নেশা ২ পর্ব ২

নেশা
সিজন 2
Ayusha Akter Usha
“”2″”
কুয়াশার ঘুম ভাঙতেই সে অনুভব করে কেউ তাকে আষ্টেআষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে।মাথা তুলে এক অচেনা মানুষকে দেখতেই কুয়াশা ঝটকা মেরে সরিয়ে দেয় তাঁকে।সম্রাট কুয়াশা কে জড়িয়ে ধরে বেডের কিনারায় শুয়ে ছিল।তাই কুয়াশার ঝটকা খেয়ে একটু সরতেই ফ্লোরে ধরাম করে পরে যায়।চোখ বড় বড় করে কুয়াশার দিকে তাকায়।কুয়াশা চেচিয়ে বলতে লাগে
-আপনার সাহস তো কম না। আমার রুমে ঢুকে আমাকে জড়িয়ে ধরার সাহস কে দিল আপনাকে।কে আপনি।আর সীমা কোথায়(কুয়াশার বেস্ট ফ্রেন্ড)
বলেই এদিক ওদিক তাকালো কুয়াশা।আরে এটা তো তাদের অনাথআশ্রমের রুম নয়।তাহলে কুয়াশা আছে কই।এখানে কি করছে ও।কুয়াশা নিজের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে সে বিয়ের সাজে।তার রাতের কথা মনে পরে যায়।তার তো বিয়ে হয়ে গেছে।আর এই মাত্র যাকে বেড থেকে ফেলল তার ই সাথে।কুয়াশা ভয়ে ভয়ে ঢোক গিলে সম্রাটের দিকে তাকায়।সম্রাট রেগে কটমট দৃষ্টিতে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে আছে।কুয়াশা ভয়ে আমতা আমতা করতে করযে তাড়াতাড়ি বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে খুঁজে এক দৌড়ে ওয়াশরুম।এইদিকে সম্রাটের মাথা রাগে ফেটে যাচ্ছে।তার জানা ছিল না যে বিয়ের পরের প্রথম সকাল টা বউয়ের হাতে ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে পরে শুরু হবে।সম্রাট খান….সম্রাট খান কিনা এই সকাল বেলা ফ্লোরে পরে আছে।যেই সম্রাট খান এর নামে পুরো শহর ভয়ে কাপে সেই সম্রাট খান আজ নতুন বউয়ের হাতে ধাক্কা খেয়ে ফ্লোরে পরে আছে অসাধারননন।সম্রাট চোখ বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করল।তার পর ফ্লোর থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে করিডরে চলে গেল।
কুয়াশা ওয়াশরুমের দরজা খুলে মাথা বের এদিক ওদিক উঁকি মারছে।রুমে কেউ আছে কি না তা দেখার জন্য।ওয়াশরুমে গেছে তো ঠিক কিন্তু ভয়ের চোটে তার কাপড় নেওয়ার কথাই মনে ছিল না।রুমে কেউ নেই দেখে কুয়াশা টাওয়াল জড়ানো গায়ে বেরিয়ে এলো।পা টিপে টিপে কাবার্ডের দিকে এগোতে লাগল।সম্রাট ফোনে কথা শেষ করে রুমে আসার জন্য পেছনে ঘুরে পা বাড়াতেই সামনে তাকিয়ে সে হা হয়ে যায়।বুকের হার্টবিট হাই হতে শুরু করে দেয়।এই মেয়ে কি তাঁকে পাগল করেই ছাড়বে।কুয়াশা শরীরে টাওয়াল জড়িয়ে আছে।ভেজা চুল গুলো পিঠে গড়াগড়ি খাচ্ছে।ঠোঁট কামড়ে ধরে বড় বড় গোল গোল চোখ গুলো দিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।তার এই রুপ সম্রাট কে এলোমেলো করে দিচ্ছে।কুয়াশা পা টিপে টিপে কাবার্ডের কাছে এসে কাবার্ড খুলে দেখে পুরো কাবার্ড তার ড্রেস এ পরিপূর্ণ আর সব কটাই শাড়ি।কুয়াশা শাড়ি দেখেই চুপসে গেল সে শাড়ি পরবে কি করে।সে তো শাড়ি পরতে পারে না।তার কখনো শাড়ি পরার প্রয়োজন ই পরে নি।যদিও একবার পরেছিল সেটাও সীমার হেল্প নিয়ে।কিন্তু এখন কিভাবে পরবে ধুর।কুয়াশা ঠোঁট উল্টিয়ে একটা আকাশী রঙের শাড়ি বের করে কাবার্ড লাগাতে যাবে তখনই সে অনুভব করল কেউ পেছন থেকে তার পেট জড়িয়ে ধরেছে।কুয়াশা তাড়াতাড়ি পেছনে ঘুরে দেখে সম্রাট।কুয়াশা সম্রাট কে দেখেই চমকে যায়।উনি এখানে কখন এলেন।কুয়াশা তাড়াতাড়ি হাতে থাকা কাপড় দিয়ে নিজে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে কাবার্ডের সাথে মিশে যায়।সম্রাটের নেশা ভরা চাহনিতে কুয়াশা দম বন্ধ হয়ে এলো।বুকের ধুকপুকানিটা বেড়ে গেল।সম্রাট কুয়াশার কাছে গিয়ে তার দুপাশে হাত রেখে কুয়াশার দিকে ঝুঁকে গিয়ে তার ঘাড়ে ঠোট বসালো।কুয়াশা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিল।সম্রাটের ছোঁয়ায় সে কেপে উঠল হাত থেকে কাপড় পরে গেল।কুয়াশার কাপাকাপি দেখে সম্রাট তার দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকালো সে বুঝতে পারছে না কুয়াশা তাঁকে এতোটা ভয় পাচ্ছে কেন।না এই মেয়ের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করা যাবে না। রাতে বেহুঁশ হয়েছে পরে না জানি কি হয়।সম্রাট হাঁটু গেড়ে বসে কাপড় গুলো উঠিয়ে কুয়াশার হাতে দিলে কুয়াশা কোনো মতে সম্রাটের পাশ কাটিয়ে চেঞ্জিং রুমে গিয়ে ঢুকে।সম্রাট যেন নিজে হাফ ছেড়ে বাচে।এতক্ষণে তো সে নিজেই তার নিজের মধ্যে ছিল।কিন্তু কতদিন ই বা আর নিজেকে তার নেশার থেকে দূরের রাখতে পারবে।কিছুক্ষণ পর কুয়াশা চেঞ্জিং রূম থেকে বেরোলো।সম্রাট সোফায় বসে বসে লেপটপে কাজ করছিল।দরজা খোলার শব্দে সামনে তাকাতেই সম্রাট অবাক।এ কি করেছে এই মেয়ে।কিভাবে শাড়ি পরেছে।কোনোরকম পেচিয়ে নিয়েছে শুধু।কুকুয়াশা অসহায় এর মতো সম্রাট এর দিকে তাকিয়ে আছে। সম্রাট চোখের ইশারায় বলল হেল্প লাগবে??কুয়াশা জোড়ে জোড়ে মাথা ঝাকালো।সম্রাট মুচকি হেসে উঠে কুয়াশার কাছে গেল।তীক্ষ্ম নজরে সম্রাট শাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে।এই শাড়ি ও ধরবে কোন দিক দিয়ে আর কিভাবে শাড়ি ভাঁজ করে পড়াতে হয়।ইনফেক্ট শাড়িটা মানুষ পরে কিভাবে সেটাই তো সম্রাট জানেনা।শাড়ি পরাবে কি করে।সম্রাট আগে কুয়াশার গায়ে পেচানো শাড়ি একটানে খুলে ফেলল।সম্রাটের এই কাজে কুয়াশা দুহাতে নিজেকে ঢাকাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।লজ্জায় তার মরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে।সম্রাট দু হাতে শাড়ি ধরে দাঁড়িয়ে আছে।কোন দিক দিয়ে পড়ানো শুরু করবে বুজতে পারছে।অবশেষে কুয়াশার দিকে তাকালো।কুয়াশা লজ্জায় চোখ তুলে তাকাতেই পারছে না।তার এই লজ্জা মাখা মুখটা সম্রাটের খুব ভালো লাগছে তাই তাকে আরো একটু লজ্জা দেওয়ার জন্য কুয়াশার কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল
-শাড়ি পরার দরকার কি এমনিই তো তোমায় অনেক হট লাগছে।
সম্রাটের কথা শুনে কুয়াশা কিছুক্ষণের জন্য নিজের হার্টবিট মিস করল।এমনিই তো সে লজ্জায় মরে যাচ্ছে তার ওপর সম্রাটের এই কথায় তার ইচ্ছে হচ্ছে মাটি ফাঁক করে ঢুকে যেতে।
to be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here