#দ্বাবিংশতি
#লিখনে_মৃত্তিকা_চৌধুরী
#পর্ব_৫
৮.
ক্যাফেটেরিয়ায় বসে শুদ্ধ নাতাশা আর তার পুরনো ছবিগুলো দেখছিলো।
“না,শুদ্ধ রাহমান আর যাই করিস না কেন! প্রমাণ ছাড়া নাতাশাকে ভুল বুঝিসনা।”(মনে মনে)
অগত্যা মনের শান্তি রক্ষার জন্য শুদ্ধ নাতাশাকে ইন্সটাগ্রামে কল দিয়ে ওয়েট কিরতে লাগলো।দুইবার কল কেটে যাওয়ার পর নাতাশা কল ব্যাক করলো।
“কি হয়েছে,শুদ্ধ?”
“কিছুনা,নাতাশা।কেমন আছ?”
“ভালোই।তুমি?”
“আমিও ভালো।তোমার পড়া শেষ হচ্ছে কবে?”
“ঠিক নেই।শেষ হলেও আমি এখানেই পার্মানেন্টলি থেকে যেতে পারি।”
“কি?আচ্ছা একবার ভিডিও কল দিতে পারবে?নাতাশা।”
“এখন?”
“প্লিজ।”
শুদ্ধকে না করতে পারলোনা নাতাশা।ভিডিও কলে
নাতাশাকে সেইম জামা পড়া দেখে শুদ্ধের বুঝতে দেরি হলোনা যে নাতাশা তাকে চিট করছে।
হঠাৎই শুদ্ধ নাতাশার পাশ থেকে একটা পুরুষের গলার আওয়াজ শুনলো।লোকটা আসলে কি বললো তা শুদ্ধ বুঝতে পারলোনা!শুদ্ধ কল কেটে দিলো।সে এতটুকু বুঝলো যে নাতাশা বদলে গেছে।এই নাতাশা আর আগের নাতাশার মধ্যে এখন আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও একজন এক্সপার্ট এর কাছে গিয়ে শুদ্ধ আরাভ আর নাতাশার ছবিগুলো দেখাতেই সে একদেখায় বলে দিলো যে ছবিগুলো রিয়েল।কোনোধরনের ইডিট করা হয়নি।এটা শোনার পর শুদ্ধের ইচ্ছা করছিলো যে সে কেন এখনো তার বাড়ির ছয়তলা থেকে লা/ফ দেয়নি?
চারদিন কেটে গেল।শুদ্ধ এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।আসলেই কি সে স্বাভাবিক?তার যে ভিতর দিয়ে দুমড়েমুচড়ে ভেঙে যাচ্ছে।এদিকে রাইয়ের হাতেও একদম সময় নেই।আর মাত্র দুইদিন এরপরই তাকে ইটালিতে তার কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারসদের মিটিংয়ে যেতে হবে।অনেক কাজ বাকি আছে ওগুলোও শেষ করতে হবে।
চারদিনের মাথায় ফাইজা দেখলো প্রফেসর শুদ্ধ কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরছে।কিন্তু ক্লাস থাকায় ফাইজাকে দ্রুত চলে যেত হলো।সে প্রফেসর কেমন আছে তা জিজ্ঞেস করার সময়ও পেল না।রাতে ফাইজা রাইয়ের রুমের দরজায় টোকা দিলো।রাই তখন তার সেক্রেটারি বসুর সাথে মিটিংয়ের ব্যাপারে কথা বলছিলো।
“রাই?ইমারজেন্সি।”(ফাইজা)
“হুম,আসো।”
বসু সাহেবের কল কেটে দিয়ে ফাইজাকে রাই কাছে বসালো।
“কি হয়েছে,ফাইজা?”
“কিছুনা,এমনি ভালো লাগেছিলোনা একা থাকতে তাই চলে এলাম।”
“আচ্ছা।”
“রাই?”
“হুম!”
“তোমার প্রফেসর শুদ্ধকে মনে আছে?যার গাড়িতে তুমি স্ক্র্যাচ ফেলেছিলে?”
“হুম,কেন কি হয়েছে উনার?”
“উনাকে আজকাল কেমন যেন ছন্নছাড়া লাগে।প্রফেসর অনেক উৎফুল্ল ধরনের ছিলেন।হঠাৎ তাকে এভাবে দেখে আমার কেন যেন খারাপ লাগছে।”
“দেখ ফাইজা!সবার মন সবসময় তো একরকম থাকবেনা।তাই না?মানুষ পরিবর্তনশীল।”
“হুম তাও ঠিক।”
“ফাইজা,একটা কথা জিজ্ঞেস করতাম তোমাকে?”
“হুম,বলো।”
“তুমি কি সায়ানকে পছন্দ করো?”
“সায়ান ভাইয়া?হুম,অনেক।”
“আমার কেন যেন মনে হয় ছেলেটা এতটা ভালোনা যতটা তুমি মনে করো বুঝলে?আর সাবধানে থাকার ট্রাই করো।”
“এমন করে বলছ কেন?রাই।মনে হচ্ছে তুমি কোথাও চলে যাবে!”
“হুম,আমার ইটালিতে ব্যাক করতে হবে।”
“কিহ?কেন?”
“আমার কোম্পানিতে অনেক ডিল আসছে।ওগুলোকে আমার সেক্রেটারি এতদিন সামলানোর চেষ্টা করেছে।আর কত?এভাবে চলতে থাকলে কোম্পানি তো পানিতে ডুবে যাবে।তাই আমাকে ওখানে যেতেই হবে,ফাইজা।”
ফাইজা মুখ দিয়ে কিছু বললোনা।কিন্তু তার অনেক মন খারাপ হয়ে গেল।কারণ আজ তাকে সায়ান কল দিয়ে বলেছিলো তাদের বিয়েটা এই মাসের মধ্যেই সেড়ে ফেলার জন্য।আর যেখানে ফাইজা বিয়ে করবে সেখানে রাই থাকবেনা!এটাও কি সম্ভব?
অনেক রাতে রাইয়ের ফোনে কল আসলো।ঘুম চোখে নাম্বার না দেখে রিসিভ করলো রাই।
“রাই,চলো বিয়ে করে নেই?”
“শুদ্ধ?”
“হুম।”
“আপনি কি কিছু খেয়েছেন?”
“হুম,তুমি কীভাবে বুঝলে?”
“এমনিতেই।” রাই বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসলো।
“আপনি কোথায়?”
“হাসপাতালের ছাদে।”
“সিরিয়াসলি?”
“হুম।”
রাই যা পড়াছিলো তার সাথে পায়ে স্যান্ডেল পড়েই তার বাবার গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।এত রাতে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের হওয়ার শব্দে ফাইজার ঘুম ভেঙে গেল।
রাইকে এভাবে বেরিয়ে যেতে দেখে ফাইজা ভয় পেয়ে ভাবলো,রাই তাদের না জানিয়েই চলে যাচ্ছে।তাই সে দৌড়ে নিজের বাবা-মায়ের রুমের দরজায় ধাক্কাতে লাগলো।
“আম্মু,আব্বু!দরজা খোলো।রাই চলে গেছে।”
রিজভী চৌধুরী ঘুমের ঘোরেই শুনতে পেলেন রাই চলে গেছে আব্বু।সে লাফিয়ে খাট থেকে নেমে দরজা খুলে দিলেন।বাহিরে ফাইজাকে কাদঁতে দেখে তিনি তাকে জরিয়ে ধরে বললো,
“কি হয়েছে,ফাইজা?”
ফাইজা কেঁদেই যাচ্ছে।”আব্বু রাই আবার চলে গেছে।ও আর আসবে না।”ততক্ষণে মিসেস চৌধুরীও উঠে এসেছে।চৌধুরী বাড়ির মেইড থেকে শুরু করে সবাই জেগে আছে এই ঘটনায়।সবার মুখে চিন্তিত ভাব।রাইয়ের মা রাইয়ের রুম থেকে পাসপোর্ট সহ দুইটা ছোট গুলি ভর্তি গান বের করলেন।
“রিজভী!এদিকে আসো।”
রিজভী সাহেব নিজের মেয়ের গান গুলোতে হাত দিয়ে ধরেই কাঁদতে লাগলেন।”
আমার রাই!! তুই আমাকে না বলে কেন গেলি?”
“আরে,রাই কোথাও যায়নি।”(মিসেস চৌধুরী)
“মানে?”
“এই যে,ওর পাসপোর্ট এখানে।ওর ফ্লাইট পরশুদিন।”
“পরশুদিন?”
“হুম!”
এবার সবাই ফাইজার দিকে তাকালো।ফাইজা নিশ্চয়ই কিছু জানে।নাহলে সে এত রাতে এসব বলতে যাবে কেন!ফাইজা ভয়ে কাচুমাচু হয়ে আছে।
“ফাইজা,মামুনি।কি হয়েছে আমাকে খুলে বলো।”(কঠিন গলায়)
“আসলে আব্বু,রা*রাইয়ের নিজস্ব কোম্পানি আছে ইটালিতে।ওটার কিছু জিনিস দেখার জন্য ও আবার ওখানে যাবে।”
“কোম্পানি?”
“হুম।”
“রাইয়ের নিজের কোম্পানি আছে!”
“হুম,ও আজ আমাকে বলেছে।”
মিসেস চৌধুরী বলে উঠলেন,
“থামবে তোমরা?রাই অনেক শক্ত ধরনের মেয়ে।ও নিজেকে সামলে নিবে।তোমরা অযথা চিন্তা করোনা।”
“চিন্তা করবোনা?ও আমার মেয়ে।”
ফাইজা সেই তখন থেকে রাইকে কল দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু রাইয়ের ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।এদিকে রাই শুদ্ধকে কোনো মতে হাসপাতালের ছাদ থেকে নামিয়ে তার বাসার দিকে নিয়ে আসছে।রাইয়ের মোবাইল যে বন্ধ হয়ে গেছে সেদিকে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।শুদ্ধকে নিয়ে সে বাড়ির ফটক পেরিয়ে সাঁসা করে ঢুকতেই সবাই দৌড়ে সদর দরজার সামনে এসে পড়লো শব্দ শুনে।
রাই গাড়ি থেকে বের হয়ে শুদ্ধকে টেনে বের করার জন্য বললো।
“উঠুন,শুদ্ধ।”
কে শোনে কার কথা?
শুদ্ধ উঠে বসে বাড়ির সবার সামনে রাইয়ের গায়ে বমি করে দিলো।দিয়ে গাড়িতেই আবার শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।রাইয়ের মুখ দিয়ে অজান্তেই বেরিয়ে আসলো,
“আই উইল কিল ইউ,শুদ্ধ।”
রাইয়ের বাবা কাছে এসে কি হয়েছে দেখতে গিয়ে এসব দেখে বুঝতে পারলেন না এখানে কি হচ্ছে।
“গার্ডস,উনাকে নিয়ে আমার রুমে দিয়ে আসুন।সিরিয়াসলি,এখন আবার আমাকে গোসলে যেতে হবে।”
বাড়ির সবাই এসব রাইকে এলিয়েনের মত দেখছে।
“তোমরা এক্সপ্লেইনশন শুনতে চাও?তাহলে একটু অপেক্ষা করো আমি শাওয়ার নিয়ে আসি!প্লিজ।”
শুদ্ধকে রাইয়ের রুমে রেখে এসে সবাই একত্র হয়ে রাইয়ের ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলো।রাই বের হতেই ফাইজা ওকে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
“আমি ভেবেছিলাম তুমি চলে গেছ,রাই।”
“আমি যাইনি ব্বাবা!চলো আমার সাথে।”
রাইয়ের বাবা অন্যদের রুমে পাঠিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সোফায় বসলেন।
“ছেলেটা কে,রাই?”
“প্রফেসর শুদ্ধ।”
“সেটা আমিও জানি।তোমার কি হয়?”
“আমি ওনাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি।”কথাটা বলেই রাই মাথা নিচু করে রইলো।
” তোমার বিয়ে জন্য আমার কাছে প্রস্তাব এসেছে,রাই।”
সবাই এবার অদ্ভুত দৃষ্টিতে রাইয়ের বাবার দিকে তাকালো।
“কোথা থেকে?”
“সায়ানের বাবা আফজাল খান,চাচ্ছিলো তোমাকে তাদের বাড়ির বউ করে নিয়ে যেতে।”
কথাটা শুনে ফাইজার পায়ের তলা থেকে মাটি যেন সরে গেল।
“কি বাবা?আফজাল আঙ্কেল কি বলেছে?”
“ফাইজা,বড়রা কথা বলছে।তুমি চুপ করো।”
“না,আমাকেও বলো।আমিও শুনতে চাই।আমাকে রেখে রাইকে কেন?আমি সুন্দর না তাই?”
রাই তার বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমি পরশু চলে যাচ্ছি।কালকে শুদ্ধের সাথে আমার বিয়ে ব্যবস্থা করো।ফাইজা সায়ানকে পছন্দ করে ওকেই ওর সাথে থাকতে দাও।আর শুদ্ধকে কাল আমি বিয়ে না করতে পারলে আমি আর কখনো বাংলাদেশে আসবোনা।”
কথাটা বলেই রাই গেস্টরুমে গিয়ে দরজা আটকে দিলো।
৯.
সকালে শুদ্ধের ঘুম ভাঙার পর সে নিজে বুঝতে পারলোনা সে কোথায় আছে!রাই তখনি দরজা খুলে বললো,
“ফ্রেশ হয়ে নিন।আজকে আমাদের বিয়ে।”
“কি?”
“আপনি একবারেই শুনেছেন।আমি কাল আপনাকে নিয়ে ইটালিতে যাচ্ছি।হাসপাতাল থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে নিন।”
শুদ্ধ বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বললো,”কালকে রাতের জন্য এক্সট্রিমলি সরি।আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবোনা।”
রাই শুধু বললো,”আমি আপনার কাছে ভালোবাসা চাইনি,শুদ্ধ সাহেব।আমি কালকের জন্য আপনাকে গিফট হিসাবে নিয়ে যাচ্ছি।আপনার নাতাশার কাছে।”
নাতাশার নাম শুনেই শুদ্ধের মাথা গরম হয়ে গেল।সে দেয়ালে রাইকে অনেক জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।এরপর নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
শুদ্ধের আকস্মিক ধাক্কার জন্য রাই প্রস্তুত ছিলোনা।তাই দেয়ালে থাকা খাজকাটা টাইলসে মাথা লেগে তার মাথার পেছনটা বাজে ভাবে কেটে গেল।রাই কোনোমতে মাথাটাকে টাইলগুলোকে ছাড়িয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল।রক্তে ভরে গেল রাইয়ের রুম।সেই রক্ত গরিয়ে সিড়ির কিনার ঘেঁষে নিচতলার সাদা সোফায় পড়তেই সাদা সোফা মুহুর্তেই লাল বর্ণ ধারণ করলো।
ফাইজা ক্লাসের জন্য নিচে নেমে এই দৃশ্য দেখে দৌড়ে ওপরে
গেল।এরপর রক্তের সন্ধান করতে করতে গিয়ে সে রাইকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে গগনবিদারী চিৎকার দিলো।
“রাই!!!”
রাই আজ শব্দহীন হয়ে পড়ে আছে।রাইয়ের বাবা কোনোমতে ধরাধরি করে রাইকে পার্শ্ববর্তী একটা প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেল।ওখান থেকে রাইকে রিজেক্ট করা হলো।ওর অনেক রক্ত লস হয়েছে।আর ওর ব্লাডগ্রুপের সাথে ব্লাড ব্যাংকের কারো রক্তের গ্রুপ মিলছেনা।ফাইজা আর রাইয়ের সেইম ব্লাডগ্রুপ হওয়ার পরও ডাক্তাররা রিস্ক দেখে এই কেইস নিতে চাইলোনা।কারণ একটু এফোড়ওফোড় হলে তাদের হাসপাতালের নাম খারাপ হবে।রাইয়ের বাবা অনেক টাকা দিতে চাইলেও কেউই রাজি হলোনা।এরপর ফাইজা রাইকে নিয়ে ওদের হাসপাতালে আসলো।আর প্রফেসর শুদ্ধকে খুজতে লাগলো।
“না,প্রফেসর শুদ্ধ কোথাও নেই।”
কোনোমতে ডাক্তার সায়নীর থেকে সে শুদ্ধের নাম্বার নিয়ে প্রফেসরকে কল দিলো।
“হ্যালো!রাই?আমি আবারো বলছি আমি বিয়েতে রাজি না।”
“প্রফেসর?রাইয়ের অবস্থা অনেক বাজে একটু হাসপাতালে আসবেন?ওর ইমারজেন্সি সার্জারী দরকার।কেউ রাজি হচ্ছেনা।আপমি যদি একটু সুপারিশ করতেন।”
“সার্জারী?রাইয়ের?”
“হুম।ওর মাথায় টাইলসের খাজকাটা টুকরা ঢুকে গেছে।অনেক বাজেভাবে কেটে গেছে।আর বেশিক্ষণ রক্তক্ষরণ হলে..” ফাইজা কথা শেষ করতে পারলোনা হেঁচকির জন্য।
টাইলস শব্দটা শুনেই শুদ্ধের অন্তরআত্মা কেঁপে উঠলো।কোথাও ওর রাগের জন্য রাইকে না খোয়াতে হয় ওর পরিবারের।রাইয়ের বাবা তার পরিচিত সব ডাক্তারদের কন্টাক্ট করলেন।সবারই আসতে দুই-তিন ঘন্টা লাগবে।এত সময়ই তো নেই আজ তার হাতে।
চলবে,
()