ঝরাপাতা পর্ব ৭+৮

#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_০৭

একটা ভাঙ্গা কাচের ছবির ফ্রেম এর সামনে দাঁড়িয়ে খুুব জোড়ে চিৎকার করে একটা মেয়ে কান্না করছে।একবছর আগে একটা অনাথ মেয়ের বিয়ের পর তার যে মৃত্যু হয় সে খবর কি কেউ রাখে?
সেদিন কি সত্যি তার জীবনটা বদলে গিয়েছিল?
না কি তার জীবনটা বিষাদের হয়েছিল সে খবর কেউ জানে।সেদিনের পর কেউ কখনো অর্ণার খবর নেই নি।অর্ণা নামের মেয়েটার মৃত্যু হয়।
এর জন্য দায়ী কে?
তার বর না তার পরিবারের সদস্য?
ঝরাপাতার মতো মেয়েটা বিয়ের পর ও ঝরে যায়!
এটাই কি ওর নিয়তি ছিলো।
নাহ সেদিনের পর অর্ণা আর কোনো অস্তিত্ব ছিলো না।যারা চেয়েছিল অর্ণার ক্ষতি তার সত্যি সফল হয়েছিল। কিন্তু অর্ণার বিয়ের পরের কাহিনী সত্যি কুয়াসা।
অর্ণার সাথে যা হয়েছিল সবটা কি ভাগ্যের দোষ না কি এখানে কোনো ধোঁয়াসৃষ্টিকারী ছিলো।কিন্তু অর্ণার ক্ষতি করে কার কি লাভ ছিলো?
সব উওর তো সেই দিবে।
সব কিছু বাহিরে করার জন্য আমি এসেছি।
অর্ণার সব স্বপ্ন আশা নষ্ট করার হিসাব সবাইকে দিতে হবে।সেদিন অর্ণা ঝরা পাতার মতো ঝরে গেছে।
আমি তো ঝরে যায় নি।



অরিন সকালে রেডি হয়ে নাস্তা করে সোজা তার ভাই আয়াশ খান কে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাইয়া আমি যা চাইবো তুমি তাই দিবে তো আমাকে?”

আয়াশ বলে,”আমার কলিজার টুকরো বোন তুই!তুই যা চাইবি আমি তোকে তাই দিতে বাধ্য।যদি সম্ভব হয় ঐ আকাশের চাঁদটা তোর নামে লিখে দিবো।”

অরিন বলে,”আচ্ছা ভাইয়া সমস্যা নেই!আমার যেদিন ইচ্ছা হবে আমি তোমার কাছে চাইবো।আর হ্যাঁ সেদিন তোমাকে তা দিতেই হবে।”

আয়াশ বলে,”তুই আমার প্রাণ টা যদি নিতে চাস তাও আমি হাসতে হাসতে দিয়ে দিবো।”

অরিন -না থাক আমার কারো প্রাণের দরকার নেই।
তুমি আমাকে এভাবে ভালোবাসা দিলেই হবে।

অরিনের মা মমতা খান এসে বলে,”আয়াশ তুই এভাবে তোর বোন কে মাথায় তুলে রাখিস না।তোর বউ আসলে তখন বিপদে পড়বি।”

অরিন ভ্রু কুঁচকে বলে,”আমি কি শাঁকচুন্নি?
যে ভাই বিয়ে করলে বিপদে পড়বে।”

মমতা খান বলে,”তুই তার থেকে কম না কোনো দিক দিয়।বাবা আর ভাইয়ের আদরে বাদর হয়ে গেছিস। ”

অরিন আয়াশ কে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাইয়া দেখো মা আমাকে কি বলে।”

আয়াশ বলে,”আমি জীবনে বিয়ে করবো না।তাই আমার বোনকে এসব কথা বলা বাদ দাও মা।”

মমতা খান বলে,”দেখছিস বাদর মেয়ে তোর জন্য আয়াশ না কি জীবনে বিয়ে করবে না।”

অরিন বলে,”এটাই প্রকৃত ভালোবাসা।আমিও সারাজীবন এ বাড়িতে থাকবো।বিয়ে করলেও ঘরজামাই আনবো।”

মমতা খান মেয়ের কান ধরে বলে,”ওরে ফাজিল মেয়ে!তোর জামাইরে রাখছি দাঁড়াও ঘরজামাই। ”

অরিন ওর মায়ের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে মুখ গোমড়া করে চলে যায়।

আয়াশ বলে,”মা,এভাবে ওর পিছনে না লাগলেই তো পারো।”

অরিনের মা বলে,”তোর বোন এখন অনেক বড় হয়েছে। কিছুদিন পর তার বিয়ে দিতে হবে।তাই ওকে এতো মাথায় করে রাখিস না যাতে পরে শ্বশুরবাড়ির পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারে।”

আয়াশ বলে,ওহ হো মম তুমি সব সময় এতো বিয়ে বিয়ে করো কেনো।অরিন কে লেখাপড়া করে নিজের যোগ্যতা অর্জন করতে দাও তো বলে বাহিরে চলে যায়।”
,
,
,
পরেরদিন সকালে ভার্সিটি তে আসার পর সে কেন্টিনের গিয়ে দেখে রোহান আর তারিফা খুব হেসে হেসে কথা বলছে আর কফি খাচ্ছে।

অরিন সেখানে দিয়ে যেতে লেগে ইচ্ছা করে করে কফির মগটাকে ধাক্কা দিয়ে তারিফার ড্রেসের উপর ফেলে দেয়।

রোহান উঠে অরিন কে বলে,”এই চোখ কি বাড়িতে রেখে আসছো না কি? আর এটা কি তোমার বাবার বাড়ি মনে হয় যা ইচ্ছা তাই করবে?মেয়েটার পুরো ড্রেস নষ্ট করে দিলে।”

তারিফা বলে,”আরে রোহান এতো রিয়াক্ট করার কিছু নেই।হয়তো বুঝতে পারে নাই এমন কিছু হবে।আচ্ছা আমার সমস্যা নেই। তাহলে তুমি এতো রিয়াক্ট করছো কেনো?”

রোহান বলে,”তুমি এমন নষ্ট ড্রেস নিয়ে কিভাবে বাকি ক্লাস গুলো করবে?”

তারিফা বলে,”আমার সমস্যা নেই!তুমি না হয় কাল আমাকে সবটা বুঝিয়ে দিও।আজ তো এতো ইম্পরট্যান্ট ক্লাস নেই।আমি বরং বাড়িতে চলে যায়। ”

অরিন এমন সময় তারিফার সামনে কিছু টাকা ধরে বলে,”এই টাকা দিয়ে এর থেকে দামি -দামি ড্রেস কিনতে পারবে।এই সস্তার জামার থেকে ভালো ব্যান্ডের জামা কিনতে পারবে।”

তারিফা খুব সুন্দর করে টাকা গুলো হাতে নিয়ে নেয়।

অরিন তারিফার টাকা নেওয়া থেকে একটা বিদ্রূপ এর হাসি দিয়ে রোহানের দিকে তাকিয়ে থাকে।

এমন সময় তারিফার হাতের টাকা গুলো অরিনের ব্যাগের ভেতরে রেখে বলে,”তুমি একটা কথা জানো কি অরিন! সব কিছু টাকা দিয়ে বিচার করতে নেই।কখনো যদি কোনো ভুল হয়ে যায় তাহলে সব স্থানে টাকার গরম দেখাতে নেই।জীবনে সব সময় টাকার দরকার হয় না।মানুষকে মুখের কথা দিয়ে ভালবাসা যায়।যেমন এখন যদি টাকা না দিয়ে তুমি একটা দুঃখীত বলতে তাহলে খুব ভালো লাগতো। ”

অরিন বলে,”এই রাখো তোমার বড় বড় কথা।এই দুনিয়াতে টাকা দিয়ে সব কিছু কেনা যায়।আর তোমাদের মতো গরিবের কাছে টাকায় সব কিছু।”

তারিফা বলে,”যাদের টাকা আছে তাদের হাতের মুঠোয় সব কিছু মনে করে! কিন্তু এটা ভুলে যায় টাকা দিয়ে না সম্মান কেনা যায়!না মনের শান্তি কেনা যায়।
তোমরা বড়লোকেরা টাকা দিয়ে সব কিছুর বিচার করতে আসো যা আমাদের মতো মানুষের কাছে অপমানকর বুঝলে মেয়ে।”

অরিন তারিফা কে কিছু বলবে তার আগে সে চলে যায়।

রোহান বলে,”অরিন জানি না,তুমি কেনো আমার পিছনে এমন আঠার মতে লেগে আছো।না নিজে ভালো থাকো না আমাকে ভালো থাকতে দাও।তোমার কোন বাড়া ভাতে আমি ছাই দিয়েছি জানি না।তোমার মতো অহংকারি মেয়েরা কারো বাড়ির মেয়ে হতে পারো।
কারো ঘরের ভালো বউ কোনোদিন হতে পারবে না।
এটা মনে রেখো।”

অরিন টেবিলের উপর থাকা গ্লাসের পানি রোহানের মুখের উপর ছুড়ে ফেলে বলে,”এতো বড় সাহস আমাকে অপমান! জানিস আমি কি করতে পারি?”

রোহান বলে,”অহংকারি মানুষেরা অন্যের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।”

রোহান ও অরিনের দিকে পানি ছুড়ে দিতে গিয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে বলে,”কুত্তা মানুষ কে কামড় দেয়!মানুষ কখনো তাকে কামড় দেয় না”

অরিন রাগে নিজের মাথায় নিজেই পানি ঢালতে শুরু করে।এদিকে নিজের মাথায় পানি ঢালার পর দেখে ক্যান্টিনের সবাই হ্যাঁ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
রাগে কষ্টে বিরক্ত হয়ে সোজা সেখান থেকে চলে আসে।

(অর্ণার কাহিনী আসবে তবে একটু অপেক্ষা করুণ সবাই।অরিন এই গল্পের আরেকটা গুরুত্ব পূর্ণ নায়িকা।একটু রহস্য আছে,সময় হলে ক্লিয়ার করে দিবো।)
.
.#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_০৮

অরিন সেদিন বাড়িতে এসে চুপচাপ থাকে।
সারাদিন কারো সাথে কোনো কথা বলে না।
আয়াশ অরিন কে রাতে খাবার জন্য ডাকতে আসে।
তখন অরিন ওর ভাইকে বলে,”আচ্ছা ভাইয়া তুমি যদি বিয়ে করো তাহলে কি আমাকে ভুলে যাবে?”

আয়াশ বলে,”আজব কাহিনী আমার বিয়ে করার ইচ্ছা নেই!তারপর তুই আর মম সারাদিন বিয়ে বিয়ে করিস কেনো?আমার এই সব ফালতু বিয়ে নিয়ে কোনো ইন্টারেস্ট নাই জানিস তো।”

অরিন :আমি যদি কখনো ভাবী পছন্দ করি তুমি কি সেই মেয়েকে বিয়ে করবে?

আয়াশ বলে,”আমার বোন যদি কাউকে পছন্দ করে তাহলে ভেবে দেখতে পারি ।তার যখন ভাবী চাই তাহলে তো আমাকে তার আশা পূরণ করতে হবে।”

অরিন নিজের ভাইকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

এরপর সপরিবারে সবাই রাতের খাবার কমপ্লিট করে বসে গল্প করতে থাকে।

তখন অরিনের বাবা মমতা খান কে উদ্দেশ্য করে বলে,”আমারদের ম্যানেজার সাহেবের শরীরটা আজকাল খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।সে বার বার অবসর নিতে চাইছে।”

মমতা খান বলে,”ম্যানেজার সাহেব না চাইলে এতো জোড় করে রাখার কি দরকার।তাকে অবসর নিতে দাও না।”

অরিনের বাবা বলে,”আরে মমতা তুমি বুঝতে চাইছো না!উনি আমাদের কোম্পানির খুব বিশ্বাসী। তার মতো সৎ মানুষ পাওয়া চারটে খানি বেপার না।তাছাড়া সে এতো গুলো বছর আমাদের কোম্পানি তে আছেন। তার সমস্যা হচ্ছে দেখে তাকে ছাটাই করাটা মোটেই উচিৎ না।”

আয়াশ বলে,”হ্যাঁ বাবা!তুমি ঠিক বলেছো!ম্যানেজার আঙ্কল অনেক ভালো মানুষ। কোম্পানির সব হিসাব একদম ঠিকঠাক দেখাশোনা করতো।কোথাও তিনি কোনো ঘাপলা করে নাই।এ যুগে তার মতো সৎ মানুষের দেখা পাওয়াই খুব কষ্টের। ”

অরিনের বাবা বলে,”ম্যানেজার সাহবের একটা ছেলে আছে।সে এবার একাউন্টিং এ মাস্টার্স করছে।ছেলেটা অনেক ভালো স্টুডেন্ট। ভাবছি কি!ওনার ছেলের মাস্টার্স কমপ্লিট হলে বাবার পোষ্ট টা ছেলেকে দিয়ে তখন না হয় বাবাকে আরামপ্রদান করবো।”..

আয়াশ বলে,”তোমার সিদ্ধান্ত তো অনেক ভালো।তবে ম্যানেজার সাহেবের ছেলে কি তোমার কথায় রাজী হবে বাবা?”

অরিনের বাবা বলে,”সময় করে ম্যানেজার সাহেবের সাথে কথা বলবো এই বেপারে। তারপর না হয় বাকিটা ভাবা যাবে।”

অরিন বলে,”উফফ বাবা আর ভাইয়া! এই রাতের বেলাও তোমরা বাড়িতে অফিস নিয়ে বসলে।কোথায় অন্য গল্প করবে। তা না করে কোম্পানির কথা আলোচনা করছো।এসব কোম্পানির চিন্তা কোম্পানি তে গিয়ে করবে বুঝলে তোমরা।”

আয়াশ বলে,”আচ্ছা ঠিক আছে।আমরা অফিসের কথা বাদ দিচ্ছি। তা তোর ভার্সিটিতে দিনকাল কেমন চলছে।”

অরিন কথার মাঝে তাচ্ছিল্য নিয়ে বলে,”ভার্সিটিটা এখন গরীব মানুষে হয়ে গেছে।এখানে গরীব মানুষে ঘেরা চারপাশ। ”

আয়াশ বলে,”অরিন একটা কথা কি জানো!আমরা সবাই গরীব। ওদের টাকা নেই তাই ওরা গরীব। তবে আজ যদি ওরা গরীব না হতো তাহলে হয়তো আমরা বড়লোক হতে পারতাম না।ঐ গরীব মানুষের শ্রমের বিনিময় আমরা এতো বড় বাড়ি গাড়ি টাকার মালিক হতে পেরেছি। আজ দেখছি আমার বোনের অনেক টাকা আছে কিন্তু মনটাই নেই।জানিস অরিন মানুষের মনটা বড়।সব কিছু টাকাদিয়ে পাওয়া যায় না।যদি টাকা দিয়ে সব পাওয়া যেতো তাহলে মানুষ টাকার বিনিময় সুখ শান্তি কিনে আনতো বাজার থেকে।সব মানুষকে সমান চোখে দেখতে শেখো। তাহলে সামনের মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা সহ সম্মান পাবে।অঅহংকার করে চলো না।তাহলে পরোকাল হারাবে।এটা মনে রেখো।মেয়েদের কেনো কোনো মানুষের হৃদয়ে অহংকার থাকা উচিৎ না।”..

মমতা খান বলে,”অনেক আগেই তোমাকে বলেছি,তোমার বোনকে মাথায় তুলে রেখো না।আজ দেখো তার মনের মধ্যেই কতো অহংকার জমা হয়ে আছে।ঘরের বাহিরের মানুষের সাথে যে কেমন ব্যবহার করো আজ তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। একটা কথা মনে রেখো অরিন সবাইকে ভালোবাসা দিলে ভালোবাসা আর সম্মান পাওয়া যায়।”.

অরিন মা আর ভাইয়ের কথা শুনে রাগে জ্বলছিল! কিন্তু কিছুই বলতে পারছিল না।বাবার থেকে কোনো লেকচার শোনার আগেই উঠে সেখানে থেকে নিজের রুমে চলে যায়।

আয়াশ বলে,”আমার বোন যে এমন চিন্তে নিজের মাঝে লালন করে তা যানতাম না।এখন জানতে পেরেছি ওকে মানুষের মতো মানুষ করতে চেষ্টা করবো।ওর অমানুষিকতা বদলাতে চেষ্টা করবো।”.
.
.
.
পরেরদিন সকালে অরিন দেড়িতে ঘুম থেকে উঠে দেখে বাবা আর ভাই অফিসে চলে গেছে।আর ওর মা কোনো সংস্থাকে সাহায্যদান করতে গেছে।

চুপচাপ বাড়িতে বসে আছে।এতোবড় বাড়িতে মানুষের অভাব। তাহলে ঐ সব ছোট বাড়িতে এতো মানুষেরা একসাথে থাকে কি করে?তাদের তো অনেক সমস্যা হয়।তারপর ও তারা একসাথে থাকে।কিসের জন্য জানি না।এদিকে আমাদের এতোবড় বাড়িতে মানুষের অভাবে একা সময় পাড় করতে হয়।আজব জীবন আমাদের।বাহিরে মানুষের ভীরে যাওয়ার উপায় নেই। আর আমাদের বাড়িতে মাছির ও দেখা নেই।ধুর ভালো লাগছে না যাই পিংকী কে কল করে এবাড়িতে আসতে বলি।
ফোন হাতে নিতেই ওদের বাড়ির কলিংবেল বেজে ওঠে।কাজের মানুষ দরজা খুলতে এগিয়ে যায়।
অরিন বলে,”এমন অসময় তো বাড়ির কারো আসার কথা।ধুর যার আসার আসুক তাতে আমার কি?”

দরজার বাহিরে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে বলে,”এই বাড়ির মালিক বা মানুষেরা কেউ আছেন? “.

কাজের মানুষ বলে,”বড় সাহব আর ছোট সাহব অফিসে গেছেন, বড় ম্যাডাম বাড়িতে নাই।”

ছেলেটা বলে,”ওহ,আচ্ছা তাহলে বাড়িতে কেউ নেই!”

কাজের মানুষ বলে,”নাহ বাড়িতে ছোট ম্যাডাম আছেন।”

ছেলেটা বলে,”তাকে একটু ডাক দিবেন আমার তার সাথে একটু দরকার আছে।”

কাজের মানুষ বলে,”আপনার পরিচয় বলেন,আমি ছোট ম্যাডাম কে গিয়ে বলি।সে যদি দেখা করতে চাই তাহলে দেখা হবে।”..

ছেলেটা বলে,”ছোট ম্যাডাম কে বলুন, তাদের অফিসের ম্যানেজার সাহেবের ছেলে দেখা করতে এসেছে তাহলে হবে।”

কাজের মানুষ বাড়ির ভেতরে গিয়ে অরিন কে বলে,”ম্যাডাম অফিসের ম্যানেজার সাহবের ছেলে আসছেন বাড়িতে আপনাদের সাথে দেখা করতে।”

অরিন মোবাইলের দিকে মাথা নিচু করে বলে,”আচ্ছা যাও তাকে বাড়ির ভেতরে আসতে বলো।”

ছেলেটা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে বলে,”জ্বি আমি আসলে..

কন্ঠটা পরিচিত মনে হতেই পেছনে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে বলে,”আপনি এখানে? ”

রোহান বলে,”তুমি এখানে কি করছো?”

অরিন বলে,”আমার বাড়িতে আমি থাকবো না তো কি আপনি থাকবেন স্যার? ”

রোহান বলে,”ওহ আচ্ছা! তারমানে আয়াশ ভাইয়ের বোন আপনি।এটা তাহলে অহংকারী অরিন খানের বাড়ি।”

অরিন অহংকারী কথাটা শুরে একটু নরম কন্ঠে বলে,”আপনি আমাদের ম্যানেজার সাহবের ছেলে?”

রোহান বলে,”জ্বি!”

অরিন বলে,”তা কি দরকারে এখানে এসেছেন জানতে পারি?”

রোহান বত্রিশ পা দাঁত বাহির করে হেসে বলে,”আমার বিয়ের দাওয়া দিতে আসছি।তাই বল অরিনের দিকে একটা বিয়ের কার্ড বাড়িয়ে দেয়।”

অরিন কার্ড টা হাতে নিয়ে বলে,”আর কিছু বলার আছে?”

রোহান বলে,”নাহ,তবে প্লিজ আপনার স্ব-পরিবারে আমাদের বাড়িতে আসবেন। বলে বাড়ির বাহিরের চলে যায়।”

অরিন সেখান মূর্তির মতো কার্ড হাতে করে দাঁড়িয়ে থাকে।অরিনের বাড়ির কাজের মেয়ে এসে বলে,”ছোট আপা কার্ড টা দেন বড় সাহবের টেবিলের উপর রেখে আসি।”

অরিন জোড়ে চিৎকার দিয়ে বলে,”যাও বলছি আমার সামনে থেকে!তোমাকে আগ বাড়িয়ে কাজ করতে বলেছি আমি!”

কাজের মেয়েটা ভয়ে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে সরে যায়।অরিনের চিৎকার শুনে বেচারির পরাণ যায় যায় অবস্থা।

অরিন কার্ড টা সামনে নিয়ে বলে,”বিয়ে,বিয়ে রোহাইইইইন তোমারে করাচ্ছি দাঁড়াও বিয়ে।বিয়ের সাধ এমন করে মিটাবো যে জীবনেও বিয়ের শখ জাগবে না।
বিয়ের গুষ্টি কিলাই। বেয়াদব পোলা তাই বলে হাতে থাকা কার্ড টা ছিঁড়ে টুকরো-টুকরো করে ফেলে দেয়।চোখ দিয়ে রাগে গরগর করে পানি পড়তে থাকে।”

অরিন রেগে দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়।রুমের সব কিছু এলোমেলো করে ফেলে।
একটুপর আবারো কি মনে করে সব কিছু নিজেই গোছাতে শুরু করে।
.
.
.
চলবে….
.
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here