তোর চোখে আমার সর্বনাশ
১৭.
শেষাংশ
অতি বিস্মিত জেনিফার। তার থেকে কিছু টা দূরে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রিয় উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। যত বার বই টি পড়ে ছিল ততবারই নতুন করে সুদর্শন লোকটা প্রেমে পড়েছে। একটু আগ বাড়িয়ে ভালো করে দেখে নিল। অল ব্ল্যাক , ফর্মাল লুকে নাহিয়ান সারাফাত কে দেখে ও নিজের চোখেই বিশ্বাস করে পারছিল না। প্রথমে ভেবে ছিল ভ্রম হবে। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ও ভ্রম যখন কাটছে না তখন মানতে বাধ্য হল এটা সত্যি কারের নাহিয়ান সারাফাত। কোনো ভ্রম ট্রম নয়। খুশিতে দগদগ করে উঠে। এখন জেনে নিবে চার বছর আগের অসম্পূর্ণ উপন্যাসের কাহিনি। ফারাহ্ কে কোথায় ও দেখছে না। তাহলে ফারাহ্… না ওকে জানতেই হবে। যেই এগুতে যাবে তখুনি একটা বাচ্চা মেয়ে এসে নাহিয়ান পা জড়িয়ে ধরল। নাহিয়ান এত সময় কথায় ব্যস্ত ছিল। ছোট ছোট হাতের স্পর্শ পেতে বুঝতে আর বাকি নেই কে এসেছে। নিচের দিকে ঝুঁকে বাচ্চা কে টা কোলে তুলে দুই গালে ঠোঁট ছুয়ে দিল। বাচ্চা মেয়ে টা নাহিয়ানের কানে ফিসফিসিয়ে কি যেনো বলছে। নাহিয়ান দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে চুপচাপ কথা গুলো শ্রাবণ করছে। কি সুন্দর বাচ্চা মেয়ে টা বয়স আড়াই কি তিন হবে। যত সম্ভব তিন-ই হবে। ব্ল্যাক লং গাউন পড়নে। কি মায়াবী মুখ খানা। চুল কাঁধের নিচে পড়ে আছে।
” আমার নামে বাপের কাছে নালিশ দেওয়া হচ্ছে বুঝি? ”
জেনিফার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। সামনে থাকা হোটেল টা থেকে বের হল এক রমণী। ব্ল্যাক গাউনে পরির মতো লাগছে। ঠোঁটের কোণে স্মিথ হাসি। কে এই? নাহিয়ান কি আবার বিয়ে করেছে? তৎক্ষণাৎ নাহিয়ানের কোলে থাকা বাচ্চা মেয়ে টা খিলখিল করে হেসে উঠে শব্দ করে বলল ,
” তোমাল নামে কি নালিশ কলবো? মাই পাপ্পা জানে তুমি কেমন। ”
রমণী দুই হাত দিয়ে গাউন উঁচু করে এগিয়ে এসে থামলো নাহিয়ানের সন্নিকটে। গাল ফুলিয়ে বলল ,
” আপনার মেয়ের কথা একদম শুনবেন না। অযথায় আমার নামে বানিয়ে বানিয়ে নালিশ করে।
ঠোঁট চেপে হাসি আটকালো নাহিয়ান। খানিক আগে বাচ্চা মেয়ে টা বলে ছিল ‘পাপ্পা জানো আজকে মাম্মা কে একদম পলিল (পরির) মতো লাগছে তুমি আমাল নাম পলি (পরি) না লেখে (রেখে) মাম্মাল নাম পলি (পরি) লাখতে পাললে না বুদ্দু। ‘
হাসি চেপে এক হাত রমণী বুকে জড়িয়ে নিয়ে অতি প্রেম ময় ভঙ্গিতে বলল ,
” আমার প্রাণপাখি কে আজকে নাকি একদম পরির মতো লাগছে। আমাদের প্রিন্সেসের বাণী , ওর নাম পরি না রেখে তোমার নাম পরি রাখা উচিৎ ছিল। ”
আলগোছে হাসলো রমণী এক হাত নাহিয়ানের পিঠের উপর অন্য হাত দিয়ে পরির গাল টেনে আদুরের সুরে বলল ,
” দিন দিন বারি দু’ষ্টু হয়ে যাচ্ছে আমার মাম্মা টা। ”
তিন জনের মুখে মোহনীয় ও হাসি। জেনিফার এবার ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। পরির মতো লাগা রমণী টাই নাহিয়ানের প্রাণপাখি ফারাহ্ সারাফাত। কি সুন্দর মানিয়েছে তিন জন কে। সেম ড্রেস। জেনিফার চোখের জল মুখে পা বাড়ালো অনাকাঙ্ক্ষিত মানব গুলোর দিকে। ও গত চার বছরে ভাবে ও নি। সত্যি এক দিন এদের সাথে দেখা হবে। এদের সাথে।
” আস’সালামু আলাইকুম। ”
ওদের মাঝে চতুর্থ ব্যক্তির আওয়াজ শুনে। অনুসরণ করে তাকালো। চকলেট কালারের কুর্তি পড়া একটা মেয়েকে দেখতে পায়। নাহিয়ান সালামের জবাব দিল ,
” ওয়া আলাইকুমুস’সালাম। ”
” আমাকে আপনারা চিনবেন না। আপনাদের অনেক বড় পাখা আমি। চার বছর আগে আপনাদের জীবন কাহিনি নিয়ে বের ‘ তোর চোখে আমার সর্বনাশ ’ উপন্যাস টি পুরো পড়েছি। শুধু একবার নয় বার কয়েক বার। প্লিজ আমাকে এর পরের কাহিনি টা শুনাবেন। কি হয়ে ছিল ওই দিন রাতের পর। ”
ফারাহ্’র চোখে মুখে আঁধার নেমে এলো। নাহিয়ানের ও সেম। সে পুরানো অতিত ওরা মাটি চাপা দিয়ে সামনে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু মেয়েটার মলিন কন্ঠ টা অবেক্ষা করতে পারলো না। ফারাহ্ উচ্চ শব্দে কেউ কে ডেকে উঠল ,
” ফাতেহ মামা। ”
হেলতেদুলতে ফাতেহ এসে হাজির হল ফারাহ্’দের কাছে। মিষ্টি কন্ঠে বলল ,
” কিছু লাগবে? ”
” না ফাতেহ মামা আপাতত কিছু লাগছে না , তুমি পরি কে নিয়ে ওই দিকে যাও আর হ্যাঁ খেয়াল রেখো। ”
নাহিয়ান কথা টা বলেই ফাতেহর কোলে দিল পরি কে। ফাতেহ এটা ওটা বলতে বলতে পরি কে নিয়ে যায়। ফারাহ্ নাহিয়ানের বাঁ হাতের আঙুলে নিজের হাতের আঙুল আবদ্ধ করে রেখেছে। নাহিয়ান বুঝতে পারলো তার প্রাণপাখি ভ’য় পাচ্ছে। হাতে দৃঢ় চাপ দিয়ে আশ্বাস দিল। ফারাহ্ মুচকি হেসে জেনিফারের উদ্দেশ্যে বলল ,
” নাম কি তোমার? ”
” জেনিফার হুরাইরা। ”
” জেনিফার , চলো সামনে গিয়ে বসে কথা বলি। ”
” জ্বি চলুন। ”
হোটেলের পশ্চিম পাশে বসার ব্যবস্থা আছে। খোলা আকাশের নিচে বেতের সোফা পাতানো। নাহিয়ান , ফারাহ্ , জেনিফার গিয়ে বসল বেতের সোফার উপর। নাহিয়ান স্নাকস জাতীয় কিছু খাবার অর্ডার দিল। কিছু ক্ষণ পর ফারাহ্ নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলতে ইশারা করল।
•
ফারাহ্’র শরীর আস্তে আস্তে ঠান্ডা হতে লাগলো। নাহিয়ান ঘাবড়ে যায়। অস্থিরতা কাটিয়ে ফারাহ্’র হাত পা মালিশ করতে থাকে। ওরা আসার সময় আজকে গাড়ি ও নিয়ে আসে নি। এটাই ভু’ল মনে হচ্ছে নাহিয়ানের কাছে। এখানে এই সময় গাড়ি পাবে কি না সন্দেহ। কি করবে মাথা কাজ করছে না নাহিয়ানের। হঠাৎ কোলে তুলে নিল ফারাহ্ কে। হাঁটতে লাগে মেইন রাস্তার দিকে। যত টুকু গাড়ি না পায় তত টুকু হাঁটতে হবে তাকে। কিছু সময় আসার পর আশার আলো দেখতে ফেলো নাহিয়ান। দ্রুত সি এন জি ‘র কাছে গিয়ে বিচালিত হয়ে বলল ,
” আমার ওয়াইফ ভিষণ অসুস্থ ওকে নিয়ে এখুনি হাস্পাতালে যেতে হবে। ”
নাহিয়ান ইচ্ছে করে গু’লির বিষয় টা হাইড করল। যদি গু’লির বিষয় কিছু শুনে লোক টা পালিয়ে যায় বা ভ’য় পেয়ে ওকে না নে। সি এন জি ওয়ালা গম্ভীর মুখ করে সিগারেট টানছে। ফারাহ্ আর নাহিয়ান কে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে নাক দিয়ে সিগারেট ধোঁয়া উঠিয়ে বলে উঠল ,
” এই এলাকায় এত রাতে কি করেন আপনারা? দেখে তে শহর বাসি মনে হইতাছে। ”
ফোস করে শ্বাস ছাড়ে নাহিয়ান। এখন কোন প্রশ্ন মুখোমুখি হতে চাইছে না ও। ফারাহ্ ধীরে ধীরে শরীর ছেড়ে দিচ্ছে। নাহিয়ানের বুকে ইতি মধ্যে ঝড় হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। কোন রকম বলল ,
” আমরা শহরেই থাকি এখানে ঘুরতে এসেছিলাম হুট করে আমার ওয়াইফ অসুস্থ হয়ে গেলো, বাকি কথা যেতে যেতে বলি। প্লিজ আমাকে হাস্পাতালে নিয়ে চলুন যত টাকা লাগে দিব। ”
” টাকার ভাব দেখাইতে আসিয়েন না ভাই আপনাদের চিনি আমরা মাইয়া গো রে লই এই নিরব জাগায় আসি যা খুশি করি পালাই থু’ই যান কত দেখছি এমন। ”
মাথায় র’ক্ত উঠে যায় নাহিয়ানের। এই মূহুর্তে রে’গে যাওয়া ঠিক হবে না। ফারাহ্ কে রাস্তা দাঁড় করিয়ে এক হাত দিয়ে শ’ক্ত করে চেপে ধর নিজের সাথে৷ অবচেতন মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেই প্যান্টের পকেট থেকে কার্ড বের করে সি এন জি ওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চোয়াল শ’ক্ত করে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল ,
” এখন যেতে সমস্যা আছে আপনার? ”
লোকটা কিছু টা ইতস্তত বোধ করে বলল ,
” আসলে আমি বুঝতে পারি না আপনি সারাফাত ফ্যামিলির ছেলে। ”
নাহিয়ানের এখন বলতে ইচ্ছে করছে , বুঝবেন কি করে আর গায়ে কি সারাফাত ফ্যামিলির ছেলে লিখা আছে। আপাতত সে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। তার প্রাণপাখি কষ্ট পাচ্ছে। নির্বকার ভাবে ফারাহ্ কোলে তুলে নিল ফের। সি এন জি তে চড়ে বসতেই ড্রাইভার সি এন জি স্টার্ট দিল। প্রায় বিশ মিনিটের মাথা একটা হাস্পাতালের সামনে এসে থামলো ড্রাইভার। নাহিয়ান ওয়ালেটে যত টাকা আছে সব সি এন জির সিটে রেখে নেমে অস্থির হয়ে বলল ,
” আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না , হাজার খানিকের মতো টাকা ছিল সব দিলাম। আসি দো’আ করবেন আমার ওয়াইফ যেনো সুস্থ হয়ে যায়। ”
কথা শেষ করতে দেরি ছুটতে দেরি নেই। এক প্রকার দৌড়ে হাস্পাতালে ডুকল। জোরে চেঁচিয়ে ডাক্তার , নার্সদের ডাকতে শুরু করে। দুই জন ওয়ার্ডবয় ছুটে এলো নাহিয়ানের চিৎকার শুনে। সকল ফর্মালিটি পূরণ করার পর ফারাহ্ কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তৎক্ষনাৎ নাহিয়ান বাড়িতে ফারাহ্’র অবস্থা জানায়। আর সাথে লোকেশান ও। আজকে সময় যেনো কাটছেই না তার। অপারেশন থিয়েটারের দরজার সামনে করিডরের দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষণ পর পর একটা নার্স বের হচ্ছে খালি হাতে আর ডুকছে এটা ওটা কি সব যন্ত্রপাতি নিয়ে। এরই মধ্যে সবাই হাস্পাতালে চলে আসে। বেশি দূরে ছিল না। প্রায় দুই ঘন্টা পর একজন বয়স্ক মহিলা বের হলেন। যিনি ফারাহ্’র ট্রিটমেন্ট করেছেন। নাহিয়ানের কাছাকাছি এসে বললেন ,
” পেশেন্টের কেউ আছে? ”
নাহিয়ান দ্রুত কদম এগিয়ে এলো হন্তদন্ত বলল ,
” জ্বি আমি , আমার ওয়াইফ ঠিক আছে তো? ”
ডাক্তার মুখের মাক্স খুলে মৃদু হেসে বললেন ,
” আলহামদুলিল্লাহ , এভরিথিং ইজ ফাইন। বু’লে’ট বেশ গভীরে যায়নি। ”
দুই হাত দিয়ে চুল টেনে ধরে বড় একটা সস্থির শ্বাস চাপে নাহিয়ান। পরক্ষণে ডাক্তার বলা কথা শুনে বিচালিত হয়ে উঠল নাহিয়ান।
” একটা সমস্যা আছে…”
” কি? আপনি তো এই মাত্রই বললেন ও একদম ঠিক আছে তাহলে? ”
” শান্ত হন মিস্টার আপনার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট ছিলেন। সম্ভবত চার মাসের। ”
কথা টা শুনা মাত্র-ই দমকা হাওয়ায় বয়ে গেলো সবার মধ্যে। বিশেষ করে নাহিয়ানের মধ্যে মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে গেছে তার। ফারাহ্ প্রেগন্যান্ট আর ও জানে না। বুঝতে ও পারে নি। আর ওদের কেউ কে বলে নি কেনো বিষয় টা। এরই জন্য কি ফারাহ্ ঘুরতে বের হতে আসতে চায় নি। নাহিয়ান তো জোর করে ফারাহ্ কে নিয়ে এসেছে। মাথায় বা’জ ভে’ঙে পড়ল। প্রথম মিসক্যারেজ এর কথা মনে পড়তেই গলা শুকিয়ে কাঠে পরিনিত হয়ে উঠে। আজকে ও কি এমন কিছু শুনবে? প্রশ্নবিদ্ধ চাহনিতে চাইলো ডাক্তারের দিকে। উনি হালকা হেসে বললেন ,
” মিস্টার ভ’য় পাওয়ার কিছু নেই। কথায় আছে না রাখে আল্লাহ মারে কে। আল্লাহর রহমতে আপনার বেবি সূম্পর্ণ সুস্থ আছে। আমরা ও যথাযথ চেষ্টা করলাম। পেশেন্ট কে আমরা এমন কোন মেডিসিন দি নি যা উনার আর বাচ্চার কোনো সমস্যা হবে। ”
নাহিয়ান স্তব্ধ , বাকরুদ্ধ। মিরাজ নাহিয়ান কে চুপ থাকতে দেখে ডাক্তারের সাথে আরো কিছু আলোচনা করল। কখন বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে জানা জিজ্ঞেস করতেই ডাক্তার বললেন ,
” আজকের রাত টা অভজারভেশনে থাককু আগামী কাল বেলা ১২ টা নাগাদ দিয়ে যেতে পারবেন। আর একটা বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। পেশেন্টকে বেশি বেশি ফল খাওয়াবেন। ওর এখন ফল , সবজি এসব খাওয়ার প্রয়োজন। বিশেষ করে আনার ফল টা খাওয়াবেন শরীরে রক্ত কম উনার৷ পরে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়।”
_
শরীরে ব্যথা চোখ মুখ কুচকে ফেলল ফারাহ্। বুকে উপর টানটান ব্যথা করছে। আঁখি জোড়া খুলে সাদা ধবধবে সিলিং -এর দিকে তাকালো। কয়েক মিনিট সময় লেগে গেছে বুঝতে উঠতে ও কোথায় আছে? এখানে কি করে এলো? পেটের উপর ভারী কিছু অনুভব করল। সাথে এটা ও বুঝতে পেরেছে কেউ ওর পেট নিবিড় বন্ধে আবদ্ধ করে রেখেছে। মুহুর্তেই চমকে উঠলো। ধড়ফড়িয়ে উঠতে নিলেই নাহিয়ান ফারাহ্’র পেট থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে বসল। ফারাহ্ ভিত চোখে চেয়ে আছে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে। নাহিয়ান ফারাহ্’র চোখের ভাষা বুঝতে পেরে খানিক টা এগিয়ে বসল। ফারাহ্’র দু’গালে হাত রেখে শান্ত গলায় বলল ,
” আমাদের বেবি সূম্পর্ণ সুস্থ আছে। ”
ফারাহ্’র টলমলে নেত্রী যুগোল থেকে টপটপ করে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল চিবুক বেয়ে। কন্ঠ কাঁপছে তার। বলল ,
” আ্ -আমাদের বেবি_”
” হ্যাঁ আমাদের বেবি আমি জানতে পেরেছি আমার বুড়ি টা মা হতে যাচ্ছে। ”
” আপনি্ রা্-গ করেন নি…. ”
বাকি কথা বলার আগে নাহিয়ান ফারাহ্’র গালে হাত রাখা অবস্থায় ডান হাতে বৃদ্ধা আঙ্গুল ফারাহ্’র ঠোঁটের উপর রাখল। অগ্যত চুপ হয়ে যায় ফারাহ্। নিরব চাহনীতে তাকিয়ে রইলো নাহিয়ানের দিকে। নাহিয়ান ফারাহ্’র কপালে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে কোমল গলায় বলে উঠে ,
” বাবা হওয়ার ইচ্ছে আমার ও আছে প্রাণপাখি , প্রথমে আমার রা’গ করার কারণ ছিল। তুমি আর আমি তখন ও একে অপর কে ভালো করে বুঝে উঠতে পারি নি। আমি চেয়ে ছিলাম আমাদের মধ্যে সব নরমাল হওয়ার পর বেবির কথা ভাববো। কিন্তু তুমি…. ”
একটা দীর্ঘ শ্বাস চেপে ফের বলল ,
” যাই হোক তারপরের কয আমি তোমাকে হারাতে চাই। মনে ভ’য়ের দানা বেঁধে ছিল। যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি। ভ’য়ে আমি নিজেকে সামলাতে পারি নি তাই ওই দিন আমি তোমার সাথে রুড ব্যবহার করে ফেলে ছিলাম। আজকে যখন জানতে পারি তুমি আমার মা হতে যাচ্ছো। তাও চার মাসের প্রেগন্যান্ট তখন আমি ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছি তুমি আমার থেকে এই বিষয় টা হাইড করেছো অতীতে ঘটে যাওয়া সেই নির্মম কাহিনীর জন্য। আমাদের বেবি আসবে জানার দুই কি তিন দিনের মাথায় ও আমাদের থেকে অনেক দূরে চলে গেছে৷ তাও আমার জন্য। কতটা খা’রাপ আমি। আমার জন্য তুমি কষ্টের পর কষ্ট পেয়েছো। শুধু আমার জন্য। আমার জন্য সবাই কষ্ট পায়। না আমি ভালো স্বামী হতে পেরেছি না ভালো বাবা…”
ফারাহ্ নাহিয়ানের মুখে হাত চেপে শব্দ করে কেঁদে দিয়ে অস্ফুটে স্বরে বলতে লাগলো ,
” প্লিজ চুপ করুন। আমি অতীত চাই না। আমি জানি আপনি ভালো একজন জীবন সঙ্গি। আমি এটা ও চাই.. ”
” তুমি যা চাও তাই হবে এবার আমি একজন ভালো বাবা হয়ে দেখাবো , ওয়াদা করলাম তোমার কাছে। ”
হুট করে ফারাহ্ একটু দূরে সরে এসে কান্না থামিয়ে জিজ্ঞেস করে বসল ,
” কি বললেন? ”
” ওয়াদা করলাম তোমার কাছে। ”
” আরেহ্ দূর এটা না আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন? ”
নাহিয়ান একটা হাসি দিল হৃদয় কাঁপানো। অসাধারণ হাসি টি। এই হাসি খানা ফারাহ্’র খুব পছন্দের। কিন্তু আজকে ভালো ঠেকছে না হাসি টা। ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে আছে। নাহিয়ান ফারাহ্’র কোমড় ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসল। কপালে পড়ে থাকে চুল গুলো সরিয়ে দিতে দিতে শান্ত গলায় বলল ,
” ছেলেদের সামনে তুই করে বললে পরবর্তীতে দেখা যাবে ওরা ও ওদের বউদের তুই করে বলা শুরু করে দিবে। ”
ফিক করে হেসে দিল ফারাহ্। নাহিয়ানের বুকে মাথা এলিয়ে দিয়ে নেত্রীযুগোল বন্ধ করে নিল। নাহিয়ান ও মৃদু হেসে ফারাহ্ কে আলিঙ্গন করে নিল।
•
জেনিফার চোখ ভিজে উঠল। খুব খুশি লাগছে নাহিয়ান আর ফারাহ্’র এক হওয়া দেখে। ওই দিন ফারাহ্’র যদি কিছু হয়ে যেতো নাহিয়ান বোধ হয় পা’গ’ল হয়ে যেতো। ভালোবাসা এমন জিনিস যা প্রথম বার আর শেষ বার হয়। তাও কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে। কেউ প্রথম ভালোবাসা হারিয়ে নিজে ও হারিয়ে যা। কয় জনেই বা পারে শেষ ভালো বাসতে। জেনিফার বলল ,
” আরেক টু জানতে চাইবো কিছু মনে করবেন না তো? ”
ফারাহ্ হেসে বলল ,
” না বলো। ”
” গল্পে আমি যাদের কাহিনী পড়ে ছিলাম সবাই এখন কোথায় আছে? ”
” সবাই বলতে , সানজিদা আপু , রিয়ান ভাইয়া , শামীম , সানা কে নি আগের জাগায়ই আছে। রিশাব আর প্রিয়া এখন আমেরিকা থাকে এক ছেলে এক মেয়ে। আর আমরা সারাফাত ম্যানসনেই আছি। তার মধ্যে সুফিয়ানের বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে আছে কিছু দিনের মধ্যে তারিখ পড়বে। মিরাজ ভাইয়ার দুই ছেলে আছে। ফাতেহ মামা কে তো দেখলেই আছেন আমাদের সাথে। বাকি সব আগের মতোই। ”
” আব্ ও ফুল নামের মেয়ে টার কথা বললেন না , ও কথায় আছে আপনাদের সাথে? নাকি চলে গেছে? ”
ফারাহ্’র টনক নড়লো। বিস্ময় ভরে উঠল মুখ খানি। ওদের থেকে একটু দূরে ফোনে কথা বলছে নাহিয়ান। তার দিকে এক পলক তাকিয়ে মোলায়েম কন্ঠে উচ্চারণ করল ,
” ও…… । ”
কথা বলতেই কেঁপে উঠল ফারাহ্। ভিতরে টা হা’হা’কার করছে। ফুলের জন্য শেষ প্রতিনিয়ত কুঁকড়ে উঠে সে।
•
ফারাহ্ প্রেগন্যান্সির নয় মাস চলছে এখন। মেয়ে টা আগে থেকে গুলুমুলো হয়ে গেছে। কথা বার্তা ধরণ ও পাল্টে গেছে। নিয়মিত নিজেকে তৈরি করছে বেবি আসলে তাকে সামাল দেওয়ার জন্য। এত কিছুর মাঝে ও নাহিয়ানের কাছে ফারাহ্’কে এখন ও বাচ্চা মেয়ে মনে হয়। সে তাকিয়ে থাকে মুগ্ধ চোখে। মাঝে মাঝে হাসে ও এক বাচ্চা আবার আরেক বাচ্চা কে দুনিয়াতে আনছে কিছু দিনের মধ্যে। ফারাহ্’র সিড়ি বেয়ে নিচে যাওয়া একদম নিষিদ্ধ আজ্ঞা জারি করেছে নাহিয়ান। শুধু উপরে থাকবে৷ নিচে কিছুই তেই নামা যাবে না। দিনে সবাই ফারাহ্ কে সময় দে। সবার থেকে বেশি ফুল থাকে ফারাহ্ ‘র কাছে। যখন যা চায় তাই এনে দে। রাতের বেলায় একান্ত নাহিয়ান থাকে। সারাদিন অফিসে কাটিয়ে রাত টা প্রিয়াসীর সেবায় কাটিয়ে দে। সে সকাল থেকে গাল ফুলিয়ে বসে আছে ফারাহ্। আজকে তার কাছে না ফুল এসেছে , না অন্য কেউ এসে কথা বলছে৷ ওর মা কয়েক বার এসে খাবার দিয়ে গেছে শুধু। ডাক্তারের কথা মতো ওকে ফলের সাগরে বসিয়ে রেখেছে নাহিয়ান। প্রথম প্রথম ফল খাওয়ার অত্যাচার ভালো না লাগলে ও এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
পপি কিচেনে এসে ফাতেহ কে প্রশ্ন করে ,
” ফাতেহ মামা ফুল কোথায় আজকে? ”
” সকালে কইল ওর নাকি মাথা ব্যথা করছে , আমি কইলাম যাও একটু ঘুমাও ভালো লাগবে। ”
” ও আচ্ছা , আমি তো ভেবেছিলাম ফারাহ্’র কাছে আছে ও একা আমি যাই। ”
” ঠিক আছে যাও। ”
দুপুরের খাওয়ার সময়। মিনা আরাফা , ফুল কে ভাত দিয়ে আসলেন। শরীরে জ্বর এসেছে কিনা চেক করলেন। না স্বাভাবিক। ফুল বলল ,
‘ বড় আম্মা আমি ঠিক আছি তো আপনারা চিন্তা করিয়েন না। শুধু মাথা ব্যথা করছে। আপনি যান রেস্ট করুন আমি ভাত খাই আরেক টু ঘুমামু। ‘
রাত আটা বাজে নাহিয়ান , মিরাজ এরা আসলো মাত্র। আফজাল সারাফাত , ইফতেখার সারাফাত , এহসান সারাফাত খানিক আগে এসেছেন। উপরে যাওয়ার আগে ড্রয়িং রুমে বসল ওরা। কথায় কথায় উঠায় ফাতেহ এসে বলল ,
” ফুল সে সকাল থেকে রুম থেকে বের হয় নি। ”
মিনা আরাফা বললেন ,
” আমি দুপুরের ভাত দিয়ে এলাম। বিকেলে গিয়ে দেখলাম অল্প খানি খেয়েছে। ঘুমাচ্ছে বলে ডিস্টার্ব করলাম না। ”
” অসুস্থ নাকি? মিরাজ একবার দেখে আয়। ”
নাহিয়ানের আদেশ মূলক কথা শুনে মিরাজ পপি , শামীমা আখতার সহ ফুলের রুমে গেল। ফুল বিছানা চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। মিরাজ কিছু টা সন্দিহান চোখে তাকালো। পপি ফুল কে ঠিক করে শুয়ে দিল। মিরাজ ফুলে কপালে আলতো হাত দিয়ে আঁতকে উঠে। এত ঠান্ডা! বরফ বললে ও ভুল হবে না৷ দ্রুত ফালস রেট চেক করল। হতাশ হল সে। চোখে মুখে আধার ঘনিয়ে এলো। ছোট্ট করে বলল ,
” সি ‘ ইজ নো মোর। ”
সবাই পাথরের পরিনিত হয়ে যায়। আচমকা ফুলের মৃ’ত্যু কারো বোধগম্য হল না। তার পরে ও দ্বিধা দূর করার জন্য হাস্পাতালে নিয়ে যায়। সে খানে জানতে পারে ব্রে’নস্ট’ক করেছে। আনুমানিক দুপুর তিনটার দিকে। মহিলারা সবাই কান্নায় ভে’ঙে পড়ল। আর পুরুষ রা তারা ও পারছে শেষমেষ কেঁদে দিল। বয়স কত খানি হল মেয়ে টা অল্প বয়সে ব্রে’নস্ট’ক করেছে কেউ মানতে পারছে না। সূর্যমূখিফুলরানী ওদের র’ক্তে কেউ নয়। তবুও মেয়েটা ওদের অনেক আপান। জীবনের সুখের ছোঁয়া যখন ফেল তখনই অদূরে চলে গেল। যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না। আর নেই সূর্যমূখিফুলরানী। প্রতিদিন এটা ওটা বলে মাতিয়ে রাখবে না সারাফাত ম্যানসন। ফাতেহ কাঁদছে খুব মেয়েটার সাথে দিনে চার বার ঝ’গ’ড়া না করলে ওর ভালো লাগে না। শুধু শুধু ফুল কে পেঁচাতো ফাতেহ৷ আর ফুল খেঁপে গিয়ে অনেক কথা শুনাতো। রাত বারোটার দিকে ফুলে দা’প’নকাপন শেষ করে। যেহেতু ফুলে আত্মীয় স্বজনের খোঁজ নেই বা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা ও করে নি নাহিয়ানরা৷ তাই ফুল কে ওদের পারিবারিক কবর স্থানে ক’বর দিল। ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আসে নাহিয়ান’রা এক এক জনের হৃদয় চিনিয়ে নিয়ে গেছে সূর্যমূখিফুলরানী নামক ফুলের মতো মেয়ে টা। নাহিয়ানের কষ্ট লাগছে বেশি হয় তো। ওর মধ্যমেই তো ফুল ওদের বাড়িতে এসেছে। রুমের কাছে আসতে বুক কেঁপে উঠে৷ ফারাহ্ কে জানানো হয় নি ফুল আর নেই। এই অবস্থা ফুলের মৃ’ত্যুর সংবাদ কি ভাবে নিবে তাই কেউ ওকে জানায় নি। নাহিয়ান এখন ভাবছে কত দিন না জানিয়ে রাখবে। ফুল কে নিয়ে তো ফারাহ্ ‘র সারাদিন। ভারী শ্বাস চেপে রুমে ডুকল। বেডের উপর হাত পা ছড়িয়ে নিশ্চিতে ঘুমাচ্ছে তার প্রাণপাখি। আস্তে ধীরে ডোর লকড করে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ল। ফারাহ্ কে এক পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে।
পরের দিন সকালে ফারাহ্ নালিশ এলো নাহিয়ানের কাছে ,
” জানেন ফুল না গত কাল থেকে এখন ও পর্যন্ত আমার রুমে আসে নি। আপনি ওকে খুব করে বকে দিয়েন তো। ”
নাহিয়ান আ’হ’ত চোখে চেয়ে আছে। মনে মনে বলল ,
‘ কাশ বকার জন্য হলে ও যদি ফুল ফিরে আসতো… ”
•
ফারাহ্’র কান্নার শব্দ শুনে নাহিয়ান চট জলদি ফোন কেটে ওর কাছে এসে অস্থির হয়ে জানতে চাইলো ,
” কাঁদছো কেনো? ”
” ফুল…. আমি ফুল কে দেখি নি শেষবার। ”
নাহিয়ানের হৃদপিণ্ডে গিয়ে আ/ঘা/ত করছে। ফারাহ্’র কথা , বেসামাল কান্না। হতাশা নিশ্বাস ত্যাগ করে ফারাহ্ কে বুকের সাথে চেপে ধরে। জেনিফার ও কেঁদে দিল ফারাহ্’র কান্না দেখে। খুব অবাক হচ্ছে সে ফারাহ্ অচেনা অজানা একটা মেয়ের জন্য এত কাঁদছে। অনেক ক্ষণ পর ফারাহ্ নাহিয়ানের বুক থেকে মাথা তুলে মলিন হেসে শুধালো ,
” জানো আমার মেয়ের নাম খানি কে রেখেছে? ফুল ও রেখেছে। নাফিজা সারাফাত পরি। ফুলের দেওয়া নাম। ওর দেওয়া নাম ডাকার জন্য ও’ও থাকে নি চলে গেছে ও। পরি হওয়ার এক মাসের মাথায় জানতে পারি ফুল আর নেই। দুই আড়াই মাসের মতো সবাই আমাকে বলেছে ফুল সানজিদা আপুর কাছে থাকে। এটা ওটা কয দেখাতো। জানার পর আমি.. ”
বেগহীন ভাবে কাঁদছে ফারাহ্। নাহিয়ানের মুখে ভর করল গগণ ছোঁয়া বিস্ময়। মেয়ে টা আজকে এত কাঁদছে কেনো? যে দিন ফুলের মৃ’ত্যুর খবর পেয়ে ছিল সে দিন এমন কান্না করে ছিল আর আজকে। তার প্রাণপাখি কি জানে না ‘ওর’ চোখে পানি দেখলে তার অন্তঃস্থলে ক্রমশ ব্যথা বাড়তে থাকে। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ফারাহ্ স্বাভাবিক হয়। পরি দৌড়ে এসে নাহিয়ানের কোলে চড়ে বসে। তার পিছন পিছন ফাতেহ এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল ,
” ভাগনে পরি টা কে ধরে রাখা যাচ্ছিলো না বারবার বলে মাম্মা পাপ্পার কাছে যাবো শেষ চলেই এলো। ”
নাহিয়ান জেনিফারে উদ্দেশ্যে বলল ,
” আমরা উঠি তাহলে ঢাকা ফিরবো আজকে। ”
” জ্বি , আপনাদের চট্টগ্রাম দেখে খুশি হলাম। ”
ফারাহ্ উঠে পরি কে কোলে নিয়ে গালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরল নিজের সাথে। পরি ছোট ছোট হাতে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে খুশি হয়ে বলল ,
” আমলা নানা নানু , দাদা দাদুর কাছে যাচ্ছি। ”
” হ্যাঁ মাম্মা। ”
নাহিয়ানের এক হাত প্যান্টের পকেটে অন্য হাত দিয়ে ফারাহ্ কে আগলে নিল নিজের সাথে। ফারাহ্ কাঁধ গিয়ে ঠেকলো নাহিয়ানের বুকে। দুই জনে হাঁটছে। ফাতেহ আগেই চলে গেল ড্রাইভার কে গাড়ি বের করতে বলার জন্য। জেনিফার মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছে। কি সুন্দর মানিয়েছে নাহিয়ান , ফারাহ্’র জুটি। বাচ্চা টা ও খুব কিউট। নাহিয়ান ফারাহ্’র দুই জনের কার্বন কপি মেয়ে টা। মায়ের কোল থেকেই হাত নাড়িয়ে কি কি বুঝাচ্ছে বাপ কে। গাড়ির কাছে যেতে গাড়ির ডোর খুলে দিল নাহিয়ান। ফারাহ্ , পরিকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসল। নাহিয়ান ফের ডোর লাগিয়ে দিয়ে অন্য পাশের ডোর খুলে নিজে ও গাড়িতে চড়ে বসে। গাড়ি চল নিজ গম্ভব্যে।
(সমাপ্তি)
®️আহমেদ মুনিয়া
•••••×কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ×