তুমি কবে আমার হবে পর্ব ৭+৮

#তুমি_কবে_আমার_হবে

#পর্ব_৭

লেখিকা #sabihatul_sabha

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে শাশুড়ী আম্মার কাছে গেলাম।আম্মার সাথে একটু কথা বলে রুমে চলে আসলাম।

স্যার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেছেন। অনেক বার বলেছি বাসায় আসার জন্য, ‘অন্য একদিন আসবে বলে চলে গেছেন।

রুমে এসে বেলকনির দিকে যাওয়ার সময় শুনতে পাই, অভি কাউকে বলছেন।

অভি:দুস্ত এখন আমি কি করবো,রুহির বাসা থেকে বিয়ের চাপ দিচ্ছে রুহি কে। রুহি বলতেছে যত তারাতারি সম্ভব ওদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে।তুই তো জানিসই আমার বেপারে সবি,এখন আমি কি করবো।

~দেখ অভি তুই এখন বিবাহিত তোর স্ত্রী আছে।ও তোর প্রাক্তন প্রেমিকা ছিলো। কিন্তু তোর এখন বর্তমানে বউ আছে।এই সব কিছু ভুলে ভাবির সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা কর।

অভি: দেখ ক্ষনিকের ভালোলাগার জন্য আমি আমার এ-তো দিনের ভালোবাসা কে ভুলতে পারবো না।

~ আচ্ছা তুই সব কথা ছার,আন্টির কথা তো একবার ভাব।
অভি: মা’কে আমি বুঝিয়ে নিতে পারবো।

~ তাহলে তোর যেটা ভালো মনে হয় কর।

আমি ছাঁদে দাড়িয়ে আছি,’আচ্ছা আমার কি ওনার জীবন থেকে চলে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু বেহায়া মনকে তো বুঝাতে পারি না। উনি আমার প্রথম ভালোলাগা, প্রথম ভালোবাসা।চাইলেও উনার কাছ থেকে দূরে যেতে পারি না।কিন্তু ভালোবাসা তো এমন না, ভালোবাসা মানে প্রিয় মানুষটির সুখেই নিজে সুখী হওয়া।

রুমে চলে আসলাম,’উনি সোফায় বসে অফিসের কাজ করছেন।এই জে শুনছেন আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।’

উনি আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন, কিছু সময় পর বললেন বলো?

আসলে, ‘আমি আর কয়দিন আছি এই বাড়িতে।’ অনেকটা সাহস করেই কথাটা বলে দিলাম।

উনি কিছু সময় চুপ করে থেকে আবার নিজের কাজে মন দিলেন।

~এতো ভাব কেনো এই লোকের, ‘কি হলো কিছু বলছেন না কেনো।

আমি তোমার সাথে এখন এইসব বিষয় কথা বলতে চাচ্ছি না।উনার সহজ উওর।

কিন্তু আমি চাচ্ছি,কাঠ কাঠ কন্ঠে বলে উঠলাম,আপনি আমাকে বলেছেন তিন মাস পর আমাকে ডিভোর্স দিবেন।আজ দুই মাস বিশ দিন চলছে।আমি কাল সকালেই আমাদের বাড়িতে চলে যাবো, দশ দিন পর ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিবেন।বলে একমুহূর্তো ওখানে দাড়ালাম না।রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।

রুদ্র এখনো অবাক চোখে সামনে তাকিয়ে আছে,এটা কি সেই নূর যাকে এতো দিন ও দেখেছে। না একদম না নূর তো এতো শক্ত কন্ঠে কখনো কথা বলে না। আর কালকে চলে যাবে!ও চলে যাবে শুনে আমার এতো খারাপ লাগছে কেনো? আমি অনেক বার লুকিয়ে লুকিয়ে ওকে দেখেছি, সামনা সামনি কখনো ওর দিকে তাকাইনি ও ঘুমানোর পর ওকে দেখতাম।ও যখন চা দিতো তখন খেতে ইচ্ছে করতো, কিন্তু খেতাম না কারন মা দেখলে ভাববে আমি ওকে মেনে নিচ্ছি।মা ওকে ডিভোর্স দিতে দিবে না, রুহি কেউ মেনে নিবে না। তাই মা কে দেখিয়ে ওর সাথে বাজে ব্যবহার করতাম।আমি জানি মা ওকে খুব ভালোবাসে।তাই তো আজ মা নিজেই বলছে ওকে আমার জীবন থেকে চলে যেতে। আজ তো আমার খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু আমার খারাপ লাগছে কেনো।না আজ আর ঘুম হবে না। বেলকনিতে গিয়ে সিগারেট ধরালাম।

আবারো ছাদে চলে আসলাম,’এতো সময় জমানো কান্না গুলো যেনো এখন চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা হচ্ছে, বলতে ইচ্ছে করছে কেনো ভালোবাসেননি আমায়।আমাকে একটু ভালোবেসে আগলে রাখলে কি বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো আপনার।আমি যে আপনাকে খুব ভালোবাসি,হয়তো ভালোবাসি কথাটা আর কোনো দিন বলা হবে না।

দুই’জন দুই দিকে এক’জন রুমে আরেক জন ছাদে। দুই জনের মনেই শান্তি নেই।এক জন ভাবছে এটা মূহ আরেক জন ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েও পেলো না।

—–

আজ দুই দিন হবে নিজের বাড়িতে এসেছি,’মা’কে অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে এসেছি। মিম ও বলে দিয়েছে, ‘ভাবি শুধু মাত্র চার দিন থেকে চলে আসবা। তোমাকে ছারা পুরো বাড়িটাই নিস্তব্ধ হয়ে থাকে।

ওরা যখন জানবে আমার ওই বাড়ি যাওয়ার মেয়াদ শেষ। হয়তো খুব কষ্ট পাবে।

চলবে…
হাতের লেখা ভিশন কাঁচা, ভুলত্রুটি মার্জনীয়।#তুমি_কবে_আমার_হবে
#পর্ব_৮
লেখিকা #sabihatul_sabha

আজ সাফা খুব রেগে আছে,কিন্তু কেনো রেগে আছে বুঝতে পারছি না।

কি হয়েছে বলবি তো,আচ্ছা তোই এখানে একটু দারা আমি এখনি আসছি।

সাফা দাড়িয়ে আছে কলেজ গেটের সামনে,এমন সময় কোথায় থেকে একটা বোতল এসে সাফার উপরে পরলো,সাথে সাথে মাথা গরম হয়ে যায়।সাইডে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে দারিয়ে ফোনে কথা বলছে।আর এই ছেলেটাই জুসের বোতলটা ভুল করে সাফার উপরে ফেলে দিয়েছে। ভুল হোক আর যাই হোক সাফাতো রেগে গেছে। ছেলেটির সামনে গিয়ে ছেলেটির কলার ধরে চিৎকার করে বললো,”আপনার কি আমাকে ডাস্টবিন মনে হচ্ছে?আপনার সাহস কি করে হয় আমার উপর বোতল ফেলার।”

সবাই সাফা আর ছেলেটির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। কেউ বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।

ছেলেটি:আই কল ইউ লেটার।
বলে ছেলেটি কল কেটে ফোনটা পকেটে রেখে প্রথমে ওর কলারের দিকে তাকালো তারপর সাফার দিকে চোখ গরম করে।
ছেলেটি রেগে বললো, “আপনার হাত সরান।”
সাফা:সরাবো মানে?আগে আপনি সরি বলুন আপনি আপনার খাওয়া বোতলটা আমার উপর কীভাবে ফেলেছেন?হাউ ডেয়ার ইউ?
ছেলেটি:ওয়েল,মুভ ইউর হ্যান্ড।
সাফা কলার ছারার বদলে আরো জোরে কলার চেপে ধরলো।
সাফা:ছারবো না। আগে সরি বলুন।
ছেলেটিঃছারবে না?
সাফা:ছারার প্রশ্নই উঠে না।আগে সরি বলুন।
ছেলেটি রেগে এক ঝটকায় কলার থেকে সাফার হাত সরিয়ে নিলো।

ছেলেটিও চিৎকার করে বললো,”তোমার সাহস কী করে হয় আমার কলার দরার।
সাফা আরো দ্বিগুণ চিৎকার করে বললো,”আপনার সাহস কী করে হয় আমার উপর বোতল ফেলার।
এদের চিল্লাচিল্লিতে আশে পাশে লোক জরো হয়ে যায়।আমি ভেতরে ডুকতে গিয়ে শুনতে পাই।
ছেলেটি :স্টুপিট গার্ল।এটা ডাস্টবিনে ফেলতে গিয়ে ভুল করে তোমার উপর পরে গেছে।

সাফা:আমাকে কী দেখতে ডাস্টবিনের মতো মনে হয়।

ছেলেটি :সাফার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে,”তোমার থেকে তো ডাস্টবিন দেখতে অনেক সুন্দর। ”

সাফা:কিই?আপনার সাহস কী করে হয় আমাকে ডাস্টবিনের সাথে কম্পেয়ার করার।

সাফা রেগে আবার ছেলেটির কলার ধরতে যায়।

~সাফা এইসব কি করছিস?
সাফা:তুই জানিস না এই ছেলে আমার সাথে কি করছে।উনার খাওয়া জুসের বোতল আমার উপর ফেলছে,সরি ও বলে নাই,উল্টো আমাকে বলতাছে আমি নাকি ডাস্টবিন, আজ তো আমি একে মেরেই ফেলবো।
ছেলেটি :তুমি ডাস্টবিনের কাছে ছিলে কেনো? ফল্ট তোমার আমার না।সো সরি বলার প্রশ্নই উঠে না।সরি তো বলবে এখন তুমি।তোমার সাহস কি করে হয় আমার কলার ধরার।তুমি যানো আমি কে?
সাফা:তুই কোন দেশের মন্ত্রীরে যে তকে চিনবো।
~সাফা একদম চুপ, আরেকটাও কথা বলবি না। চল আমার সাথে।জুর করে ওকে নিয়ে আসলাম, রাগে চোখ গরম করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ও।
~দেখ তোর জন্য চকলেট নিয়ে এসেছি।
সাফা:তুই খা তোর চকলেট,বলে গাল ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে।
~ওকে তাহলে আমি খেয়ে ফেলি।
সাফা:এই একদম না,বলেই জোর করে চকলেটটা নিয়ে গেলো।খাবো না বলছি বলে আর হাদবি না।
~আমি তো যানি,চকলেট পাগলি আর যাই হোক চকলেট মিস করবে না।আচ্ছা চল বাসায় যাওয়া যাক।
আজকে মেঘা মেঘ আসেনি।

——

আজ দুই দিন হলো নূর বাসায় নেই।এর মধ্যে বাসার রং বদলে গেছে। কেমন যেনো চুপ হয়ে গেছে সবাই।দরকার না পরলে কেউ কারো সাথে কথাও বলছে না।রাবেয়া বেগমের শরীর ও ভালো না। নূরের সাথে প্রতি রাতে কথা বলেন।
অভি রুমের এ পাশ থেকে ও পাশে যাচ্ছে, আবার ও পাশ থেকে এ পাশে।মোবাইল হাতে নিয়ে ভাবছে কল দিবে কি না।আজ দু দিন, একবারও নূর কে ফোন দেয়নি, মন বলছে দে মস্তিষ্ক বলছে তুই কেনো দিবি ও তো একবারও ফোন দেয়নি,কি করবে বুঝতেছে না।মেয়েটা আসলে যাদু যানে,এই যে সকাল বেলা ওর দেওয়া চা টাকে খুব মিস করছে,নূরের ঘুমন্ত মুখটা দেখার লোভ হচ্ছে। কি অদ্ভুত দুই দিনে আমার অবস্থা নাজেহাল হয়ে গেছে। সারাক্ষণ নূরের ভুত মাথায় বর করেছে।কিন্তু না তা কাওকে বুঝানো যাবে না, হয়তো কয়েক দিন সাথে ছিলো তাই এমন হচ্ছে।
লাস্ট মনের কাছে হার মেনে গেলো,মোবাইল পাশে রেখে শুয়ে পরলো।

তোর কি হয়েছে মা বললো তুই নাকি একদম চুপচাপ হয়ে গেছিস।প্রয়োজন না পরলে নাকি কারু সাথে কথাও বলিস না।ঠিক মতো খাবার খাস না, সারাদিন কি নিয়ে এতো টেনশনে করিস,রুম থেকে-ও বের হস না।

আপুর কন্ঠ শুনে সামনে তাকালাম।

আরে আপুনি কখন আসলা তুমি?

একটু আগে আসলাম, তুই কেমন শুকিয়ে গেছিস।চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে তোর।

~আরেহ আপু এইসব বাদ দাও,অনেক দিন পর তোমাকে দেখলাম, অনেক গল্প করবো আজ কে বসো তো।

চলবে….
লেখার হাত ভিশন কাঁচা, ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here