফিরে যাচ্ছি ৷”

” গ্রেট তাহলে এক সাথে যাওয়া যাবে কি বলো?”

” একদম ৷ আচ্ছা তোমরা দাড়াও ওদের ডেকে আনছি আমি৷”

প্রাণো রুমে গিয়ে তাদের লাগেজ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে ৷ সাদমানের বন্ধু ওদের রিসোর্টের একটা গাড়ি দেয় ৷ সেটাতে করে সবাই বাস স্ট্যান্ডে পৌছে যায়৷ স্মরণ প্রাণোদের দাড়াতে বলে নিজে গিয়ে সবার জন্য টিকেট কেটে আনে ৷ প্রাণো স্মরণকে তাদের টিকিটের টাকা দিতে চাইলে স্মরণ প্রচন্ড রেগে যায় তাই প্রাণো আর কথা বাড়ায় না৷ স্মরণ প্রাণো, নিলয় সাফা, আকাশ ঐশী , আর সাগর স্মিতা জোড়া হয়ে বসে৷ স্মরণ প্রাণোর সিট টা জানালার সাইডে দিলো৷ গাড়ি আটটায় ছাড়বে হাতে এখনো পনেরো মিনিট বাকি বিধায় স্মরণ বাস থেকে নেমে গিয়ে চিপস বিস্কুট চকলেট ড্রাই কেক আচার আর পানির বোতল কিনে নিয়ে আসে৷

” স্মরণ এত কিছু কিনলে কেন?”

” তোমার জন্য, তুমি তো বাসে এগুলো খেতে পছন্দ করো তাই না?”

” হ্যাঁ কিন্তু তুমি জানলে কি করে? এটা বলো না এখানে আসার সময় তুমি দেখেছো বা জেনেছো৷ কেননা আমি বান্দরবান আসার সময় তো এগুলো খাইনি আর না কেনার সময় ছিলো তাহলে ?”

স্মরণ শুকনো ঢোক গিয়ে বলে,” আরে এতো সিরিয়াস হচ্ছো কেন? মেয়েরা তো এগুলো পছন্দ করে তাই আনলাম ভাবলাম তুমি ও পছন্দ করো ৷ এগুলো নিয়ে আসলে যে এতো প্রশ্নের সম্মক্ষিণ হতে হবে জানলে মটেও নিয়ে আসতাম না৷”

” ইস বললেই হলো হু এগুলো যেহেতু আমার জন্য নিয়ে এসেছো তখন এগুলো আমি নিবো৷ ” বলে প্রাণো চিপস বিস্কুট চকলেট ড্রাই কেক আচার পেকেট গুলো নিয়ে নিলো৷

প্রাণোর আড়ালে হাসলো স্মরণ৷ অন্যদিকে স্মিতা প্রাণো স্মরণের কথা শুনে সাগর কে প্রশ্ন করে বসলো,” সাগর স্মরণ ভাইয়া কি প্রাণোকে ভালোবাসে? নাহলে এতো খেয়াল তো কোন বন্ধু রাখে না যদি না সে তাকে ভালোবাসে৷”

” আমি শিওর বলতে পারছি না তবে আমার ও মনে হয় স্মরণ প্রাণো আপুকে ভালোবাসে৷” স্মিতাকে সত্যি টা বলবে না বিধায় কথাটা ঘুড়িয়ে বললো সাগর…

” প্রাণোকে আপু বলা শুরু করলে কবে থেকে সাগর?”

” এখন থেকে, স্মরণ যেহেতু প্রাণোকে ভালোবাসে তোমার কথা অনুযায়ী তখন তো তাকে সন্মান দেওয়াটা স্মরণের বন্ধু হয়ে আমাদের কর্তব্য৷ আর ওদের বিয়ের পর ভাবি বলবো৷”

“বাহ! কিন্তু যাই বলো না কেন আমি প্রাণোর জন্য স্মরণ ভাইয়া চোখে অফুরন্ত ভালোবাসা দেখেছি৷ আমি শিওর স্মরণ ভাইয়া প্রাণোকে ভালোবাসে আর সেটা খুব তাড়াতাড়ি সবার সামনে আসবে দেখো তুমি, ”

” ঠিক আমাদের টার মতো তাই তো?”

” ধ্যাত!”

কিছুক্ষণ পর বাস ছেড়ে দিতে বাসের পেছন পেছন সেই পাচঁজন লোক ছুটে এসেও বাস ধরতে পারলো না তাই বাধ্য হয়ে তাদের ম্যাম এর নাম্বারে ডায়াল করলো……
.
.
.
#চলবে……….
[ আসসালামু আলাইকুম…
সত্যি বলতে আমি ভিষণ ভাবে হতাশ আপনাদের উপর রিডার্স৷ এতো কষ্ট করে লিখি অথচ আপনাদের কোন রেসপন্স পাই না৷ না রিয়েক্ট না কমেন্ট ৷ এভাবে চলতে থাকলে আমি গল্প দেওয়া অফ করে দিবো যেখানে আপনাদের রেসপন্স পাচ্ছি না সেখানে লিখে নিজের সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না৷]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here