ছায়া হয়ে থাকবো পাশে পর্ব -১২+১৩

#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১২)
#Humayra_Khan
.
.
.
গাড়ি এসে চারুর সাথে ধাক্কা লাগার আগেই আহান দৌড়ে এসে চারুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
যার কারনে গাড়িটির সাথে আহান ধাক্কা খেয়ে ছিটকে
পরে রাস্তার এক পাশে।
আহানের পরে থাকা সাদা শার্ট টি রক্তে লাল হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যেই।
নিজ চোখ কে কোন ভাবেই বিশ্বাস করাতে পারছেনা চারু।
হতভম্ব হয়ে বসে আছে রাস্তার এক পাশে।
আর ওর চোখ দিয়ে অনবরত জল গড়িয়ে পরছে আহান কে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে।
আশেপাশে হইচই শুরু হলে হুস আসে চারুর।
আশে পাশের মানুষ ঘেরাও করে আহানকে দেখতে থাকে। অথচ ওকে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।
চারু দৌড়ে গিয়ে আহানের কাছে পৌছায়।
আহানের হাতে হাত রেখে–
চারু ঃ ভাইয়া আপনার কিছুই হবেনা।কিছুই হতে দিব না আমি। আপনি ঠিক হয়ে যাবেন ( কান্না করতে করতে)
আহান নিজের রক্তাক্ত হাত দিয়ে চারুর গালে হাত রেখে-
আহানঃ তুই ঠিক আছিস তো চারু? কোথাও লাগেনি তো তোর????আমি মারা গেলে মিস করবি তো আমাকে?
চারু ঃভাইয়া প্লিজ বন্ধ করুন এসব কথা।
আপনার কিছুই হবেনা। কিছুইনা(কান্না করে)
আহানঃ কেন জানি মনে হচ্ছে এইটাই আমাদের বলা শেষ কথা।
কথাটি বলতে বলতে নিজের চোখ বুজে নেয় আহান।
আহান চোখ বুঝে নেওয়ায় চারু আহান বলে চিৎকার দিয়ে উঠে।
চারু ঃপ্লিজ কেউ একটু হেল্প করুন আমাকে।
(সকলের সামনে নিজের হাত জোড় করে)
কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনা চারুকে সাহায্য করতে।
সকলেই দাঁড়িয়ে শুধু তামাশা দেখে যাচ্ছিল।
চারু ঃ এই খানে কি কেউ নেই আমাকে সাহায্য করার মতো। প্লিজ কেউ আমাকে হেল্প করুন তাকে বাচাতে(কান্না করে)
ভিড়ের মাঝখান থেকে কেউ একজন বলে উঠে –
আপু আমি এম্বুলেন্স এর জন্য কল করেছি কিছুক্ষন এর মধ্যেই তারা চলে আসবে।
আপনি একটু শান্ত হন।
ওদিক গাড়িতে দিশা আর আবির বাইরে হইচই শুনতে পেলে
আবির গাড়ি দরজার গ্লাস খুলে একজন কে ডেকে জিজ্ঞেস করে।
আবিরঃ হ্যালো excuse me ভাইয়া।বাইরে এতো হইচই কেন???
লোকটিঃএকটা ছেলে গুরুত্বর ভাবে এক্রিডেনট করেছে।
কি যেন নাম বলল মেয়েটা চিৎকার দিয়ে??
ও হ্যা মনে পরেছে আহান।আহান নামের এক ছেলের এক্রিডেনট হয়েছে।
কথাটি বলে চলে যায় লোকটি।।
দিশাঃ কি ভাইয়ার(কান্না জড়িত কন্ঠে)
আবিরঃ দিশা নিশ্চয়ই লোকটা ভুল কিছু শুনেছে।
দিশাঃ প্লিজ আবির আমার মন বলছে কোন বড় একটা অঘটন ঘটেছে।
তাই দেরি না করে চল যাই দেখে আসি। কি হয়েছে।
আবিরঃ হ্যা চলো।
কথাটি বলে আবির আর দিশা তাড়াতাড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে পরে।
রাস্তায় একটা লোক কে থামিয়ে –
আবিরঃ ভাইয়া কারো নাকি এক্রিডেনট হয়েছে।
বলতে পারবেন কোথায়???
লোকটিঃ সামনে গেলেই দেখতে পাবেন।মনে হয়না ছেলেটি বাচবে।
লোকটির কথা শুনে কাপতে থাকে আবির।
দিশা ঃপ্লিজ সামলাও আবির নিজেকে।
আর তাড়াতাড়ি চল আমার কেন জানি অনেক বেশি ভয় করছে।
আবির দিশার কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে হাটতে থাকে সামনের দিক এ
দিশাও আবির এর পিছনে যেতে থাকে।
একটু সামনে যেতেই অনেক মানুষ এর ভিড় দেখতে পায় ওরা।ভিড় কাটিয়ে সামনে গিয়ে দেখে আহান রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পরে আছে আর চারু ওর পাশে বসে অঝোরে কান্না করছে।
নিজের আদরের ভাইকে এমন রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আবির থপাস করে মাটিতে বসে পরে আর আহান বলে চিৎকার দিয়ে উঠে।
চারু আবির আর দিশাকে দেখতে পেলে-
চারু ঃ ভাবি ভাইয়া দেখো না ইনি চোখ খুলছেন না।
বল না তাকে উঠতে।
আপনার কথা তো ঠিকই শুনবে ভাইয়া।
প্লিজ একবার তাকে উঠতে বলেন।
এম্বুলেন্স চলে আসলে —
দিশাঃ আবির চারু প্লিজ তোমরা শক্ত হও।এই সময় এইভাবে ভেঙে পরলে চলবেনা।ভাইয়াকে তাড়াতাড়ি করে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
দিশার কথা শুনে আবির তাড়াতাড়ি করে উঠে পরে।
এম্বুলেন্সে আহানকে উঠানো হলে চারু আর দিশা আহানের সাথে বসে আর আবির ড্রাইভার এর সাথে বসে।
চারু আহানের হাত ধরে-
আহান আপনার কিছুই হবে না।খুব শীঘ্রই আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
কথাটি বলার সময় চারুর চোখ বেয়ে জল পরতে থাকে আর সেই জলের ফোটা গুলো গড়িয়ে পরে আহানের রক্তাক্ত হাতে।।।।
দিশাঃ প্লিজ ধৈয ধর চারু। এই ভাবে ভেঙে পরলে চলবেনা।আমাদের এই সময় সবাইকে শক্ত থাকতে হবে।
চারু ঃ কিভাবে শক্ত থাকি ভাবি।আমার ভুলের জন্যই তো তার আজ এই অবস্থা। দেখোনা কিভাবে নিরব হয়ে পরে আছে।
দিশাঃ উফ চারু তোমার জন্য কিছুই হয়নি।
আমাদের ভাগ্যে যা লিখা থাকে তা তো হবেই।
তুমি দেখো আল্লাহ আহান ভাইয়ার কোন ক্ষতি হতে দিবেনা।
দিশার কথা শুনে চারু দিশাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
কিছুক্ষন এর মধ্যে ওরা হসপিটালে পৌঁছালে আহানকে তাড়াতাড়ি করে অপারেশন থিয়েটার এ নিয়ে যাওয়া হয়।
আবির তাড়াতাড়ি করে ওর বাবা মাকে ফোন৷ দিয়ে সব ঘটনা খুলে বলে।।
আহানের এক্রিডেনট এর কথা শুনে হসপিটালে দৌড়ে চলে আসেন মিরাজ সাহেব আর মিসেস সাবিনা।
হসপিটালে এসে আবিরকে তারা দেখতে পেলে–
সাবিনাঃ আবির আমার ছেলে এখন কেমন আছে।
কিভাবে হল এইসব ( কান্না করতে করতে)
চারু ঃভাইয়ার আজ এই অবস্থা শুধুই আমার জন্য হয়েছে।আমার ভুলের জন্য।
দেয়ালে এক পাশে গা হেলিয়ে বলতে লাগল চারু।
চারুর কথা শুনে মিসেস সাবিনার রাগ চরম পর্যায় গিয়ে পৌছায়।।।।
আর তিনি রাগের মাথায় জোড়ে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে বসে চারুর গালে।
সাবিনা ঃ অলোক্ষিনী তোর কারনে আজ আমার সোনার টুকরো ছেলেটার এই অবস্থা।
আজ যদি ওর কিছু হয়ে যায় আমি তোকে মেরেই ফেলব
কথাটি বলে সাবিনা চারুর গলা চেপে ধরে শক্ত করে।
যার কারনে চারুর শ্বাস আটকে আসে।
আবির আর মিঃ মিরাজ তাড়াতাড়ি করে চারুকে
ছাড়ায় মিসেস সাবিনার থেকে।
সাবিনা তার হাত চারুর গলা থেকে সরিয়ে নিলে
চারু জোড়ে জোড়ে কাশতে থাকে।
মিরাজ ঃ সাবিনা কি করছ কি পাগলের মতো।
তুমি কি পাগল হয়ে গেছ??? (চেচিয়ে)
সাবিনা ঃ হ্যা পাগল হয়ে গেছি আমি।
পাগল হয়ে গিয়েছি। আজ একমাত্র ওর কারনে আমার
আদরের ছেলেটা মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে। (কান্না করতে করতে)
সাবিনার বলা কথাগুলো চারুর বুকে তীরের মতো গিয়ে লাগছে।কিন্তু কিছুই বলার নেই ওর।
চারু ঃ হ্যা সত্যিই তো বলছে আন্টি। আজ আমার ভুলের কারনে আহান ভাইয়ার এই অবস্থা।
আহান ভাইয়ার কথা শুনে সেই খানে দাড়িয়ে থাকলে আজ হয়ত ভাইয়া এই অবস্থা হতনা।
অপারেশন রুম থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসলে-
মিরাজ আর আবির ডাক্তার এর কাছে গিয়ে-
মিরাজ ঃ ডাক্তার আমার ছেলের এখন কি অবস্থা??
ডাক্তার ঃ দেখুন অপারেশন হয়েছে।কিন্তু যতক্ষন না রোগীর জ্ঞান ফিরছে ততক্ষন পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারছিনা।
আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার জ্ঞান না ফিরলে সে হয়ত আজীবন এর জন্য কোমায় চলে যেতে পারে।
তাই দোয়া করুন যাতে তার জ্ঞান ফিরে আসে এই চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে।
ডাক্তারের কথা শুনে………………..#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১৩)
#Humayra_Khan
.
.
.
ডাক্তারঃ আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার জ্ঞান না ফিরলে সে হয়ত আজীবনের জন্য কোমায় চলে যেতে পারে।
তাই আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যাতে তার জ্ঞান ফিরে
এই চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই।।।
কথাটি বলে চলে যায় ডাক্তার।।।
সবাই ডাক্তারের কথা শুনে জোড়ে জোড়ে কান্না করতে থাকে
আর মিসেস সাবিনা ডাক্তারের মুখ থেকে নিজের ছেলের ব্যাপারে এমন কথা শুনে কোন ভাবেই সামলাতে পারেনা নিজেকে.। কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সে।।
তার চোখে মুখে পানির ছিটা দিলে হুস আসে তার।
জ্ঞান ফিরে আসলে মিসেস সাবিনা তার স্বামীকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।।।
কান্না জরিত কন্ঠে-
সাবিনাঃ ওগো শুনেছো ডাক্তার কি বলে গেল??
আহানের নাকি জ্ঞান না ফিরলে ও কোমায় চলে যাবে।ওর কিছু হলে যে আমি মরে যাব।। বাঁচতে পারব না আমার সোনার টুকরো ছেলেটাকে হারিয়ে।।
মিরাজ ঃ এই সব কথা বলোনা আহানের মা।।
আমাদের আহানের কিছুই হবেনা।
আল্লাহ আমাদের এতো বড় ক্ষতি করতে পারেনা।
তিনি নিশ্চয়ই আমাদের ছেলেকে সুস্থ করে তুলবেন।
সাবিনা ঃ যদি আমার ছেলেটার জ্ঞান না ফিরে। তাহলে যে আমি মরে যাব। নিজের ছেলেকে জ্যান্ত লাশ এর মত শুয়ে থাকতে দেখতে পারব না আমি ( কান্না করে)
চারু ঃ প্লিজ আন্টি এই সব কথা বলা বন্ধ করুন
ভাইয়ার কোন কিছুই হবেনা আমার বিশ্বাস।
অতি শ্রীর্ঘই তার জ্ঞান ফিরে আসবে।
চারুর কথা শুনে মিসেস সাবিনা চারুর দিক এ রাগি দৃশটিতে তাকায়।
নিজের স্বামীর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায় সে।
চারুর কাছে গিয়ে আবারও চারুর গালে কষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় ওনি।।
চারু মিসেস সাবিনা হাতে থাপ্পড় খেয়ে নিজের গালে হাত রেখে অসহায় দৃশটিতে তাকিয়ে থাকে তার দিক এ
সাবিনাঃ দোয়া কর আহানের যাতে জ্ঞান ফিরে আসে।
আর ও যদি সুস্থ হয়ে উঠে। ওর কিছু হয়ে গেলে আমি নিজ হাতেই তোকে খুন করে মেরে ফেলব।
আস্ত রাখব না তোকে আমি।।
মিরাজঃ সাবিনা তুমি কিন্তু বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছ।
সাবিনা ঃ আমি বাড়াবাড়ি করছি?।ওর কারনে যে আমার ছেলে জ্যান্ত লাশ এর মত শুয়ে আছে। সেটা দেখতে পারছ না তুমি।।।
চারু মিসেস সাবিনা কথা শুনে শুধুই কান্নাই করে যাচ্ছে কিছুই বলতে পারছেনা ও।
দিশাঃ উফ আজ যদি আহান ভাইয়া সুস্থ থাকতেন এসব কথা শুনতে হতনা চারুর। নিশ্চয়ই তিনি চারুকে রক্ষা করতেন মায়ের এইসব অঅত্যাচার থেকে।
প্লিজ ভাইয়া আপনি তাড়াতাড়ি করে সুস্থ হয়ে উঠুন
আপনি কোমায় চলে গেলে হয়ত মা নিজের হাতেই চারুকে শেষ করে দিবে না হয়ত ওকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে বাসা থেকে।।।( আনমনে)
আবিরঃ ওর কোন দোষ নেই মা।কেন বেচারিকে এই ভাবে মারধর করছ?? ও কি জানত নাকি এই সব কিছু হয়ে যাবে।
সাবিনাঃ ওর ওকালতি করা বন্ধ কর।
এত দিন বউ এর ওকালতি করতি এখন আবার ওর জন্য করছিস।
মায়ের মুখে এই সব কথা শুনে বেশ রাগ আসে আবির এর।
মাকে কিছু বলতে যাবে দিশা আবির এর হাত ধরে থামিয়ে দেয় ওকে।।।
আবিরকে এক সাইড নিয়ে যায় দিশা
আবিরঃ আমাকে এইভাবে থামালে কেন দিশা।
দেখছিলেনা কি সব বলছিল মা আমাকে
দিশাঃ আবির মা এখন অনেক কষ্টে তে আছেন।
তাই তোমার উচিত মায়ের কথায় কষ্ট না পাওয়া।
ভাইয়ার জ্ঞান ফিরলে দেখ সে তার ভুল বুঝতে পারবে।
এখন শুধু ভাইয়ার জ্ঞান ফিরার অপেক্ষা।
সাবিনাঃ কিরে বেহায়ার মত এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। ধুর হ আমার চোখের সামনে থেকে।
পারলে পানিতে ডুবে মরে যা।আর আমাদের রেহাই দে।
সাবিনার বলা কথা গুলো শুনে চারুর সইতে না পেরে দৌড়ে চলে যায় হসপিটাল থেকে বের হয়ে।
মিরাজ ঃ আল্লাহ মেয়েটি এই ভাবে চলে গেল কেন।
কোন কিছু না আবার করে বসে সাবিনার কথা শুনে।
মিরাজ তাড়াতাড়ি করে দিশা আর আবির এর কাছে গিয়ে
মিরাজ ঃ দিশা….
আবিরঃ কি হল বাবা তুমি এমন হাঁপাচ্ছো কেন???
মিরাজ ঃ দিশা জলদি যাও। তুমার মা রাগের মাথায় অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছে চারুকে আর ও কোন কথা না বলেই চলে গেছে হসপিটাল থেকে বের হয়ে।
আমার কেন যেন ভয় করছে ওর এই ভাবে চলে যাওয়া দেখে।। দিশা তুমি তাড়াতাড়ি যাও ওর পিছনে।
ও বেশি দূরে যায়নি হয়ত

দিশা বেশ ভয় পেয়ে যায় মিরাজ সাহেব এর কথা শুনে।
ওই ও তাড়াতাড়ি করে বের হয়ে পরে হসপিটাল থেকে।
দিশা অনেক খুজতে থাকে চারুকে কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা ও।
হঠাৎ দিশা খেয়াল করল রাস্তার মাঝখানে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে। মেয়েটির আরেকটু সামনে গিয়ে খেয়াল করল মেয়েটি আর কেউ নয় চারু।।
চারু এ-ই ভাবে রাস্তা মাঝখান দিয়ে দাড়িয়ে থাকায় বেশ বিরক্ত হচ্ছে গাড়ির ড্রাইভার রা। আর ক্রমাগত গাড়ির হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে কিন্তু চারুর যেন কোন হুস ই নেই।
পাথরের মতই দাঁড়িয়ে আছে ও।
দিশা তাড়াতাড়ি করে গিয়ে চারুকে রাস্তার মাঝ খান থেকে সরিয়ে আনে।।।
দিশাঃ কি করছিলে চারু।এখন যদি তোমার কিছু হয়ে যেত?? এই টা কোন ধরনের পাগলামি।???
চারু ঃ নিশ্চুপ।।।
দিশাঃ চারু ( চিৎকার দিয়ে)
চারু ঃ ভাবি আমি মরে যাব।বাচতে চাইনা আমি।।
সে কোমায় গেলে কোন ভাবেই আমি ক্ষমা করতে পারব না নিজেকে। তুমি কেন আমাকে নিয়ে আসলে ও খান থেকে।
কোন গাড়ির সাথে চাপা পরে মরে গেলে আমি কিছুটা শান্তি পেতাম
তাকে জ্যান্ত লাশ এর মত পরে থাকতে যে আমি কোন ভাবেই দেখতে পারব না ভাবি।
কোন ভাবেই না( কান্না করে)
দিশাঃ এখন যদি চারুকে আবারও হসপিটালে নিয়ে যাই তাহলে মা আবারও চারুকে কথা শুনিয়ে দিবে।
আর তার কথা শুনে যদি চারু আবারও কিছু করে বসে?? আনমনে
না না আমি এমন কোন কিছুই হতে দিবনা।
চারুকে হসপিটালে এখন নেওয়া টা মোটেও ঠিক হবেনা।। আমি বরং ওকে মা বাবার বাসায় নিয়ে যাই।
আনমনে।
দিশাঃ চারু চল বাসায় চল
চারু ঃ ভাবি কি বলছ ভাইয়ার এই অবস্থা আর তুমি বাসায় যাওয়া কথা বলছ
দিশাঃ উফ চারু যা বলছি শুনো।
তারপর দিশা চারুর হাত ধরে একটা রিকশা করে চলে যায় সেই খান থেকে।।।।
বাসায় পৌছাতে পৌছাতে এশার নামাজের আজান দিয়ে দেয়
দিশা আর চারু তাড়াতাড়ি করে নামাজ পরে আল্লাহর কাছে প্রাথনা করতে থাকে আহানের জন্য
হসপিটালে…………
ডাক্তার বের হলে……
মিরাজ ঃ ডাক্তার আমার ছেলের এখন কি অবস্থা??
জ্ঞান ফিরেছে আমার ছেলের??
ডাক্তার একটা হাসি দিয়ে-
হুম আল্লাহর রহমতে আর আপনাদের সকলের দোয়ায় জ্ঞান ফিরেছে আহানের।।
আপনারা একটু পর ওর সাথে দেখা করতে পারবেন।
কথাটি বলে চলে যায় ডাক্তার।
মিরাজ ঃ আবির সাবিনা শুনেছো ডাক্তার কি বলে গেল এখন? আহানের জ্ঞান ফিরেছে।।।
আমার ছেলে চোখ খুলেছে
আবিরঃ আমি তাড়াতাড়ি করে দিশাকে ফোন দিয়ে জানাই খুশির সংবাদ টা।
তারপর আবির দিশাকে ফোন দেয়।
মোনাজাত ধরে দিশা আর চারু আহানের জন্য কান্না করতে থাকে।।।
মোবাইল এ ফোন আসলে দিশা মোনাজাত শেষ করে ফোনটা রিসিভ করে।
আবিরঃ হ্যালো দিশা আহানের জ্ঞান ফিরেছে দিশা।
জ্ঞান ফিরেছে আমার ভাইয়ের ( খুশি হয়ে)
দিশাঃ সত্যি বলছ?? আবির ভাইয়ার জ্ঞান ফিরেছে??
দিশার কথা শুনে চারু খুশি হয়ে যায়।।
আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে নেয়।।
দিশা ফোনটা কেটে….
শুনলে চারু ভাইয়ার জ্ঞান ফিরেছে।
আল্লাহ আমাদের প্রাথনা কবুল করেছে চারু।।
চারু দিশার কথা শুনে ওকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
দিশাঃ এই মেয়ে পাগল নাকি তুমি? ভাইয়ার জ্ঞান ফিরেছে আর তুমি খুশি হওয়ার বদলে কান্না করছো বোকার মতো
চারু দিশার কথার উত্তর না দিয়ে কেদেই যাচ্ছে অনবরত
দিশাঃ কি হল চারু তুমি কাদছ কেন এখন তো ভাইয়া সুস্থ আছেন জ্ঞান ফিরেছে তার।
চারুঃ ভাবি……………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here