ছায়া হয়ে থাকবো পাশে পর্ব -৯+১০+১১

#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ০৯)
#Humayra_Khan
.
.
.
আবিরঃ সত্যি চারু তুমি বানিয়ে দিবে??
দিশাঃ কোন দরকার নেই চারু এ-ই শয়তানটার জন্য ক্ষির বানানোর।
আবিরঃ এই তুমি বানাবে না মানলাম।চারু বানাতে চাচ্ছে ওকে মানা করছো কেন???
তুমার সম্যসাটা কি???
আহানঃ আবার শুরু হয়ে গেল দুই জনে।
চারু তুমি রান্না কর তো।
দিশাঃ কি দরকার ভাই রান্না করার। উনি যা বলবে তাই করতে হবে নাকি। এতোই খেতে ইচ্ছে হলে সেই রান্না করে খেয়ে নিক।
আহানঃ উফফ ভাবি আমি ভাইয়ার জন্য বলছিনা আমি আমার নিজের জন্য বলেছি।আমারও ক্ষির খেতে ইচ্ছে করছে অনেক।
দিশাঃ আচ্ছা ভাইয়া তাহলে আমিই বানিয়ে দিচ্ছি।
আবিরঃ এই তোমার রান্না করতে হবেনা ক্ষির। আল্লাহই জানে খাবারের সাথে যদি বিষ মিশিয়ে আমাকে মেরে ফেল।আমি এতো পিচ্চি বয়সে মরতে চাইনা।
দিশা ঃওয়াট আপনি পিচ্চি। নাইস জোক
আবিরঃ আমি পিচ্চি নয় তো কি। তুমার মতো বুড্ডি নাকি???
আবির এর কথায় শুনে বেশ রেগে মেগে যায় দিশা
রাগে ঠেলায় আবিরকে কিছু বলতে যাবে চারু চেচিয়ে বলে উঠে —
চারু ঃ ভাবি তোমার রান্না করতে হবেনা।আমিই রান্না করব।
আবিরঃ হ্যা চারু তুমি রান্না করো আমার জন্য।
তাছাড়া তোমার হাতের খাবারের সাথে কারো তুলনা হয়না।
দিশাঃ তোকে তো আমি এমন উচিত শিক্ষা দিব আজ।
যে তুই এই দিন জীবনেও ভুলবিনা।(আবির এর দিক এ রাগি দৃশটিতে তাকিয়ে)।আনমনে
আচ্ছা চারু তুমিই রান্না কর তাহলে।
তারপর চারু রান্না ঘরে গিয়ে রান্না করতে শুরু করে।
আহান রান্না ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে ওর মোবাইল বের করে একটা গান প্লে করে…….
hume tumse pyar kitna…
Ye hum nehi jante…..
Magar ji nehi sakte….
Tumha re Bina aaa….
সেই গানের তালে তালে আহান ও জোরে জোরে গাইতে থাকে।।
দিশাঃ কি ভাইয়া কারও প্রেমে টেমে পরলে নাকি(হেসে)
দিশার কথা শুনে আহান পিছনে ঘুরে তাকায়।
আহানঃ উফফ কি লজ্জা ভাবি আমার পিছনে ছিল আর আমি বোকার মতো খেয়াল ও করিনি।আনমনে।
আহানঃ কি যে বলো না ভাবি।আমি তো এমনি গাইছিলাম।
আচ্ছা ভাবি তুমি চারুকে গিয়ে হেল্প কর আমি ভাইয়ার কাছে যাই।
কথাটি বলে চলে আসে আহান সে খান থেকে।
রুমে ভিতরে ডুকে-
ভাইয়া ভাইয়া…..
আহানঃ এই ভাইয়া কোথায় গেল??।
আচ্ছা ভাইয়া নেই রুমে আমি না হয় এখন ই ওই টেক টিক টা কাজে লাগাতে পারি।দেখি কোন কাজ হয় কিনা???
কথাটি বলে আহান পকেট থেকে কাজলের কৌটাটা বের করে।
কৌটা টা যখনি খুলতে যাবে-
আহানঃ এই সব বাচ্চামি করা কি ঠিক হবে আমার?
কিন্তু আমি তো চারুকে অনেক ভালোবাসি আর ওর জন্য সব পাগলামি করতে রাজি।এইটা তো কিছুই না
চারুর জন্য এ-র চেয়েও বেশি পাগলামি করতে রাজি আছি আমি।কথাটি বলে কৌটা টা খুলতে যাবে-
আহানঃ কিন্তু আমি তো চাই আমি যেমন আছি চারু আমাকে সেই ভাবেই এক্রচেপট করুক। আমার এই ফেস টাকেই ভালো বাসুক। আর আমার বিশ্বাস সেই দিন খুব জলদিই আসবে আমার জীবন এ।
কথাটি বলে আহান কাজলের কৌটা টা ডাস্টবিন এ ফেলতে যাবে সেই মুহূর্তে ওর মোবাইলে কারও ফোন আসলে আহান ভুলক্রমে কৌটা টা ড্রেসিংটেবিল এর উপর ই রেখে চলে যায় রুম থেকে বের হয়ে।
আহানকে ডাকতে দিশা রুমে আসলে খেয়াল করে আহান আবির কেউ রুমে নেই।
তাই দিশা রুম থেকে চলে যেতে নিলে হঠাৎ ড্রেসিং টেবিল এর উপর চোখ পরে ওর।ড্রেসিং টেবিলে কাজলের কৌটা টা হাতে নিয়ে-
দিশাঃ বাচ্চা দের দেওয়া কাজলের কৌটা টা এ-ই খানে আসল কিভাবে কে নিয়ে আসছে???
উফফ যেই নিয়ে আসুক তাতে আমার কি।
কথাটি বলে দিশা রুম থেকে চলে যেতে নিলে।
দিশাঃ ওয়েট দিশা ওয়েট এই কাজল টা তোর কাজে আসতে পারে।আর হয়ত এইটা কারো এখন লাগবেনা তাই এই ভাবে ফেলে রেখেছে এই খানে।
কথাটি বলে চারু কাজলের কৌটা টা নিয়ে চলে যায় রুম থেকে।
দিশা রুম থেকে বের হয়ে রান্না ঘরে আসলে-
দিশাঃ কি চারু ক্ষির রান্না করা হয়ে গেছে তোমার??
চারু ঃ জ্বি ভাবি। এখন শুধু সবাইকে বেরে দেওয়া বাকি।
দিশাঃ ওও। তাহলে সেইটা আমি করে নিব নে চারু
এমনিও তুমি রান্না করতে করতে অনেক ক্লান্ত হয়ে পরেছো তাই তোমাকে আর কিছু করতে হবেনা।তুমি যাও আমি ক্ষির টা নিয়ে আসছি সবার জন্য।
চারু ঃ না ভাবি আমি ক্লান্ত হই নি সত্যি বলছি।
দিশাঃ চারু। ভাবির কথা শুনবেনা?(কোমড়ে হাত রেখে)
চারু ঃ হ্যা গো আমার আদরের ভাবি শুনব তোমার কথা।তুমি নিয়ে আসো তাহলে আমি যাচ্ছি।
তারপর চারু চলে আসে রান্না ঘর থেকে.
চারু রান্না ঘর থেকে চলে আসলে।
দিশাঃ আজ মিঃআবির আমাকে অনেক বেশি জ্বালিয়েছে তার পাওনা তো তাকে দেয়াই লাগবে।
কথাটি বলে দিশা একটা ক্ষির এর বাটির উপর এক চামচ মরিচের গুড়া মিশিয়ে দেয়।
হি হি আজ অনেক মজা হবে বলেছিলাম না কাদিয়ে ছারব আজ।
কথাটি বলে দিশা ক্ষির নিয়ে বের হয়ে পরে রান্না ঘর থেকে।
দিশাঃ ক্ষির রেডি……..
আবিরঃ ইসস যেমন করে বলছে মনে হচ্ছে ক্ষির টা নিজেই বানিয়ে আনছে সবার জন্য (মুখ বাকা করে)।
দিশাঃ আমি না বানালে কি হয়েছে আমি আমার প্রিয় স্বামী কে আজ আমার নিজ হাতে খাইয়ে দিব।
কথাটি বলে দিশা মরিচের গুড়া মিশানো ক্ষির এর বাটিটা নিয়ে আবির এর সামনে গিয়ে আবির কে নিজ হাত দিয়ে খাওয়াতে যাবে –
আবিরঃ না বাবা না। তোমার হাতের কোন কিছুই খাবনা আমি।আল্লাহই জানে কি মিশিয়ে নিয়ে আসছো।
দিশাঃ আপনি কি পাগল আমি কি মিশাব ক্ষির তো চারুই রান্না করছে।
আবিরঃ জানি।কিন্তু আমি অন্য বাটির ক্ষির খাব।তোমার হাতের টা না।
কথাটি বলে আবির অন্য একটা ক্ষির এর বাটি নিয়ে খাওয়া শুরু করে।
একটু পর আহান ডায়নিক টেবিলে আসলে —
আহানঃ কি অবস্থা?? সবাই দেখি আমাকে রেখেই ক্ষির খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। থিস ইস নট ফের।
দিশাঃ সবাই না ভাইয়া শুধু তোমার এই রাক্ষস ভাইটা।
আজ আমি বললাম আমি নিজ হাতে খাইয়ে দেই আপনাকে ক্ষির। সে আমাকে কতো গুলা কথা শুনিয়ে দিল(কান্নার মুখ করে)
আবিরঃ ইসস কি ভালোবাসা।নিশ্চয়ই এই ভালোবাসার পিছনে কোন ঘটলা আছে।
আহানঃ আরে ভাবি ভাইয়া তোমরা ঝগড়া করো আর আমিই মজা করে ক্ষির খাই।
কথাটি বলে আহান তাড়াতাড়ি করে দিশার হাত থেকে ক্ষির এর বাটি টা নিয়ে টেবিলে বসে পরে।
দিশাঃ আল্লাহ।। বাটিটা আহান ভাইয়া নিয়ে নিল।
এই মরিচ মিক্স করা ক্ষির খেলে তো তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
ভাইয়া………..
বেচারি দিশা আহানকে থামানোর আগেই ক্ষির মুখে দিয়ে দেয় আহান
ক্ষির মুখে দিয়ে –
আহানঃ আল্লাহ আমার এমন লাগছে কেন?? মনে হচ্ছে চিনির বদলে মরিচের গুড়া মিক্স করা ক্ষির এ….
চারু আহানের মুখের আজব রিয়েকশন দেখে–
চারু ঃভাইয়া আপনি ক্ষির খেয়ে এমন রিয়েকশন দিচ্ছেন কেন??
ক্ষির কি মজা হয়নি? ( মন খারাপ করে)
আহানঃ ভাইয়া তো স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষিরটা খাচ্ছে তাহলে আমার এমন লাগছে কেন??
উফফ গলা পুরো জ্বলে যাচ্ছে আমার।
কিন্তু চারুকে যদি বলি কিছু ও কষ্ট পাবে অনেক।
তার চেয়ে ভালো ক্ষির টা খেয়েই নেই।
আহান তোকে পারতেই হবে।এইটা তোর ভালোবাসার পরিক্ষা।আর তোকে জয়ী হতেই হবে। আনমনে।
আহানঃ কে বলেছে ক্ষির মজা হয়নি ক্ষির তো অনেক বেশিই মজা হয়েছে যা তুলনার বাইরে। (হাসি মুখে)
দিশাঃ ইস বেচারা ভাইয়া।।।হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিও আমার জন্য আমার আদরের দেবরটা কষ্ট পাচ্ছে।চারু মন খারাপ হয়ে যাবে বলে কিছু বলছেনা কারো সামনে।। ভাইয়া কতো ভালো।
চারু ঃ তাহলে ভাইয়া ক্ষির খান। থেমে গেলেন কেন??
আহানঃ হ্যা হ্যা খাচ্ছি।।।
কথাটি বলে আহান ক্ষির খাওয়া শুরু করে।
যতই ক্ষির খাচ্ছে ততই ওর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে।।।
আবিরঃ কিরে তুই ক্ষির খেয়ে কান্না করছিস কেন এমন বাচ্চাদের মতো। আর তোর ফেশ টা এমন টমেটোর মতো লাল হয়ে আছে কেন???
আহানঃ খুশি কান্না ভাই খুশির কান্না।এতো টেস্টি ক্ষির আমি জীবনেও খাইনি।তাই খুশির ঠেলায় কান্না আসছে আমার।
তারপর আহান ক্ষির খাওয়া শেষ করে
তোমরা বসো আমিই একটু আসছি রান্না ঘর থেকে বাটি টা রেখে।
কথাটি বলে আহান তাড়াতাড়ি করে রান্না ঘর এর দিক এ দৌড় দেয়।
রান্না ঘরে গিয়ে-
আহান গলা কাটা মুরগীর মতো ধাপড়াতে থাকে ব্যথার জ্বালায়
গলায় হাত-
আহানঃ উফফ এই চিনি কোথায়। এই মুহূর্তে চিনি না খেলে আমি যে ঝালে মরে যাব।
দিশা রান্না ঘরে ডুকে মধু বের করে আহানের সামনে এগিয়ে দেয়।
দিশাঃ নেন ভাইয়া এইটা খেয়ে নেন জলদি করে।
গলার জ্বালা পোড়া কিছুটা কমবে।
আহানঃ তুমি কি রে বুঝলে???
দিশাঃ আসলে ভাইয়া আমিই একটা ক্ষির এর বাটিতে
মরিচের গুড়া মিক্স করে তোমার ভাইকে….
আহানঃ হয়েছে ভাবি হয়েছে আর বলতে হবেনা।
তোমরা যে কি বাচ্চাদের মতো এই ভাবে ঝগড়া করো মাঝখান দিয়ে আমি ফেশে গেলাম।
দিশাঃ সরি ভাইয়া।এই রকম কাজ আর কখনো হবেনা(কানে হাত দিয়ে)।
আহানঃ আচ্ছা ভাবি।তোমাকে সরি বলতে হবেনা।
কথাটি বলে আহান দিশার হাত থেকে মধুর কৌটা টা নিয়ে মধু বের করে খেয়ে নেয়।
আহানঃ উফফ এখন কিছুটা শান্তি পেলাম
ভাইয়া ক্ষির টা খেলে কিন্তু মন্দ হতো না কি বল ভাবি?(হেসে)
দিশাঃ হ্যা এক বারে ঠিক বলেছো।(হেসে)
আবিরঃ আমাকে কি খাওয়ানোর……………..#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১০)
#Humayra_Khan
.
.
.
আহানঃ ভাইয়া ক্ষির টা খেলে কিন্তু মন্দ হতো না কি বলো ভাবি???(হেসে)
দিশাঃ হ্যা একবারে ঠিক বলেছো????
আবিরঃ আমাকে কি খাওয়ানোর কথা বলা হচ্ছে শুনি????
দিশাঃ মরিচের গুড়া খাওয়ার কথা বলা হচ্ছিল।
আবির চোখ রাঙিয়ে দিশার দিক এ তাকালে..
দিশাঃ ওও সরি সরি। আই মিন মধু খাওয়ার কথা বলা হচ্ছিলো।আহানের হাত থেকে মধুর কৌটা টা নিয়ে।
দিশাঃ এই নাও জানু মধু খাও। মধু খেলে হয়ত তোমার তেতো মুখটা কিছুটা মিষ্টি হবে।
আবিরঃ তাহলে ওইটা তুমিই খেয়ে নাও।
চারু রান্না ঘরে ডুকে…
উফফ ভাবি আর কতো ঝগড়া করবে তুমি আর ভাইয়া মিলে।। তোমরা আরেক বার বাচ্চাদের মতো করে ঝগড়া করলে আহান আর আমি কিন্তু চলে যাব বাসা থেকে আর আসব না এই বাসায়।
(কথাটি বলার সাথে সাথে চারু ওর মুখে হাত রেখে)
চারু ঃ খাইসে ভুলে কি বলে ফেল্লাম আমি?
চারু আহান কে আহান ভাইয়া না ডেকে শুধু আহান ডাকায় বেশ অবাক হয় দিশা আর আবির কিন্তু আহান চারুর মুখ থেকে তার নামটা শুনে তো মহা খুশি
আহানঃ আহ….. চারুর মুখ থেকে আমার নামটা শুনতে কতো ভালো লাগে….(মুগ্ধ হয়ে চারুর দিক এ তাকিয়ে)
আহানঃ আরেকবার বলবা কথাটা।
আমি শুনতে পাইনি ভালো মতো।
চারু ঃ আসলে ভাইয়া ভুলে গিয়েছি কি বলেছিলাম।
মনে পরলে বলব নে কি বলে ছিলাম।
ভাবি চল রান্না টা সেরেই নেই।
দিশাঃ হ্যা। এই তোমরা রান্না ঘর থেকে বের হও আমরা লেডিস লোক এখন রান্না করব।
আবিরঃ ইসস ইনার সাথে এই খানে দাড়াতে যেন আমার বয়েই যাচ্ছে।
কথাটি বলে চলে যায় আবির রান্না ঘর থেকে।
আহান এখনো রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে থাকলে-
দিশাঃ কি দেবরজি।আপনাকে কি আলাদা করে বলতে হবে নাকি যাওয়ার জন্য।
আহানঃ আরেকবার আহান বলে ডাকলে কিই বা হতো তোমার।( চারুর দিক এ তাকিয়ে) আনমনে।
দিশাঃ হায়রে কার সাথে কথা বলছি আমি।।এই যে ডাক্তার সাহেব আপনি কোন দুনিয়ায় আছেন।
আহান দিশার কথা শুনে চারুর দিক থেকে মুখ সরিয়ে দিশার দিক এ তাকিয়ে।
আহানঃ জ্বি ভাবি যাচ্ছি।এতো চেচিয়ে বলার কি দরকার।
কথাটি বলার সাথে সাথে আহান রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে পরে।
দিশাঃ দুই ভাই একই নৌকার মাঝি।(হেসে)
চারু ঃঠিক বলেছো ভাবি।কিন্তু আহান ভাইয়া কিছুটা আজব। মাঝে মাঝে তার কাজকর্ম কথাবার্তা কোন কিছুই আমার এই ছোট মাথা টায় ঠুকে না।
দিশাঃ তাই নাকি।তাহলে এই ছোট মাথায় জোর দিতে যেয়োনা।তাকে বুঝতে গেলে যদি তার প্রেমে পরে যাও(হেসে)
চারু ঃআমি আবার তার প্রেমে কি যে বলোনা ভাবি তুমি।
দিশাঃ দোষ এর কি বললাম?? তোমার আর ভাইয়ার জুটি টা কিন্তু সেই মানাবে চারু।।।নাম্বার ওয়ান জোরি।
চারু ঃওরে বাবা রে। নাম্বার ওয়ান জোরি
তা আবার আমার আর আহান ভাই এর।
বুঝতে পারসি ভাবি ভাইয়ার সাথে সারা দিন ঝগড়া করতে করতে তোমার মাথা পুরো গিয়েছে।
তাই এই সব আজগবি কথা বের হচ্ছে তোমার মুখ দিয়ে।
দিশাঃ দেখে নিও তুমি এক দিন ভাইয়ার প্রেমে পরবা (হেসে)
চারু ঃ আমি তার প্রেমে পরব?(অবাক হয়ে)
দিশাঃ জাস্ট পরবেই না।সাতার ও কাটবে দেখে নিও(হেসে)
চারু ঃ উফ ভাবি রাখো তো তোমার এই সব কথা এখন।
চল রান্না টা সেরে নেই জলদি করে।
দিশাঃ যো হুকুম মেরে আকা(হেসে)
তারপর দুই জন মিলে রান্না সেরে আহান আর আবির কে ডাক দেয় খাবার টেবিল এ….
আহান আর আবির ডায়নিং টেবিল এ আসলে…
আবির গিয়ে চারুর পাশে বসতে নেয়।তখনই আহান চেচিয়ে বলে উঠে ওই সিট টা আমার।
সবাই বেশ অবাক চোখে তাকায় আহানের দিক এ…
আহান আবির কে চারুর পাশ থেকে সরিয়ে দিশার পাশে বসিয়ে দেয়।
আহানঃ তোমাদের দুইজনকে বেশ মানায় এক সাথে।তাই তোমরা দুই জন পাশা পাশি বসো।
তারপর আহান চারুর পাশে গিয়ে বসে পরে।
আবির আর দিশা অবাক হয়ে আহানের দিক এ তাকালে।
আহানঃ আমার দিক এ এই ভাবে না তাকিয়ে খাওয়ার প্রতি মনযোগ দাও তোমরা।
আহান খাবারটা মুখে দিতে যাবে।
আহানঃ আ…….
সবাই খাওয়ার ছেড়ে আহানের দিক এ তাকায়।
দিশাঃ কি হয়েছে ভাইয়া। তুমি খাওয়ার মাঝ খান দিয়ে এই ভাবে চিল্লিয়ে উঠলে কেন??
আহানঃ আসলে ভাবি আমার হাতটা ব্যথা করছে।তাই হাতটা দিয়ে খেতে পারছিনা।(অসহায় মুখ করে)
চারু ঃ ভাইয়া আপনার আবারও ব্যথা করছে???
দিশাঃ আবারও মানে???
চারু ঃ হ্যা ভাইয়ার দুপুরে ব্যথা করছিল।
দিশাঃ সে কি তাহলে তুমি ক্ষির কিভাবে খেলে নিজ হাত দিয়ে।
দিশার কথা শুনে চারু আহানের দিক এ সন্দেহ চোখে তাকায়।
আহানঃ তখন ব্যথাটা কমে গিয়েছিল।এখন আবার ব্যথা করছে।
দিশাঃ তাহলে আসেন ভাইয়া আমি খাইয়ে দেই।
আবিরঃ ইসস আমাকে কেউ ভালোই বাসেনা(মুখ গোমড়া করে।
আহানঃ কিন্তু তুমি কিভাবে খাইয়ে দিবে। তুমি কোথায় বসেছো আর আমি কোথায় বসেছি??
দিশাঃ আচ্ছা চারু তুমি তো ভাইয়ার পাশে বসে আছো তুমিই না হয় খাইয়ে দাও ভাইয়াকে।
চারু ঃ আমি???
আহানঃ না থাক ভাবি চারুর কষ্ট করা লাগবেনা।
আমি না হয় ব্যথা কমে গেলে খেয়ে নিব নিজ হাত দিয়ে।
চারু ঃ না ভাইয়া পরে খেতে হবেনা।আমার কোন সম্যসা নেই আপনাকে খাইয়ে দিতে।
আর ভাবি তুমি আবির ভাইয়াকে খাইয়ে দাও।
দেখনা কিভাবে মুখ গোমড়া করে বসে আছে।
দিশাঃ আচ্ছা।
তারপর দিশা আবিরকে আর চারু আহানকে খাইয়ে দিতে থাকে।
খাবার এর শেষ লোকমাটা খাওয়ার সময় আবির ইচ্ছা করে দিশার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়।
দিশাঃ উফ গেল রে আমার হাত টা।
এই আপনি আমার হাতে এই ভাবে কামড় দিয়ে বসলেন কেন???
আবিরঃ আমি কি ইচ্ছে করে দিয়েছি নাকি?
দিশাঃআমি জানি আপনি ইচ্ছা করেই কামড়টা দিয়েছেন আমায়।
আবিরঃ তাহলে তোমার জানাটা ভুল।
আহানঃ আল্লাহ আবারও শুরু হয়ে গেল
দিশাঃ উফ ভাইয়াকে তো বলেছিলাম ঝগড়া করব না।
তাই ভালো ভালোই চুপ হয়ে যাই এখন।
বাট তাকে তো আমি উচিত শিক্ষা দিবই(ডেভিল হাসি হেসে).।আনমনে…
দিশাঃ আচ্ছা ভাইয়া আর কিছু বলবোনা আমি।
আপনাদের খাওয়া শেষ তো ঘুমিয়ে পরুন গিয়ে
আর আমি আর চারু খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাব।
দিশার কথা শুনে আবির আর আহান চলে যায় ঘুমাতে।
তারপর দিশা আর চারু ডিনার করে নেয় এক সাথে।
ডিনার শেষ করে ওরা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
একটু পর দিশা ঘুম থেকে উঠে চারুর দিক এ তাকিয়ে
দিশাঃ দেখে তো মনে হচ্ছে চারু ঘুমিয়ে গেছে।যাই আমার কাজটা সেরে আসি গিয়ে।
তারপর দিশা আস্তে আস্তে মাটিতে পা ফেলে
আহান আবির এর রুমে সামনে দাঁড়িয়ে ওদের রুমে দরজা খোলা পেয়ে
উফ আজ দেখি আমার ভাগ্য আমার সাপোর্টে।
উফ লাইট টাও দেখি জালানো নেই।
ভালো হয়েছে বুদ্ধি করে মোবাইল টা সাথে করে নিয়ে আসছি। তারপর মোবাইল এর ফ্লাসলাইট টা অন করে আসতে আস্তে রুমে প্রবেশ করে দিশা।
আবির এর সামনে গিয়ে-
দিশাঃ ইস কি শান্তি ঘুম দিচ্চে গো। অনেক শান্তিতে ঘুমানো হচ্ছে তাইনা।।কতো মাসুম লাগছে আমার বেবিটাকে। আরও সুন্দর লাগানো জন্য আমি নিজ হাতেই মেকাপ করে দিব এখন।(ডেভিল হাসি হেসে).
কথাটি বলে দিশা আবির এর মুখে কিছু একটা মেখে তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে পরে ওও।
সকালে আহান ঘুম থেকে উঠে আবিরকে দেখে জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। বেচারা আহান এতো টাই ভয় পায় যে আবিরকে দেখে ভয়ে মাটিতে পরে যায় বিছানা থেকে।
আহানের চিৎকার শুনে আবির এর ঘুম ভেঙে যায়।
সাথে চারু আর দিশাও রুমে এসে পরে ওর চিৎকার শুনে।
আবিরঃ কিরে আহান এইভাবে চিল্লাছিস কেন সকাল সকাল।।
আবিরকে দেখে চারু আর দিশা তো হেসে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আবিরঃ এই তোমরা পাগলের মতো হাসছো কেন।
পাগল হয়ে গেলে নাকি??
চারু ঃ ভাইয়া আমরা এমনি এমনি হাসছিনা। আপনি
কষ্ট করে আয়নায় নিজের মুখ টা দেখুন।
আবির চারুর কথা শুনে আয়নায় নিজের মুখ দেখে জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে।
আবিরঃ এইটা কে।আই মিন আমার এই হাল কিভাবে হলো। পুরো ফেশ টা কালি দিয়ে মাখা।আমার এই সুন্দর ফেশ টার এই অবস্থা কেমন করে হল?(কান্নার কণ্ঠে)
দিশা আবির এর কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে।
আবিরঃ এইটা নিশ্চয়ই তুমি করেছো আমার সাথে।
দিশাঃ হা হা প্রমান আছে কোন।
আবিরঃ দাঁড়াও প্রমান দিচ্ছি তোমাকে।
তারপর আবির দিশার পিছু ছুটতে থাকে।আর দিশাও দৌড়াতে থাকে।শেষ মেষ দিশা আহান আর চারু পিছনে গিয়ে লুকালে-
আবির দিশাকে আহান আর চারুর পিছন থেকে ধরতে গেলে
ভুলক্রমে ধাক্কা লেগে আহান চারুর উপর গিয়ে পরে।।।
ফ্লোরে আহান চারুর উপর এই ভাবে পরে যাওয়ায়
দিশা আর আবির ওদের ঝগড়া বন্ধ করে আহান আর চারুর দিক এ তাকিয়ে থাকে।
আহান চারু উপর থেকে না উঠে বরং ওর
চোখে অপলক দৃশটিতে চেয়ে থাকে।
চারু ঃ ভাইয়া আমার উপর………………#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১১)
#Humayra_Khan
.
.
.
চারু ঃ ভাইয়া আমার উপর থেকে উঠেন জলদি করে।(চেচিয়ে)
আহান চারুর কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে ওর উপর থেকে উঠে পরে।
আহানঃ সরি সরি।
আহান চারুর উপর থেকে উঠে চারুর দিক এ হাত বারিয়ে দেয়
আহানঃ নাও হাতটা ধরো আর উঠো জলদি করে। কতক্ষন এই ভাবে ফ্লোরে শুয়ে থাকবে (হেসে)
আহানের কথা শুনে চারুর চরম রাগ পায়।
চারু ঃদরকার নেই আপনার হাতের আমি নিজের থেকেই উঠতি পারি।
কথাটি বলে চারু নিজেই ফ্লোর থেকে উঠে পরে।
আহানঃ বাবা গো বাবা কি তেজ এই টুকু মেয়ের।
দিশাঃ ইসস রে আমাদের ঝগড়া থামাতে গিয়ে দেখি তোমরাই ঝগড়া করছ এখন.।
আহানঃ ভাইয়া দয়া করে তাড়াতাড়ি মুখ টা গিয়ে ধুয়ে আসুন।
না হলে যে কেউ তোমার এই ফেস টা দেখে বেহুস হয়ে পরবে(হেসে)।
আবিরঃ বেশি হাসিস না।এক দিন আমারও সময় আসবে আমিও সেই দিন শোধ উঠাব গুনে গুনে।
আহানঃ আচ্ছা ভাইয়া উঠিয়ে নিও।(হেসে)।
আবিরঃ আমার এই সুন্দর ফেস টা কি হয়ে গেল(কান্নার কন্ঠে)
আবিরকে এমন কান্না করতে দেখে আহান দিশা আর চারু হেসে উঠে জোড়ে জোড়ে।
ওদের হাসি দেখে আবির এর মেজাজ বেশ গরম হয়ে পরে।আর সে বিড় বিড় করতে করতে চলে যায় ওয়াসরুমে নিজের মুখ ধুতে।
দুপুরে খাবার এর শেষ এ
আহানঃ ভাইয়া কাল তো আমরা চলে যাব বাসায়।
তাই সবাই মিলে কোথায় গিয়ে ঘুরে আসি কি বল??
আবিরঃ আমার মনের কথা বললি রে ছোট।
আজ তাহলে আমরা সবাই মিলে বাইরে গিয়ে কোন মুভি দেখে আসব নে
আহানঃ গুড আইডিয়া ভাইয়া।
আবিরঃ আচ্ছা তাহলে সবাই জলদি করে রেডি হয়ে নাও।

তারপর সবাই মিলে রেডি হতে শুরু করে যে যার মতো
আহান একটা ব্লাক জিন্স তার সাথে ওয়াইট কালারের একটা শার্ট পরে রেডি হয়ে নেয়।
আহান রেডি হয়ে নিয়ে….
চারুর রুমে পাশ দিয়ে যেতে নিলে চারুর কন্ঠ ওর কানে ভেসে উঠে।
চারু ঃভাবি ভাবি……
আহান চারুর ডাক শুনে থেমে যায়।
রুমের সামনে গিয়ে দেখে চারু রোবট এর মত দাঁড়িয়ে আছে রুমের এক কোনায়।
রুমে ভিতরে প্রবেশ করে…
আহানঃ কিছু লাগবে চারু।ভাবি তো মনে হয় ভাইয়ার সাথে ড্রয়িং রুমে। তুমি আমাকে বল??
চারু ঃ না ভাইয়া লাগবেনা।
আহানঃ তুমি বলবে?? নাকি থাপ্পড় খাবে আমার হাতে(রেগে)
চারু বেশ ভয় পেয়ে যায় আহানের বকা খেয়ে।
আহানঃ ইসস ভয় পেয়ে গেছে আমার পরীটা। আমি তো জাস্ট এমনি ওকে ভয় দেখানোর জন্য বলছি।
আর ও ভাবচ্ছে আমি সত্যি সত্যি ওকে থাপ্পড় দিব
আনমনে।
চারু ঃ আসলে ভাইয়া আমার জামার চেইন টা লাগাতে পারছিনা।তাই ভাবিকে ডাকছিলাম চেইন টা লাগিয়ে দেওয়ার জন্য।
আহানঃ কিন্তু ভাবি তো এখন ব্যস্ত। দাও আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
চারু ঃ কি আপনি ( চমকে)
আহানঃ আরে বাবা আমি চোখ বন্ধ করে লাগাব তুমি টেনশন নিয়ো না।
চারুঃ না লাগবেনা।
আহানঃ আচ্ছা তাহলে আমি চলে যাচ্ছি।
আহান চলে যেতে নিলে-
চারু ঃ আচ্ছা।লাগান (মুখ বাঁকা করে)
আহানঃ পিছনে তো ঘুরো। না ঘুরলে লাগাবো কিভাবে।
চারু আহানের কথা শুনে পিছনে ঘুরে।
চারু পিছনে ঘুরলে আহান চারু কাছে এসে
চোখ বন্ধ করে চেইন টা লাগানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে
চারু ঃ আরে এতো ক্ষন লাগে একটা চেইন লাগাতে।
আহানঃ আরে বাবা বন্ধ চোখ দিয়ে চেইন টা তো খুজেই পাচ্ছিনা আমি।
দাড়াও দাড়াও পেয়েছি।
বহু কষ্টে আহান চেইনটি হাতে নাগালে পেয়ে তাড়াতাড়ি করে লাগিয়ে দেয়।
চারু ঃ হইসে??
আহানঃ হুম বাবা হয়েছে।
চোখ খুলতে পারব এখন???
চারু ঃ হ্যা পারবেন। চোখ খুলে খোলা চোখ দিয়ে এখন বিদায় হন রুম থেকে। আমার আরেকটু সময় লাগবে রেডি হতে।
আহানঃ হায়রে মেয়ে মানুষ এর যে কেন এতো সময় লাগে রেডি হতে আল্লাহই জানে। আচ্ছা তুমি আটা ময়দা মেখে আসো জলদি করে আমি যাচ্ছি।
আহানের কথা শুনে
চারু রেগে গিয়ে বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে আহানের উপর ছুড়ে মারে।
কিন্তু আহান বালিশটি সাথে সাথে ধরে ফেলে
আহানঃ আল্লাহ আমার উপর বালিশ ফেলে মেরে ফেলতে চাইছো আমাকে।
এই বালিশ টা আমার উপর পরলে তো আজ আমি মারাই যেতাম(হেসে)
চারু ঃ । হয়েছে আপনার বক বক। এখন বের হন রুম থেকে।।
আহানঃ যাচ্ছি যাচ্ছি।
কথাটি বলে আহান ওর হাতের বালিশটি চারুর উপরে মেরে চলে যায় রুম থেকে।
আহান চারুর উপর বালিশ মারায় বালিশ টা সোজা গিয়ে চারুর মাথা গিয়ে লাগে।
চারু ঃ উফফ রে দিল রে। (মাথায় হাত দিয়ে)
শয়তানটা। দেখতে যতটা সাধু দেখতে ততটা নয়। ভাবি আজিরাই তার সুনাম গাইছিলেন ও দিন।
উফফ চারু তার কথা বাদ দে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।
দেরি হলে বলবে আটা ময়দা মাখতে গিয়ে লেট করেছি।
তারপর চারু নিল ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে ইয়ারিং আর হাতে নীল কাচের চুড়ি পরে নেয়।
আর ওর লম্বা লম্বা চুল গুলা ছেরে দেয় কোমড় অবধি।
কিছু ক্ষন পর দিশা রুমে আসলে-
দিশাঃ কি ব্যপার চারু সুন্দরী আজ দেখি আপনাকে অতি মাএায় সুন্দর লাগছে।
যে কেউ দেখলে প্রেমে টেমে পরে যেতে পারে।
যে কেউ কেন আহান…..ভাইয়াই পরতে পারে।
চারু ঃউফ ভাবি নট এগেন। তুমার পাগল দেবর এর সাথে কোন পাগলি মেয়েই মানাবে।তাই কোন পাগলি মেয়ে খুজে বিয়ে দিয়ে দাও তোমার আদরের দেবরকে।
আবির আর আহান রুমে এসে।
আবিরঃ কি গল্প হচ্ছে তোমাদের
মধ্যে??
চারুঃ কিছুনা ভাইয়া। (চেচিয়ে)।
দিশাঃ বলে দিব চারু কি বলছিলে??
চারু ঃচলেন ভাইয়া লেট হয়ে যাচ্ছে তো।(কাঁপা কণ্ঠে)।
আবিরঃ হ্যা চল।
তারপর সবাই মিলে রওনা দেয়।
গাড়িতে উঠতে নিলে দিশা গিয়ে গাড়ির পিছনের সিট এ বসে পরে। সাথে চারু ও পিছনে গিয়ে বসতে নিলে-
আহানঃ এই চারু মিয়া বিবির মধ্যে কাবাব মে হাড্ডি হওয়ার অনেক শখ আছে নাকি।??
চারু গাড়ি দরজা খুলতে যাবে থেমে যায় আহানের কথা শুনে আর অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে আহানের দিক এ।
আহানঃ হায়রে আমার দিক এ এই ভাবে না তাকিয়ে ভাইয়াকে ভাবির সাথে পিছনে বসতে দাও আর তুমি সামনে এসে বস।
আবিরঃ তোর না হাত ব্যথা আহান
পারবি গাড়ি চালাতে।
আহানঃ হ্যা ভাইয়া।এখন ব্যথা নেই। তাই পারব আমি গাড়ি চালাতে তুমি বস গিয়ে দিশা ভাবির সাথে।
আহানের কথা শুনে আবির গিয়ে দিশার পাশে বসে পরে।
আহানঃ এই যে চারু আপনি কি উঠবেন নাকি এই খানে দাড়িয়ে থাকবেন???
চারুঃ উঠছি তো এই ভাবে চিল্লিয়ে বলার কি দরকার।
মাইক এর মতো একটা গলা তার উপর চিল্লিয়ে কথা বলে আমার কানের বাইশ টা বাজিয়ে দিচ্ছে।
আহান চারুর কথা শুনে জোড়ে হেসে উঠে।
বাইশ টা হয়না গো হয় বারো টা।
চারু ঃ আমার ইচ্ছা। আমি বারো টাকে বাইশ বানাই বারোশ বানাই তাতে আপনার মাথা ব্যাথা কেন
আহানঃ না মহারানি আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই।
এখন মেহেরবানি করে ঝগড়া না করে গাড়িতে উঠে আমাকে উদ্ধার করুন।
চারু আহানের কথা শুনে আহানের দিক এ তাকিয়ে একটা ভেংচি কেটে উঠে পরে গাড়িতে।
চারু এমন কান্ড দেখে বেশ হাসি পায় আহানের।
হাসতে হাসতে আহান ও গাড়িতে উঠে পরে।
আহানঃ এই যে আটা ময়দা সুন্দরি সিট বেল্ট টা লাগাও।
চারুঃ কি আমি আটা ময়দা সুন্দরি।(রেগে)
আহানঃ আজ আপনাকে বেশি সুন্দর লাগছে তাই ভাবলাম আটা ময়দার কামাল।
চারু আহানের কথা শুনে রাগে ফোসতে থাকে।
আহানঃ আহহ। ভালোবাসার মানুষ টাকে রাগাতে আর তার রাগানো ফেস দেখতে যে কত ভালো লাগে।
রাগলে আমার পরীটার সৌন্দর্য হাজারো গুন বেড়ে যায়।
তাই তো রাগানোর জন্য এই সব কথা বলি তোমাকে। রাগলে পুরোই চকলেট এর মতো লাগে তখন মন চায় খপ করে খেয়ে ফেলি পরী টাকে।
আনমনে।
আহান খেয়াল করল চারু সিট বেল্ট না লাগিয়ে উল্টা রাগ করে বসে আছে।
আহান নিজেই চারুর কাছে এসে সিট বেল্ট লাগাতে নিলে।
চারু ঃ এই……কি করছেন??
আহানঃ আরে বাবা কি করছি জাস্ট সিট বেল্ট টাই তো লাগাচ্ছি। সিট বেল্ট টা লাগিয়ে আহান সরে বসে চারু কাছ থেকে।
আহানঃ কেন তুমি কি ভাবছিলে। (চোখ টিপ দিয়ে)
চারু ঃ আমি কিছুই ভাবি নি।
উফ সে আমার কাছে আসায় আমার নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছিল।
আবিরঃ কথা বন্ধ করে তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাও।
আমি মুভির একটা সিন ও মিস করতে চাইনা।
আহান আবির এর কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে গাড়ি ইস্টাট দিয়ে গাড়ি চালাতে থাকে আপন মনে।
গাড়ির দরজার গ্লাস খোলা থাকায় বাইরে থেকে আসা বাতাসে চারুর চুল গুলো উড়তে থাকে আপন মনে।
আর চুল গুলা উড়ে বার বার বারি খায় আহানের মুখের কাছে এসে
আহান তা বেশ উপভোগ করছে।
কিছুক্ষন পর সিনেমা হলে পৌছালে তাড়াতাড়ি করে টিকেট কেটে পপকন কিনে চলে যায় ওরা হলের দিক এ।
চারু দিশার পাশের সিট এ বসতে নিলে।
আহানঃ ওই তুমি ওখানে বসলা কেন?? আমার পাশে বস
চারু আহানের কথা শুনে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে।
আহানঃ আই মিন ভাইয়াকে ভাবির পাশে বসতে দাও।
চারু আহানের কথা শুনে কোন কথা না বাড়িয়ে আহানের সিট এর পাশে গিয়ে বসে পরে।
মুভি শুরু হলে দিশা আবির চারু মুভি দেখার মধ্যেই ডুবে থাকে।
কিন্তু আহান টিভির পর্দায় দিক এ না তাকিয়ে চারুর দিক এ তাকিয়ে আছে পলকহীন চোখে।
বিষয়টি চারু খেয়াল করলে –
চারু ঃ এই আপনি আমার দিক এ এই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন???
আহানঃ কই আমি তো মুভি দেখছিলাম। কথাটি বলে চারুর থেকে চোখ সরিয়ে নেয় আহান
মুভি তে একটা ভয়ানক সিন আসলে চারু ভয়ে আহানের হাত শক্ত করে ধরে বসে।
আহানঃ ইস এই হাতটা যে কবে ধরবে ভালোবেসে।
আনমনে
সিনটা শেষ হলে চারুর হুশ আসে যে সে এতোক্ষন ধরে আহানের হাত ধরে বসেছিল।
তাই তারাতারি করে আহানের থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে নেয় চারু।
মুভি শেষ হলে ওরা তাড়াতাড়ি করে হল থেকে বের হয়ে আসে।
সবাই গাড়ি তে উঠে পরলে আহান গাড়ি চালাতে থাকে আপন মনে।
হঠাৎ চারু চেচিয়ে বলে উঠে হাওয়াই মিঠায়।
আহান চারু চিৎকার শুনে গাড়ি ব্রেক করে।
আহানঃ কি।??
চারু ঃ কিছুনা।
আহানঃ বলবে নাকি মাইর খাবে??
চারু ঃ আসলে হাওয়াই মিঠাই ছিল ওখান। (বাইরের দিক এ ইশারা করে)
আমার খেতে ইচ্ছে করছে।
দিশাঃ আরে চারু পরে খেয়ে নিও।
এখন আবার গাড়ি থামালে সম্যসা হবে। দেখো না এইখানে গাড়িগোড়া কত। আমার ভাইটাকে যদি উড়িয়ে নিয়ে যায় ( হেসে)
আবিরঃ সব সময় ফাজলামো করা ভালো না দিশা(রেগে)
দিশা আবিরের কথা শুনে মাথা নিচু করে বসে থাকে।
আহানঃ উফ ভাবিকে বকোনা তো ভাইয়া।
আহানঃ দাড়াও আমি নিয়ে আসি।
কথাটি বলে আহান গাড়ি এক সাইড এ থামিয়ে রাখে আর বের হয়ে পরে হাওয়াই মিঠাই কিনতে।
পাচমিনিট গাড়িতে অপেক্ষা করার পর
চারু ঃহায়। ভাইয়া দেখি তার ওয়ালেট টা গাড়িতেই রেখে গেছে ভুলে। তাহলে সে টাকা কিভাবে দিবে।
চারু ঃ আমি গিয়ে দিয়ে আসি তাকে।
কথাটি বলে গাড়ির দরজা খুলে চারু ওয়ালেট টা হাতে নিয়ে বের হয়ে পরে গাড়ি থেকে।
আবির ওকে থামাতে যাবে সেই সুযোগটাও দেয়নি চারু।
হুট করেই বের হয়ে পরে গাড়ি থেকে।
আবিরঃ ইস দুইজন কি পাগল।এই জায়গা টায় হাটাচলা করা কতো টা রিস্কি। কিন্তু কে শুনে কার কথা।
একটু সামনে গিয়েই চারু আহানকে দেখতে পায়।
চারু ঃ ভাইয়া আমি এ দিক এ। আপনি আপনার ওয়ালেট রেখে গেছেন (নিজের হাত তুলে)
আহান চারুকে দেখতে পেয়ে।
আহানঃ এই তুমি গাড়ি থেকে বের হলে কেন।
ওই খানেই দাড়াও। আমি আসছি তোমার কাছে এক পাও নড়বেনা।
চারু ঃ না ভাইয়া আমিই আসছি।কথাটি বলে চারু আহানের কাছে যেতে নেয়
চারুর সামনে দিয়ে একটা গাড়ি আসতে থাকে দ্রুতগতিতে।
বিষয়টি চারু খেয়াল না করলেও আহান খেয়াল করে।
গাড়ি এসে চারু সাথে ধাক্কা লাগার আগেই আহান দৌড়ে এসে চারুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
যার কারনে গাড়িটির সাথে আহান ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পরে রাস্তার এক পাশে………
চারু দৌড়ে গিয়ে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here