#দীপ্ত_গোধূলি
#লেখনীতে-স্বর্ণালী তালুকদার
#পর্ব-১২
– গোধূলি লগ্নে সূর্যের ছন্দপতন হয়ে যায়!
আনমনেই বলে ফেলে গোধূলি!পর মুহূর্তেই অচেনা পুরুষালী কন্ঠ শুনে এক সেকেন্ডও দেরি না করে পিছনে ফিরে তাকায় গোধূলি!চমকে উঠে ও।দীপ্ত এসেছে!ঠিক ওর পিছনে দাঁড়িয়ে।গোধূলির ধারণাতেও ছিল না এই সময় দীপ্ত ছাদে আসবে!এই সময়টা যে একান্তই ওর নিজের মতো করে কাটাতে ভালোবাসে।সূর্য ডুবার এই সময়টা যে ওর বড্ড প্রিয়!
এলোমেলো চুলে সূর্যটা আড়াল করে কাউকে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেকে সামলাতে না পেরে মুখ ফসকেই কথাটা বলে ফেলেছে দীপ্ত!কিন্তু গোধূলি যখন ওর দিকে ফিরে তাকায় তখন চোখ গিয়ে আটকে যায় গোধূলির বাম গালের ঠিক মাঝখানে থাকা তিলটার উপর!কিছুতেই নজর ফেরাতে পারছিল না!চোখে দৃষ্টি ঘুরেফিরে বারবার ওইখানেই চলে যাচ্ছে।গোধূলি নেহাতি একটা বাচ্চা মেয়ে!দীপ্তের চাহনির মানে বা গভীরতা কোনোটাই বুঝার মতো ওর বয়স হয় নি!তাই দীপ্তকে ওইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলেই উঠলো,
– এইভাবে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছো কেন?ভূত দেখলে নাকি?
– না!
– তাহলে?
– পরী!
– মানে?
……
– কি হলো কথা বলছ না কেন?
…….
দীপ্ত ওর দিকেই তাকিয়ে আছে এক ধ্যানে।গোধূলি গাল ফুলিয়ে বলে,
– এতক্ষণে বুঝি তোমার আমার কথা মনে পড়লো?বাড়িতে এসেছ তো সেই কখন!
……
– ওই হ্যালো! আমি কিছু বলছি তোমায়!শুনতে পাচ্ছ না?
দীপ্তের চোখের সামনে হাত নেড়ে বললো গোধূলি।
……
দীপ্ত তখনও চুপ!ওর যেন কোনো কথা কানেই যাচ্ছে না!নেশালো চোখে গোধূলির দিকে তাকিয়েই আছে!
– সাজিবু মেজো মা তোমায় ডাকে।
আলিফ এসেছে গোধূলিকে ডাকতে।সিঁড়ির কাছ থেকে বলেই ও চলে গেলো!আলিফকে এক পলক দেখে গোধূলি মাথা উচু করে দীপ্তের দিকেই তাকিয়ে আছে!দীপ্তের ভাবমূর্তি কিছুই ও বুঝতে পারছে না!
গোধূলি নিচে নামছে না বলে আলিফ আবার আসে।গোধূলির কাছে এসে অনেকটা চিৎকার দিয়েই বলে,
– সাজিবু সেই কখন তোমায় বললাম যে মেজো মা ডাকছে তুমি কি আমার কথা শুনতে পাও নি?
আলিফের চিৎকারে দীপ্ত আর গোধূলি দুজনেই কেঁপে উঠে।
-হুম চল!
গোধূলি চলে যেতেই দীপ্ত ওর ধ্যান থেকে বেড়িয়ে এসে বলে উঠে,
– সাজিবু!মানে সাজি?ওহ শীট!তারমানে ওই হচ্ছে গোধূলি!হাতের কাছে পেয়েও ওকে কিছু বলতে পারলাম না!
দীপ্ত রাগে কটমট করে বলল,
– আমাকে লজ্জায় ফেলা?মায়ের বলা কথাটা তো বেমালুম ভুলে গেয়েছিলাম!যাইহোক এই বার তো চিনে নিয়েছি!তোমায় তো আমি পরে দেখে নিবো গোধূলি রানী!
•
– ইহান তোর ভাইয়া আর দীপ্তকে ডেকে নিয়ে আয়। অনেক রাত হয়েছে তো ডিনার কখন করবে?সেই কখন থেকে দুটোতে মিলে কি এমন করছে যে খাওয়ার সময়টুকুও পাচ্ছে না?
– আমি কি জানি!তোমার ছেলেকে জিজ্ঞাস করো গিয়ে!
জাকিয়া চোখ রাঙিয়ে বললো,
– একদম মুখে মুখে কথা বলবি না!যা গিয়ে ওদের ডেকে নিয়ে আয়!
ইহান একটু বেশিই ইমোশনাল!মায়ের এই টুকু কড়া কথাতেই মুখ গোমড়া করে দিয়ে আহান আর দীপ্তকে ডাকতে চলে গেল!
•
– দীপ্ত ভাইয়া!এই দীপ্ত ভাইয়া উঠো!আর কত ঘুমাবা?কখন থেকে ডাকছি!এই দীপ্ত ভাইয়া!
– আহ!ইহান যা তো!বিরক্ত করিস না!এত সকালে কেউ ঘুম থেকে উঠে!আরেকটু ঘুমাতে দে!
– এত সকাল কোথায়?সকাল নয়টা বাজে!ততক্ষণে হয়তো দাদাজানও মর্নিং ওয়াক করে বাসায় চলে এসেছে!দাদাজান যদি জানতে পারে আজকে আমি এখনো মর্নিং ওয়াক করতে যাই নি তাহলে আজ আর আমার নিস্তার নেই!দাদাজান আমাকে মেরেই ফেলবে!
দীপ্ত ক্ষানিকটা বিরক্ত হয়ে উঠে বসে বলল,
– আহ ইহান!কি বকবক শুরু করেছিস তুই?
– সকালে বাড়ির সবাইকে মর্নিং ওয়াক করতে হয়!এটা দাদাজানের আদেশ!কাল রাতে তুমি আর ভাইয়া যখন ডিনার করছিলে তখন দাদাজান তোমার খুঁজ করতে এসে জানতে পারে তুমি ডিনার করতে নিচে গেছো!তখন দাদাজান তোমায় না পেয়ে আমাকে বলে গিয়েছিল সকালে তোমাকে ডেকে দিতে মর্নিং ওয়াক এ যাওয়ার জন্য!দাদাজান যদি এসে দেখে তুমি এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছ তাহলে বুঝতে পারছ কি হবে?
মিনমিনে স্বরে বললো ইহান।দীপ্ত কর্কশভাবে বললো,
– কি হবে?
– লঙ্কা কান্ড!
কপাল কুচকে তাকায় দীপ্ত।বিস্মিত হয়ে বললো,
– তাই?
ইহান শীতল কণ্ঠে বলে,
– হুম!তুমি জানো না একদিন ওয়াক করতে না গেলে দাদাজান ঠিক কি কি শাস্তি দিয়ে থাকে!
দীপ্ত চিন্তায় পড়ে যায়।একটু ভেবে নিয়ে বলে,
– তাহলে কিছু একটা করতেই হয়!আচ্ছা এই রুমের একটা ব্যালকনি আছে না?
– হুম আছে তো!ব্যালকনি দিয়ে তুমি কি করবে?
– আমার সাথে আয় তাহলেই বুঝতে পারবি!
– মানে?
– আরে আগে আয় তো পরে বলছি!
•
– কি ব্যাপার আহসান?তুমি আজকে মর্নিং ওয়াক এ যাও নি কেন?
– আ আ আসলে বা বা বাবা আমি আসলে
আহসান সাহেব আমতা-আমতা করছে।আনোয়ার সাহেব বাজখাঁই গলায় বললেন,
– কি বলছো স্পষ্ট করে বলো!
– আসলে বাবা আজকে আমার পেট খারাপ ছিল!কালকে রাতে বাড়িতে ভালো মন্দ খাওয়াটা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল!তাছাড়া বিয়ে বাড়িতেও..।
একদমে কথাগুলো বলে শেষ করলেন আহসান সাহেব।
– থাক হয়েছে আর বলতে হবে না!যা বুঝার আমি বুঝে গেছি!তা বলি কি এই বার খাওয়া দাওয়াটা একটু কমাও!খাবার যখন হজম হয় না তাহলে এত খাওয়ার কি দরকার?আজকে মর্নিং ওয়াক এ না যাওয়ার জন্য তোমার শাস্তি হলো,তোমার সকালের নাস্তা খাওয়া বন্ধ!
– বাবা!
করুন স্বরে বললো আহসান সাহেব।আনোয়ার সাহেব সুর টেনে বলেন,
– কি!মর্নিং ওয়াক এ না যাওয়ার সময় শান্তি কথা বুঝি মনে ছিল না?
বাবার অবস্থা দেখে আহান ঠোঁট টিপে হাসছিল!বাবার চোখ রাঙানো দেখে কোনোমতে হাসি আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে!
– আহান তোর বাবার দিকে খেয়াল রাখবি ও যাতে কোনো খাবারে হাত না দেয়!ঠিক আছে?
– জ্বি দাদাজান!
– নানাজান!
– এই তো দীপ্ত চলে এসেছে।দেখো!দেখে কিছু শিখো!ছেলেটা তো সবে কালই এলো!তারউপর এতটা পথ জার্নি করে আসার পরেও সকালে ঠিকই মর্নিং ওয়াক করে চলে এসেছে!
আহসান সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বললেন।
– দাদাজাজাজান?
গোধূলি আর কিছু বলতে পারলো না!তার আগেই আহান ওর মুখ চেপে ধরেছে!
– প্লিজ বোন চুপ কর!কিছু বলিস না তোকে অনেক আইসক্রিম আর চকলেট দিবো পাক্কা!
– উম্মম উম্মম!
– উফস সরি!
গোধূলির মুখ ছেড়ে দিয়ে আহান স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়!
– উফ বাবা এই ভাবে কেউ কারো মুখ চেপে ধরে?
আরেকটু হলে তো আমার প্রানটাই বেরিয়ে যাচ্ছিল বড়দাভাই!
– সরি!তুই যে ভাবে চিল্লাতে যাচ্ছিলি এ ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল?
#দীপ্ত_গোধূলি
#লিখনীতে-স্বর্ণালী তালুকদার
#পর্ব-১৩
– চিল্লাবো না তো কি করবো!তুমি জানো ওরা কি করেছে?
– কি করেছে?
ফ্ল্যাসব্যাক___
ঘুম থেকে উঠে আদিবা আর রাবিয়া বেগমকে নিয়ে মর্নিং ওয়াক করতে যাওয়া গোধূলির রোজ সকালের ধরা-বাধা রুটিন!মর্নিং ওয়াক শেষ করে বাড়ি ফিরে এসে ব্যালকনিতে বসে সূর্য উদয় না দেখলে নাকি গোধূলির দিনটাই ভালো কাটে না!আজও তার ব্যাতিক্রম হলো না!প্রতিদিন এর মতো আজও ফেভারিট দোলনাতে এক কাপ চা আর প্রিয় লেখিকার একটা বই নিয়ে বসে পড়েছিল!চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে যেই না কাপটা রাখতে যাবে ঠিক তখনই দেখতে ফেলো আহানের ব্যালকনি থেকে দঁড়ি দিয়ে কেউ নিচে নামছে!চোর ভেবে চিল্লাতেই যাচ্ছিলো কিন্তু চিল্লানোর আগে একটু ভালো করে দেখে নেওয়া দরকার!এটা ভেবে ভালো করে তাকিয়ে দেখে চোর নয়!উক্ত ব্যক্তিটি হলেন স্বয়ং দীপ্ত!কিছুক্ষণ পর ইহানও ওই দঁড়ি বেঁয়ে নিচে নেমে যায়!ঘটনাটা কি হলো কিছুই বুঝলো না গোধূলি তাই নিচে এসে দেখতে যাচ্ছিল!কিন্তু যখন দীপ্তকে আনোয়ার সাহেব প্রশংসা করছিলেন তখন গোধূলির কাছে সবটা পরিষ্কার হয়ে যায়!
বর্তমান____
– বড়দাভাই তুমি ভাবতে পারছো দাদাজানের সাথে কত বড় গাদ্দারি করা হচ্ছে!এটা কি অন্যায় করা হচ্ছে না? আমি তো এই অন্যায় মেনে নেব না! আমি এক্ষুনি দাদাজানকে সব বলে দিবো যে ওরা মর্নিং ওয়াক করতে যায় নি!ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল!এখন ব্যালকনি দিয়ে নিচে নেমে গিয়ে বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে ঢুকেছে!যাতে দাদাজান এটা ভেবে নেয় যে ওরা মর্নিং ওয়াক করেই এসেছে!দাদাজানের সাথে এই বিশ্বাসঘাতকতা তো আমি মেনে নিবো না!দাঁড়াও আমি বরং বলেই দেই!
– দাদাজাআআন!
– আরে তোর কি হয়েছে? বার বার এইভাবে চিল্লাসছিস কেন?
আহান গোধূলির মুখটা আবারও চেপে ধরেছে!
– তোকে বললাম না অনেক আইসক্রিম আর চকলেট দিবো!তারপরেও কেন এমন করছিস?এইবারের মতো ওদের ছেড়ে দে!দীপ্ত তো আর দাদুর এই নিয়ম জানে না!এর পর থেকে আর ভুল হবে না দেখিস তুই!
– ঠিক আছে ঠিক আছে!এত রিকুয়েষ্ট করতে হবে না!আজকে প্রথম দিন বলে ছেড়ে দিচ্ছি!এর পর কিন্তু আমি ছাড় দিবো না বলে দিলাম বড়দাভাই!
– ওকে বোন! অনেক বকেছিস!এই হাত জোর করে বলছি আর করবে না!এবার তুই যা এখান থেকে।
– হুম হুম যাচ্ছি!আমার আইসক্রিম আর চকলেট যেন ঠিক সময়ে আমি আমার রুমে পেয়ে যাই!
কথাটা অনেকটা জোরেশোরেই বলল গোধূলি।দীপ্ত শুনতে পেয়ে আহানকে এসে জিজ্ঞাস করে,
– আহান ওই বাচাল মেয়ে তোকে কিসের জন্য থ্রেট দিয়ে গেলো রে?
– আমার কোনো দোষ ঢাকার জন্য দেয় নি!তোমাদের জন্যে!
দীপ্ত কপালে কিঞ্চিৎ ভাজ ফেলে বললো,
– মানে?
– মানে আর কি!তোমরা দুজনে মিলে যা করছ তা গোধূলি দেখে নিয়েছে!এক্ষুনি দাদাজানকে বলতে যাচ্ছিলো আমি ওকে বলতে দেয় নি!কথাটা না বলার প্রতিদান হিসেবে ওকে আইসক্রিম আর চকলেট দিবো বলেছি!
– কি দরকার ছিল তোর আগ বাড়িয়ে বলতে যাওয়ার? নানাজানকে বলেই দিতো তারপর দেখতাম কি হতো!
– দেখবি কি হতো?
– কি দেখবো?
– ওই যে দেখ!
আহান ওর বাবাকে দেখিয়ে বলল।
– তুই মামুকে কেন দেখাচ্ছিস?আর মামু মুখটা ওমন বাংলার পাঁচ এর মতো করে রেখেছে কেন?
– হুম সেটাই তো তোকে দেখাবো বলেছি!
– আহান!হেয়ালি না করে বল তো কি বলতে যাচ্ছিস!
– আব্বু আজকে মর্নিং ওয়াক এ যায় নি বলে দাদাজান আব্বুকে সকালের নাস্তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে!তাও আব্বু পেট খারাপ বলে শাস্তিটা দুপুর পর্যন্ত! যদি সুস্থ শরীরে মিস করতো তাহলে শাস্তির পরিমাণ আরো বাড়তো!
– সিরিয়াসলি!নানাজান এত স্ট্রিক্ট?
– এবার তো চলে এসেছিস আস্তে আস্তে সব জেনে যাবি!চল এবার ফ্রেশ হয়ে নিবি!
বর্তমানে_____
এম্বুল্যান্স এর শব্দে অতীত থেকে বেড়িয়ে আসে দীপ্ত!
আঁতকে উঠে দীপ্ত।বিড়বিড় করে বললো,
– এই রাতের বেলায় বাড়িতে এম্বুল্যান্স কেন? নানুজানের আবার কিছু হলো না তো?
দীপ্ত আর এক মুহূর্তও দেরি না করে দৌঁড়ে নিচে চলে যায়।এম্বুল্যান্স এর শব্দ শুনে দীপ্তের রাবিয়া বেগমের কথাই সর্বপ্রথম মাথায় আসে!নিচে গিয়ে দেখতে পায় রাবিয়া বেগম সিঁড়ি বেয়ে ড্রয়িং রুমের দিকে নামছে।
দীপ্ত রাবিয়া বেগমের কাছে গিয়ে বললো,
– নানুজান তুমি ঠিক আছো তো?
– আমি ঠিক আছি দীপ্ত!কিন্তু….
রাবিয়া বেগম আর কিছু বলতে পারেন নি তার আগেই দীপ্তের কপাল আর হাত দেখে উনি আতকে উঠে বলেন,
– তোর কপাল কাটলো কি করে?হাতটা ওমন ভাবে জকম হলো কি করে?
– আমার কথা ছাড়ো নানু!কিন্তু কি?কার কি হয়েছে?বাড়িতে এম্বুল্যান্স কেন?
– তোর এমন হলো কি করে বল আমায়?
– আরে আমার কথা ছাড়ো তো!ও অল্প একটু কেটেছে ঠিক হয়ে যাবে!তুমি বলো কার কি হয়েছে?আর বাড়িতে তুমি একা কেন বাকিরা কোথায়?
রাবিয়া বেগম কাঁন্না করে দেন।
– নানু তুমি এভাবে কেঁদছো কেন?আমাকে বলো কি হয়েছে?
রাবিয়া বেগম একটু শান্ত হয়ে বললেন,
– সবাই হসপিটালে!সাজি…
গোধূলির নাম শুনেই দীপ্তের উত্তেজনা আরো বেড়ে গেলো!বেসামাল হয়ে পড়ে!নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে নিয়ে বলে,
– গোধূলি!গোধূলির কি হয়েছে আমাকে বলো নানু!কি হয়েছে আমার গোধূলির?
শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার করে কথাটা বলে দীপ্ত।
– সাজি বাথরুমে পড়েছিল!কপাল ফেঁটে অনেক ব্লিডিং হয়েছে!সবাই মিলে কত্ত ডাকাডাকি করলো কারো ডাকেই কোনো সাড়া দিলো না!ওর পালসও পাওয়া যাচ্ছিলো না!আমি আর কিছু জানি না দীপ্ত!আমাকে ওর কাছে চল তুই!
দীপ্ত সিঁড়িতেই ধপ করে বসে পড়ে!দীপ্তের চোখ দুটো অন্ধকার হয়ে এসেছে!মাথার নিউরন গুলো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে!
– এই দীপ্ত আমাকে নিয়ে চল না রে সাজির কাছে!এই দীপ্ত আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস তুই!
দীপ্ত তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
– কিচ্ছু হবে না ওর!আমি হতে দেবো না!আমি থাকতে ওর কিচ্ছু হতেই পারে না!নানু গোধূলিকে কোন হসপিটালে নেওয়া হয়েছে?
– লাইফকেয়ার হসপিটাল!
– তোমার যাওয়ার দরকার নেই!তুমি বাড়িতেই থাকো!
– না আমি যাবো!আমাকেও তোর সাথে নিয়ে যা!
– ঠিক আছে চলো।
#চলবে……
.