নিশীথচিত্র পর্ব ২৬+২৭

‘নিশীথচিত্র'(২৬)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

_____________

ও ভালোবাসা, মরমে দাও গো কেনো ব্যাথা,
আজ্ঞাপত্রেরও তো দরকার নেই, আমার জগদ্বাসীর সব আধিপত্যই তো তোমার।
জানো! না পারি সইতে, না পারি ছুইতে।
এ বড় অনিষ্ট বলে দিলাম!!!!
কই তোমার ভালোবাসা তো আমায় ছুতে অনুমতি নেয় নি! এই নিয়ে মনে বড্ড… বড্ড কি বলো তো?
কি ভাবছো অভিযোগ?
উহু মোটেই না।
মনে এই নিয়ে বড্ড অনুরঁজন, বড্ড তৃপ্তি আমার।
শিরায় ধমনীতে সুখ আমার।
তবে হ্যা সামাজিক অনিষ্ট আমি মানি না।
আমি হবো ভালোবাসার আর এক রূপ বুঝলে?
ভালোবাসার মতো অতি বেপরোয়া হয়ে প্রেম ঘটাবো আমি তোমার জগদ্বাসীর প্রসস্থ বুকে।
দেখে নিও,এ পরিণয় হবেই।

নিচে ছোট্ট করে লেখা
আপনার নিনি

দিহান কাগজটার অপর পাতা উল্টে দেখলো।

আপনার জন্য একটা সর্ট কুয়েশ্চন আছে।এই যে ছন্দ ফন্দ যাই হোক যেটা লিখেছি এটা দিয়েই।বিস্ময়ে দিহানের চোখ অক্ষিকোটর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইছে।প্রেমপত্র দিয়ে কে কবে কোন যুগে সর্ট কুয়েশ্চন ধরেছিলো কে জানে?
বিস্ময়াভিভূত অভিব্যক্তিতে দিহান প্রশ্নে চোখ বুলালো

প্রঃআমার এই অবাধ্য ভালোবাসাটা কে যে আমায় বেপরোয়া করছে?

এরপর উত্তর দেয়ার জন্য দুই অক্ষরের ফাকা ঘর আঁকা।এরও বেশ খানিকটা নিচে লেখা

“সঠিক উত্তর দিতে পারলে দুইটা উম উম বিনামূল্যে পাবেন।উম উম কি বোঝেন তো?হিহি। বিনামূল্যে কি তা বুঝেছেন তো?”

আরও বেশ খানিক নিচে লেখা

“ছন্দে আমি তুমি সম্বোধন করেছি, ভুল ত্রুটি মার্জনা করিবেন জাহাপানা।”

দিহান চিঠিটা উল্টে পাল্টে আরও দুইবার পরলো।খানিকক্ষণ রুম কাপিয়ে হাসলো।এরমধ্যেই বন্ধ দরজার নিচ দিয়ে আবারও একটা কাগজ এলো।

” কই উত্তর দিন”

দরজার নিচ থেকে দুইটা আঙুল দিহানের রুম থেকে দেখা যাচ্ছে।দিহান কপালে হাত দিয়ে বললো
“এই রাত্রি বেলা মেয়েটা কি দুষ্টমিতে মেতেছে আল্লাহ!”

দিহান একটা কলম নিয়ে দরজার সামনে বসে রিনির আঙুলে গুতা দেয়।সাথে সাথে আঙুল দুটো সরে যায়।কিছুক্ষণ বাদে আঙুল দুটো দিহানের রুমে আবার ঢোকে সাথে ছোট্ট একটা কাগজ।দিহান কলম দিয়ে আবার একটা গুতো দিয়ে কাগজটা নেয়।কিন্তু অাঙুল সরে না।দিহান চিরকুটটা পড়ে।গুটি গুটি অক্ষরে লেখা

“প্রথমবার বুঝতে পারি নি তাই আঙুল না চাইতেই সরে গেছে। অপ্রস্তুত জিনিসে কাজে যা হয় আর কি এবার যত গুতান আর সরবে না।”

দিহান হুট করে দরজা খুলে ফেলে।রিনি উপর হয়ে ছিলো ফ্লোরে।কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে সোজা হয়ে বসে।দিহান একটানে রুমের মধ্যে নিয়ে দরজা আটকে দেয়।

ভ্রু উচিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করে” কি”
রিনি ইশারায় তিরিং বিরিং করে মাথা নাড়িয়ে বুঝায় “কিছু না”

পরক্ষণেই রাশভারী মুখ করে বললো
— “সর্ট কুয়েশ্চন এর আনসার কই? হুম?হাত পেতেছিলাম আনসারের জন্য গুতা খাওয়ার জন্য একদম না”

দিহান দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে লাইটটা নিভিয়ে দেয়।অন্ধকারে রিনির সাহস বাড়ে।দিহানকে মধ্যে ফেলে দিহানের দুই দিকে দুই হাত দিয়ে দেয়ালের রেখে আবদ্ধ করে দিহানকে। কিছুটা দূরত্ব রেখে দিহানের দিকে কুঞ্চিত চোখে তাকায়। ফিসফিস করে ধমক দিয়ে বলে

–“উত্তর দ্যান বলছি। ” কিছুটা থেমে প্রলোভন দিয়ে বলে “ঘুষ দেবো তাহলে ”

ড্রিম লাইটের হালকা আলোয় রিনির মুখ আবছা দেখা যাচ্ছে।দুটো উৎসুক চোখ তার উত্তরের গভীর অপেক্ষায়।ধৈর্যহারা কন্ঠে আবার বললো

–“কি হলো উত্তর দিন”

দিহান ভাবলেশহীনচিত্তে বললো
–“দেবো না উত্তর।ঘুষ চাই না আমার”

রিনি হায়হুতাশ করে বললো
–” আল্লাহ আপনি এক মার্কের একটা সর্ট কুয়েশ্চন পারছেন না? মান সম্মান থাকবে আমার? লোকে বলবে আমি হবু জামাই মানুষ করতে পারি নাই।আর এই খবর শিক্ষামন্ত্রী জানলে কি হবে জানেন? আপনাকে ছাত্রের খাতা দিয়ে পদত্যাগ করাবে।”

রিনি ফিসফাস করে এসব কৌতুকপূর্ণ কথা বলছে।দিহানের আবার হাসির বেগ বেরে গেলো।চাপা আওয়াজে হাসছে।

চকিতে মুখের মধ্যে আম্ভরিক ভাব ফুটিয়ে বললো

–“এবাবা ছাত্র দিয়ে পদত্যাগ করাই দিলে তো আমার চরম ক্ষতি হয়ে যাবে!! তাহলে তো আমি অতি দণ্ডনীয় ভুল কাজ করতে যাচ্ছিলাম। বলো তোমার কতো প্রশ্নের উত্তর লাগবে বলো”

রিনি ফিক করে হেসে দেয়।দিহান শব্দ না করতে বলে।রিনি নিজেকে শান্ত করে বললো
–“ওই সেটা দিলেই হবে”

— “কাগজের টা দেবো?”

রিনির চোখ মুখ সংকুচিত হয়।
–“কাগজ বলে আমার চিরকুট কে অপমান করলেন কেন ?”

–“এই রাতে কি তুমি মিরাক্কেলে পার্টিসিপেট করার রিয়ার্সল করতে এসেছো?”

রিনি চোখ বড় বড় করে তাকায়।
–“কেন বলেন তো?”

— “কেন টেনো নেই কোনো ”

দিহানের মুখের সামনে ডান হাত পেতে বললো

–“তাহলে আমার উত্তর?”

দিহান দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করে বললো
–“আমি।”

দিহানের মুখে ওষ্টে মৃদু হাসি না চাইতেও লেগে আছে।রিনির বুকটা ধক করে উঠলো।কি অদ্ভুত ভালোলাগা সামান্য “আমি” নামক সীকারক্তিতে। প্রতি পদে পদে জানান দেয় এই মানুষটা ছাড়া সে শূন্য।রিনিও প্রেমতপ্ত নিশ্বাস ত্যাগ করে।চারিদিকে সব ভালোবাসা। তার ভালোবাসা তারই থাকবে।

দিহান খুক খুক করে বললো
–“এবার যাও।দরজা খুলে দেখলাম মায়ের রুম থেকে বাবা নয় মা কেউ একটা বের হচ্ছিলো।তাই এ টেনে ভেতরে এনেছিলাম।এবার যাও”

রিনি হা করে গালে হাত দিয়ে বললো
–” আল্লাহ ওয়াদা ভঙ্গকারীকে একদম পছন্দ করে না জানেন না?আমি বাবা কথা দিয়ে কথা রাখার মানুষ। কই মুখটা আগান তো। চাঁদবধন মুখে দুইখানা চুমু খাই”

–” লজ্জা তো তোমার দুনিয়া থেকেই উঠে গেছে”

–“আপনার সামনে লজ্জাদের আসার পারমিশন নেই।”রিনি আবার ভাব নিয়ে বললো”আমার ভালোবাসা হলো হরতাল আর লজ্জা হলো টেম্পু।হরতাল চললে টেম্পু চলে না জানেন না?আমি তলে তলে টেম্পু চালাই সামনে বলি হরতাল।আমার টেম্পু তলে তলেই চলবে বুঝলেন।আপনার সামনে একদম না।আপনার সামনে শুধু চলবে হরতাল হরতাল হরতাল”

দিহান মাথায় হাত দিয়ে চোখ দুটো গোল গোল করে বললো
–” ওরে আল্লাহ এটাও শোনার বাকি ছিলো?কি উপমা দিলা।আমি শিহরিত”
দিহানের চাপা হাসি বেড়ে গেলো

রিনি চট করে বললো
–“শিহরিত করার আগেই শিহরিত? ”

বলেই রিনি খপ করে দুইহাতে দিহানের একবাহু চেপে ধরলো।ফটাফট দুইটা চুমু খেলো বাহুতে।

তারপর মদ খেয়ে মাতাল কন্ঠের মতো কৌতুক করে বললো
–“আহা অমৃত অমৃত।এবার হও শিহরিত”

________________

রিনি পা টিপে টিপে দীপ্তির রুমে অব্দি এলো।প্রসস্থ খাটের সামনের ডিজাইনে জানালার অর্ধেক আটকা পরেছে।বাকি অর্ধেকের সামনে দীপ্তি দাঁড়িয়ে। আবছা আলোয় বোঝা যাচ্ছে জানালার বাইরে কারো সাথে কথা বলছে।দরজা খুলেই রিনি চকিতে প্রশ্ন করলো

— “কে ওখানে?”

দীপ্তি ধরফরিয়ে বিছানায় পাশে বসে পরে। জানালার ওপাশের ছায়াটাও সরে গেলো মুহুর্তেই।দীপ্তি ভীত কন্ঠে বললো

— “রিনি আমি”

রিনি নিশব্দে দরজা বন্ধ করলো।এগিয়ে আসতে আসতে বললো
— ” কে ছিলো জানালার ওপাশে?”
দীপ্তির আত্মা উড়ি উড়ি।লোকটাকে সেই কখন থেকে বলছিলো চলে যেতে কিন্তু খাম্বার মতো দাড়িয়েই ছিলো কথাবার্তাবিহীন। দীপ্তির মানসম্মান যাবার বড্ড ভয়। এখন সেই ভয়টাই পাচ্ছে।যদি তার ভাইকে রিনি বলে দেয়?মস্তিষ্ক শূন্যপ্রায়।জটিল পরিস্থিতিতে পরলে এসব মানুষ নিজেকে পরিস্থিতির কবল থেকে বাচাতে পারে না কোনোমতেই।দীপ্তি তাদেরই দলের।হালকা শীত শীত আবহাওয়া।এর মধ্যেও দীপ্তি অতি সন্তপর্ণে মাথার চিনচিনে ঘামটুকু মুছে নিলো ওড়না দিয়ে।

রিনি দীপ্তির কাধে হাত দিলো।হালকা ঝাকুনি দিয়ে অভিমান গলায় বললো

–“প্রেম করছো কিন্তু বলো নি আমাকে। খুব রাগ করলাম আমি।তোমার সাথে আর দুইদিনেও কথা নেই।”

রিনি জানালা ঘেষে দাঁড়িয়ে জানালার সাথে মুখ মিলিয়ে ফিসফিস করে বললো

–“যে লুকিয়ে আছেন সামনে আসেন। আমি দীপ্তির ভা,, “ভাবি বলতে গিয়েও বললো না সে।আবার বললো ” আমি দীপ্তির ক্লোজ বান্ধবী।আপনি আমার কাছে সেফ।আসেন সামনে আসেন”

তনয় দেয়ালের সাথে মিশে আছে। দীপ্তির এমন কোনো চটপটে বান্ধবী আছে বলে তার জানা নেই তার।দীপ্তির খুব কাছের যে বান্ধবী তার হাত থেকে তনয় যাবতীয় যা পাঠানোর পাঠায় দীপ্তির কাছে।তাহলে কি রিপা? রিপা হলে তো বাইরে কে তা জানার কথা।”আচ্ছা দীপ্তির মা নয়তো?বয়স্ক মহিলা এভাবে ডাকবে কেন? ঝাটা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা এরুপ কাজে।”তনয় আবার ভাবলো “না গলাটা নিতান্তই বাচ্চা একটা মেয়ের” তবুও যাবে কিনা তা নিয়া তনয় দ্বিধাগ্রস্ত।

রিনি দীপ্তিকে বললো
–“এই তোমার জামাইকে আসতে বলো”

দীপ্তি লজ্জায় কুকড়ে গেলো এমন কথায়।ওই লোকটা আবার শুনে ফেললো না তো?

রিনি নিজেই আবার ডাকলো।তনয় খুব সাহস জুগিয়েই জানালার সামনে এলো।

রিনি একগাল হেসে বললো
–“আমি দীপ্তির বোন”

তনয় এবার ঘাবড়ে গেলো।এসে ভুল করে নি তো? বললো বান্ধবী হয়ে গেলো বোন? দীপ্তির জন্য বিপদ ডেকে আনলো কিনা কে জানে?নিজের মাথাই তার দেয়ালের সাথে টাকাতে মন চাইছে।এই মেয়ে যদি তার হবু শালা, শাশুড়ীকে বলে দেয়?”কি ফ্যাসাদরে বাবা”

তনয়ের অপ্রতিভ অবস্থা আন্দাজ করতে পেরে রিনি অভয় দিয়ে বললো
–“ভয় পাওয়ার দরকার নেই আমি কাউকে বলবো না।কিন্তু দেখেন এই দীপ্তি আমাকে আপনার কথা বলেই নি এখন অব্দি।আমি খুব রাগ করেছি বুঝলেন?ডিসিশন ফাইনাল আমি ওর সাথে দুইদিন কথা বলবো না।শাস্তিটা ঠিক আছে না?”

তনয় জোরপূর্বক জবাব দেয়
–“হ্যা হ্যা”
তনয় অবাক মেয়েটা কি চটপটে। কথাবার্তার ধরন রকম শহুরে মেয়েদের মতো।আবছা আলোয় মানুষ আছে বোঝা গেলেও মেয়েটার মুখ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।যা বোঝা যাচ্ছে তাতে ফরসা একটা সুন্দর মুখ তার সামনে।

রিনি দীপ্তিকে টেনে তার পাশে দাড় করালো
–” ভাইয়া কোনো সমস্যা আমায় বলতে পারেন।আমিও এই ঘরের অতিথি হয়ে আসবো আপনিও আসবেন।আমরা কিন্তু সেম সেম।”

তনয় তাজ্জব বনে গেল। তনয়ের ধারনা ভুল না হলে এটা দিহানের হবু বউ? নাকি জিএফ? দিহানের বিয়া ঠিক হলো কবে?এই বয়সে বিয়া করছে? তাহলে আমিও কি প্রস্তাব পাঠাবো? নিজের ভাবনায় নিজেকেই ধমকালো তনয়।হবু বউ বা জিএফ বিয়ার আগে ছেলের বাসায় কেন থাকবে?এই মেয়ে নির্ঘাত ফাজলামো করছে আমার পেট থেকে কথা বের করার জন্য।এই মেয়ে তো তাহলে বড্ড পাকা।তনয় ঠিক করলো কিছুতেই বলবে না সে।

–“কি ভাইয়া কথা বলছেন না কেন?”

–” না না আপু প্রবলেম নেই কোনো।আমি এখানে এমনি এসেছি দীপ্তিকে আমি চিনি না”

— “তাহলে এতো রাতে এখানে কি?শুধুই এমনি? চুরি নাকি ধর্ষন? ঠিক কোনটা করতে এসেছেন বলুন তো? ” রিনির গলার স্বর চওড়া হয়ে যাচ্ছিলো। নিজেকে দমিয়ে আবার নিচু আওয়াজে বললো”নাকি আমার বোন কে ডিসটার্ব করতে এসেছেন? ডাকবো দিহান ভাইকে?ডাকি? ডাকি? দিক মাইর।”

তনয় খানিক ভীত হলো।ভালোবাসার মানুষকে ধর্ষন? ছি কান ভো ভো করছে তার লজ্জায়।

দীপ্তি রিনির হাত চেপে ধরলো থামার জন্য। কিন্তু মুখে বলতে পারলো না যে “রিনি মানুষটাকে ওভাবে বলো না”

রিনি তা খেয়ালই করলো না।ধমকের সুরে আবার বললো

–“কি ডাকবো নাকি বলবেন এখানে আসার উদ্দেশ্য? দেখে তো লুচ্চা মনে হয় না?তাহলে আমার বোনের রুমে কি করে ধর্ষন করার উদ্দেশ্য নিয়ে আসতে পারেন?”

তনয়ের মেজাজ চটে গেলো।তবুও নীরব আওয়াজে খুব শক্ত কণ্ঠে বললো

— “আমি দীপ্তিকে ভালোবাসি।ধর্ষন করতে যাবো কেন?কি সব বলছেন?আর জানালার গ্রিল দেখতে পাচ্ছেন না?এখান দিয়ে ধর্ষন কিভাবে?নিম্নতম বুদ্ধি থাকলে এভাবে একজনকে বলতেন না”

–” হতেও তো পারে দীপ্তি জানালায় হাত দিয়ে চাঁদ দেখছিলো আর আপনি খপ করে ওর হাত আটকে ধরে ছিলেন। দীপ্তি ছুটানোর চেষ্টা করছিলো কিন্তু পারে নি।হতে পারে না এমন টা?

তনয় আবার খানিক অপ্রতিভ হলো।রিনি ফিক করে হেসে দিলো

–” তা ভাইয়া আগেই শিকার করতেন যে দীপ্তিকে ভালোবাসেন তাহলে তো আমার এই পথ অবলম্বন করতে হতো না।”

দুইজোড়া চোখ অন্ধকারের মধ্যেও রিনির দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। বিস্ময়ে চোখ অক্ষিকোটর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইছে যেন।

চলবে,
‘নিশীথচিত্র'(২৭)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

___________

ছাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে দিহান।মিরার বিয়ের পাকাপোক্ত কথা সকালেই হয়েছে। দুপুরের হালকা রোদের আঁচ শরীরে আরামবোধ হচ্ছে তার।পূর্বাকাশে তাকিয়ে গভীর ধ্যানে মগ্ন ।মনে বার বার একটা প্রশ্ন জাগছে। “মিরা কি রাগের বসে বিয়েটা করছে?না বললেই কি ভালো হতো?মিরার মনের অবস্থানটা ভেবে বলা উচিত ছিলো। অবশ্যই মিরা জেদের বসে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও বিয়েটা করছে।জেদের বসে বিয়েটা করে পরে যদি পস্তায় আর তার দো্ষ দেয়? এমনই সাত পাঁচ ভাবছে দিহান।খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে মিরার আর কিছুদিনের স্বাধীন জীবনটা জেদের বসে আটকে ফেলছে আর যার মূলে সে।পরক্ষণেই তার মনে হলো সে তো কখনও রাজী হতো না মিরার সাথে জড়াতে।হতেও তো পারে মিরা স্বামীর সাথেই বেশি সুখী হবে।”যা হয় ভালোর জন্য হয় “এমনটা ভেবেই নিজেকে বোঝালো দিহান।

নিচ থেকে বেশ কয়বার ফিরোজের ডাক শোনা গেছে।নিশ্চয়ই কোনো জুরুরি তলব এটা ভেবে দিহান দ্রুত পায়ে নিচে নেমে এলো।

ফিরোজ ব্যস্ত গলায় বললো
–” কাল গায়ে হলুদ পরশু বিয়া।ডেকোরেটর টেকোরেটর কতো কি লাগবে।ডেকরশন কেমনে কি করবে তোরা জোয়ান পোলারা করবি না তো করবে কারা? ”

ফিরোজ কিছুটা থেমে আবার বললো
–“তোর মা রে নিয়া আমি সোনার দোকানে গেলাম।সেই খান দিয়া দোকানে যাবো।দোকানে মেলা ব্যস্ততা।তুই কাওসার ভাইজানের কাছে যা। মেয়ের বিয়াতে সব ভার তার মাথায় পড়ছে।তার পোলারা শহর দিয়া রওনা দেবে তাও বিকালে।যা একলা মানুষ, ঠিক ঠাক কইরা দিয়ায় যা ”

— “জ্বি আব্বা যাচ্ছি”

বোরকা পরহিতা হাফসা এগিয়ে এলো।তাড়া দিয়ে বললো
–“কই চলো”

দীপ্তির রুম থেকে আংকেল আংকেল ডাকতে ডাকতে রিনি এগিয়ে এলো বেশ দ্রুত পায়ে।পেছন পেছন এলো দীপ্তিও।
রিনি বেশ অধিকারবোধ নিয়ে বললো
–” আংকেল এই লিস্ট ধরেন।এইগুলো নিয়ে আসবেন।বিয়ে বাড়িতে বাচ্চা দল নিয়ে আমরা নিজেরা রান্না করবো রাতে।”রিনি কিছুটা থেমে আবার বললো”আংকেল চার পদের সস, দুটো মুরগী লিখে দিয়েছি আর মশলাপাতি তো ঘরেই আছে ওগুলো কিছু লাগবে না।”রিনি এবার আহ্লাদী স্বরে বললো” নিয়ে আসবেন তো আংকেল?”

ফিরোজ হেসে ফেললো।

–“আনবো না কেন আম্মাজান।তোমারে কথা বলতে দেখলেই আমার কলিজা ঠান্ডা হইয়া যায়।তোমার আব্দার তো রাখবোই।আরও কিছু লাগবে? লাগলে বলো সন্ধ্যায় আমি নিয়ে আসবোনে সব”

রিনি ঠোঁটে হাসি ধরে রেখে বললো
— “না আংকেল আপাতত যথেষ্ট। বাবার কাছে সন্তানের চাওয়ার টাইম টেবিল আছে নাকি?তবে আমি আপনার কাছে আপনার সব থেকে মূল্যবান জিনিসটা চেয়ে নেবো।তখন দেখবো দ্যান কিনা!!”

দিহান গলায় খাবার আটকে যাওয়ার মতো করে কেশে উঠলো।হুট করে রিনির কথাটা হজম হয় নি তার।

–“আচ্ছা আম্মা। আমি এখন যাই দেরি হইয়া যাইতেছে।তবে কথা দিলাম তুমি যা চাইয়া তাই দেবো আমি। ”

ঘর থেকে নেমে হাফসাকে বললো
–“মাইয়াটা কি সুন্দর কথা কয় কও?”

–“হুম। আমার যে কি ভালো লাগে বুঝাইতে পারবো না তোমারে”

–“হ”
ফিরোজ একগাল হেসে আবার তাড়া লাগায়।

ফিরোজ হাফসা গেট দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পরে দিহানও পা চালায়।দীপ্তি বলে
–“ভাইয়া আমরাও যাবো দাড়াও”

–“দাড়াচ্ছি। আয়”

রিনি দিহানের হাত পাকড়ে ধরে। একটা আঙুল বেশ চাপাচাপি করে ফুটায়।দিহান আহ! বলে ওঠে।

ধমক দিয়ে বলে
–“তোমার মাথায় কি শয়তান সারাদিন কিলবিল করে হ্যা?শয়তানি ছাড়া তো কোনো কাজই করো না।”

রিনি গায় মাখলো না। সাভাবিক কন্ঠে বললো
–” শয়তানের সাথে শয়তানি করা ছাড়া কোনো কাজ থাকতেই পারে না”

দিহান কিছু বলতে যাচ্ছিলো রিনির জন্য পারলো না।
রিনি রাশভারী গলায় বললো
–“আর দীপ্তি শোনো আমি যাবো না সেখানে তুমি যাও।আমার সিক্স সেন্স বলে মিরা আপু আমাকে দেখে কমফর্ট ফিল করে না।।”

দিহান দীপ্তি হকচকিয়ে তাকালো।দিহান বিষয়টা সাভাবিক কন্ঠে বললো

–“দীপ্তি তাহলে তোরা বাসায় থাক।আমি চাচার কাছে যাই। আব্বা যেতে বলছে”

রিনির হুট করে অভিমান হলো।

____________

সাত আট জনের একটা আসর বসবে রাতে।আশপাশের দীপ্তির ক্লাসে পড়ুয়া ছেলে মেয়েদেরকেই ডেকেছে আর দূর থেকে রিপা আর রিপার বোন ফৌজিয়া।তিনটা মেয়ে, দুটো ছেলে, দীপ্তি আর রিনি।হালকা কিছু খাবার খেয়ে রাত এগারোটায় দাওয়াত অনুযাই সবাই হাজির ।রিপাকে ওর বাবা কিছু আগেই দিয়ে গেছে।মিরাকে আসতে বলা হয়েছিলো কিন্তু কিছুতেই আসে নি।মিরার মা ও বললো “থাক কাল বিয়ে আজ একটু ঘুমাক”।দীপ্তি তাই আর জোর করে নি।সবাই মিলে ছাদে চলে গেলো।দুই তিনটা দা বটি নিয়ে দীপ্তি, রিপা, ফৌজিয়া, সঞ্চিতা বসে গেলো মুরগি কাটতে।রিপা দূর থেকেই এসেছে দীপ্তির কঠোর আব্দারে।তার বাবা মা রাতে অন্যের বাসায় থাকার জন্য একলা মেয়েকে ছাড়বে না তাই রিপার ছোট বোন ফৌজিয়াকেও সাথে পাঠিয়েছে যাতে চিন্তা মুক্ত থাকতে পারে।আর সঞ্চিতা হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে পাশেই ওদের বাসা,হাসিব ফয়সাল দুই ভাই।রিনি পেয়াজ কাটছে ছুড়ি দিয়ে।রিনিকে টুকটাক পরিচিত করিয়ে দিচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সবার সাথে হাসাহাসি জুড়িয়ে দিয়েছে।রিনি কিছুক্ষণ পর পরই মুরগী কাটবো মুরগী কাটবো বলে উঠছে। কিন্তু দীপ্তি কিছুতেই ছুতেও দিচ্ছে না।দিহান ভাইয়া পই পই করে বলে দিয়েছে”দীপ্তি রিনি কিন্তু কিছু পারে না ।ওকে দা বটির কাজ একদম দিবি না”।
আর এ জন্যই দীপ্তি এতো কঠোর। ছেলে দুটো অর্থাৎ হাসিব ফয়সাল কাঠের খাচার মধ্যে মাটির তৈরি চুলাটা আনতে গেছে সেই কখন। ।অতো ওজনের চুলাটা ছাদে উঠাতে কি মেহনত হয় কি জানে?

দক্ষিণ দিকের বাড়ির সামনের উঠোনে তিন চারটা লাইট অনবরত জ্বলছে।ওটাই মিরার বাসা।কাঠের তৈরি কিন্তু খুব গোসানো বড়সড় ঘর।উঠোনে ডেকোরেশনের কিছু জিনিসপত্র রাখা আছে।

এরমধ্যে দেখা গেলো দিহান হাসিব ফয়সাল শোভন সিলিন্ডার আর গ্যাসের চুলাটা আর একটা ছোট সাইজের টেবিল নিয়ে আসছে।পাতানোর পরে রিনি খট করে বলে উঠলো

–“দিহান ভাই আমি চেয়েছি মাটির চুলোয় রাধবো।আপনি আমার ইচ্ছাটাই চুলোর সাথে মাটি করে দিলেন?”

–“যেটার নিয়ন্ত্রণই জানো না সেটা নিয়ে তর্জমা কেন করতে যাবে বলো তো?”

–“তর্জমা করে কতো অনিয়ন্ত্রিত জিনিস নিয়ন্ত্রণ করলাম।মাটির চুলা তো সামান্য বস্তু”

উপস্থিত সকলের মধ্যে দিহান, দীপ্তি রিনির কথার অর্থ বুঝতে পারলো।দিহান কৌতুক করে বললো
–” বস্তু তো বলছো। ধোঁয়া হলে খাবারের টেস্ট ও ধোঁয়ার মতো উড়ে উড়ে নষ্ট হয়ে যাবে।আরও তো প্রথম রান্না করতেছো আইটেমটা।পারদর্শী রাধুনিদের কথা ভেবেই এনেছি”

রিনি ভেংচি কেটে বললো
–“তো কি প্রথম বারেই মানুষ পারে?”

সবাই আবার কাজে মনোযোগ দিলো।ছাদে পাটি বিছিয়ে শোভন,দিহান,ফয়সাল,হাসিব বসলো।শোভন আর দিহান একই ব্যাচের।শোভনের লেখাপড়ায় তেমন মন ছিলো না কোনো জীবনেই তাই ই স্থানীয় কলেজে পড়ছে তাও বাবা মায়ের জোরাজোরিতে।হাসিব দীপ্তির সাথে পড়ে আর ফয়সার কেবল এইটে।খোসগল্পের এক পর্যায় শোভন বললো

–“ভাই আমার চোখ জ্বলতাছে।কি চুন্দর!!!।”

–“কারে দেখে? ফৌজিয়ারে?”

–“উহু ওই মেয়েটা”

দিহানের বুঝতে অসুবিধা হলো না যে রিনিকে দেখছে শোভন।শোভনের কান টেনে নিজের মুখের কাছে এনে ফিসফিসিয়ে বললো

–“শালা লুইচ্চা এমনি বিনাদাওয়াতি মানুষ তুই।দাওয়াত ছাড়া আনলাম শুধু ফৌজিয়ার জন্য।আর তুই আমার কলিজার দিকে নজর দিস।””

শোভন কৌতুক করে বললো
–“আমি তোর বুকের দিকে কই তাকালাম? তোর কলিজা বুক থেকে আলাদা হইয়া ওদিকে গেলো কবে?”

–“উহু আলাদা হয় নাই জোড়া লেগে গেছে বুঝলি?”দিহান চাপা হুমকি দিয়ে বললো “আর একবার রিনির দিকে তাকা,তোর ফৌজিয়ার কাছে এমন প্যাচ দেবো না!!!!রিনি তো দুদিন পর এমনিই চলে যাবে । কিন্তু তোর ফৌজিয়া? আর ফৌজিয়ারে বলাই লাগবে না। দীপ্তিরে দিয়ে রিপার কাছে বললেই তোর চার আঙুল কপালের আট আঙুল অটো পুইড়া যাবে ”

শোভন ভীত কণ্ঠে বললো
–“আল্লাহর কসম লাগে দোস্ত ওই ডায়িনী শালিরে কিছু বলিস না।তনয় ছাড়া এই মাইয়া আর কাউরে পাত্তাই দেয় না।আর তুই যদি!!!!তোর কজিলারে নিয়া তুই সুখে থাক। কিন্তু আমার এমন ক্ষতি করিস না। ”

ফয়সাল হাসতে হাসতে গড়িয়ে যাচ্ছে। শোভনের ভীত গলায় কজিলা বলাটাকে বার বার উচ্চারণ করছে।হাসিব এসবে নেই।সে বেশ কিছুক্ষণ আগেই মেয়েদের সঙ্গ নিয়েছে।

_______

রিনির গগনবিদারী চিৎকারে দিহান হতচকিত হলো।দৌড়ে রিনির কাছে গেলো।দীপ্তি ভীত চোখে তাকিয়ে আছে।দিহানের চোখে অত্যন্ত ক্রোধ দেখা গেলো।উপস্থিত সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।দীপ্তি পুরোই কিংকর্তব্যবিমূঢ । বাম হাতের পেট থেকে গল গল করে রক্ত বের হচ্ছে।রিনির হাত শক্ত করে চেপে ধরে দিহান অামর্ষ ক্রোধ নিয়ে দীপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে।
দীপ্তি ভীত মুখে তোতলাতে তোতলাতে বললো
— “সঞ্চিতার কাছ থেকে কখন বটি নিয়েছে আমি খেয়াল করি নি ভাইয়া”

দিহান রিনির উপর গর্জে উঠলো
–“একদম কাদবি না তুই।মেরে শেষ করে দেবো একবারে”

টানতে টানতে নিচে নিয়ে গেলো।নিঃশব্দে হাতের রক্ত ধুয়ে নিলো।রিনি হেচকি দিয়ে কাদছে।
দিহান আবার চাপা আমর্ষ কণ্ঠে ক্রিম লাগাতে লাগাতে বললো
–“আব্বা আম্মা উঠলে খবর আছে।চুপ একদম চুপ।এখন ঘুমাবি তুই।কোনো ছাদে যাওয়া চলবে না।”

রিনি বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে “আমার চিলি চিকেন” বলে কেদে ফেললো।দিহানের রাগের মাথায় তুই বলাটাও তার কাছে বিশ্রি লাগছে বেশ।তার উপর ছাদে যাওয়া যাবে না।দিহান হাত দিয়ে রিনির মুখ চেপে ধরলো।রিনি হাত সরিয়ে দিহানেএ হাতের তালুতে মাথা গুজে কেপে কেপে কাদছে।অনুরোধে জর্জরিত কণ্ঠে বার বার বলছে
–“ইট্টুখানি যেতে দেন। আমি চুপ করে শুধু দেখবো”

দিহান চোখ বুজে তার মধ্যে থাকা আতঙ্কটা দীর্ঘশ্বাসের মাধ্যমে ত্যাগ করলো।

মাথা উঠিয়ে দিহানের বোজা চোখটার দিকে তাকালো রিনি। মনে মনে বললো”এই চোখেই আমার মরণ”
___________

বিশ মিনিট বাদে রিনির তাল বাহানায় ছাদে নিয়ে এলো দিহান।চেয়ারে বসে বসে ইউটিউব দেখে সবাইকে ইন্সট্রাকশন দিয়ে যাচ্ছে। দেড় ঘন্টা নিয়ে রান্না খাওয়া শেষ হলো।অতি প্রসংশনীয় না হলেও খারাপ লাগে নি।তবে শেষ মুহুর্তে একটা হাসির ঘটনা ঘটে গেলো।

শোভন নিজের খাওয়া মুরগীর রানটার হাড্ডি গোলাপ ফুলের মতো ধরে রিপা আর ফৌজিয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসলো।প্রেম বৈরাগী কন্ঠে বললো

–“শালিকা তোমার বোনটারে অতোটাই ভালোবাসি যেমন আমি এই হাড্ডিটারে চাবাইতে ভালোবাসি তাই ভালোবাসার জিনিসটা না চাবাইয়া ভালোবাসার মানুষটারে দিয়ে প্রোপজ করতে চাই তুমি যদি পারমিশন দাও।করি প্রোপজ?”

এমন কাজে ফৌজিয়া অপ্রতিভ অজান্তেই মুখ হা হয়ে গেছে।এই জ্ঞান হারালো বলে!
রিপা চোখে মুখে রাগ আনতে চাইলেও প্রচুর হাসির বেগে পারছে না। না চাইতেও উচ্চশব্দে হেসে উঠলো।উপস্তিত স্তব্ধ সবাইও এবার জানো হাসার পারমিশন পেলো।রিনি হাসতে হাসতে একবার দিহানের গায়ে পরছে আর একবার দীপ্তির।হাসতে হাসতে বললো

–“ভাইয়া আপনি হাড্ডিটা চিবুয়ে তারপর ওর সামনে বসে বলতেন যে “হাড্ডিটা যে রূপে যত্ন এবং ভালোবাসা দিয়ে গভীর ভাবে চিবুয়েছি আমি ঠিক ততোটা গভীর ভাবে তোমাকে ভালোবাসি”

ফৌজিয়া নির্বিকার শোভন তার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে।এই দুইজন ছাড়া সবাই হাসছে।রিনির কথা শুনে ফৌজিয়ার দিকে ভ্রু নাচিয়ে বললো

–“ওভাবে প্রোপজ করবো নাকি?”

রিপা মুখ বেকিয়ে শব্দ করে বললো”ইয়াক ছি”।কিছু সেকেন্ডের ব্যবধানে ফৌজিয়া বেহুশ হয়ে ধপাস করে পরে গেলো। সবাই হায় হায় করে উঠলো। রিপা অভয় দিয়ে ফৌজিয়াকে আগলে ধরে বললো

–“চিন্তার কারণ নেই ওর মাথায় বেশি প্রেসার পরলে এমন হয়।আর শোভন ভাইয়া লেখাপড়ায় তো ঘ ঘ আপনি।বাবার থাকলেই হয় না নিজেরও লাগে।আর আমার বোনটা অনেক ছোট কেবল নাইন। ওর পেছনে লাগবেন না।”

শোভন কাচুমাচু করে বললো
–“আমায় প্রত্যাখ্যান করলা শালি?”

রিপা খাপছাড়া ভাবে বললো
–” নাহ।বাচ বিচার করার টাইম নিয়েছি আরকি। পাস করলে আপনার কপাল”

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here