তোর আসক্ত পর্ব -০৩

#তোর আসক্ত❤
#পর্ব – ৩
#writer_শিফা_আফরিন_মিম

🍁
সিঁড়ি বেয়ে উঠতে নিলে আয়ান রুপসার হাত টেনে নিজের কাছে আনে।
রুপসাকে কিছু বলতে না দিয়েই তার গলায় জোরে চুমু খায়।

আয়ানের এমন কাজে রুপসা প্রচন্ড রেগে যায়। চোখ গরম করে আয়ানের দিকে তাকিয়ে চর দিতে হাত তুলতেই আয়ান রুপসার হাতটা ধরে মোচড় দিয়ে পিঠের সাথে লাগিয়ে নেয়।

আয়ান – সাহস তো কম না তোমার! আমার গায়ে হাত তুলতে চাইছিলে? ইচ্ছে করলে হাতটা এখনি ভেঙে দিতে পারতাম বুঝছো।

রুপসা – সাহসের কী দেখলেন! কী ভেবেছেন কি আপনি? যা ইচ্ছা তাই করবেন? মানলাম আপনি আমার হবু বর কিন্তু বিয়েটা এখনো হয়নি। তাই আমার শরীরে টাচ করার কোনো অধিকার ও নেই আপনার।

আয়ান – বললাম না এই সব আমার ডেইলি রুটিন। কোনো অধিকার লাগে না। এখনো বিয়ে হয়নি তুমি চাইলে বিয়েটা ভেঙে দিয়ে মুক্ত হয়ে যেতে পারো। আই প্রমিস…. যদি বিয়েটা ভেঙে দাও তবে তোমার ছায়াও দেখবো না আর।

রুপসা এক ঝটকায় আয়ানের কাছ থেকে নিজের হাত টা ছাড়িয়ে নেয়।

রুপসা – আমাকে কি খেলার পুতুল পেয়েছেন নাকি? বিয়ে করার ইচ্ছে নেই যখন আসছিলেন কেনো শুনি? আমি কি আপনাকে আপনার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসেছি?

আয়ান – তা অবশ্য করো নি। কিন্তু আমি তো প্রথম দিনই তোমাকে বলেছিলাম তুমি সবাই কে গিয়ে না করে আসো। আমার ক্যারেক্টার ভালো না। এই সব মানসিকতা খারাপ। আমার সাথে কখনো ভালো থাকতে পারবে না তুমি। তাই বলছি এখনো সময় আছে সবাই কে বলো তুমি এ বিয়েটা করতে পারছো না।

রুপসা – আমি পারবো না। আর এখন তো না ই।

আয়ান – দেখো অন্য একটা ছেলের সাথে যদি তোমার বিয়ে টা ঠিক হতো সে কি বিয়ের আগেই তোমাকে স্পর্শ করতো? না, কোনো ছেলেই করতো না। আর আমাকে দেখো আমি তোমার সাথে প্রতিনিয়ত অসভ্যতামি করেই চলেছি তোমার কি উচিত না আমাকে ইগনোর করা?

রুপসা – সত্যিই কি আপনার চরিত্র খারাপ? নাকি আমি যেনো বিয়েতে রাজি না হই এই জন্য আপনি আমার সাথে এমন করছেন?

রুপসার কথা শুনে আয়ান অন্য দিকে মুখ ঘুরে দাড়িয়ে যায়।
রুপসা বুঝতে পারছে আয়ান কিছু একটা লুকাচ্ছে।

রুপসা – কী হলো? উত্তর দিন। ইচ্ছে করে আমার সাথে অসভ্যতামি করছেন তাই না। আমাকে বিরক্ত ফিল করাচ্ছেন। আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারনা জন্মাচ্ছেন। কেনো বলুন তো?

আয়ান – জাস্ট সাট আপ ওকে। আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি। আমার ক্যারেক্টার খারাপ ব্যাস। তুমি সবাইকে বলে দাও তুমি রাজি না। এতে তোমারই ভালো হবে। নয়তো তোমার কপালে দুঃখ আছে।

রুপসা আয়ানের কথায় হালকা হাসে।

রুপসা – আল্লাহ যদি দুঃখ দিয়ে থাকেন তাহলে থাকবে।

আয়ান – তার মানে তুমি না করবে না তাই তো?

রুপসা – পারবো না। আপনি বাড়ি যান।

আয়ান – তোমার মতো ইডিয়ট মেয়ে আর দু’টা হয়না বুঝলে। নিজের ইচ্ছায় নিজের কষ্ট ডেকে আনছো। — বলেই হনহন করে চলে যায়।

রুপসা কিছুক্ষন আয়ানের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুমে চলে যায়।

রুপসার মা – এইযে মহারানির আসার সময় হলো।

রুপসা – কেনো মা?

রুপসার মা – কেনো আবার? শপিং করতে হবে না? নাকি এমনি এমনি বিয়ে করবি, কিছু কিনতে হবে না।

রুপসা – মা তুমি যা করার করো। আমার ভালো লাগছে না। আমি রুমে গেলাম।

রুপসার বাবা – আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নাও।
আর বিকেলে রেডি থেকো কেমন?

রুপসা – কোথায় যাবো বিকেলে?

রুপসার বাবা – শপিং এ।

রুপসা – ও আচ্ছা।

রুপসার বাবা – হ্যা এখন রুমে গিয়ে বিশ্রাম করো।

রুপসা কিছু না বলে রুমে চলে আসে। দরজা টা বন্ধ করে খাটে বসে পড়ে।

রুপসা – কী করবো আমি, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। উনি এমন কেনো? উনি যা বলছে তাই কী সত্যি নাকি আমি যা ভাবছি তাই?
উনি সত্যিই চান বিয়েটা ভেঙে দিই। কিন্তু মা বাবা যে কষ্ট পাবে অনেক!
কিছুক্ষন বসে থেকে ফ্রেশ হতে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় রুপসা।

এদিকে…

রুপসাকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আয়ান নিজের বাসায় চলে আসে। অফিসের কিছু কাজ বাকি ছিলো তা আর করা হলো না।
আয়ানের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। এই মেয়ে কি মানুষ নাকি আর কিছু।
এতো কিছু করার পরও বিয়ে বিয়ে করেই যাচ্ছে।
আর কী করলে ও বিয়েটা ভাঙবে? কী করবো আর!
যে করেই হোক বিয়ে তো আমি করবোই না আর সেটাও ঐ মেয়েই ভাঙতে বাধ্য হবে। আমি চাই না ভাইয়ার মতো আমার জীবনেও কোনো ঝড় আসুক। কিছুতেই এ বিয়ে করতে পারবো না আমি।

আয়ান নিজের রুমে বিছানায় আধশোয়া হয়ে ভাবছে কী করা যায়? কীভাবে বিয়েটা ভাঙবে? হাজারো চিন্তা আয়ানের মাথায়।

আজ আয়ান আর রুপসার বিয়ে। ৬ দিন পার হয়ে গেলো আয়ান আর রুপসার সামনে আসেনি। রুপসা আয়ানের কথা বার বার মনে করলেও এই ভেবে শান্তি পেয়েছে যে আয়ান হয়তো শুধরে গেছে। আয়ান হয়তো নিজের ভুল টা বুঝতে পেরেছে।
এই ৬ দিনে অবশ্য রুপসা বাড়ির বাহিরে যায়নি৷ কিন্তু তাও আগের মতো আয়ান আর তার বেলকনি টপকে ও আসেনি। রুপসা এর জন্যই খুবই খুশি হয়। আয়ান হয়তো সত্যিই সব অসভ্যতামি ছেড়ে দিয়েছে।

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আয়ান। সারা রাত অবশ্য ঘুমাতেও পারে নি ভালো করে। তার মনে শুধু একটাই ভয়! যার জন্য আজও সে কোনো মেয়ের আসক্ত হয়নি। আর হতেও চেয়েছিলো না। কিন্তু তার বাবা মা!
তারা তো কিছুতেই বুঝলো না তার কষ্ট টা।

আয়ান হাতে কফি নিয়ে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে। কফির মগে একটা চুমুক দিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
আজ কেনো জানি ভাইয়ার কথা মনে পড়ছে। বার বার শুধু ভাইয়ার সাথে ঘটা প্রতিটা মূহুর্ত চোখের সামনে ভেসে উঠছে।

হটাৎ কাঁধে কারো স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠে আয়ান। পেছন ফিরে তাকাতেই নিজের মা কে দেখতে পায়।
তার চোখেও স্পষ্ট পানি দেখা যাচ্ছে যা আয়ানের চোখ এড়াতে পারে নি।

আয়ান – মা… কাঁদছো কেনো?

আয়ানের মা – এমনি কিছুনা। এখানে দাড়িয়ে আছিস যে। ফ্রেশ হবি না?

আয়ান – মা বিয়েটা ভেঙে দিতে পারবে না? তোমরা চাইলে তো সবই হবে।

আয়ানের মা – কোনো মা কি চাইবে তার সন্তান সারাটা জীবন একটা ভুল ধারনা নিয়ে একা কষ্টে কাটাক?
জানিস… পৃথিবীতে সবাই খারাপ না। কিছু কিছু ভালো মানুষ ও আছে যাদের জন্য আমরা জীবনের আনন্দ খুজে পাই, সব কষ্ট ভুলে যেতে পারি।
আল্লাহর উপর ভরসা রাখ দেখবি তিনিই সব ঠিক করে দিবেন।

আয়ান তার মার কথা শুনে মাথা নিচু করে আছে। উত্তরে কিছুই বলে নি সে।
চোখ বেঁয়ে দু’ফোটা পানি ঝড়ে। ছেলেরা সহজে কাঁদে না! কিন্তু আয়ানের কাছে তা সম্পূর্ণ বিপরীত। কতো রাত যে সে নিরবে একা একা চোখের পানি ঝড়িয়েছে সে নিজেও জানেনা।

আয়ানের মা আয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে…

আয়ানের মা – আয়ান…. যা ফ্রেন হয়ে নে। আবার রেডি হতে হবে তো নাকি।

আয়ান এবার ও কোনো উত্তর দেয়নি চুপটি করে উল্টো দিকে ঘুরে আবার আগের মতোই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
হয়তো মার কাছ থেকে নিজের চোখের অশ্রু গুলো লুকাতে চাইছে!

রুপসাকে তার রুমে সাজানো হচ্ছে। পার্লারে যেতে বলা হলেও সে রাজি হয়নি। তাই বাড়িতেই আনা হয়েছে।
রুপসার মা রুপসার গহনা গুলো দিতে এসে অবাক হয়ে যায়! হা করে তাকিয়ে আছে তার মেয়ের দিকে।
অচমকাই মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে…. মাশআল্লাহ!

রুপসা কিছুটা লজ্জা পায় তার মায়ের কথায়। পার্লারের মেয়েরাও হাসে। একজন তো বলেই বসে…

— আন্টি এখনি যদি মাশআল্লাহ বলেন তাহলে পড়ে কী বলবেন শুনি। কারন এখনো তো আমাদের সাজানো শেষ হয়নি।

তিন্নি (রুপসার কাজিন) – হুহহ লাগবেই তো। এক বস্তা আটা ময়দা মাখলে এমতিতেই রুপবান হয়ে যাবে বুঝছো মামি! (হেসে)

রুপসার মা – দেখ তিন্নি আজও যদি তুই আমার মেয়েটার পিছনে লাগিস না তোর খবর আছে। পরে দেখবি তোকেও বিয়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করবো। আমার রুপসা এমনিতেই সুন্দরী! না সাজলেও পরীর মতো লাগে আমার মেয়েকে বুঝলে! (হেসে দিয়ে)

তিন্নি – না গো না। আমি বিয়ে টিয়ে করতে চাইনা। আমাদের রুপসা সত্যিই রুপবতী। (রুপসার কাঁধে হাত রেখে)

রুপসা – আহহ তিন্নি থাম না।

তিন্নি – ও মাহ লজ্জা পাচ্ছে দেখো!!

রুপসার মা – আমি গেলাম তোরা থাক। আর গহনা গুলো রেখে গেলাম। যাদি কোনো কিছুর দরকার হয় আমাকে ডাকবি। তিন্নি তুই থাকিস এখানে। কিছু লাগলে আমায় বলবি বুঝলি?

তিন্নি – ওকে মামি তুমি নিশ্চিন্তে কাজ করো।

রুপসার মা চলে যায়। পার্লারের মেয়ে রা আবার রুপসাকে সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।
কিছুক্ষণ পরই নিচে হৈচৈ শুনে তিন্নি বলে।
নিশ্চয় আমাদের জিজু চলে এসেছে। — বলেই দৌড়ে নিচে নেমে আসে। এতো খনে রুপসার সাজানো ও কমপ্লিট হয়ে গেছে।
রুপসা চুপটি করে বসে আছে। কপালে তার চিন্তার ভাজ! না জানি কেমন মোড় নিতে চলেছে তার জীবন!

রুপসা বসে বসে হাজারো চিন্তা ভাবনায় মগ্ন হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর এসে কয়েক জন রুপসাকে নিয়ে যায়। আয়ানের পাশাপাশি বসাতেই রুপসা আড়চোখে আয়ান কে দেখে।
মুগ্ধ হওয়ার মতো লাগছে আয়ান কে!
আয়ান রুপসার দিকে তাকাতেই রুপসা চোখ ফিরিয়ে নেয়।

রুপসা আর আয়ানের সাথে সবাই ফটো তুলছে। আয়ান ভেতরে ভেতরে বিরক্ত হলেও মুখে তা প্রকাশ করতে পারছে না। চুপচাপ সবার সাথে হেসে ফটো তুলছে।

কিছুক্ষণ পর আয়ান খেয়াল করলো রুপসার সাথে কয়েকজন ছেলে খুব হাসিখুশি মুখ নিয়ে ফটো তুলছে, ছেলে বললে ভুল হবে সাথে ২ টা মেয়ে ও আছে। রুপসারও ওদের সাথে বেশ ভাব আয়ান দেখেই বুঝতে পারছে।

আয়ান ওদের কে দেখে তাছিল্যের হাসি দিয়ে বলে…

আয়ান – সব মেয়েই একি রকম হয়। আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না তোমার মাঝে কি এমন দেখলো আমার বাবা মা যার জন্যে বিয়েটা আমাকে করতেই হলো! আমার বাবা মাকে ভুল বুঝাতে পারলেও আমাকে তো তুমি ভুল বুঝাতে পারবে না। বিয়ে টা হচ্ছে হোক, কিছুদিন গেলে তুমি নিজেই বাধ্য হবে আমাকে ছেড়ে দিতে দেখে নিও… (মনে মনে)

ছেলে মেয়ে গুলো আয়ানের কাছেও আসে ফটো তুলতে। রুপসাকে আয়ানের সাথে দাড় করিয়ে অনেক গুলো ফটো তুলে নেয়। আয়ানের অনিচ্ছা স্বত্তেও ওদের সাথে মিলে।

বিয়ে প্রায় শেষের দিকে। আয়ানকে কবুল বলতে বলা হলে আয়ান চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে যেনো তার কানে কথা পৌঁছে না। কয়েক বার বলার পরও আয়ান চুপ…

কেউ কেউ আয়ানের এমন কান্ড দেখে বলছে… ” ছেলের কি বিয়েতে মত নেই নাকি? নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করলে তো এতো সময় নিতো না। নিশ্চয় বাবা মা জোর করে বিয়ে করাচ্ছে! ”

আবার কেউ কেউ বলছে….. ” আজকাল ছেলেরাও মেয়েদের মতো লজ্জা পায় কবুল বলতে! ”

সবার সমালোচনা বন্ধ করতে আয়ান কবুল বলে দেয়।
তারপর রুপসাও বলে। সুন্দর পরিবেশেই আয়ান রুপসার বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়।

বিদায়ের সময়… বেচারি রুপসার তো বেহাল অবস্থা! কেঁদে কেঁদে কি অবস্থাটাই না করছে। বার বার এসে মা বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই যাচ্ছে। অনেক কষ্টে রুপসাকে নিয়ে গাড়িতে বসায়। কিন্তু তখন ও সেন্সলেস হয়ে যায়।

আয়ান দের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামে। মস্ত বড় বাড়িটা সাজানোতে যেনো সুন্দর্য টা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে।
রুপসা এখনো সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে। আয়ানের অনেক বিরক্তি লাগছে। এই অবস্থায় তো ওকে গাড়িতে ফেলে রেখে নিজে চলে যেতে পারে না। বাড়ি ভর্তি মেহমান।
আয়ান গাড়িতে থাকা পানির বোতল টা হাতে নিয়ে রুপসার চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। রুপসা একটু চোখ মেলে তাকাতেই আয়ান বলে….

আয়ান – এক্টিং অনেক হয়েছে। আর না। তুমি কি বাড়িতে যাবে নাকি আমি একাই চলে যাবো?

রুপসা আয়ানের কথা শুনে একটু দুঃখ পায়। লোকটার মুখ দিয়ে কি সুন্দর করে কথা বের হয় না?

রুপসা ধীরে ধীরে গাড়ি থেকে নেমে আসে। আয়ান রুপসার জন্য না দাড়িয়ে আগে আগে হাটা ধরে আর রুপসা আয়ানের পিছনে।

বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই রুপসা অবাক! পুরোটা বাড়ি এতো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে বলে বুঝানো মুশকিল!
গাড়ি থেকে নামার সময় বাহির টা অবশ্য একটু দেখা হয়েছিলো। এইটুকু দেখাতেই রুপসা বেশ বুঝতে পেরেছে বাড়িটা অনেক সুন্দর ডেকোরেশান করা হয়েছে।

ঘন্টা খানেক পর রুপসাকে কয়েক জন মিলে একটা রুমে নিয়ে যায়। রুমটাতে পা রাখতেই ফুলের গন্ধ নাকে এসে পড়েছে। এটাই হয়তো আয়ানের রুম! (মনে মনে)
রুপসাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সবাই চলে যায়।
রুপসা একবার ঘুমটা টা তুলে ঘরটাতে চোখ বুলিয়ে নেয়।

এদিকে আয়ান অনেকক্ষন ধরে ছাদে একা একা বসে আছে। হাতে তার জলন্ত সিগারেট।
কারো আসার শব্দ শুনে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে তার মা এসেছে।

আয়ানের মা – তুই এখন এখানে কী করছিস আয়ান?

আয়ান – কিছুনা মা ভালো লাগছিলো না তাই বসে আছি।

আয়ানের মা – রুপসা ঘরে একা আছে।

আয়ান – রুপসা টা আবার কে? (অবাক হয়ে)

আয়ানের মা – কেমন মানুষ তুই! বিয়ে করে নিলি অথচ মেয়ের নামটা ও জানিস না?

আয়ান – ওহহ ঐ মেয়েটা।

আয়ানের মা – এসব কী ধরনের কথা আয়ান? ঐ মেয়েটা মানে কী? ও তোর বউ এখন।

আয়ান – মা তুমি রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ো যাও।

আয়ানের মা – আগে তুই রুমে যা।

আয়ান – যাবো। তুমি যাও।

আয়ানের মা – এখন যাবি। চল আমার সাথে। — আয়ানের মা আয়ানের হাত ধরে টেনে নিচে নামায়।
একপ্রকার জোর করেই আয়ান কে তার রুমে পাঠিয়ে দেয়।
আয়ান রুমে ঢুকেই দেখে রুপসা খাটে বসে আছে। লম্বা ঘোমটা দেয়া।

রুমে কারো আসার শব্দ পেয়ে রুপসা একটুু নড়েচড়ে বসে। ভয়ে যেনো তার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। নিশ্বাস টাও যেনো ঘন হয়ে আসছে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here