তোর আসক্ত পর্ব -০১

#তোর আসক্ত❤
#প্রথম পর্ব
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
রুপসা ঘরে আসতেই আয়ান ঘরের দরজা টা ধুম করে লাগিয়ে দেয়।

রুপসা একটা শুকনো ঢোক গিলে পিছিয়ে যেতে নিলেই আয়ান রুপসার হাত টা চেঁপে ধরে। রুপসা এবার আরও ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়ান রুপসাকে একটানে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
রুপসাকে অবাক করে দিয়ে আয়ান নিজের ঠোঁট দিয়ে রুপসার ঠোঁট জোড়া চেঁপে ধরে।

এবার তো বেচারি কেঁদেই দিলো। কখনো ভাবতেও পারেনি এমন একটা পরিস্থিতি তে পড়তে হবে।
অনেক ধাক্কাধাক্কি করেও আয়ানকে একচুলও সরাতে পারেনি। প্রায় ২ মিনিট পর আয়ান নিজেই রুপসাকে ছেড়ে দেয়।
রুপসা এবার হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ।

আয়ান – এবার বলো বিয়ে করবে আমায়?

এইসব কিছু যেনো রুপসার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে!
কিছুই বুঝতে পারছে না সে।

আয়ান – কী হলো বলো… এখন নিশ্চয় আমার ক্যারেক্টার সম্পর্কে জেনে গেছো। যে ছেলে পাত্রী দেখতে এসেই তাকে গভীর চুমু দিতে পারে তার ক্যারেক্টার যে কতোটা ভালো হবে তুমি আন্দাজ করতে পারছো তো? (বাঁকা হেসে)

রুপসা – ম মানে?

আয়ান – দেখো মিস…. কী যেনো নাম? যাইহোক, দেখো আমি তোমাকে ভালো করে বুঝিয়ে কিছু কথা বলছি আশা করি তুমি বুঝবে।
এইসব চুমুটুমু আমার প্রতিদিনের রুটিন বুঝছো! তুমি নিশ্চয় চাও না এমন কাউকে তোমার স্বামী বানাতে যার চরিত্র ঠিক নেই।
তাই তোমার ভালোর জন্যই বলছি এখনো সময় আছে সবাই কে সবটা বলে দাও ওকে। এতে তোমারি ভালো হবে।

রুপসার মাথা টা কেমন ঝিমঝিম করছে। এইটুকু সময়ের ব্যবধানে এতো কিছু হয়ে গেলো কি করে?

কিছুক্ষন আগের ঘটনা…..

(রুপসাকে আজ পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। এতে রুপসার কোনো অভিযোগ বা অমত কিছুই নেই। কারন রুপসা কাউকে ভালোবাসে নি। সে মনে করে বিয়ের আগে প্রেম করাটা ঠিক না। এমনকি সে পছন্দ ও করে না এইসব। তার ইচ্ছে বিয়ের পর নিজের বরের সাথে জমিয়ে প্রেম করবে। সবে মাত্র ফাইনাল ইয়ার এ উঠেছে। যদিও বা রুপসার এখন বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলো না। লেখাপড়া শেষ করতে চেয়েছিলো।
কিন্তু তার বাবা তাকে বুঝিয়েছে ছেলের মা বাবা অনেক ভালো তারা বলেছে বিয়ের পরও রুপসাকে পড়ালেখা করাবে। তাছাড়া ছেলেও দেখতে অনেক সুন্দর। রুপসার বাবার অনেক পছন্দ হয়েছে ছেলের ফেমেলি। তাই রুপসাও আর অমত করেনি।

ছেলেপক্ষের লোক আসলে রুপসাকে উনাদের সামনে নিয়ে যায়। ছেলের বাবা মা আরও ২ জন বয়স্ক লোক রুপসাকে দেখে অনেক পছন্দ করেছে।
রুপসা একপলক ছেলের দিকে তাকায়।
বাবাহহ…. ছেলে তো পুরাই ক্রাশ। ব্লু কালার এর একটা শার্ট হাতা ফোল্ড করা, বুকের ২ টা বোতাম খুলা যার জন্য বুকের উপর পশম গুলো মন কেড়ে নেয়ার মতো!
গায়ের রং ও ফর্সা, চুল গুলো সিল্কি! আহা এই না হলে আমার বর… মনে মনে ভাবছে রুপসা।

ছেলের পরিবারের লোকজন ছেলেকে জিগ্যেস করে মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিনা। ছেলে কোনো উত্তর না দিয়ে বলে উঠে….

— আমি কি উনার সাথে আলাদা ভাবে কিছু কথা বলতে পারি?

রুপসার বাবা – হ্যা যাও বাবা। রুপসা আয়ানকে নিয়ে যা তো।

রুপসা – বাহ নাম বুঝি আয়ান! কিন্তু আমার সাথে আবার কি কথা বলবে? ইশশশ কি লজ্জা লাগছে যে!)

রুপসা আয়ানকে নিয়ে নিজের রুমে যেতেই আয়ান দরজা বন্ধ করে দেয়।

আয়ান – হ্যালো মিস…. কোথায় হারিয়ে গেলা?

আয়ানের ডাকে রুপসা বাস্তবে ফেরে। এতো খন ভাবনায় ডুবে ছিলো সে।

রুপসা – আচ্ছা আপনি তখন বলেননি কেনো আপনি বিয়ে করবেন না?

আয়ান – আমি বলতেই পারতাম কিন্তু আমি চাইনা তোমার বাবা মা আমাকে নিয়ে নেগেটিভ কিছু ভাবুক। তাই আমার কাজটা তুমিই করবে।

রুপসা – (হুহহ ঢং কতো! নিজের কাজ আমি করে দিবো! উনি বললে আমার বাবা মা উনাকে নিয়ে নেগেটিভ চিন্তা করবে। আর আমি বললে যেনো উনার বাবা মা আমাকে নিয়ে পজেটিভ চিন্তা করবে!… মনে মনে)

আয়ান – আরেহ তুমি বার বার কী ভাবনায় হারিয়ে যাও? এখন বলো আমাকে বিয়ে করবে?

রুপসা – (কিছু একটা ভেবে) হ্যা করবো।

আয়ান – হোয়াট….? তুমি রাজি?

রুপসা – হুম আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি।

আয়ান – আর ইউ ক্রেজি?

রুপসা – সেটা আপনার না জানলেও চলবে বুঝলেন। এবার চলুন সবাই কে গিয়ে জানাই।

রুপসা চলে যেতে নিলেই আয়ান রুপসার হাত টেনে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে….

আয়ান – ইউ স্টুপিড গার্ল… কথা কানে যায় না নাকি! বললাম না সবাই কে গিয়ে বলবা বিয়ে করবে না। তার পরও বলছো তুমি রাজি!
বিয়ে করার খুব শখ না? (দাঁতে দাঁত চেপে)

রুপসা ভয়ে ভয়ে জবাব দেয়…

রুপসা – হ্যা শখই বটে… আপনাকে বিয়ে করবো মানে করবোই। আপনি না চাইলেও আমি জোর করে করবো।

আয়ান – হোয়াট….? (কিছুটা চেচিয়ে)

রুপসা আয়ানের ধমক শুনে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
আয়ান – ভালোই ভালোই বলছি তুমি সবাইকে গিয়ে বলবে তুমি রাজি নও।

রুপসা – প পারবো ন না….

আয়ান – কেনো পারবে না? তোমার ভালোর জন্যই বলছি বুঝছো আমার কাছে কোনো দিনও ভালো থাকতে পারবে না তুমি নেভার!

রুপসা আয়ানের কথার জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে আসে।
আয়ান ও পিছন পিছন আসে।

রুপসা নিচে আসতেই রুপসার বাবা মা রুপসা আর আয়ান কে বসিয়ে দেয়।

আয়ানের বাবা – কী মা তুমি রাজি তো?

রুপসা – (মাথা নিচু করে কিছু একটা ভেবে) হ্যা আংকেল আমি রাজি।

রুপসার কথা শুনে সবাই খুশি হয় শুধু আয়ান ছাড়া। আয়ানের চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে। হাত দু’টি মুষ্টিবদ্ধ করে রেগে রুপসার দিকে তাকিয়ে আছে।

আয়ানের বাবা – তাহলে আমরা সামনের সামনের সপ্তাহে বিয়ের ডেট ফাইনাল করি। আপনারা কী বলেন?

রুপসার বাবা – আমরাও রাজি। শুভকাজ যতো তারাতারি হয় ততোই ভালো।

সবার মতামতেই রুপসা আর আয়ানের বিয়েটা সামনের সপ্তাহে ঠিক হয়ে যায়। রুপসা আয়ানের দিকে তাকাতেই আয়ান রাগি চোখে রুপসার দিকে তাকায়।
বেচারি ভয়ে চোখ নামিয়ে নেয়।

আয়ানের পরিবার আর আয়ান সবাই বাড়ি ফিরে যায়।

রুপসা নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে ভাবছে ছেলেটার এমন বিহেভ করার কারন টা কী?
মেয়ে দেখতে এসেই এমন অসভ্যতামি করলো আবার বলছে এই সব নাকি তার প্রতিদিনকার রুটিন!
সত্যিই কি এমন টা? নাকি আমাকে বিয়ে করতে চাইছে না বলে এমন কান্ড করলো! কিন্তু আমাকে বিয়ে না করার কারনটাই বা কী?
তার কি কোনো ভালোবাসার মানুষ আছে? থাকলে তো বলতে পারতো তাই না। বললেই তো হতো। আমি তো চাইনা কারো ভালোবাসা ভাঙতে। সুন্দর করে বললেই হতো আমি না করে দিতাম। চেয়েছিলাম বিয়ের পর নিজের বরের সাথে প্রেম করবো। তা আর হলো না!
ধুরর কেনো যে জেদ করে রাজি হতে গেলাম! (মনে মনে)

রাতে…
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুপসা নিজের রুমে চলে যায়।
ঘুম আসছিলো না বলে বেলকনিতে গিয়ে কফি খাচ্ছিলো। হটাৎ মনে হলো বেলকনিতে টপকে কেউ উপরে আসছে। রুপসার রুমটা দোতলায় হওয়ায় গ্রিল বেয়ে আসাটা এতটাও কঠিন না। রুপসা ভাবে হয়তো তার মনের ভুল।
রুপসা ভালো করে তাকিয়ে দেখে না ঠিকই তো কেউ উপরে আসছে। মনে তো হচ্ছে আমার বেলকনিতেই আসছে। আমার দিকে দৃষ্টি স্থির করা।

ভয়ে রুপসার শরীর থেকে ঘাম ঝড়তে শুরু করেছে। একটা ঢোক গিয়ে দ্রুত সেখান থেকে নিজের রুমে চলে আসে। রুমে এসে বেলকনির দরজা টা লাগাতে যাবে তার আগেই কেউ দরজা টা হাত দিয়ে আটকে ধরে।
রুপসা অনেক চেষ্টা করেও লাগাতে পারছে না। কারন সেই ব্যাক্তিটা দরজা টা ধরে রেখেছে।
দেখেই বুঝা যাচ্ছে এটা কোনো ছেলে! রুপসা ভয়ে চিৎকার করতে নিলেই লোকটা রুমের ভিতরে এসে রুপসার মুখ চেঁপে ধরে।

রুপসা নিজেকে লোকটার কাছ থেকে ছাড়াতে চাইছে কিন্তু পেরে উঠছে না। ঘরে আলো নেই। বেলকনির লাইট এর কিছুটা আলো ঘরে এসে পরছে। এইটুকু আলোতে লোকটার মুখ চিনতে রুপসার বেশি দেরি হয়নি।
লোকটা আর কেউ না তারই হবু স্বামী আয়ান!

রুপসা নিজেকে ছাড়াতে মুচরামুচরি করেই যাচ্ছে। আর বার বার ইশারা করে মুখ দেখাচ্ছে। যার অর্থ হলো আয়ান যেনো মুখটা ছেড়ে দেয়।

আয়ান বুঝতে পেরে রুপসার মুখটা ছেড়ে দিতেই সে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। আর একটু হলেই যেনো দম টা বন্ধ হয়ে যেতো।
কিন্তু এতো রাতে উনি এখানে কেনো এলেন তাও চুপিচুপি আমার রুমে?
উনার কথার অবাধ্য হয়েছি বলে আমাকে মেরে ফেলতে আসেনি তো? ভাবতেই রুপসার গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে!

রুপসা আয়ানের কাছ থেকে বাঁচতে পালানোর চিন্তা করে।
যেই না সে দৌড় দিবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো আয়ান খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেলে।

আয়ান – পালাচ্ছো কেনো?

রুপসা – আ আপনি কেনো এ এসেছেন এখানে?

আয়ান – আমার হবু বউকে দেখতে আসলাম আরকি (বাঁকা হেসে)

রুপসা আয়ানের কথা শুনে অবাক চোখে আয়ানের দিকে তাকায়….

রুপসা – বউ….!

আয়ান – হ্যা। আমি তো বানাতে চাইছিলাম না তুমি নিজেই তো রাজি হলে। আর রাজি যখন হয়েছো শাস্তি ওত ভোগ করতে হবে তাইনা।
কারন আমার কথার অবাধ্য হওয়া আমি পছন্দ করি না। তোমাকে বারন করা স্বত্তেও তুমি বিয়ে করতে লাফিয়ে রাজি হয়ে গেছো।

রুপসা – আচ্ছা কী কারনে আমাকে বিয়ে করতে চান না বলবেন প্লিজ?
আমার দোষ টা কি? যদি বিয়ে করতে না চান তবে আপনার বাবা মাকে আসতে বললেন কেনো? উনাদের না করে দিলেই তো পারতেন তাইনা।

আয়ান – আমার কাজের জবাব আমি তোমাকে দিবো না ইডিয়ট। তোমাকে আমি বারন করেছিলাম কিনা বলো? তুমি যেনে শুনে একটা ক্যারেক্টারলস ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছো! এর শাস্তি তো তোমাকে ভোগ করতেই হবে ডিয়ার!
তবে ভেবো না আমি তোমাকে মারবো না, অন্য রকম শাস্তি দিবো বুঝলে! যা কল্পনা ও করতে পারবে না।
তুমি শুধু সহ্য করে নিবার জন্য প্রস্তুত থেকো। (মুচকি হেসে)

রুপসা আয়ানের মুচকি হাসির পিছনে রাগি ফেস টা চিনতে ভুল করেনি! কারন রুপসা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আয়ান মারাত্মক রেগে আছে। রাগে আয়ানের মুখটা লাল হয়ে গেছে।
আয়ানের ফেস দেখেই রুপসার গলা শুকিয়ে যায়।

রুপসা – আ…আপনি কি ক কাউকে ভালোবাসেন?

রুপসার প্রশ্ন শুনে মূহুর্তেই আয়ানের ফেস টা পালটে যায়। আয়ানের রাগ টা যেনো মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়।
চোখ বন্ধ করে হাত দুটি মুষ্টিবদ্ধ করে মাথা নিচু করে আছে আয়ান আর জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।
রুপসা ভালো মতোই বুঝতে পারছে আয়ান হয়তো আজ তাকে মেরেই ফেলবে। কারন এতোখন আয়ান রেগে থাকলেও এখন তার রাগটা চুরান্ত পর্যায়ে চলে গেছে বোধহয়।
রুপসা কয়েকটা ঢোক গিলে একটু পিছিয়ে যেতে নিলেই আয়ান রুপসার হাতটা চেঁপে ধরে ফেলে।

রুপসা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়ান একটানে রুপসাকে নিজের বুকে এনে ফেলে।

আয়ান – আমার পার্সোনাল লাইফে নাক গলানোটা আমি মোটেই পছন্দ করি না। ইভেন আমার নিজের মানুষও যদি কিছু বলে আমার রাগ কনট্রোল করতে পারিনা। আর তুমি কে? দুইদিনের পরিচয় মাত্র। তোমার সাথে তো এখনো আমার বিয়েটাও হয়নি তাতেই তুমি আমার পার্সোনাল লাইফ নিয়ে কথা বলছো! হাউ ডেয়ার ইউ?

রুপসা – আ আমি তো শ শুধু…

আয়ান – জাস্ট সাট আপ ডেম এট…. আমি কাকে ভালোবাসি না বাসি এটা তোমাকে বলতে হবে নাকি? তুমি কে? ওহহহ আই সি!! তুমি আমার হবু বউ তাই তো? এই জন্যই বুঝি আমার পার্সোনাল বিষয়ে কথা বলছো। (রুপসার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে)

রুপসা – আ আমার হাত টা ছ ছাড়ুন। লাগছে আমার।

আয়ান রুপসার হাতটা আরও শক্ত করে চেঁপে ধরে….

আয়ান – লাগুক তাতে আমার কী? বলেছিলাম না বিয়ে করতে রাজি হইও না তোমারই ক্ষতি হবে। শুনলে না কেনো আমার কথা ? হোয়াই…. (চেচিয়ে)

রুপসা – দেখুন আমার বাবা মা আপনাকে অনেক পছন্দ করেছে তাছাড়া উনারা চান আমি এই বিয়ে টা করি যদি আমি নিজেই না করে দিতাম তাহলে উনারা কষ্ট পেতেন আর হয়তো ভাবতেন আমার অন্য কোনো ভালোবাসার মানুষ আছে যার জন্য আমি বিয়েটা করতে চাইছি না। (কান্নাজড়িত কন্ঠে)

আয়ান – তো? তাই বলে তুমি নিজের ক্ষতি করে দিলে?

রুপসা – কি ক্ষতি হয়েছে শুনি? আমার দোষ টা কী বলুন তো যার জন্য আপনি এমন করছেন?

আয়ান – তোমার কোনোই দোষ নেই। শুধু একটাই দোষ তুমি রাজি হয়েছো।

রুপসা – ঠিক আছে। আমি আমার দোষ মেনেই নিলাম। তার জন্য যা শাস্তি ভোগ করতে হয় করবো।

আয়ান – ওহহ রিয়েলি! তুমি তো দেখছি খুবই সাহসী মেয়ে! কোনো ভয়ডর নেই দেখছি।

রুপসা – আপনি বাঘ না ভাল্লুক যে আপনাকে ভয় পাবো।

আয়ান – গ্রেট! ভয় পাও না তো? ওয়েট… ভয় পাবা ইভেন আজকের পর আমার নাম শুনলেও তোমার ভয় করবে জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ….. বলেই আয়ান রুপসাকে কোলে তুলে নেয়।

মূহুর্তেই রুপসার ভিতরটা ভয়ে কেঁপে উঠে। কী করতে চাইছেন উনি?
এটা ঠিক উনি আমার হবু বর কিন্তু বিয়েটা তো এখনো হয়নি। কি করে বিশ্বাস করবো উনাকে? মেয়ে দেখতে এসেই যে ঠোঁটে চুমু খেতে পারে সে সবই পারবে! বিশ্বাস করা যায় না এই ছেলেকে। (মনে মনে)

আয়ান রুপসাকে নিয়ে খাটে ফেলে দেয় তারপর নিজেও দু’হাতে ভর দিয়ে রুপসার উপর ঝুঁকে পড়ে….

আয়ান – ভয় পাও না তাইনা? খুব সাহস দেখছি তোমার। তোমার সাহস আমি বের করে দিবো

রুপসা – প্লিজ সরে যান আপনি। আমার রুম থেকে বের হয়ে যান নয়তো আমি চিৎকার করে বাবা মাকে ডাকবো।

আয়ান – সিরিয়াসলি! ডাকো তাতে আমার কী?

রুপসা আয়ানের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে আয়ানের দিকে তাকায়।

রুপসা – আপনার না হয় লজ্জা শরম কিছুই নেই কিন্তু আমার তো আছে। আপনি এক্ষুনি এখান থেকে চলে যান।

আয়ান – যাবো তো। তার আগে তোমার মনে ভয় সৃষ্টি করতে হবে না?

রুপসা – আপনি যাবেন নাকি আমি মা বাবাকে ডাকবো।

আয়ান মুচকি হেসে নিজের নিজের সবটা ভার রুপসার উপর ছেড়ে দেয়।
রুপসা ভয়ে ছুটাছুটি করতে থাকে। আয়ান তা দেখে আরও রেগে যায়…

আয়ান – এতো বড় বড় কথা বলছিলে আমাকে নাকি ভয় পাও না তাহলে এখন এতো ছুটাছুটি করছো কেনো?

রুপসা – দেখুন দোহাই আপনার… আপনি এখান থেকে চলে যান। আমার অস্বস্তি হচ্ছে।

আয়ান – এখন থেকে তো সব কিছুই মেনে নিতে হবে তাইনা। আগেই বলেছিলাম না করে দাও। তা না, তুমি নিজের কথায় স্থির। এখন তো অস্বস্তি লাগছে বললেও শুনবো না ডিয়ার!

রুপসা – ভালোই ভালোই বলছি আমার কাছ থেকে দূরে যান। নয়তো…

আয়ান – নয়তো কী? (রুপসার হাত দু’টো বিছানার সাথে চেঁপে ধরে)

রুপসা – আপনি কি মানুষ না? (কেঁদে দিয়ে)

আয়ান – আমি তো তোমার সাথে অমানুষের মতো আচরণ করতে চাইনি। তুমিই তো বাধ্য করলে। এবার সহ্য করো। — বলেই রুপসার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here