#তুই_যে_শুধুই_আমার [ ❤You are only mine❤ ]
#সিজন_২
#Part_9
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat [ Tanzin Islam Ishika ]
।
সায়রাঃ স্যার আ’ম সরি,, আমি আসলে,,
।
সায়রা কন্ঠ শুনে আরুশ চোখ খুলে সায়রা দিকে তাকায়,,, চোখ দুটো একদম লাল হয়ে আছে,, যেন এখনই চোখ দিয়ে আগুনের শিকা বেড়িয়ে আসবে,, সায়রা সেই চোখ দেখে কিছু বলতে পারলো না,, ভয়ে চুপ হয়ে গেল,,, আরুশ তখন নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে সবার সামনে সায়রার গালে কষিয়ে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেয়,,
সবাই হতবাক হয়ে দাড়িয়ে আছে,, কি হলো বুঝতে সবার একটু টাইম লেগে যায়,,
সায়রা পাথরের মত দাড়িয়ে আছে,, আরুশ তখন চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলে,,
।
আরুশঃ You irresponsible girl.. নিজেকে কি ভাবো তুমি হ্যাঁ কি ভাব,, হাজার বার ওয়ার্ন করে দেওয়ার পরও আজ লেট করলে,, জানতে না এই মিটিং আমাদের জন্য কত ইম্পর্ট্যান্ট ছিল,, তাও আজ এমন করলে,, তারা কতক্ষন ওয়েট করে পম
যে আরুশ খান ওলোয়েস পাংচুয়ালিটির জন্য অন্যকে কথা শুনায় ডিল কেন্সাল করে,, আজ শুধু মাত্র তোমার জন্য এই আরুশ খান তারা পাংচুয়ালিটি নিয়ে কথা শুনাতে পারলো,, তুমি জানোও আজ তোমার জন্য আমার সম্মান ধুলোয় মিশে গেল,,
।
সায়রাঃ স্যার আমার কথাটা তহ শুনেন,,
।
আরুশ সায়রা সেই ছিলা জায়গায় জোরে চেপে ধরে,, ব্যথায় ওর চোখ টলমলিয়ে আসে,,, কিন্তু সেইদিকে আরুশ ভ্রু ক্ষেপ না করে বলে,,
।
আরুশঃ কি শুনবো হ্যাঁ কি শুনবো,, ফাইজলামির একটা লিমিট থাকে,, যা তুমি পার করে ফেলসো,, মানুষ এতটা কেয়ার লেস কিভাবে হতে পারে বুঝি না,, কি যোগ্যতা আছে তোমার এই ফ্যাশন হাউজে থাকার,, সামান্য প্রেজেন্টেশন করতে দেয়া হয়েছিল আর টাইমলি আসতে বলা হয়েছিল এই তহ,, তাও পারলে না,, তোমাকে যে কি দেখে এই ফ্যাশন হাউজে নেওয়া হয়েছে তাই বুঝি না,, আজ শুধু তোমার জন্য খান ফ্যাশন হাউস ছোট হয়েছে সবার সামনে,,রিডিকুলাস,,
।
এই বলে আরুশ সায়রাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়,, আর সায়রা নিচে পড়ে যায়,, ধাক্কাটা হাল্কাই ছিল কিন্তু ওর শরীর এমনেতেই অনেক দূর্বল তারজন্য ধাক্কাটা সামলাতে পারেনি,, হাত দিয়ে রক্ত ঝড়া শুরু হয়ে গিয়েছে,, কিন্তু সায়রা সে সব তোক্কোয়া না করে উঠে দাড়ায়,, তারপর আরুশকে বলে,,
।
সায়রাঃ না যেনেই এত কিছু বলে ফেললেন কিন্তু একবারও দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলেন না,, যখন নিজ থেকে জানতে চান নি তখন বলেও কি লাভ,, সে যাই হোক,, আমার জন্য যখন ক্লাইন্টারা চলে গিয়েছে আপনার লস হয়েছে তখন আমি এই এইটি ঠিক করবো,,
।
আরুশঃ কি করবে তুমি হ্যাঁ কি করবে,, ফাজলামো আর শয়তানি কি পারো তুমি শুনি,, Just a childish person…
।
সায়রার চোখে এইবার সত্যি পানি চলে আসে,, তাকে কখনো কেউ ওর বাচ্চামো নিয়ে কখনো কথা শুনায় নি,,, মানছে সে একটু বেশি দুষ্টামি করে কিন্তু তার পিছেও রিজন আছে,, সে সব সময় নিজেকে খুশি রাখতে এমন করে,, তাই বলে আজ এইটা ওর দোষ হয়ে গেল,, সে কিছু না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে,,
তখন পিছন থেকে আসিফ আর জান্নাত বলে উঠে,,
।
আসিফঃ সায়রা তুই কেন এখনো এইভাবে দাড়িয়ে আছিস চল,,
।
সায়রা পিছে ঘুরে ওদের দেখে অবাক হয়,, তারপর বলে,,
সায়রাঃ তোরা উপরে কেন এসেছিস,,
।
জান্নাতঃ তোর দেরি হচ্ছিল বলে আমরা উপরে এসে পড়লাম,, আর এসে ভালোই করেছি তা হলে জানতেই পারতাম তোর সম্পর্কে এরা এত বাজে ধারণা রাখে,,
।
তখন আসিফ সামনে এসে ওর হাত ধরে,, আর হাত ধরতেই চমকে উঠে,,
আসিফঃ আরেহ সায়রা তোর হাত থেকে তহ রক্ত পড়ছে,,
।
এই কথায় সবাই সায়রার হাতের দিকে তাকায়,, দেখে সত্যি প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে,, আরুশও এই কথা শুনে পিছে ঘুরে দেখে সায়রার হাত অনেক বাজে ভাবে ছিলে গেঁছে এবং সেখান থেকে রক্ত ঝড়ছে,, আরুশ সায়রার সামনে গিয়ে কিছু বলতে নিলে সায়রা এক হাত সামনে তুলে তাকে থামিয়ে দেয়,, তারপর বলে,,
।
সায়রাঃ একদম আগে আসবেন না প্লিজ,, দূরে যান,,
।
আরুশঃ আব,,
।
সায়রাঃ এইটাই বলবেন তহ ঢং করছি,, তাহলে ঠিক ধরেছেন ঢং এই করছি,, আর তাই এই ঢং আপনাকে দেখতে হবে না,, আসিফ প্লিজ চল তহ এইখান থেকে,,
।
এই বলে যেই না সায়রা আগে এগুতে নিল ওর মাথা ঘুরে গেল,, চোখের সামনে সব অন্ধকার ছড়িয়ে গেল,, ঢলে পড়লো আসিফের গাঁয়ে,, আসিফ তারাতারি ওকে ধরে ফেলে,, জান্নাত সামনে এসে সায়রার সামনে দাড়ায়,, ওর গালে হাল্কা চাপড় দিয়ে বলে,,
।
জান্নাতঃ এই সায়রা উঠ,, এই সায়রা,,
।
আসিফঃ ওকে তারাতারি হসপিটালে নিতে হবে,,
।
জান্নাতঃ তুই ওকে নিয়ে হসপিটালে যা আমি আসছি,,
।
আসিফ আর কিছু না বলে সায়রাকে কোলে তুলে নিয়ে বেড়িয়ে যায়,, তা দেখে আরুশের বুকের বা পাশটায় চিনচিন ব্যথা অনুভব করতে থাকে,, তখন জান্নাত আরুশের সামনে এসে বলে,,
।
জান্নাতঃ কাউরো সম্পর্কে না জেনে এত কিছু বলা মোটেও ঠিক মি. হোয়াট এভার ইউ আর,, আপনি যে আজ সায়রাকে এতটি কথা শুনালেন তার বদলে কি সায়রার একটাও শুনতে চেয়েছিলেন,, না চান নি,, চাইবেনই বা কেনো,, আপনাদের মত বড় লোকদের এই এক সমস্যা কোন কিছু শুনতে চান না শুধু শুনাতে জানেন,,
আজ সায়রার লেট কারণ কি জানেন,, জানেন না তহ,, আমি বলছি,,
রাস্তায় ওর মেজোর একটা এক্সিডেন্ট হয়ে যায়,, ওইযে হাত ছিলা দেখেছিলেন এইটা সেটারই ফল।। ওই মাথায়ও অনেক জোরেই আঘাত পেয়েছুল,, কিন্তু যেখানে এখন ওকে হসপিটালে থাকা উচিৎ ছিল সেখানে ও এইখানে এসেছে।
কেন জানেন শুধু মাত্র আপনার এই সো কোল্ড মিটিংয়ের জন্য,, এই মিটিং অনেক ইম্পর্ট্যান্ট বলে,, বাট এত কষ্ট করে এসে কি লাভ হলো শুনি,, লেট হওয়ার জন্য ওকেই দোষারোপ করা হলো,,,
।
এই বলে জান্নাত এক দীর্ঘ শ্বাস নেয়,, তারপর আবার বলা শুরু করে,,
।
জান্নাতঃ আপনি বলছিলেন না ও অনেক বাচ্চামো করে,, চাইল্ডিস পার্সোন,, জানেন ও এমন কেন করে,, নিজেকে হ্যপি রাখার জন্য আর অন্যকেউ নিজের কাজের মাধ্যমে হ্যপি রাখার,,, নিজের ভিতরের কষ্ট টা লুকিয়ে রাখার জন্য,, আপনি এখন যে সায়রাকে চিনেন আজ থেকে প্রায় ২ বছরের আগের সায়রার তার ছিটে ফোটাও মিল নেই,, আগে ও বড় শান্ত প্রকৃতির মেয়ে ছিল,, দুষ্টুমি কাকে বলে জানতোই না,, আগ বাড়িয়ে কথা তহ দূরে থাক সামনেও আসতো না,,,কিন্তু এক ইন্সিডেন্ট সব চেঞ্জ করে দেয়,, ওকে বাধ্য করে এমন দুষ্টু সায়রাতে পরিনত করতে,,সেই ইন্সিডেন্ট টা কি তা আপনার না জানলেও চলবে,,
কিন্তু আজ শুধু আপনার জন্য আমি ওর চোখে সেই আগের সায়রাকে দেখতে পেয়েছি,, প্রায় ২ বছর পর আমি ওর চোখে সেই পানি দেখেছি,, অনুতপ্ত বোধ করতে দেখেছি,, শুধু মাত্র আপনার জন্য,,
একটা মানুষকে নিয়ে বিবেচনা করার আগে ওর সম্পর্কে জানতে হয় বুঝতে কিন্তু তা আপনারা করেন নি,, সেম অন ইউ গাইস,, সেম অন ইউ,,
।
এই বলে জান্নাত চলে যায়,, আর আরুশ সেখানেই মূর্তির মত দাড়িয়ে থাকে,, সব কিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,, সব কিছু বুঝার বোদ শক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে,,
।
।
।
এইদিকে,,
আসিফ সায়রাকে হসপিটালে এডমিট করে,, আসিফ সায়রার বাবা মাকে কল করে সায়রার কথা জানায় আর হসপিটালে আসতে বলে,, একটু পর তারা এসেও পড়ে,,, জান্নাতও ইতি মধ্যে চলে এসেছে,,
ডাক্তার সায়রাকে চেক করছে,, একটু পর ডাক্তার বেড়িয়ে আসলে সবাই তাকে ঘিরে দাড়ায়,, আর তারপর তারা যা শুনলো তা কাউরো কাম্য ছিল না,,
।
।
।
#চলবে