ছায়া হয়ে থাকবো পাশে পর্ব -১৪+১৫

#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১৪)
#Humayra_Khan
.
.
.
দিশাঃ কি হয়েছে চারু তুমি এই ভাবে কাদছ কেন??
এখন তো ভাইয়া সুস্থ আছেন
চারু ঃ তাও ভাবি যতক্ষন না আমি তাকে নিজ চোখে দেখছি ততক্ষন পর্যন্ত আমি শান্তি পাব না ভাবি।
প্লিজ ভাবি আমাকে নিয়ে চল তার কাছে এক বার।
আমি তাকে দেখতে চাই।
দিশাঃ এখন ওই খানে তোমার যাওয়া ঠিক হবেনা
চারু। মা আবারও তোমাকে কিছু শুনিয়ে দিবে।
চারু ঃ ভাবি আমি কাকিমা কথা সহ্য করে নিব।
তাছাড়া কাকিমা তো আমাকে নতুন করে কথা শুনাচ্ছেনা। এই বাসায় আসার পর থেকেই তার তীক্ষ্ণ কথা মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছি।
আজ ও না হয় সহ্য করে যাব তার কথা। কিন্তু
তাকে না দেখা পর্যন্ত আমার মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করবে।। তাই তুমি প্লিজ আমাকে নিয়ে চল
তুমি না যেতে চাইলে আমিই একা একা চলে যাচ্ছি।
কথাটি বলে চারু যেতে নিলে
দিশা ওর হাত শক্ত করে ধরে বসে।
দিশাঃ পাগলামি কর না চারু।প্লিজ আমার কথাটা একবার বোঝার চেষ্টা কর। তোমায় মা কথা শুনালে আমাদের মতো ভাইয়ার ও তা ভালো লাগবেনা।তাই প্লিজ এট লিস্ট ভাইয়ার জন্য আমার কথা শুনো।
ভাইয়াকে হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ করলে তুমি তাকে দেখে নিও।
চারু দিশার কথা শুনে থেমে যায়।।।
চারু ঃ আচ্ছা ভাবি যাব না আমি।অপেক্ষা করব তার ফিরে আসার।
দিশাঃ এইত তো লক্ষি মেয়ের মত কথা।
হসপিটালে……..
আহানের কেবিন থেকে একটা নার্স বের হয়ে আসলে-
আবিরঃ নার্স আমরা কখন দেখা করতে পারব আহানের সাথে???
নার্স ঃ আপনারা এখন চাইলে দেখা করে আসতে পারেন।কিন্তু কিছু সময় জন্য। রোগির যাতে কোন ডিসর্টাব না হয় সেই দিক টা একটু খেয়াল রাখবেন।
আবিরঃ জ্বি আমরা খেয়াল রাখব।
নার্সঃ আচ্ছা।
তারপর নার্স আবির মিসেস সাবিনা আর মিরাজকে আহানের কেবিনে নিয়ে যায়।
মিরাজ সাহেব আহানের বেড এর সামনে গিয়ে ওর মাথায় হাত রেখে –
এখন কেমন আছিস বাবা??(কান্না জরিত কন্ঠে)
আহানঃ আমি তো অলওয়েসট ফাস্ট ক্লাস থাকি বাবা
(হেসে)
শুধু মাথায় একটু ব্যথা করছে ( মাথায় হাত রেখে)
সাবিনা ঃ এই তুমি দেখছো না ছেলেটার মাথায় ব্যনডেজ করা আর তুমি ওর মাথায় হাত দিয়ে আরও ব্যথা বাড়িয়ে দিচ্ছ। হাত সরাও বলছি।।(ধমক দিয়ে)
নার্সঃ প্লিজ শান্তি বজায় রাখুন রোগীর সামনে এতো চেচামেচি করলে তার সম্যসা হবে।
মিসেস সাবিনা নার্স এর কথা শুনে মাথা নিচু করে ফেলে।
আহানঃ প্লিজ নার্স আপনি একটু পরে আসুন।
নার্সঃ কিন্তু স্যার! আমাকে যে আপনার দেখভাল এর জন্য থাকতে বলেছে।
আহান ঃআমার দরকার পরলে আপনাকে ডেকে নিব।(ছোট করে একটা হাসি দিয়ে)
নার্সঃ ওকে স্যার।
তারপর নার্স কেবিন থেকে বের হয়ে পরলো।
সাবিনা ঃ ইসস নার্স হয়ে দেমাগ কত।ডাক্তার হলে কি যে করত আল্লাহ যানে।।কিভাবে আমাকে।এই সাবিনা খানকে বকছিল। (মুখ বাকা করে)
তুই একবারে ভালো করেছিস আহান ওকে রুম থেকে তারিয়ে দিয়ে।
আহানঃ উফ মা আমাদের উচিত সব মানুষ কেই সম্মান করা। ।আর আমি ওকে তারিয়ে দেইনি অনেক ক্ষন ধরে কাজ করে যাচ্ছিল। ওর ও তো একটু রেস্ট দরকার তাই যেতে বলেছি।
সাবিনাঃ কি তর মাকে এতো কথা শুনিয়ে দিল।
আর তুই ওই নার্সটার জন্য ভাবছিস??
আহানঃ মা।ও তো জাস্ট ওর ডিউটি টাই পালন করছিল।
সাবিনাঃ হয়েছে হয়েছে আমি সবই বুঝি।আমাকে এইসব বুঝাতে হবেনা।
মিরাজ ঃআরে সাবিনা তুমি কি শুরু করলে বল তো দেখি।ছেলেটা সবেমাএ জ্ঞান ফিরল তুমি ওকে একটু রেস্ট নিতে দিবে তা না হাজারো কথা বলে ওর মাথা আরও ব্যথা করিয়ে দিচ্ছ।।
আবিরঃ হ্যা মা বাবা ঠিক বলেছে আহানকে একটু রেস্ট দেওয়ার প্রয়োজন.। তাই এখন আমাদের ওকে একটু রেস্ট নিতে দেওয়ার দরকার।
আহানঃ সবাই এই খানে এ-ই চারুকে তো দেখছিনা।
কেমন মেয়ে রে বাবা ওর জন্য আমি মরতে মরতে বাচলাম আর আমাকে একটুও দেখতে আসল না।
না না আহান তুই ভুল বুঝছিস চারুকে। নিশ্চয়ই কোন কারনে ও এই খানে নেই?? ভালো আছে তো ওই?
নিজের সাথে নিজেই হাজারো কথা বলতে লাগল আহান। মনে মনে।
আবিরঃ কি রে কি ভাবছিস?? আহান??
আহানঃ আসলে চারু আমাকে দেখতে আসলোনা কেন তাই ভাবছি( মন খারাপ করে)
আহানের কথা শুনে সবাই ওর দিক পশ্নসূচক দৃশটিতে চেয়ে থাকলে-
আহানঃ আসলে বলতে চেয়ে ছিলাম যে দিশা ভাবি আমাকে দেখতে আসল না।।ভুলক্রমে চারু নাম মুখে এসে পরেছে।।।
সাবিনাঃ ভালোই হয়েছে ওই শয়তান টার কথা জিজ্ঞেস করিস নি।।।জানিস হসপিটাল থেকে হুর হুর করে বেরিয়ে গেল কাউকে কিছু না বলেই।
ওর জন্য যে আজ তর এই অবস্থা। কেমন মেয়ে দেখেছিস তোকে দেখার জন্য ও একটু থাকল না।
মিরাজ সাহেব কিছু বলতে যাবে মিসেস সাবিনা তার হাত ধরে থামিয়ে দিল।
সাবিনাঃ আচ্ছা অনেক কথা হয়েছে।
এখন সবাই ওকে একটু একা থাকতে দেই।
আবিরঃ মা কি সব বলে ফেলল চারুর ব্যাপারে।
মার কথা শুনে আহান না আবার চারুকে ভুল বুঝে।
ভুল বুঝারই কথা।।মা যেভাবে কথা গুলো বলেছে।
আমিও সাথে সাথে বিশ্বাস করে ফেলতাম।
আনমনে।
সাবিনাঃ কি বললাম শুনলেনা তুমরা।চল এখন
আবির আর মিরাজ সাহেব সাবিনার ধমক খেয়ে তাড়াতাড়ি করে বের হয়ে পরল।
আহানঃ সত্যি কি চারু আমাকে দেখার দরকার মনে করেনি তাই চলে গেছে হসপিটাল থেকে।
না না আহান। অন্য কোন কারন হতে পারে।
আই হোপ চারু ভালো আছে।।।।
দুইদিন পর হসপিটাল থেকে আহান ডিসচার্জ পেলে-
দিশাঃ চারু একটা গুড নিউস ভাইয়া হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ পেয়েছে।
চারু ঃ সত্যি ভাবি।
উফ ফাইনালি সে আসবে।।(খুশি হয়ে)আনমনে।
আহানকে বাসার নিয়ে আসার আগ মুহুর্তে
মিসেস সাবিনা চারুকে রুমে ডেকে..
সাবিনাঃ আজ আহান আসছে নিশ্চয়ই শুনেছিস
চারুঃ জ্বি কাকিমা(খুশি হয়ে)
সাবিনা ঃ আমি যাতে তোকে আমার ছেলের আশে পাশেও না দেখি। তর অলোক্ষিনি মুখ নিয়ে আমার ছেলের সামনে আসবিনা
সাবিনার কথা শুনে চারু চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরল আর সে তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়

আহানকে হসপিটাল থেকে বাসায় নিয়ে আসলে-
গাড়ি থেকে আহান নামতে নিবে-
মিরাজ ঃ আয় আমি ধরে তোকে নামিয়ে দিচ্ছি।
তুই কেন যে এতো বাড়াবাড়ি করিস আহান। উইল চেয়ার টা আনলে কি ক্ষতি হতো তোর।
আহানঃ উফ বাবা।।আমার উইল চেয়ারের কোন দরকার নেই আমি তো জাস্ট মাথায় আর হাতে আঘাত পেয়েছি পায়ে না।।তাই আমি নিজে নিজে হাটতে পারব।
তারপর আহান নিজে থেকেই গাড়ি থেকে নেমে পরল।
বাসায় ঢুকলে-
আবির আহানকে ধরে ওকে ওর বেড রুমে নিয়ে যায়।
সাবিনাঃ সবাই এখন রুম থেকে বের হও।
তুই একটু রেস্ট নে আহান।
তারপর সবাই রুম থেকে বের হতে নিলে-
আহানঃ ভাবি……
উফ কি করছিস আহান ভাবির কাছে চারুর কথা জিজ্ঞেস করলে সে কি না কি ভাববে আমাকে।
কিন্তু কিভাবে ওর খবর নিব আমি।ওই তো আমার সামনেই আসছেনা।ওর মোবাইল নাম্বার টাও আমার কাছে নেই।যে ওকে ফোন দিয়ে আস্ক করব কিছু।
আইডিয়া। আনমনে
ভাবি তোমার ফোনটা একটু দিবে?আমার একটা কল করার ছিল ।
দিশা ঃআচ্ছা নাও।
দিশা আহানকে ওর ফোনটা দিলে-
আহান তাড়াতাড়ি করে দিশার মোবাইল থেকে চারুর নাম্বার টা বের করে মুখস্থ করে নেয় চারুর নাম্বার টা।
আহানঃ নাও ভাবি হয়ে গেছে।
দিশাঃ সে কি তুমি না বললে কাউকে ফোন করবে।
আহানঃ আসলে যাকে ফোন দিব তার নাম্বার টা আমার মুখস্থ নেই।আমি আমার মোবাইল থেকে কল দিয়ে নিব নে।।।
দিশাঃ আচ্ছা।।
তারপর দিশা আহানের রুম থেকে বেরিয়ে পরে।
দিশাঃ আবির ভাইয়া তো এখন সুস্থ আছেন। এখন আমাদের বাসায় যাওয়া উচিৎ।
আবিরঃ হ্যা ঠিক বলেছো।
মিরাজঃ সে কি কথা আবির।
আবিরঃ হ্যা বাবা।।।তাছাড়া আহান তো এখন ঠিকই আছে।
দিশা ঃযাওয়ার আগে ভাইয়াকে বলে গেলে ভালো হয় আবির।
আবিরঃ হুম চল।
আবির আর দিশা আহানের রুমে ঢুকে –
আবিরঃ আহান আমরা চলে যাচ্ছি।তুই তোর খেয়াল রাখিস। কথাটি বলে আবির দিশা রুম থেকে চলে যেতে নিলে-
আহান আবির কে ডাক দেয়।
আবির আহানের কথা শুনে থেমে গিয়ে-
আবিরঃ কিছু বলবি??
আহানঃ ছোট ভাইয়ের একটা আবদার রাখবে ভাইয়া।
আবিরঃ হুম কেন রাখবানা।। তুই বল
আহানঃ প্লিজ ভাইয়া তুমি আর ভাবি এই বাসা থেকে যাও। তোমাকে আর ভাবিকে এই বাসায় না দেখলে বাসা টা শূন্য শূন্য লাগে।প্লিজ ভাইয়া ছোট ভাইয়ের এই আবদার টা পূরন কর।
আবিরঃ তুই তো জানিস কেন আমি চলে গেছি বাসা ছেড়ে।
আহানঃ হুম জানি।আমি প্রমিশ করছি ভাইয়া।আম্মু আর কোন কথা শুনাবেনা ভাবিকে।আমি আম্মুকে সামলিয়ে নিব।
আবিরঃ কিন্তু…..
দিশা আবির এর ঘাড়ে হাত রেখে।
ভাইয়া এতো করে বলছে। তাই তুমি না কর না।
হ্যা ভাইয়া আমরা থাকব এই বাসায়।
আহানঃ সত্যি ভাবি (খুশি হয়ে)
দিশাঃ হুম সত্যি। একটা মাএ দেবর এর আবদার পূরন করব না সেটা কি হয়।(মুচকি হেসে)
কিন্তু আজ তো বাসায় যেতে হবে সব জরুরি জিনিসপএ নিয়ে আসতে হবে ও বাসা থেকে।
কাল আমরা সকাল সকাল চলে আসব নে।
আহানঃ আচ্ছা।।
তারপর আবির আর দিশা চলে যায়।
আবির আর দিশা এই বাসায় চলে আসবে শুনে বেশ খুশি হয়ে পরে বাড়ির বাকি সদ্যসরা।

রাতে আহানের মা নিজ হাতেই ওকে খাইয়ে দেয়।
খাওয়া শেষ হলে-
আহানঃ মা এখন তুমি যাও রেস্ট কর গিয়ে।
সাবিনাঃ আমি মোটেও এই রুম থেকে বের হচ্ছিনা।
কোন সময় তোর কোনটা দরকার পরে।
কারো তো থাকা দরকার তর পাশে।
আহানঃ উফ মা আমি ঠিক আছি।দরকার পরলে তোমাকে আমি ডাক দিব নে……..
মিসেস সাবিনা আহানের কথা শুনে চলে যায় রুম থেকে।
আহান তাড়াতাড়ি করে ওর ফোনটা হাতে নিয়ে-
চারুকে কল দিতে নেয়-
দশটা ডিজিট মোবাইলে ডায়েল করার পর।
আহানঃ উফ শেষ এ-র নাম্বার টা কি ছিল যেন।
থ্রি নাকি সেভেন।।
উফ মনে আসছেনা।থ্রিই হবে।।
তারপর আহান শেষ এ থ্রি বসিয়ে কল দেয় নাম্বার টায়
ফোন রিসিভ হলে-
আহানঃ হ্যালো চারু??
মেয়েটিঃ ওই কে চারু। আমার নাম রায়না।
আপনার সাহস কি করে হল আমাকে ফোন দিয়ে আমার ঘুম নষ্ট করার। এতো রাতে মেয়ে মানুষ দের ফোন না দিলে কি হয়না।।।বাসায় কি মা বোন নেই?
আহানঃ সরি সরি আপু। বাসায় মা আছে বোন নেই।
আর আমি অন্য কাউকে ফোন দিতে গিয়ে আপনাকে দিয়ে ফেলেছি।
মেয়েটিঃ বুঝি তো আপনাদের চালাকি।ইচ্ছা করে মেয়ে দের ফোন দেন। আর ফোন দিয়ে বলেন ভুলে কল দিয়েছি।
আহানঃ হায়রে আপু আমি সত্যি বলছি।
মেয়েটিঃ তোর…..
মেয়েটি কিছু বলতে যাবে এর আগেই আহান ফোনটা কেটে নাম্বার টা তাড়াতাড়ি করে ব্লাক লিস্ট এ রেখে দেয়।
আহানঃ উফ বাবা কি সাংঘাতিক মেয়ে।।।।
উফ এর মানে শেষ এর নাম্বার টা সেভেন ই হবে।
তারপর আহান শেষ এর নাম্বার টা সেভেন ডায়েল করে ফোন দিয়ে বসে নাম্বার টায়।
আহানঃ হ্যালো
অপর পাশেঃ হ্যালো (কান্নার কন্ঠে)
আহানঃ……………..#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ১৫)
#Humayra_Khan
.
.
.
আহানঃ হ্যালো
অপর পাশেঃ হ্যালো।কে বলছেন? (কান্নার কণ্ঠে)
আহান ফোনে চারুর কন্ঠ শুনতে পেয়ে
আহানঃ উফ থ্যাংক গড ভুল কোন নাম্বারে কল দেইনি তাহলে।।
কিন্তু চারু এইভাবে কান্না করছে কেন?(আনমনে)
আহানঃ হ্যালো চারু আমি আহান।
চারু বেশ চমকে উঠে –
ভাইয়া আপনি??? আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?? আমি তো আপনাকে কখনো আমার নাম্বার দেইনি।
আহানঃ সেইটা তোর না জানলেও হবে কিভাবে পেলাম। কার কাছ থেকে পেলাম। এখন বল কান্না করছিলি কেন এমন বাচ্চা দের মতো করে।
চারু ঃ কই আমি তো কান্না করছিলাম না ভাইয়া।(কান্না করে)
আহানঃ এই মেয়ে তুই পাগল নাকি কান্না করে করে কথা বলছিস। আর বলছিস আমি কান্না করছিনা
থাপ্পড় খাবি আমার সাথে মিথ্যা বললে।।
চারু ঃ ভাইয়া কেন জানি আপনাকে আমার দেখতে ইচ্ছে করছে।।। হসপিটালে যাওয়া পর থেকে আপনার সাথে আর দেখা হয়নি আমার।।।আজ ও দেখা হলনা আমাদের।
আহানঃ ইস চারু আমাকে দেখতে চাইছে। এর মানে চারু ও আমাকে ভালোবাসে।।।।আনমনে
চারু ঃ কিন্তু!
আহান চারুর কিন্তু বলা শুনে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে।
আহানঃ কিন্তু কি চারু??
চারু ঃ নিশ্চুপ।।।
আহানঃ মা আমার সামনে আসতে নিষেধ করেছে তোকে???
চারু ঃ আল্লাহ সে কিভাবে বুঝল? আনমনে।
আহানঃ আমারও তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে চারু।আনমনে।
আহহ…………
চারু ঃ ভাইয়া কি হয়েছে??? আপনি ঠিক আছেন তো।।
আহানঃ আমার পিপাসা পেয়েছে অনেক। ভুলে
ব্যথার হাত দিয়ে গ্লাস টা নিতে গিয়ে হাতটা আরও ব্যথা করছে আমার।
চারু ঃ আপনি কেন কষ্ট করতে গেলেন।
দাড়ান আমি আসছি।
কথাটি বলে ফোন কেটে দেয় চারু। আর দৌড়ে চলে আসে আহানের রুমে।।।।
চারু রুমে আসলে আহান তৃষ্ণার্ত চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকে চারুর দিক এ।।।
চারু ঃ ভাইয়া আপনি ঠিক আছেন।।কেন নিজ হাত দিয়ে পানির গ্লাস টা নিতে গেলেন।
আহান চারুর কথার কোন জবাব না দিলে-
চারু ঃ ভাইয়া(জোড়ে)
আহানঃ এই ভাবে চিল্লাছিস কেন।আস্তে কথা বলতে পারিসনা।।কেউ জেগে গেলে তোকে আমার রুমে মধ্যে দেখলে তো বাসার মধ্যে তুমুল কান্ড পেকে যাবে।।।।
চারু ঃ কি করব তাহলে আমি যে কোন সময় থেকে আপনাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছি হাজারো প্রশ্ন। আপনি তো অন্য কোন খেয়ালেই ডুবে আছেন
আহানঃ অন্য কোন খেয়ালে না তোর নেশায় ডুবে আছি আমি।। বিড় বিড় করে
চারু ঃ কিছু বললেন??
আহানঃ কই না তো।।।
চারু ঃ তো বললেন না যে আপনি কেমন আছেন।
আহানঃ আমি তো অলওয়েসট ভালোই থাকি।
চারু ঃ ওও আপনি পানি খেতে চেয়েছিলেন?
দাড়ান আমি দিচ্ছি।।
কথাটি বলে চারু পানির গ্লাসটা আহানকে দিতে নিলে-
আহানঃ চারু খাবার খেয়েছিস রাতের???
আহানের কথা শুনে চারু পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে থেমে যায়।
আহানঃ বুঝতে পারসি খায়নি কিন্তু নিশ্চয়ই আমাকে বলবেনা।। তাই আমার ইস্টাইলেই ওকে খাওয়াতে হবে।
আনমনে।
চারু পানির গ্লাস টা রাখ আর আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।
চারু ঃ আপনি খাননি???
আহানঃ খেয়েছি কিন্তু আবারও খিদে পেয়েছে আমার।
তুই অনেক কথা বলিস রে চারু জলদি করে খাবারটা নিয়ে আয় না।।। খিদের জ্বালায় কিন্তু তোকেই খেয়ে ফেলব আমি।।
চারু ঃ কি ( ভয়ে)।।
আহানের কথা শুনে ভয় পেয়ে চারু তাড়াতাড়ি করে চলে যায় রুম থেকে।।।
আহানের বেশ হাসি পায় চারুর এইভাবে চলে যাওয়া দেখে।
আহানঃ এক দিন সুযোগ পেলে ঠিকই খেয়ে ফেলব তোকে।
কথাটি বলে নিজে নিজেই পাগলের মতো হাসতে লাগল আহান।।।।
রান্না ঘর থেকে খাবার নিয়ে চারু সোজা চলে যায় আহানের রুমে।।
চারু ঃ এই নিন খাবার।। আর খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।।।খেতে পারবেন তো???
আহানঃ কেন খেতে না পারলে কি তুই খাইয়ে দিবি আদর করে(চোখ টিপি দিয়ে)
আহান এই ভাবে চোখ টিপি দেওয়ায় বেশ লজ্জায় পরে যায় চারু। তাড়াতাড়ি করে মুখ ঘুরিয়ে নেয় অন্য দিক এ
দেখুন আপনার বা হাতে ব্যথা তো ঢং না করে তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন
আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে(একটা হাম দিয়ে)
আহানঃ মানুষ বড়ই নিষ্ঠুর।।মা তো বলল না তোর ডান হাতে ব্যথা না বা হাতে ব্যথা।। ঠিকই তো নিজের হাতে খাইয়ে দিল আমায়।।।
চারু ঃ দিচ্ছি দিচ্ছি।।ইমোশোনাল ব্লাকমিল করতে হবেনা।।আপনি ডাক্তার না হয়ে অ্যাকটার হতে পারতেন।
অনেক বেশি অ্যাকটিং করতে জানেন।
আহানঃ তাই নাকি চড়ই পাখি।আগে জানলে ঠিকই ডাক্তার না হয়ে অ্যাকটার হয়ে যেতাম।
কথাটি বলে জোরে জোরে হেসে উঠে আহান।
চারু ঃ আপনার দাত কেলানো হয়ে গেছে?? নাকি আরও বাকি???
আহানঃ কি ডেন জারাস মেয়ে রে বাবা।। পুরাই রিনা খান( হেসে)
চারু ঃ আমি না আপনার মা রিনা খান।
কথাটি বলে জ্বিবে কামড় দিয়ে –
চারু ঃ কি বললি চারু। ছেলের সামনেই বলছিস তার মা রিনা খান।এখন তো ছেলে মিশা সওদাগর হয়ে যাবে।
আহানঃ কি বললে আমার মা রিনা খান?
চারু ঃ আসলে আমি( আমতা আমতা করে)
আহানঃ আমার মাকে তুমি রিনা খান বললে।তা আবার আমারই সামনে।। সাহস তো কম বড় নয় তোমার।
ভুল যেহেতু করেছো এর জন্য তোমার কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
চারু ঃ কি কঠিন শাস্তি?? (অসহায় মুখ করে)
আহানঃ হুম কঠিন শাস্তি ( মুখ গম্ভির করে)
কানে ধর
চারু ঃ কি?
আহানঃ জ্বি।
চারু আহানের কথা শুনে দুই কান ধরে।
আহানঃ নাও উঠ বস কর
চারুঃ এ্যা…….
আহানঃ কুইকলি( ধমক দিয়ে)
চারু আহানের ধমক খেয়ে কানে ধরে উঠ বস করতে লাগে আর বিড় বিড় করে আহানকে গালি দিতে থাকে।
চারু ঃ শয়তান ; কুত্তা; বিলাই;; তোকে তো আমি দেখে নিব।
আহান খেয়াল করল চারু আহানের দিক এ তাকিয়ে রাগি দৃশটিতে বিড় বিড় করে যাচ্ছে।।
আহানঃ নিশ্চয়ই আমাকে গালি দিচ্ছি। আহহ অনেক দিন পর চারুর এই রাগি লুক টা দেখার সৌভাগ্য হল আমার।।।ভালোবাসার মানুষ টাকে রাগাতে আলাদাই একটা আনন্দ পাওয়া যায়।।।।
চারু দশ বার উঠা বসা করলে –
আহানঃ হয়েছে আর করতে হবেনা।এই বার থামো।
চারু ঃ শালা তুই আমাকে দশ বার কানে ধরিয়ে উঠ বস করিয়েছিস আম তোকে সুযোগ পেলে দশ বার নয় একশ বার উঠা বসা করাব।
আহানঃ নাও আমাকে নিজ হাত দিয়ে খাইয়ে দাও।
চারু ঃ ইস যেমন করে বলছে মনে হয় আমি উনার বউ লাগি।।।
আহানঃ হতে আর কতক্ষন( হেসে)
চারু ঃ কি বললেন?
আহানঃ কিছুনা রে বাবা।।খাইয়ে দিবা?
চারু ঃ দিচ্ছি।
তারপর চারু ভাত মেখে আহানের মুখা মুখি বসে ওকে খাইয়ে দিতে থাকে।
দুই লোকমা খাওয়ার পর-
আহানঃ উফ আর খেতে পারছিনা।পেট ভরে গেছে।
আরেকটু খেলে বেলুন এর মত ফুলে উড়ে যাব আকাশে।
চারু ঃ তো এই ভাত খেয়ে খাবে আপনি না খেলে।
আহানঃ তুই খাবি।দেখ চারু খাবারের অপচ্য় আমি মোটেও পছন্দ করিনা। তাই এই ভাত গুলো ফেলে দেওয়ার চিন্তা মোটেও করবিনা।
চারু ঃ আমি তো ভাত খেয়েছি।।।
আহানঃ নিশ্চয়ই মিথ্যা বলছে আমার সাথে।আনমনে
আমি কোন কিছুই শুনতে চাইনা আর শুনবো ও না।
তোকে এই ভাত খেতে হবে। তো হবে।
চারু আর কোন উপায় না পেয়ে খেতে শুরু করল
চারু ঃ উফ আর খেতে পারছিনা।।
আহানঃ মাইর না খাওয়ার আগে পুরো খাবার ফিনিশ কর।
চারু আহানের কথা শুনে ভাতের লানা মুখে নিতে যাবে এর আগেই গড় গড়ে করে বমি করে দেয় চারু।।।
আহান চারুর মুখামুখি বসায় পুরো বমি গুলো এসে আহানের গা এর উপর পরে।
আহানঃ এইটা কি করলি চারু????
চারু আহানের কথার উত্তর না দিয়ে আবারও বমি করে দেয় আহানের উপর।
আহান চারু দিক এ অসহায় দৃশটিতে তাকিয়ে-
আহানঃ….. আবারও (কান্নার মুখ করে)
চারুঃ……………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here