তুমি এলে তাই পর্ব ৩৭

#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতোয়াল
#পর্ব- ৩৭
.
ড্রয়িংরুমের পরিবেশটা পুরো স্তব্ধ হয়ে আছে। আহিল ফ্লোরে বসে আছে, পুরো গায়েই মারের চিহ্ন। গুঞ্জন মাথা নিচু করে বসে আছে সোফায়। স্পন্দন ওর পাশে বসে ওকে এক হাতে জরিয়ে ধরে রেখেছে। ওর পাঞ্জাবির হাতা এলোমেলো ভাবে ফোল্ড করা, চুল এলোমেলো, সারা শরীর ভিজে আছে ঘামে। রেহান আর আবিরের ও অনেকটা এরকমইই অবস্থা। বাড়ির সবাই গম্ভীর মুখ করে বসে আছে।

গুঞ্জনের মৃদু চিৎকার শুনে স্পন্দন এবার অস্হির হয়ে গেলো। ও দরজা ভাঙার জন্য জোরে জোরে ধাক্কাচ্ছে। আর গুঞ্জনের মাথায় এতো জোরে আঘাত করেছে যে ওর কাছে সবকিছু ঝাপসা লাগছে। আহিল গিয়ে ওকে টেনে তুলে ঘাড়ের ওপর দিয়ে চুল ধরে বলল,

— ” তুমি শুধুই আমার হ্যাঁ ? তুমি যদি আমার না হও তাহলে কারো হতেই দেবোনা আমি।”

দরজা জোরে ধাক্কানোর আওয়াজ পেয়ে রেহান, আবির আর বাকিরাও ছুটে এসেছে। ওরা আসতে আসতে স্পন্দন দরজা ভেঙে ফেলেছে। ভেতরে গিয়ে যা দেখল তাতে রাগে ওর মাথা খারাপ হয়ে গেলো। কারণ আহিল গুঞ্জনের সাথে জবরদস্তি করার চেষ্টা করছে। গুঞ্জনকে দেখেই মনে হচ্ছে ওর কিছু হয়েছে। স্পন্দন গিয়ে ধাক্কা দিয়ে ওকে সরিয়ে দিয়ে গুঞ্জনকে ধরল। গুঞ্জনকে বেডে হেলান দিয়ে বসালো। গুঞ্জন এখনো মাথা চেপে ধরে বসে আছে। রেহান আর আবির এসে গুঞ্জনের অবস্থা আর আহিলকে দেখেই বুঝে গেলো যে কী হয়েছে। আহিল উঠে পালাতে গেলেই স্পন্দন ওর কলার ধরে ঘুরিয়ে বলল,

— ” তোকে সাবধান করেছিলাম ওর আশেপাশেও যাতে তোকে না দেখি। কিন্তু তুই তো..”

বলে আবারও মারতে শুরু করলো ওকে। এবার এসে আবির আরে রেহানও যোগ দিলো। সবাই এসে অনেক কষ্টে আহিলকে ওদের হাত থেকে ছাড়লো। কারণ ওনারা কেউই ব্যাপারটা পুরোপুরি জানেন না। স্পন্দন এবার গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে দেখলো ও সেন্সলেস হয়ে গেছে। ও তাড়াতাড়ি গুঞ্জনকে ধরে পাশের গ্লাস থেকে পানি নিয়ে ওর মুখে ছিটা দিতেই আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালো। সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।

এখন সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে। সবাই আহিলকে এটা ওটা প্রশ্ন করছে। রেহানের বাবা বললেন,

— ” ছিঃ ছিঃ আহিল তোমার কাছে অন্তত এটা আশা করিনি। তোমাকে খুব ভালো এবং ভদ্র ছেলে হিসেবেই জানতাম। কিন্তু তুমিতো..”

আহিল এবার বলল,

— ” আঙ্কেল বিশ্বাস করুন, সত্যিই বলছি আমি কিছু করিনি। এই গুঞ্জন সেই বিয়ের দিন থেকে আমার পেছনে পরে ছিলো।”

সবার চোখ এবার গুঞ্জনের দিকে গেলো। গুঞ্জন ভ্রু কুচকে তাকালো আহিলের দিকে। অদ্ভুতভাবে স্পন্দন কোনো রিঅ্যাক্ট করলো না উল্টে আবির রেগে এগোতে নিলে ওকে ধরে থামিয়ে দিলো। আহিল আবার বলল,

— “হ্যাঁ। দুই বছর আগেও ওই আমার গায়ে পরে পরে থাকতো। আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতো যে ও আমাকে চায়। আর আমিও বা কী করতাম? প্রথমে ইগনোর করতে চাইলেও পরে দুর্বল হয়ে পরেছি ওর ওপর। তাইতো ওরকম কান্ড করেছি।”

মেঘলা বলে উঠল,

— ” আরে ও মিথ্যে বলছে। আমি নিজে সাক্ষী যে গুঞ্জন…”

তখনি মেঘলার মা ওকে ধমক দিয়ে থামিয়ে বলল,

— ” চুপ কর। সবসময় শুধু ওকে বাঁচানোর চেষ্টা করিস। শেষমেশ পিঠে ছুড়িটাতো ওই মারে তাইনা? আহিল বাবা বলোতো আর কী করেছে এই মেয়ে?”

আহিল একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” মেঘলার বিয়ের দিন থেকে আমাকে বলে আসছে ও আমার কাছে ফিরতে চায়। ও নাকি দুই বছর আগেই আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছে আবিরের জন্যে নাকি পারেনি। আর আজতো আমাকে কথা আছে বলে রুমে ডেকে.. আমার রুচিতে বাধছে বলতে..”

আহিলের বাবা গম্ভীর মুখ করে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণ ওনার ছেলেকে উনি একটু হলেও চেনেন তাই হয়তো বুঝতে পারছে যে ও মিথ্যে বলছে। আহিলের মা বললেন,

— ” ছিঃ ছিঃ। এরকমও মেয়ে হয়? কী জঘন্য। আর তোমরা? কিছু না জেনেই আমার ছেলেটাকে মারলে। এবার?”

গুঞ্জন কিছু বলছেনা ভ্রু কুচকে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। নিজের হয়ে সাফাই গাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। স্পন্দনও কিছু বলছে না। আবির অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছে, স্পন্দনের জন্যে কিছু বলতে পারছেনা। মেঘলার মা গুঞ্জনের বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

— ” দেখলেন দাদা বলেছিলাম না এই মেয়ে আমাদের মুখে চুন কালি লাগাবেই? দেখলেন তো?”

গুঞ্জনের মা এবার রেগে গিয়ে বললেন,

— ” এই মেয়েটার জন্যে কোনোদিন একটু শান্তি পেলাম। যেখানে যায় সেখানেই ঝামেলা বাধিয়ে দেয়। ওকে আজ আমি।”

এটুকু বলে উনি এসে মারতে এগিয়ে আসতেই স্পন্দন উঠে গুঞ্জনের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,

— “একদম না। আগে কী করেছিলেন আমি জানি না, আমি সেখানে ছিলামই না। কিন্তু এখন গুঞ্জন শুধু আপনার মেয়ে নয় আমার হবু স্ত্রী। আর আমার সামনে আমারই হবু স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার আগে দশবার ভাববেন। ”

মেঘলার বাবা বলল,

— ” তুমি এখনো এই মেয়েকে বিয়ে করতে চাও? এতোকিছু জানার পরেও?”

স্পন্দন এবার হালকা হেসে বলল,

— ” কী জানবো? হ্যাঁ? কী জানতে বলছেন? আপনারা সবাই আহিলের কথা শুনলেন অথচ কেউ গুঞ্জনকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করলেননা?”

এরপর গুঞ্জনের বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আর আপনারা? বাইরের একজনের কথা শুনে নিজেরই মেয়েকে মারতে আসলেন? এটাই আপনাদের ভালোবাসা ছিলো নিজের মেয়ের ওপর?”

গুঞ্জনের মা বললেন,

— ” যদি এসব মিথ্যা হয় তাহলে ও কেনো চুপ করে আছে? কেনো কিছু বলছেনা?”

স্পন্দন এবার হালকা চেঁচিয়ে বলল,

— ” জিজ্ঞেস করেছেন কেউ ওকে? বলুন? করেছেন? তাহলে ও কেনো খামোখা নিজেকে এক্সপ্লেইন করতে যাবে আপনাদের সামনে?”

এবার ওনারা চুপ হয়ে গেলো। স্পন্দন এবার আহিলের কলার ধরে বলল,

— ” মার খেতে না চাইলে সত্যিটা সবার সামনে বল।”

আহিল শক্ত কন্ঠে বলল,

— ” আমি যা বলেছি একদম সত্যি বলেছি।”

স্পন্দন এবার জোরে একটা ঘুষি মারলো আহিলের মুখে। এবার কেউ কিছু বলতে যাবে তার আগেই স্পন্দন বলে উঠলো,

— ” কেউ যদি আজ আমাকে আটকাতে আসে তো খুব খারাপ হয়ে যাবে। এতোক্ষণ যেহেতু সবকিছু চুপচাপ দেখছিলে। এখনও ঠিক তাই করো।”

বলে ওকে আবারও মারতে শুরু করলো মারতে মারতে বেচারার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেড়িয়ে যাচ্ছে। আহিলের কিছু বলে উঠতে নিলেই আহিলের বাবা হাত ধরে আটকে দিলো।কেউ চেয়েও বাধা দিতে পারছেনা। গুঞ্জন সোফায় হেলান দিয়ে হাত ভাজ করে দেখছে। আহিল এবার বলল,

— ” বলছি। সবটা বলছি।”

স্পন্দন এবার থেমে গিয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ। সবটা বলবি। শুরু থেকে।”

এরপর আহিল অনেকটা বাধ্য হয়েই সবটা খুলে বলল। দুই বছর আগে কী করেছে আর এখন এই দুদিন কী করেছেন সব। সবটা শুনে গুঞ্জনের বাবা মা পুরো স্তব্ধ হয়ে গেলেন। কীকরে এতো বড় ভুল করলেন সেটাই বুঝতে পারছেন না। নিজেরই মেয়েকে এতোটা ভুল বুঝলেন কীকরে? ওর কাকা কাকী তো মুখ ছোট করে দাঁড়িয়ে আছেন। আহিলের মাও লজ্জায় চুপসে দাঁড়িয়ে আছেন, কিছু বলার মুড ওনার নেই। আহিলের বাবা এসে আহিলকে ঠাটিয়ে একটা চড় মেরে বললেন,

— ” তোমার মতো একটা ছেলেকে জন্ম দিয়ে যে কতোবড় পাপ করেছেন সেটা আজ বুঝতে পারছি। কালকেই তোমাকে কানাডা পাঠানোর ব্যবস্হা করছি ওখানেই থাকবে তুমি। তোমার জন্যে এই মেয়েটাকে কী কী সহ্য করতে হয়েছে ধারণা আছে তোমার? যাও গিয়ে ক্ষমা চাও।”

আহিল মাথা নিচু করে গুঞ্জনের কাছে ক্ষমা চাইতে এলেই গুঞ্জন ভ্রু কুচকে মুখ ঘুরিয়ে বলল,

— ” স্পন্দন প্লিজ এখান থেকে সরাও এদেরকে। আমার সহ্য হচ্ছেনা।”

স্পন্দন তাকাতেই আহিলের বাবা মা আহিলকে ধরে নিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো। গুঞ্জন বাবা এবার একটু সন্দিহান হয়ে বলল,

— ” যদি আহিল যা বলল সব সত্যি হয়ে তাহলে রাশেদ আর অনিলা আমাদের যা যা বলেছিলো সেগুলো কী ছিলো? কীরে তোরাই তো বলেছিলাস না যে তোরা নিজের চোখে দেখেছিস?”

রাশেদ হোসেন আর মিসেস অনিলা তো হকচকিয়ে গেলেন। কী উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না। তাই মাথা নিচু করে আছে। গুঞ্জনও অবাক হয়ে তাকালো কারণ ও এসব জানতো না। স্পন্দন একটু বাঁকা হেসে ওনাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,

— ” কী হলো আঙ্কেল এন্ড আন্টি? বলুনত সবাইকে সবটা? কেনো বলেছিলেন?”

মিসেস নিলিমা ইতস্তত করে বললেন,

— ” আজব তো। আমরা মিথ্যে বলেছি নাকি? যা দেখেছি তাই বলেছি।”

গুঞ্জন এখনো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। স্পন্দন এবার ধমকের সুরে বলল,

— ” শাট আপ। একটা মিথ্যেও না ওকে? এখন এই মুহূর্তে সব সত্যিটা সবার সামনে আপনারা বলবেন নাকি আমি বলবো?”

মিস্টার রাশেদ তুতলিয়ে বলল,

— ” ক্ কী বলতে চাইছেন আপনি?”

স্পন্দন একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” ওকে ঠিকাছে আমিই বলছি।”

এরপর স্পন্দন গুঞ্জনের বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আচ্ছা বাবা একটা কথা বলো আগে গুঞ্জন ছোট থাকতে তোমরা যখন ওর সাথে কথা বলতে ওকে ফোন করতেন তখন গুঞ্জন কথা বলতো?”

গুঞ্জনের বাবা বলল,

— ” নাহ ও তো আমাদের সাথে কথা বলতে চাইতোনা। রোজ দুই তিনবার ফোন করতাম শুধু ওর সাথে একটু কথা বলব বলে কিন্তু ও তো কথা বলতেই চাইতোনা।”

গুঞ্জন এবার অবাক চোখে ওর কাকা কাকীর দিকে তাকালো। স্পন্দন বলল,

— ” গুঞ্জন কী এটা নিজে বলেছিলো যে ও আপনাদের সাথে কথা বলতে চায়না?”

গুঞ্জনের মা অবাক কন্ঠে বললেন,

— ” না কিন্তু। ভাইয়া আর অনিলা তো বলেছিলো?”

স্পন্দন এবার একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” বাকিটাও তহলে আমি বলবো নাকি আপনারা নিজেরাই বলবেন?”

ওনারা কিছু না বলে চুপ করে আছেন। কী বলবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। স্পন্দন এবার গুঞ্জনের কাছে ওর পাশে গিয়ে বসে বলল,

— ” এখন ঠিক লাগছে? কথা বলতে পারবে?”

গুঞ্জন স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ল, তারপর বলল,

— ” কাকা কাকীর কাছে বারবার বলতাম ভাইয়ার সাথে কথা বলব। আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলবো কিন্তু ওনারা বলতো ওরা নাকি ফোন করেনা আর করলেও আমার সাথে কথা বলতে চায়না। ছোট ছিলো তাই বিশ্বাস করে নিতাম কিন্তু যখন বড় হয়েছি তখন বুঝেছিলাম কোনো ঝামেলা আছে কিন্তু এরকম ঝামেলা সেটা বুঝতে পারিনি।”

স্পন্দন এবার ওনাদের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” এবার নিশ্চয়ই কারো কিছু বুঝতে আর বাকি নেই?”

গুঞ্জনের বাবা মায়ের কাছে সবটা পরিস্কার হয়ে গেলো। ওনারা বিদেশে থাকাকালীন গুঞ্জন সম্পর্কে যা যা বলেছে ওরা সবটাই যে ভিত্তিহীন সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন। গুঞ্জনের কাকা কাকী চুপসে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বলার মুখতো ওনাদের নেই। স্পন্দন একটু হেসে বলল,

— ” এবার বলে দিন আপনারা কেনো করেছেন এসব। না থাক আপনাদের কষ্ট করে কিছু বলতে হবেনা যা বলার আমিই বলছি। ভুল হলে একটু সুদরে দেবেন তাহলেই হবে। ”

সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্পন্দনের দিকে। স্পন্দন বলল,

— ” ওনারা ভেবেছিলেন আবির হয়তো মারা যাবে। যদিও সেটার পসিবিলিটি বেশি ছিলো। তাআ ওনারা ভাবলেন যে আবিরতো থাকছেনা। তারপর যদি আবার গুঞ্জনকে ওনাদের চোখে খারাপ করা যায় তাহলে প্রপার্টি সব মেঘলার মানে ওনাদেরই। পরে যখন আবির সুস্হ হয়ে গেলো। তখন ভাবলো যে গুঞ্জনকে সবার চোখের বিষ বানিয়ে একটা ওয়ারিস তো কমাই। কী তাইতো?”

গুঞ্জনের কাকা কাকী এবারেও কিছু বললেন না ওনারা বুঝে গেছেন আজ কথা ঘুরিয়ে আর কোনো লাভ নেই। গুঞ্জনের বাবা পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে, এতোটা নিচ ওরা? আর এদের জন্য নিজের মেয়ের সাথে কতোবড় অন্যায় করে ফেলেছে। আবির রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। আর মেঘলা ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখছে নিজের বাবা মাকে।

গুঞ্জনের বাবা বললেন,

— ” শুধুমাত্র এইজন্য এতোটা নিচু কাজ করতে তোদের বাধলো না তাইনা? ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে যে তোরা এতোটা জঘন্য কাজ করেছিস। তোদের জন্য নিজের মেয়েটাকে কতো আঘাত করেছি আমি।”

মেঘলা কান্নামিশ্রিত গলায় বলল,

— ” আজ থেকে ভুলে যাবো যে আমার কোনো বাবা মা ছিলো।”

বলে মেঘলা বাইরে চলে গেলো রেহানও ওর পেছন পেছন গেলো। আবির প্রথমেই রাগ করে বেড়িয়ে গেছে। গুঞ্জনের কাকা কাকী ওর বাবা- মা গুঞ্জনের কাছে ক্ষমাও চাইলো। ওনাদের মুখে অনুতপ্ততার ছাপ স্পষ্ট ছিলো। কিন্তু গুঞ্জন বা ওর বাবা কেউ ওদের সাথে কোনো কথা বলেনি। গুঞ্জনের বাবা মা গুঞ্জনের কাছে এসে কথা বলতে চাইলে গুঞ্জন স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আমাকে একটু গাড়ি অবধি দিয়ে আসুন প্লিজ।”

স্পন্দন একবার গুঞ্জনের বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে তারপর গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” গুঞ্জন ওনাদের..”

গুঞ্জন চোখ বন্ধ করে বলল,

— ” প্লিজ।”

স্পন্দন গুঞ্জনকে সোজা কোলে তুলে নিয়ে বাইরের দিকে হাটা দিলো। ওনারাও কিছুক্ষণ অসহায় দৃষ্টিতে গুঞ্জনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বাইরের দিকে পা বাড়ালো।

#চলবে…

( #অনিয়ান এর অনুগল্প সন্ধ্যার পর পাবেন। আর এই গল্পের আরেকটা পার্ট রাতে যথাসময়ে পেয়ে যাবেন। একটু আগেও পেতে পারেন। ধন্যবাদ। ❤)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here