তুই হৃদহরণী পর্ব ১৬

#তুই_হৃদহরণী
#সাদিয়া
পর্ব : ১৬

রাত হয়েছে। ফিরাত অপেক্ষা করছে শুধু আহরারের জন্যে। কোথায় আছে কে জানে? কোনো মেয়ের কাছে গেছে? এমন টা তো হবার কথা নয়। এসব ছেড়েছে অনেক আগেই। সম্ভব হয়েছে তুরফা মেয়েটার জন্যে। তবে সেই মেয়ে টাকেই কেন এমন শাস্তি দিচ্ছে। কেন এত নিগ্রহ? কিছুই মাথায় আসছে না ফিরাতের। চিন্তায় সে এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছে। ঘড়িতে তখন ৭.২০ বাজে। অস্থিরতা বেড়ে চলছে ফিরাতের। মোনতাহ্ ও ওদিকে একা আছে। স্থির থাকতে পারছে না কিছুতেই।

মোনতাহ্ বারবার কল করে যাচ্ছে তুরফা কে। কিন্তু কল রিসিভ হচ্ছে না। খুব ভয় হচ্ছে তার, তুরফা কে নিয়ে চিন্তাও হচ্ছে খুব। কিছু হলো না তো ওর? মোনতাহ্ এক নাগাতার কল দিয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।

ওদিকে তুরফার অবস্থা কাহিল। ফোন টা তুলবে সেই সাহস টা পর্যন্ত হচ্ছে না তার। হাঁত পা কাঁপছে থরথর করে। নিশ্বাস ফেললেও যেন সেটার প্রতিধ্বনি শুনা যাচ্ছে। ভয়ের মাত্রা আরো বাড়িয়ে তুলতে যা সক্ষম হচ্ছে। তুরফার চোখ টলমল। পানির ফোঁটা টুপ করে পরবে বলে। নিশ্বাস নেওয়া দায় হয়ে উঠেছে তার জন্যে। ভেতরে ভয়ের মেশিন গড়গড় করে চলছে। অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ শুনা যাচ্ছে কানে। একা ভয়ের কারণে এমন হচ্ছে নাকি সত্যি তা চিন্তার করার পরিস্থিতিতেই নেই সে। মৃদু গলা তুলল “কেউ আছেন?” যার প্রতিধ্বনি বারবার কানে বাজচ্ছে। তুরফা আর শব্দ করল না মুখে হাত দিয়ে দিল। মনে ভেতর খুব সাহস নিয়ে এগিয়ে গেল। যা হবে পরে আগে কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। তুরফা ভেবেছে ডোর লক হবে কিন্তু না। মানুষ টা লক না করে গিয়েছে। হাজার কোটি শুকরিয়া আদায় করল তুরফা। মানুষটা কেও মনে মনে ধন্যবাদ দিল। দরজা পেরিয়ে এক দৌড়ে অফিসের দরজার কাছে চলে গেল। সেটাও খোলা। তুরফা করিডোরের ছোট গেইটটায় নিশ্বাস বন্ধ করে দৌড় দিল মুক্তির আশায়। তবে ‘সেগুড়ে বালি।’ সেই গেইটে বড় করে তালা ঝুলছে। তুরফা আশাহত হলো। চিৎকার করে কান্না করতে মন চাইছে। ভয় এখন আরো বেড়েছে। শেষ চেষ্টাটাও সফল হলো না। বুক টা হাহাকার করছে। খাঁচায় বন্ধি পাখির মতো ছুটার জন্যে ছটফট করছে। হাত পা খোলা থেকেও শৃঙ্খল দিয়ে আবদ্ধ। তুরফা নিচে বসে পরে ধপ করে। গুটিয়ে আনে হাটু। ভয়ে ভেতর টা থরথর করে কাঁপছে। অদ্ভুত রকম যন্ত্রণা হচ্ছে বুকে। না কিছু বলতে পারছে না সহ্য করতে পারছে। চারিদিকে খুব বাতাস বইছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার আশেপাশে। পোকাদের ডাকে তুরফা এখানে আরো ভয় পেতে লাগল। তাই উঠে গেল। ভয় ভয় চোখ নিয়ে ত্রাস পায়ে এদিকে ওদিক তাকিয়ে ভেতরে গেল। কেবিন থেকে ফোনের আওয়াজ আসছে। তুরফা ভেতরে শঙ্কা নিয়ে তাড়াতাড়ি করে কেবিনে চলে গেল দৌড়ে।

মোনতাহ্ কল দিয়েছে। তুরফা কল রিসিভ করল। বাহিরের বাতাস এবার ভেতরে এসে লাগছে।
“হ্যালো।”

“হ্যাঁ।”

“হ্যালো তুরি।”

“হ্যালো।”

“তুরি কিছু শুনা যাচ্ছে না। হ্যালো তুরি।”

“মোন, মোন আমার খুব ভয় হচ্ছে।”

“হ্যালো।”

ফোন ধপ করে কেটে গেল। তুরফা দেখল নেটওয়ার্ক নেই। কি করবে কিছুই মাথায় ঢুকছে না। সব কিছু শূন্যে ভাসা ভাসা লাগছে তার। এই অবস্থায় ফাইল দেখা কেন পানি খাওয়াও অসম্ভব। তুরফা চুপচাপ গুটিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। মনে মনে আল্লাহ কে ডাকল। সাথে তিনি আছেন ভেবেই ভয় কমানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই কারেন্ট চলে গেল। চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, বাহিরের প্রচন্ড বাতাস আর থেমে থেমে বিদ্যুৎ চমকানোর আলো। বিজলির আলোয় চারপাশ সাদা হয়ে আসছে। থেমে থেমেই ঘন অন্ধকার। এতক্ষণ নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করে থাকলেও তুরফা এখন আর পারছে না। ভেতরের ভয় টা দৈত্য রূপ ধারণ করেছে। ওটাই তাকে গ্রাস করছে। এবার সে চিৎকার দিয়ে উঠল। বজ্রপাতে যে ভীষণ রকম ভয় পায়। তাও এই একা নিশীথের অন্ধাকার। যখন আকাশ ডেকে উঠে তখনি তুরফাও গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠে। এবার সে থাকতে না পেরে কান্না শুরু করেছে। গগনের সাথে সাথে সেও চিৎকার করে বৃষ্টি ঝড়াচ্ছে।

ফিরাতের মাথা হ্যাং হয়ে আছে। বিরক্ত লাগছে সব কিছুতে। বাহিরের আবহাওয়া দেখে তার দুশ্চিন্তা দ্বিগুণ, তিনগুণ ক্ষণেক্ষণে বাড়ছে। এক দিকে একা ছোট বোন তুরফার চিন্তা। অন্য দিকে ভালোবাসা তার চাঁদের চিন্তা। ও একা রয়েছে। বাসার আশেপাশে অনেকেই নজর রাখতে পারে এমনিতেই বাজে নজর আছে দুজনের উপর। ফিরাত আর বসে থাকল না। চাবি আর ছাতা নিয়ে বের হয়ে পরল।

মোনতাহ্ এই নিয়ে ৩০ টার উপর কল দিয়েছে তুরফা কে। ভয় চিন্তা তাকে কাবু করে নিয়েছে এতক্ষণে। কল যাচ্ছে না তবুও দিয়েই যাচ্ছে। যদি একবার লেগে যায়? মোনতাহ্ ব্যালকুনিতে গেল। দরজা লাগানো। কাপড় গুলি আনা হয় নি। ব্যালকুনি দিয়ে পানির ঝাপটা আসছে। কাপড় গুলি হয়তো পানি তে ভিজে চিপচিপে হয়ে আছে। ভেতরটা পর্যন্ত জ্বলছে তার। কিচ্ছু ভালো লাগছে না চিন্তায়। অস্থিরতা মন কে আদরে আগলে নিয়েছে। হঠাৎ নিচে চোখ গেলে দেখল ফিরাত দাঁড়িয়ে আছে। দোতালা রুম থেকে তাকে বেশ দেখা যাচ্ছে। ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শরীর ভিজে গিয়েছে। হঠাৎ প্রচন্ড এক বিদ্যুৎ চমকানোর জন্যে ফিরাতের মুখ টা বেশ দেখা গিয়েছে। মোনতাহ্ র বুকটা সাথে সাথেই কেমন কেঁপে উঠল। ফিরাত নিচ থেকে চেঁচিয়ে বলল “ঠিক আছো তো? চিন্তা করো না এখানে আছি আমি।” মোন কিছু বলতে পারল না। ভেতরে শুধু শিহরণ বয়ে গেল। চুপ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সে ভেতরে চলে গেল। ১০ মিনিট হয়ে গিয়েছে মোন উঁকি দিয়ে দেখল ফিরাত যেমন দাঁড়িয়ে ছিল এখনো তেমনি আছে। এবার তার বুক হুহু করে উঠল। মোনতাহ্ তাড়াতাড়ি করে নিচে নামল। নিচতলা থেকে ছাতা টা নিয়ে দরজা ঠেলে বের হয়ে এলো রাস্তায়।

ফিরাতের সামনে গিয়ে বলল,
“এখানে কেন আপনি?”

“….

“কি হলো?”

“তুমি ঠিক আছো?”

“আমি ঠিক আছি। আপনি চলে যান এভাবে এই অবস্থায় এখানে থাকবেন না কিছু হয়ে যেতে পারে।”

“তাতে তোমার তো কিছু আসে যায় না।”

“….

“কি হলো চাঁদ।”

মোনতাহ্ শক্ত কন্ঠে জবাব দিল।
“আপনি এখন যান।”

“সারারাত এখানে আছি। তুমি ঘরে গিয়ে ঘুমাও। ভিজলে জ্বর আসবে।”

মোনতাহ্ বিড়বিড় করল,
“এত বুঝেন তাহলে নিজে কেন ভিজছেন?”
মুখে বলল,
“তাই চলে যান।”

“আমার কিছু হবে না তুমি ঘরে যাও।”

মোনতাহ্ রাগে চলে গেল গেইটের ভেতরে। একটু পর উঁকি দিল, না এখনো যায় নি নাছোড়বান্দা। এভাবে থাকলে অনেক কিছুই হতে পারে। নিজে তো এক বিপদ পরে আরেক বিপদ টেনে আনবে। হাজার কিছু ভেবে মোনতাহ্ আবার গেল ফিরাতের ওখানে।

“ভেতরে চলেন।”

বৃষ্টির টপটপানি শব্দে ফিরাত কি শুনল ঠিক বুঝল না।

“কি বললাম?”

“কি?”

“ঢং, ভেতরে চলুন।”

ফিরাত বিশ্বাসই করতে পারছে না এমন একটা কথা।

“কি?”

“চলুন।”

“কি বলছেন চাঁদ আপনি?”

“এখানে থেকে বিপদ বাড়ানোর দরকার নেই ভেতরে চলুন।”
বলেই মোনতাহ্ হাটা শুরু করল। পিছনে ফিরাতও মুচকি হেসে হাটা ধরল পিছুপিছু।

কাঠি ম্যাচ দ্বারা মোমবাতি তে আগুন জ্বলল। চারপাশের কালো অন্ধকারে এক টুকরো মোমবাতির আলো খুব বেশি আকর্ষিণীয় মনে হচ্ছে। লাল লাল আভা ছড়াচ্ছে আশপাশের অনেক টা জায়গায়। কিন্তু কে জ্বালাল কিছু দেখা যাচ্ছে না। আশার একটু আলো পেয়েও মুহূর্তে অন্ধকারে তলিয়ে গেল তুরফা। ভূত বা অন্য কিছু নয় তো? না হলে কে আসবে এখানে? তুরফার শরীরের কাহিল অবস্থা। হাত পা এবার ঠান্ডা হয়ে আসছে। আচমকা এক বজ্রপাতের আলোয় আহরার কে স্পষ্ট দেখা গেল। ঠোঁটে কোণায় এক বিন্দু হাসি নিয়ে এগিয়ে আসছে। তুরফা ঘাপটি মেরে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে জড়সড় করে গুটিয়ে নিয়ে। আহরার কেবিনে এলো মোমবাতি নিয়ে। তুরফার কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল,
“কি ভেবেছিলে? একা রেখে চলে যাবো? হৃদয় চুরি করেছো আমার। আমার হৃদহরণী তুমি। ভাবলে কি করে একা রেখে চলে যাবো? আহরার সহজ কঠিন তরল যখন যা দরকার পরে। দেখলে তো কঠিন হয়ে কিভাবে নিগ্রহ দিতেও জানি। আরো কথার অবাধ্য হবে? তবে পরের বার ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে তা। একা ফেলে যায় নি। যাওয়ার উপায় কি? তুর আহরারের নূর যে।”

তুরফা টপটপ করে চোখের পানি ফেলে ঝাঁপটে ধরল আহরার কে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফুঁপাচ্ছে। বিস্মিত হলেও আহরার প্রশান্তির হাসি হাসল ঠোঁট মেলে। হৃদহরণীর প্রথম ছুঁয়া। হোক না অনাকাঙ্ক্ষিত। দোষ কি তাতে? ছুঁয়া তো পেল। আগের সেই আহরার হলে বোধ হয় অঘটন ঘটিয়ে ফেলত। তবে আহরার চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এক হাতে মোমবাতি অন্য হাত তার নিজের অবস্থায় ফেলে রেখেছে। তুরফা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। হুট করে এক বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে তুরফা যেমন আহরার কে আরো শক্তে জড়িয়ে নিয়েছে তেমনি গলার আওয়াজ বাড়িয়ে কান্নাও করছে। আহরারের ভেতর টা অনেক বছর পর হু হু করে উঠল। এক জ্বালা তো সব সময় বয়ে নেয়। কিন্তু অনেক বছর পর আজ নতুন এক ব্যথায় ভেতরটা মুচড় দিয়ে উঠেছে। চিন চিন একটা ব্যথা হচ্ছে।

“তুরফা চুপ।”

“….

“তুরফা আই সে স্টপ ইট।”

“….
কে শুনে কার কথা?

“তুরফা।”
তার ধমকে সে কান্নার বেগ আরো বাড়িয়ে দিল। বাচ্চাদের মতো কান্না করছে তুরফা। আহরার যেন মহা এক বিপদে পরে গেল। কি করবে? কিভাবে শান্ত করবে এই পিচ্চি মেয়ে কে?

শান্ত গলায় ডাকল তাকে।
“তুরফা”

“….

“তুরফা।”

“….

“দেখো তুর আমি আছি। কান্না থামাও। কিছু হবে না। ভয় পেও না। আমি আছি না। দেখি মুখ তুলো।”

সে তাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। এক গালে হেসে আহরার বলল,
“তুমি যে আমার মতো এক পরপুরুষ আর নোংরা মানুষ কে ধরে আছো তা কি তোমার বোধগম্য হচ্ছে হৃদহরণী?”
তুরফা কান্না থামিয়ে চোখ খুলল। বুঝার চেষ্টা করল কথা টা।
“আগে নিজপুরুরষ হই তবে তোমার নয় আমিই..”
তাড়াতাড়ি করে ছেড়ে দুই হাত দূরে দাঁড়াল তুরফা। আহরার এবার দাঁত বের করে হাসল। মিনমিন করে বলল “পাগলি।”

পুরো শরীর ভিজে আছে ফিরাতের। রুমে ঢুকে ২/৩ টা হাঁচি দেওয়াও হয়ে গিয়েছে তার। নাক টানছে। শরীর হয়তো খুব ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে এতক্ষণ ভিজে থাকার কারণে তাই কাঁপছে। দূরে দাঁড়িয়ে মোন তা খেয়াল করছে। ভেতরে মায়া হলেও বাহিরে প্রকাশ করছে না।
“শরীরে জ্বর আসতে পারে ভিজে কাপড় গুলি ছেড়ে নিন।”

“পরে কি উলঙ্গ থাকবো? তোমার সামনে বিবস্ত্রে..”

“ছিঃ কি বেহায়া আপনি। কথার স্টাইল এত নিলজ্জ্ব মার্কা। ছিঃ।”

“যা তুমিই তো বললে!”

“আমি আপনাকে…”

“কি?”

“হাতির ডিম।”

“আগে তো জানতাম ঘোড়ার ডিম হয় এখন কি হাতিরও হয়?”

“দূর আমি কেন তুরির কথা নকল করছি?”

“কি বলছো বিড়বিড় করে?”

“আপনার ডিম। যত্তসব আপদ।”

“কি বললে তুমি?”

“ওগুলি ছেড়ে টাওয়াল পরে গেস্টরুমে শুয়ে পড়ুন গিয়ে।”

“টাওয়াল?”

“নয় তো কি?”

“….

“লুঙ্গি পরবেন?”

“লুঙ্গি? তবে টাওয়াল কি দোষ করল?”

“মরণ।”
মোন বিড়বিড় করে উপরে চলল। একটা লুঙ্গী নিয়ে এসে ফিরাত কে দিল।

“এটা পরে নিন।”

“লুঙ্গি?”

“না মেয়েদের পেটিকোট দিয়েছি আপনাকে। ঢং। নিন ধরুন।”

“বাহ কি তেজ। ঝাঁঝ আছে বটে!”

“কি বললেন?”

“কিছু না। তা এটা কার?”

“….

“কি হলো?”

“যা বললাম তাই করুন। ধরুন এটা।”

“থাক লাগবে না। এসবে অভ্যস্ত নই আমি। রেখে দাও।”

কিছুক্ষণ চুপ থেকে মোন বলল,
“আপনি ওয়েট করুন। আসছি আমি।”

মোন এবার একটা টাউজার এনে দিল ফিরাত কে।
“এটা পরে নিন।”

“তা সম্ভব।”

ফিরাত ভিজে কাপড় ছেড়ে টাওয়াল পরে উদাম গায়ে চলে এলো মোন এর সামনে। মোন ভ্যালভ্যাল করে দেখতে লাগল ফিরাত কে। সে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
“বুকের পাটা আছে তোমার বলতে হয়। না হয় একা এক বাড়িতে এমন দিনে একটা জোয়ান অবিবাহিত ছেলে কে নিজের বাড়ির ভেতরে নিয়ে আসো? এখন যদি আমি তোমার সাথে কিছু..”

“দে দেখুন, যেমন এনেছি তেমন ধাক্কা দিয়ে বেরও করে দিতে পারব।”

“পারবে তো?”

“হুম।”

“যদি না যাই?”

“দে দেখুন ভা ভালো হচ্ছে না কিন্তু।”
ফিরাত হাটু গেড়ে বসে পরল ফ্লোরে। মোনতাহ্ র হাত দুটি আলতো করে নিজের হাতে তুলে নিয়ে বলতে লাগল,
“ভালোবাসি চাঁদ তোমায়। তুমি বিহিন থাকতে পারব না আমি। ফিরিয়ে দিও না আমায়। আমার ভালোবাসা টা যত্ন করে নিজের হৃদয়ে স্থাপন করো।”
মোন কিছু বলতে পারছে না মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না তার। কিন্তু কানে কানে কোনো এক সুর ভেসে গেল। যা হৃদয় স্পর্শ করেছে তার। ভেতরে ধুকবুক আওয়াজ হচ্ছে। কিছু না বলে সে দূরে গিয়ে দাঁড়াল ফিরাত কে পিছন ফেলে। ফিরাত দুই পা এগিয়ে গিয়ে শুধু বলল,
“চাঁদ তোমার জন্যে আমি অপেক্ষা করব। যখন আমার আকাশে তুমি চাঁদ জ্যোৎস্নার মতো ভেসে উঠে সম্মতি দিবে তখনি আমি তোমার আলোয় নিজেকে পরিপূর্ণ করব।

চলবে….
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here