অন্ধকারে মেয়েটাকে বিছনায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে তার ওড়নায় হাত দিতে এক চিমটি আলো মেয়েটার মুখে পরায় মেয়েটার মুখের দিকে তাকায় নির্ঝর, সামনে থাকা মেয়েটার মুখটা দেখা মাত্র চোখ মুখ রক্তবর্ণ ধারন করে নির্ঝর এর,
ঠাসিয়ে একটা চড় বসিয়ে দেয় মেয়েটার গালে,
মেয়েটা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে,
মেয়েটার কান্না নির্ঝর কে আরও বিরক্ত করে তোলে,
মেয়েটার গলা চেপে ধরে,
এতোটা বেশি জোরে যে মেয়েটার দম বন্ধ হয়ে আসছে,
–ছাড়ুন আমায় ( গলা থেকে হাত সরাতে আপ্রান চেষ্টা করতে করতে বলে মেয়েটা)
–ছিহ এতো নিচে নামতে লজ্জা করলো না তোর,
–কে আপনি ছাড়ুন আমায় আর কিসের নিচে নেমেছি আমি,
ছাড়ুন আমায়,
নির্ঝর মেয়েটার বাহু জোড়া চেপে ধরে দাঁড় করায়,
–আহ,
নির্ঝর আবারো থাপ্পড় দেয় মেয়েটার গালে,
থাপ্পড় এর তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে মেয়েটা ফ্লোরে লুটিয়ে পরে,
মাথা ঝিম ঝিম করছে,
অসহ্য যন্ত্রণায় গাল দুটো ফেটে যাচ্ছে,
–সমস্যা কি আপনার এভাবে তুলে এনে আমার সাথে এসব করছেন কেন আপনি কি চান (হাঁপাতে হাঁপাতে বলল মেয়েটা)
–কেন বলছি মানে নাদিয়া তোকে আমি মেরে ফেলব আর একটা মিথ্যা কথা বললে,
–কে নাদিয়া আমি কোন নাদিয়া নই আমি ছায়া।
–নাদিয়া তুই আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিচ্ছিস। (দাঁতে দাঁত চেপে)
–আমাকে যেতে দিন আমি বাসায় যাবো আমার মা বাবা চিন্তা করছে।
নির্ঝর এর আরও বেশি রাগ হয়ে যায়,
ছায়াকে সেই ফোর্স এ আরও তীব্র আঘাতে চড় মারে,
ছায়া এবার সোজা গিয়ে দেয়ালে কপাল লাগে,
কপালের এক অংশ কেটে যায়,
–তুই পতিতালয় মেয়েদের খাতায় নাম দিলি নাদিয়া। আর এখন আমার সামনে নাটক করছিস,
–কে নাদিয়া আর কে পতিতা মেয়েদের খাতায় নাম দিয়েছে আমার জোর করে
তুলে নিয়ে এসে এসব বলার মানে ক,
পুরোটা কথা শেষ করার আগে ছায়ার সামনে সব ঘোলা হয়ে এলো৷
চোখের সামনে সব ঘোলা দেখছে সে,
হটাৎ ই মাটিতে লুটিয়ে পরলো,
নির্ঝর ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে,
কিছুক্ষণ পর তার সেন্স আসে ছায়া যে অজ্ঞান হয়ে গেছে,
নির্ঝর জলদি ছায়ার নিশ্তেজ শরীর টাকে খাটে শুইয়ে দেয়,
মেয়েটার গলা দু’টো আপাতত লাল হয়ে আছে,
তীব্র চড় পরার কারনে আঙুলের দাগ পর্যন্ত বসে গেছে,
সাথে মাথায় কাটা অংশ,
নির্ঝর ছায়ার মাথার কাটা অংশে ব্যান্ডেজ করে দেয়
,–ছি নাদিয়া ছি! আমার লজ্জা লাগছে এটা ভেবে তোর মতো একটা মেয়েকে আমি কখনো ভালোবেসেছিলাম,
তুই এতো বেশি জঘন্য তা আমার সত্যি জানা ছিল না,
নির্ঝর দেয়ালের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,
সামনে বিশাল এক কাঁচের দেয়ার যার বাইরে থেকে দেখা যায় না কিছু, আর না ভেতর থেকে বাইরে কিছু দেখা যায় কিন্তু নির্ঝর বেশ বুঝতে পারে ভেতর থেকে বাইরে কি হচ্ছে,
নির্ঝর এক ধ্যানে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
অন্যদিকে,
বরি (নির্ঝর এর ভাই অথবা সেক্রেটারি) দাঁড়িয়ে ভাবছে মেয়েটা এতো মিষ্টি এমন একটা মায়াবী চেহারার মেয়েটা এমন হবে। রবি এসব ভাবছিল ঠিক তখন কেউ তার দরজায় নক করে,
–কামিং,
–স্যার আমাদের অনেক বড়ো একটা মিস্টেক হয়ে গেছে স্যার,
–কিসের মিস্টেক,
–স্যার আমরা ভুল মেয়েকে তুলে এনেছি,
–মানে,
–মানে ওই যে মেয়েটার আসার কথা ছিল সেই মেয়েটা ত এই মেয়েটা নয়,
আমরা ভুল করে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে এসেছি।
যে পতিতা মেয়েটার আসার কথা ছিল সেই মেয়েটা না মাত্র এসেছে বলল,
স্যার যদি জানতে পারে এতো বড়ো ভুল হয়েছে আমাদের দ্বারা তাহলে আমাদের খুন করে ফেলবে,
–বলিস কি মেয়েটার ত তাহলে বিপদ,
নির্ঝর ত ওকে ছাড়বে না।
–স্যার কিছু করুন আমাদের ক্ষমা করুন,
–ওকে জানালে এখন সব গুলো মরবি আমি কিছু করছি,
রবি হনহনিয়ে বেরিয়ে যায়।
অতিদ্রুত দৌড়ে নির্ঝর এর রুমে ধাক্কায়,
–নির্ঝর এই নির্ঝর,
নির্ঝর তার রক্তবর্ণ চোখ দুটো নিয়েই পেছনে তাকায়
–নির্ঝর দরজা খুল,
নির্ঝর গিয়ে দরজা খুলে দেয়,
রবি নির্ঝর কে ঠেলে ভেতরে গিয়ে দেখে ছায়ার কপাল কাটা সে বেডসিটের নিচে ঘুমিয়ে আছে,
–( যা সর্বনাশ তা ত করেই ফেলেছে নির্ঝর এখন ওকে কিছু বললে কি হবে। উল্টে আমাদের উপর না আবার নির্যাতন চালায়) মনে মনে রবি.
–কিরে কি হয়েছে তোর?
–আব কিছু না মেয়েটার সাথে কি করেছি।
কথাটা শুনে নির্ঝর ক্ষিপ্ত দৃষ্টিতে তাকায় রবির দিকে,
–কেন ওকে কিসের জন্য আনা হয়েছে এখানে তুই জানিস না।
–আরে তুই রেগে যাচ্ছিস কেন।
আমি ত সেটা মিন করে বলি নি,
আসলে এমনি ও কেমন নিশ্তেজ হয়ে গেছে দেখ,
–তোর এতো দরদ কিসের জন্য হচ্ছে রে? (একটু বেশি রেগে)
— ন না মানে তুই থাক আমি আসি,।
রবি জলদি বেরিয়ে যায়,
নির্ঝর এর কাছে আর কিছু সময় থাকলে হয়ত মার খেত,
কিন্তু রবি বুঝতে পারছে না নির্ঝর এমন রেগে আছে কেন,
রবি গিয়ে মেয়েটাকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করে দেয়,
–স্যার এবার কি হবে?
–কিছু হবে না নির্ঝর কে ওর ভাবনায় থাকতে দে নাহলে আমাদের বিপদ,
–কিন্তু স্যার মেয়েটার কি হবে,
–আমি কখনো নির্ঝর কে কোন মেয়ের প্রতি এতো টুকু কাইন্ড হতে দেখি নি,
ও যে মেয়েদের এই পর্যন্ত বেডরুমে নিয়েছে তারা কেউই আর বেঁচে ফেরে নি, কিন্তু এই মেয়েটাকে সে বাচিয়ে রেখেছে,
যেহেতু এক বার ওকে জীবিত পেয়েছি দেখতে তাও নির্ঝর এর বেডরুমে সেহেতু ওর কিছু হবে না তুমও নিশ্চিন্তে থাকো,
–স্যার, কিন্তু ওই মেয়ের মা বাবা?
–তুমি ওর ফ্যামেলি সম্পর্কে তথ্য বের করো,
আমি দেখছি কি করা যায়
–ওকে স্যার,
–আর শুন,
–জি স্যার,
–ভুলেও যেন তুমি আর আমি ছাড়া একটা প্রাণি ও জনতে না পারে যে আমাদের ভুল হয়েছে, ঠিক আছে।
–জি স্যার ঠিক আছে,
লোকটা চলে যায়,
রবি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে
সেখান থেকে চলে আসে,
★★★
এদিকে,
নির্ঝর ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছে,
মেয়েটার ছোট ছোট চুল গুলো কপাল দিয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে,
কপালের কাটা অংশে ব্যান্ডেজ করা,
মায়াবী চোখ দু’টো বুজে আছে তার,
দেখেই যেন ভিশন ভালোবাসতে মন চায়,
মনে হয় পৃথিবীর সব খুশি ওই মুখের হাসিতে ফুটে উঠুক,
সব কিছু সাভাবিক হয়ে যাক,
নির্ঝর এর চোখ দিয়ে লাল বর্ণের তরল বেরিয়ে আসতে থাকে,
নির্ঝর এর চোখের লাল তরলের ফোটা গিয়ে ছায়ার মুখে পরে,
নির্ঝর সে দিকে তাকায়,
বৃদ্ধ আঙ্গুল দিয়ে সেই তরল টুকু মুছে নেয় নির্ঝর,
–কেন নাদিয়া কেন করলে এসব।
পৃথিবীর সব ভালোবাসা আর খুশি তোমার জন্য দিতে রাজি ছিলাম আমি আর তুমি, কিনা।
এতো দিন ভালোবাসার মানুষ টাকে দেখলে এখন দেখবে পৃথিবীর বুকের মানুষ রুপি রাক্ষস টাকে,।
নির্ঝর উঠে আসে ছায়ার কাছ থেকে,
প্রায় ২ ঘন্টা পর,
ছায়া আদো আদো করে চোখ খুলে,
মাথায় তিব্র ব্যাথা অনুভব হচ্ছে,
ছায়া বুঝতে পারছে না গত কয়েক ঘন্টা যবত তার সাথে কি ঘটে চলেছে,
ছায়া ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রী,
বাইরে পড়তে গিয়েছিল সে,
রোজ পড়াশেষে সে এক জায়গায় রিক্সার জন্য দাঁড়ায় কিন্তু আজ সেখান থেকে একটু হেঁটে এগিয়ে যায় তার পর দাঁড়ায়,
সে ওখানে দাঁড়াতে সামনে থেকে কেউ এসে তার দিকে কেমন দৃষ্টিতে তাকাতে থাকে,
ছায়া লোকটাকে দেখে ভালো ঠেকছে না তাই যখন সে সরে আসতে যাবে তখন কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে বসায়,
ছায়া কিছু বলবে তার আগেই,
চলবে,
পর্ব-০১
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘাল