তৃণশয্যা পর্ব ৩+৪

#তৃণশয্যা
#নিয়াজ_মুকিত
#৩য়_পর্ব

মধ্যে রাতে আদনানদের বাড়িতে হানা দিয়ে একদল ডাকাত।দলনেতার কথা অনুযায়ী তিনজন ডাকাত যথাক্রমে রিমির মা,রিমি ও চারুর গলায় চুরি ধরে আছে।এখানে অবাক করার বিষয় হচ্ছে বাড়িতে এত কিছু ঘটে যাচ্ছে অথচ আদনা‌নের রুমের দরজা এখনো বন্ধ।দলনেতার নির্দেশে একজন গিয়ে আদনানের দরজায় থাবা মারতে শুরু করে।প্রায় ২মিনিটের মতো থাবা মারার পর হঠাৎ খুলে যায় দরজা।দরজার ওপাশে ভেসে ওঠে সদ্য ঘুম থেকে ওঠা আদনানের মুখখানা।সে চোখ ডলতে ডলতে বলে,

—‘ কে রে?এত রাতে কেউ এভাবে ডাকা-ডাকি করে নাকি? ‘

তার এই কথার জবাবে একজন ডাকাত বলে ওঠে,

—‘ আমরা ডাকাত।আজ তোমাদের বাড়ি ডাকাতি করবো! ‘

আদনান তাদের চমকে দিয়ে উত্তর দেয়,

—‘ ডাকাতি করবে তা করো,আমার দরজায় থাবা মারছো কেন?তোমরা যা করার করো কিন্তু আমার ঘুমের ডিষ্টার্ব দিও না। ‘
এই বলে সে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।তার এরকম কথাবাত্রায় ডাকাত দল সহ উপস্থিত সবাই বোকা হয়ে যায়।এবার ডাকাত দলনেতার কথা অনুযায়ী অন্যান্য লোকেরা এক এক করে চলে যায় সব কিছু আনতে।এদিকে সবারই গলায় ছুড়ি ধরা।এই অবস্থায় কেটে যায় ১০মিনিট।হঠাৎ তাদের ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে কয়েকজন ছেলে।তারা সংখ্যায় ২০।ডাকাত দলনেতা তাদের দেখে চমকে যায়।তাদের হাতে পিস্তল রয়েছে।সাথে সাথে খুলে যায় আদনানের ঘরের দরজা।ধরে ফেলা হয় ডাকাতদের।

৬.

বাসায় উপস্থিত সব আত্মীয়-স্বজনরা আদনানকে নিয়ে মেতে আছে যা মোটেও সহ্য হচ্ছে না চারুর।কালকে সংবন্ধ একটা ডাকাত দলকে ধরিয়ে দেওয়ার পর আদনানের কথা মতোই সবাইকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।সবাই আদনানের প্রসংশা করছে শুধুমাত্র চারু আর রিমি বাদে।এবার আদনান সবার মাঝ থেকে উঠে এসে রিমি আর চারুর সামনে দাঁড়ায়।রিমি তাকে দেখে মুখটা সড়িয়ে নেয়।
আদনান এবার নিজের কনুইটা ডলতে ডলতে বলে,

—‘ বুঝলি!তোরা দুইটা হইলে গবেট। ‘

গবেট কথাটা শুনে রিমি আর চারু দুজনেই প্রচন্ড রেগে যায়।তাদের রাগ দেখে আদনান আবার বলতে শুরু করে,

—‘ সারাজীবন গবেট থাকলে হবে না,আমার মতো বুদ্ধিমান হতে শেখো।দেখ আমি কিভাবে কালকে ডাকাতদলকে ধরিয়ে দিলাম?ওহ শিট,তোরা দেখবি কি করে?তোরা তো আস্ত কানা। ‘

আদনান যে তাদের অপমান করছে সেটা ঢের বুঝতে পারছে দুজনেই কি‍ন্তু কিছু বলতে পারছে না শুধু ভিতরে ভিতরে রেগে যাচ্ছে।এমন সময় আদনানের পাশে এসে দাঁড়ায় তার ফুফাতো বোন।শুরু করে দেয় ন্যাকামি।এই মেয়েটাকে উষালঘ্ন থেকে দেখতে পারেনা রিমি।শুধু ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করে।মেয়েটা আদনানের কাধে হাত রাখে।আদনানও তার কাধে হাত রাখে।এবার মেয়েটা রিমি আর চারুর দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ এদের দাঁড় করে রেখেছো কেন আদু? ‘
মেয়েটার এমন ন্যাকামি দেখে চারুর ইচ্ছা করতেছে কষে দুইটা থাপ্পর মারতে কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে সেই ইচ্ছাটাকে দমন করে চারু।আদনান এবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলে,

—‘ কাদের কথা বলছো,এই গবেট গুলোর?আরে এই গুলাতো আস্ত একটা অবুদ্ধিমানের ঢিপি।তাই তাদের কিছু টিপস দিচ্ছি বুদ্ধিমান হওয়ার।আর তুমিতো জানো আমি কতো বুদ্ধিমান ‘

নিজ সম্পর্কের আদনানের এত অহংকার সহ্য করতে পারেনা চারু আর রিমি দুজনেই।তারা দুজনে আর এক মুহুর্ত দেরি না করে সেখান থেকে চলে যায়।দুজনেই রিমির রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়।রেগে গিয়ে বসে পড়ে বিছানায়।দুজন দুদিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকে।দুজনের মনেই আদনানের প্রতি সীমাহিন রাগ বিরাজ করছে।দুজনে দুদিকে মুখ করে প্রায় ৪মিনিট বসে থাকার পর রিমি প্রথমে চারুর দিকে তাকায়।চারুও তাকায় রিমির দিকে।দুজনের মধ্যে চোখাচোখি হয়ে যায়।

—‘ চারু তোকে একটা গোপন কথা বলতে চাই ‘-রিমি বললো।চারু খানিকটা আগ্রহ নিয়ে বলে,’ কি গোপন কথা? ‘

রিমি তার মাথাটা নিচু করে ফেলে।তারপর গলার আওয়াজ টা কিছুটা নিচু করে এক নিশ্বাসে বলতে শুরু করে,

—‘ তোকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে একটা ছেলেকে দেখানোর জন্য।ছেলেটা বাবার বন্ধুর ছেলে।আমেরিকাতে থাকে।তোর সাথে তার বিয়ের কথা চলছে।এতে তোর বাবা মাও রাজি আছে।আজকে তারা আসতেছে।আজকে তোকে ছেলেটা দেখতে আসবে।খুব তারাতারি তোর বিয়ে দিবে তোর বাবা মা।আমাকে বলতে নিশেধ করলেও আমি তোকে বলে দিলাম। ‘কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে ফেলে রিমি।

চারু অবাক হয়ে রিমির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।রিমি মজা করছে নাকি সত্ত্যি বলছে বোঝার চেষ্টা করছে।চারু আর ভাবতে পারছে না।এত তারাতারি তাকে বিয়ে দেয়ার চিন্তা করেছে তার বাবা এটা মানতে পারছে না।চারু দুই হাত দিয়ে নিজের মাথাটা চিপে ধরে।এই মুহুর্তে তার মাথা গরম করলে চলবে না।শান্ত মাথায় ভাবতে হবে কি করে বিয়েটা ভাঙ্গা যায়।এই নিয়ে সে রিমির সাথে কথা বলতে শুরু করে।তারপর দুজনে মিলে ঝাক্কাস একটা প্লান করে ফেলে।প্লানটা সফল হলে বিয়ে ভাঙ্গবে নিশ্চিত।দুইজনের মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়ে।

৭.

‘ রিমি চারুকে একটু সাজিয়ে নিয়ে বাহিরে বের হয়ে আয়তো! ‘

দরজার ওপাশ থেকে কথাটা বলে রিমির মা।রিমি এই কথার জবাবে বলে,’ যাচ্ছি মা! ‘
তারপর রিমিকে চারুকে বেশি ভালো করে না সাজিয়ে বাহিরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয়।চারু অবাক হয়ে দেখছে চারুর বাবা-মা ও সেখানে উপস্থিত রয়েছে।বাসার সবাই সেখানে উপস্থিত শুধুমাত্র আদনান ছাড়া।কথা শুরু আগেই রিমি বলে ওঠে,

—‘ আপনারা এখানে কথা বলুন,তারা আলাদা ভাবে কথা বলুক। ‘

রিমির এই কথাটা শুনে চারু অবাক হয়ে রিমির দিকে তাকায়।এমন একটা ভাব নেয় যেন সে কিছুই জানেনা।রিমির কথায় সায় দেয় উপস্থিত সবাই।তারপর রিমি ছেলেটাকে আর চারুকে নিয়ে নিজের রুমে যায়।ছেলেটাকে বসিয়ে রাখে বিছানায়।তার পাশে বসে চারু।আর রিমি যায় দরজার আড়ালে।

ছেলেটা যে খানিকটা ভ্যাবলাকান্ত সেটা বুঝতে পেরেছে রিমি পর চারু উভয়ই।একপর্যায়ে ছেলেটা চারুর কাছে এক গ্লাস পানি চায়।চারু উঠে যায় বেলকনির দিকে।এই মুহুর্তে একটা বাক্স হাতে ভিতরে প্রবেশ করে রিমি।ছেলেটা তাকে দেখে মাথা নিচু করে নেয়।রিমি বাক্সটা নিয়ে গিয়ে রাখে ছেলেটার সামনে।ছেলেটা আস্তে করে রিমিকে জিজ্ঞাসা করে,

—‘ বাক্সটাতে কি? ‘

রিমি বাক্সটা খুলে দিয়ে বলে,

—‘ আপুর পোষা সাপ ‘
এই বলে রিমি সেখান থেকে চলে যায়।যাওয়ার সময় দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে যায়।এদিকে সাপটা আস্তে আস্তে মাথা তুলে তাকাতে থাকে।কালো রংয়ের এই সাপটা দেখে ভিষন ভয় পেয়ে যায় ছেলেটা।বার বার পকেট থেকে টিস্যু বের করে কপালের ঘাম মুছতে থাকে।সাপটা আস্তে আস্তে ছেলেটার দিকে এগোতে থাকে।ছেলেটা দরজার দিকে তাকায়।দরজা বন্ধ করা।পালিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ ব্যালকনিটা।দৌড়ে সেদিকে যায় ছেলেটা।লাফ দিয়ে ব্যালকনির পাশের গাছটাতে উঠে পড়ে।এদিকে সাপটাও যেন তার পিছু ছাড়ছে না।ছেলেটা গাছ দিয়ে নামতে শুরু করে।নামতে নামতে একপর্যায়ে…
#তৃণশয্যা
#নিয়াজ_মুকিত
#৪র্থ_পর্ব{পচা কুমড়ো অপারেশন}

সাপের ভয়ে গাছ দিয়ে পালাতে ধরে গাছে ঝুলে আছে চারুকে দেখতে আসা নিষ্পাপ ছেলেটা।না পারছে নামতে,না পারছে উঠতে।এদিকে বেলকনি থেকে সাপটা তাকিয়ে আছে তার দিকে।মোবাইল বের করে ভিডিও করছে আর হাসাহাসি করছে চারু আর রিমি।একপর্যায়ে ধপাস করে পড়ে যায় ছেলেটা।দৌড়ে বেলকনিতে যায় রিমি আর চারু।ছেলেটা পড়ে গিয়ে যে পায়ে ব্যাথা পেয়েছে সেদিকে ভ্রু-ক্ষেপ করছে না।সে পা খোঁড়াতে খোঁড়াতে দৌড়াচ্ছে।রিমি আস্তে করে সাপটা তুলে নিয়ে গিয়ে বাক্সতে ভরে রাখে।এবার চারু গিয়ে বসে পড়ে বিছানার উপর।রিমি খানিকটা দৌড়াতে দৌড়াতে যায় নিচে বসার ঘরে।গিয়ে হাপানোর অভিনয় শুরু করে সে।তাকে এভাবে হাঁপাতে দেখে তার মা জিজ্ঞাসা করে,

—‘ কিরে,এভাবে হাপাচ্ছিস কেন? ‘

রিমি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,

—‘ মা,দুলাভাইয়া বেলকনি দিয়ে পালিয়ে গেছে।আমরা তাকে এত আটকানোর চেষ্টা করেও পারলাম না।খালি দৌড়াচ্ছে আর সাপ সাপ বলে চেচাচ্ছে।অথচ ঘরে সাপ কেন,সাপের বংশও নেই। ‘

রিমি এই কথা শুনে ছেলেটার বাবা-মা নিজেদের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে।তারপর ছেলেটার বাবা মাথা নিচু করে বলে,
—‘ আমরা সত্ত্যিই লজ্জিত।ছেলেটা যে এরকম কিছু করবে ভাবিনি।আজ আমরা উঠছি। ‘
এই বলে তারা কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে চলে যায়।রিমি মা আর চারুর বাবা-মা পরস্পরের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে।একপর্যায়ে চারুর মা বলে ওঠে,

—‘ চলোতো একটু উপরে যাই দেখি কি হয়েছে? ‘

তার এই কথায় সবাই উঠে দাঁড়ায় উপরে যাওয়ার জন্য।রিমি আগাচ্ছে আর ভাবছে এই মুহুর্তে যদি চারু খুশিতে নাচানাচি করে আর খালা-খালু যদি তা দেখে তাহলে শেষ।রিমি এসব ভাবছে আর এগোচ্ছে।

হঠাৎ চারু সিড়িতে শব্দ শুনতে পায়।তারাতারি দরজায় গিয়ে দেখে দলবেধে উপরে উঠছে সবাই।চারু কি করবে ভেবে পায় না?হুট করে তার মাথায় একটা বুদ্ধির আগমন ঘটে।চারু নিজের জামাটা খানিকটা এলোমেলো করে ফেলে।তারপর মুখ থেকে থুতু বের করে চোখের নিচে লাগিয়ে দেয়।তারপর শুরু করে দেয় কান্না করার একটিং..

সবাই রুমে প্রবেশ করে।সবার শেষে চোখ বন্ধ করে রুমে প্রবেশ করে রিমি।কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে থাকার পর চোখ খুলে রিমি।চোখ খুলে এক অবাস্তব দৃশ্য দেখতে পায় যা সে আশা করেনি।চারু কাঁদছে,আর তার পাশে বসে তাকে সান্তনা দিচ্ছে তার মা।রিমি অবাক হয়ে চারুর দিকে তাকালে চারু রিমিকে উদ্দেশ্য করে চোখ মারে।চকিতে রিমি বুঝে নেয় এটা কি?

৮.
ছেলের বাসা থেকে ফোন দিয়েছে।ফোন রিসিভ করে লাউড স্পিকার দেয় চারুর বাবা।রিমি আর চারু দুজনেই ভরকে যায়।ছেলেটা যদি সব বলে দেয় তাহলে দুজনেই শেষ।কিন্তু সে রকম কিছুই ঘটলো না।উল্টো তারা বলে,
—‘ আবার নাকি কালকে আসবে।এসে সব কিছু পাকা করে যাবে। ‘

এই কথাটা শুনে চারুর বাবা-মায়ের মনে সস্তি আসলেও অসস্তি দেখা দেয় চারুর মনে।তার মনের সঙ্গে রিমির মনেও দেখা দেয় একই রোগ।তৎক্ষণাত সেখান থেকে চলে যায় দুজনেই।রিমি তার রুমে গিয়ে বিছানায় বসে পড়ে।চারু ভিতরে প্রবেশ করে খানিকটা জোরেই লাগিয়ে দেয় দরজাটা।তারপর গিয়ে বসে পড়ে রিমির পাশে।দুজনের এর মধ্যে চোখা-চোখি হলে দুজনেই হেসে ফেলে।তারপর পুনরায় গম্ভীর হয়ে চারু বলে,

—‘ একবার ভাগাইলাম আবার নাকি আসবে।এবার কি করবো বুঝতে পারছি না?তোর মাথায় কি কোনো বুদ্ধি আসছে? ‘
রিমি নিরবে মাথা নাড়িয়ে বলে,’নাহ’
এই মুহুর্তে দরজায় ঠক ঠক শব্দ হয়।চারু উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে আদনান।
আদনান চারুকে সড়িয়ে দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।তারপর ধপ করে শুয়ে পড়ে বিছানাটাতে।রিমি অবাক হয়ে আদনানকে দেখছে।আদনান এবার রিমি আর চারু দুজনকেই উদ্দেশ্য করে বলে,

—‘ ছেলেটা নাকি পালিয়ে গেছে? ‘

আদনানের এই কথায় রিমি আর দুজনেই মাথা নাড়ায়।আদনান এবার শোয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
—‘ আমার মনে হচ্ছে তোরা কিছু করেছিস।নাহলে একটা ছেলে এমনি পালাবে? ‘
চারু মুখটা খানিকটা মলিন করে বলে,
—‘ আমরা কি করবো বলো?আমার ভাগ্যই এরকম। ‘

আদনান এবার উঠে চারুর সামনে দাঁড়ায়।তারপর খানিকটা শুষ্ক গলায় বলে,
—‘ মন খারাপ করিস না,কালকে তো আবার আসবে কালকে আমিও থাকবো ছেলেটার সাথে।দেখি কি করে পালায়? ‘

এই বলে আদনান ডেবিল মার্কা একটা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।রিমি আর চারু দুজন দুজনের দিকে তাকায়।তারা কি ইচ্ছা করেই এই বিপদটাকে ডাকিয়ে আনলো নাকি?আদনান যদি ছেলেটার সাথে থাকে তাহলেতো তাদের প্লান খাটবে না।আবার নতুন উদ্যমে ভাবতে থাকে চারু আর রিমি।সেদিনের মতো রাতে ডিনার করে শুয়ে পড়ে বাসার সবাই।চারু আর রিমি দুজনেই শুয়ে পড়ে।রিমির চোখে ঘুম আসলেও চারুর চোখে আসেনা ঘুম।অনেকক্ষন শুয়ে থাকার পরেও যখন ঘুম আসতেছেনা তখন চারু সিদ্ধান্ত নেয় ছাদে যাবে।আস্তে করে উঠে ছাদের পথে রওনা হয় চারু।

ছাদে লাইট থাকার সুবাদে এই অন্ধকার রাতে আলোকিত ছাদটা।তবে একদিকে কিছুটা অন্ধকার রয়েছে।চারু ছাদের চারদিকে পায়চারি করতে থাকে।পায়চারী করার সময় চারু দেখতে পায় দোলনাতে ঘুমিয়ে আছে আদনান।বুকের উপরে মোবাইলটা পড়ে আছে।চারু আস্তে আস্তে আদনানের দিকে এগোতে থাকে।একপর্যায়ে চারু আদনানের সামনে গিয়ে তার মোবাইলটা নেওয়ার চেষ্টা করে।হালকা একটু নড়ে ওঠে আদনান।চারু মনে করে আদনান জেগে গেছে তাই ছাদ থেকে ভো দৌড় দিয়ে চলে যায় নিজের ঘরে।তারপর ঝটপট বিছানায় শুয়ে পড়ে।সাথে সাথে তার চোখে দেখা দেয় ঘুমরাজ।

৯.

সকালবেলা থেকেই বাড়ির সবাই ব্যাস্ত।এখনি ছেলেপক্ষ দেখতে এলো বলে।এদিকে চারুকে সাজানোর ভার পড়েছে রিমির উপরে।তাই চারুকে নিয়েই মেতে আছে রিমি।একপর্যায়ে ছেলেপক্ষ এসে পড়ে বাড়িতে।তাদেরকে ভিতরে নিয়ে আসে আদনান।চারুর বাবা আমজাদ সাহেব তাদের বসতে বলে।তারা বসতে বসতে বলে,আজকে বেশি দেরি করবে না।সব কিছু ঠিকঠাক করেই এখনি চলে যাবে।আদনান গিয়ে বসে পড়ে ছেলেটার পাশে।

কথাবলার একপর্যায়ে ছেলের বাবা বলে,
—‘ তো কালকে তো আপনার মেয়েকে ভালো করে দেখতেই পেলাম না।আজকেও কি দেখতে দিবেন না? ‘

আমজাদ সাহেব মুচকি হেসে বলে,
—‘ অবস্যই দেখবেন।আদনান যাওতো চারুকে নিয়ে আসতে বলো! ‘

এই আদেশ পেয়ে মুহুর্ত দেরি না করে সেখান থেকে উঠে পড়ে আদনান।রওনা দেয় রিমির রুম লক্ষ করে।সে রুমে প্রবেশ করে রিমিকে উদ্দেশ্য করে বলে,
—‘ চারুকে নিয়ে যেতে বলছে। ‘
রিমি আদনানের সাথে কোনো‌ কথা না বলে চারুকে নিয়ে নিচে আসে।নিচে এসে চারুকে বসিয়ে দেয় ছেলেটার পাশে।তারপাশে বসে রিমি।ছেলেটা যে লজ্জা পাচ্ছে তা বুঝতে কষ্ট হচ্ছেনা কারো।

সব কাজ শেষ হলে তারা সবাই উঠে দাঁড়ায়।এক এক করে বিদায় নিতে শুরু করে।চারু আর রিমি দৌড়ে ছাদে যায়।প্লান অনুযায়ী ছাদে সবকিছু রেডিই আছে।যখন বের হবে শুধু মাত্র কাজটা করা বাকি।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয় ছেলের বাবা-মা আর ছেলে।তারা বের হতেই তাদের মাথা লক্ষ্য করে পচা কুমড়ো ছুড়ে মারে রিমি আর চারু।তারপর টপ করে বসে পড়ে দুজনে।আস্তে আস্তে করে রওনা দেয় নিজেদের রুমে।

এদিকে পচা কুমড়ো মাথায় পড়ায় রেগে বোম হয়ে গেছে ছেলের বাবা-মা।তাদের বাসায় ডেকে এনে এভাবে অপমান করা হচ্ছে।গা দিয়ে দুর্গন্ধ ছুটছে সবার।এমনকি একটা কাকও এসে বসেছে ছেলের বাবার মাথায়….

চলবে..ইনশাআল্লাহ
{ভুলত্রুটি‌ ক্ষমা করবেন।আল্লাহ হাফেজ।}
নামাজ কায়েম করুন।
চলবে,ইনশাআল্লাহ।

{{সবাইকে রমজান মোবারক।কেমন হয়েছে জানাবেন।}}
আল্লাহ হাফেজ।নামাজ কায়েম করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here