#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২৩
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা বললো তোমার পরী নিশ্চয়ই এটা বলেনি, আমাকে কোথাও নিয়ে গিয়ে বিপদে ফেলতে।
বর্ষণঃমানে! কিসের বিপদ? কি হয়েছে?
বর্ষা বর্ষণের হাত ছেড়ে দিয়ে বললো না কিছু হয়নি আমি ঠিক আছি।
বর্ষণ ভ্রু কুচকে তাকালো।বর্ষা পাশ কেটে চলে যায় অন্য দিকে।
বর্ষণ গিয়ে ঐ ছেলেটিকে বললো এই যে ভাই অন্যের বউয়ের দিকে নজর দাও কেনো? ছেলেটা অবাক হয়ে বললো কি যা তা বলছেন। বর্ষণ বললো যা তা নয়, ঠিক তাই।তুমি যাকে ফলো করছো, যাকে ডিসটার্ব করছো, যার দিকে তাকিয়ে আছো সে আমার Wife বুঝলে? ওর থেকে সবসময় দুরত্ব বজায় রাখবে বুঝতে পারছো?
ছেলেটিঃ ভাইয়া একটা প্রশ্ন ছিলো যদি ঠিকঠাক বলতেন!
বর্ষণঃ কি প্রশ্ন?
ছেলেটিঃ না বলছি, ওনার সাথে আপনার বিয়ে হয়ে গেছে নাকি এঙ্গেজড হয়ে আছে।এঙ্গেজড হলে নো প্রবলেম বিয়ে তো আর হয়নি। একটা চান্স তো নিতেই পারি।
বর্ষণঃ দাঁতে দাঁত চেপে ছেলেটার শার্টের কলার চেপে ধরে বললো নেওয়াচ্ছি তোকে চান্স।জীবন থাকলে তবেই না চান্স নিবি!
বর্ষণের এমন কান্ড দেখে সবুজ দৌড়ে এসে ছেলেটাকে বর্ষণের হাত থেকে বাঁচায়। সবুজ বললো কি করছিস কি বর্ষণ! পাগল হয়ে গেছিস নাকি! যেভাবে ধরে রেখেছিস মরে যাবে তো ছেলেটা।
বর্ষণঃ বললো মেরেই তো দিতে চাই ওকে। ওর এতোবড় সাহস হয় কি করে আমার কলিজায় হাত দেওয়ার! আমার পরীর দিকে কেউ তাকালে তার চোখ দুটি তুলে নিবো আমি।
সবুজ অবাক হয়ে বললো তুই পরীকে কোথায় পেলি এখানে?
বর্ষণ সবুজকে কিছু বলতে যাবে তখনই ছেলেটা এসে বর্ষণের কাছে ক্ষমা চায়। আর বলে আপনি চাইলে আমি আপুর কাছে গিয়েও ক্ষমা চেয়ে নিবো।
বর্ষণঃ ছেলেটাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, থাক ওর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না,ইনফ্যাক্ট আমি চাই তুই ওর ধারে কাছেও না যাস।
ছেলেটা তো ছুটতে ছুটতে বললো ঠিক আছে ভাইয়া তাই হবে।সবুজ ছেলেটাকে ডেকে বললো আরে কোন আপু সেটা তো বলে যাও।কার কথা কে শোনে ছেলেটা তো পালিয়ে বাঁচে আগে।
বিয়ের কাজ, খাওয়া দাওয়া সব কমপ্লিট এখন বউ নিয়ে যাওয়ার পালা। বিদায় পর্ব শেষ করে সবাই গাড়িতে উঠে বসে।
বর্ষা নিপুর সাথে গাড়িতে উঠতে গেলেই বর্ষণ হাত ধরে রাখে। বর্ষা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো।
বর্ষণ ফিসফিস করে বললো বৃথা চেষ্টা করিসনা। এমন কথা শুনে বর্ষা বললো হাতটা কেনো ধরে রেখেছো নিপুরা তো সবাই গাড়িতে উঠে পরলো।
বর্ষণ ডন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো, তো! উঠলে উঠুক তোর প্রবলেম কোথায়!
বর্ষা একটু রেগে বললো প্রবলেম কোথায় মানেটা কি? আমি যাবো না?
বর্ষণঃ আমি কি একবারও বলেছি তুই যাবিনা? কিন্তু তুই ওদের সাথে যাচ্ছিস কেনো? ওদের সাথে কি এসেছিস? আসার সময় যেমন আমি বয়ে এনেছি এখনো আমিই বয়ে নিয়ে যাবো, অন্য কারও ঘাড়ে চাপতে হবে না।
বর্ষাঃ তারমানে তুমি কি বলতে চাইছো! আমি তোমার ঘাড়ে চেপে এসেছি?
বর্ষণঃ সেটা কখন বললাম, আমি তো বলতে চাইলাম যে, যার জিনিস তাকেই নিতে হয়,অন্যের কাছে সেটা বোঝা মনে হয়।
বর্ষা আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে। বর্ষণ গাড়ি স্টার্ট দেবে তখন নিপু এসে সামনে দাঁড়ায়। বর্ষণ গ্লাস খুলে জিজ্ঞেস করে কি প্রবলেম।
নিপু বলে ভাইয়া ঐ গাড়িতে জায়গা হবে না যদি তোমাদের সাথে যাই তাহলে কি প্রবলেম হবে? মানে আমাকে আর সবুজকে সাথে নিয়ে গেলে?
বর্ষণঃ নাহ্ প্রবলেম কেনো হবে উঠে বস।
নিপু গাড়িতে উঠতে যাবে তখন কোথা থেকে রোহিত আর ঋতু এসে বললো আমাদের নেওয়া যায়না শালাবাবু?
বর্ষণ বললো তোমাদের আবার কি প্রবলেম হলো?
রোহিত বললো তেমন কিছু না। তোমরা সবাই এক গাড়িতে যাবে আর আমরা আলাদা যাবো ব্যাপারটা কেমন লাগেনা বলোতো!
বর্ষণ বললো হুম সেটাই তো! ওকে তোমরাও উঠে পরো আস্তে করে বলে আমার ঘাড়ে।
বর্ষণের কথা শুনে আর তার অবস্থা দেখে বর্ষা মুচকি মুচকি হাসছে।
বর্ষণ বিড়বিড় করে বলে মজা নিচ্ছিস তাইনা? মজা নিচ্ছিস? আমি ও সুযোগ পাই আগে, তারপর বোঝাবো হুমম।
বর্ষা হালকা গলা ঝাড়া দিয়ে বলে চলো চলো গাড়ি স্টার্ট দাও লেট হয়ে যাবে তো।
বর্ষণ ড্রাইভ করছে আর সবাই বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। বর্ষণ কথা বলছে না দেখে রোহিত মাঝে মাঝে বর্ষণের কাছে দু একটা কথা জিজ্ঞেস করছে,বর্ষণ তার জবাবে শুধু হু, হা না এমন জবাব দিচ্ছে।
বর্ষণের গাড়ি আগে থাকায় বর্ষণের গাড়িটা বাসার সামনে আগে পৌঁছায়। গাড়ি পার্ক করতে না করতেই সবগুলো গাড়ি থেকে নেমে দিলো এক দৌড়। বর্ষণ তো কিছু বুঝতেই পারলো না তার আগেই সবগুলো দৌড়।
শুধু দৌড়াতে পারলোনা বেচারি বর্ষা। যেইনা দৌড় দেবে অমনি বর্ষণ ধরে ফেলে আর বলে মাথা কি পুরোই খারাপ হয়ে গেছে? নাকি বরের কোলে চেপে বাঁকি জীবন কাটানের ইচ্ছে হয়েছে কোনটা?
বর্ষা আর কিছু না বলে চুপচাপ ভদ্র মেয়ের মতো ভেতরে যায়।
রাফসান বউ নিয়ে বাসায় আসে সকল আচার অনুষ্ঠানের পর ঋতু নিপুরা নতুন বউকে নিয়ে বাসর ঘরে যায়।আর রাফসান নিচে সবার সাথে কথা বলছে। একটু পরে বর্ষণ রাফসানকে নিয়ে উপরে আসে। বাসর ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখে দরজা লক। রাফসানের সাথে তো বর্ষণ ও অবাক, দরজা লক করে রেখেছে কে!
রাফসান বর্ষণের দিকে আর বর্ষণ রাফসানের দিকে তাকিয়ে আছে। এর অর্থ হলো এরা কেউ ই জানেনা দরজা লক কেনো। বর্ষণ দরজা নক করতেই ভেতর থেকে নিপু বলে ভাইয়া আমাদের কিছু আবদার আছে রাফসান ভাইয়ার কাছে সেটা পুরন করলেই আমরা রাফসান ভাইয়াকে রুমে ঢুকতে দিবো তা না হলে ঢুকতে পারবেনা। সবুজ বলে ভাই রাফসান তুমি আজ ফেঁসে গেছো।
সবুজের কথা শুনে বর্ষণ বলে কিরে সবুজ! তুই ভেতরে কি করিস? তুই থাকতে ওরা দরজা লক করলো কি করে?
সবুজঃ আর বলোনা ভাই আমার কথা এরা শুনেনি। আর আমি তো ভেতরে আছি ভাবিকে দেখেশুনে রাখার জন্য যেনো এরা কেউ কিছু বলতে না পারে নতুন ভাবিকে। হাজার হোক রায় বাঘিনী ননদিনী তো এরা।
রাফসান এবার নিপুকে বলে তা বোন তোমাদের কি আবদার আছে বলো শুনি।
ঋতু বললো আমাদের সবাইকে তোর বিয়ে উপলক্ষে কিছু টাকা মানে একদম সীমিত পরিমানে পেমেন্ট করতে হবে, এটাকে তুই ট্রিট হিসেবে মনে করতে পারিস।
বর্ষণঃ তা আপু তোদের কতো টাকার আবদার বলে ফেল। শুনি তোদের সীমিত আবদার টা।
নিপুঃ অনলি সেভেনটি থাউজেন্ড।
রাফসানঃ এ্যা…..
ঋতুঃ এ্যা নয় হ্যা।
রাফসানঃ আপু এটা তুই করতে পারলি? আমি না তোর ছোট ভাই! একমাত্র আদরের ছোট ভাই! শোন, তার থেকে ভালো একটা ট্রিট দেই তোদের। আগামীকাল সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো তার পুরো বিল আমি দিবো।
রোহিতঃ না, না, শালাবাবু তা হবেনা। তুমি বরং এই ট্রিট ই দাও আর রেস্টুরেন্টের বিষয়টা আমি দেখে নিবো।
বর্ষণঃ আরে দুলাভাই আপনিও!
রোহিতঃ কি আর করবো শালাবাবু, আমাকেও তো দিতে হয়েছিলো বলো?
রাফসানঃ একটু কম টম করে বলনা আপু! কতো ঝামেলা পোহাতে হলো বলতো? আচ্ছা ঠিক আছে দশ হাজার দিবো খুলে দে দরজা টা।
নিপুঃ তাহলে আজ আর ভেতরে আসতে হবেনা ভাইয়া দরজার ওপাশেই থেকে যাও। আমরা বরং নতুন ভাবির সাথে ঘুমাই সবাই মিলে।
রাফসানঃ এই না না বোন এমন কথা বলোনা! আচ্ছা বিশ হাজার দিবো এবার তো খুলে দাও দরজাটা।
ঋতুঃ শোন, আর একবার যদি দশ হাজার দশ হাজার করে বাড়াস টাকা, তাহলে কিন্তু ডাবল করে দিবো।
বর্ষণঃ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে, ডাবল করতে হবেনা। আমি দুই তরফ থেকে একটা ডিল করে দেই।
পঞ্চাশ হাজার টাকা ফিক্সড এবার দরজা খুলে দাও।
রাফসান চোখ বড় বড় করে বলে পঞ্চাশ হাজার…
রাফসানের কথা শুনে বর্ষণ বলে তাহলে তুই সারা রাত এখানে দাঁড়িয়ে থাক আর টাকা ডাবল করতে থাক আমি গেলাম বলে পা বাড়াতেই রাফসান বলে না না ভাই যাসনা ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে।
ঋতুঃ কথা পাক্কা তো!
বর্ষণঃ হুম একদম ক্যাশ, আমি নিজে হাতে টাকা নিয়ে তোকে দিবো আপু।এবার খুলে দে। বেচারা আর কতক্ষণ বাইরে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে বল।
নিপু তখন ভেতর থেকে বলে কিন্তু ভাইয়া চাবি তো আমাদের কাছে নাই ওটা তো…..
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#পর্ব২৪
#Hridita_Hridi
বর্ষণঃ হোয়াট! চাবি ছাড়া বসে আছিস? কার কাছে আছে বল?
নিপুঃ বর্ষা আপুর হাতে আছে। খুঁজে বের করো তাকে।আমাদের রুমে বন্ধি করে বেশ মজা নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে।
বর্ষণঃওকে ওয়েট কর, আমি বর্ষাকে নিয়ে আসি।বর্ষণ বর্ষার রুমে গিয়ে খুঁজে পেলোনা। কিচেনে, ড্রইং রুমে কোথাও নেই। বর্ষণ তার মমকে জিজ্ঞেস করলো বর্ষাকে দেখেছে নাকি।
বর্ষণের মম বললো বেশ কিছুক্ষণ দেখিনি তবে কিছুক্ষণ আগে ছাঁদের দিকে যেতে দেখেছি। ছাঁদে গিয়ে দেখতে পারিস।
বর্ষণ আর কোনো কথা না বলে ছাঁদের দিকে ছুট লাগালো।
ছাঁদে গিয়ে দেখে বর্ষা চিলেকোঠার একপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
বর্ষণ এগিয়ে গিয়ে বলে কিরে এতো রাতে ছাঁদে এসেছিস কেনো?
বর্ষাঃ তোমার পরীর সাথে দেখা করতে এসেছি।তার সাথে কথা বলার খুব সাধ জেগেছিলো তাই এতো রাতে ছাঁদে এসেছি।কিন্তু তুমি কেনো এসেছো?
বর্ষণঃ আমিও আমার পরীর খোঁজেই এসেছি। তুই ছাঁদে এসেছিস ভালো কথা চাবি কোথায় রেখে এসেছিস? সেটা তো দিয়ে আসবি।
বর্ষাঃ চাবি!কই আমি তো জানিনা চাবি কোথায়? অবাক হওয়ার ভান করে বলে বর্ষা।
বর্ষণঃ ভ্রু কুচকে বলে সত্যি কি তুই জানিস না যে চাবি কোথায় !
বর্ষাঃ নাহ্! আমি জানবো কি করে বলো?
বর্ষণ একটু একটু করে বর্ষার দিকে এগুতে থাকে। বর্ষাও একটু একটু করে পিছিয়ে যেতে থাকে। বর্ষণ বলে R u sure তো! চাবি কোথায় তুই জানিস না?
বর্ষা পিছিয়ে যেতে যেতে বলে হুুম আমি জানি না।
বর্ষণ আর একটু এগিয়ে যেতেই চিলেকোঠার দেয়ালে বর্ষার পিঠ ঠেকে যায়। বর্ষণ দেয়ালের এক পাশে হাত দিয়ে বর্ষার দিকে একটু ঝুঁকে বললো এখনো বলবি চাবি তোর কাছে নেই!
বর্ষাঃ ভয়ে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে বলে আ আ আছে। এ এই যে চাবি বলেই চাবি বের করে বর্ষণের হাতে দেয়।
বর্ষণ একটু দুষ্টু হেসে বলে এই তো বললি নেই। এতো তারাতারি আবার কোথায় পেলি। পরী এসে দিয়ে গেলো বুঝি!
বর্ষা আর কিছু না বলে তারাহুরো করে বর্ষণের সামনে থেকে চলে আসে। রিতীমত যে তার হাত পা কাপছে আর হার্টবিট ও চলছে ফার্স্ট।
বর্ষাকে এভাবে তারাহুরো করে যেতে দেখে রাফসান ডেকে বলে এদিকে আসো বর্ষা।
বর্ষা রাফসানের সাথে কথা বলতে বর্ষণ চলে আসে।দরজা খুলে তিনজনই ভেতরে ঢুকে যায়। রুমে ঢুকে তো তিনজনই অবাক। যারা রুমের ভেতরে ছিলো তারা আরামে বসে নিশ্চিন্তে গল্প করছে। আর এদের মধ্যমণী হয়ে বসে আছে নতুন ভাবি!
বর্ষণ রাফসানকে উদ্দেশ্য করে বলে, ভাই রাফসান তুই তো শুধু শুধু চিন্তা করে শেষ হচ্ছিলি এদিকে আমাদের ভাবি তো দিব্যি গল্প করে কাটিয়ে দিচ্ছে ননদ, ননদাই আর দেবরকে নিয়ে।
রাফসান একটু দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে বললো সেটাই তো দেখছি, কি কপাল আমার!কপালে হাত দিয়ে বলে রাফসান।
রাফসানের এমন ভাব দেখে সবাই হেসে ওঠে। অনেকটা সময় গল্প করে সবাই বেরিয়ে আসে রুম থেকে।
বাইরে এসে সবাই কথা বলছে, বিষয় হলো বাসর ঘরের টাকা আদায় , এর মধ্যে বর্ষা বলে অনেক টাকা তো পেয়েছি চলো সবাই মিলে এই টাকা থেকে নতুন ভাবিকে কিছু গিফট করি।
বর্ষার কথা শুনে সবাই একটু সময়ের জন্য হা হয়ে যায়।
সবাই বলে হ্যা সেটা গুড আইডিয়া , বাট কি গিফট দিবো?
বর্ষাঃ বলছি আগে সবাই হা টা তো বন্ধ করো। সবাই মুখ বন্ধ করে মুখে আঙুল দিয়ে রাখে।
বর্ষা তখন বললো আমরা যে টাকাটা পেয়েছি এটা কিন্তু নতুন ভাবির জন্যই। নতুন ভাবি যদি না বলতো পঞ্চাশের কম নিওনা তাহলে কিন্তু আমরা এতোটা জোরাজোরি করতাম না। তাই আমি চাই আমাদের তরফ থেকে তাকে একটা উপহার দিতে। যেটা আজকের স্মৃতি হিসেবে থাকবে ভাবির কাছে।
রোহিত,সবুজ, নিপু বললো আমরা এমন কি গিফট দিতে পারি?
বর্ষণ বললো এমন অনেক গিফট ই তো আছে, শাড়ি চুড়ি, রিং এসব।
বর্ষাঃ হুম কিন্তু শাড়ি চুড়ি কিনে দেওয়ার দায়িত্ব তো রাফসান ভাইয়ার। সেই দিক এগুলো।
আমরা বরং তাকে একটা ডায়মন্ড রিং গিফট করি।
সবাই খুশি হয় বর্ষার এমন আইডিয়াতে।
রোহিত বর্ষার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলে,, তা ছোট গিন্নি তুমি এমন ইউনিক আইডিয়া কোথা থেকে পাও বলোতো!
রোহিত আর বর্ষার মাঝে বর্ষণ দাঁড়িয়ে গলা খাকড়ি দিয়ে বলে, এই যে দুলাভাই এই ইউনিক আইডিয়া সর্বপ্রথম আমিই দিয়েছি। তো আমাকেও একটু প্রশংসা করো।
রোহিতঃ মোটেও না শালাবাবু, গিফট দেওয়ার আইডিয়াটা ছোট গিন্নির ই ছিলো।আর ডায়মন্ডের রিং দেওয়ার প্ল্যানটাও তার ই।
বর্ষণঃ ওকে ঠিক আছে বুঝলাম। বাট কাল তো বের হতে পারবো না আবার পরশুদিনও তো নতুন বউ থাকবে না তাহলে কি করা যায়!
বর্ষাঃ রাফসান ভাইয়াকে বলে ম্যানেজ করতে হবে। বউ কাল যাবেনা। কাল শনিবার বৌভাত রোববারে আমরা সবাই ঘুরতে যাবো ঐ সময় ভাবিকে কিনে দিবো। সোমবার যে যার মতো বাসায় ফিরে যাবো, সেদিন রাফসান ভাইয়া আর ভাবিও ঐ বাসায় যাবে হিসেব বরাবর।
রোহিতঃ কিন্তু নিয়ম ভেঙে যদি ওরা থাকতে না চায়? আর ও বাড়ির লোকেরা যদি না মানে?
বর্ষাঃ আরে দুলাভাই মানবে মানবে। বাড়ির বড়রা বুঝিয়ে বললে ঠিক মানবে।আমাদের বাড়ির বড়দের বোঝাবে রাফসান ভাইয়া। আর রাফসান ভাইয়াকে বোঝাবে বর্ষণ ভাইয়া আর সবুজ ভাইয়া।
আর নিয়মের কথা বলছেন? সব কিছু নিয়ম মাফিক হলে তো আর স্মৃতি স্মরণীয় হবেনা। নিয়ম ব্রেক করলে তবেই না সেটা স্মরণীয় হবে।
রোহিত বাহবা দিয়ে বর্ষার সাথে হাত মেলাতে গেলে বর্ষণ তার হাত আগেই বাড়িয়ে দেয়। বর্ষণের সাথে হাত মিলিয়ে রোহিত বর্ষার দিকে হাত এগিয়ে দিতেই বর্ষণ আবার নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়।
বর্ষা আর নিপু সেটা বুঝতে পেরে ফিক করে হেসে ফেলে।
অবশেষে সবাই যে যার রুমে চলে যায়।
বর্ষা আর নিপুও ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরে। নিপু বলে বর্ষা আপু দেখছো, ভাইয়া কেমন তোমাকে হাত মেলাতে না দিয়ে নিজেই দুইবার হাত মেলালো।
বর্ষাঃ হুম যতো নিয়ম নীতি, দায়বদ্ধতা আমার বেলায়। সে তো ঠিকই চুটিয়ে প্রেম করে বেড়াচ্ছে তার পরীর সাথে। আহা! কি মনোমুগ্ধকর বর্ণনা শুনলে গা পিত্তি জ্বলে যায় একদম।
নিপু মুচকি মুচকি হেসে বলে আপু তুমি কি জেলাস!
বর্ষা মুখ ঘুরিয়ে বলে বয়েই গেছে আমার জেলাস হতে হুহ্।
এটা বলেই পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমিয়ে পরে বর্ষা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে সবাই নতুন বউয়ের সাথে বসে গল্প করছে।একচুয়েলি এ যুগের মেয়ে হিসেবে ঈশিতা অনেক ভালো আর ফ্রি মাইন্ডের।
নিপু, ঋতু আর বর্ষা সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।ঈশিতা হাসিমুখে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে আর কথা বলছে।
এদিকে রাফসান, সবুজ, রোহিত আর বর্ষণ রান্নার এই দিকটায় বিভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে বিজি আছে। সেই ফাঁকে সবাই মিলে রাফসানকে রাজি ও করে ফেলেছে না যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে।
পার্লার থেকে বিউটিশিয়ান এসেছে ঈশিতাকে সাজাতে। এই ফাঁকে বর্ষা, নিপু আর ঋতুও রেডি হতে চলে যায়।
পাশাপাশি বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বর্ষা আর নিপু ঈশিতাকে এনে বসিয়ে দেয়। ঈশিতার বাড়ি থেকে লোকজন চলে এসেছে । সবাই ঈশিতার সাথে দেখা করে খাওয়া দাওয়া করছে।
ঈশিতার বাসার সবাই চলে গেছে। অবশ্য ঈশিতাকে ছাড়া যেতে চায়নি সবাই মিলে বলাতে, বিশেষ করে ঈশিতা বলাতে রেখে গেছে।
চলবে….
হ্যাপি রিডিং 🥰
চলবে……
(রি চেইক হয়নি।)
হ্যাপি রিডিং 🥰