দু মুঠো বিকেল পর্ব ৫+৬

দু মুঠো বিকেল⛅♥
#পর্ব_৫
Writer-Afnan Lara
.
স্পর্শের বারান্দাটার দরজা খুলে গেলো হঠাৎ,রিম চমকে গিয়ে সাথে সাথে সেদিকে তাকালো
স্পর্শের মা দাঁড়িয়ে আছেন সেখানে,পরনে একটি ঘাড়ো গোলাপি রঙের নাইট ড্রেস
রিম চোখ বড় করে টুল থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছে
.
রোকসানা বেগম এদিক ওদিক তাকিয়ে এবার রিমকে দেখতে পেয়ে ব্রু কুঁচকালেন
রিম ভয়ে রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে,চোখের পাতাও ফেলছে না,কথা তো দূরে থাক
রোকসানা বেগমকে সে ভয় পায়,কারণ তার চাহনি দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষকে তিনি গিলে ফেলতে ২মিনিট সময় ও লাগাবেন না
.
রোকসানা বেগম একটু এগিয়ে এসে রোডের চারপাশে স্পর্শকে খুঁজলেন কিন্তু পেলেন না তারপর রিমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন”এত রাতে এখানে কি করো তুমি?কার সাথে প্রেম করো?”
.
রিম মুখটা ছোট করে বললো”প্রেম না,এমনি ঘুম আসছিল না বলে এসেছিলাম”
.
রোকসানা বেগম চায়ের কাপটার দিকে তাকিয়ে বললেন”ঘুম আসবে কেমনে?? যদি চা খাও এ সময়ে,যাই হোক আমার স্পর্শকে দেখেছো?”
.
রিমঝিম চমকে বললো”নাহ তো,”
.
ওহ!
.
রোকসানা বেগম আর সময় নষ্ট না করে চলে গেলেন,রিম ভাবনায় পড়ে গেলো স্পর্শ এসময়ে কোথায় থাকতে পারে
হায় আল্লাহ!!!!!আমাকে তো লুকাতে হবে,যদি কোথাও গিয়ে থাকে এখন আসার পথে আমাকে এখানে দেখলে তো এরপর থেকে রোজ এ সময়ে আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে লোকটা
রিম জলদি করে টুলটা হাতে নিয়ে রুমের ভেতর চলে গেলো
.
স্পর্শ এবার ভ্যান থেকে নেমে বাসায় ফেরত এসেছে,দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতে যেতেই দেখলো মা সোফায় বসে আছেন ওর দিকে তাকিয়ে
.
স্পর্শকে দেখে তিনি গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলেন”কোথায় গিয়েছিলি?”
.
স্পর্শ দরজা লাগাতে লাগাতে বললো”ঐ আসলে আশিক ডেকেছিলো ওর বাসায়,ওর জন্মদিন তো আজ”
.
ওহ আচ্ছা!শুয়ে পড়,অনেক রাত হয়ে গেছে
.
হুমম.
.
স্পর্শ মাথা চুলকাতে চুলকাতে চলে গেলো তার রুমের দিকে

ভোর ৫টা ৫ বাজে,রিম মরার মতন ঘুমাচ্ছে
স্পর্শ কোমড়ে হাত দিয়ে রোডে দাঁড়িয়ে রিমের অপেক্ষা করছে অথচ রিম আসছে না
এখন ৫টা ৬বাজে
স্পর্শ রোড থেকে খুঁজে একটা কঙ্কর নিয়ে রিমের বারান্দার দরজার উপর মেরে দিলো
রিমের মনে হলো ছাদ ভেঙ্গে পড়তেছে ওর গায়ে
হন্তদন্ত করে সে উঠে বসে এদিক ওদিক তাকালো,তারপর বুকে থুথু দিয়ে ঘড়ির দিকে তার চোখ পরতেই মনে পড়ে গেলো স্পর্শের কথা
আজ কপালে শনির দশা আছে,ভাবতে ভাবতে রিম বিছানা থেকে নেমে ওড়না গায়ে পেঁচিয়ে বারান্দার দরজা খুললো
স্পর্শ কোমড়ে হাত দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
রিম অপরাধীর মতন লুক করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো চুপচাপ
.
ডেকে আনতে হয় কেন??এতদিন তো ঠিকঠাক আসতা সময় মতন,তাহলে আজ ডেকে আনতে হয়েছে কেন?নামাজ কালাম পড়ো না নাকি?এত কিসের ঘুম তোমার?রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবা, সকালে তাড়াতাড়ি উঠবা,বুঝছো?এখন যাও মুখ ধুয়ে অজু করে নামাজ পড়ো গিয়ে
.
আমাকে নামাজ পড়া শেখাতে হবে না,আমি ঠিকঠাক নামাজ পড়ি এটা আপনি ভালো করেই জানেন,তাহলে আজ কথা শুনাচ্ছেন কেন?
.
কারন তুমি এত সময় ধরে ঘুমাচ্ছিলে
.
মেয়েলি সমস্যা থাকলে নামাজ পড়তে হয় না সেসময়ে এই টুকু জানেন না আপনি?স্টুপিড!
কথাটা বলে রিম রেগে মেগে আবার নিজের রুমে ফেরত চলে গেলো
স্পর্শ থ হয়ো দাঁড়িয়ে আছে,তারপর কিসব ভেবে চলে গেলো তার বাসার দিকে
আসলেই তো!রিম তো নামাজে ফাঁকি দেয় না,আমার বুঝা উচিত ছিল কেন আজ সে ঘুম থেকে উঠেনি
.
রিম বিছানায় বসে গাল ফুলিয়ে রেখেছে,সকাল থেকে শুরু করলো আবার,সারাদিন জ্বালাবে!
.
রিম মুখ গোমড়া করে বিছানায় বসে থাকলো মা উঠে এসে ডাকা অবদি
মা উঠেছেন সকাল সাতটায়,উঠেই রিমঝিমের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বললেন”রিম উঠেছিস?রুটি বানিয়ে দিতে আয়,আমি ভাজি করছি,তোর ভাইয়া আজ জলদি বের হবে”
.
রিম বিছানা থেকে নেমে সেদিকে ছুটলো,তামিম চোখ ডলতে ডলতে হাতে এক বোতল পানি নিয়ে দরজা খুলে ছাদের দিকে গেছে
ছাদে একটা ক্যাকটাস গাছ আছে এই গাছটার মালিক তামিম,তার প্রিয় গাছ এটা,সে প্রতিদিন সকালে এই গাছটায় পানি দেয়,গাছটাকে এত যত্ন করার কারণ আছে,ওদের বাসার ৩তলায় একটা পুচকি মেয়ে আছে,নাম হলো রিনতি,রিনতি তামিমকে দেখলেই হাসাহাসি করে বলে তামিম ক্যাকটাস গাছ থেকে কাঁটা নিয়ে রিনতির গায়ে ফুটিয়ে চলে যায়
তার ১০মিনিট পর রিনতির মা রিনতিকে নিয়ে নালিশ করতে আসে
বকা খায় রিমঝিম আর তার মা,তারপর তামিমকে বকাও দেয় তারা
তাও তামিম যখন দেখে রিনতি আবারও ওকে নিয়ে হাসাহাসি করছে তখনই সে কাঁটা ফুটিয়ে দেয় আবারও
এই গাছটা তার অনেক উপকার করে বলে ঘুম থেকে উঠেই সে গাছটায় পানি দেয়,তারপর মুখ ধুতে যায় রিমের কাছে রিম ওর মুখ ধুয়ে দিয়ে ওর দাঁত ব্রাশ করতে হেল্প করে
.
রিম তামিমের কাজ সেরে এবার রুটিগুলো বানিয়ে দিলো
রিহাব তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে রেডি হয়ে বেরিয়ে সোফায় বসে ব্যাগ এক পাশে রেখে পায়ে মোজা পরছে আর কানে ফোন লাগিয়ে কলিগের সাথে কথা বলছে
.
কলিংবেল বেজে উঠতেই মা চমকে রিমকে বললেন”কিরে এত সকাল সকাল কে এলো আবার?”
.
তামিম বাতাসা আর মুড়ি নিয়ে বাটিতে করে খাচ্ছিলো,সে গেলো দরজা খুলতে,দরজা খুলতেই দেখলো আঁখি দাঁড়িয়ে আছে,হাতে একটা টিফিন বক্স নিয়ে
সে দাঁত কেলিয়ে তাকালো তামিমের দিকে
তামিম হাত থেকে বাটিটা নিচে রেখে দুহাত দিয়ে তার দু গাল ঢেকে পিছিয়ে গিয়ে বললো”কি চাই?”
.
ওরে দুষ্টু তোর গাল টিপি বলে আগে ভাগে গাল ঢেকে রেখেছিস?
.
দরজার ওপাশ থেকে আঁখির আওয়াজ পেয়ে রিহাবের কলিজা কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেছে,জলদি করে মোজা পরা শেষ করে সে নিজের রুমের দিকে ছুটতে যেতেই আঁখি হনহনিয়ে বাসার ভেতর ঢুকে পড়ে বললো”এই রিহাব”
.
রিহাব থেমে গিয়ে ব্রু কুঁচকে তাকালো,তারপর বললো”কি বললি?”
.
ইয়ে মানে রিহাব ভাইয়া!
.
কি চাই?
.
আপনার জন্য পিঠা এনেছি,খাবেন না?
.
তুই খা,রিহাব মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো,আঁখি পিছন পিছন আসতে নিতেই মা রান্নাঘরনথেকে বেরিয়ে এসে বললেন”আরে আঁখি যে!কি মনে করে?!”
.
আন্টি, আসসালামু আলাইকুম,কেমন আছেন?
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,ভালো আছি,তুমি কেমন আছো?বাসার সবাই কেমন আছে?
.
ভালো,আসলে আমার দাদিমা এসেছেন সকাল সকাল,সাথে করে পিঠা এত্তগুলা এনেছে তাই সবাইকে দিচ্ছি,আপনাদের জন্য ও আনলাম আমি
.
মা মুচকি হেসে পিঠার বক্স হাতে নিয়ে বললেন”দাঁড়িয়ে আছো কেন?বসো,নাস্তা হয়ে এসেছে,খেয়ে যেও”
.
রিহাব রুম থেকে বেরিয়ে বললো”কিসের নাস্তা খাবে?পিঠার বদলে কেউ নাস্তা দেয়?তামিম তোমার এই খালারে এক গ্লাস পানি খাওয়াও আর বিদায় করো”
.
খালা??সেটা আবার কেমন সম্পর্ক,আপনার মা যদি আমার আন্টি হয়,তাহলে আমি ওর আপু হবো,নয়ত ভাবী
.
মা চোখ বড় করে তাকাতেই আঁখি বললো”আপু বলবা কেমন?”
.
তামিম বাতাসা মুখে দিয়ে আরেকদিকে ফিরে চলে গেলো
.
রিমঝিম টেবিলে রুটি আর ভাজি এনে রেখে বললো”বসো আপু, আমাদের সাথে নাস্তা করবে আজকে
.
আচ্ছা
.
রিহাব মনে মনে বলছে”কি বেহায়া মেয়েরে বাবা,একবার না ও করে না,সাধার সাথে সাথে খেতে বসে গেছে”
.
আঁখি রিমঝিমকে জোর করে বসিয়ে দিয়ে নিজেই রুটি ভাজি প্লেটে নিচ্ছে আর কাজের ফাঁকে ফাঁকে রিহাবকে দেখছে
রিহাবের গলা দিয়ে খাবার নামছে না আঁখির এমন চাহনি দেখে
.
রিহাব তাই একটু খেয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে গেছে,আঁখি ব্রু কুঁচকে ওর চলে যাওয়া দেখছে,মা ওর পাশে দাঁড়িয়ে বললেন”আমার ছেলেকে পছন্দ বুঝি?”
.
আঁখি কথাটা শুনে রিম আর ওর মায়ের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে এক দৌড়ে পালিয়ে গেলো
.
তামিম টেবিলের নিচে বসে ছিলো এতক্ষণ ধরে
আঁখি সবসময় ওর গালে টিপে দেয় বলে সে তার গাল নিয়ে বিপদে আছে,একটু গলুমলু হওয়ার এই এক বিপদ,যেই দেখবে সেই গাল টিপতে চাইবে,আমার নিজের বোন আমার গাল টিপে না আর এই আপুটাকে দেখো,সবসময় আমার গাল টানে,আজ আর টানতে পারলো না হুহ
.
রিমঝিম নিজের রুমে এসে রেডি হচ্ছে,ভার্সিটিতে যাবে বলে,ওড়নাটা গায়ের থেকে খুলে এবার জামা খুলতে যেতেই ওর মনে পড়লো স্পর্শের কথা,দেয়ালের সাথে লেগে গিয়ে সে এদিক ওদিক তাকালো,যাক সব বন্ধ
এবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে সে একটা খয়েরী রঙের থ্রি পিস পরে নিলো,মাথায় ঘোমটা দিয়ে একটা সাইড ব্যাগ নিলো, তাতে তার ৩টা সাবজেক্টের বই আর খাতা, কলম,একটা পানির বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো সে তামিমের জন্য,মা তামিমকে তৈরি করে রিমের কাছে এনে বললেন”ওকে স্কুল থেকে আবার নিয়ে আসবি তো নাকি আমি যেতাম?
.
নাহ আমি ওকে আবার নিয়ে আসব,চিন্তা করো না
.
ঠিক আছে
.
রিম তামিমের হাত ধরে বাসা থেকে নামতেই থেমে গেলো,স্পর্শ বাইকের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,পরনে খয়েরী রঙের শার্ট
রিম নিজের গায়ের দিকে তাকিয়ে চমকে গেলো
সেও তো খয়েরী রঙের জামা পরেছে তাহলে স্পর্শ সেটা জানলো কি করে?নাকি কো ইন্সিডেন্ট
এসব ভাবতে ভাবতে রিম তামিমকে নিয়ে হাঁটা ধরেছে,২/৪কদম হাঁটতেই একটা রিকশাআলা এসে বললেন”আপা যাবেন নাকি?”
.
রিম তামিমকে উঠিয়ে নিজেও উঠলো,রিকশাআলা পিছন ফিরে হাত দেখালো স্পর্শকে,স্পর্শ মাথা নাড়ালো,রিকশাটা স্পর্শ পাঠিয়েছে,রিম জানে না সেটা
তামিম সাদা স্কুল ড্রেস পরে কেমন একটা ভাব নিয়ে বসে আছে,সে এখন প্লে স্কুলে পড়ে,কয়েক মাস পর সে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হবে
.
রিম কিছুক্ষন বাদেই বাইকের হর্ন শুনতে পাচ্ছে,আর এই হর্নটা তার চিরচেনা,এটা স্পর্শের বাইকের
তামিমের স্কুল এসে পড়তেই রিমঝিম রিকশা থেকে নেমে রিকশাআলাকে বললো দু মিনিট দাঁড়াতে
তারপর তামিমের হাত ধরে ওকে নিয়ে স্কুলে ঢুকিয়ে দিয়ে সে আবারও এসে রিকশায় উঠলো
রিকশায় উঠার আগে এদিক ওদিক তাকালেও স্পর্শকে সে দেখলো না
.
এবার রিমঝিম যাচ্ছে তার ভার্সিটির দিকে,ভার্সিটির গেট পর্যন্ত এসে রিকশা থেমেছে
রিমঝিম রিকশা থেকে নেমে ভাড়াটা ব্যাগ থেকে বের করে গুনতে গুনতে সামনে চেয়ে দেখলো গোটা রিকশাটাই উধাও
.
রিমঝিম ব্যাপারটা প্রথমে বুঝলো না,পরক্ষনেই নাকে একটা চেনা পারফিউমের ঘ্রান আসতেই রিমঝিম বুঝলো এটা কার কাজ তারপর রিমঝিম রেগে পিছন ফিরে তাকিয়ে বললো”সমস্যা কি আপনার? আমি ফকির?আমার হাতে টাকা নেই?”
.
স্পর্শ বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বললো”আমি তো বলিনি তুমি ফকির কিংবা প্রমাণ করতেও চাইনি”
.
তাহলে রিকশা কই?আপনাকে কে বলেছে ভাড়া দিতে?আপনার বিয়ে করা বউ লাগি আমি?অসহ্যকর একটা,এমন ভাব ধরে যেন আমার আপন আত্নীয় হয়,আপনার কি লজ্জা শরম নেই??আপনি যে আমাকে বিরক্ত করেন এতো আপনার কি দিলে মায়া টায়া হয় না একটুও?
.
আপা?
.
রিমঝিম চমকে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো সেই রিকশাআলা দাঁড়িয়ে আছে
.
আপা আপনি আমার ভাড়াটা তো দিলেন না,আমি একটু সামনে রিকশাটা রেখে আসতে গেছিলাম,এখানকার দারোয়ান ধমকায় গেটের সামনে রিকশা দাঁড় করালে,ভাড়াটা দেন আমি যাই গা
.
রিমঝিম ভূত দেখার মতন দাঁড়িয়ে আছে রিকশআলার দিকে তাকিয়ে
ওপাশ থেকে ফিক করে হাসির আওয়াজ ভেসে আসলো কানের কাছে
রিমঝিম বড় আকারের লজ্জা পেয়েছে আজ স্পর্শের সামনে
এদিক দিয়ে হলো আরেক বিপত্তি আর সেটা হলো রিমঝিম পুরো ব্যাগ খুঁজে ২০টাকা পেয়েছে শুধু
আজ মনে হয় তাড়াহুড়ো করে আসার সময় টাকার ছোট ব্যাগটা বিছানার উপর ফেলে এসেছে সে
এখন রিকশাআলাকে দিতে হবে ৪০টাকা,এত টাকা তো নাই
স্পর্শ বাইকে বসে বাইক স্টার্ট দিতে দিতে বললো”আজ বাঁ হাতটা চুলকাচ্ছে অনেক,মনে হয় ২০টাকা খোয়া যাবে নতুবা কাউকে দিতে হবে,কিন্তু কোন ফকির নেবে?”
.
রিমঝিম রেগে চুপ করে আছে,না পারছে গালি দিতে না পারছে কিছু বলতে,সে যে অসহায়,এই ভার্সিটিতে তার তমা ছাড়া আর কোনো তেমন ভালো ফ্রেন্ড নাই যে তাকে টাকা ধার দেবে,তার উপর তমা সবসময় ২ঘন্টা দেরি করে ভার্সিটিতে আসে,এতক্ষণে নিশ্চয় সে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে শান্তিতে,টাকাটা দিব তো কার থেকে নিয়ে দেবো।
চলবে♥
দু মুঠো বিকেল⛅♥
#পর্ব_৬
Writer-Afnan Lara
.
স্পর্শ পকেট থেকে ২০টাকার একটা নোট নিয়ে নড়াচড়া করছে রিমকে দেখিয়ে দেখিয়ে
রিম বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে হাত জোর করে বললো”ভাই আপনি ২মিনিট একটু দাঁড়ান, আমি টাকার ব্যবস্থা করছি”
.
এটা বলেই রিম দৌড়ে গেলো ভার্সিটির দিকে,তারপর ২মিনিট পর এসে রিকশাআলাকে তার টাকা দিয়ে বিদায় করলো
তারপর স্পর্শের দিকে এক নজর তাকিয়ে সে চলে গেলো
.
এই মেয়েটা আমার থেকে টাকা নিলে মনে হয় মরে যাবে!
.
স্পর্শ চুপচাপ বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো,এরপর একটা দোকানে আসলো আঁখির কিসের যেন কাগজপত্র ফটোকপি করবে বলে
.
রিম চুপচাপ ভার্সিটির ক্লাসরুমের এক কোণে বসে আছে,তমা তো আসার নামই নিচ্ছে না
হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বললো”রিম?”
.
আরে অনু যে,কি খবর তোমার?
.
ভালো,,,আচ্ছা একটা কথা বলবো?? যদি কিছু মনে না করো
.
কি হয়েছে বলো
.
তোমাকে প্রায়ই প্রতিদিনই দেখি ভার্সিটিতে ঢুকার সময় একটা ছেলের সাথে কথা বলতে,আর ছেলেটা তুমি আসার সময় এবং যাওয়ার সময় ভার্সিটিতে এসে ওয়েট করে,সে কে রিম?
.
রিম মুখটা ফ্যাকাসে করে কাগজে নোটস তুলতে তুলতে বললো”কেউ না”
.
কেউ না?তাহলে তুমি ওর সাথে কথা বলো কেন যদি কেউ না হয়ে থাকে
.
সে এমন একজন মানুষ যে আমাকে ভালোবাসে আর আমি তা জানার পরেও তাকে ভালোবাসতে পারি না
তার পাগলামি গুলো আমার অসহ্যকর লাগে
সে অতিরিক্ত আমাকে ডিস্টার্ব করে,এ কয়েকদিন না ৩বছর হয়ে গেছে আমার এমন বন্দি জীবনের
.
কি হয়েছিল ৩বছর আগে??
.
আমার বাবার অফিসের কাজের জন্য আমাদের বারবার বাসা পাল্টাতে হতো,শেষমেষ বাবা লাস্ট বারের মতন বাসা পাল্টিয়ে ঢাকায় আসে,সেদিন আমরা রাত করেই বাসাটায় উঠেছিলাম
রোজ ভোরবেলায় উঠা আমার অভ্যাস এবং খালি পথে একা হাঁটার অভ্যাস,আমি ঠিক পরেরদিন ভোর ৫টা ৫মিনিটে বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম একটু হাঁটতে
.
হাঁটতে হাঁটতে এই লোকটার বারান্দার নিচ দিয়েই যাচ্ছিলাম আমি,সেই লোকটা তখন বারান্দায় ছিল,আমি জানতাম না
সে এক বালতি পানি এনে বারান্দায় দাঁড়ানো অবস্থায় নিজের গায়ে সম্পূর্ন বালতির পানি ঢেলে দিলো
আমি নিচে থাকায় সব পানি তার গা চুইয়ে আমার গায়ে এসে পড়লো
একে তো সময়ে মাঘের শীত ছিল,আমার চাদরটাও ভিজে একাকার হয়ে গিয়েছিলো
রাগে -ক্ষোভে আমি চিৎকার করে বললাম”কোন বেয়াদব এই কাজ করলো,অসভ্য,ইতর,”
এটা বলে আমি উপরে তাকিয়ে দেখলাম লোকটা উদম শরীরে দাঁড়িয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে
পরনে শুধু জিন্স ছিলো আর সম্পূর্ন খালি গা তার
আমি ওড়না দিয়ে মুখ মুছে মাথার ঘোমটা ঠিক করে একটু পিছিয়ে গিয়ে বললাম”আপনার কি চোখ নাই?রুমে বাথরুম নাই?গোসল করার জায়গা পান নাই?খাটাশ কোথাকার!
ব্যস সেদিন গালি ছাড়া আর কিছুই দিই নাই আমি
না হাসছিলাম!!! না ঢং দেখিয়েছিলাম!! না ন্যাকামি করছিলাম
সম্পূর্ন কঠোর একটা পরিবেশে আমার আর তার প্রথম দেখা হয়েছিলো
আমি জানতাম না কাউকে গালি দিলে সে আজীবনের জন্য প্রেমে পড়ে যায়,আগে জানতাম গালি দিলে মানুষ রেগে প্রতিশোধ নিতে চায় কিন্তু আমার বেলায় হলো এর উল্টোটা
সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত লোকটা আমাকে প্রতিনিয়ত ডিস্টার্ব করছে
এমন ডিস্টার্ব যেটাকে ইভটিজিং ও বলে পুলিশে দিতে পারি না
.
এখন সে তোমাকে বিয়ে করতে চায়?
.
সেটা চায় না,কেন চায় না সেটা জানি না তবে শুধু শুধু পিছনে লেগে আছে,আমি সাফ সাফ বলে দিয়েছি আমি ওরে কখনও ভালোবাসবো না,বিয়ে তো দূরে থাক
.
এরকম লাভার পেলে আমার আর কিছু লাগতো না
.
তুমি পাওনি বলে এটা বলতেছো,আমার জায়গায় তুমি হলে তোমার ও ঠিক একই কষ্ট হতো আমার মতন,এখন একটা বন্দি জীবন যাপন করছি আমি
.
কিরে দোস্ত আমি তো এসে গেছি
.
তমা!আগে শুন আমার কথা,পিন্টু স্যারকে ২০টাকা দিয়ে দিবি,স্যার হাতে টাকা নিলে বলবি রিম দিয়েছে তারপর এক দৌড় দিবি স্যার যাতে টাকা ফেরত দিতে না পারে
স্যার থেকে টাকা নিয়ে রিকশা ভাড়া দিয়েছি আমি,আসার পথে টাকা আনতে ভুলে গিয়েছিলাম
.
আচ্ছা সেটা নাহয় দেবো,স্পর্শ ভাইয়ার থেকে নিয়ে তো দিতে পারতি
.
ওমা তমা তুমি রিমের কাহিনী জানো?
.
কি বলে এই মেয়ে,আমি তো অক্ষরে অক্ষরে ওদের কাহিনী সম্পর্কে অবগত
.
বাহ,তা রিম ছেলেটা এতদিন অপেক্ষা করছে যখন এবার মেনে নাও,এমন ভালোবাসা কজনে পায়?
.
আমি ক্যান মেনে নিব?সে কি জব করে?আমার বাবা ওকে পছন্দ করে না,তাই আমিও করি না
.
তমা ব্রু কুঁচকে রিমের পাশে বসে বললো”তার মানে আঙ্কেল রাজি হলে তুই রাজি?”
.
বাবা জীবনেও রাজি হবে না,রিহাব ভাইয়াও না
.
তারা রাজি হলে তুই রাজি হবি কিনা সেটা বল আগে
.
রিম বিরক্ত হয়ে উঠে ক্লাস থেকে বেরিয়ে চলে গেলো,করিডোরে দাঁড়িয়ে গেটের দিকে তাকাতেই দেখলো স্পর্শ সিগারেট টানছে বসে বসে
রিম আরেকদিকে ফিরে দাঁড়াতেই এবার দেখলো তমা কোমড়ে হাত দিয়ে এগিয়ে আসতেছে
.
এসেই বললো”কিরে বল!উনারা রাজি হলে তুই রাজি হবি কিনা?”
.
না আমি রাজি হবো না,এই বেয়াদব ছেলেটাকে আমি পছন্দ করি না,একটুও না
.
করবি করবি!আরেহহহ ওটা স্পর্শ ভাইয়া না??আমি যাই একটু কথা বলবো
.
তুই যদি উনার সাথে কথা বলিস তো তোর সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ খতম
.
তুইও না,পুরাই আনরোমান্টিক একটা মেয়ে,স্পর্শ ভাইয়াকে দেখ কত রোমান্টিক একটা লোক,এমন আর কোথাও পাবি?
.
আমি খুঁজতেছিও না
.
অনু তমার পাশে দাঁড়িয়ে বললো”যার অলরেডি আছে, সে আর কেন খুঁজবে??”
.
তমা দাঁত কেলিয়ে বললো”ঠিক বলেছিস অনু”
.
রিম মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো,এদের সাথে কথায় পারা যাবে না
.
আচ্ছা একটা কথা বল তো রিম
.
কি?
.
স্পর্শ ভাই জানে কি করে যে তুই কবে কেন রঙের জামা পরে বের হস??উনি দেখি সবসময় সেম জামা পরে সবসময় তোর সাথে আসে,ব্যাপারটা বুঝলাম না
.
রিম একটু নড়েচড়ে দাঁড়িয়ে বললো”আমারও ঘটকা লাগলো,কিন্তু বুঝলাম না কি করে জেনে যায়”
.
অনু দাঁত কেলিয়ে বললো”তোমার রুমে ক্যামেরা লাগায়নি তো আবার??
.
রিম চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ,এরই মাঝে চলে যাওয়ার সময় ও হয়ে গেছে

রিম ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে স্পর্শের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো,প্রতিদিন মিলিয়ে কি করে জামা পরে সেটার রহস্য আমি আজই বের করবোই করবো
রিম একটু এগিয়ে এসে স্পর্শের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
স্পর্শ সিগারেটটা সাথে সাথে ফেলে দিয়ে রিমের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো”হঠাৎ???”
.
রিম হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে বললো”আমি প্রতিদিন যে রঙের জামা পরি আপনি মিলিয়ে সেই রঙের জামা কি করে পরেন?”
.
স্পর্শ রোডে পড়ে থাকা অর্ধেক সিগারেটটা পা দিয়ে মাড়াতে মাড়াতে বললো”সেটার উত্তর তুমি নিজেই না হয় বের করো,চেঞ্জ করার আগে দেখো তো দরজা জানালা খোলা কিনা??”

রিম চোখ বড় করে বললো”আমি খুব ভালো করে দরজা জানালা দেখে তারপর চেঞ্জ করি,আপনি তারপরেও কি করে জানেন??”
.
খুঁজে দেখো তোমার রুমেই উত্তর আছে
.
রিম রেগে গিয়ে স্পর্শের গালে চড় বসিয়ে দিলো একটা
স্পর্শ মুচকি হেসে গালে হাত দিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে
.
রিম কাঁপতে কাঁপতে বললো”কতটা বেয়াদব হলে মানুষ এতটা নিচ হতে পারে,আপনি শেষমেষ আমার রুমে ক্যামেরা লাগিয়েছেন?আপনার লজ্জা করে না একটুও?আমাকে ইউস করতে চান আপনি?এত বছর ধরে হাত করতে পাচ্ছেন না বলে এবার এমনটা করলেন?কতদিন ধরে এরকম বেয়াদবি চলছে আপনার??”
.
রিম কাঁপতেছে অনবরত,চিৎকার করে কথা বলার অভ্যাস তার নেই, কিন্তু যখন খুব রাগ হয় তখন ওর কাঁপুনি উঠে যায়
.
স্পর্শ গাল থেকে হাত সরিয়ে দুহাত দিয়ে রিমের হাত দুটো ধরে বললো”শান্ত হও রিম”
.
হাত ধরবেন না আমার, হাত ছাড়ুন!
.
রিম পিছিয়ে গেলো,তারপর পিছন ফিরে হাঁটা ধরলো আবার
বাসায় গিয়ে এর একটা বিহিত সে করবে,আপাতত তামিমকে আনতে হবে,ওর স্কুল ছুটি হয়ে গেছে এতক্ষণে
.
রিম হেঁটে হেঁটে তামিমের স্কুলে এসে ওকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো একটা রিকশা ধরে তারপর মায়ের থেকে ভাড়া নিয়ে দিয়ে নিজের রুমে এসে দরজা লাগালো,হাতে একটা টর্চ লাইট,যেখানেই ক্যামেরা লুকিয়েছে আজ আমি খুঁজে বের করবোই
রিম প্রায়ই ২ঘন্টা ধরে তার রুম তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো ক্যামেরা পেলো না,এখন সে মাথায় হাত দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে,ক্যামেরা যে লাগায়নি তা তো সিউর হলাম
কিন্তু উনি যে বললেন আমার প্রশ্নের উত্তর আমার রুমেই আছে??
রিম হাঁপিয়ে গেছে অনেক তাই বারান্দার দরজাটা খুললো হাওয়া আসার জন্য
একটা জড়ো হাওয়া এসে রিমের রুমের জানালার পর্দাটায় গিয়ে পড়লো,বাতাসে পর্দাটা হেলছে দুলছে
.
রিম এক দৃষ্টিতে পর্দাটার দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে পড়লো
পর্দাটা ভালো করে টেনে দেওয়ার পরেও একটু ফাঁক রয়ে যায়,কিন্তু আমি তো এই জায়গায় চেঞ্জ করি না যে এই ফাঁক দিয়ে দেখবে,তাহলে?
ধুর!কিছুই বুঝতেছি না আমি!
.
রিম টেবিলের উপরে থাকা পানির গ্লাসটা নিয়ে পানি খেয়ে চেয়ারে বসে পড়েছে,পর্দার ফাঁকটা দিয়ে স্পর্শের রুমের দিকে তাকালো সে,স্পর্শ নেই,ওর বাথরুমের থেকে পানির আওয়াজ আসছে,গোসল করতেছে মনে হয়
.
রিম আপু!দেখে যাও তোমার জন্য আবারও গিফট এসেছে
.
গিফট?কিসের গিফট?
.
রিম উঠে এসে দেখলো তামিম একটা ঝুড়ি নিয়ে হেলেদুলে এদিকে আসতেছে
.
কে দিলো এটা?
.
জানি না,কলিংবেল বাজতেই দরজা খুললাম তারপর এটা পেলাম নিচে,কাউকে পেলাম না আর
.
রিম ঝুড়িটার উপর থেকে একটা রেশমি কাপড় সরিয়ে দেখলো ২০ডজন চুড়ি,সবগুলোতে একটা করে চিরকুট আটকানো
তামিম এত চুড়ি দেখে দৌড়ে মাকে গেলো বলতে
রিম খয়েরী রঙের চুড়ির মুঠোটা নিয়ে তার থেকে চিরকুটটা নিয়ে খুললো পড়ার জন্য
তাতে লেখা আছে”খয়েরী রঙের জামার সাথে নিশ্চয় খয়েরী রঙের চুড়িই পরো??জানি আমি!
যখনই দেখি পর্দার ফাঁকে তোমার ঐ হাতদুটো,এক হাতে চুড়ি নাও টেবিলে থাকা চুড়ির আলনাটা থেকে আরেক হাত পাশে শুইয়ে ৩টে করে চুড়ি ঢুকাও
আমি তখনই সেই রঙটা দেখে জামা পরে নিই
বিশ্বাস করো!!তোমার হাতদুটো ছাড়া ঐ ফাঁক দিয়ে আমি তোমার দেহ দেখিনি কখনও,চাইলেই আমি দেখতে পারতাম কিন্তু আমি তা করি না,চুড়ি কিন্তু তুমি সবসময় টেবিলের কাছে এসেই পরো,আর টেবিল বরাবরই কিন্তু পর্দার ফাঁক
যাই হোক চড় মারতে গিয়ে তুমি কিন্তু নিজ থেকে আজ আবারও আমাকে ছুঁয়েছো,মনে রেখো কিন্তু রিম, একটা কথা বলি তোমায়,যেদিন তোমার আমাকে ছোঁয়ার সেঞ্চুরি পার হবে সেদিন আমি তোমাকে ছুঁবো,সেই ছোঁয়াতে তুমি বাধা দিতে পারবে না রিম!
.
চিরকুট টা রিমের হাত থেকে পড়ে গেলো,সে পিছিয়ে গেলো,মা এসে বললেন”বাহ এত চুড়ি,আমাকে দে এবারের গুলা,তুই এত গুলো দিয়ে কি করবি?”
.
রিম চুপ করে আছে দেয়ালের সাথে লেগে
তারপর শক্ত গলায় বললো”মা!”
.
মা চুড়িগুলো হাতে নিয়ে দেখছিলেন,রিমের কথা শুনে রিমের দিকে না তাকিয়েই তিনি বললেন”হুম বল”
.
মা!এই লোকটা আমাকে এত কেন ভালোবাসে বলতে পারো!??এত ঘৃনার পরেও সে কেন বেহায়ার মতন পড়ে আছে,আজ পর্যন্ত কতবার হাত তুলেছি আমি তার পরেও কেন!?
.
মা চুড়িগুলো রেখে রিমের কাছে এসে ওর হাতটা ধরে বললেন”আমি কি বলবো রিম,সব তোর উপরে,তুই মানলে সব মানা যাবে”
.
রিম কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো নিজের রুমের দিকে,এর জবাব তার কাছে নেই

তামিম এতক্ষণ ভদ্রলোকের মতন সোফার মাঝখানে বসে চুড়িগুলো দেখছিলো হঠাৎ সে চুড়িগুলোর নিচে একটা কিটকাট চকলেট দেখতে পেলো এবং সেটার সাথেও আছে একটা চিরকুট
.
তামিম ঠিকমত পড়তে পারে না এখনও, তাই স্পর্শ চিরকুটটায় লিখেছে”তামিম এর এটা”
.
তামিম চিরকুটটা নিয়ে গভীর মনযোগ দিলো তাতে
তারপর গলা কঠিন করে পড়তে লাগলো
ত আকার তা,ম ই-কার মি,তারপর ম =তামিম
মানে আমার নাম,পরের এটা পরে পরবো,আমার নাম মানে এটা আমার
তামিম তো খুশিতে গদগদ হয়ে চকলেটটা বুকে ধরে পালালো
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here