দীর্ঘ রজনী পর্ব -৪১+৪২

নাম:#দীর্ঘ_রজনী।
লেখনীতে:#সাদিয়া_আফরোজ।
পর্ব:৪১

ডার্ক রেড কালারের মধ্যে হেবি স্টোন ওয়ার্ক গাউন পরেছে সাজি।সাজির ডাগর চোখ জোড়ায় কাজল ছোঁয়াতে নিষেধ করেছে সাদ।রিমিকে বলে দিয়েছে যতটা সিম্পল থাকা যায় ঠিক ততটাই সাজাতে। সাদের ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী রিমি সাজির চোখে শুধু আইলাইনার দিয়ে দিতে বলেছে। পার্লারের মহিলা দুটো সাজিকে খুব সিম্পল লুকে তৈরি করে দিয়েছে। মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে গাড় লাল লিপস্টিক আর চোখে আইলাইনার। চুলে মাঝখানে সিঁথি কেটে খোঁপা করে দেয়। সেই খোঁপা পুরোটা লাল গোলাপ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। কানে বড় বড় ঝুমকো দুহাত ভর্তি চুড়ি ব্যাস এই টুকুই ছিলো সাজ। শেষে ওড়নার একপাশ ছেড়ে রেখে আরেক পাশ দিয়ে ঘোমটা দিয়ে দেওয়া হয়। সাজগোজ শেষ হওয়ার পর সাজি নিজে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আয়নার মধ্যে বারকয়েক দেখে নেয়। নিজেকে নিজের কাছে খুব বেশি সুন্দর লাগছে। আচ্ছা সাদ ভাইয়ের পছন্দ হবে তো? নিজের করা প্রশ্নে নিজে লজ্জায় লাল হয় সাজি।

রিমি ,লতা আর রেনু মিলে সাজিকে স্টেজের দিকে নিয়ে গেলো। ঠিক তখনই সাদ দেখে হা হয়ে যায়। সাজি মাথা তুলে সাদের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়।সাজি মাথা নিচু করে মিনমিনে গলায় বলে উঠলো, লোকটা ভীষণ নির্লজ্জ এতো মানুষের মাঝখানে দাড়িয়ে হাবলার মতো তাকিয়ে আছে কেন!সবাই কি মনে করছে এখন!

রেনু মুখ টিপে হেসে বলল,, সাজি আপা সাদ ভাই তো শেষ। বেচারা হয়তো বেহুঁশ হয়ে যাবে।
রিমি সাজিকে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে বললো, বদরাগী সাদ ভাই কুপোকাত! রিমির পাশ থেকে লতা গলা খাকিয়ে রিমিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,, সাজি আপার কথা বাদ দাও আপু। বরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় হ্যান্ডসাম ছেলেটা চারবার তোমার খোঁজ করেছে। এখন দেখো কেমন করে হা হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে আছে।
রিমি পিট পিট করে সাদের পাশে দাঁড়ানো রায়হানের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি বেটা হা হয়ে তাকিয়ে আছে। রিমি দাঁত কিড়মিড় করে বললো,, এইটারে পরে দেখে নিবো।

সাজির একপাশে রেনু আর লতা অন্য পাশে রিমি তার সামনে গুটি গুটি পায়ে ফেলে এগিয়ে আসছে চাঁদ। সবাই মুচকি হেসে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সাজি স্টেজে ওঠার আগে চাঁদ সাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় কোলে ওঠার জন্য। যা দেখে সবাই খিলখিল করে হেসে উঠে।সাজি নিজেও হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরার জোগাড়। চাঁদকে ছোট পরী থেকে কম লাগছে না। সাদা রঙের বার্বি ড্রেস পরেছে চাঁদ,যা সাদ নিজে এনেছিল। সাদ হাত বাড়িয়ে চাঁদকে কোলে তুলে দুগালে চুমু আটলো। রায়হান এগিয়ে চাঁদকে সাদের কোল থেকে নিজের কোলে তুলে নেয়। অতঃপর সাদ হাত বাড়িয়ে সাজির হাত ধরে স্টেজে তুলে। সাজি লজ্জায় সাদের দিকে ঠিক করে তাকাতে না পারলেও, এইদিকে সাদ ঠিকই সাজির দিকে তাকিয়ে নিজেকে সবার সামনে কঠিন মাপের নির্লজ্জ প্রমাণ করে দিলো। রায়হান সাদকে খোঁচা মেরে বার কয়েক বলেছে , স্যার ম্যাম আখের আপনারই হবু বউ ।যাকে আজীবন চোখের সামনে দেখতে পাবেন। তার থেকে বরং আমরা যারা আছি তাদের দিকে একটু তাকান! আমরাতো চব্বিশ ঘন্টা আপনার সাথে থাকবো না। রায়হানের কথা শুনে সাদ বরাবরের মতো গম্ভীর গলায় বলল,, একবার কারো প্রেমে পড়ে দেখো। তাকে দেখার জন্য আজিবনও কম পড়বে। ব্যাস রায়হানের মুখ বন্ধ।

বিন্দু রশনির পাশে দাঁড়িয়ে সাদ আর সাজির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,, রশনি আপু ! সাজি ঠিকই বলেছে আসলেই তাদের জুটি দেখলে যে কেউ বলবে ” মেইড ফর ইচ আদার। দে লুক কিউট টুগেদার”। দেখ না দুজনকে কি সুন্দর মানিয়েছে! সাজিকে পুরো পাকিস্তানি বউদের মতো লাগছে। আমি একশো পার্সেন্ট শিওর সাদ ভাই নিজে বলেছে সাজিকে এইভাবে সাজাতে।

টলমল চোখে দুইজনের দিকে তাকিয়ে আছে রশনি। তার একতরফা ভালোবাসা কখনো পূর্নতা পাবে না তা রশনি অনেক আগ থেকেই জানতো। তাও কেন জানি ভালোবাসাটা ছাড়তে পারেনি। না ছাড়তে পেরেছে সাদকে নিয়ে কল্পনা জগৎ সাজানো। কিন্তু আজ সব কিছুর ইতি টানতে হবে।রশনি টেনে নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ জোড়া আলতো হাতে মুছে বললো,, হ্যা ঠিক বলেছিস। দুজনকে একসাথে খুব সুন্দর মানিয়েছে।

বিন্দু চশমা ঠিক করে রশনির দিকে তাকিয়ে বলল,, যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া মুশকিল হলেও মেনে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। তোমার জন্য বেষ্ট কিছু অপেক্ষা করছে আপু। তুমি কারো লাষ্ট প্রায়োরিটি হয়ে নয়, বরং তুমি ফাস্ট প্রায়োরিটি হবে। তুমিও কারো জন্য মেন্ডেটোরি বিষয়ের মতো হবে। যার শুধু তোমাকেই লাগবে।
রশনি বুক ফুলিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে মুচকি হেসে বলল,, হ্যা তুই ঠিক বলেছিস। চল ওইদিকটায় যাই একটু পরে রিং পরানো হবে। এইপাশ থেকে ছবি ছবি ভালো আসবে না।

বিন্দু ঠোঁট এলিয়ে হেসে রশনির হাত ধরে স্টেজের পাশে দাঁড়ালো। রশনি বুঝতে পেরেছে এতেই অনেক। রশনির জন্য সাদ ভাই মরীচিকা ব-ই কিছুই না। কারন সাদ ভাইয়ের ফাষ্ট এন্ড লাষ্ট প্রায়োরিটি শুধুই সাজি। যেখানে রশনি নামের কারো অস্তিত্ব নেই,আর না হবে কখনো।

যেখানে সকল আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে সাদ সাজিকে আংটি পরিয়ে দেয়, সেখানে সাজিঁ আংটি হাতে নিয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে বসে রইল। না জানি আজ এতো লজ্জা কোথা থেকে আসল। সাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ফিস ফিস করে বললো,, বাই এনি চান্স অন্য কারো খেয়াল মাথায় আসলে সাথে সাথে ঝেড়ে ফেল। এই সাদ তোর পিছু এতো সহজে ছাড়বে না। তাড়াতাড়ি রিং পরিয়ে দে। নয়তো থা*প্প*ড় মে*রে দাঁত ফেলে দিবো।
সাদের কথা শুনে অবাক হলো সাজি। মুখ তুলে সাদের দিকে তাকিয়ে সাদের মত ফিস ফিস করে বলল, কতো বড় সাহস! বেশি করলে এক্ষুনি বাবাকে বলে বিয়ে ক্যানসেল করে দিবো। এমন বদরাগী ছেলেকে বিয়ে করবো না। আপনার হাতের বামে তাকিয়ে দেখুন পাত্র তৈরি আছে সাথে স্টেজ, আংটি আর পাত্রী সব। ইশারা করার দেরি আর আপনাকে রিপ্লেস করার দেরী। এখনো সময় আছে সুন্দর করে আদুরে গলায় বলুন। নয়তো গেলাম!

সবাই সাদ আর সাজির দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। না কেউ তাড়া দিচ্ছে ,না কেউ শব্দ করছে। সবাই তাদের এই খুনসুটি ভরা মুখের এক্সপ্রেশন দেখায় ব্যাস্ত।

সাজির এহেন কথায় অবাক হলো সাদ। পাশে তাকিয়ে দেখে সত্যি রিসাদ দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছে। সাদ চোখ ছোট ছোট করে বলে,, তোকেতো আমি পরে দেখছি।
সাজি আংটি হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে বিড়বিড় করে বললো,, তাড়াতাড়ি করুন।নয়তো গেলাম!
সাদ জানে এই মেয়ে তাকা নাকানিচোবানি ঠিকই খাওয়াবে। তাই সাদ মুচকি হেসে আদুরে গলায় বলল,, তোমার কোলাহল পূর্ণ ব্যাস্ত শহরে এই নিঃসঙ্গ আমিকে একটু সঙ্গ দিবে?
সাদের কথা কর্ণগোচর হতেই সাজি মুচকি হেসে সাদের আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে দিলো। এমন সময় সবাই হই হই করে উঠে। সবির নজর এড়িয়ে সাজি সাদের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো, সেইতো আমার ব্যাস্ততম শহরটা আপনাকে ঘিরে। যেখানে আপনি কখনোই নিঃসঙ্গ নন। বরং কেউ প্রতিনিয়ত আপনাকে তার কল্পনার জগত জুড়ে আঁকছে।

ঈষৎ ভেজা চোখে হাসলো সাদ। জীবনের শ্রেষ্ঠ চাওয়া যেন এখনই পূর্নতা পেলো। বোহু প্রতিক্ষার পর ভালোবাসার মানুষটা আরেকপা এগিয়ে তার নামে নিজেকে জুড়ে দিলো। এর চেয়ে সুখ কর বোধহয় আর কিছুই হয় না।

রাত প্রায় এগারোটা এংগেইজমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে আরো আধা ঘন্টা আগে। খাওয়া দাওয়া শেষ এখন যে যার যার গন্তব্যে পৌঁছানোর তাগিদে ছুটছে।সাদ আর রায়হান গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে সবাইকে বিদায় জানাচ্ছে।।বাগানে বসে রশনি,বিন্দু, শেফালী, ইরিনা, জিহাদ আর আজাদ মিলে আড্ডা দিচ্ছে।রিমিকে বারবার মানা করার সত্বেও থামেনি।রিমি লতা আর রেনুর সাথে ঘর গোছানোর কাজ করছে। অপর দিকে বড়রা সবাই মিলে ড্রয়িংরুমে বসে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা ব্যাস্ত।

সাজি তার ঘরে গেছে চেন্জ করেতে।ওড়না ফেলে আয়নার সামনে বসে খোঁপায় লাগানো ফুল গুলো খুলে রাখলো সাজি ।জিবনটা কোথা থেকে কোথায় মোড় নিলো তা ক্রমশো ভেবে চলেছে। একটা সময় সাদ ভাই নামক মানুষটাকে ভীষণ ভয় পেতো আর এখন! সেই মানুষটি একান্ত তার ব্যক্তিগত হতে চললো। কেন জানি তার সার্নিধ্যে এলে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলে মনে হয়।সাদের তখনকার কথা ভেবে মুচকি হেসে জামার চেইন খুলতেই খট করে দরজা বন্ধ করার আওয়াজ পেলো। সাজি চেইন টানতে টানতে বললো,, সেই কখন বলেছি আসতে । এখন এলি? তাড়াতাড়ি চেইনটা খুলে দে লতা। জামাটা গায়ে বিঁধছে।

সাজির কথা শেষ হতেই দুটো হাত অবাধ্য বিচরন করতে লাগলো সাজির উন্মুক্ত পিঠ জুড়ে। চমকে উঠলো এই স্পর্শে ঘা ঘিন ঘিন করছে তার। সাজি পেছনে ফিরে হকচকিয়ে গেল। ভয়ে দুপা পিছিয়ে যেইনা ওড়না নিতে যাবে তার আগেই নিশান বিভৎস হেসে ওড়না হাতে মুড়িয়ে নিতে নিতে বলল,, কি দরকার ওড়না পরার? এইভাবে তোকে দেখতে দারুন লাগছে। আগের থেকে বেশি এট্রাকটিভ হয়েগেছিস।

কেঁপে উঠলো সাজি। দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো নোনা জল। পিছিয়ে গিয়ে জানালার পর্দা টেনে নিজেকে ঢেকে নিলো।
নিশান বাঁকা হেসে বলল,দিলিতো মুডটা নষ্ট করে!
সাজি কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,, আর এক পা এগোলে চিৎকার করে সবাইকে ডাকবো। এগোবেন না। চলে যান এইখান থেকে।
নিশান মাথা কাত করে হেসে উঠে পা বাড়ায়। সাজি যেইনা চিৎকার করতে নিবে তার আগে নিশান সাজিকে দেয়ালে ঠেসে মুখ চেপে ধরে। মূহূর্তে সাজির নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হতে লাগল। চিৎকার করে ডাকতে চেয়েও পারলো না। সাজি নিশানকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু একটা ছেলের গায়ের জোরের সাথে পেরে ওঠা মুশকিল। সাজি মনে মনে একটাই প্রার্থনা করছে কেউ যেন রুমে চলে আসে, একবার এসে তাকে বাঁচিয়ে নেয়।

সবাইকে গাড়িতে তুলে দিয়ে সাদ আর রায়হান বাড়ির ভেতরে ডুকলো। ড্রয়িংরুমে সবাই আছে শুধু সাজি নেই।সাদ নজর ঘুরিয়ে দেখে সাজি বাদে রিমি,লতা,রেনু সবাই এইখানে আছে। শুধু সাজি নেই। সাদ সেঁজুতিকে উদ্দেশ্য করে বলল,, সাজিঁ কোথায় মামুনী? তোমরা সবাই এখানে সাজি নেই কেন?
অনিলা রহমান সাদের কথা শুনে বললো,, হয়তো ইরিনার সাথে আছে। সাদ নাকোচ করে বললো,,না নাই, ইরিনা,রশনি এরা সবাই বাগানে।
লতা হড়বড়িয়ে সাদের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,, ভাইয়া আপুতো রুমে গেছে চেন্জ করতে।
লতার কথা শুনে সাদের মনে পড়লো নিশানের কথা। সাদ চমকে উঠে সেঁজুতিকে জিজ্ঞেস করলো,, মামুনী!সাজি রুমে হলে নিশান কোথায়? এখানে তো নেই,বাইরেও দেখিনি।

সেঁজুতি কিছু বলবে তার আগে নিশানের মা বললো,, ওতো ওপরে গেছে রেষ্ট নিতে।
নিশানের মায়ের কথা শেষ হতেই সেঁজুতি অনিলা দাঁড়িয়ে গেল। সাদ হাত মুঠ করে দাঁতে দাঁত চেপে চিৎকার করে বললো ,, নিশান এইবাড়িতে আছে জেনেও তোমরা সাজিকে একা ছাড়লে কেন? নিশানকে এইবাড়িতে এনে প্রথম ভুল করেছো। আবার যদি সাজির কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে সত্যি বলছি খু*ন করে ফেলবো।সাদ এক মূহূর্ত না দাঁড়িয়ে সিড়ি বেয়ে দৌড়ে উপরে উঠে গেল। অদ্ভুত এক ভয়ে সাদের হাত পা অসাড় হয়ে আসছে। সাদ নিজেও জানে না আজ নিশানের সাথে কি করবে। হয়তো আজ একটা অনর্থ হয়েই যাবে।

কেউ কিছু না বুঝলেও সেঁজুতি, অনিলা,রেনু আর রায়হান ঠিকই বুঝেছে। তারা সাদের পেছন পেছন ছুটলো। জুবায়ের এতোটা সময় চুপ থাকলেও সাদের কথা , সেঁজুতি আর নিজের বোনের চেহারায় ভয় দেখে ছুটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগল। না জানি নতুন কোন বিপদ আসতে চলেছে।
নাম:#দীর্ঘ_রজনী।
লেখনীতে:#সাদিয়া_আফরোজ।
পর্ব:৪২

সাদ দৌড়ে গিয়ে সাজির রুমের দরজা ধা*ক্কা দিয়ে দেখে দরজা ভেতর থেকে লক করা।সাদ আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। এক মূহুর্ত অপেক্ষা না করে সাজির রুমের সাথে লাগোয়া রুমের বারান্দায় চলে যায়। সেই রুমের বারান্দা দিয়ে টপকে সাজির রুমের বারান্দায় গিয়ে পড়ে। সাদ সাজির রুমের মধ্যে গিয়ে থমকে গেছে। দেয়ালের সাথে সাজির হাত মুখ চেপে ধরে রেখেছে নিশান।সাজির চোখ বেয়ে অনবরত নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে। নিশান সাজির দিকে মুখ নিতে সাজি ধা*ক্কা দিতে শুরু করলো।নিশান এতোটাই সাজিতে বিভোর যে সাদের উপস্থিতি ওবদি টের পেলো না। সাদ দাঁতে দাঁত চেপে হাত মুঠ করে নিশানের নাক বরাবর ঘু*সি মা*র*লো। ব্যাথ্যায় আর্তনাদ করে ছিটকে প*ড়*ল নিশান। সাজি অশ্রুসিক্ত চোখে সাদের দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দেয়। সাদ সাজিকে টেনে জড়িয়ে নিলো বাহুডোরে। সাজির পিঠ উন্মুক্ত বুঝতে পেরে দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে ধাতস্থ করলো সাদ।সাদের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ হতে সাজি চিৎকার করে কেঁদে উঠে। সাজির প্রতিটা অশ্রুবিন্দু সাদের বুকে কাঁ*টা*র মতো বিঁধ*ছে। সাদ চেয়েও শান্ত করতে পারলো না সাজিকে। সাদ কোট খুলে সাজির গায়ে জড়িয়ে দিয়ে নিশানের কলার ধরে দাঁড় করালো। এই দিকে সবাই দরজা ধাক্কানো শুধু করেছে। সেঁজুতি আর অনিলা কেঁদেই চলেছে। জুবায়ের দরজা ভাঙার চেষ্টা করছে অনবরত। রায়হান বারান্দা টপকে সাজির রুমে গিয়ে দরজা খুলে দিল। সেঁজুতি আর অনিলা দৌড়ে সাজিকে জড়িয়ে ধরে। সাদ পর পর ঘু*সি মে*রে নিশানের নাক মুখ দিয়ে র*ক্ত বের করে ফেলেছে। নিশান সাদকে মা*রতে এলে রায়হান লা*থি মে*রে ফেলে দেয়। নিশান আবারো ছিটকে গিয়ে ফ্লোরে প*ড়ে, সাদ লা*থি দেয়া শুরু করে। সাদ মা*রতে মা*রতে চিল্লিয়ে বলে উঠল ,, তোর কতো বড় কলিজা তুই এই বাড়ি এসে আমার কলিজায় হাত দিস? আজ তোকে আমি মে*রেই ফেলবো। তোর সাহস কি করে হয় সাজঁবাতির গায়ে হাত দেওয়ার? তুই ওর গাল ছুয়েছিস!তোর ওই হা*ত আমি ভে*ঙে দিবো। সাদকে আজ অন্য রকম লাগছে। একদম অন্যরকম, ভয়ংকর এক সাদকে আবিষ্কার করেছে সবাই।চোখ মুখ লাল হয়ে ক্রমশো হিং*স্র হয়ে উঠছে। সাদের এই হিং*স্রতায় নিশানের অবস্থা শোচনীয় হচ্ছে। নিশান ব্যাথ্যায় চিৎকার করে থামতে বলছে। তবে সাদের কোনোরূপ মায়া হলো না সাদ মে*রে চলেছে। না তাকে কেউ থামাচ্ছে ,আর না থামানো যাবে বলে মনে হচ্ছে।

ছেলের এমন করুন অবস্থা দেখে আমজাদের বুক কেঁপে উঠল।আমজাদ ছেলেকে বাঁ*চা*তে এগিয়ে যেতে নিলে লুনা হাত ধরে আটকে দেয়। লুনার কাজে অবাক হয় আমজাদ। যেখানে নিশানের গায়ে কেউ হালকা আঁচড় কা*টলে লুনা কেঁদে কে*টে একাকার করে ফেলে, সেখানে লুনা তার আদরের ছেলেকে বাঁ*চা*তে মানা করছে? লুনা অশ্রুসিক্ত চোখে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল,, আজ যদি তুমি ওকে বাঁ*চা*তে যাও! তবে তোমার সাথে আমার সম্পর্কের ইতি এখানে টানতে হবে আমজাদ। স্ত্রীর এমন কথায় থেমে গেলেন আমজাদ। দুহাত মুঠ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
জুবায়ের একপাশে দাড়িয়ে চুপ করে আছে। না তিনি আটকানোর চেষ্টা করছে না মা*র*তে গেছে। শুধু দাঁতে দাঁত চেপে নিশানের র*ক্তা*ক্ত শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে।
রেনু আর লতা ভয়ে জড়সড় হয়ে এক কোণে দাঁড়িয়ে রইল।
রিমি সাজির পিঠে হাত বুলিয়ে থামানোর চেষ্টা করছে। সাজিঁ সাদের এহেন ভ’য়ং’ক’র রূপ দেখে ভয়ে জড়সড় হয়ে মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো।সাদকে রাগতে দেখেছে ঠিকই কিন্তু এতোটা হিং*স্র আর ভ*য়*ঙ্ক*র ভাবে রেগে মা*রতে দেখেনি।সাজি কেঁপে উঠছে বারবার। সেঁজুতি চোখ মুছে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছে।সাজি পারলে মায়ের বুকের ভেতরে লুকিয়ে পড়তো। অনিলা রহমান পুলিশকে কল দিতে মোবাইল হাতে নেয়। জুবায়ের বোনের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে নিরেট স্বরে বলল,, আধ ঘন্টা পরে আমি নিজে কল দিবো। এই আধ ঘন্টা সাদকে দেওয়া হলো। রায়হান ঘড়ি চেক করে মোবাইল হাতে নিয়ে কাউকে কল দিয়ে আবার মোবাইল রেখে দিলো।
বাড়ির ভেতরের চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো রশনিরা। বাড়ির ভেতরের পরিস্থিতি দেখে থমকে গেছে সবাই।অল্প সময়ে এতো কিছু হয়ে গেলো!

সাজি ভয়ে ভয়ে মায়ের বুক থেকে মাথা তুলে নিশানের দিকে তাকালো। নিশানের কোনো নড়াচড়া নেই,তাও সাদ মা*র*ছে তাকে। সাজি এই সব কিছু দেখে হাত কাঁপতে শুরু করলো। দাঁত মুখ খিচে আসছে তার। সেঁজুতি মেয়ের এমন অবস্থা দেখে চিৎকার করে কেঁদে উঠে জুবায়েরকে ডাকে। অনিলা রহমান সাজির মুখে আলতো চা*পড় মে*রে সাজিকে ডেকে ওঠে কিন্তু সাজি দাঁত মুখ শক্ত হয়ে কেঁপে চলছে। রিমি সাজির মাথায় হাত বুলিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। রায়হান সাদের হাত টেনে ধরে সাজির দিকে ইশারা করে বললো, এই কীটকে মেরে হাত ময়লা না করে ম্যামের কাছে যান। ম্যামের অবস্থা ভালো না। সাদ যতক্ষনে নিশানকে ফেলে সাজির কাছে যাবে ততক্ষণে সাজি সেন্সলেস হয়ে যায়। সাদ তার মাকে সরিয়ে সাজির হাতটেনে ডেকে ওঠে। কিন্তু সাজির কোনো সাড়াশব্দ নেই। রায়হান হড়বড়িয়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। রেনু আর লতা পানি আনতে ছুটে বেরিয়ে পড়ে। সাদ সাজিকে ডেকে চলেছে অনবরত। সেঁজুতি মেয়ের এমন অবস্থা দেখে বুক থা*ব*ড়ে কাঁদছে। রিমি সেঁজুতিকে শান্তনা দিয়ে চলছে। জুবায়ের ডাক্তারকে কল দিতে চেয়েও পারছে না। হাত কাপার কারনে বারবার মোবাইল হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে। অনিলা ভাইয়ের এমন অবস্থা দেখে মোবাইল নিয়ে নিজে কল করলো।
লুনা দু’চোখ তখনো সিক্ত। লুনা এক দৃষ্টিতে সাজির দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটাকে কিছু সময় আগেও কতটা হাঁসি খুশি দেখেছিলো। সাজির হাসি মুখে চুমু এঁকে লুনা বলেছিলো ,কারো নজর না লাগে। এখন দেখো!সেই তো তার ছেলের নজর লাগলো।এমন নজর যা ধ্বং*স ডেকে আনে।
সাজির হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। সাদ সাজিকে বিছানায় সুইয়ে হাত-পায়ের পাতা মালিশ করতে লাগলো। রেনু আর লতা পানি নিয়ে এলো। তার পেছনে রায়হান ডাক্তার নিয়ে হাজির হয়েছে। যদিও রায়হান নিশানের অবস্থা দেখে আগে ডাক্তারকে কল করে ছিলো। কিন্তু এখন দেখছে সাজির অবস্থা ভালো না।
ডাক্তার রুমে ডুকে নিচে পড়ে থাকা র*ক্তা*ক্ত দে*হ দেখে ঘাবড়ে যায়। রায়হান সেই দিক থেকে চোখ সরিয়ে বললো,, এইটা পেশেন্ট না। পেসেন্ট এই দিকে।
রায়হানের কথা শুনে ডাক্তার আকাশ থেকে পড়লো। এক মূহুর্তের জন্য ডাক্তারের মনে হলো রায়হান মশকরী করছে।
ডাক্তার সাজিকে চেকাপ করা অবস্থায় পুলিশের গাড়ি এসে থামে বাড়ির দরজায়। পুলিশের এসআই এসেছে সাথে দুজন কনস্টেবল। এসআই হামিদ ঘটনাস্থলে এসে নিশানকে দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেললো। এই দিকে কনস্টেবল দুজন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কে অপরাধী আর কে তার শিকার তা বুঝা মুশকিল। রায়হান এসআই-কে পুরো ঘটনা খুলে বললো। হামিদ কনস্টেবল-কে ইশারা করে। কনস্টেবল দুজন ইশারা পেয়ে একজন নিশানের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেয়। অন্য জন তৎক্ষণাৎ এম্বুলেন্স কল করে আসতে বলে। পুলিশ একে একে সবার কাছ থেকে ঘটনা জেনে নিচ্ছে। সেঁজুতি কান্নার জন্য কিছুই বলতে পারেনি। এসআই হামিদ লুনা আর আমজাদকে দেখিয়ে রায়হান কে জিজ্ঞেস করে, এরা কারা?
রায়হান নিশানকে দেখিয়ে বলল,, ওর পেরেন্টস।
এসআই হামিদ লুনার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,, ওনারা যা বলছে তা কি সত্যি? নাকি আপনার ছেলেকে ফাঁসানোর,,,
লুনা চোখ মুছে এসআই হামিদকে থামিয়ে দিয়ে বললো,,সরি অফিসার এই মূহুর্ত থেকে আমার কোনো ছেলে নেই। যদি আমি এক মিনিটের জন্য ভেবে বসি এইটা আমার ছেলে। তাহলে আমি একে নিজের হাতে খু*ন করে ফেলবো। পেটে ধরার ক্ষমতা থাকলে মে*রে ফেলার-ও থাকবে নিশ্চই!
এসআই হামিদ আচম্বিত হয়ে তাকিয়ে রইল। বলার জন্য কিছু পেলো না। তাই তিনি নিরবে সরে আসলো। লুনার কথায় সবটা পরিস্কার হয়ে গেছে।তবে এই ভেবে অবাক হলেন মা তার ছেলের অন্যায়কে এক বিন্দু প্রশ্রয় দেয় নি। তার চাকরি জীবনে এই প্রথম এমন কিছু দেখছেন তিনি।
এইদিকে সবাই অবাক চোখে লুনার দিকে তাকিয়ে আছে। আমজাদ নিজেও চমকে উঠেছে। এই প্রথম লুনাকে এতোটা কঠোর হতে দেখছে তিনি।

এম্বুলেন্স আসার সাথে সাথে নিশানকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে গেছে। এসআই হামিদ জুবায়েরকে তার সাথে পুলিশ স্টেশনে যেতে বলায় জুবায়ের তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়লো।

ডাক্তার সাজিকে চেকাপ করে ইনজেকশন দিয়ে গেছে। আপাতত সাজি ঘুমাবে। ভয় আর সকের কারনে সেন্সলেস হয়ে গেছে। ঘুম থেকে ওঠার পর বুঝা যাবে এই ঘটনা তাকে ঠিক কতটা এফেক্ট করেছে। রিমি এবং রেনু মিলে সাজির ড্রেস চেঞ্জ করে বেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। সাদ তখন থেকে সাজির হাত ধরে বসে আছে। যতবার চোখের পলক ফেলছে ততবার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। সাদ বারবার নিজেকে দোষারোপ করে চলেছে। কেন আরো আগে এলো না!কেন সাজঁবাতির খোঁজ নিলো না! কেন মেহমানদের নিয়ে এতো ব্যাস্ত হয়ে পড়লো! সাদ নিজেকে কষছে শুধু।মনে হচ্ছে সব দোষ তার। এইদিকে সেঁজুতির প্রেশার হাই হয়ে গেছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখলে কোনো মা ঠিক থাকতে পারে না। ডাক্তার সেঁজুতিকে ঔষধ দিয়ে রেষ্ট নিতে বলেছে। অনিলা সেঁজুতির শিয়রে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে যাতে সেঁজুতি একটু ঘুমোয়।
লুনা স্বামীর বুকে মাথা ঠেকিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। মা তো মা-ই হয়, সন্তান শত অপরাধ করলেও সে মায়ের সন্তান। যাকে সমস্ত আদর, স্নেহ, ভালোবাসা উজাড় করে লালন পালন করেছে লুনা।লুনা চায় যারা একটা মেয়ের শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে তাদের কঠিন শাস্তি হোক। কিন্তু একটা জায়গায় গিয়ে সব কিছু গুলিতে যাচ্ছে তার।নারী হিসেবে শাস্তি চাইলেও মায়ের মন যে সন্তানের জন্য কাঁদছে। আমজাদ স্থীর হয়ে বসে আছে। মাঝে মাঝে স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নিজেকে আজ বাবা হিসেবে ভীষণ ব্যার্থ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে সন্তান লালন পালনে কোথাও একটা খুত রয়ে গেছে। তা না হলে নিশান তার মেয়ের মত আদরের ভাগ্নীর সাথে এমন নোংরা, জঘন্য অপরাধ করার সাহস পেতো না।

ড্রয়িং রুমে রশনিরা সবাই বসে আছে।বিয়ের আমেজে উৎফুল্ল, উৎসব মুখর বাড়িটায় কেমন বিষাদের ছায়া নেমেছে। রেনুর বুকে মাথা ঠেকিয়ে হেঁচকি তুলে কাঁদছে লতা। বাচ্চা মেয়েটা সব কিছু দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। রিমি দুহাতে মুখ ঢেকে বসে আছে। তার মাথায় কিছুই ধরছে না।
রশনি চিন্তিত হয়ে টেনে নিঃশ্বাস নিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,, সবাই ভালো করে শুনে রাখো! যা হয়েছে, যা দেখেছো, সামনে যা হবে তা যেন আমাদের মধ্যে থাকে। এইটা মাথায় রাখবে বাইরের কেউ যেন দুই কথা বলার সুযোগ না পায়। বিষয়টা শুধু বিয়ের আগ ওবদি না! বরং আজকের ঘটনা আজীবনের জন্য ভুলে যাও। সাজির মানসিক অবস্থা অতোটা ভালো না। সো প্লিজ তোমরা সবাই সাজি ওঠার পর নরমাল বিহেভ করবে।
রশনির কথায় সবাই একমত হলো। সবাই চাইছে বাইরে যেন এইসব কথা না যায়। এতে করে মানুষ তিলকে তাল বানাতে ছাড়বে না। সাথে সাজিকেও কথা শোনাবে। তাই মৌনতা অবলম্বন করাই শ্রেয়।

রাত যত গভীর হচ্ছে কষ্ট গুলো বুকে পাথরের মতো ভারী হচ্ছে। সাদ নিঃপলক দৃষ্টিতে সাজির মুখের আদলে চেয়ে আছে। চোখের নিচে কেমন কালসিটে দাগ পড়ে গেছে। বার বার চোখের সামনে সাজির অসহায় চাহনিটা ভেসে উঠছে। ভয়ে সিটিয়ে যাচ্ছে সাদ। না জানি জেগে উঠলে কি করবে সাজি।সাদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কখনো আদুরে হাতে সাজির চুলে বিলি কাটছে,তো কখনো হাত আঁকড়ে ধরে আলতো চুমু আঁকছে। এতোটা সময় পেরুলো তবুও এই রজনী যেন শেষ হওয়ার নাম নিচ্ছে না। যাকে নিয়ে ভালোবাসা পূর্ণ হাজার দীর্ঘ রজনী পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছা। তার সাথে কাটানো রজনী গুলো কেন এতো শূন্য আর তিক্তায় পূর্ণ হচ্ছে।সাদ বুঝতে পারেনা কেন তার প্রিয়তমাকে ঘিরে সব বিষাক্ত, তিক্ততম রজনী গুলো দীর্ঘ হয়। এই বিনিদ্র, বিষাদে ভরা দীর্ঘ রজনীতে সাদের বুকে প্রিয়তমার জন্য হাহাকার ব-ই কিছুই নেই। পারলে নিংড়ে নিতো সকল দুঃখ,কষ্ট। দিয়ে দিতো নিজের ভাগের সব সুখ।যদিও তা হওয়ার নয়। শুধু অপেক্ষা নতুন ভোরের। স্নিগ্ধ,শিতল, ঝলমলে, সুখানুভূতি পূর্ণ ভোর।

ইনশাআল্লাহ চলবে,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here