পাট ১-৩
আহ্ শরীরটা আর চলছে না।মাথাটা ঘুরছে।এই বুঝি পরে যাবো।চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা লাগছে।ক্লান্ত শরীরে চলার শক্তিটুকুও নেই।সারাদিনে কিছু খাওয়া হয় নি তাই হয়তো এমন লাগছে।এমন সময় পরে যেতে নিলে কেউ একজন ধরে বসে।তারপর আর কিছু মনে নেই। যখন চোখ মেললাম সামনে চেয়ে হৃদ সাহেবকে দেখতে পেলাম।
আজ যদি তোকে আমি না ধরতাম তাহলে সিঁড়ি থেকে ধড়াম দিয়ে গড়িয়ে পরেতি।একটু নিজের যত্ন নিতে শেখ ফুল নয়তো অমন শরীরে তৃপ্তি মিলবে না।কথাটা বলে একটা পৈচাশিক হাসি দেয় হৃদ সাহেব।আমি উনার হাসির কারণটা বুঝতে পারি।
আমার অনেক কাজ আছে। যেতে হবে সাহেব। কোনো রকমে কথাটা বলে সেখান থেকে উঠে আসতে লাগি এমন সময় খেয়াল করি পিছনের থেকে উনি আমার হাতটা ধরে বসেছে।আমি আমার হাতটা উনার থেকে ছাড়াবার চেস্টা করি।আর উনি রেগে আমাকে বিছানায় ছুড়ে মারে।তারপর বাজে ভাবে আমার শরীরে স্পর্শ করতে থাকে।আমার অস্বস্তি লাগে।উনার ছোঁয়া প্রতিটা স্পর্শে আমার ঘৃণা হয়।আমি উনাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে যায়। উনি এতে আরও বেশি রেগে যায়। আর উঠে আমার গলা চেপে ধরে।দাঁত কটমট করে বলে, খুব সখ না তোর বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে থাকার? তাই থাক।তোকে শুধু ব্যবহারই করা যায়। এই হৃদ চৌধুরীর বউ হবার কোনো যোগ্যতাই তোর নেই। কথাটা বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে উনি রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
হ্যাঁ যান যান।কে বলেছে আপনাকে আমায় বউ মানতে? আমার কোনো সখ নেই আপনার মতো দুশ্চরিত্র পুরুষের বউ হবার।জোড় করে বিয়ে করেছেন আপনি আমায়।শুধু এটা বোঝাতে যে বৈধ ভাবে ব্যবহার করছেন।ঘৃণা করি আপনাকে আমি।আপনার প্রতিটা স্পর্শে আর আপনার ব্যবহারকে।কথাগুলো নিজে নিজে বলে কাঁদতে থাকি।
এমন সময় হৃদ সাহেবের মা এসে পিছনের থেকে আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে উঠালো।তারপর আমাকে টানতে টানতে কিচেনে নিয়ে ধাক্কা মেরে এঁতো থালাবাসনের উপরে ফেলে দিলো।
এই ছোটলোকের বাচ্চা, মা’টাকে তো খেয়েছিস এবার আমাদের ঘাড়ে চেপে না বসে একটু গদরটা খাটিয়ে খাঁ।
খালাম্মা!
চুপপপপ! একদম খালাম্মা বলবি না।ম্যাডাম বল! বল ম্যাডাম!
ম্যাডাম আমার চুলের মুঠি ধরে মুখটা এঁটো বাসনের ভেতরে নিয়ে চেপে ধরে।
বড় সাহেব মানে হৃদ সাহেবের বাবা কিচেনে শব্দ শুনে ছুটে আসে। আর আমাকে এমন অবস্থায় দেখে ম্যাডামের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনে।
কি করছো কি? মেয়েটাকে মারছো কেন?
মারছি কেন সেটা আবার জিজ্ঞাসা করছো? দেখছো না দুপুর হতে চললো এখনো বাড়ির এঁটো বাসনগুলো পরে আছে।আর এই ছোটলোকের বাচ্চা নিজের রুমে আরামচে বসে আছে।এগুলো কে করবে শুনি?
ওহহ এই ব্যাপার? তাহলে আমাকেই ডাকতে আমি করে দিতাম।
মানে? কি বলতে চাও তুমি?
এটাই যে মেয়েটার সাথে একটু ভালো ব্যবহার করো।তাছাড়া মেয়েটার তো যাওয়ার কোনো জায়গা নেয়।ওকে আর শাস্তি দিও না বকুল।অনেক হয়েছে এবার ক্ষমা করো।
ক্ষমা করবো ওকে আমি? ওর জন্য আমি আমার বোনকে হারিয়েছি।একটা নস্টা মেয়ে মানুষ কোথাকার।ওকে যে এবাড়িতে আস্রয় দিয়েছি সেটা শুধু তোমার কথায়।না হলে ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এবাড়ি থেকে আমি বের করে দিতে পারলে শান্তি পেতাম।কথাগুলো বলে ম্যাডাম চলে যায়।আর বড় সাহেব আমার মাথায় হাত রেখে বলে, তোর খালাম্মার কথায় কিছু মনে করিস না ফুল।ও তোর মাকে বড্ড ভালোবাসতো।যখন তোর বাবা গর্ভবতী অবস্থায় মেরে তোর মাকে তারিয়ে দেয় তখন তোর খালাম্মাই তোর মাকে এবাড়িতে নিয়ে আসে।খুব যত্ন করে আর তুই হবার পর তো তোকেও খুব যত্ন নিত।তোকে গোসল করিয়ে দেওয়া, খাইয়ে দেওয়া সব তোর খালাম্মা করতো।তোকে এতোটা ভালোবাসতো যে তুই যাতে এবাড়ি ছেড়ে না যেতে পারিস এজন্য তোর বিয়ে হৃদ…
এটুকু বলে বড় সাহেব থেমে যায়। আর কিছু বলে না।আমার পাশ কেটে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে চলে যায়।আর আমি সেথায় দাড়িয়ে রই।কি বলতে চাচ্ছিলো বড় সাহেব? ভাবতে ভাবতে এঁতো থালাবাসনগুলো উঠিয়ে বেসিনের উপরে রাখি।আর ওমনি এঁটো বাসনে গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে।বমি বমি লাগে।আর পারি না মুখ আটকে রাখতে।বমি করে দিই।বমির শেষে বেসিনের উপরের আয়নায় চেয়ে দেখি পিছনে হৃদ সাহেব দাড়ানো।
উনি আমার কাছে এসে দাঁড়ালে আমার মনে পরে যায় মায়ের মৃত মুখটা।আমার গর্ভের এই সন্তানটার কথা।যা মনে পরলে ঘৃণা হয় উনাকে আমার।
চলবে,,,,,,,,,
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#পর্বঃ০১
#Mst_লিযা
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#পর্বঃ০২
#Mst_Liza
.
.
ঝড় বৃষ্টির রাত ছিলো।দমকা বাতাস।নির্জ্জলতার আভাস। টিনের চালের টুপটাপ শব্দ।আর হঠাৎ মেঘের গর্জণে ভয় পেয়ে কেঁপে উঠে আমি ভেজা শরীরে সাদ থেকে নেমে আসছিলাম।পড়নের সাদা কামিজে শরীরটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো।ঠিক ভাবে ওরনাটাও বুকে প্যাঁচাতে ভুলে গেছি।বাড়ির সকলেই যে এসময়ে ঘুম থাকে।তাই অতো খেয়াল করি নি।সাদে এসেছিলাম বৃস্টিতে ভিজতে।বৃস্টি হলেই যে আমার মন ছুটে আসে এই সাদে।সিঁড়ি থেকে যখন নামছিলাম হৃদের সাথে ধাক্কা।ধাক্কার তাল সামলাতে না পেরে হৃদকে আমি ধরে বসি।আর চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি ওর চোখদুটো একদম আমার শরীরের উপর।এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন এখনই খেয়ে ফেলবে।আমি চলে আসতে নিলেই আমার হাতটা টেনে ধরে রাখে।আর আমি কিছু বলতে যাবো তখন আমার মুখটা চেপে ধরে আর বলে, একটা কথাও বলবি না।আমাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে আসে তারপর ভেতর থেকে দরজাটা দিয়ে খুব বাজে ভাবে আমাকে স্পর্শ করে।আমি কিছু বলতে গেলে তার ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটে বসিয়ে দেয়। প্রায় বিশ মিনিট পর ঠোঁট জোড়া ছাড়ে।আর হাঁপাতে হাঁপাতে আমাকে বলে, আজকের রাতটা এখানে থেকে যা।আমি উঠে দাড়ায় আর কিছু না বলেই চলে আসতে লাগি হৃদ আমার হাতটা আবার ধরে বসে।আমি চিৎকার দিতে যাবো ও আমায় টেনে বিছানায় ফেলে দেয় আর আমার মুখটা খুব শক্ত করে চেপে ধরে রাখে।তারপর আমার পরনের কামিজের পেছনের চেনটা ধরে একটানে খুলে ফেলে সামনে থেকে কামিজটা টেনে কোমড় পর্যন্ত নিয়ে আসে।এবার আমি লজ্জায় চিৎকারও করতে পারছি না।তবে ধাক্কাধাক্কি, চিমটি, নখের আচড়, কিল গুতা যেভাবেই পারছি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমি ব্যর্থ।হৃদ আমার হাতদুটো শক্ত করে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছে।নিজের শরীরের সবটুকু ভার ছেড়ে দিয়েছে আমার উপর।সেই সাথে আমার গলায় আর বুকে আলতো করে ঠোঁটের কামড় দিয়ে যাচ্ছে।আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।চিৎকারও করতে পারছি না।হৃদ আজ এমন কেন করছে?
কিছুক্ষণ পর,,,
বিছানার চাদরটা বুকে জড়িয়ে বসে আমি কাঁদতে থাকি।হৃদ আমার পাশে এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়ে আছে।এই কি সেই হৃদ যে ছোটবেলায় আমার সাথে খেলতো।আমার জন্য গাছে উঠে আম পেরে দিতো।নাহ নাহ এই হৃদ সেই হৃদ না।সেই হৃদ তো বারো বছর আগেই মরে গেছে।বিদেশে লেখাপড়া করতে গিয়ে যে হৃদ এতোটা দুশ্চরিত্র আর নারী দেহ ভোগী হয়েছে তা আমার কল্পনার বাইরে ছিলো।
আমি আস্তে করে হৃদের বিছানা থেকে উঠে কামিজটা গায়ে জড়িয়ে নিজের রুমে আসি।আর দরজাটা লাগিয়ে কাঁদতে থাকি।কাঁদতে কাঁদতে বলি হৃদকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না।
সেই দিনটার পরে হৃদকে আর কখনো আমি দেখতাম না।আর ভুলেও যদি কখনো দেখা হয়ে যেতো তখনো ঠিক একইভাবে জোড় করে নিজের লালোশা মিটিয়ে নিতো।কয়েক মাস পর যখন আমি অসুস্থ হয়ে পরি।মা, খালাম্মা আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল।ডাক্তার দেখে বললো আমি প্রেগনেন্ট।কথাটা শুনে মা অনেক বড়সড় একটা ধাক্কা খাই।মা, খালাম্মা সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে বাচ্চাটা কার? আমি বলেছি বলতে পারবো না।আর এই কারণেই মা লজ্জায়, ঘৃণায় বিষ খেয়ে আত্নহত্যা করে নেয়।মায়ের মৃত্যুর পর বাচ্চাটা নস্ট করে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে হৃদ আমাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে।এমনকি রোজ মাঝরাতে এই বিয়ের দোহাই দিয়ে নিজের লালোশা মেটাতে আমার কাছে আসে।
মায়ের মৃত্যুর পর খালাম্মা আর আমাকে আগের মতোন ভালোবাসে না।সে ভাবে আমি মায়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। খালুর অনেক মিনতি করার পর খালাম্মা আমাকে এখানে থাকতে দিয়েছে তবে আগের মতোন মেয়ে হয়ে নয়।এই বাড়ির কাজের লোক হয়ে।
তার কিছু শর্ত আছে, তাকে কখনো খালাম্মা বলে ডাকা যাবে না।খালুকে বড় সাহেব বলে ডাকতে হবে আর হৃদকে হৃদ সাহেব বলে ডাকতে হবে।ঠিক যেমন ভাবে বাড়ির অন্য কাজের মেয়েরা ডাকতো।
মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে খালাম্মা বাড়ির সবকটা কাজের মেয়েকে ছাড়িয়ে দিয়েছে।এখন বাড়ির সব কাজ শুধু আমাকেই করতে হয়।আর তাই করে চলেছি।এবাড়িতে পরে আছি শুধু এই সন্তানটার জন্য।
.
.
.
🌼
,
🌼
.
.
.
বর্তমান,,,,,,,
আনমনা হয়ে মায়ের কথা ভাবছি।এই সন্তানটার কথা ভাবছি।হৃদ সাহেব এসে আমার চোখের সামনে একটা কাচের গ্লাস ধরে ছেড়ে দেয়। আর গ্লাসটা নিচে পরে ভেঙে গুরোগুরো হয়ে যায়। গ্লাস ভাঙার শব্দে আমার ধ্যান ফেরে।চেয়ে দেখি হৃদ সাহেব কাচের একটা টুকরো উঠিয়ে নিজের হাতের মুঠোয় বন্দী করে রেখেছে।হাত থেকে ফোঁট ফোঁট রক্ত মেঝেতে ঝড়ে পরছে।যেটা দেখে আমার একটুও মায়া হচ্ছে না।কারণ এই মানুষটাকে দেখলে আমার প্রচন্ড ঘৃণা হয়। আমি ঝাড়ু এনে কাচের টুকরোগুলো উঠিয়ে ডাস্টবিনে ফেলি।এতে হৃদ সাহেব খুব রেগে যায়।তার হাত থেকে রক্ত ঝরছে দেখেও আমি কোনো রেসপন্স না করাই সে হয়তো অপমান বোধ করেছে।
রেগে গিয়ে সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেছে আর তার রক্তাক্ত হাতটা দিয়ে আমার মুখটা খুব জোড়ে চেপে ধরে আছে।কিছুক্ষণ পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে ধাক্কা মেরে বেসিনের উপরে মুখটা চেপে ধরে কল ছেড়ে দেয়। আর কলের পানিতে আমার মুখটা ডুবিয়ে রাখে।কিছু সময় পর মুখ টেনে নেয়।আমি নিঃশ্বাস ছাড়তেই মুখটা সেই পানির সাথে আবার ডুবিয়ে দেয়।
কিছুক্ষণ পর আমায় ছেড়ে দিলে আমি জোড়ে জোড়ে নিঃস্বাস নিতে থাকি।গালটা চেপে ধরে সামনে তাকিয়ে বলতে শুনি, কি ভেবেছিলি তুই ফুল? আমরা তোকে মাথায় করে রাখব? মা ঠিকই বলে তুই একটা নস্টা মেয়ে। তোর জায়গা শুধু এই কিচেনেই হয়। যাহ গিয়ে কাজ কর।কথাটা বলে একটা ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
আর আমি উনার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছি।ভাবছি একটা মানুষ এতোটা খারাপ হয় কিভাবে?
.
.
🌼
.
.
কলিং বেলের আওয়াজে গিয়ে দরজা খুললাম। দেখি ইয়া বড় এক পেটি আম নিয়ে বড় সাহেব বাড়িতে এসেছে।ভেতরে আসলে প্রতি বারের মতোন এবারও আমের পেটির সামনে বসে পরি।একটা একটা করে পনেরটার মতোন আম খাওয়া হয়ে গেছে।আটিগুলো যে পাশেই ছুড়ে ছুড়ে মেরেছি খাওয়ার সময় সেই খেয়াল নেই।
যখন খেয়াল পরলো আটিগুলোর দিকে তখন পেছনের থেকে কেউ এসে চুলের মুঠি ধরে টেনে উঠায়।
চলবে,,,,,,
#ঝড়া_ফুলের_বাসর
#পর্বঃ০৩
#Mst_Liza
এই ওঠ ওঠ এভাবে আটি ছড়িয়ে কেন আম খাচ্ছিস? কথাটা বলেই আমাকে চুল ধরে উঠিয়ে কষিয়ে গালে একটা থাপ্পড় মেরে বসে খালাম্মা।আমি ছিটকে গিয়ে হৃদের বুকের উপর হুমড়ি খেয়ে পরি।আমার মুখের আমের দাগগুলি হৃদের সাদা শার্টে স্পষ্ট লেগে আছে।তাকিয়ে দেখি হৃদ খুব সেজেগুজেই বের হয়েছে।হয়তো কোথাও যাচ্ছে।হৃদ একটানে শার্টটা খুলে আমার মুখের উপর ছুড়ে মারে।আর বলে এটা পরিষ্কার করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমার রুমে সরবত নিয়ে আয়! খালাম্মার মুখের দিকে তাকালে সে বলে হৃদ যা বলছে তাই কর।
কথা মতোন আমি পাঁচ মিনিট পর সরবতটা নিয়ে হৃদের রুমে আসি। আমি আসতেই হৃদ রুমের ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।তারপর নেশা ভরা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমি বুঝতে পারি ও এখন কি করতে চাইছে।ভয়ে আমার পা দুটি থরথর করে কাঁপছে। হাতের গ্লাসটা কাঁপতে কাঁপতে পরে যাওয়ার উপক্রম।হৃদ আমার হাত থেকে সরবতের গ্লাসটা নিয়ে ডগমগ করে পুরো সরবতটা খেয়ে নেয়। তারপর আমার হাতটা ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
আম খেয়েছিস ভালো কথা, মুখ কেন পরিষ্কার করিস নি? তোর মুখে এখনো আমের এঁটো লেগে আছে।দাড়া আমি মুছে দিচ্ছি, কথাটা বলে হৃদ মুখ দিয়ে আমার মুখে লেগে থাকা আমের এঁটো চুষে নেই।তারপর আমার হাতে সরবতের গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বলে যা এবার এখান থেকে।
আমি ছুটে ওয়াশরুমে আসি।বারবার আমার নিজের মুখটা ঘষে সাবান দিতে থাকি।আর আনমনে নিজেই নিজেকে বলি, কেন যাকে এতোটা ঘৃণা করি সে বারবার কাছে আসে? তার স্পর্শ গুলোতে আমার যে ঘৃণা হয়।
.
.
🌼
.
.
রাতে সকলের খাওয়া দাওয়া শেষে সারাদিনের এঁটো সব থালাবাসন পরিষ্কার করে শোবার জন্য রুমে আসি।দেখি আমার আগে হৃদ এসে আমার বিছানায় শুয়ে আছে।দেখে মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে পরেছে।এখন শব্দ করলেই বিপদ।আমি পা টিপে আস্তে করে এসে কম্বলটা টেনে মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরি।কিছুক্ষণ পর অনুভব করি হৃদের হাত আমার পেটের উপরে।আমি ভাবি ঘুমের ঘোড়ে হৃদের হাতটা আমার পেটের উপরে চলে এসেছে হয়তো।তাই আস্তে করে হৃদের হাতটা ধরে আমি সরিয়ে দিতে চাই। আর তখন হৃদ আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে।
আজ এতো দেরি হলো কেন আসতে?
আজ আমাকে ছেড়ে দিন হৃদ সাহেব আমার শরীরটা খুব ক্লান্ত।
হৃদ আমার পেটে হাত বুলিয়ে বলে, বাচ্চাটাকে মেরে ফেলি? তারপর একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বালিশের নিচ থেকে ফল কাটা ছুড়িটা বের করে আমার পেটের উপরে আলগা করে ধরে বলে, কি বলিশ? মেরে ফেলবো?
ভয়ে আমার পেট কাঁপছে। বুক ধুকপুক করছে। আমি নরতেও পারছি না।একটু নরলেই ছুড়িটা আমার পেটে ঢুকে যাবে।তাই আমি ইশারায় মাথা নারিয়ে বলি বাচ্চাটাকে না মারতে।
হৃদ খুশি হয়ে ছুড়িটা ফেলে দিয়ে আমার পেটে একটা চুমু খায়।তারপর আমার হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরে বালিশের সাথে। হৃদ তার পুরো শরীরের ভারটুকু আমার উপরে ছেড়ে দেয়। আমার গলাতে ওর নাকের ডগা ঘেঁষতে থাকে।আমি অস্বস্তি বোধ করি।কিন্তু চাইলেও হৃদকে দূরে সরাতে পারি না।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করি হৃদ আমার হাত দুটো ছেড়ে দিয়েছে।আমি ভাবি এবার হয়তো ও ঘুমিয়ে গিয়েছে।ওকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে গেলে পারি না।কারণ ও নিজের মাথাটা আমার বুকের উপরে রেখে আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।
.
.
🌼
.
.
সকালে,,,
সারারাত জেগে ছিলাম।হৃদ কাল রাতে একটুও আমাকে ঘুমাতে দেই নি।সকালেও সেই একই অবস্থা। আমার জামার ভেতরে হাতটা ঢুকিয়ে ও আমার দিকে চেয়ে আছে।
অনেক সকাল হয়েছে হৃদ সাহেব খালাম্মা এক্ষুনি আমাকে ডাকতে চলে আসতে পারে।তারপর আমার রুমে আপনি আছেন জানতে পেলে সমস্যা হয়ে যাবে।
হৃদ হাতটা বের করে আমার দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে দাঁত কটমট করে আমাকে বলে, এতো ভয় পাস কেন ফুল? মা জানলেও বা কি?
আমার কান্না চলে আসে।আমি কাঁদতে থাকি, হৃদের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিই না।কারণ ওর প্রতি আমার ঘৃণা ছাড়া কিছুই নেই। ওর জন্য আমার মা আত্নহত্যা করেছে।ও আমার মায়ের খুনি।
হৃদ উঠে বসে আর বলে, সেদিন মাঝরাতে তোকে ওই অবস্থায় দেখে আমার মাথার ঠিক ছিলো না তাই অমনটা করেছিলাম।কিন্তু পরে তো তোকে আমি বিয়ে করেছি ফুল।তাহলে আজ কেন এমন করছিস?
আমি কাঁদতে কাঁদতে শুয়ে থেকেই উত্তর দিয়, একবার না আপনি বারবার ওই একই ভুল করেছেন আমার সাথে।যখন সুযোগ পেয়েছেন নিজের লালোশা মিটিয়েছেন।আর আমাকে কি আপনার পাগল মনে হয়? বিয়ের দোহাই দিয়ে আমাকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করবেন আর আমি বুঝবো না।আমি বুঝি এই বিয়েটা যে আপনার কাছে মজা ছাড়া কিছুই না।নইলে নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতেন না।আমার কাছে আপনি একটা দুশ্চরিত্র, নোংরা মানুষ।সেদিনও ছিলেন আর আজও আছেন। আমি কখনো আপনাকে ক্ষমা করবো না।কখনো না।
কথাগুলো শুনে হৃদ রাগি দৃস্টিতে আমার দিকে তাকায়।আর বলে, তোকে বোঝানোটাই বোকামির কাজ।তুই যা ভাবিস তাই।তোকে শুধু আমার ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন।তুই একটা নস্টা মেয়ে তাই বিয়ের আগেই নিজেকে প্রেগনেন্ট করেছিস।আর আমার বউ হবার তো দূরের কথা এই বাড়ির কাজের মেয়ে হবার যোগ্যও তুই না।তোকে তো মা দয়া করে বাড়ির কাজের মেয়ে করে রেখেছে।আমি যদি পারতাম পতিতালয়ে দিয়ে আসতাম।
কথাগুলো বলে হৃদ নিজের শার্টটা উঠিয়ে দরজাটা গিয়ে খুলে দেয় আর সামনে তাকিয়ে দেখে খালাম্মা দাড়িয়ে আছে। বড় বড় চোখ করে রাগির দৃস্টিতে হৃদের মুখের দিকে চেয়ে।একটু এগিয়ে খালাম্মা আমার রুমে ঢুকে দেখে বিছানায় এলোমেলো ভাবে আমি শুয়ে আছি।আর কাঁদছি।হৃদ খালাম্মাকে কিছু বোঝাতে গেলে খালাম্মা ঠাসসসস! করে কষিয়ে একটা থাপ্পড় হৃদের গালে বসিয়ে দেয়।
চলবে,,,,,,