চন্দ্ররঙা_প্রেম_২ পর্ব ১৪

#চন্দ্ররঙা_প্রেম_২
#পর্বঃ১৪
#আর্শিয়া_সেহের

পুরো রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা। বিথী একধ্যানে তাকিয়ে আছে শানের দিকে। বহু আকাঙ্ক্ষিত কিছু পেলে মানুষের চোখমুখ যেমন জ্বলজ্বল করে তেমনটাই হয়ে উঠছে বিথীর মুখ। হুট করেই বিথী উঠে এসে শানের বুকে আছড়ে পড়লো। বুকের মধ্যে আটকে থাকা কান্নারা দলা পাকিয়ে বেরিয়ে এলো। শানের শার্ট আঁকড়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে ফেললো বিথী। শান এখনো বিথীর এই অবস্থা মেনে নিতে পারছে না। এতো গুলো বছর পর প্রিয় বান্ধবীকে এই অবস্থায় দেখে শানেরও অনেক কষ্ট হচ্ছে। সে বিথীর মাথায় হাত রাখলো।

রুশান আর উর্বিন্তা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শান আর বিথীর দিকে। রুশান তো ভেবেই নিলো যে এই মেয়েটি তার দুলাভাইয়ের প্রাক্তন। উর্বিন্তা বাচ্চাটাকে মেঝে থেকে কোলে তুলে নিলো। বাচ্চাটার বয়স হয়তো দুই-আড়াই বছর হবে। বাচ্চাটা একদম শান্ত হয়ে উর্বিন্তার বুকের সাথে লেপ্টে আছে। মা ছাড়া অন্য কারো ছোঁয়া হয়তো সে প্রথম পেয়েছে।

রুশান গলা খাঁকারি দিয়ে শানকে ডেকে উঠলো,
-“দুলাভাই?”
শান মাথা ঘুরিয়ে রুশানের দিকে তাকালো। রুশানের সামনে একটা মেয়েকে এভাবে ধরে বসে থাকাটা হয়তো আপত্তিজনক ব্যাপার কিন্তু যেখানে মেয়েটি তার বেস্ট ফ্রেন্ডদের একজন সেখানে কোনো আপোষ নেই। শান চোখের ইশারায় রুশানকে তার পাশে বসতে বললো। রুশান এগিয়ে যেতে যেতেই বিথী শানকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। মেঝের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললো,
-“আমার মেয়ে,আমার মেয়ে কই? কোথায় গেলো আমার বিন্দু?”

উর্বিন্তা এগিয়ে এলো বিথীর দিকে। ধীর কন্ঠে বললো,
-“এই যে আপনার মেয়ে,আপু। আমার কোলে।”
বিথী মাথা তুলে তাকালো। তার চিৎকারে মেয়েটা হতভম্ব হয়ে গেছে । বিথী উঠে দাঁড়িয়ে বিন্দুকে কোলে নিলো। বিন্দু চুপ করে পড়ে রইলো মায়ের বুকে। বিথী শানের সামনে বসে পড়লো। ঝরঝর করে কেঁদে উঠে বললো,
-“ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে শান। আমার ছেলেটাকে বাঁচাতে পারিনি আমি। আমার বৃত্তটাকে আমার কোল থেকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো ওই পাষন্ড লোকটা। নিজের বাচ্চা ছেলেটার প্রতিও কোনো মায়া জাগে নি ওর। মেয়েটাকেও কেড়ে নিবে তিনবছর হলে। আমাকে জিন্দা লাশ বানিয়ে দিয়েছে ওই নরপশুটা।”

শান বিথীর চোখের পানি মুছিয়ে দিলো। গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
-“আমি তোর কাছে কিছু শুনতে চেয়েছি এখন? চুপ করে থাক। মেয়েটাকে আমার কোলে দে। ”
বিথী চুপচাপ শানের কোলে তুলে দিলো বিন্দু কে। শান উর্বিন্তার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ওকে ধরে বাইরে নিয়ে এসো। ”
রুশান একটু জোর পায়ে হেঁটে শানের পাশে এলো। ফিসফিস করে বললো,
-“ইনি কে দুলাভাই?”
শান বিথীর দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলো,
-“প্রায় সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বেস্ট ফ্রেন্ড। যে ভালোবাসা, বন্ধু সব হারিয়ে নিজেও হারিয়ে গিয়েছিলো ।”

রুশান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। তার ধারনা ভুল হয়েছে এতেই সে খুশি। উর্বিন্তা বিথীকে ধরে বাইরে নিয়ে এলো। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়। ওরা বাইরে আসতেই দেখলো রাফিন হাঁপাতে হাঁপাতে ফিরে এসেছে। রুশানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ওরা খুব পরিকল্পনা করে এই জায়গা বেছে নিয়েছিলো। এদিক দিয়ে পালানোর অনেক রাস্তা। জঙ্গলটাও বেশ গহীন। তিনজন চ্যালাপ্যালা ছাড়া কাউকে ধরা যায়নি। ওদের ধরাটা এবার আরো টাফ হবে রুশান।”

-“আমরা এর শেষ অবধি দেখবো স্যার। ওদেরকে তো ধরবোই। ওদের থেকে অনেক কিছুর হিসেব নেওয়া বাকি রয়ে যাবে নইলে।”
রুশান ক্ষীণ কন্ঠে জবাব দিলো।
রাফিন বাড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ভেতরে কিছু পেয়েছো?”
রুশান চোখ বন্ধ করে ফেললো। তারপর একদমে যা দেখেছে সবটাই বললো এবং বিথীকেও দেখালো। বিথী তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে । জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে রুশানের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,
-“তোমরা জীবিত কোনো বাচ্চা উদ্ধার করোনি? শুধুমাত্র মৃত বাচ্চা দেখেছো?”

রুশানেরও এবার টনক নড়লো। আসলেই তো , জীবিত বাচ্চাগুলো কোথায়? ওরা তো কোনো বাচ্চা সাথে নেয়নি তাহলে বাচ্চারা কোথায় গেলো?

রুশানের ভাবনার মাঝেই বিথী এগিয়ে এলো তার দিকে। ক্লান্ত চোখে মৃদূ হেঁসে বললো,
-“আমি জানি তোমরা পাওনি। আমার সাথে এসো।”
বিথীর পিছু পিছু সবাই আবার ভেতরে গেলো। উর্বিন্তাকে যেখানে বেঁধে রেখেছিলো ঠিক সেখানে এসে দাঁড়ালো বিথী।
রুশানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“এখানে বাঁধা অবস্থায় কে ছিলো?”
রুশান উর্বিন্তার দিকে ইশারা করে দেখালো। বিথী উর্বিন্তাকে ডেকে বললো,
-“গোল ফ্রেমের চশমা পড়া লোকটা কোথায় বসে ছিলো‌ শেষ পর্যন্ত? দেখেছো তুমি?”
উর্বিন্তা আঙ্গুল দিয়ে তার‌ সামনে থাকা একটা চেয়ার দেখালো। বিথী ব্যাস্ত পায়ে সেখানে গিয়ে চেয়ারের নিচে হাত দিলো। সেকেন্ড পাঁচেকের মধ্যেই একটা চাবি বের করে আনলো।

শান কপাল কুঁচকে এগিয়ে এসে বললো,
-“এই চেয়ারে চাবি আছে কিভাবে জানলি? এই রুমে তো‌ প্রায় বিশ-পঁচিশটা চেয়ার আছে।”
বিথী ব্যাথিত চোখে তাকালো। ছেলেটাকে বাঁচানোর জন্য সে এই দলের কাছে ভালো সাজার নাটক করেছিলো। সেভাবেই সবটা জানে সে। বিথী কান্না লুকিয়ে বললো,
-“একবার দেখেছিলাম সে যে চেয়ারে বসে সেই চেয়ারের নিচে চাবি আটকে রাখে।”
রুশান ফট করে প্রশ্ন করলো,
-“সে টা কে?”
বিথীর চোখে মুখে ঘৃনা ফুটে উঠলো। চোখ বুজে বললো,
-“আমার স্বামী। মিস্টার রাশেদ হাসান।”

রুশান এগিয়ে গিয়ে বিথীর হাত থেকে চাবি নিলো। জিজ্ঞেস করলো,
-“কোথাকার চাবি এটা?”
-“আমাকে যে রুমে পেয়েছেন তার পেছনের রুমের চাবি।”
রুশান দ্রুত হেঁটে সেই রুমের দিকে গেলো। দরজা খোলার সাথে সাথেই দু-একটা বাচ্চা মৃদু চিৎকার করে উঠলো। রুশান দেয়াল হাতড়ে সুইচ অন করে লাইট জ্বাললো। চল্লিশের উপরে বাচ্চা এই রুমে। বিথীসহ সকলেই পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে ততক্ষণে।
বিথী বাদে সবাই এতো গুলো বাচ্চাকে দেখে থ হয়ে গেছে। বাচ্চাগুলোর চোখেমুখে আতংক। কেউ আম্মু আম্মু করে কাঁদছে। কেউ বা চিৎকার করছে ওদেরকে দেখে। রুশান বিথীর দিকে তাকিয়ে বললো,
-“রুমটা সাউন্ড প্রুফ?”
বিথী হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো।

রাফিন এগিয়ে এলো ভেতরে। বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“তোমরা ভয় পেয়ো না । সবাই চুপ করো। আমরা তোমাদেরকে চকোলেট কিনে দিবো। তোমাদেরকে একটুও মারবো না।”
চকোলেটের কথায় কেউ কেউ থামলেও সবাই থামলো না। তিন- চার- পাঁচ বছরের বাচ্চারা বাবা-মা ছাড়া বোঝে কি? তাদেরকে কি আর চকলেট দিয়ে বাবা-মা ভোলানো যায়?
রাফিন রুশানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“এখানে আমি এবং কিছু পুলিশ থাকছি। তোমরা চলে যাও। থানায় জানিয়ে দাও যারা যারা বাচ্চা মিসিং কেস করেছে তারা যেন সকালে থানায় উপস্থিত থাকে।”
-“ওকে স্যার।”

রুশান উর্বিন্তা,শান,বিথী আর বিন্দুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। আজ অনেকদিন পর, না অনেক বছর পর বিথী প্রকৃতির বুকে হাঁটছে। কতশত দিন সে একটা রুমে কাটিয়ে দিয়ে এসেছে। ভাবতেই পারেনি আবারও পৃথিবীকে কাছ থেকে দেখা হবে তার, হাঁটা হবে চিরচেনা পথে,দেখা হবে প্রিয়দের সাথে।

বিথীকে দেখে শানদের বাড়ির প্রত্যেকেই অবাক । সবাইতো ভেবেছিলো বিথী ইচ্ছে করেই দূরে চলে গিয়েছে। কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি যে বিথীর সাথে এতো খারাপ কিছু হয়েছে।
রাত প্রায় দশটা বাজে। একটু আগেই রুমঝুম হসপিটাল থেকে বাড়িতে এসেছে। মাহিমের অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো। ছেলেটার বয়স কম হলেও সে বেশ শক্ত। ভয়ভীতি একটু কমই আছে তার।

রুমঝুম বাড়িতে এসেই বিথীকে দেখে বেশ‌ অবাক হয়ে গেলো। প্রথমে ভাবলো দেখার ভুল। যখন সত্যি সত্যি বুঝলো এটা বিথী তখন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো বিথীকে। আবেগাপ্লুত হয়ে বললো,
-“কোথায় চলে গিয়েছিলে আপু তুমি? সবাই কত মিস করেছে তোমাকে জানো? এভাবে হারিয়ে যায় কেউ? ”

বিথীর কোলে বিন্দু ঘুমিয়ে আছে। তার দিকে একপলক তাকিয়ে বললো,
-“হারাতে চাইনি বোন,হারাতে হয়েছে। কোনোকিছু না ভেবেই নিয়ে নেওয়া একটা সিদ্ধান্ত আমার জীবনটাকেই ওলটপালট করে দিয়েছে। সেদিন এখান থেকে যাওয়ার পরই আমার কালো জীবনের শুরু হয়েছিলো। যদিও সেই কালো ছায়া আমার উপরে পড়েছিলো তোমার জন্মদিন পালন করলাম যেদিন সেদিন থেকেই।”

শান রুমঝুমকে ধমক দিয়ে বললো,
-“এসব পরে শোনা যাবে। হসপিটাল থেকে এসেছো,আগে ফ্রেশ হও যাও। ওকে রেস্ট করতে দাও।”
রুমঝুম মুখ ভেঙচি দিয়ে বিথীকে ছেড়ে দাঁড়ালো। সাঁঝ একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। বিথীর চোখ সাঁঝের দিকে পড়তেই সে আস্তে করে বললো,
-“মাশাআল্লাহ।‌ আমাদের জুনিয়র রুমঝুম। দেখেই বোঝা যায় মেয়েটা কার। আদুরে পুতুল।”
রুমঝুম হেঁসে সাঁঝকে বললো,
-“আন্টির কাছে বসো সোনা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।”
সাঁঝ নাচতে নাচতে গিয়ে বিথীর পাশে বসে পড়লো। বিথী মমতা ভরা চোখে চেয়ে আছে সাঁঝের দিকে। তার ছেলেটা থাকলে আজ সাঁঝের মতোই হতো বা সাঁঝের চেয়ে একটু বড় হতো। সাঁঝের দিকে তাকালে তার ছেলেটার কথা একটু বেশিই মনে পড়ছে।

রুশান উর্বিন্তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তনিমের সাথে দেখা করতে গেছে। তনিম কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবে না এটা বেশ ভালো করেই জানে রুশান। আসল ব্যাপারটা জানার জন্যই তড়িঘড়ি করে যাচ্ছে তনিমের বাড়িতে।

উর্বিন্তা রুমে ঢুকে ব্যাগ নামালো পিঠ থেকে । সেই প্রথম থেকেই ব্যাগ এভাবে পিঠে চাপিয়ে রেখেছিলো। দুপুর থেকে এই রাত অবধি সেভাবেই আছে ব্যাগ। উর্বিন্তা ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করলো। সাথে সাথেই স্ক্রিনে ভেসে উঠলো একশত আঠারোটি মিসড কল এবং দুই শতাধিক ম্যাসেজ যা তার মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং নাম্বারে পাঠিয়েছে শান্ত।

শান্ত পাগল হয়ে গিয়েছিলো উর্বিন্তার সাথে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে না পেরে। এগুলাই তার প্রমাণ। উর্বিন্তা শান্তর পাঠানো শেষ এসএমএস টা দেখলো। সেখানে লিখেছে, ‘ তুমি যখন এই ম্যাসেজ,কলগুলো দেখবে তখন আমাকে একটা কল দিও, উর্বি।তোমার সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে। তোমার ফোনের অপেক্ষায় রইলাম।’

উর্বিন্তা স্ক্রিনে হাত ছুঁইয়ে মুচকি হাসলো। বিরবির করে বললো, “পাগল একটা।”

-“তনিম তুমি কিভাবে পারলে এমন কাজ করতে? তুমি ওদেরকে কিভাবে বলে দিলে ডিআইজি স্যার আমাদেরকে হেল্প করছে সেই কথা? আজ যদি উর্বিন্তার কিছু হয়ে যেতো?তার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী থাকতে তুমি।”
তনিম রুশানের হাত ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,
-“আমি কিছু বলিনি স্যার। আমি কাউকে কিছু বলিনি। আমাকে বিশ্বাস করুন।”
রুশান তনিমের হাত ছাড়িয়ে বললো,
-“ওরা নিজ মুখেই বলেছে তুমি ওদেরকে এসব জানিয়েছো সেটা।”

তনিম দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রুশান তাকে ভুল বুঝছে এটা মানতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তার। রাস্তার পাশের নিয়ন আলোয় তনিমের মুখটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে রুশান। তনিমের মুখ রক্তিম হয়ে উঠছে। কান্না চেপে রাখছে এজন্যই হয়তো। রুশান মুচকি হেঁসে এগিয়ে এলো। তনিমের দু’কাঁধে হাত রেখে বললো,
-“আমি আমাকে যতটা বিশ্বাস করি,ঠিক ততটা তোমাকেও বিশ্বাস করি তনিম। আমি জানি তুমি কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।”

তনিমের এতক্ষণে বুকটা হালকা হলো। বুক ভারী হয়ে ছিলো এতোটা সময়। জোরপূর্বক হেঁসে বললো,
-“আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম স্যার। আমি ভেবেছিলাম আপনি সত্যিই আমাকে ভুল বুঝেছেন, বিশ্বাসঘাতক ভাবছেন।”

-“তুমি আমাকে সকালে কি বলতে চেয়েছিলে তনিম?”
তনিম সকালের কথা মনে করলো। তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো,
-“গতপরশু রাতে আমি বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে ডিআইজি স্যারের সাথে কথা বলছিলাম। এই কেসের ব্যাপারেই কথা হচ্ছিলো। কথা শেষে যখন আমি ফোন কেটে দিলাম তখন আমাদের গেটের আবডালে একটা ছায়ামূর্তি দাঁড়ানো দেখলাম। আমার সাথে চোখাচোখি হতেই দৌড়ে পালালো সে। বেশভুষা পাগলের মতো ছিলো। তাই আমি আর পাত্তা দেইনি ব্যাপারটায়। কিন্তু গতকাল সারাদিন আমি যখন এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবলাম তখন মনে হলো ওই লোকটা পাগল ছিলোনা। ওর হাতে কিছু একটা ছিলো। কিন্তু আমি মিলাতে পারছি না কোনো উত্তর। তাই মনে হলো এটা আপনাকে জানানো উচিৎ।”

রুশান বেশ‌ কিছুক্ষণ ভাবলো । তারপর তনিমকে বাড়িতে যেতে বলে নিজেও উল্টো পথে হাঁটা ধরলো।‌ তনিম পিছু ডাকলো। এগিয়ে এসে বললো,
-“আজকে আপনারা যে লোকেশনে গিয়েছিলেন ওই লোকেশন থেকে আরো কিছুটা সামনে হেলাল উদ্দিনের শ্বশুরবাড়ি।”

রুশান কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর হঠাৎ করেই ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটালো। হাঁসি ধরে রেখেই বললো,
-“অংক তাহলে মিলে গেলো। এখন অপরাধীদের ধরতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। তুমি বাড়িতে যাও তনিম। আগামীতে কি কি করতে হবে আমি বলে দিবো।”

রুশান চলে গেলো। তনিম আরো কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। আজকে তার দরকারি আরো একটা কথা বলার ছিলো। কিন্তু কিভাবে বলবে বুঝে উঠতে পারেনি সে। কোনো প্রেমিকের সামনে তার প্রেমিকার বিয়ের কথা চলছে একথা বলা খুব একটা সহজ নয়।

চলবে……….

(তোমরা তানিমকে ভুল বুঝলা জনগন? 😒 ক্যামনে পারলা , ক্যামনে?? )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here