ধূসর প্রেমের অনুভূতি পর্ব -০৬

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_০৬
.
.
.
চারিদিকে মানুষ পোড়া আর রক্তের গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে৷ মেঘের আর সহ্য হচ্ছে না সাধারণ মানুষের আহাজারি কান্না, মেঘ রেগে দেয়ালে কয়েকটা ঘুশি মেরে বলতে লাগলো,” ছাড়বো না যারা এই নিশ্পাপ সাধারণ মানুষদের পুড়িয়ে মেরেছে৷ কথা দিচ্ছি এর থেকে কঠিন মৃত্যু আমি তোদের দিবো৷ এতো কষ্টকর মৃত্যু হয়তো তোরা নিজেরাও কল্পনা করতে পারবি না৷ ” এম্বুলেন্সে করে আহত কয়েকজন কে হসপিটালাইজড্ করা হয়েছে৷ আর যারা নিহত হয়েছে তাদেরকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ মেঘ তার জীবনে কম মৃত্যু দেখেনি কিন্তু আজ এতো গুলো মানুষের মৃত্যু দেখে মেঘের রাগ জেদ কয়েকশত গুন বেশি বৃদ্ধি পেলো৷ যারা এই ব্লাস্টের পেছনে আছে তাদেরকে নিজের হাতে শেষ করে দিবে এটাই মেঘের একমাত্র লক্ষ্য ৷

১৩.
অর্নিল চোখ বন্ধ করে গতকাল ঘটা সব ঘটনা একের পর এক সাজাতে থাকে৷ দুপুরে লাঞ্চ করে বিছানায় শুয়ে পড়ার পর অর্নিলের কিছু আর মনে ছিলো না৷ কিন্তু ঘুমের ঘোরে অর্নিল ফারিহার গায়ের সুবাস অনুভব করেছিলো৷ অর্নিল ঘুমের ঘোরে কাউকে জড়িয়ে ধরে যেটা অর্নিলের ঘুমের ঘোরে বোধগম্য হয়নি৷ তারপর, তারপর ফারিহার চিৎকার, ফারিহার চিৎকার আর ফ্লাওয়ার ভাস ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়৷ তখন ওই মেয়েটাকে নিজের নগ্ন বুকে আবিষ্কার করে অর্নিল৷ কোন কিছু বুঝে ওঠার আগে ফারিহা ভুল বুঝে চলে যায় আর তারপর মেয়েটার ডেড বডি পেলো তার রুমে!

অর্নিল মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে বলে,” এর মানে এগুলো সব সাজানো গেম৷ আমার সাথে কেউ গেম খেলেছে৷ কিন্তু কে সে? ফারিহা আর মাকে আলাদা করার জন্য যে এতো কিছু করেছে তা বুঝতে অর্নিলের আর বাকি নেই৷ অর্নিলে তৎক্ষনাৎ মনে পড়লো তার ফ্লাটে এবং ফ্লাটের বাইরে সি সি ক্যামেরা আছে৷ আর কে তার ফ্লাটে ঢুকেছিলো কে মেয়েটিকে মারলো সবটাই নিশ্চয়ই জানা যাবে ওই সি সি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে!”

অর্নিল ছুটে গিয়ে তার বাবার রুমে ছুটে যায়৷

” ড্যাড ওই মেয়েটাকে কে খুন করেছে তা এবার জানা যাবে৷”

” কি করে অর্নিল?”

” ড্যাড আমার ফ্লাটের বাইরে এবং ভিতরে সি সি ক্যামেরা লাগিয়ে ছিলাম ৷ ওই ক্যামেরায় নিশ্চয়ই মেয়েটিকে কে খুন করেছে আর আমার অবর্তমানে কে কে আমার ফ্লাটে ঢুকেছে তার সবটাই জানা যাবে ওই ক্যামেরায় ফুটেজ দেখে৷”

” আমাকে এখুনি পুলিশকে এই বিষয়ে জানাতে হবে৷ তোমাকে নির্দোশ প্রমান করার এই একটা সুযোগ পেয়েছি অর্নিল ৷ যে ভাবে হোক আসল খুনিকে ধরতেই হবে৷”

মিস্টার আমান খন্দকার দ্রুত নিজের ফোন বের করে থানায় ফোন করে বিষয়টা তাদের অবগত করে সাহায্য চায়৷ মিস্টার আমার চাইলে নিজের ক্ষমতায় সবটা করতে পারেন কিন্তু সেটা তিনি করবেন না৷ তিনি তার ক্ষমতা অপপ্রয়োগ করা একদমি পছন্দ করেন না৷ পুলিশ অফিসার মিস্টার আমানের কথা শুনে তৎক্ষনাৎ বেড়িয়ে পড়ে৷

!
!
!

ফারহা ল্যাপটপে চোখ রেখে মন দিয়ে কিছু একটা করছে ৷ হঠাৎ একটা ইমেইল আসতে ফারহা ইমেইলটা চেক করে ৷ ইমেইল টা দেখে তৎক্ষনাৎ ফারহা তার ফোন বের করে কাউকে ফোন করে৷ একবার রিং বাজতে ফোনের ওপাশ থেকে কল রিসিভ করে বলে,

-” আমি জানতাম তুমি ইমেইলটা পাওয়ার সাথে সাথে আমাকে ফোন করবে৷”

-” এই সব এর মানে কি এলভার্ট? আমি বাংলাদেশে ফিরেছি শুধু মাত্র আমার নিজস্ব কারণে , এখানে আমি তোমার হয়ে আর কোন প্লানিং করতে আসেনি আর না খুন করতে ৷ তুমি খুব ভালো করে জানো আমি যেখানে আছি সে জায়গাটা আমাদের জন্য সেভ নয়৷ ”

” আমি জানি আরু বেবি তুমি আর মারু যেখানে আছো সেটা তোমাদের জন্য সেভ নয় ৷ কিন্তু কি করার বলো উপর মহল থেকে চাপ আসছে৷ তোমাকে বাংলাদেশে ধামাকা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে৷ ”

ফারহা এলভার্টের কথা শুনে দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ” এলভার্ট তোমাকে আমি আগেই বলেছি আমি বাংলাদেশে বড় কোন ধামাকা করতে পারবো না৷ কারণ এখানকার পুলিশ অফিসার খুব স্মার্ট ৷ এদের চোখ ফাঁকি দেওয়া ভিষণ টাফ৷”

” বাট তোমাকে যে কাজ টা করতে হবে আরু ৷ এখন তুমি কাজটা না করতে চাইলে আমাকে মারুকে অর্ডার দিতে হবে ৷”

ফারহা এবার রাগ টা কন্ট্রোল করতে না পেরে বলে উঠলো ,” আই উইল কিল ইউ এলভার্ট ৷ ”

” কুল ডাউন আরু ৷ আমি জানি আরু তুমি তোমার দেশকে খুব ভালোবাসো৷”

” ভালোবাসা মাই ফুট ৷ এলর্ভাট মারুকে একদম এই প্লানিংয়ে টানবে না ৷ যদি টানো তাহলে আমি আরু এই টেরোরিস্ট দলের প্রধান সদস্য থেকে শত্রুতে পরিণত হবো মাইন্ড ইট ৷ ”

ফারহার কথা শুনে এলভার্ট নরে চরে বসে বলে,” ওকে ওকে আমি প্রধান কে জানাবো তোমার বক্তব্য এখন তুমি প্লানিং করো কি করে কি করবে তবে হ্যাঁ ব্লাস্ট গুলো যেন স্পেশাল প্লেসে করা হয়৷ আর একটা কথা কিং ফায়ার তোমার উপর প্রচন্ড রেগে আছে ৷ আর কাজ টা যদি ঠিক মতো করতে পারো আই থিং কিং ফায়ার তোমার উপর আর রেগে থাকবে না৷”

ফারহা ল্যাপটপ বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে এলভার্টকে বলল,” কিং ফায়ারকে আমি বুঝে নিবো তোমাকে মাথা ঘামাতে হবে না এলভার্ট ৷”

ফারহার কথা শুনে এলভার্ট কিছু না বলে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো৷

ফারহা কান থেকে ফোনটা নামিয়ে মেঘের নাম্বারে ডায়াল করে৷ মেঘ সবে মাত্র অফিসে এসে সব কিছু হাই অথোরিটিকে রিপোর্ট করে বেড়িয়ে আসতে মেঘের ফোনটা বেজে ওঠে ৷ মেঘ তার ফোনের স্কিনে ফারহার নাম্বার দেখে মুখের বিরক্তি ছাপ মিলিয়ে গিয়ে খুশিতে পরিণত হলো, দ্রুত কল রিসিভ করে মেঘ…

-” ফারুপাখি!”

” হুম , মেঘ ওখানে সবটা ঠিক আছে তো?”

” কিচ্ছু ঠিক নেই জান৷ দেশে কয়েকজন টেরোরিস্ট ঢুকেছে ৷ সাধারণ জনগনের সাথে মিশে দেশের বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় বোম ব্লাস্ট করছে৷ ”

” এখন কি করবে মেঘ?”

” নিশ্পাপ মানুষ গুলোর রক্তে যখন আমার হাত রাঙিয়েছি তখন এর শেষ তো আমি দেখেই ছাড়বো ফারুপাখি৷ এই টেরোরিস্টদের আমি নিজের হাতে শেষ করে দিবো৷”

” চেষ্টা করে দেখতে পারো মেঘ৷ যাই হোক ফিরছো কখন?”

” জানি না ফারুপাখি কিন্তু তুমি হঠাৎ আমার ফেরার কথা কেন জিজ্ঞাসা করছো ? কোন বিশেষ কারণ আছে নাকি?”

” নাহ এমনি জানতে চাইলাম ৷ ওকে তুমি তোমার কাজ করো ৷ আমি এখন রাখছি৷ ”

মেঘকে ফিরতি কোন প্রশ্ন করতে না দিয়ে কল ডিসকানেক্ট করে দিয়ে ফারহা ড্রেস চেন্জ করে সাবধানে বেড়িয়ে পড়লো৷

১৪.

“স্যরি স্যার আমরা মিস্টার অর্নিলের ফ্লাটের থাকা সি সি ক্যামেরার কোন ফুটেজ পাই নি ৷ ক্যামেরা গুলো সব বন্ধ করা ছিলো৷ ”

অফিসারের মুখে আশানুরূপ কোন তথ্য না পেয়ে মিস্টার আমান আর অর্নিল দুজনে চুপ হয়ে গেল৷ পুলিশ অফিসার গলা খাকাড়ি দিয়ে আবার বলতে লাগলো, ” দেখুন মিস্টার আমান আপনার ছেলে যে কেসটায় ফেঁসেছে ৷ আমার মনে হচ্ছে প্রথম থেকে সব প্লান করা ছিলো৷ নাহলে এভাবে সব ক্যামেরা অফ কেন থাকবে? কিন্তু আপনাদের কাছে যেহেতু কোন প্রমান নেই মিস্টার অর্নিলকে নির্দোষ প্রমান করার তখন শাস্তি তো ওনাকে পেতেই হবে৷ ”

অর্নিল হঠাৎ পুলিশ অফিসারকে প্রশ্ন করে,” অফিসার মেয়েটির পোস্টমোর্টেম রিপোর্ট এসেছে?”

” না মিস্টার অর্নিল, রিপোর্ট আগামিকাল আসবে৷ এর পরই বোঝা যাবে মেয়েটিকে কি ভাবে মারা হয়েছে৷”

মিস্টার আমান আর অর্নিল বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলল,” তাহলে আমরা আগামিকাল আসবো অফিসার৷ ”

” স্যার আপনাদের আসতে হবে না ৷ আমি নিজে গিয়ে আপনাদের সবটা জানিয়ে দিবো৷ ”

” থ্যান্কিউ অফিসার৷”

মিস্টার আমান আর অর্নিল থানা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসতে বসতে অর্নিল মিস্টার আমানকে বলে,” ড্যাড সব প্রমান তো আমার বিরুদ্ধে ৷ আমি কি করে প্রমান করবো যে আমি নিদোর্ষ?”

” শান্ত হও অর্নিল আগামিকাল পোস্টমোর্টেম এর রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে তারপর যা করার আমি করবো ৷ সে পর্যন্ত শান্ত থাকো মাই সান৷ ”

” পারছি না ড্যাড , পারছি না শান্ত থাকতে ৷ আমার ফারিহা আমাকে ভুল বুঝে দুরে সরে গেছে ৷ আমার সাথে কোন যোগাযোগ করতে চাইছে না ৷ আর তুমি বলছো শান্ত থাকতে? হাউ কি করে ড্যাড?”

” কেসটা একটু সামলে নিতে দেও অর্নিল তারপর আমি নিজে ফারিহার সাথে তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করবো৷”

” ফারিহা রাজি হবে না ড্যাড৷”

” সেটা নাহয় পরে দেখা যাবে৷ তার আগে ওই মেয়ের সব ইনফরমেশন আমার চাই ৷ কোন পরিবারের মেয়ে, কি পরিচয় এ্যাভরি থিং ”

” ড্যাড আমিও ফারিহার পুরো ইনফরমেশন জানি না৷”

” ওয়াট! কি বলছো অর্নিল ?”

” ইয়েস ড্যাড ৷”

মিস্টার আমান তার ছেলের এমন বোকামির কথা শুনে রেগে অনির্লকে বলে,” অর্নিল তোমার মতো ইডিয়েট আমি দ্বিতীয় টা দেখেনি৷ তুমি আসলে একটা ইডিয়েট ৷”

অর্নিল কিছু না বলে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে৷

__________________

রাত সারে বারোটায় মেঘ চৌধুরী ম্যানশনে ফিরে এসে দেখে মিসেস মেহরীমা চৌধুরী ডাইনিংয়ে বসে আছে৷ মেঘ মুচকি হেসে তার মায়ের কাছে এসে মেহরীমার হাতে চুমু দিয়ে বলে,” মম এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকা তোমার হেল্থের জন্য ক্ষতিকর এটা নিশ্চয়ই জানো তুমি?”

” আমার ছোট নবাব যদি এতো রাত করে ফিরে তাহলে তার মায়ের চোখে কি ঘুম আসে? এখন বারতি কথা না বলে দ্রুত ফ্রেস হয়ে নিচে এসো আমি খাবার গরম করছি৷ ”

” মম সারভেন্টকে বলো তোমাকে কিচেনে যেতে হবে না৷”

” না মেঘ বাড়ির সারভেন্টরা সকাল থেকে কাজ করে এখন ওদের বিশ্রাম নেওয়ার সময় এখন ওদের বিরক্ত করা ঠিক হবে না৷”

মেঘ তার মায়ের কথা শুনে মুচকি হেসে বলে,” তাহলে তুমি বসো আমি দু’মিনিটের ভিতর ফ্রেস হয়ে আসছি তার আগে তুমি এখান থেকে একপা ও নড়বে না আর এটা তোমার ছোট নবাবের হুকুম ৷”

মিসেস মেহরীমা হাসতে হাসতে বলল, ” জ্বি ছোট নবাব আপনার আদের্শ শিরধার্য ৷”

মেঘ দ্রুত রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে নিজে খাবার গরম করে নিয়ে আসে৷ মিসেস মেহরীমা মেঘের পাশে বসে বলে,” মেঘ তোকে একটা কথা বলার ছিলো৷”

” কি কথা মম?” খেতে খেতে বলল মেঘ৷

” আমি আর তোর ড্যাড ঠিক করেছি তোদের দুইভাইয়ের সাথে ফায়েজ ভাইয়ের দুই মেয়ের বিয়ে দিবো৷”

মেহরীমার কথা শুনে মেঘ খাওয়া বন্ধ করে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,” মম ভাইয়া ফায়েজ আঙ্কেলের কোন মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে না৷”

” কেন ?”

” ভাইয়া সামিরা নামের একটা মেয়েকে ভালোবাসে৷ ”

” বুঝলাম আর তুই ?”

” আমার বিয়েতে কোন আপত্তি নেই ৷ তবে পাত্রি হিসেবে ফারুপাখি থাকবে ৷”

” ওহ তাহলে আমার ছোট নবাবের মন তার ফারুপাখি চুরি করেছে?” মেহরীমা হাসতে হাসতে মেঘকে বললো৷

” মম তবে বিয়েটা এখনি না দিয়ে কিছুদিন পর দিও ৷ আমি এখন অফিসের কাজে প্রচন্ড ব্যস্ত৷”

” ঠিক আছে তবে তোদের বাবার সাথে কথা বলে রাখি ৷ আর ফায়েজ ভাই আর ভাবির সাথে কথা বলতে হবে ৷ ”

” যা করার করো তবে কিছু দিন পর ৷”

” জ্বি নবাব আপনি যা চাইছেন তাই হবে৷”

মেঘ খেয়ে এটো প্লেট ধুয়ে সব গুছিয়ে রেখে মেহরীমাকে রুমে পৌছে দিয়ে মেঘ নিজের রুমে চলে যায়৷

১৫.
সকাল থেকে ফারিহার মন মেজাজ প্রচন্ড খারাপ ৷ ফারহার রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে এসে দেখে ফারহা তার বেডে ঘুমিয়ে আছে ৷ ফারিহা আস্তে আস্তে ফারহার কাছে গিয়ে বসে ফারহার মাথায় হাত ছোঁয়াতে ফারহা ফারিহার হাত ধরে ফেলে চোখ মেলে তাকায়৷

” তুই এখানে?”

” মম কিছুতেই আমাকে কলেজে যেতে দিচ্ছে না আপু৷”

” তুই রেডি হয়ে আয় আমি দেখছি৷”

ফারিহা আর কথা না বাড়িয়ে কাপবোর্ড থেকে একটা আকাশি সাদার মিশ্রনে শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল৷

ফারহা দ্রুত বেড থেকে উঠে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে দেখে তার বাবা মা দুজনে ড্রইংরুমে বসে কথা বলছে ৷ মিসেস আইরিন ফারহাকে দেখে বসতে বললেন৷ কিন্তু এটা বুঝতে পারছে না তার সামনে বড় মেয়ে ফারহা নাকি ছোট মেয়ে ফারিহা , ফারহা তার বাবা ফায়েজ এর পাশে বসে আইরিনকে বলতে লাগলো,” মম ফারিহার আজ কলেজে চাকরির প্রথম দিন আমি এক্সস্পেক্ট করবো তোমরা কেউ ওর কাজে বাধা দিবে না৷”

ফারহার কথা শুনে মিসেস আইরিন বুঝতে পারলো এটা তার বড় মেয়ে ফারহা৷ মিসেস আইরিন কিছু বলতে যাবে তখনি ফায়েজ তার স্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে ফারহাকে বললো,” তুমি সত্যি চাইছো ফারিহা কলেজে পড়াক?”

” ইয়েস ড্যাড৷”

” ওকে ফাইন, ফারিহা আজ থেকে কলেজে জয়েন করুক৷ বাট ফারিহা যদি রাগের বসে তেমন কিছু করে তাহলে এর দ্বায়ভার সম্পর্ণ তোমার৷”

” ওকে ড্যাড তাই হবে ৷”

ফারহা আর ফায়েজ খান এর কথা শেষে ফারিহা এসে হাজির হয়৷ মিসেস আইরিন তার ছোট মেয়েকে শাড়ি পড়তে দেখে প্রচন্ড রকমের অবাক হয়৷ ফারিহা তার মম ড্যাডের দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বলল,” মম ড্যাড আমি কলেজে যাচ্ছি ৷ ”

” ফারিহা আজ তোমাকে ফারহা কলেজে ড্রপ করে দিবে ৷ একা যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই৷”

ফারিহা কোন তর্ক ছাড়াই রাজি হয়ে যায়৷ ফারহা দ্রুত রুমে গিয়ে তার ফোন পার্স আর মুখে মাক্স পড়ে বের হয়৷

অন্যদিকে মেঘ একটা টেরোরিস্ট দলের খবর পেয়ে অপারেশনে বেড়িয়ে পড়ে৷ আর টেরোরিস্ট দলটা ফারিহার কলেজের অপজিটে রেড রোজ হোটেলে অবস্থান করেছে৷ ফারহা ফারিহার গাড়ি কলেজের সামনে দাড় করাতে ফারিহা গাড়ি থেকে নেমে ফারহাকে ফিসফিসিয়ে বলে,” গাড়ি নিয়ে সোজা হোটেলের পেছুনে চলে যা ওখানে ওরা তোর জন্য অপেক্ষা করছে ৷ আমি এটেন্ডডেন্স দিয়ে তোদের সাথে জয়েন করছি৷”

ফারিহা আর কিছু না বলে দ্রুত কলেজে ঢুকে যায়৷ ফারহা গাড়িতে বসে কলেজের গেটে লক্ষ্য করে দেখে সি সি ক্যামেরা লাগানো৷ ফারহা ক্যামেরা দেখে গাড়ি নিয়ে ব্যাক করে ফিরে যায়৷

এদিকে ফারহার ফোনে লাগাতার কল আসছে ৷ ফারহা কোন কল রিসিভ না উল্টো রাস্তা ধরে হোটেলের পেছুনে গিয়ে থামাতে কয়েকজন লোক ফারহার গাড়িতে উঠে বসে৷ ফারহা কোন কথা না বলে দ্রুত গাড়ি ড্রাইভ করে এরিয়া থেকে বেড়িয়ে যায়৷

মেঘ আর তার টিম উপস্থিত হয় ফারহার গাড়ি এরিয়া থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর পর, মেঘ তার টিম নিয়ে হোটেলে রেড করতে জানতে পারে টেরোরিস্ট তাদের আসার পূর্বে বেড়িয়ে গেছে৷ এটা শুনতেই রাগে মেঘের চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে যায়৷ হাতের মুঠোয় থেকে শিকার বেড়িয়ে গেছে এটা কিছুতেই মেঘ মানতে পারছে না৷

ফারহা গাড়ি ড্রাইব করে জনবহুল জায়গায় গাড়ি থামাতে লোক গুলো………
.
.
.
#চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here