#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_০৯
রোহান আর তারিফা একটা রেস্টুরেন্ট বসে গল্প করছিল আর নাস্তা করছিলে।
হঠাৎ রোহান বলে,”জানো আমি আজ যে বাড়িতে দাওয়া দিতে গিয়েছিলাম সেই বাড়িটা কার ছিলো। ”
তারিফা বলে,”তুমি না বললে আমি জানবো কি করে?”
রোহান বলে,”ঐ যে শাঁকচুন্নি আছে না।সারাদিন আমার আশেপাশে মাছির মতো ঘুরতে থাকে।”
-এসব আবার কার বায়োডেটা রোহান?
রোহান বলে,”আবার কার ঐ অরিন খানের! ”
-তাই,তা সে ম্যাডামের সাথে দেখা করে কি ঝগড়াঝাঁটি করেছো?
রোহান বলে,”আরে নাহ!তার বাড়ির কেউ ছিলো না।তাই জন্য তো কার্ড টা অরিনের হাতে দিয়ে এসেছি।
-তা সে জানতে চাইলো না কিসের কার্ড ছিলো এটা?
রোহান বলে,”হুম,তাকে বলেছি তো,আমার বিয়ের কার্ড তোমাদের স্ব-পরিবারে দাওয়াত রইলো।”
-ভালোই বলেছো তুমি।বেচারি মেয়েটা।
রোহান বলে,”oh, hello madam! অরিনের কোন দিক দিয়ে বেচারি মনে হয়?ওর থেকে ফাজিল কেউ নাই এজগতে।”
-দেখো মেয়েটা বাহিরের দেখে অনেক জেদি রাগী। আর সব থেকে বড় কথা কি জানো?আমার মনে হয় মেয়েটা তোমাকে পছন্দ করে।কিন্তু সে নিজেই হয়তো জানে না।
রোহান বলে,”তোমার মাথা খারাপ?ঐ পাগল মেয়ে পছন্দ করবে আমাকে?জানো যেদিন থেকে অরিন ভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে তারপর থেকে আমার সব বান্ধবী সহ আশেপাশের সব মেয়েরা আমার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করে।আমি কোনো মেয়ের সাথে কথা বললে ম্যাডাম সেখানে এসে হাজির হবে বুঝলে।ঐ মেয়েটা অভিসাপ আমার জন্য।ও আশার পর থেকে তিন বছর একটাও গার্লফ্রেন্ড জোটে নাই আমার।”
-এরপর ও কি তোমার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলতে হবে।যে মেয়েটা তোমাকে অন্য মেয়েদের থেকে প্রোটেকশন দিয়ে রাখে।তোমাকে অন্য মেয়ের সাথে সহ্য করতে পারে না।একটা মেয়ে যাকে পছন্দ করে!তার আশেপাশে অন্য মেয়েদের সহ্য করতে পারেনা। হয়তো মেয়েটা নিজের মনের কথা মুখে প্রকাশ করতে পারে না।
রোহান বলে,”বাদ দাও ওর কথা।ওর পাগলী সহ্য করার মতো সময় একদম নেই আমার।বাবার শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো যায় না আজকাল। মাস্টার্স কমপ্লিট করে একটা ভালো জব খুঁজে বাবাকে আরামের ব্যবস্থা করে দিবো।
-হ্যাঁ তোমার এখন বাবাকে আরামের ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিৎ। এতোদিন সে কাজ করেছে!এখন আমাদের দায়িত্ব তাদের দেখাশোনা করার।
রোহান বলে,”হ্যাঁ গো সেই ডিসিশন নিয়েছি এবার।”
-জানো এই দুনিয়ার নিয়ম বড়ই অদ্ভুত! কারো সব কিছু থেকেও প্রাপ্তি নেই।কারো কোনো কিছু না থেকেও কোনো প্রাপ্তি নেই।তবুও যার নেই সে অল্পের মাঝেই তৃপ্ত। আর যার সব আছে সে তবুও সন্তুষ্ট নয়!
রোহা-এমন কথা বলার মানে কি তারিফা!
তোমার কি কোনো সমস্যা আছে আমাকে বললে পারো।
-আরে নাহ আমার কোনো সমস্যা নেই।আর যদিও থাকে তার সমাধান আল্লাহ ঠিক একদিন করে দিবে।তবে একটা কথা কি জানো মানুষ পরিবর্তনশীল।
সময় অসময় নিজের রুপ রং কালচার সব বদলে নেয়।সময়ের সামনে বাধ্য থাকে কিছু মানুষেরা।এই এখন আছি একটু পর নাও থাকতে পারি।সব কিছু ধোঁয়াশা। জীবনটাকে যতোই সুন্দর কে সাজাতে যাও না কেনো কিছু সময় অনেক কিছু ঝরা পাতার মতো ঝড়ে যায় জীবন থেকে।কেউ বুঝতেও পারি না।
রোহান -ওরে আল্লাহ গো!এ মেয়ে কতো কথা বলে গো।আর কী সব জ্ঞানের কথা বলে,দেখো এখুনি বুড়ো হয়নি।এসব বড় বড় কথা ভবিষ্যৎ এর জন্য তুলে রাখো।
‘
‘
‘
এদিকে অরিনের বাড়ির সবাই এসে দেখে ড্রয়িংরুমে কাগজ টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা।
মমতা খান কাজের মেয়েকে ডেকে বলে,”সব কিছু পরিষ্কার কেনো করো নাই?এভাবে রুমের ভেতরে নোংরা করে রাখার মানে কি?”
-ভয়ে ভয়ে কাজের মেয়েটা বলে,”বড় ম্যাডাম আপনারা বাড়িতে ছিলেন না! তখন বড় স্যারের অফিসের কেউ এসেছিল।একটা কাগজ ছোট ম্যাডামের হাতে দিয়ে চলে যায়।ম্যাডাম কাগজটা ছিঁড়ে ছড়িয়ে দেয়।পরিষ্কার করতে চাইলে বারণ করে আমাকে।”
অরিনের বাবা বলে,”আমার অফিসের কোনো দরকার হলে কারো তো বাড়িতে আসার কথা না।কারণ অফিসে নিষেধ করে দেওয়া আছে কেউ যেনো অফিসিয়াল প্রয়োজনে আমার বাড়িতে না আসে।তারপর কে এসেছিল? ”
আয়াশ বলে,”আচ্ছা বাবা সমস্যা নেই আমি অফিসে ফোন করে এখুনি খোঁজ নিচ্ছি। ”
এমস সময় অরিন সেখানে এসে বলে,”বাবা তোমার অফিসের ম্যানেজার সাহবের ছেলে এসেছিল বাড়িতে।”
আয়াশ বলে,”উনার ছেলে কি দরকার এসেছিল বাড়িতে? তোকে খারাপ কিছু বলেছে বোন?”
অরিন বলে,”না খারাপ কিছুই বলে নাই!সে তো তার বিয়ের দাওয়াত দিতে এসেছিল আমাদের স্ব-পরিবারে।সে খুব করে বলে গেছে আমারা সবাই যেনো তার বিয়েতে তাদের বাড়িতে যায়।”
অরিনের বাবা বলে,”ছেলের লেখাপড়া কমপ্লিট হলো না!এখুনি বিয়ে দিচ্ছে কেনো হঠাৎ করে?
মমতা খান বলে,”আরে বোঝো না!এখন কার যুগের ছেলেমেয়ে গুলো এমনি হয়।নিজে সেটেল্ট হওয়ার আগেই প্রেম-পিড়িতি করে বিয়ে করতে চাই তখন তার বাবা মা আর কোনো উপায় না পেয়ে।ছেলে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজী হয়।”
অরিনের বাবা বলেন,”হ্যাঁ মমতা তুমি ঠিক বলেছো! সবার ছেলে মেয়ে কি আমাদের বাচ্চাদের মতো না কি?আমাদের ছেলে মেয়ে কতো ভালো দেখো এতো সুন্দর দেখতে তারপর ও এদের এসবে কোনো মাথা ব্যাথা নেই।নয়তো অন্য বড়লোক বাড়ির ছেলে মেয়ে গুলো তো প্রেম করে হাজারটা,বিয়ে করে বাড়ির মান-সম্মান শেষ করে দেয়।আল্লাহর রহমত থাকলে আমরা দেখে শুনে ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিবো।”
অরিন তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।
আয়াশ বলে,”সব কিছু বুঝলাম! তবে হঠাৎ করে বিয়ের দাওয়াতের নিমন্ত্রণ পএ ছিঁড়ে ফেলার কারণ খুঁজে পেলাম না!”
অরিন বলে,”আজব কাহিনী, ওটা আমার ভালো লাগে নাই!আমি নষ্ট করেছি।তাতে তোমাদের সমস্যা?দাওয়াতের খবর তো পেয়েছ তাতেই হবে।”
আয়াশ বলে,”তা ঐ ছেলের বিয়ে কবে! তা সম্পর্কে কিছু জানিস?”
অরিন এবার নিজের জ্বিব্বাতে কামড় খেয়ে বলে,”তা শুনেতে ভুলে গেছি।”
অরিনের বাবা বলে,”আচ্ছা সমস্যা নেই।অফিসে গিয়ে জানতে পারবো।এখন আর মেয়েটা কে তোমরা ডিস্টার্ব করো না তো।”
হঠাৎ করে অরিন নিজেই কাগজের টুকরো গুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে দেয়।অরিনের এমন কান্ড দেখে সবাই তো একদম হ্যা হয়ে যায়।
কাজের মানুষ এসে বলে,”ছোট ম্যাডাম আপনি রাখেন আমি পরিষ্কার করে দিবো।”
অরিন বলে,”ইচ্ছা করে যখন আমি নোংরা করেছি তখন তা পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমার।”
আয়াশ মনে মনে ভাবে,”অবশেষে আমার বোনের মতিগতি বদলেছে তাহলে আলহামদুলিল্লাহ্। ”
মেয়ের এমন বদলে যাওয়া রুপ দেখে বাবা মা খুব খুশি।যাক মেয়েটা নিজের ভুল বুঝতে শিখেছে এবং সেই ভুল সংশোধন করতেও চেষ্টা করছে।
এরপর অরিন আয়াশ নিজেদের রুমে চলে যায়।
ওদের চলে যাবার পর মমতা খান অরিনের বাবাকে বলে,”আমাদের মেয়েটা অনেক বড় হয়ে গেছে!এখন একটা ভালো ছেলে আর পরিবার খুঁজে মেয়েটার বিয়ে দেওয়া উচিৎ। এদিকে ছেলেটার ও বিয়ের বয়স হয়ে গেছে।আর কতোদিন এভাবে রাখবো ওদের।আমাদের দায়িত্ব ওদের বিয়ের ব্যবস্থা করা।”
অরিনের বাবা বলে,”আমিও খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি কি করা যায়।তুমি চিন্তা করো না।সব কিছু ঠিকঠাক হবে।”
মমতা খান বলে,”ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ ভরসা!”
(আর কয়েকটা পর্বের অপেক্ষা করেন গল্পের সব রহস্যের জট ক্লিয়ার করে দিবো)
‘
‘#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_১০
অরিন কিছুদিন ধরে কেমন যেনো অন্যমনস্ক থাকে!
এই কিছুদিনের মাঝে অরিনের মাঝে অনেক পরিবর্তন হয়ছে। সে আগের মতো সবার সাথে রাগারাগি করে না।নিজের যা চাই তা পাবার জন্য যিদ করে না।তবে কি অরিন বদলে গেছে?না কি ওর নিরবতার মধ্যে ঝড়ের কোনো পূর্বাভাস আছে।এটা তো সময় বলতে পারে।
অরিন কিছুদিন গ্যাপ দেওয়ার পর হঠাৎ করে ভার্সিটিতে গমন করে।সে ভার্সিটিতে প্রবেশ করতেই দেখে রোহান তারিফার সাথে খুব ক্লোজ হয়ে বসে হাসাহাসি করে কথা বলছে।
কেনো জানি অরিন নিজেকে সংযোত রাখতে না পেরে তাদের সামনে এগিয়ে গিয়ে ওদের হচকিত করে দেয়।
রোহান আর তারিফা মোটেই অরিন কে সামনে দেখবে আশা করে নাই।
তারিফা অরিন কে দেখে বলে,”আরে অরিন যে!তা অনেকদিন পর ভার্সিটিতে আসলে! তা এতোদিন শরীর খারাপ ছিলো না কি তোমার?”
অরিন বলে,”কেনো?আমাকে দেখে কোন দিক দিয়ে অসুস্থ মনে হচ্ছে আপনা?”
তারিফা বলে,”আসলে তোমার চেহারাটা কেমন যেনো মলিন দেখাচ্ছে! মনে হচ্ছে কোনো কারণ তোমার মনটা বড়ই অশান্ত! ”
অরিন বলে,”মোটেই না!আমি একদম ঠিক আছি!আমার কোনো সমস্যা নেই।”
অরিন আর তারিফার কথা বার্তা মনোযোগ সহকারে রোহান শুনছে।রোহান অরিনের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি মেয়েটা আগের মতো নেই।
ওর চেহারাটা সত্যি মলিন হয়ে আছে।
মনে হচ্ছে কেউ ওর মনের মাঝে ছুড়ির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে।হঠাৎ কয়েকটা দিনে মেয়েটার কি হলো?প্রশ্ন করবো!
নাহ থাক,ও যে মেয়ে কিছু জিজ্ঞাস করাও বিপদজনক।
তারিফা বলে,”আলহামদুলিল্লাহ্ তুমি ভালো থাকলেই ভালো।”
হঠাৎ করে অরিন তারিফা কে অভিনন্দন বলে ওঠে।
এমন করে শুভকামনা জানানোর জন্য তারিফা অরিন কে বলে,”হঠাৎ করে অভিনন্দন জানাচ্ছ যে!”
অরিন বলে,”ওমা সামনে তোমার বিয়ে তো!তাই অগ্রিম অভিনন্দন জানাচ্ছি।পরে যদি সুযোগ না পাই আর।”
আমার বিয়ে কথাটা বলে রোহানের দিকে তাকিয়ে থাকে।রোহান হ্যা করে অরিনের দিকে তাকিয়ে আছে!তা দেখে তারিফা বলে,”ঐ ছ্যামড়া দুই দিন পর যার বিয়ে সে কি করে অন্য মাইয়ার দিকে ডেবডেব করে তাকিয়ে থাকতে পারে!পরোনারীর দিকে তাকানো উচিৎ না।”
রোহান তারিফার এমন কথা শুনে বলে,”আজব চোখের সামনে সুন্দরি দাঁড়িয়ে আছে।আর তাকে দেখলেই সমস্যা! ”
তারিফা বলে,”আমার অবশ্য সমস্যা নেই।তুমি ইচ্ছা করলেই চান্স মারতে পারো।দুদিন পর তো শিকলে ঠিকি বাধা পড়বে।”
রোহান তারিফার দিকে তাকিয়ে একটা মেকি হাসি দেয়।
ওদের দু জনের চোখাচোখি করা দেখে অরিন সেখানে থেকে চলে যায়।
অরিন আড়ালে গিয়ে টিসু দিয়ে নিজের চোখের পানি মুছতে থাকে।
এমন সময় সেখানে একটা রুমাল বাড়িয়ে দিয়ে বলে,”টিসু দিয়ে মুছলে হবে না তো!তোর জন্য রুমালের প্রয়োজন! ”
অরিন সামনে তাকিয়ে দেখে পিংকী দাঁড়িয়ে আছে।
-তা তুই হঠাৎ এতোদিন পর ভার্সিটিতে এসেছিস!
কই আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলি না?
আমি কি তোর খুব পর রে?
অরিন বলে,”আরে তেমন কোনো কথা নেই!
হঠাৎ করে চলে আসছি তাই জানানোর সময় হয়ে ওঠে নাই।”
-তাই বুঝি!তাহলে আমার কাছে থেকে চোখের পানি কেনো আড়াল করছিস তাই তো বুঝতে পারছি না আমি?
অরিন -আর বলিস না,চোখে নতুন ল্যান্স লাগিয়েছি সেই জন্য চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
-বাহ, এখন দেখছি মিথ্যা কথাও বলতে শিখে গেছিস ভালোই! কোনটা চোখের পানি আর কোনটা ল্যান্সের পানি তা বোঝার মতো বিবেক বুদ্ধি দুইটাই আমার আছে।থাক আর যাকে ইচ্ছা বোকা বানাতে যাবি!আমাকে বোকা বানানোর দরকার নেই।
আমি দুধ ভাত খাই না বুঝতে পারছিস তুই।
অরিন পিংকী কে জড়িয়ে ধরে বলে,”আরে দোস্ত এভাবে রিয়াক্ট করার কি আছে বুঝি না।”
-পিংকী বলে,”তুই ভার্সিটিতে প্রবেশ করে সোজা ঐ রোহাননননের কাছে কেন গেছিস? ”
অরিন -আরে কিছুদিন পর ওদের দু জনের বিয়ে,
তাই অগ্রিম অভিনন্দন জানতে গিয়েছিলাম।
যদি পড়ে আর ওদের একসাথে শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগ না পায়?
-তোর কথার আগা মাথা বুঝলাম না।রোহাইইইইন এর বিয়ে তা তো কেউ জানে না।তুই এই গুজব শুনছিস কই থেকে?
অরিন -আরে বইন এটা গুজব না,সত্যি কথা।তারিফাপুর সাথে রোহাইইইইনের বিয়ে।ওর বিয়ের দাওয়াতের কার্ড আমার বাড়িতে দিতে এসেছিল।
তাই সেদিন জানতে পেরেছি রোহানের বিয়ে।
-ওরে রোহাইইইইনের বিয়ে আর ভার্সিটির কেউ জানে না।তা কি হতে পারে যাই আমি মাইকিং করে আসি।
অরিন পিংকীর চুল ধরে টান দিয়ে বলে,”একদম মাইকিং করবি না।রোহাইইইইন আগে বিয়ে কুরুক তারপর না হয় মাইকিং করবি।তখন বউ সাথে থাকবে গাধী! ”
পিংকী আর কিছু না বলে চুপচাপ থাকে।
এরপরে দু জনে একসাথে ক্লাসের জন্য চলে যায়।
আড়ালে থেকে কেউ একজন বলে,”বিয়ে মানে অভিসাপ! বর ভালো তো সব ভালো!
বর যদি হয় খারাপ, তাহলে সে বউ জাহান্নাম এপৃথীবতে উপভোগ করতে পারে।আর বিয়ের পর সব মেয়ের জীবনে গল্প সুখের হয় না।সব সময় বিয়ে করে মেয়েদের কষ্টভোগ করতে হয়।বড়লোক হলে সমস্যা নেই টাকার গরমে সুখি না থাকতে পারো কষ্ট লাঘবের ব্যবস্থা করতে পারবে।কিছু মানুষ তো টাকার জোড়ে বিয়ের সম্পর্কটা কে বেচাকেনা করে।
“হায়রে দুনিয়ার আজব দুনিয়া ”
মানুষেরা যতোটা রং বদলাই ততোটা রং কখনো প্রকৃতি নিজেও বদলাতে পারে না।এই বিয়ের সম্পর্কটা যদি সুখের না হয় তাহলে কিছু মেয়েরা অকালে ঝরা_পাতার মতো ঝরে যায় সমাজের বুক থেকে।
এসব বলে সে তার চোখের পানি মুছে ঠোঁটের কোণায় একটা বিশাল প্রাপ্তির হাসি দেয়।
এদিকে অরিন আর পিংকী ক্লাস শেষ করে ভার্সিটির প্রাঙ্গণে অন্য বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল।
এমন সময় রোহান আর তারিফা এসে অরিন কে ডাক দেয়।
অরিন ওদের সামনে গিয়ে বলে,”আমাকে ডাকছেন কেনো আপনারা?”
রোহান বলে,”আসলে তারিফা এখানে হোস্টেলে থাকে।ওর কোনো রিলেটিভ এখানে নেই।আর ওর পরিবারের কারো এখানে আসা সম্ভব নয়।তুমি যদি ওর সাথে একটু মার্কেটে যেতে তাহলে আমাদের খুব উপকার হতো।তারিফা এখানে কিছুই ঠিকমতো চেনে তো তাই।”
অরিন কিছু সময় কি যেনো চিন্তা করে তারপর সোজা তারিফার হাত ধরে নিয়ে চলে যায়।মার্কেটে গিয়ে তিনজন অনেক কেনাকাটা করে।
রোহান তো অরিন কে বলে,”ধন্যবাদ অরিন!
আমি তো ভাবতেই পারি নাই তুমি আমাদের সাহায্য করবে।এই সাহায্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।”
অরিন বলে,”আরে সমস্যা নেই!মানুষের বিপদে তাকে সাহায্য করা উচিৎ তাই করেছি।”
যে যার বাড়িতে যাবার সময় রোহান অরিন কে উদ্দেশ্য করে বলে,”বিয়ের দিন কিন্তু স্ব-পরিবারের আসতে হবে।নয়তো মন খারাপ করবো।তোমাকে বিয়ের দিন বিয়ে বাড়িতে অবশ্যই আসতে হবে।আমরা গরীব বলে হয়তো নাও আসতে পারো আমাদের কুড়ে ঘরে!”
অরিন বলে,”আপনাকে দেখে কেউ বলবে না!
কুড়ে ঘরে থাকেন।তবে যেখানে থাকেন সমস্যা নেই।টাকা কম বেশি সবার আছে।তাই সবাই সমান”
তারিফা বলে,”অরিন তুমি যদি না আসতে পারো সমস্যা নেই!তোমার পরিবারের সবাইকে পাঠিয়ে দিও কিন্তু প্লিজ এই রিকুয়েস্ট টা প্লিজ রেখো।”
অরিন বলে,”আরে আমার কি সমস্যা থাকতে পারে।বিয়ের দিন একটু সেজেগুজে স্টাইল করে রোহান ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াত খেতে যাবো।”
রোহান অরিনের আশ্চর্যজনক ভাবে দিকে তাকিয়ে আছ। তা দেখে অরিন বলে,”ভাইয়া কোনো ভুল কথা বলেছি বলেন!”
রোহান বলে,”না,মানে ভুল কিছু বলো নাই তবে..কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়।
এরপর অরিন ওদের দু জনকে বিদায় জানিয়ে নিজের শপিং এর ব্যাগ গুলো নিয়ে চলে যায়।
(গল্পটা কেমন লাগছে সবাই বলবেন কিন্তু)
”
”
”
চলবে”””””‘”
‘
চলবে…..