গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী(সিজন-২)
লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)
part:04
আদিত্য আফরিনের দিকে তাকিয়ে আছে । আফরিন সেটা দেখে প্রচুর বিরক্ত। অন্যা বকবক করছে কৌশালের সাথে। আফরিন রেগে বলে
” অন্যা ২ মিনিটের মাঝে যদি তুই অন্য দিকে না তাকাস তাহলে তোকে আমি আপেল জুস করে খাবো Without সুগার।
অন্যা বেচারি ভেবাচেকা খেয়ে যায়, আর আদিত্য যখন বুঝতে পারে আফরিন তাকে কথাটা বলছে। তখন সে গলা ঝেড়ে আহানকে ডাকে
” আজকে কি বের হবি না নাকি? বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চা নাতিনাতনি নিয়ে একবারে বের হবি?
কৌশাল হাসি দিয়ে অন্যা কে বলে
” অন্যা পানিবিহীন বন্যা তোমার জন্য আমি তৈরি করব ভালোবাসার বন্যা, প্রতি বছর তোমাকে গিফ্ট করব ছোট ছোট অন্যা।
অন্যা বলে
” কৌশালের বাচ্চা তোকে আমি করব পাবলিক পিটা। চুপ যা।
আফরিন ওদের এমন কথা শুনে হাহাহা করে হেসে দেয়। আদিত্য কিছু না বলেই ভিতরে ঢুকে দেখে আহান আর অহনা দুজন চেয়ারে বসে আসছে দুই প্রান্তে। আর দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আফরিন গিয়ে অহনার চোখের সামনে হাত নাড়ায় এতে কোনো হেলদোল নেই তাদের। আদিত্য বাঁকা হাসি দিয়ে আহন যে চেয়ারে বসে ছিল সেটা টান দেয়। আর ফল স্বরূপ আহান নিচে পরে যায়। কৌশাল অন্যা সবাই একসাথে জোড়ে হেসে ফেলে।
___________
অহনা যখন দেখে আহান পরে গিয়েছে তার হুশ আসে কিন্তু সবার উপস্থিত টের পেয়ে লজ্জায় লাল হয়ে যায়। আহান আদিত্যর দিকে রাগী চোখে তাকাতেই আদিত্য দৌড়। আর পিছনে আহান। আহান বলছে
” সালা তুই আমার হবু বউ, শালীদের সামনে মান ইজ্জত ভাঙা প্লাস্টিক করে পালাচ্ছিস। তোকে তো আজ আমি।
একটু পরই আহান আদিত্যকে ধরে ফেলে।
আদিত্যকে ধরে আহান দুই তিনটা ঘুষি দেয়। আফরিন বলে
” শক্তি নাই হাতে? এতো ধীরে কেন? আদিত্য বলে
” তুমি অনেক বেশি বকবক কর। আমি বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বলি
” আমার বকবক শুনতে ইচ্ছে না করলে কান গুলো তো কেটেই রেখে দিতে পারেন।
কৌশাল ভাবার ভাব করে বলে
” আচ্ছা আদি তোকে কান ছাড়া কেমন লাগবে? আর সবাই ফিক করে হেসে দেয়। আদিত্য রাগী দৃষ্টিতে কৌশালের দিকে তাকায়। আফরিন বলে
” সবাই কানকাটা আদিত্য বলে ডাকবে। আর আঙ্কেল আন্টির আবার কানকাটা আদিত্য নামে আকিকা করতে হবে।
আদিত্য রেগে বলে
” ইউ ফুল। আফরিন ভাব নিয়ে বলে
” আই এম ভেরি কুল, ইউ ফুল। আদিত্য একটা ধমক দিয়ে বলে
” ইউ শাট-আপ। আফরিনও কমনা সেও আদিত্যর থেকে বেশি জোরে বলে
” ডাবল শাট-আপ। এটা আপনার বাসা না,
মি. ঝিঙ্গা। আর আমার সাথে উঁচু গলায় একদম কথা বলতে আসবেন না। আপনাকে আমি ভয় পাই না। রাগী এনাকন্ডা একটা।
বলেই আদিত্যকে পাশ কাটিয়ে চলে আসি। অন্যা আর অহনাও পিছু পিছু আসছে।এতো কিছু তো বললাম। কিন্তু এই ফাজিল একন্ডাকে দেখলেই বেচারা হার্ট আমার লাফাতে লাগে। ভয় তো প্রচুর পাই কিন্তু প্রকাশ করিনা।
___________
অপরদিকে আদিত্যকে চুপ করে থাকতে দেখে কৌশাল বলে
” বাঘ যতই বনের রাজা হোক বাঘিনীর কাছে সে ভেজা বিড়াল। আদিত্য কৌশালের দিকে তাকায় আর বলে
” কথাটা আমাকে বললি? কৌশাল হাসি দিয়ে বলে
” তোর তাই মনে হলো? আমি তো কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি। আর তোর তা মনে হলে তাই। আহান বলে
” দেখ আদি তোকে আমরা চিনি তুই যে আফরিনকে লাইক করিস সেটাও জানি। আদিত্য বলে
“তোরা তো সাংবাদিক, জার্নালিস্ট। কৌশাল বলে
” কি যে বলিস না আমাদের এক একটা চ্যানেল আছে। আর এত সুন্দর সুন্দর টিভিসো হয় নাম কি জানিস? আদিত্য ভ্রু উচু করে বলে
“কি? আহান বলে
” আজ আদিত্য খেল আফরিনের কাছে ঝাড়ি।
আদিত্যর এনাকন্ডার রূপের পিছনে ভালেবাসা কি আফরিন দেখতে পারবে?। আদিত্য একটা ধমক দিয়ে বলে
” চুপযা আমি ওকে লাইক করি না শুধু ভাবির বোন তাই কিছু বলতে পারি না। কৌশাল বলে
” বেটা তোমার জন্য আফরিনই ঠিক। আর তুমি যে ওর সামনে ভেজা বেড়াল হয়ে যাও ঠিকিই দেখা যায়।।
আদিত্য বলে
” তোদের সাথে কথা বলাই বেকার এখন নিচে চল খুদা লেগেছে। ক্যান্টিনে যাবো।
তিনজন মিলে ক্যান্টিনে প্রবেশ করে।
_________________
রিক্সা নিয়ে বাসায় ফিরছে আফরিন মাকে জড়িয়ে ধরে ফ্রেশ হতে যায় রুমে। হঠাৎ করে ফোন আসতেই নিজের ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে। এটা আবার কার ফোন?!! আফরিনের মনে পরে। যখন আদিত্য টেবিলেটা উল্টে ফেলেছিল তখন সেটা সে খেয়াল না করে তার ভেবে নিজের ব্যাগে ভরে নিয়েছে। এখন কি হবে? কি আর হবে!! কালকে ফিরিয়ে দিলেই তো হবে। ফ্রেশ হয়ে এসে নিজের মার সাথে ইচ্ছে মতো গল্প করে রুমে আসে। দেখে কৌশাল আর আহান কল দিয়ে সুনামি নিয়ে এসেছে।
আরেকবার কল হতেই আফরিন ফোন ধরে। কৌশাল বলে
” কে রে তুই!? তোকে যদি সামনে পাই না। তাড়াতাড়ি নিজের ভালো চাইলে ফোনটা দিয়ে যা।
আফরিন বলে
” হ্যালো ভাইয়া আমি আফরিন। ভুল আদিত্য ভাইয়ার ফোনটা আমার ব্যাগে চলে এসেছে। কৌশাল নরম কন্ঠে বলে
“সরি সরি। আচ্ছা সমস্যা নেই। বলেই কল কেটে দেয়। কৌশাল আদিত্যকে পিন্ঞ্চ মেরে বলে
” তোর ফোন তোকে লাইক করে না তাই হাঁটি হাঁটি পা পা দিয়ে আফরিনের কাছে চলে গিয়েছে। কোনদিন যেন তুইও চলে যাস। আদিত্য বলে
” বাজে বকিস না। চুপ কর। আহান বলে
” Tujhe mirci lagi to ham kya kare!!
আদিত্য কিছু না বলে বাইক ইস্টারট করে
_______________
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতেই মাথাটা কেমন ভারি ভারি লাগছে আফরিনের তাই সে শাওয়ার নিয়ে নিচে যায়। ডার্ক ব্লু কালারের লং ড্রেস গলায় হুয়াট ইস্টনের ছোট ছোট পাথর বসানে। চুলগুলো খোলা। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। আফরিন তাড়াতাড়ি করে নাশতা করে বেড়িয়ে যায় ভার্সিটির জন্য। রাস্তায় দাড়িয়ে আছে অহনার জন্য । অহনা এখনো আসেনি। ইচ্ছে মতো বকছে আফরিন অহনাকে।
ফোনটা ওন করে দেখে ১০ঃ১৫ বাজে । একটুপর দূর থেকে দেখা যায় অহনা দৌড়ে আসছে।
আফরিনকে দেখে বলে
” সরিরে রাস্তায় কুকুরের দৌড়ানি দিছে। আফরিন হেসে দেয় অহনার কথা শুনে। অহনা বলে
” দোস্ত তোকে দেখে ক্রাশ খাইছি। ছেলে হইলে তোকে অপহরণ করে বিয়ে করে ফেলতাম। আফরিন বলে
” হয়েছে এখন চল।
একটু সামনে যেতেই ভাগ্য ভালো হওয়াতে রিক্সা পেয়ে যায়। আর ভার্সিটি পৌঁছে যায় দুজনে
__________
এখনো ক্লাস শুরু হয়নি, অন্যাও চলে এসেছে। আফরিন বলে
” তোরা থাক আমি একটু আসছি। অন্যা পিছন থেকে ডেকে বলে
” কোথায় যাচ্ছিস? আফরিন পিছনের দিকে তাকিয়ে হাটতে হাটতে বলে
” আসছি এক মিনিট। অন্যা বলে
” সামনের দিকে তাকা। আফরিন সামনের দিকে তাকাতেই আদিত্যর সাথে ধাক্কা লাগে। আফরিন রেগে বলে
” চোখে দেখেন না? আদিত্য বলে
” না তোমার দুইটা লাগিয়ে দাও তাহলে দেখতে পারবো, আমার ফোন কোথায়? আফরিন দাঁত চেপে চেপে বলে
” আমার চোখ না। আপনার একটা পেঁচার চোখ আর গরুর চোখ লাগানো উচিত রাতেও দেখতে পারবেন এভাবেই তো দিন কানা। আর এই যে আপনার ফোন। আপনার ফোন খেয়ে ফেলেনি।
আদিত্য বিরক্ত হয়ে বলে
” তুমি সোজা কথার এমন বাকা উত্তর দাও কেন? আফরিন একটা হাসি দিয়ে বলে
” কারণ আপনি মানুষটাই জিলাপির মতো সোজা। তাই আমি আপনার সোজা কথার বাঁকা উত্তর দেই।
আদিত্য বলে
” তুমি একটা, পুরাই ফালতু। আফরিন বলে
” ইন গুড ওয়ে। কারণ সত্যি কথা সবারই তেতো লাগে।
বলেই অন্যা আর অহনার দিকে চলে যায়। আদিত্য তাকিয়ে আছে আফরিনের যাওয়ার দিকে। আহান হালকা গলা ঝেড়ে বলে
” এহেম এহেম, দোস্ত চোখ তো যাবে একটু পলক ফালা। আদিত্য আহানের পিঠে একটা মেরে বলে
” সালা চুপ কর। বাজ পাখির মতো আমার দিকে এতো নজর রাখতে কে বলছে? কৌশাল তখন গান গায়
“Nazar Thi Paini Hui Bechaini
Aankhon Aankhon Mein Shaitani Ho Gayi
Ahan Ne Dekha Aise
Aditto ko gusaa AGaye……
আদিত্য কি বলবে দুইটায় জ্বালিয়ে দেয়।
চলবে
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে 😉