#নীলচে_তারার_আলো
#নবনী_নীলা
#পর্ব_১৯
রায়হান পরক্ষনেই একবার হিয়ার দিকে তাকালো তারপর বললো,” হুম, আছে একজন। খুব সাধারণ একটি মেয়ে।”
মোহনা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,” কে সে মেয়ে?”
” একদিনে সব জানতে চাইছো? সেটা তো হচ্ছে না।”, বলেই হাসলো রায়হান। সে হাসির মাঝে রায়হানের চোখ বার বার হিয়ার কাছে গিয়েই থামছে। কিন্তু হিয়া সে এখনো অন্যমনস্ক হয়ে আছে।
রায়হানের হিয়ার প্রতি এমন দৃষ্টিভঙ্গি সবার চোখ আড়াল করলেও শুভ্রের চোখ এড়ায় নি। সে সিড়ির একপাশে ভ্রূ কুচকে তাকিয়ে আছে। এইখানে দাড়িয়ে সব কথপোকথন শুনেছে সে। এই খরগোশটা রায়হানের কাছে কেনো? খরগোশটা তো হিয়ার কাছে ছিলো। রায়হান কি হিয়াকে আগে থেকে চিনে? শুভ্রের সন্দেহ হলো। সিড়ি থেকেই সে নিজের রুমে ফিরে গেলো।
ম্যারি রায়হানের কোল থেকে নেমে হিয়ার চারপাশে ঘুরতে লাগলো। হিয়া হাত বাড়িয়ে ম্যারিকে কোলে নিয়ে সিড়ি বেয়ে নিজের রুমের দিকে যাচ্ছিল। শুভ্রের রুম পাশ কাটিয়ে যেতেই শুভ্র হিয়াকে গম্ভীর গলায় ডাকলো,” দাড়াও।”
হিয়া একটা ঢোক গিলে শুভ্রের দিকে তাকালো। হটাৎ ডাকছে কেনো এই ডাক্তার। শুভ্র কখনো ভালো কথা বলতে ডাকেনি। শুভ্রের ডাক মানেই বিপদ। শুভ্র এগিয়ে এসে বলল,” তুমি রায়হানকে কবে থেকে চিনো?”
শুভ্রের এমন প্রশ্নে হিয়া চকিত হয়ে তাকালো। ওই এলিয়েন কি সব বলে দিয়েছে। কি মুশকিল! কি বলবে এইবার সে। হিয়া আড় চোখে তাকিয়ে বললো,” কবে থেকে চিনি মানে? কালকেই তো এ…লো। কালকেই দেখেছি।”
শুভ্র ভ্রূ কুচকে বললো,” আর ইউ সিউর?”
হিয়া একটা ঢোক গিললো। শুভ্রের চোখ মুখে এমন এক্সপ্রেশন যে দেখা বুঝার উপায় নেই শুভ্র সন্দেহ নিয়ে বলেছে নাকি এমনেই। হিয়া শুভ্রকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে যেতে বলল,” সিউর না হবার কি আছে? ওনাকে আমি আগে কোথায় দেখবো?” বলা শেষে নিজের রুমে চলে গেল। একপ্রকার শুভ্রর থেকে পালিয়ে এলো হিয়া। উফ যাক বাবা বাঁচা গেছে।
🦋 সকালে শুভ্র ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে দেখে রায়হান তার সোফায় বসে বসে মেডিকেলের বইগুলো দেখছে। শুভ্র তোয়ালে এক পাশে রাখতেই রায়হান মুখের সামনে থেকে বইটা সরিয়ে তাকালো। তারপর ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে বললো,” আগেই সরি বলে নিচ্ছি। তোর রুমে অনুমতি ছাড়া এসেছি। কিন্তু দুদিন হয়েছে এলাম, একবারো তোর দেখা পেলাম না তাই তোর রুমে চলে এসেছি। আশা করি রাগ করিস নি।”
শুভ্র আড় চোখে রায়হানের হাতের বইটার দিকে তাকালো তারপর বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে বললো,” তুই শুধু রুমেই এসেছিস তা না আমার বইগুলোতেও হাত দিয়েছিস। যদিও বরাবরই তুই এমন কিন্তু এখন তো বড় হয়েছিস, অভ্যাস বদলে ফেলা উচিৎ না।”
” হুম্ , তুইও বড় হয়েছিস কিন্তু তুই কি বদলেছিস? বরাবরের মতন গম্ভীর হয়ে আছিস।”, শুভ্রের কথায় শুভ্রকে বেধে দিলো রায়হান।
শুভ্র ভানিতা করার ছেলে না। সোজাসুজি কথাই তার পছন্দ। শুভ্র বুকের কাছে হাত ভাজ করে রায়হানকে জিজ্ঞেস করলো,” সিড়িতে দাড়িয়ে শুনলাম তোর নাকি একটা মেয়েকে পছন্দ। কে সে?”
শুভ্রের সন্দেহ যে রায়হানের হিয়াকে পছন্দ।
রায়হান প্রথমে সজোরে হেসে উঠলো তারপর বললো,” আচ্ছা দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাহলে কথা শুনছিলি? প্রশ্ন যখন মনে ছিলো তাহলে তখন জিজ্ঞেস করলি না কেনো?”
” তখন করিনি এখন করছি। কে সে মেয়ে?”, শুভ্রের স্ট্রেইট প্রস্ন।
” বাপরে এতো সিরিয়াস হয়ে প্রশ্ন করছিস কেনো? এমন মনে হচ্ছে যেনো কোনো ক্রিমিনালের নাম জানতে চাইছিস ।”,বলেই রায়হান হাসলো।
শুভ্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই হাসি তার অসহ্য লাগছে। শুভ্রের মুখে বিরক্তির ছাপ দেখে রায়হান হাসি থামিয়ে বললো,” আচ্ছা বলছি। মেয়েটা আর কেউ না হিয়া।” বলেই রায়হান থামলো তারপর আবার বললো, “সত্যি বলতে আমি এতো জায়গা ঘুরেছি কিন্তু ওর মতো মেয়ে দেখিনি। ও একদম আলাদা। ওর কথা বলার ভঙ্গি, চোখ পিট পিট করে তাকানো, বাচ্চা সুলভ হাসি। সবটা যেনো নেশার মতোন।”
রায়হানের মুখে এমন কথা শুনে শুভ্রের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের রাগ সামলে নিচ্ছে সে। তার ধারণাই সঠিক তাহলে। শুভ্রের আরেকটা প্রশ্নের উত্তর জানা বাকি। শুভ্র চোখ বন্ধ করে তপ্ত নিশ্বাস ফেলে বললো,” কবে থেকে চিনিস তুই হিয়াকে?”
” ছয় মাস হয়তো। এই ছয় মাসে মাত্র তিনবার দেখা হয়েছে ওর সাথে……”,রায়হানের কথার মাঝেই শুভ্র ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তার। তারমানে হিয়া মিথ্যে বলেছে কিন্তু কেনো? ভাবতেই চোখ রক্তিম বর্ন ধারণ করলো শুভ্রের।
🦋 কলেজ থেকে ফিরে হিয়া সোজা নিজের ঘরে চলে এলো। ভীষন ভয় লাগছে তার। হিয়া ব্যাগ থেকে কাগজটা বের করলো। সামান্য ব্যাপার হলেও হিয়ার ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেলো। কাগজটা খুলে দেখার ইচ্ছে থাকলেও হিয়া সেটা করলো না। দিবাকে ফোন দিতে হবে। হিয়া কাজটা টেবিলে রেখেই চট জলদি কলেজ ড্রেস বদলে নিলো। ফোন হাতে নিজের বিছানায় বসলো। প্রথম বারেই দিবা ফোন তুলতেই লাফিয়ে দাড়িয়ে পড়লো হিয়া তারপর বললো,” এই দিবা তুই কই?”
” বাসায় কেনো?”,ওপাশ থেকে ঘুমে জড়ানো কণ্ঠে বললো দিবা।
” তুই এক্ষুনি বাসায় আয়। তুই যে ওই ছেলে..”,এতটুকু বলেই হিয়া থেমে গেলো। তারপর বারান্দার দিকে এগিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,” তুই ওই ছেলেকে চিঠি দিয়েছিস?”
” কোন ছেলে?”,
” আরে চশমা পড়া ছেলেটা।”, বলেই এদিক সেদিক তাকালো হিয়া।
” হ্যা, দিয়েছি কেনো?”, অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো দিবা।
” ছেলেটা চিঠির উত্তর দিয়েছে। চিঠিটা আমার কাছে, তুই এসে নিয়ে যা। আমি রাখতে পারবো না। আমার ভয় লাগছে।”,আস্তে আস্তে করে বললো হিয়া।
” আচ্ছা, ভয় পাচ্ছিস কেনো? চিঠিটা বইয়ের ভাঁজে রেখে দে। আপু ডাক্তারের কাছে গেছে ফিরলে আমি আসবো। তুই পড়েছিস কি লেখা আছে? “,
” নাহ্ আমি পড়িনি। তুই তাড়াতাড়ি আয়।”, বলেই ফোন কেটে দিলো হিয়া। ছেলেটা যে হিয়াকে চিঠিটা দিয়েছে সেটা ড্রাইভার কাকু দেখেছে। সন্দেহের চোখে তাকিয়ে ছিলো তার দিকে এর কারণেই এতো ভয় হিয়ার।
হিয়া কল কেটে ফোনটা টেবিলের একপাশে রেখে টেবিলে তাকাতেই দেখলো কাগজটা টেবিলে নেই। হিয়া চমকে তাকালো। বাহিরে প্রচুর বাতাস বইছে। কাগজটা কি বাতাসে উড়ে গেছে? হিয়া অস্থির হয়ে খুঁজতে লাগলো। সবজায়গায় দেখে বাহিরে তাকাতেই দেখলো। কাজটা দরজার পাশে পরে আছে। হিয়া সস্থির নিশ্বাস ফেলে কাগজটা নিতে এগিয়ে আসতেই দেখলো। শুভ্র কাগজটা তুলে এতোক্ষণে পড়া শুরু করেছে। হিয়া থমকে দাড়ালো।
পুরো চিঠিটা পরে শুভ্র চোয়াল শক্ত করে ফেললো। হাতের ভাজে রাগে চিঠিটা মুড়িয়ে ফেলে বললো,” কলেজে তাহলে তুমি এইসব করতে যাও।”
হিয়া একটা ঢোক গিললো। এইসব করতে যায় বলতে শুভ্র কি বোঝাচ্ছে? হিয়া ভয়ে ভয়ে এগিয়ে এসে বলল,” মানে?”
” এই চিঠিটা কার?”, থমথমে গলায় প্রশ্ন করলো শুভ্র।
হিয়া কাপা কাপা গলায় বললো,” এইটা আমার না।”
” তোমার না মানে? তুমি তো এই কাগজটা নিতেই এদিকে এসেছো। আবার মিথ্যে কথা বলছো কেনো?”, শুভ্রের ধমকের সাথে হিয়া কেপে উঠলো।
হিয়া ভয়ে পিছিয়ে যেতেই শুভ্র হাত ধরে টেনে নিজের কাছে আনলো। তারপর কড়া চোখে বললো,” কে এই ছেলে? কবে থেকে চলছে এইসব? কবে থেকে চিনো ওকে?”
শুভ্র এতো জোরে হিয়ার হাত ধরেছে যে ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠলো সে। তারপর বললো,” কোন ছেলে? আমি কাউকে চিনি না, বিশ্বাস করুন।”
” বিশ্বাস করতে বলছো? এই চিঠিতে কি লেখা আছে তুমি জানো? এইসব পড়ার পরও তোমাকে বিশ্বাস করতে বলছো? বাবা এইজন্যে তোমাকে কলেজে ভর্তি করেছে? এগুলো করতে কলেজে যাও, ছেলেদের পিছে পিছে ঘুরে বেড়াও? কে এই ছেলে?”, রক্তিম চোখে বললো শুভ্র।
হিয়ার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এইসব কি বলছে শুভ্র। কোন ছেলের পিছে পিছে ঘুরেছে সে। হিয়া রীতিমত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। শুভ্র হিয়ার এমন চেহারা দেখে আরো রেগে গেলো তারপর বললো,” এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো ড্যাম ইট? স্পিক আপ।”
হিয়ার হাতে প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছে। শুভ্রের উপর হিয়ার প্রচন্ড রাগ হলো। না জেনে না বুঝে লোকটা যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে। অনেক শুনেছে সে, তাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছে শুভ্র। সেই প্রথমদিন থেকে আজ পর্যন্ত তাকে যখন এইসব শুনতে হচ্ছে। তাহলে এই লোককে কেনো সাফাই দিবে সে। শুভ্র তো তাকে নিয়ে আগে থেকেই এমন ধারণা নিয়ে আছে।
হিয়ার চোখ ছলছল করে এলো। নিজেকে সামলে নিয়ে হিয়া বললো,” আপনার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য না। আপনার যা ইচ্ছে আপনি আমাকে নিয়ে ভাবতে পারেন। কারণ ভাবনাটা তো আপনার সেটা পরিবর্তন করার ক্ষমাতা আমার নেই।”
শুভ্রের রাগটা যেনো আরো বেড়ে গেলে। রায়হানের অনুভূতিগুলো জানার পর থেকেই রেগে ছিলো শুভ্র। তারমাঝে এই চিঠি সবটা যেনো শুভ্র নিজের উপর থেকে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে। শুভ্র হিয়ার হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এসে বললো,” বাধ্য না মানে? হাজার বার বাধ্য তুমি। আইনত তুমি আমার ওয়াইফ। ভুলে গেছো?”
” হ্যা, ভুলে গেছি। মনে রাখার মতন তো কিছু হয়নি। শুধু তিনবার কবুল বলেছি। কি বদলেছে আমার জীবনে? আগেও আমি একা ছিলাম এখনো একাই আছি।”বলতে বলতে হিয়ার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। শুভ্র সে চোখের পানি দেখে নিজের রাগ কমিয়ে ছিটকে হিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে বললো,”তোমাকে আমি আলাদা ভেবেছিলাম কিন্তু তুমি তো আমার সে ভাবনার যোগ্যই না।”
” যখন যোগ্য না তাহলে রেখেছেন কেনো আমাকে? ছেড়ে দিন। আর আপনার যোগ্য অনেকেই আছে। আমি না হয় নাই বা আপনার যোগ্য হলাম।”, প্রচুর অভিমান নিয়ে বললো হিয়া।
” ছাড়বো না তোমায়। এটাই তোমার শাস্তি।”, কড়া গলায় বলে বেড়িয়ে গেলো শুভ্র।
হিয়া থমকে দাড়িয়ে রইলো লোকটা শুধু তাকে ভুল বুঝে গেলো তা না তাকে রীতিমত তার মনটা ভেঙে দিয়ে গেলো। থাক শুভ্রের ভুল সে ভাঙাবে না।
চোখ ছল ছল করে উঠলো হিয়ার। সবাই কেনো ভুল বুঝে তাকে? দুহাতে মুখ ঢেকে নিজের চোখের পানি আড়াল করলো সে।
🦋 শুভ্রের ঘরে কোনো অনুমতি না নিয়েই দিবা ঢুকে পড়লো। সে একা আসেনি, প্রভাও এসেছে কিন্তু প্রভা রায়হানের সাথে নিচে গল্প করছে এর ফাঁকে দিবা হিয়ার ঘরে আসে। সবটা জেনে এখন দিবার রাগে গা জ্বলছে। শুভ্র থমথমে দৃষ্টিতে দিবার দিকে তাকিয়ে রইল।
দিবা ঘরে ঢুকেই কড়া গলায় বললো,” কি বলেছেন আপনি হিয়াকে? দেখি একবার আমাকে বলুন।”
দিবার এমন কথা শুনে শুভ্র ভ্রু কুঁচকে ফেললেও বুঝতে পারছে দিবা হিয়ার পক্ষ নিতে এসেছে। শুভ্র থমথমে গলায় বললো ,” আমার পার্সোনাল ম্যাটারে আমি কারোর ইন্টারফেয়ার পছন্দ করি না। দিবা নিচে যাও।”,
” যাবো না নিচে। আমি আপনার পার্সোনাল ম্যাটারে ইন্টারফেয়ার করিনি। আপনি করেছেন আমার পার্সোনাল ম্যাটারে ইন্টারফেয়ার। যেই চিঠিটার জন্যে আমার বান্ধুবীকে এতো কথা শুনলেন ঐটা আমার। আমি ঘুরেছি ওই ছেলের পিছনে। যা বলার আমাকে বলুন।”, রাগী কণ্ঠে বললো দিবা।
” নিজের বান্ধুবিকে বাচানোর জন্যে আর মিথ্যে বলতে হবে না। যাও নিজের কাজে যাও।”,
” শুনুন এতো উদার আমি না। অন্যের দোষ আমি নিজের উপর নেই না আর নিজের দোষ অন্যের উপর দেইও না। ঐ ছেলেটাকে আমি চিঠি লিখেছি। আজ আমি কলেজে যাই নি তাই হিয়াকে চিঠিটা দিয়েছে। আর ঐ ছেলে লিখেছে না ওর পিছনে ঘুরোঘুরি যেনো বন্ধ করে দেই। এখন আমি আরো ঘুরবো। দেখি সেই ছেলে কোথায় পালায়।”, ক্ষোভ নিয়ে বললো দিবা।
শুভ্র ভ্রু কুঁচকে দিবার দিকে তাকিয়ে আছে। দিবা খুব চঞ্চল সেটা শুভ্র জানে। তাহলে কি হিয়াকে সে ভুল বুঝেছে। চিঠির শুরুতে বা শেষে কোথাও কোনো সন্মোধন ছিলো না। যেহেতু হিয়ার ঘরে পেয়েছে তাই শুভ্র ধারণা করে নিয়েছে সেটা হিয়ার। সকালের রাগের কারণেই কি তার এমন মনে হয়েছে। সবটা চিন্তা করে শুভ্রের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো।
#নীলচে_তারার_আলো
#নবনী_নীলা
#পর্ব_২০
হিয়া আজ কলেজে গেলো না এমন কি নিজের রুম থেকেও বের হয় নি। শুভ্রের এমন আচরণ তাকে গভীর ভাবে আঘাত করেছে। সে নিজেও জানে না শুভ্রের এই ব্যাবহারে তার এতো কষ্ট কেনো হচ্ছে। বার বার শুধু সেদিনের কথা মনে পরছে যেদিন শুভ্র তাকে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেদিনের সেই শুভ্র কত আলাদা ছিলো। সেদিনের সেই রাগেও একটা ভালোলাগা খুঁজে পেয়েছিল হিয়া। তখন তাকে কোলে নেওয়ায় রাগ হয়েছিল কিন্তু যতবার সেই ঘটনা মনে পড়েছে, অজানা ভালো লাগা তাকে আকড়ে ধরেছে।
হটাৎ কেনো জানি সবকিছুই এখন তার কাছে অর্থহীন। হিয়া নিশ্চুপে বারান্দার এক কোনে বসে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আকাশটা আজ পরিষ্কার। হিয়ার ইচ্ছে করছে ওই নীল আকাশে মেঘ হয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই বিশাল আকাশ নিশ্চই তাকে কষ্ট দিবে না। শুভ্রের প্রতিটি কথা সুচের মতন তার গায়ে বিধেছে। যার যন্ত্রণা হিয়া সহ্য করতে পারছে না। অসহ্য এই ব্যাথা।
ময়মনিংহে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে হিয়ার। সেখানে জিবনটা এতো জটিল ছিলো না। জীবনের এতো জটিলতায় কিছু অদৃশ্য ব্যাথা আজ তাকে গ্রাস করেছে।
শুভ্র নিজের ঘরে বিছানায় গা হেলিয়ে মাথার নিচে দুই হাত রেখে শুয়ে আছে। শুভ্র আসলে কেমন? এতোটাই কি সে রাগী? সে নিজেও জানে না।
আমরা অনেকেই নিজেদের অনুভূতি সম্পর্কে খুব সচেতন। কাকে আমাদের ভালো লাগে কিংবা কে আমাদের দুর্বলতা আমরা জানি। কিছু মানুষ থাকে ভিন্ন। এরা নিজেদের অনুভূতি সম্পর্কে কখনোই ভাবে না। শুভ্র সেই সব মানুষের মাঝে একজন। তবে আজ সে অন্যরকম এক অনুভূতির সন্ধান পেয়েছে। আজই সে অনুভূতি জন্মেছে এমন না, জন্মেছে অনেক আগেই শুভ্র সেটা বুঝে নি। কিংবা বুঝতে চেষ্টাও করেনি।
হিয়ার নিজেকে এমনভাবে আড়ালে রাখাটা শুভ্রর শান্ত মনকে অশান্ত করে তুলেছে। আজ ভার্সিটিতেও যায় নি সে। সকালে হিয়া শুভ্রের মুখোমুখি হয়েও নিশ্চুপে চলে গেছে। একপলক তাকায় নি শুভ্রের দিকে।
✨ দিপা আজ আবার আসলো আর সঙ্গে প্রভাকেও নিয়ে আসলো। হিয়া কলেজে যায় নি ফোনও ধরেনি। রীতিমত চিন্তায় দিবা হিয়াদের বাড়ি এলো।
শুভ্রকে প্রায় টেনে প্রভা নিচে নিয়ে এলো। রায়হান হটাৎ একটা প্ল্যান করেছে। সেই জন্যেই প্রভা এতো তড়িঘড়ি করে শুভ্রকে টেনে এনেছে। শুভ্র নিতান্ত অনিচ্ছায় নিচে এলেও হিয়াকে দেখে সে স্বাভাবিক ভাবেই একটা সোফায় বসলো। হিয়া শুভ্রের উপস্থিতি বুঝেও নিশ্চুপে অন্যদিকে তাকালো।
ম্যারিকে কোলে নিয়ে দিবা হিয়ার কাধে মাথা রেখে বসে আছে।
শুভ্রকে দেখে রায়হান বললো,” আচ্ছা, তাহলে সবাই চলে এসেছে। তাহলে প্ল্যানটা বলি।”
মোহনা হাই তুলতে তুলতে বললো,” তাড়াতাড়ি বল।”
” আজ রাতে সবাই মিলে আমিউজমেন্ট পার্কে গেলে কেমন হয়। হ্যা, আমরা বড়ো হয়েছি। কিন্তু সবাই মিলে এইভাবে তো কখনো যাই নি।”,
দিবা আগ্রহ নিয়ে বললো,” অনেক মজা হবে। সবাই মিলে গেলে।”
” আমার জামাইটা সাথে থাকলে ভালো হতো। ভয় পেলে আরাবের কানের সামনে চিৎকার করা যেতো।”, মোহনার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো, শুভ্র আর হিয়া বাদে।
মোহনা হিয়ার এমন চুপচাপ থাকা দেখে বললো,” কি ব্যাপার তোমাকে কি শুভ্রের জ্বীনে ধরেছে। এমন চুপচাপ কেনো আজ।”
হিয়া তাও কোনো কথা বললো না। দিপা হিয়ার পক্ষে বললো,” পৃথিবীতে কি জ্বিনের অভাব পড়েছে তোমার ভাইয়ের জ্বিনেই কেনো ধরতে যাবে।”
প্রভা রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,” বেশি কথা বলিস।”
প্রভার রাগ দিবা গায়ে মাখলো না।
রায়হান সবাইকে থামিয়ে বললো,” আচ্ছা তাহলে সবাই যাচ্ছি তো?”
উত্তরে হিয়া না সূচক মাথা নাড়লো। রায়হান এগিয়ে এসে বললো,” কি ব্যাপার ম্যাডাম? আপনার কি মন খারাপ?”
হিয়া উত্তরে কিছু বললো না। রায়হান আবার বললোl,
” এই স্ট্রবেরি, আমাদের সাথে চলো।মন ভালো হয়ে যাবে।”
শুভ্র ভ্রু কুঁচকে তাকালো। রায়হানকে এবার থামাতে হবে কিন্তু তার আগে হিয়ার সাথে কথা বলা প্রয়োজন। কিন্তু হিয়া তো কাল থেকেই তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে।
হিয়ার প্রতি রায়হানের দুর্বলতা আস্তে আস্তে সবাই দেখতে পাচ্ছে। প্রভা তাই সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো,” রায়হানের বুঝি হিয়াকে স্ট্রবেরির মতন লাগে?”
হিয়া সেইসব কথা কানে নিলো না। রায়হান রহস্যময় হাসলো। শুভ্র রেগে উঠে চলে যেতে নিতেই প্রভা শুভ্রের হাত ধরে বসিয়ে রাখলো আর বললো,” প্লীজ উঠে গিয়ে মজাটা নষ্ট করবি না।”
মোহনা আবার বললো,” কি ব্যাপার হিয়া? এতো মন খারাপ কেনো তোমার?”
হিয়া চুপ করে আছে এখনো। একবার শুধু আড় চোখে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রভা শুভ্রের হাত ধরে আছে। হিয়া মোহনার দিকে তাকিয়ে না সূচক মাথা নাড়ল মানে তার মন খারাপ নেই।
দিবা বললো,” ধুর ওকে এতো জিজ্ঞাসার কি আছে? আমি যাবো মানে ও যাবে ফাইনাল।” হিয়া কিছু বলার আগেই দিবা কড়া গলায় বললো,” যা বলার বলে দিয়েছি। তুই যাচ্ছিস।”
এই আলোচনায় শুভ্রের কোনো ইন্টারেস্ট নেই। তবুও সে বসে আছে হিয়ার জন্যে। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক যাবার ইচ্ছেও নেই যাচ্ছে শুধু প্রভার জোরাজুরিতে আর রায়হানের আচরনে এতো পরিবর্তন দেখে যাচ্ছে।
✨আমিউজমেন্ট পার্কে আজ অনেক ভিড়। আজ হটাৎ এতো ভিড়ের কারণটা প্রথমে ঠিক আন্দাজ করতে না পারলেও এখন ঠিক বুঝতে পারছে। হাতি আনা হয়েছে ভিতরে। সে হাতির পিঠে চরতেই এতো ভিড়। এমন জায়গায় হটাৎ হাতি!
রায়হান হিয়ার পাশে পাশে রয়েছে। শুভ্র সবার পিছনে। প্রভা হাত টেনেও শুভ্রকে সামনে নিয়ে আসতে পারলো না। প্রচন্ড মাথা ধরেছে তার।
সামনে হাতিকে ঘিরে এক বিশাল ভিড়। হিয়া অন্যমনস্ক ছিলো। হটাৎ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো ভিড়ের মাঝে সে একা। আশেপাশে কেউ নেই। বাড়ির সবাই ভিড় ঠেলে হাতিকে দেখতে ব্যাস্ত শুধু হিয়া অন্যমনস্ক থাকায় পিছে রয়ে গেলো। এখন হিয়া ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে সবাইকে খুঁজছে। শুভ্র চুপচাপ এগিয়ে এসে হিয়ার মুখ চেপে অন্যদিকে নিয়ে এলো। প্রথমে হিয়া ভয়ে ছটফট করতে থাকে কিন্তু শুভ্রের উপস্থিতি কিভাবে যেনো টের পেয়ে শান্ত হয়ে যায় হিয়া। শুভ্র হিয়াকে অন্ধকার একটা জায়গায় নিয়ে এলো। পুরোনো টিকিট কাউন্টার মনে হচ্ছে।
বাহিরের হালকা আলোয় হিয়া শুধু শুভ্রের চেহারা দেখতে পাচ্ছে। শুভ্র হিয়ার মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিতেই হিয়া সঙ্গে সঙ্গে রেগে পাশ কাটিয়ে চলে নিলো। শুভ্র শক্ত করে হিয়ার হাত ধরে ফেললো। হিয়া শান্ত গলায় বললো,” ছাড়ুন আমায়। আমাকে এইখানে এনেছেন কেনো?” বলেই নিজের হাত ছাড়াতে ছটফট করতে লাগলো।
হিয়াকে এমন ছটফট করতে দেখে শুভ্র হিয়াকে কোলে তুলে একটা টেবিলের উপর বসিয়ে দিতেই টেবিলটা নড়ে উঠলো। টেবিলটা ভাঙ্গা ছিলো শুভ্র সেটা খেয়াল করেনি। আর কি বা করতো সে? হিয়াকে আটকানোর একটাই উপায়। তবে টেবিলের এমন নড়ে উঠায় হিয়া আরো বেশি ভয় পেয়ে বললো,” এই টেবিল ভাঙ্গা আমি পড়ে যাবো। নামান আমাকে।”
শুভ্র হিয়ার কোমর ধরে বললো,” আমি আছি…।”
শুভ্রের স্পর্শে সাড়া শরীরে শিহরণ বয়ে গেলো হিয়ার। হিয়া জামার প্রান্তভাগ শক্ত করে ধরে আছে। হিয়ার অসস্তি হচ্ছে, শুভ্রের এমন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা তার মূল কারণ। হিয়া মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। আবার এইখানে তাকে কেনো এনেছে? আবার বকবে তাকে, ভেবেই হিয়ার কান্না পেলো। চোখ ছল ছল করে উঠলো।
হিয়ার চোখে পানি দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো শুভ্র। কিছুক্ষণ নির্বিকার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে শুভ্র খুব নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো,” কাদছো কেনো তুমি? আমি তো কিছুই বলিনি।”
হিয়া বাচ্চাদের মতন চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো,” বলতে বাকি রেখেছেন কি? আপনি তো সবসয়ই আমাকে বকেন।আবার কি করেছি আমি? কেনো তুলে এনেছেন?”
শুভ্র পলকহীন দৃষ্টিতে হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।তারপর পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে হিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,” নাও। চোখের পানি মুছ। তোমাকে আর বকবো না।”
” আপনার রুমাল আমি নিবো না।”,বলেই হিয়া ওড়নার প্রান্তভাগ দিয়ে চোখের পানি মুছে আবার মাথা নুইয়ে রাখলো। শুভ্রের হটাৎ খুব মায়া হলো হিয়াকে দেখে। শুভ্র দূরত্ব কমিয়ে আরেকটু কাছে এসে বললো,” সরি।”
সরি শব্দটা হিয়ার কানে পৌঁছাতেই হিয়া হকচকিয়ে তাকালো। তাকাতেই বুঝলো শুভ্র তার একদম কাছে। হিয়ার বিস্ময় কাটছে না। চোখ মুখে বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করলো,” কি বললেন?”
হিয়ার চোখে মুখে এতো বিস্ময় দেখে শুভ্র ভ্রূ কুচকে বললো,” কিছু না।”
” কিছু না মানে? আমি যে শুনলাম আপনি সরি বললেন। তাহলে আমি কি ভুল শুনলাম?”, শুভ্রের দিকে তাকিয়ে বললো হিয়া।
শুভ্র এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি আর হয় নি। শুভ্র ভীষন অপ্রস্তুত হয়ে তাকালো হিয়ার দিকে। তারপর শুভ্র হিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দাড়াতেই টেবিলটা আবার কেপে উঠলো। হিয়া ভয়ে শুভ্রের হাত ধরে ফেললো। তারপর চেঁচিয়ে বললো,” আমাকে এইখানে বসিয়ে দিয়ে কি মেরে ফেলতে চাইছেন? আমি পড়ে যাবো তো….”
শুভ্র দ্বিতীয়বারের মতন এগিয়ে এসে হিয়ার কোমড় ধরতেই হিয়া কেপে উঠলো। হিয়ার এমন কেপে উঠা দেখে শুভ্র চোখে হাসলো। সে হাসি দেখে হিয়া অনেক হকচকিয়ে রইলো।
তারপর শুভ্র কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,” রায়হানকে কি তোমার পছন্দ?”
সরল মনে শুধু হিয়ার অনুভূতি সম্পর্কে জানার জন্যে শুভ্র প্রশ্নটা করলেও, হিয়া ভরকে গেল।
” আমার ওনাকে পছন্দ মানে? আপনি আবার আমাকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা ভাবছেন। আমি এইখানে থাকবো না। ছাড়ুন আমাকে।”, বলেই হিয়া তড়িঘড়ি করে শুভ্রের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করলো। যার কারণে টেবিলটা অস্বাভাবিকভাবে নড়ছে। শুভ্র হালকা ধমকের সুরে বলল,” নড়ছো কেনো। পড়ে যাবা তো।”
” পড়ে গেলে পড়ে যাবো। আমি এইখানে থাকবো না। আমাকে আপনি কি মনে করেন?”, ভীষন রেগে গিয়ে বললো হিয়া।
“আমি কোনো সন্দেহ থেকে তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করিনি তোমাকে শুধু একটা প্রশ্ন করছি। উত্তর না দিয়ে কোথাও যেতে পারবে না তুমি?”, কথাটা শুভ্র গলা উচু না করেই বললো।
কিন্তু হিয়া তাতেও রেগে গিয়ে বললো,” বলবো না আমি। ”
শুভ্র বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে বললো,” তারমানে তোমার ওকে অনেক পছন্দ। ”
” আমার যাকেই পছন্দ হোক না কেনো তাতে আপনার কি?”, কটমট করে তাকিয়ে বললো হিয়া।
” আমার কিছু না। বাবা জানতে চাইলো তাই জিজ্ঞেস করলাম।”, এতটুকু বলতেই হিয়া হকচকিয়ে তাকালো।
” বাবা জানতে চাইলো মানে?”, রীতিমত ভয়ার্ত চোখে তাকালো হিয়া।
” আমি কিভাবে জানবো। আচ্ছা বলতে লজ্জা হলে থাক আমি বলে দিবো যে তোমার অনেক পছন্দ হয়েছে রায়হানকে।”, শুভ্র হিয়ার মুখ থেকে কথা বের করতেই মিথ্যেটা বললো।
হিয়া রীতিমত চেঁচিয়ে বললো,” নাহ্, একদম না। আমি মোটেও ওনাকে পছন্দ করি না। একদম আজে বাজে কথা ছড়াবেন না। আর আপনি আমাকে এইখানে এনেছেন কেনো?”
” যেই জন্যে এনেছি সেটা হয়ে গেছে এইবার নামো এইখান থেকে।”, বলে হিয়াকে নামিয়ে দিবে এমন সময়ে কিছুর বিকট আওয়াজে হিয়া সামনে আরো কিছু ঝুকে সামনে তাকালো। শুভ্র ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে দরজার দিকে তাকালো। কেউ নেই তাহলে কিসের শব্দ হলো? শুভ্র ঘাড় ফিরিয়ে হিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো হিয়া শুভ্রের একদম কাছে।
শুভ্রের মনে দুষ্ট একটা ইচ্ছে জাগতেই শুভ্র হিয়ার কোমড়ে থেকে হাতটা হালকা সরিয়ে আনলো হিয়া ব্যালেন্স হারিয়ে আরো সামনে ঝুঁকে আসতেই শুভ্রের সাথে হিয়ার ঠোঁট মিলে গেলো। হিয়ার কাছে পুরো বিষয়টা অপ্রত্যাশিত হলেও শুভ্রের কাছে এটাই প্রত্যাশিত ছিল…।
[ #চলবে ]