#তুই_হৃদহরণী
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ৫
আহরার মন দিয়ে তুরফার কথা ভেবে চলছে। নূরের মতো চেহারাটা চোখের পাতার মতো ভাসছে। ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি নিয়ে আসল। স্লান সেই হাসি। এমন সময় ফিরাতের দেখা।
“ভাই আহরার কি হয়েছে তোর? শরীর খারাপ নাকি বেশি ভালো?”
আহরার জবাব দিল না সে তখনো ভাবনায় বিভোর। ফিরাত এগিয়ে গেল। আহরারের শরীরে স্পর্শ করল।
“আহরার!”
“হ্যাঁ?”
“কিরে কোথায় চলে গেলি?”
“তুরফা কে আমার চাই। মানে চাই ই।”
“হোয়াট?”
ফিরাত যেন স্তম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বলছে না।
“ইয়ার ওই তুরফা কে আমার চাই। ওকে বিছানায় নয় ওকে আমার লাইফে চাই। ওর মাঝে আলো আছে। নূরের মতো ও। ও আমার লাইফ টা কে নিজের আলো দিয়ে আলোকিত করবে। আই ওয়েন্ট তুরফা। হোয়াটইভার।”
“কি? ভাই আহরার আর ইউ ওকে?”
“ইয়েস আই এম অলরাইটা।”
“কি বলছিস কি যা তা?”
“ইয়ার রেয়লি, আই ওয়েন্ট তুরফা ইন মাই লাইফ।”
“ভাই আহরার তুই আবার প্রেমে পরিস নি তো?”
“….
“কি রে ইয়ার?”
“আই ডোন্ট নো। আই জাস্ট ডোন্ট নো। ওই মহিলা আমার জীবন টা বরবাদ করে দিয়েছে। সব হাসি, সুখ, ভালোবাসা, প্রেম কিছুই বুঝতে পারি নি আমি। আমি জানি না কিছু। আমার তুরফা চাই। এবং চাই।”
“তুই ড্রিংক করিস নি তো?”
এবার ফিরাতের কথায় রাগ হলো আহরারের। চোখ মুখ এক করে বিরক্তি নিয়ে বলল,
“কেন কি প্রবলেম?”
“এই যে যা যা বলছিস। আমার এটাই মনে হচ্ছে। তোর মতো প্লেবয়ের মুখে একটামাত্র মেয়ে…..”
“…..
“ওর প্রতি আমি একটা অদ্ভুত টান অনুভব করি।”
“….
ফিরাত আর কিছু বলল না। বলতে পারল না। এত টা সিরিয়াস এর আগে কোনো দিন কারো জন্যে হয়নি আহরার। এভাবে এত টা চিন্তা করো জন্যে করা হয়নি তার। আহরার কি আসলেই মেয়ে টা কে নিয়ে…. ফিরাত ভাবতে পারল টা প্রশ্ন বা প্রশ্নের উত্তর টা। মনন হয়ে সে চুপচাপ বের হয়ে গেল। আহরারও ডাক দিল না ফিরাত কে। বা ফিরাত যে চলে গিয়েছে সেদিকে তার বিন্দুমাত্র ভাবনা নেই। তার ভাবনার জগতে এখনো তুরফা অস্তিত্বশীল।
আহরারের মন ছটফট করছে। বসা থেকে উঠে দাঁড়াল ফাইল নিয়ে। উঁকি দিল তুরফার ডেস্কে। কিন্তু তার রুম থেকে তুরফা কে বেশি দেখা যায় না। সামনের আরো ডেস্কের জন্যে। আহরার আরো ছটফট করতে লাগল। ডেস্কে কল দিল। তুরফা ধরল,
“জ্বি।”
“তুরফা আমার কেবিনে আসুন।”
“….
“জদলি।”
“কোনো দরকার?”
“অবশ্যই। দ্বিতীয় বার যেন কল দিতে না হয় আপনাকে।”
আহরার কল কাটল। তুরফা প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়াল। ইচ্ছা না থাকলেও এখন অনেক কিছুই করতে হবে। বন্দি কারখানায়ে সে।
“আসব?”
“বা আপনি তো দেখছি পারমিশন নিতেও জানেন।”
তুরফা কিছু না বলে রুমে ঢুকল।
“আমি কি আপনায় পারমিশন দিয়েছি রুমে আসার?”
“আপনি জিজ্ঞেস করেছেন তাই দেখালাম। কি বলবেন বলুন।”
আহরার একটু চুপ থেকে বলল,
“বসুন।”
“ঠিক আছি।”
“এত তেজ কেন আপনার মিস হৃদহরণী বলবেন?”
“মুখ সামলে কথা বলুন।”
“ওকে তুর যাও চুপ করে বসো।”
লোকটা কে একটুও সহ্য করতে পারে না তুরফা। ব্যবহার, কথা বলার ধরন, অভদ্রতা তার একটুও পছন্দ নয়। মুখ তেতোবিরক্ত করে সে চেয়ার টেনে বসল। আহরার তার পাশে গিয়ে দাঁড়াল।
“মিস হৃদহরণী আপনি একটু বেশি বেশিই করেন না?”
“আপনার দরকারী কথা কি আছে?”
“আমার উত্তর দিন। এমন টা কি মনে হয় না আপনার?”
“না। আমি বুঝি কখন কি করতে হবে আর কার সাথে কি ব্যবহার।”
“তুরফা, জানেন আপনার নামের অর্থ?”
“…..
“বিরল বস্তু। সচরাচর দেখা যায় না এমন। কদাচিৎ এমন কিছু দেখা যায়। আসলেই আপনি তেমন। আপনি হয়তো একটাই তুরফা।”
“….
“আপনি থাকছেন কোথায়?”
“অবশ্যই আমার বাসায়।”
“অবশ্যই আমি সেটা জানি। জায়গা টা কোথায়?”
“বাসা যেথায় সেথায়।”
“জায়গার নাম টা তো নিজ মুখে বলবে।”
“কোনো প্রয়োজনই নেই।”
“তুর তুমি জানো তোমার এই জিনিস টাই আমার পছন্দের। আজ পর্যন্ত ভয়ে, আমার চোখ ঘুরানো দেখে কোনো মেয়ে টু শব্দ টা করার সাহস পর্যন্ত পায় নি আর সেখানে তুমি… আমার মুখের উপর কথা বলতে পারো, আমার কথা অমান্যও করতে জানো। ভয় বিন্দু পরিমাণ পাও না তুর তোমার ওগুলি আমার হৃদয়ে লেগেছে। তোমার এটিডিউট আই জাস্ট লাইক ইট।”
“….
“তুর আমি সত্যিই তোমাকে চাই।”
তুরফা রাগে এবার দাঁড়িয়ে পরল। আহরার ব্যস্ত হয়ে পরল,
“আরে বসো বসো। এখনো তো কথাই শেষ হয় নি হৃদহরণী।”
“আমি আসছি।”
“নো।”
“….
তুরফা কিছু না বলে হনহন করে চলে গেল। আহরার দাঁড়িয়ে থেকে বিড়বিড় করল,
“তুর আমি ভালো করেই জানি তুমি এমন করছো যেন আমি নিজ থেকেই তোমাকে এখান থেকে মুক্ত করে দেই। কিন্তু তা হবার নয় হৃদহরণী।”
চলবে….
(ছোট্ট পর্ব পড়েন একটু। আজ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তে ছিলাম না। পাঠকদের বলেছিলাম বলেই দিলাম…..)