নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব-১২+১৩

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ১২ + ১৩ {Double Bonus 🍂}

আইরাত চলে গেলে আব্রাহাম আবার সেই লাশটার কাছে যায়। গার্ড’রা তাকে সোজা গাড়িতে তুলে ফেলে, হয়তো দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে। রাশেদ বাকি গার্ড দের সব বুঝাচ্ছিলো তখনই আব্রাহাম এসে তার পাশে দাঁড়ায়। রাশেদ থেমে থেমে আব্রাহাম কে জিজ্ঞেস করে বসে…

রাশেদ;; স্যার, না মানে বলছিলাম কি যে ওকে মা মার ম মারলেন কেনো?

আব্রাহাম;; লিসেন ক্লাইন্ট গুলোকে বলো সেভেন স্টার হোটেলে থেকে যেতে। আজ আর মিটিং হচ্ছে না। এখানে কাজ আছে আমার। আগামীকাল সব মিটমাট করবো।

রাশেদ;; জ্বি স্যার।

রাশেদ আব্রাহামের কথা মতো চলে যায়। যে জায়গায় ওই গার্ড টাকে খুন করা হয়েছে সেখানে বেশ ব্লাড লেগে আছে। বাকি গার্ড রা সেগুলো সামলাতেই ব্যাস্ত হয়ে পরে। মৃত ব্যাক্তির ঠিক কপাল সই একটা বুলেটের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কপাল টা যেনো ভেদ করে ভেতরেই ঢুকে গিয়েছে একদম। বুকটা গুলিবিদ্ধে প্রায় ঝাঝড়া হয়ে গেছে। ঘাড়ের হাড় সম্পূর্ণই ভেঙে গিয়েছে আর মুখটাও বেশ এবড়োথেবড়ো হয়ে ছিলো। তবে এক ঝামেলা শেষে হতে না হতেই তো আরেক ঝামেলা এসে মাথায় ভর করলো। আইরাতের চিন্তা কাজ করছে শুধু মাথায়। এখন আব্রাহাম কি করে তাকে বুঝাবে। কিন্তু যে করেই হোক বুঝাতে তো হবেই। রাশেদ গিয়ে মিটিং ক্যান্সেল করে দিয়ে ক্লাইন্ট গুলোর একদিনের থাকার ব্যাবস্থা করে দেয়। সেদিকের কাজটা মিটিয়ে আবার রাশেদ আব্রাহামের কাছে চলে যায়। গিয়ে দেখে আব্রাহাম আর বাকি এতোগুলো গার্ড এখনো অফিসের পেছনের দিকটায় দাঁড়িয়ে আছে। রাশেদ গিয়ে আব্রাহাম কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই দেখে দু-তিন জন গার্ড গিয়ে রড, দেওয়ার ভাঙার মেশিন, ড্রিল মেশিন এগুলো আনছে। সব যেনো রাশেদের মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। এগুলো এখানে কেনো আর কি করবে এগুলো দিয়ে! আব্রাহামের অফিস মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। এক সাইডে সবাই কাজ করে আর আরেক সাইডে অফিসের যাবতীয় তথ্যাদিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র রাখা। আর এখানে আব্রাহামের পারমিশন ছাড়া কারো ঢোকা তো দূর এর পাশ দিয়ে যাওয়াও নিষেধ। এক সময় একজন গার্ড এগিয়ে দিয়ে দেওয়ালে মেশিন দিয়ে ফুটো করা শুরু করে দিলো। রাশেদ কপাল কুচকে আব্রাহামের দিকে তাকায় দেখে সে চুপ করে দাঁড়িয়েই আছে।

রাশেদ;; স্যার, স্যার দেওয়াল কেনো ভাঙা হচ্ছে!

আব্রাহাম;; জাস্ট ওয়েট & ওয়াচ।

দেখতে দেখতে এক সময় দেওয়াল অর্ধেক ভেঙেই ফেলে তারা। অধিকাংশই ভেঙে ফেললে আব্রাহাম এবার তাদের থামিয়ে দেয়।

আব্রাহাম;; স্টোপ..

গার্ড গুলো দেওয়াল ভাঙা ছেড়ে দিয়ে পেছনে চলে আসে। আব্রাহাম এবার গিয়ে তার হাতে বিশাল আকাড়ের একটা লোহার কাস্তে নিয়ে নেয়। অনেক ভারি তবুও আব্রাহাম এক নিমিষেই শূন্যে তুলে ফেলে, তা তুলে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত রাগ নিয়ে দাঁত কটমট করতে লাগে। সামনে থাকা বড়ো দেওয়াল টাতে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে দেয় এক ঢিল। মূহুর্তেই এক বিকট শব্দ হয়ে দেওয়াল টা গুড়ো গুড়ো হয়ে ভেঙে নিচে পরে যায়। তবে দেওয়াল টা ভেঙে পরতেই যেনো সবার চোখ ছানাবাড়া। কেউ বিশ্বাসই করতে পারছে না যে এখানে এমন কিছু একটা দেখতে পারবে। অবিশ্বাস্য! দেওয়ালের ভেতরে শুধু টাকা আর টাকা। অর্থাৎ টাকাগুলো ভেতরে রেখে দেওয়ালের আড়াল করে রেখেছিলো। আব্রাহামের অফিসে মজুদ থাকা সব টাকা-পয়সার কড়ায়-গণ্ডায় হিসেব আছে তবে এখানের এই টাকা গুলোর ব্যাপারে কারো বিন্দুমাত্র ধারণাও ছিলো না। সব লুকায়িত কারবার প্লাস ইলিগ্যাল। আর এগুলোই ব্ল্যাকমানি। এগুলো আব্রাহামের অফিসে রাখার কারণ হচ্ছে তাকে ফাসানো। এখন এই বেআইনি টাকাগুলো এখানে ছিলো কিছুদিন পর হয়তো সিআইডি আসতো আব্রাহামের অফিসে র‍্যাডও লাগানোর জন্য। আর খুঁজে খুঁজে যদি এই ব্ল্যাকমানি গুলো পেয়ে যেতো তাহলে……. তাহলেও তারা আব্রাহামের একটা চুলও পাকা করতে পেতো না। ধারে-কাছেও ঘেষতে পারতো না। কিন্তু আব্রাহাম চায় না অযথা ঝামেলা। আর সে অবশ্যই কোন খারাপ কাজে নেই। এই কাজগুলো সব আব্রাহামের পিঠ পিছে করা হয়েছে আর আজ যখন সব শুনে নিলো তখন সেই গার্ড কেই মেরে ফেললো। মারতে মারতে গার্ডের মুখ থেকে সব কথা বের করেছে। কথায় আছে না “আমাদের আশেপাশের মানুষই আমাদের সবথেকে বড়ো শত্রু” ঠিক তেমনই। যে মার গুলো মেরেছে আব্রাহাম ওকে তাতে ও যদি বেঁচেও থাকতো তাহলে মনে হয় না আর কোনদিনও নিজের পায়ে উঠে দাঁড়াতে পারতো।

আব্রাহাম;; এক ঘন্টা, এক ঘন্টার মধ্যে এখানে একটা টাকাও যেনো না থাকে। দরকার পরলে জ্বালিয়ে দাও সব। আর এই দেওয়াল দেখে যেনো কেউ টেরও না পায় যে আদৌ কিছু হয়েছে।

_________________________

আব্রাহাম;; Is that clear!? (চিল্লিয়ে)

আব্রাহামের জোরে চিল্লিয়ে কথা বলাতে যেনো সবাই কেপে ওঠে আর হ্যাঁ বলে দেয়। আব্রাহাম সেখান থেকে এসে পরে।


অন্যদিকে আইরাত দৌড়ে তার বাসার ভেতরে চলে যায়। বাড়ির ভেতরে গিয়েই দরজা ধরে হাপাতে লাগে। জোরে জোরে দম নিচ্ছে আর কপালের পাশে জমে থাকা ঘামের বিন্দু গুলো মুছছে। অনামিকা হাত থেকে কিছু জিনিস টেবিলের ওপর রাখতে গিয়ে দরজার দিকে তাকায়। দেখে আইরাত দরজাতে হাত দিয়ে হাপাচ্ছে। অনামিকা তার শাড়ির আঁচল নিজের কোমড়ের একপাশ থেকে সামনে এনে দ্রুত আইরাতের দিকে এগিয়ে যায়।

অনামিকা;; কিরে কি হয়েছে? এভাবে হাপাচ্ছিস কেনো?

আইরাত কিছু বলে না, অনামিকা দরজার বাইরে কিছুটা উঁকি ঝুকি দেয়।

অনামিকা;; আচ্ছা এভাবে হাপাচ্ছিস কেনো কি হয়েছে বলবি তো নাকি? পাগল কুকুরে দৌড়িয়ে নিয়েছে নাকি।

আইরাত তার পাশ কাটিয়ে ভেতরে এসে পরে। হলরুমে এসে ফ্রিজ থেকে পানির বোতল টা নিয়ে সোফাতে ধিরিম করে বসে পরে। ঢকঢক করে পানি খেয়ে নেয়। এবার দুইহাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরে চুপ করে বসে থাকে।

অনামিকা;; আইরাত কি হয়েছে?

আইরাত;; কিছু না।

অনামিকা;; তাহলে এমন করছিস কেনো?

আইরাত;; আরে সত্যিই কিছুই না। মানে আসলে আমি দৌড়িয়ে বাসায় এসেছি তো তাই।

অনামিকা;; তুইও না এখনো কি ছোট বাচ্চা আছিস নাকি যে এমন করিস। রাস্তার মানুষ গুলো কি বলবে।

আইরাত;; আরে ধুর নিজে বাঁচলে বাপের নাম।

অনামিকা;; আচ্ছা চাকরির কি হলো তোর।

আইরাত;; চাকরির গুষ্টি কিলাই। লাগবে না, আমি চাকরি করবো না এখন, একদম স্টাডি কমপ্লিট করে দ্যান যা করার করবো এখন কিচ্ছু না।

অনামিকা;; এই কথা তুই বলছিস!

আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ আমিই বলছি। এখন আর এইসব চাকরি বাকরি না। এইসব বাদ।

এই বলেই আইরাত সেখান থেকে উঠে চলে আসে। আর অনামিকাও নিজের কাজ করতে লাগে। রুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়।

আইরাত;; আল্লাহ কি দেখলাম, এ কি দেখলাম আমি। ও খোদা। এই ছেলে কি আদৌ মানুষ নাকি অন্য কিছু। মানে নিজের মাঝে কোন দয়া-মায়া বলতে কিচ্ছু নেই কিচ্ছুই না। কীভাবে মারলো আল্লাহ একটুও কি হাত কাপলো না। এই কিনা আবার আমাকে বলে ভালোবাসে। ভালোবাসা মাই ফুট। আমি জীবনেও এই ছেলের কাছে যাবো না। তৌফিক কে ফোন করে বলে দিবো যে আমি আর অফিসে জয়েন করবো না ব্যাস। আর মা কে তো বলাই যাবে না এইসবের ব্যাপারে।

এভাবেই রাতের সময় টুকু যায়। রাতে আইরাতও খাওয়া-দাওয়া করে নি। সোজা গিয়ে শুয়ে পরেছে। রাতে নিজের রুমে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো কিন্তু তখন বাধে আরেক বিপত্তি।


আব্রাহাম আর আইরাতকে ছাড়া থাকতে পারছিলো না। অবশ্যই ভূল বুঝেছে আইরাত তাকে। আর শুধু আইরাত না যে কেউ কোন মানুষ কে এমন ভয়ানক লুকে দেখলে ভয় পাবে। তবে আব্রাহামের মন তো আর মানছে না। তার ভয় যদি আইরাত, যদি আইরাত তার থেকে দূরে চলে যায় তাহলে আব্রাহাম কীভাবে বাঁঁচবে। এতো শত চিন্তা যেনো আর নিতে পারছিলো না আব্রাহাম তাই গাড়ি নিয়ে সোজা আইরাতের বাসায়। এখন যাবে আইরাতের রুমের ভেতরে। দরকার পরলে রুমের দরজা ভেঙে তারপর ভেতরে যাবে। এতে যদি সবাই জাগে তাহলে জেগে যাক। বাট আইরাতকে তার চাই এখন। আব্রাহাম জলদি করে নিজের হুডি টা জড়িয়ে নেয়। নিজের সাথে একটা ক্লোরোফর্ম স্পে (অজ্ঞান করার মেডিসিন) নিয়ে যায়।

আব্রাহাম;; আল্লাহ জানে এই মেয়ে কে পাওয়ার জন্য আমাকে আর কতো কি করতে হবে। লাইক সিরিয়াসলি! আমি আব্রাহাম চৌধুরী এখন এতো রাতে দেওয়াল টপকে একটা মেয়ের বাসায় তার রুমে যাচ্ছি তাও লুকিয়ে-চুরিয়ে। ওহ গড

এই বলেই আব্রাহাম দেওয়াল টপকে গেইটের ওপর পাশে চলে যায়। এবার দ্রুত বাড়ির পেছনে গিয়ে আইরাতের করিডরের নিচে দাঁড়িয়ে পরে। আব্রাহাম তার দুইহাত কোমড়ে রেখে আগে খেয়াল করে দেখে নেয়। তারপর এক পা এক পা করে ওপরে চলে যায়। কিছু সময় পর করিডরে ধিরিম শব্দ করে দাঁড়ায়। করিডরে তো এসে পরলো এবার আইরাতের রুমের ভেতরে। আব্রাহাম গিয়ে দেখে গ্লাস লাগানো। এবার কি করবে। গ্লাস যদি এখন ভেঙে ফেলে তাহলে আইরাতের ঘুম ভেঙে যাবে আর ঘুম ভেঙে গেলে চিল্লা-পাল্লা শুরু করে দিবে ও। এখন কি করবে। কোন উপায় না পেয়ে আব্রাহাম ভাবে গ্লাস ভেঙেই ফেলবে। গ্লাসের বাইরে থেকেও আইরাতকে দেখা যাচ্ছে। ঘুমে আচ্ছন্ন। আব্রাহাম তার হাত কয়েক বার গ্লাসের সাথে হালকা ভাবে বারি খাওয়ায়। কপাল কুচকে চোখ সরু রেখেই একবার গ্লাসের দিকে আরেকবার আইরাতের দিকে তাকাচ্ছে। গ্লাসে কয়েক বার হাত দ্বারা সই করে এক সময় ঠাস করে গ্লাসের মাঝ বরাবর এক ঘুষি মেরে দেয়। এতে গ্লাসটা টুকরো টুকরো করে নিচে ঝরে পরে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে দেখে সে ঘুমের মাঝেই কিছুটা নড়েচড়ে ওঠে আবার ঘুমে তলিয়ে যায়। আব্রাহামের হাত কেটে গিয়েছে। রক্ত বেয়ে পরছে। সেদিকে তোয়াক্কা না করে ফাটা গ্লাসের মাঝখান দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে লক টা খুলে ফেলে। তারপর পুরো গ্লাস খুলে আইরাতের রুমের ভেতরে চলে যায়। কয়েক কদম এগোয় আইরাতের দিকে।
আব্রাহাম এক শান্তিপূর্ণ হাসি দেয়। তার সব মনের অশান্তি-উত্থালপাতাল যেনো আইরাত কে দেখে এখন শান্ত। আব্রাহাম তার পাশে তাকিয়ে দেখে আইরাতের একটা সাদা ওরনা রাখা আছে। আব্রাহাম সোজা তা নিয়ে নিজের কাটা হাতে পেচিয়ে নেয়। এবার মনে হয় এই ক্ষত স্থানে মেডিসিনেরও কোন দরকার নেই। আব্রাহাম তার মাথার ওপর থেকে হুডি টা ফেলে দেয়। সামনে আসা চুল গুলো হাত দিয়ে পেছনে ঠেলে দেয়। আইরাতের সামনে এক হাটু গেড়ে বসে পরে। এক হাত মুখের পাশে রেখে দিয়ে হাসিমাখা মুখে তাকিয়ে আছে। আইরাত ঘুমমমমমম, আব্রাহাম এবার তার হাত দিয়ে আইরাতের গালের পাশে ছুয়ে দেয়। আর আইরাত ঘুমের মাঝেই আব্রাহামের হাত টা নিয়ে নিজের বুক আর গালের সাথে চেপে ধরে। আব্রাহামও কিছুই বলে না। যাক ঘুমের মাঝে হলেও আইরাত নিজ থেকে আব্রাহামের হাতটা টেনে নিয়েছে তো। আব্রাহাম আর থাকতে পারলো না টুপ করে আইরাতের কপালে চুমু দিয়ে দেয়। আইরাতের বেশ কাছে চলে যায়। আনমনেই নিজের নাক টা আইরাতের গালে ঘষতে লাগে। কিছুক্ষণ পর আব্রাহাম উঠে আসে। আর আইরাত ঘুমের মাঝেই নিজের গালে-মুখে খোচাখোচা দাড়ি অনুভব করতে পেরে মুখ কুচকে চোখ আস্তে আস্তে মেলে তাকায়। সম্পূর্ণ চোখ মেলে সামনে তাকাতেই তার ঘুমের চৌদ্দ গুষ্টি শুদ্ধো হয়ে যায়। অন্তরাত্মা ছেড়ে দিয়ে দেয় এক চিৎকার তবে তা বেশি দূর যেতে পারে নি। কেননা তার আগেই আব্রাহাম তার হাত দিয়ে আইরাতের মুখ শক্ত করে চেপে ধরেছে।

আব্রাহাম;; হুশশশশশ, বেবিগার্ল কুল ডাউন। আমি আব্রাহাম।

আইরাত;; _________________________

আব্রাহাম;; জানো জানপাখি তোমাকে ঘুমের মাঝে কি যে সুন্দর লাগে মন চায়,, মন চায় কিছু একটা করে ফেলি।

আব্রাহাম এবার তার হাত আইরাতের মুখ থেকে সরিয়ে ফেলে।

আব্রাহাম;; একদম চিল্লাবে না।

আইরাত খেয়াল করে দেখে আব্রাহামের হাতে আইরাতের ওরনা বাধা। আইরাত সেদিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে আবার আব্রাহামের দিকে তাকায়।

আব্রাহাম;; কি, ওহ এটা! তোমার জন্যই তো হাতটা কাটলো, রুমে আসতে গিয়েছি বাট জানালার গ্লাস লাগানো তাই গ্লাস ভেঙে এসেছি।

আইরাত তাকিয়ে দেখে কাচের কিছু টুকরো ফ্লোরে পরে আছে।

আব্রাহাম;; শুনো আমার কথা বেবিগার্ল। আমি বিনা দোষে ওই লোকটাকে মারি নি। ওই আমারই ক্ষতি করতে চাইছিলো তাই মেরে দিয়েছি। আর তুমিই বলো কেনো আমি নিজের ক্ষতি নিজে ডেকে আনবো। ক্ষতিকারক জিনিস থেকে সবসময় দূরে থাকা উচিত রাইট। তাই ওকে দূরে পাঠিয়ে দিলাম। এই যা, আর তুমি আমাকে দেখে ভয় পেয়ে গেলে।

আইরাত;; আপনি আ আ আপনি ক কেনো আম আমার পিছে প পরে আছেন। প্লিজ আমা আমাকে আমার মতো থ থাকতে দ দিন না। এখান থেকে য য যান।

আব্রাহাম;; আরে বেইবি তুমি কাদছো কেনো।

আব্রাহাম তার হাত দিয়েই আইরাতের চোখ গুলো আলতো করে মুছে দেয়। আইরাতের ঘাড়ের পেছনে হাত রেখে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে।

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, আমি ভালোবাসি তোমায়।

আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে দেয়।

আব্রাহাম;; আচ্ছা বেবিগার্ল!

আইরাত;; হ হু হুমম।

আব্রাহাম;; একটা কথা বলো তো!

আইরাত;; ক ক কি?

আব্রাহাম;; তুমি কখনো কি ক্লোরোফর্মের ঘ্রাণ নিয়েছো?

আইরাত কিছু না বুঝতে পেরে কপাল কুচকে তাকায়।

আব্রাহাম;; Here you go Bebygirl..

এই বলেই আব্রাহাম আইরাতের সামনে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করে দেয়। মূহুর্তেই আইরাত মাথা ঘুড়িয়ে অজ্ঞান হয়ে আব্রাহামের বুকে ঢলে পরে। আর আব্রাহাম মুচকি হেসে ওঠে।


সকালে অনামিকা উঠে পরে। উঠেই নিজের মেয়ের রুমে চলে যায়। রুমের ভেতরে যেতে যেতে ডাক দেয়…

অনামিকা;; আইরাত! আইরাত ওই ওঠ ভার্সিটি যাবি না। ওঠ, আইরাত।

রুমের ভেতরে যেতেই অনামিকার চোখ কপালে। আইরাত নেই। আর জানালার গ্লাস ফেটে নিচে পরে আছে। অনামিকা দ্রুত গিয়ে ওয়াসরুমে দেখে কিন্তু না সেখানেও আইরাত নেই। করিডরেও নেই। ছাদেও নেই।ফোনটাও টেবিলের ওপরই রাখা আছে। এক এক করে সারা ঘরে আইরাতকে খোজা শেষ কিন্তু কোত্থাও নেই সে। ঘুড়েফিরে আবার আইরাতের রুমে এসে বসে পরে। তবে এবার অনামিকার চোখে একটা কাগজ পরে। সেটা হাতে তুলে নিয়ে মেলে দেখে ভেতরে লিখা…

” শাশুড়ী আম্মু একদম চিন্তা করবেন না আপনার মেয়ে অর্থাৎ আমার হবু বউ আমার কাছে একদম সেইফ আছে। সে ভালোই আছে তো তাকে নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই। অযথা চিন্তা করে নিজের প্রেসার টা বাড়াবেন না। কিছুদিন পর আমার আইরাত আবার আপনার কাছে ফিরেই আসবে। ততদিন আমার কাছেই থাক “।

অনামিকার হাত থেকে কাগজ টা নিচে পরে যায়। আইরাত রিলেশন করবে আর তার মা জানবে না এমন কখনোই হবেনা। আর আইরাত তার মায়ের কাছ থেকে কিছুই লুকায় না। সত্যি বলতে রিলেশন করার মতো মেয়ে আইরাত না। তাহলে এই চিঠি কে লিখলো, আইরাত কোথায় গেলো। তারমানে কি আইরাত কিডন্যাপ হয়েছে? অনামিকার মাথা ঘোড়ায়। নিজের একমাত্র মেয়ে কিডন্যাপ। অনামিকা দ্রুত অবনি, তৌফিক আর নিলয় সবাইকে ফোন করে।


মাথাটা বেশ ঝিমঝিম করছে। কোন রকমে উঠে বসে। তৎক্ষনাৎ আইরাতের মনে পরে যে কাল রাতে আব্রাহাম তার রুমে এলো তারপর সামনে কিছু একটা স্প্রে করলো তারপরেই কিছু মনে নেই। আর কিছুই মনে নেই। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে বিশাল আকাড়ের এক রুম। প্রথম যেদিন আব্রাহামের সাথে দেখা হয়েছিলো তারপর যেমন রুমে ছিলো প্রায় তেমন টাই তবে কিছুটা ভিন্ন। আইরাত দ্রুত উঠে পরে। আব্রাহাম তাকে রাতে এখানে নিয়ে এসেছে। তবে কেনো নিয়ে এলো তা জানে না। যাই হোক এখানে থাকা যাবে না। অবশ্যই বাসায় এতোক্ষণে খোঁজা খুঁজি শুরু করে গেছে আর আইরাতকে না পেয়ে তার মা চিন্তিত। এখান থেকে বের হয়ে হবে৷ আইরাত যেই না দরজার কাছে যাবে তখনই রুমের ভেতরে আব্রাহাম আসে। হাতে জুস আর ব্রেড-জ্যাম।

আব্রাহাম;; গুড মর্নিং মাই লাভ। যদিও এখন মর্নিং না বারো টা বাজলো বলে।

আইরাত;; কি বারো টা মানে? বেলা বারো টা বেজে গেছে?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ, আসলে কাল রাতে ক্লোরোফর্মের ডোজ টা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিলো তো তাই তোমার জ্ঞান ফিরতে দেরি হয়েছে।

আইরাত;; আমাকে কেনো নিয়ে এসেছেন এখানে? এতে লাভ কি আপনার? আমাকে যেতে দিন।

আব্রাহাম;; আমি ভাবলাম কিছুদিন তোমাকে আমার নিজের কাছেই রাখি। কেনো জানো তোমাকে ছাড়া আমার না একদম মন টেকে না। তাই নিয়ে এলাম, কিছুদিন আমার সাথে থাকবে তারপর চলে যাবে। বা নাও যেতে পারো।

আইরাত;; আপনি কি পাগল আব্রাহাম। এভাবে আমি আপনার সাথে থাকতে পারি না। বাসায় আমার জন্য চিন্তা করছে হয়তো সবাই। আমাকে যেতে দিন এখান থেকে।

আব্রাহাম;; ন্যাহ.. এতো সহজে না বেবিগার্ল।

আইরাত;; আমাকে এখানে আটকে রেখে আপনার লাভ কি?

আব্রাহাম;; মনের শান্তি।

আইরাত;; আপনি কি জানেন যে আপনি একটা পাগল!

আব্রাহাম;; তোমার জন্যই তো। সব তোমার দোষ। নিজে আমাকে পাগল বানিয়ে এখন নিজেই বলছো যে আমি পাগল। তোমাকে খুন করতে গিয়েছিলাম আমি।

আইরাত আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর আব্রাহাম গ্লাসে জুস ঢালতে ঢালতে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; হ্যাঁ, প্রথমে তো আমি তোমাকে খুন-ই করতে গিয়েছিলাম তবে কে জানতো যে তোমাকে দেখে আমি নিজেই খুন হয়ে যাবো।

আইরাত;; আপনার কি চাই আসলে, এগুলো করে আপনি কি পাচ্ছেন?

আব্রাহাম;; আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই, কোন দাবি নেই আমার। আমি শুধু চেয়েছি তোমায় আর চাইও তোমায়। I”ll make you mine babygirl at any cost…

আইরাত এবার উঠে দাঁড়িয়ে পরে।

আইরাত;; আমি ওত শত কিছুই জানি না আমি এখান থেকে চলে যাবো, আমি থাকবো না এখানে ব্যাস।

এই বলেই আইরাত ছুটে সেখান থেকে চলে আসে। তবে বেশি দূর যেতে পারে নি আব্রাহাম আগেই তার বাহু শক্ত করে চেপে ধরে বিছানার ওপর টান দিয়ে ফেলে দেয়। আইরাত ছিটকে গিয়ে বিছানার ওপর পরে যায়। আব্রাহাম গিয়ে আইরাতের হাত চেপে ধরে তার দিকে ঝুকে পরে। দাঁত গুলো কটমট করতে করতে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; আইরাত মনে রেখো আমি ভালোবাসি তোমাকে। আর ভালোবাসি বলে এই না যে তোমার সবকিছুই আমি সহ্য করবো। পাগলের মতো ভালোবাস তোমায়। যেমন ভালোবাসি তেমনভাবে মারতেও পারি। আমার পারমিশন ছাড়া একটা পাখির পালক অব্দি এখান থেকে যেতে পারে না আর তাও তো তুমি, আমার জান। Don’t you dare to escape from here..

আব্রাহামের চোখ দেখে আইরাত ভয়ে জমে যায়। আর আব্রাহাম সোজা হয়ে বসে। আইরাত কে নিজের সামনে বসিয়ে দেয়। আব্রাহাম কিছু বলবে তবে এইবার যেনো আর আইরাত থাকতে পেলো ফুপিয়ে কেদেই ফেলে।

আইরাত;; আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার? আমাকে এভাবে কেনো তুলে এনেছেন? আমি আর কতো বলবো যে আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আপনাকে দেখলেই কেমন ভয় ভয় লাগে। আমাকে প্লিজ যেতে দিন। আমি আম্মুর কাছে যাবো। আমি এখানে থাকবো না।

আইরাত চোখ ডলছে+কেদে কেদে এগুলো বলছে। আর আব্রাহাম তার মুখের পাশে এক হাত রেখে আইরাত কে দেখছে।

আইরাত;; আপনি আমাকে যেতে দিন। আমি কাউকেই বলবো না কিছুই। কাল রাতে যে আপনি ওই লোকটাকে মেরেছেন তাও বলবো না। আমি কিছুই দেখি নি, কিছুই জানি না। প্লিজ যেতে দিন আমায়।

এই বলে আইরাত আবার উঠে দরজার কাছে যেতে ধরে তবে আব্রাহাম একটান দিয়ে আইরাতকে পাজাকোলে তুলে নেয়। আইরাত ছাড়া পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করছে। তবে আব্রাহাম আইরাতকে নিয়ে এসে সোজা ওয়াসরুমে চলে যায়। আব্রাহাম তাকে ওয়াসরুমে এনেছে দেখে বেশ অবাক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আব্রাহাম আইরাতকে ঠাস করে পানিভর্তি বাথটাবে ফেলে দেয়। পুরো দমে নাকানিচুবানি। ভিজে একাকার অবস্থা। আইরাত প্রথমে কিছুটা কাশি দিয়ে তারপর আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম শান্ত একটা লুক দিচ্ছে যেনো কিছুই করে নি।

আব্রাহাম;; এখন তো শুধু পানির চোবানি খাওয়ালাম এরপর পালাতে চাইলে দেখো কি করি। এবার ওঠো।

আইরাত;; আমি নিজেই উঠতে পারবো।

আইরাত নিজে উঠতে গিয়ে আবার ধিরিম করে পরে যায়। আব্রাহাম ফিক করে হেসে দেয়। আইরাত আবার নিজ থেকে উঠতে যাবে তখনই আব্রাহাম তার হাত ধরে ফেলে।

আব্রাহাম;; অনেক হয়েছে নিজে থেকে ওঠা, এদিকে আসো এবার।

আব্রাহাম আইরাতকে তুলে আনে। আইরাত তার চুলগুলো হাত দিয়ে হালকা ভাবে ঝেড়ে নেয়। কেমন একটু শীত শীত করছে। এগুলো করছিলো হঠাৎ আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে দেখে সে উল্টো তার দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাতের কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে…

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল এভাবে ভেজা অবস্থায় বেশিক্ষণ থেকো না নয়তো কিছু করে বসবো আর দোষ হবে আমার।

আইরাত দ্রুত মাথা ঘুড়িয়ে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম ওয়াসরুমের বাইরে বের হয়ে পরে আর আইরাত যেনো শীতে কাপছে। আব্রাহামের যেতেই আইরাত ওয়াসরুমের দরজা লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর আব্রাহাম এসে ওয়াসরুমের দরজায় হালকা টোকা দিয়ে…

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, বেডের ওপর ড্রেস রাখা আছে এসে চেঞ্জ করে নাও। আর চিন্তা নেই আমি বাইরে।

আব্রাহাম তারপর চলে আসে। বেশ সময় অব্দি আব্রাহামের কোন সাড়াশব্দ নেই দেখে আইরাত ওয়াসরুমের দরজা টা হালকা ফাকা করে মাথা বের করে দেখে নেয়। আসলেই রুম ফাকা, কেউ নেই। আইরাত তার ভেজা ভেজা পায়েই রুমের ভেতরে প্রবেশ করে। তবে বেডের দিকে তাকিয়েই অবাক হয়। কেননা বেডের ওপর একটা সাদা ধবধবে ফুল কভার’ড বাথরোব ছাড়া আর কিছুই নেই। এখন কি সে শুধু এই বাথরোব পরে থাকবে নাকি। আইরাত সেটাই পরে নেয়। হাত দিয়ে চুল ঝাড়তে লাগে। তারপরেই রুমের বড়ো থাই গ্লাসের কাছে চলে যায়। সে বুঝলো এটা আব্রাহামের গেস্ট হাউজ। আরে এটা আব্রাহামেরই বেডরুম। ওপর থেকে নিচে মেইন রোডে সবকিছুই দেখা যায়। খোলা আকাশ টাও দেখা যায়। কখন যে এখান থেকে বের হতে পারবে আসলে বের না পালাতে পারবে। কে জানে? না জানি বাসায় সবাই কি করছে। অনামিকা তো আইরাত কে না পেয়ে সবাইকে ইনফর্ম করে দিয়েছে হয়তো। যে করেই হোক আব্রাহামের চোখ ফাকি দিয়ে হলেও এখান থেকে যেতে হবে। গ্লাসের ওপর হাত রেখে বাইরের দিকে এক নয়নে তাকিয়ে এগুলোই ঘুড়পাক কথায় খাচ্ছিলো মাথায় তখনই আব্রাহামের গলা পেয়ে পেছন ঘুড়ে তাকায়। দেখে রুমের ভেতরে কিছু মেয়ে স্টাফ এলো আর তাদের পরে আব্রাহাম নিজে। স্টাফ দের হাতে যে ঠিক কতগুলো ড্রেস তা বলার বাইরে। মেয়ে গুলো একটা একটা করে সব ড্রেস বিছানার ওপর রেখে দেয়।

আব্রাহাম;; Leave all of you…

আব্রাহামের বলাতে সবাই রুম থেকে বের হয়ে পরে।

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, দেখো এখানে সব টাইপের ড্রেস আছে। তুমি যা পড়ো বা তুমি যেমন পছন্দ করো সবই। যেটা ভালো লাগে পরে নাও।

আইরাতের কাছে সবকিছুই কেমন যেনো ওলট-পালট লাগছে। চিন্তায় মাথা ভরে যাচ্ছে। কি থেকে কি হচ্ছে নিজের সাথেই তাই ঠিক বুঝতে উঠতে পারছে না। সে আবার থাই গ্লাস দিয়ে বাইরের দিকে তাকায়। আর আইরাতের কোন কথা শুনতে না পেরে আব্রাহাম তার দিকে তাকায়। দেখে একমনে বাইরে তাকিয়ে আছে। হুট করে আব্রাহামের চোখে বাধে যে আইরাতের পরনে থাকা বাথরোব টা তার বডি সাইজ থেকে হয়তো কিছুটা বড়োই হয়েছে। যার দরুন আইরাতের কাধ থেকে বারবার তা খষে পরছে। চুলগুলো প্রায় সব একপাশে করা ছিলো ফলে কানের ঠিক নিচ বরাবর একটা কুচকুচ তিল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সব ছেড়ে ছুড়ে আব্রাহাম এক নিমিষেই আইরাতের কাছে গিয়ে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। হুট করেই এমন হওয়াতে আইরাত চমকে ওঠে। কিছু বলার আগেই আব্রাহাম একটান দিয়ে আইরাতের কাধ থেকে বাথরোব টা নামিয়ে দেয়। আইরাতের শরীরে যেনো একটা ঝাকুনি দিয়ে ওঠে মূহুর্তেই।

আইরাত;; আব্রাহাম আপ…..

আব্রাহাম তার হাত দিয়ে আইরাতের মুখ চেপে ধরে। তৎক্ষনাৎ আইরাতের ঘাড়ে নিজের মুখ ডুবিয়ে দিয়ে। আইরাতের চোখগুলো যেনো তার কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম। কিছু বলতেও পারছে না কারন বেশ শক্ত ভাবেই চেপে রেখে দিয়েছে আব্রাহাম তার মুখ। আইরাত কিছুটা নড়েচড়ে উঠলে আব্রাহাম তার এক হাত দিয়ে সামনে আইরাতের দুহাত আটকে ধরে থাকে। আব্রাহাম যেনো চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে লাগলো তাকে। তিল টাতে গাঢ় চুমু একে দেয়। অবশেষে দেয় এক কামড় বসিয়ে। আইরাত ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে। হুহু করে কেদেই ওঠে এবার। আব্রাহাম আইরাতকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে গ্লাসের সাথে চেপে ধরে। আইরাতের চোখে পানি দেখে আব্রাহাম তা তার ঠোঁট দিয়েই শুষে নেয়। আব্রাহাম আবার নিজের নাক ঘষতে লাগে আইরাতের গলায়। বেশকিছুক্ষণ সময় পর উঠে আসে। দুহাত আইরাতের গালের শেষাংশে ধরে ধীর কন্ঠে বলে ওঠে….

আব্রাহাম;; This is called “Love Bite”

আইরাত ভেজা ভেজা চোখে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম তার কপালে চুমু দিয়ে দেয়।

আব্রাহাম;; ভেজা চুলে তোমাকে দারুণভাবে মানায়। এবার যাও চেঞ্জ করে এসো।

আইরাত আর দাঁড়িয়ে না থেকে একটা রেড কালারের গাউন হাতে নিয়ে চলে আসে। চেঞ্জিং রুমে গিয়ে হাপাতে লাগে। আর আইরাত নিজের দুহাতে মাথার চুল খামছে ধরে। রাগ লাগছে তবে এই রাগ তো আব্রাহামের সামনে গেলে ফুস। আইরাত আয়নার সামনে চলে যায়। গিয়ে নিজের চুল গুলো একহাতে দিয়ে পাশে নিয়ে আসে। ওমা এ কি হাল! ঘাড়ে কামড়ের দাগ বসে গিয়েছে। কেমন এক গাঢ় লালচে বর্ণ ধারন করেছে। পাশে থাকা টিস্যু নিয়ে ইচ্ছে মতো ঘাড়ে কামড়ের দাগে ঘষতে লাগে। আইরাতের হাতে যত কোলায়। অবশেষে লাল গাউন টা পরে এসে পরে। এসেই দেখে আব্রাহাম ফোনে কথা বলছে। দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আব্রাহাম পেছন ঘুড়ে তাকায়। দেখে আইরাত দাঁড়িয়ে। গাউনের স্লিভ গুলো কিছুটা খোলা আর বেশ লং। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া। আইরাত এসে দেখে আব্রাহাম একদম রিপ প্যান্ট, জেকেট, ওয়াচ পরে রেডি। প্রচুর স্মার্ট লাগছে৷

আব্রাহাম;; হেই বিউটিফুল!

আইরাত;; _________________________

আব্রাহাম;; সুইট লাগছে অনেক।

আইরাত;; আম…..

আব্রাহাম;; এখন খেয়ে ফেলি তোমাকে!

আইরাত;; হুয়াট?

আব্রাহাম;; কিডিং। এবার চলো।

আইরাত;; কিন্তু কোথায়?

আব্রাহাম;; যেদিকে দু’চোখ যায়।

আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে বাইরে বের হয়ে পরে। জানে না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সে আইরাতকে।

আর অন্যদিকে অনামিকা মাথায় হাত দিয়ে রেখে দিয়েছে। তার পাশেই দিয়া, তৌফিক, আইরাতের ফুপি সাবিলা, নিলয় বসে আছে। আইরাতের ফোন বাসায়। কেউ কিচ্ছু জানে না কোথায় গিয়েছে। কোন খবর নেই। কাউকে কিছু বলেও নি। হাতে পাওয়া শুধু এই একটা চিঠি। যে এক আগান্তুক দিয়েছে। আর পুলিশ স্টেশনে যাই হোক ২৪ ঘন্টার আগে কোন ক্যাস ফাইল করা হবে না। সবাই চিন্তায় শেষ। আর আব্রাহাম & আইরাত একটা গাড়িতে করে যাচ্ছে। আইরাত আব্রাহামের পাশেই বসা। আব্রাহাম ড্রাইভ করছে আর সিটি বাজিয়ে যাচ্ছে। তবে আইরাতের মাথায় ঘুড়ছে যে কীভাবে এখান থেকে পালানো যায়।





চলবে~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here