পতিতা পর্ব ১
#লিখা- #Yasira_Abisha
“আমার রেট বেশি ৪ হাজারের নিচে যামু না।”
“আজকে চল না চুমকি তরে পরের বার বাড়ায়া দিমু নি”
“সড় চুমকি পরের বারে নেওয়াতে বিশ্বসী না”
এই বলেই আজকেও ৩টা কাস্টমার কে বিদায় করে দিলো চুমকি।চুমকি হলো ওর নষ্ট পারার সবচেয়ে সুন্দরী পতিতা। জি নষ্ট পাড়ার মেয়ে চুমকি,, বয়স ২৪ হবে, লম্বা ৫ ফিট ৫, গায়ের রঙ দুধে আলতা, টানা টানা চোখ, ঘন লম্বা চুল।
যে কেউ দেখেই পাগল হবার উপক্রম।
চুমকির সাজ সজ্জা দেখে তাকে এখানকার লাগেনা।ওত চড়া সাজ এই মেয়ে সাজে না। তাই হয়ত ওর আগে পিছে সব কাস্টমাররাই ঘুরে। মনে হয় কোনো ভালো ফ্যামিলির মেয়ে,,আসলে ওরকম অনেক কাস্টমারই আসে চুমকির কাছে কিন্তু ও একজনকে ছাড়া আর কারো কাছেই যায়না,, পুরো ১বছর ধরেই চুমকি তার কাছ যায়,,
ওর যত টাকা দরকার ওই লোকই দেয় উনি বেশ ভালো ব্যাবসায়ী উনি । ইদানিং ওই লোকটা আসছেনা,,
যাবার আগে ২০ দিনের টাকা দিয়ে ও গিয়েছিলো চুমকির জন্য,, আজ ২১তম দিন,,
চুমকির আজকে মনটা ভালো না ওর মায়ের জম্নদিন আজকে। মায়ের কথা খুব মনে পরছে। তাই ও মানুষ দেখে রেট বলছে কাজ করার কোনো ইচ্ছেই আজকে নেই,, যদিও সবার থেকে রেট সব সময় চুমকিরই বেশি থাকে,,, তবে হাজার চাইলেও অন্য কারো সাথে চুমকি যায়না আবার কেউ বলার ও নেই কেননা সবার থেকে বেশি চুমকিই কামায় এখানে হোক সেটা একজনের থেকেই,, লোকটা আসলে শারিরীক চাহিদা মিটাতে আসে না সে আসে মনের খোরাক যোগাতে চুমকির কাছে আসে,,
চুমকির এই নষ্ট পাড়ায় প্রায় ১বছর ধরে আছে।
ওর মা বাবা কেউ নেই,, মায়ের অসুখের জন্যই মুলত নষ্ট পাড়ায় আসা চুমকির,
কিন্তু এখানে থেকেও নিজের মান সম্মান শেষ করে দিয়ে,, নিজের অস্ত্বিত বিলিন করে জিবনের কালো অধ্যায় এর মধ্যে পা বাড়িয়ে,, এত টাকা খরচ করেও মা কে বাচাতে পারেনি ও মাত্র ৯মাসের মাথায় মা কে হারিয়ে ফেলে। তারপর…
তারপর আর কি?
পুরনো জিবনে ফিরেনি কেন চুমকি? কারণ কেউ তাকে গ্রহণ করবেনা চেস্টাও করেছিল কিন্তু ফলাফল শুন্য,, আর তার যে একটা ছোট বোন আছে তাকেও তো মানুষ করতে পারবেনা,, তাই অনিইচ্ছা স্বত্তেও ও এই নষ্ট কাজ করছে এবং একটি এতিম খানা ও চালাচ্ছে। প্রতি মাসে বেশ কিছু টাকা দেয় ওখানে চুমকির বোন ওখানেই থাকে,, চুমকি জানে ওখানে থাকলে ওর বোন ভালো থাকবে।
এদিকে আজকেও প্রতিদিনের মত কাস্টমাররা এসে ভিড় লাগিয়েছে,,
সবাইকে বিদায় করে দিয়ে ঘুমিয়ে গেসে চুমকি,,
আসলে চুমকির বয়সের মেয়েদের জীবন এ বিয়ে হবার স্বপ্ন থাকে স্বামি সন্তানের স্বপ্ন থাকে কিন্ত ওর জিবনে তো এমন কিছুই নেই নিরামিশ জিবন,,
তাই কোন রকম ঘুম আসলেই ওর কাছে সব চেয়ে শান্তি লাগে আর এতিমখানা তে গেলে,,
রাত ৩টা বাজে চুমকির দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে আখি৷
রুহি বু!
রুহি বু!
বড় আপায় ডাক দিসে দরজা খুলো দি,,
আর তোমার কাস্টমার মইরা গেসে বু,,
একটা গাড়ি এক্সিডেন্ট এ নাকি উনি মইরা গেসে আজকা খবর পাইসি মনে হয় নিপা আপায় ও জানতে পারসে,,
দরজা খুলেই এসব শুনেও আগে চুমকি বললো
” না বলেছিনা রুহি বলে ডাকতে এখানে কেউ জানে না যে আমার নাম রুহি তুই ওভাবে আর আমাকে ডাকবিনা” কিছুটা রাগ হয়ে কথা গুলো বললো ও।
আখি- আচ্ছা বু আর ডাকুম না খেয়াল আসিলো না। এই ঘটনা শুনার পর
চুমকির ও খারাপ লাগছে মানুষটার জন্য,,
কিন্ত ও পরে গেলো চিন্তায় কারণ এখন ওকে আবার কারো কাছে পাঠিয়ে দিবে নিশ্চয়ই,,
ভয়ে পেতে লাগলো চুমকি,,
এখন আসি আখির প্রসংগে আখি হচ্ছে রুহিদের সাথের এ একজন মেয়ে ও রুহিকে খুব পছন্দ করে,, রুহির প্রতি ওর কোনো হিংসা কাজ করেনা বরং রুহিকে নিজের বোন ভাবে ও।
এবার আসল কথা হলো
এই মুহুর্তে চুমকির ডাক পরেছে এখানকার ঠাকুর আপার কাছে মানে নিপার কাছে,,
যে এই ব্যেশ্বা পল্লির স্বরদারণী। আর তার ডাক পরা মানেই কোনো জরুরি কাজ আসে,,
(রুহির ছ্বদ্দনাম চুমকি)
নিপা- চুমকি! এত দেরি কেন করলি??
কতোক্ষন ধইরা ডাকাইতাসিলাম,,
চুমকি- আমি ঘুমাইতাসিলাম আপা।
আপা- রাইতে আবার কিসের ঘুম?
চুমকি- আজকে আমার ছুটি।
আপা- হো মনে পরসে। আচ্ছা শুন
তোর নতুন কাস্টমার ইরাদ সাহেব এইটা,, যা ভিতরে নিয়া যা,,
আর এক রাতেই ৪০ হাজার দিতে রাজি হইসে তোর রুপের কথা শুইনা,, এরে মানা করা আমার ভালো মনে হয়নাই,,
তাই আজকে তোর মানা করাতেও কাস্টমার নিসি,, তুই চিন্তা করিস না ক্যাশ দিসে সব টাকা,, এবার নিয়া যা সাহেবরে,, আর ভালো ভাবে খেজমত করিস সাহেবের ”
চুমকি মনে মনে ভাবছে এই মহিলা আমাকে শান্তি দিবে না,, মুখের মিষ্টি খালি টাকা আদায়ের জন্য এক প্রকার ভিতী ও কাজ করছে মনে,,
নিপা- কিরে চুমকি? যা নিয়া যা।
চুমকি- আচ্ছা।
ছেলেটার দিকে তাকালো ও না চুমকি,, না তাকিয়েই বলল-
দাড়ায় আসেন কেন??
তখনই নিপা কঠিন ভাবে তাকালো চুমকির দিকে তখন
চুমকি স্বাভাবিক গলায় বলল -সাহেব চলেন।
লোকটাকে নিজের ঘরে এনে বসতে বলে চুমকি ফ্রেশ হয়ে একটা গোল্ডেন কালারের শাড়ি পরে আসলো,, চুল গুলো খোলা কপালে ছোট একটা গোলাপি টিপ,, বেশ দারুণ লাগছে ওকে।
চুমকি এবার ঘরে এলো।
লোকটার দিকে তাকালো তাকিয়ে বেশ অবাক লাগলো কারণ এর বয়স ২৮ বা ৩০ হবে খুবই সুদর্শন একজন পুরুষ,, যে কোনো মেয়েই তাকে বিয়ে করতে চাইবে কারণ যে কোনো মেয়েই তার মত পুরুষকে নিজের জীবনে সংগী হিসেবে চাইবে,,
লোকটা একটা নীল পাঞ্জাবি পরা বেশ টিপটপ গুছানো মানুষ,, বয়স ৩০ হবে
হাতে একটা ছোট মদের বোতল,,
সেটা থেকে লোকটা মদ খাচ্ছে।
নেশা ধরেছে ওকে ভালোভাবেই
চুমকি তাকে দেখে মনে মনে ভাবছে এরকম একজন লোকের নষ্ট পাড়ায় আসার কি প্রয়োজন? মাথায় ধরছে না,,
এসব ভাবতে ভাবতেই চুমকি লোকটার পাশে এয়াএ বসলো,, পাশে বসতেই ছেলেটা ওর কাছে এসে পরলো চুমকির বেশ ভয় করছে,,
ছেলেটা ওর গা ঘেষে একদম কানের কাছে এসে আস্তে করে বললো,,
-রুহি!
চুমকির চোখ বড় হয়ে গেলো,,
এই নাম একটা কাস্টমার এর মুখে শুনে চুমকির ভেতরের রুহি যেন জেগে উঠল,,
যেই নামের এই নষ্ট পাড়ায় ও অস্তিত্ব রাখেনি আজ প্রথম কেউ ওর অপরিচিত ওকে এই নামে ডাক দিলো…
(ভালো লাগলে জানাবেন তবে নেক্সট লিখবো)