জোর করে ভালোবাসবো তোকে পর্ব ৮+৯+১০

#জোর_করে_ভালোবাসবো_তোকে
#পর্ব – ৮+৯+১০🔴🔴🔴🔴🔴🔴🔴🔴

🔴তাই বুঝি বেইবি।

কথাটা শুনতেই আঁচল পেছন ফিরে তাকায়…..

আঁচল – আআআআআ….

রেহান দ্রুত এসে আঁচলের মুখ চেঁপে ধরে।

রেহান – এই মেয়ে এভাবে চেঁচাচ্ছো কেনো?

আঁচল – আপনি কি বলুন তো? আপনি নিশ্চয় কোনো আত্মা। না হলে এভাবে সব সময় আমার কথার মাঝ খানে চলে আসেন কিভাবে?

আঁচলের কথা শুনে রেহান হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না। এই মেয়ে বলে কি!!

রেহান – আমি তোহ তোমার কিউট বর। (মুচকি হেসে)
next next na লিখে, গল্প পড়ার আগ্রহ থাকলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়ে এড হয়ে
ইনবক্স করেন তাহলে ইনবক্সে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ কোন পার্ট মিস হবেনা,
আপনাদের রিকুয়েস্টর সাড়া পেলে আজকেই সব পর্ব দিবো
আঁচল – আরে রাখেন আপনার বর টর। ঐ রিমি টা কোথায় গেলো। ও তো এখানেই ছিলো আমার সাথে।

রেহান – তুমি এমন ভাবে টেডি দেখায় মন দিয়েছিলা তোমাকে যদি কেউ কিডন্যাপ করে নিয়ে যেতো তাহলেও তুমি টের পেতে না।
অবশ্য আমি থাকতে কেউ তোমাকে নিয়ে যাবে দূরে থাক টাচ ও করতে পারবে না। বুঝলে বেইবি। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ওফফ….আপনার এই সব কথা বন্ধ করুন তো। রিমি কোথায় সেটা বলুন। (বিরক্তি নিয়ে)

রেহান – আহারে এই টুকু বুদ্ধি নেই আমার বউ টার। আচ্ছা আমরা রোমান্স করার সময় রিমি এখানে থেকে কি করবে বলো তো?
আমার তো সমস্যা নেই কিন্তু তুমি তো লজ্জা পাবে তাই না। (চোখ মেরে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এই পাগল টা বলে কি!!

আঁচল – আপনি সত্যিই একটা ডেভিল। অসভ্যের দুলাভাই। যত্তসব অসহ্য। বলেই রুম থেকে চলে যেতে নেয়।

রেহান আঁচলের হাত ধরে টান মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে দু’হাতের উপর ভর দিয়ে আঁচলের দিকে ঝুঁকে পরে।
আঁচল ভয়ে কয়েকটা ঢোক গিলে। না জানি এই অসভ্য টা কি করে বসে আল্লাহ মালুম। (মনে মনে)

রেহান – বেইবি অসভ্য বলেছো যখন একটু অসভ্যতামি তো করতেই হই কি বলো! (মুচকি হেসে)

আঁচল – (এই রে সেরেছে! এবার পালাবো কি করে আমি। মনে মনে)

রেহান নেশার দৃষ্টিতে আঁচলের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে।
আঁচল বিষয় টা খেয়াল করতেই বলে উঠে…….

আঁচল – এ মা রিমি….! তুমি কখন এলে?

রেহান আঁচলের কথা শুনে হেসে দেয়। আঁচলের বোকামি দেখে বেচারার হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা।

আঁচল অবাক হয়ে যায় রেহানের এমন কান্ডে।

রেহান – বেইবি তুমিও না!! ভালো করে তাকিয়ে দেখো দরজা টা ভেতর দিয়ে লক করা। তুমি কি ভেবেছো আমি দরজা খুলা রেখেই তোমার সাথে রোমান্স করবো।

আঁচল তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো দরজা তো লক করা। কিন্তু আমার কি দোষ! আমি তো এই অসভ্যর কাছ থেকে পালানোর জন্য মিথ্যা বলেছিলাম।
যাই হোক এই সুযোগ এ আমি বরং পালাই। যেই ভাবা সেই কাজ।

রেহান এখনো বিছানায় শুয়ে হেসেই যাচ্ছে। আঁচল এক লাফে শুয়া থেকে উঠে পালাতে নিলেই রেহান আঁচলের শাড়ির আঁচল ধরে ফেলে।

রেহান – পালানোর ধান্দা তাই না। পালানোর জন্যই রিমি এসেছে বলেছিলে? এবার পালাও তো দেখি! (মুচকি হেসে)

আঁচল – ছাড়ুন আমায়।

রেহান কিছু না বলেই শাড়ির আঁচলটা ধরে টান দেয়।
আঁচল ও বাধ্য হয়ে রেহানের কাছে চলে যায়।
রেহান আঁচলকে নিজের উপর নিয়ে আসে আঁচলের কোমড় শক্ত করে ধরে….

রেহান – তোমার এই একটা রোগ জানো আঁচল!!
রোমান্স করার সময় মুড নষ্ট করে দাও।

আঁচল – তো এখন আপনার রোমান্স করার টাইম নাকি আজিব!! (বিরক্ত হয়ে)

রেহান – তাহলে কখন শুনি? রাতে ? (মুচকি হেসে)

আঁচল – আপনার সাথে কথা বললেই আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাবে। ছাড়ুন আ…..

রেহান আঁচলকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আঁচলের ঠোঁট আকড়ে ধরে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও রেহান আঁচলের ঠোঁট ছাড়ছে না।
এদিকে আঁচল বেচারির যেনো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।

আঁচল না পেরে রেহানের হাতে জোরে নখ দিয়ে আঁচড় কাটে। যেহেতু আঁচলের নখ গুলো চাইনিজ কুড়াল কেও হার মানাবে রেহানের অবস্থা কি হয়েছে সেটা রেহানই বুঝতে পারছে।

রেহান – আহহহ আঁচল! তুমি কি পাগল! এভাবে কেউ আঁচড় কাটে? (ধমক দিয়ে)

রেহানের ধমক শুনে আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে রেহানের কাছ থেকে চলে আসতে নিলেই রেহান পেছন থেকে আঁচলের কোমড় ধরে টেনে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে আঁচলের উপর উঠে শরীরের ভার ছেড়ে দেয়।

রেহান – সাহস তো কম না তোমার! আমার হাতের ১২ টা বাজিয়ে দিছো। এর শাস্তি তো পেতেই হবে। (রেগে)

আঁচল – (এ মা…. না জানি আবার কোন শাস্তি দিবে আল্লাহই জানে। মনে মনে।)

আঁচল কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রেহান আঁচলের গলায় মুখ গুঁজে দেয়।আঁচল ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
রেহান আঁচলের গলায় চুমু দিয়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়।

আঁচল – আউউচচ….. মরে গেলাম গো…. এ তো আস্ত রাক্ষস…. আমাকে খেয়ে ফেলতে চাইতে গো মা….. (ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিয়ে)

রেহান আঁচলের উপর থেকে উঠে যায়…..

রেহান – এটাই হলো তোমার শাস্তি বুঝছো। স্টুপিড…. বলেই হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

আঁচল গলায় কিছুক্ষন হাত বুলিয়ে বিছানা থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দেখতে থাকে।

আঁচল – রাক্ষস কোথাকার! আমার এতো সুন্দর গলায় দাঁত বসিয়ে দিলো। ইচ্ছে করছে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মারি।

—- কি বলো ভাবি! আমি ভাইয়ে মারার প্লান করছো বুঝি?
next next na লিখে, গল্প পড়ার আগ্রহ থাকলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়ে এড হয়ে
ইনবক্স করেন তাহলে ইনবক্সে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ কোন পার্ট মিস হবেনা,
আপনাদের রিকুয়েস্টর সাড়া পেলে আজকেই সব পর্ব দিবো
আঁচল কারো কন্ঠ শুনে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রিমি।

আঁচল – এই তুমি কোথায় গিয়েছিলে বলো তো? (কিছুটা রেগে)

রিমি – বারে!! আমি না গেলে রোমান্স করতে কিভাবে শুনি? (আঁচলের গলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে)

আঁচল তারাতারি করে গলা টা ঢেকে রেগে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রিমি আঁচলের কান্ড দেখে হাসছে।

আঁচল – ধুর রিমিটার কাছে থাকলেও এখন জ্বালিয়ে মারবে। আর রুমে গেলে তো ঐ ডেভিল টা! ওহহহ আল্লাহ দড়ি ফালাও আমি উপরে চলে যাই!!

আঁচল আর কিছু না ভেবে রুমে চলে যায়। গিয়ে দেখে রেহান বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে বই পড়ছে।
আঁচলকে আসতে দেখে একবার আঁচলের দিকে তাকিয়ে আবার বই পড়ায় মন দেয়।

আঁচল – যাক বাবা ডেভিল টার মাথা থেকে আমাকে জ্বালানোর ভুত দূর হয়েছে।
আঁচল বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।

রেহানের বেলকনি টা সত্যিই অনেক সুন্দর। আর এই সুন্দর্য টাকে বাড়িয়ে দিয়েছে ফুল গাছ গুলো।
বেলকনিতে অনেক গুলো ফুল গাছ। বোধহয় রেহান এই গাছ গুলোর যত্ন করে।

আঁচল ফুল গুলোতে হাত দিয়ে দেখে বেলকনির গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা বাতাসে আঁচলের চুল গুলো উড়ছে।
আঁচলের অনেক ভালো লাগছে এই পরিবেশ টা। সে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।

অনেকক্ষণ আঁচলকে রুমে আসতে না দেখে রেহান বই টা রেখে উঠে দাড়ায়।
বেলকনির সামনে আসতেই আঁচলকে দেখে রেহানের চোখ আটকে যায়।

রেহান চুপিচুপি বেলকনিতে গিয়ে দাড়ায়।
আঁচলের চুল গুলো উড়ে রেহানের চোখমুখে পড়ছে।
এতে রেহান মোটেই বিরক্ত হচ্ছে না। বরং অজানা এক ভালোলাগা কাজ করছে রেহানের মনে।

হটাৎ পেটে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে আঁচল চমকে উঠে। পিছন ফিরে বুঝতে পারে রেহান।
রেহান আঁচলের কাছে গিয়ে পেছন থেকে আঁচল কে জড়িয়ে ধরে আঁচলের চুলে মুখ ডুবায়।

আঁচল রেহান কে ছাড়াতে চাইলে রেহান আরও শক্ত করে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে।

আঁচল – কি হচ্ছেটা কি! ছাড়ুন আমায়। (বিরক্ত হয়ে)

রেহান আঁচলের কথা শুনে কিছু না বলে আঁচলকে ছেড়ে দেয়। আঁচল সেখান থেকে চলে আসে।

রুমে এসে আঁচল পিছন ফিরে দেখে রেহান দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হাসছে।
আঁচল আর কিছু না বলে চলে আসে রুম থেকে।

#জোর_করে_ভালো_বাসবো_তোকে
#পর্ব – ৯🔴
.
.🔴রুমে এসে আঁচল পিছন ফিরে দেখে রেহান দাঁড়িয়ে দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হাসছে। আঁচল আর কিছু না বলে রুম থেকে চলে আসে।

সারা দিন আঁচলের ভালোই কাটে। রিমির সাথেও অনেক গল্প করে। তাছাড়া কালকে আঁচলের বাড়ি থেকে লোক আসবে ভাবতেই আঁচলের খুশি খুশি লাগছে।

রাতে…

আঁচল ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকে দেখে কেউ নেই।

আঁচল – যাক বাবা বাঁচা গেলো। অসভ্য টা রুমে নেই। আমি এই সুযোগে চেঞ্জ করে আসি। এই সব শাড়ি টারি পড়ে কি ঘুমানো যায় নাকি। আজিব।

আঁচল নিজের লাগেজ থেকে একটা লং টপস্ আর একটা প্লাজো বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
এদিকে রেহান বেলকনিতে ছিলো কেউ এসেছে ভেবে রুমে আসতেই দেখে কেউ নেই।
রেহান ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা দিতেই বুঝতে পারে ভেতর থেকে লক করা।

রেহান – ওহহ। মহারানি নিশ্চয় ওয়াশরুমে আছে। রেহান বিছানার বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পরই আঁচল ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
রেহান আঁচলকে দেখে একদম হা!!
রেহানের মুখ থেকে আচমকা বেড়িয়ে আসে… মাশআল্লাহ।
next next na লিখে, গল্প পড়ার আগ্রহ থাকলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়ে এড হয়ে
ইনবক্স করেন তাহলে ইনবক্সে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ কোন পার্ট মিস হবেনা,
আপনাদের রিকুয়েস্টর সাড়া পেলে আজকেই সব পর্ব দিবো
আঁচল রেহানের কথায় বিরক্ত হয়নি বরং এই প্রথম বার রেহানের মুখের কথায় আঁচলের ভালো লাগছে।

রেহান ধীর পায়ে আঁচলের দিকে এগুতে থাকে।
রেহানের এগুনো দেখে আঁচল ভয়ে ঢোক গিয়ে। আঁচল শক্ত হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।

রেহান আঁচলের অনেক টা কাছে চলে আসে। রেহানের প্রতিটা হার্টবিট যেনো আঁচল গুনতে পারছে। আঁচল চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে আছে।

রেহান আঁচলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে….

রেহান – বেইবি আমাকে পাগল করার জন্য তুমি তৈরি দেখছি!!
বলেই আঁচলের কানে চুমু দেয়।

আঁচল যেনো ফ্রিজড হয়ে গেছে রেহানের ঠোঁটের ছোঁয়ায়।
রেহান আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

আঁচল এবার খনিকটা বিরক্ত হয়ে যায়।

আঁচল – আপনি কেমন মানুষ বলুন তো! আমার অতীত টা জানার পরও আপনি কেনো আমার সাথে এমন করছেন? হ্যা মানলাম আপনি আমার স্বামী। আমার উপর আপনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। কিন্তু তাই বলে প্রথম দিন থেকেই আপনার অধিকার দেখাবেন? আমাকে কি একটু সময় দেয়া যেতো না? (চিৎকার করে)

আঁচলের এমন রিয়েক্টে রেহান চুপ মেরে যায়। আঁচল কে একপ্রকার ধাক্কা দিয়েই দূরে সরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
রেহান চলে যাওয়ার পর আঁচল বিছানায় একপাশে শুয়ে কেঁদে যাচ্ছে। রেহানের এমন অধিকার ফলানো টা যেনো আঁচল কিছুতেই মানতে পারছে না।
প্রায় দু ঘন্টা পার হয়ে যায় রেহান রুমে আসে না। আঁচল ও কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে।

এদিকে রেহান ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।

রেহান – আঁচল কি আমায় কোনো দিনও মেনে নিতে পারবে না? আমি কি এতোটাই খারাপ। এতোটাই অযোগ্য। ও কি কোনে দিনও জিসান কে ভুলতে পারবে না। ও শুধু আমার রাগটাই দেখলো অত্যাচার টাই দেখলো। আমি যে ওকে প্রথম দিন থেকেই ভালোবেসে ফেলেছি বুঝতে পারেনা ও!!
আমিও তো চেয়েছিলাম ওকে সময় দিতে। কিন্তু ভয় হয়েছিলো যদি ও আমায় ছেড়ে জিসানের কাছে চলে যায়। তাই তো ওকে সময় দিই।
ও কি শুধু ঘৃণা করেই যাবে আমায়। আমার রাগের মাঝে লুকানো ভালোবাসা টা বুঝতে পারবে না কোনো দিনও!!! (ভাবতে ভাবতেই রেহানের চোখ দিয়ে দু’ফোটা অশ্রু ঝড়ে)

নাহ! আমি এভাবে ওর ঘৃণার কাছে হেরে যাবো না। বরং আমার ভালোবাসা দিয়েই ওকে নিজের করে নিবো।

রেহান ছাদ থেকে রুমে এসে দেখে আঁচল গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। রেহান আঁচলের পাশে বসে আঁচলের ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে।

” সত্যিই এই মুখটায় জাদু আছে। যখনই দেখি শুধু আমাকে কাছে টানে “।

রেহান আঁচলের কপালে চুমু দিয়ে আঁচলকে টেনে নিজের বুকে নিয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে….

আঁচলের ঘুম ভাঙতেই নিজেকে রেহানের বুকে আবিষ্কার করে। আঁচল কাল রাতের কথা ভাবছে।

আঁচল – কাল রাতে তো উনি রুম থেকে চলেই গিয়েছিলো। আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
তাহলে কখন আসলেন? আমিও বুঝতে পারিনি।

এইসব ভাবতে ভাবতে রেহানের দিকে তাকাতেই দেখে রেহান আঁচলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।

আঁচল কিছু না বলে রেহানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

আঁচল – কেস টা কি হলো। অসভ্য টা একবারও আটকালো না। বাবা! ভালো হয়ে গেলো নাকি!

আঁচল শাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বের হয় ওয়াশরুম থেকে।
রেহান উঠে আঁচলের কাছে গিয়ে টাওয়েল
টা নিয়ে নেয়।

আঁচল – কি হলো?

রেহান – আমি মুছে দিচ্ছি বসো।

রেহান আঁচলকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দিয়ে নিজে আঁচলের চুল মুছে দিচ্ছে। আঁচল রেহানের এমন কাজে অবাক না হয়ে পারে না।

রেহান – আচ্ছা বেইবি তুমি এতো সকাল সকাল শাওয়ার নিলে কেনো বলো তো। কাল রাতে তো কিছুই হয়নি।

আঁচল রেহানের কথা শুনে ভ্রু কুচকে রেহানের দিকে তাকায়।

রেহান – হুম সত্যিই তো। কাল রাতে কিছুই হয়নি। তুমি যা রেগে ছিলে বাপরে!

আঁচল – (আমিও কি ভাবি এই অসভ্য আজীবন অসভ্যই থেকে যাবে। কি সব বলে যাচ্ছে দেখো! মনে হই লজ্জা বলতে যে একটা শব্দ আছে সেটা উনি জানেনই না। হুহহহ….)

রেহান আঁচলের চুল মুছে দিয়ে আঁচলের চোখে কাজল দিয়ে দেয়।

রেহান – ব্যাস। এবার আমার মিষ্টি বউয়ের উপর কারো নজর লাগবে না। (মুচকি হেসে)

আঁচল চুপ করে আছে। রেহান আঁচলকে চুপ থাকতে দেখে বলে….

রেহান – আমার পারিশ্রমিক টা দিবে না?

আঁচল – মানে? ( অবাক হয়ে)

রেহান – ও বাবা! এতো কষ্ট করে চুল মুছে দিলাম। কাজল দিয়ে দিলাম তার বিনিময়ে আমি কিছুই পাবো না?
সেটা কি করে হয় বেইবি। (মুচকি হেসে)

আঁচল বুঝতে পারে রেহান কি চাইছে। আঁচল কিছু বলার আগেই রেহান আঁচলের ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়।

আঁচল – অসভ্য। বলেই রেগে রুম থেকে চলে আসে। আঁচল নিচে চলে আসতেই রিমির সাথে দেখা হয়।

রিমি – বাহ ভাবি। তোমাকে অনেক কিউট লাগছে।

আঁচল – হয়েছে এবার চলো। আজ আমি রান্না করি।

রিমি – কিন্তু মা!

আঁচল – মাকে আমি পরে যা বলার বলবো তুমি চলো তো।

রিমি আঁচলকে নিয়ে রান্না ঘরে চলে যায়।
আঁচল সবার জন্য ব্রেকফাস্ট বানায় রিমিও আঁচলকে সাহায্য করে। হটাৎ বেল বাজতেই দিতেই রিমি বলে…

রিমি – ভাবি তুমি বরং ব্রেকফাস্ট টেবিলে সাজাও। আমি দেখে আসি কে এসেছে।

রিমি দরজা খুলতেই দেখে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।

রিমি – কাকে চাই?

ছেলেটা – আঁচলকে!

#জোর_করে_ভালোবাসবো_তোকে
#পর্ব – ১০ 🔴🔴🔴🔴🔴🔴🔴

.
.
🔴রিমি দরজা খুলে দেখে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।

রিমি – কাকে চাই?

ছেলেটা – আঁচলকে!

ছেলেটার কথা শুনে রিমি খানিকটা রেগে যায়।

রিমি – আপনি জানেন আঁচল আমার ভাবি হই। আর অন্য কারো ওয়াইফ কে আপনি নাম ধরে বলছেন কেনো?

ছেলেটা – এতো কৈফিয়ত আপনাকে দিতে আমি বাধ্য নই। আপনি আঁচলকে ডাকুন। আঁচল আমাকে ঠিকই চিনবে।

রিমি – আরেহহ আজিব! আপনাকে আমরা চিনি না তাহলে কেনো ডাকবো বলুন তো?

ছেলেটা – আমরা নই। বলুন আপনি চেনেন না। এতো কথা না বলে ডাকুন আঁচলকে।

ওরা দু’জনের চেঁচামেচি শুনে আঁচল রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।

আঁচল – কি হলো? কার সাথে চেঁচাচ্ছো?
আঁচল দরজার সামনে আসতেই ছেলেটাকে দেখে বড়সড় একটা শক খায়।

আঁচল – আদি ভাইয়া তুমিইইই!!! (অবাক হয়ে)

আদি – কি!! কেমন দিলাম সারপ্রাইজ টা? (মুচকি হেসে)

রিমি – ভাবি তুমি উনাকে চেনো?

আঁচল – আরে কি বলো চিনবো না কেনো? উনি আমার ফুপাতো ভাই আদি। অবশ্য ফুপাতো ভাই বললে ভুল হবে কারন আদি ভাইকেও আমার নিজের ভাই মনে করি। উনি আমার বিয়েতে থাকতে পারেননি দেশের বাহিরে ছিলেন তাই।

আদি ভাইয়া তুমি দেশে ফিরলে কবে।

আদি – এইতো কাল। আর আজ নাকি মামুনি রা আসবে তোকে নিতে আমাকেও বলছিলো তোকে দেখে যেতে তাই ভাবলাম আমিই আগে এসে তোকে সারপ্রাইজ দিয়ে দিই। মামুমির কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে চলে এলাম।

আঁচল – খুব ভালো করেছো ভাইয়া। আমি খুউউব খুশি।
এই দেখো তোমাকে বাহিরে দাঁড় করিয়ে সব কথা বলে ফেলছি। তুমি ভেতরে এসো। — বলেই আদির হাত ধরে টেনে ভেতরে আনে আঁচল।

রেহান নিচে নামছিলো এমন সময় দেখে আঁচল একটা ছেলেকে হাত ধরে বসতে বলছে। মূহুর্তেই রেহানের ভেতর ভয় ঢুকে যায়।
ছেলেটা জিসান নয়তো? জিসান কি আঁচলকে ফিরিয়ে নিতে এসেছে?
না না! এটা হতে দিবো না। আঁচল আমার বিয়ে করা বউ। আঁচল এখন আমার আমানত। ওর দিকে কেউ নজর ও দিতে পারে না।
রেহানের রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। হাত দু’টো মুষ্টিবদ্ধ করে আছে। ইচ্ছে করছে জিসান কে এখনি মেরে পুঁতে ফেলতে।
আর আঁচল!!! ও কিভাবে পারলো জিসানের হাত ধরতে!
আগে আঁচলকে দেখে নিই। তার পর ঐ জিসান!

রেহান রেগে আঁচলের কাছে আসে।
আঁচল রেহানকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।

আঁচল – শুনুন.. উনি…

আঁচলকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রেহান আঁচলের হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে যায়।

এদিকে রেহানের এমন কান্ডে আদি আর রিমি হা করে তাকিয়ে থাকে।

আদি – কি হলো বলুন তো?

রিমি – কিছুই তো বুঝলাম না।

রেহান আঁচলকে রুমে এনে দরজা লক করে দেয়।

আঁচলের এক হাত পিছনে নিয়ে মোচড় দিয়ে ধরে। আঁচল ব্যাথায় কুকড়ে উঠে।

আঁচল – আহহ রেহান কি হচ্চে টা কি। আমার হাত টা ছাড়ুন। লাগছে আমার। (কাঁদো কাঁদো হয়ে)

রেহান – লাগুক। তুই যদি আজ মরেও যাস তবুও আমার কষ্ট নেই। তোর এত বড় সাহস হলো কি করে? তুই আমার ওয়াইফ ভুলে গেছিস?

আঁচল – কি করেছি আমি? এতো মেজাজ দেখাচ্ছেন কেনো? মানুষ মনে হয়না আমাকে? আপনার সব রকম অত্যাচার মেনে নিবো কেনো বলুন তো? (কেঁদে দিয়ে)

রেহান রেগে আঁচলের গালে কে ঠাস করে চর মেরে দেয়। আঁচল ছিটকে মেঝেতে পড়ে যায়।
রেহানের এমন আচরণ আঁচল মোটেই মানতে পারছে না। সব কিছু যেনো এলোমেলো লাগছে আঁচলের।
আঁচল গালে হাত দিয়ে রেহানের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

রেহান আঁচলকে টেনে তুলে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।
রেহানের এমন হিংস্র রুপ দেখে আঁচল ভয়ে কাঁপছে।

রেহান – আমি তোর উপর অত্যাচার করি তাই না। আমার ভালোবাসা তোর অত্যাচার মনে হই। আর তোর ঐ জিসান তোকে অনেক ভালোবাসতো তাই না। এই জন্যই তুই তোর জিসানের সাথে চলে যাওয়ার প্লান করছিলি।

আঁচল – মানে? (অবাক হয়ে)

রেহান – মানে কি বুঝতে পারছিস না? তোর জিসান এই বাড়িতে কি করছে? কেনো এসেছে ও এই বাড়িয়ে? তোকে নিয়ে যেতে তাই তো? আর তুইও তোর জিসানের সাথে পালানোর প্লান করছিস। (চিৎকার করে)

এবার আঁচল বুঝতে পারে। আদি কে জিসান ভাবছে রেহান। আঁচলের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।

আঁচল এক ঝটকায় রেহান কে ছাড়িয়ে দিয়ে বলে….

আঁচল – জিসান! কে জিসান? উনি আমার ভাইয়া বুঝেছেন? আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।
আপনি ভাবলেন কি করে ঐ বেইমান টাকে হাত ধরে এ বাড়িতে নিয়ে আসবো। হ্যা মানছি আমি ওকে এখনো ভুলতে পারিনি। ভালোবাসি এখনো। তার মানে এই না আমি আবার ঐ বেইমান কে সুযোগ দেবো।

রেহান আঁচলের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে যায়। কি ভাবছিলো সে আর কি হয়ে গেলো। আঁচলকে ভুল বুঝেছে ওর গায়ে হাতও তুলেছে। এটা মোটেও ঠিক হয়নি।

রেহান – আঁচল আসলে আমি….

আঁচল হাত তুলে রেহান কে থামিয়ে দেয়।

আঁচল – থাক। আপনার নিচু মনমানসিকতা পাল্টান রেহান। বলেই রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

রেহানের বোকামির জন্য তার নিজের উপরই মারাত্মক রাগ হচ্ছে। এভাবে আঁচলকে কষ্ট দিয়ে দিন দিন দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

আঁচল অন্য একটা রুমে দরজা লাগিয়ে কান্না করতে থাকে।
বার বার এই লোকটা জিসানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে কেনো? যতোই চাইছি জিসান কে মন থেকে মুছে ফেলবো ততোই ওর কথা বলে মনে করিয়ে দেয়।

এদিকে আদি অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে আঁচলকে দেখতে পারছে না আর। আদিও বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। রেহান যেভাবে রেগে আঁচলকে নিয়ে গেলো! কি জানি কি হয়েছে।
রিমি রেহানের রুমে আসে।

রিমি – ভাইয়া কি হয়েছে রে? তুই ঐ সময় ভাবিকে রেগে নিয়ে আসলি কেনো?

রেহান রিমিকে সব টা বলে।

রিমি – ও মা ভাবির বয়ফ্রেন্ড ছিলো! জানতাম না তো। যাই হোক ঐটা ভাবির অতীত। তুই কেনো ভাবিকে ওর অতীত নিয়ে সন্দেহ করলি? তোর কি মনে হয় নিজের স্বামীর বাসায় কেউ তার বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে আসে!
তোর কোনো দিন আর বুদ্ধি হবেনা।

রেহান চুপ করে বসে আছে।

রিমি গিয়ে আদিকে সব বলতেই আদি হেসে দেয়।

আদি – বাবাহ রেহান আমার বোন টাকে এতো ভালোবাসে! সত্যি আমি অনেক খুশি হয়েছি আমার বোন টা এমন একটা বর পেয়েছে যে কিনা ওকে চোখে হারায়।
আচ্ছা আমি বরং আসি। আঁচল তো আজ বাড়ি যাবেই তখন না হয় ওর সাথে আড্ডা দিতে পারবো। এখন রেহান কে বলুন আমার বোনের অভিমান খানা ভাঙ্গতে। বলেই আদি চলে যায়।

এদিকে রেহান আঁচলকে খুজতে থাকে। রিমি কে জিগ্যেস করতেই বলে….

রিমি – বাহিরে তো যায় নি। তুই দেখ হয়তো কোনো রুমেই দরজা আটকে বসে আছে। যা গিয়ে ওর রাগ ভাঙ্গা। বলেই রিমি চলে যায়।

চলবে…?????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here