#পরানের দুলাভাই
#সেলিনা আক্তার শাহারা
#পর্ব–১৬
—————————–
রাত ১ টা ছুই ছুই ঘুম নেই কারো চোখে মুগ্ধর মা সেই কখন থেকে জায়নামাজ বিছিয়ে বসেছে, মুগ্ধর বাবাও চেয়ারে বসে আছে, কনিকা ও বিলাশ তাদের রুম এএ নিশ্চুপ হয়ে আছে, কি বা বলবে,
মুগ্ধ ঘুমের ভান ধরে শুয়ে আছে, নিতুও ঘুমের ভান ধরে আছে, এক জন আরেক জন কে বুঝাচ্ছে তারা গভির ঘুম এ মগ্ন হয়ে আছে।
নিতু আর চোখ এ মুগ্ধ বুক থেকে মাথা উঠিয়ে দেখে মুগ্ধ ঘুমিয়ে শেষ,
এভাবেই আরো ২ ঘন্টা চলে গেলো,
এদিকে সাগর সারা রাত বাড়ি ফিরেনি কোথায় বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে তাও অনিকা জানেনা, এক বার জিজ্ঞাসা ও করে নি, কি বলবে সে কারন একটু আগে সাগর কি বলে গেলো সে আমার থেকে মুক্তি চায়!! আমি বন্ধা ভেবেই অনিকা দুহাটু ভাজ করে নিজের মুখের সামনে এনে গুটি মেরে বসে আছে আর চোখের পানিতে ভাসাচ্ছে।
মুগ্ধ এবার উঠে খাটে হেলান দিয়ে বসে নিতুকে ডাক দিয়ে বলে নিতু বহু হয়েছে ঘুম এর নাটক উঠো,
নিতু এবার কিছু না বলে উঠে আমার মুগ্ধর বুকে মাথা রেখে বসে,
মুগ্ধের চোখ আবার ভিজে আসছে,
নিতু তা বুঝতে পেরে বললো আহা কি মেয়ে মানুষ এর মত কান্না করছেন শুনি, আমি ও আমাদের বাচ্চা সুস্থ আছি প্লিজ এমন করে কাদঁবেন না।
মুগ্ধ এবার নিতুকে জোরে বুকের সাথে জরিয়ে বলে জদি তোমাদের কিছু হয়ে জেতো তাহলে আমি নিজে– বলা শেষ করার আগেই নিতু মুগ্ধের ঠোটটা নিজের দখলে নিয়ে জায়, কারন নিতু জানে বুঝিয়ে মুগ্ধকে থামানো জাবেনা খুব ইমোশনাল মানুষ সে,
তাই লজ্জা ছেরে আগে স্বামীকে শান্ত করতে চেয়েছে নিতু।
সকাল হয়ে এল বলে সাগর বাড়ি ফিরেছে তবে হেলে দুলে হাটছে দেখেই বুঝা জাচ্ছে নেশা করেছে,
রুম ঢুকতেই অনিকা উঠে দারিয়ে পরেছে সাগর কে এই অবস্থায় দেখে,
সাগর হেলে দুলে কোন রকম খাটের কোনা ধরে ধপ করে বসে পরেছে,
অনিকা এবার রাগে দুখে সাগর এর দিকে তেরে গিয়ে বলতে লাগলো ছি ছি ছি, তোমার এত অধপতন হয়েছে জানতাম না তুমি কি সাগর নাকি অন্য কেউ ভাবতেই আমার ঘিন্না হয় ছি। এত দিন ভাবতাম তোমার বাচ্চা চাই তাই এমন উদাস থাকতে আর আজ তো মাতাল হয়ে এসেছো তা নিশ্চই মেয়ের নেশা ও ধরেছো বুঝি!! কারন আমার কাছে তো তুমি আসোনা।
সাগর এবার চিৎকার করে বললো হ্যা নেশা করেছি আরো করবো বার বার করব তুমি আটকানোর কে তোমায় আমি ডিভোর্স দিবো, আবার বিয়ে করবো আমার বাচ্চা হবে আর আমি তখন শান্ত হব।
+( সাগর বাড়ি থেকে একা বের হয় নি মিতুও বের হয়েছিলো সাগর এর পিছু পিছু, সাগর বারে ঢুকে চুপ করেই সে দিন এর মত বসে ছিলো, কিন্তু এই মিতু সাগর কে ভুলিয়ে ভালিয়ে একের পর এক মদের বোতল শেষ করিয়েছে আর এমন এমন কথা বলে সাগর কান বিষিয়ে তুলেছে অনিকার নাম টাও শুনতে চায় না সাগর।
সাগর এর কথায় অনিকাও বলে উঠলো ওহ তাি ওকে মি. সাগর তাই হবে আপনার ডিভোর্স চাই তো ওকে ফাইন আমিও এমন চরিএ হীন এর সাথে আর থাকতে পারবোনা অনেক অবহেলা সজৎ করেছি বাট আর না,
কালকে ডিভোর্স এর জন্য এপ্লাই করবো মেবি ৫/৬ মাস লাগবে সব প্রছেস হতে তাি ৫/৬ মাস আমার আর আপনার মাঝে কোন কথাই হবে না,
অনিকা রাগে গিয়ে সোফায় হেলিয়ে পরে,
সাগর এতটাও নেশায় নয় যে অনিকার কথা বুঝতে পারবে মা সে সব মন দিয়ে শুনেছে,
আর বললো ওকে আমি তাই চাই বলে খাটে ধপ করে শুয়ে পরে,
সকাল হয়েছে কনিকা আর মুগ্ধর মা উঠেগেছে নাস্তা তৈরিতে ব্যাস্ত নিতুও উঠে গেছে, মুগ্ধর কাছ থেকে নিজেকে ছারিয়ে বুকে একটা চুমু দিয়ে চলে এলো বাহিরে,
বাহিরে এসে তার নজর অনিকা কে খুজছে রান্না ঘরে গিয়ে দেখে অনিকা নেই,
নিতুকে দেখে কনিকা বলে উঠলো আরে তুমি এই আগুন পারে এলে কেন?
কিছু চাই কি!!!
না না আপু অনিকা আপুকে খুজছি মুগ্ধর মা এবার চুলায় কড়াই চাপাতে চাপাতে বললো অনিকা উঠনি রে মা,
ওহ আচ্ছা বলেই বেরিয়ে ড্রইং রুম এ জেতে জেতে মিতুর রুম এ চোখ গেলো।
নিতু ধিরে পায়ে মিতুর রুম এ ঢুকে দেখে মিতু ঘোড়া বেচে ঘুমাচ্ছে,
নিতু চলে গেলো শব্দ ছারা,
মুগ্ধ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিল এ বসে পএিকা পরায় মগ্ন,
অনিকা ও রুম থেকে বের হয়েছে, তবে মুগ্ধ সে একবার অনিকার দিয়ে চেয়ে আবার পএিকায় মন দিলো,
অনিকা এতে একটু ছোট হওয়া ফিল করলো রোজ মুগ্ধ গুড মর্নিং উইস করে আর আজ দেখেও না দেখার ভান করে আছে!!
তাহলে কি শেষ মেস ভাইটাও ভুল বুঝলো,
অনিকার চোখ ভিজে এসেছে তাই আবার দৌড়ে রুম এ চলে গেলো সে,
মুগ্ধর মা ও ব্যাপার টা খেয়াল করেছে কি বলবে উনি ছেলেও উনার মেয়েও উনার তাই ভাইবোন এর মাঝে কথা বলাটা পছন্দ করলো না,
নিতু ও এসে চেয়া বসতে বসতে দেখলো বাবা নেই সাগর নেই অনিকা আপু নেই?
জিজ্ঞাস করতেই একেক জন একেক রকম বাহানা দিয়ে নিতুকে খেতে বললো, কারন নিতুকে এত ট্রেস দেয়া ঠিক হবে না,
নিতু নাস্তা সেরে রুম পা বাড়ালো মুগ্ধ নিতুকে ডাক দিয়ে বলে নিতু রেডি হও!!!
কোথায় জাবেন!!( নিতু)
তা গেলেই দেখবে জলদি রেডি হও ( মুগ্ধ)
গাড়ি নিয়ে বের হল যেতে যেতে মুগ্ধ বললো ডাক্তার এর কাছে যাচ্ছি তোমার আর বেবির কন্ডিশন টা জানাও হয়ে জাবে, নিতু হালকা একসা হাসি দিয়ে আর কথা বললো না,
মুগ্ধের মাথায় এবার সয়তানি বুদ্ধি এলো, নিতুর দিকে তাকিয়ে বললো আচ্ছা নিতু তেমায় জদি কাছে ডাকি আরো ১০ হাত দূরে জাও আর কাল নিজে থেকেই কাছে এসে ডায়রেক্ট কিস তাও আবার ঠোট এএ ভাবা জায়।
নিতু এবার লজ্জায় শেষ মুগ্ধটাও এমন ওকে থামাতে চুমু দিলাম উল্টা আমায় লজ্জায় ফেলে দিলো।
মিতু নিজের বাসায় চলে গেছে,
অনিকাও সাগর ও বের হয়েছে গন্তব্য উকিল এর কাছে জাবে, অবশ্য জলদি উঠে ফ্রেস হয়ে সেই আগে রেডি হয়ে বসেছিলো অনিকা,
সাগর এতে একটু অবাকও হয়,
বাড়ি তে বলে দিলো একটু শশুর বাড়ি জাবে!!
উকিল এর কাছে গিয়ে কোর্ট এ ডিভোর্স ফাইল করলো,
অনিকা চট করে সই দিলে উঠে গেলো সাগর আজ শুধু অবাকই হচ্ছে,
উকিল বললো ৬ মাস পর এটা কার্জকরি হবে, আপনারা জদি আবার সব ভুলপ সংসার করতে চান তাহলে তা এই ৬ মাস টাইম আছে, আর না হলে এই ডেট দিলাম এসে সই করে দিয়ে স্যার এর সিল মোহর লাগলেই ব্যাস আপনারা বিপদ মুক্ত,
অনিকার পা আজ চলছে না, সাগর ও চুপ চপু এত বছর প্রেম করেছে সেই কলেজ লাইফ থেকে,
আর আজ একটা সই এ সব শেষ, আমিতো মন থেকে বলিনি রাগে বলেছি তা অনিকা বুঝলো না,
অনিকাও খুব অভিমান করেআছে এত কিছ হল তাও ওর মুখে কথা নেই তার মানে ও মন থেকেই আমাকে ছারতে চায়,
মুগ্ধ আর নিতু বিকেল এ বাসায় ফিরেছে, ডাক্তার দেখিয়ে তারা সপিং করে হোটেল এ খেয়ে দেয়ে বাড়ি ফিরেছে,
ফিরেই অনিকার রুম এ দুজন হাজির,
অনিকা হা হয়ে আছে নিতু ও মুগ্ধ হাসছে,
মুগ্ধ বললো আপু তর জন্য তোমার পছন্দের আইসক্রিম এনেছি,
নিতু অনিকার পাশে বসে বললো আপু আমরা জানি এমন জঘন্ন কাজ তোমার ধারা হবে না এটা মিতুর একটা চাল আমাদের ভরসা জিতার জন্য করেছিলো, আর আমরাও ওর কথা বিশ্বাস করার ভান করলাম, নয়তো আবার কি করত কে জানে!!
অনিকা এবার কেঁদে দিয়ে বললো নিতু আমি কিছু করি নি করি নি আমি,
আহা প্লিজ আপু তোমার চোখ এর পানিতে আইসক্রিম গলে গেলো( মুগ্ধ হাসি দিয়ে)
অনিকা চোখ মুছে নিতুকে বললো ডাক্তার কি বললো বলতে বলতেই কনিকা এসে হাজির,,
কি কান্ড আমায় রেখেই খাওয়া হবে বুঝি ( কনিকা মুখ বাকিয়ে)
না না আপু সবার জন্য এনেছি।
মুগ্ধর মা পিছন থকে এসে বললোকি বললোরে ডাক্তার?
মা একটু কমপ্লিকেটেড হবে কেস টা ঔষধ দিয়ে দিয়েছে একটু বেড রেস্ট আর টেনশন ফ্রি থাকতে বলেছে(/মুগ্ধ)
শুনে সবাই টেনশন এ পরে গেলো,
নিতু বুঝতে পেরে বললো আরে তেমন কিছু না ডাক্তার রা এমন বলেই,
অনিকার পাশে বসে নিতু অনিকার হাত টা ওর পেট এএ নিয়ে বললো আপু এটা তোমার বেবি আমি একে তেমায় দিয়ে দিলাম, একে ধরেই তুমি খুশি থাকতে পারবেতো,
সব অধিকার ওর উপর থাকবে তুমার,,
নিতুর এমন কথা শুনে সবাই কেদে দিলো অনিকাও কাদতে কাদতে নিতুকে জরিয়ে ধরলো।
৬ মাস হয়ে আসছে,
অনিকার ও সাগর এর ডিভোর্স ডেট ও এগিয়ে এসেছ, সাগর চায় না এই ডিভোর্স আর মুখেও বলতে চায় না, কারন অনিকাই আগে রেডি হয়ে বসে ছিলো ডিভের্স এর জন্য,
অনিকা ভাবছে সাগর তো একবার বললে না চাই না ডিভোর্স তাহলে আমি কেন বলবো,
আসলে জীবনে এমনই হয় অনেক সময় নিজের জেদ এর বসে আমরা আপন জন কে হারিয়ে ফেলি।
নিতুর পেটটাও বেশ ফুলে উঠেছে ৮ মাস এর পেট এক দম স্পর্স্ট বুজা জায়, বাবুর হাত পা ছোরা সব অনুভব হয় মুগ্ধ বাড়িতে জত ক্ষন থাকে নিতুর পেট কান পেতে রয় হাত দিয়ে তার বাচ্চার অস্তিত্ব টের পেতে,
অনিকাও সব কষ্ট ভুলে জায় নিতু পেট টা একন সরকারিই হয়ে গেছে এক রকম সবাই শুধু পেট এএ হাত দিতেই ব্যাস্ত,
মিতুর ্ আসা জাওয়া কমে নি এখন ও
মুগ্ধ এখন নিতুর সাথে শারিরিক মিলন এ লিপ্ত হয় না, কারন এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে, তবে খুব ছট ফট করে নিতুকে পেতে, তাও নিজের উপরে বহু কন্ট্রল আছে মুগ্ধর
কিছু দিন আগে মিতু এসে জানায় সে বিয়ে করছে পাএ আর কেও নয় জাইন সে নাকি জাইন কে বিয়ে করবে ভাবা জায়!!!!
আজ ডিভোর্স ডেট অনিকাও সাগর এর বাড়ি তে এ বিষয়ে এখন ও কাওকে জানানো হয় নি,
কষ্ট পাবে, দুজন গাড়িতে বসে আছে কোর্ট এ জাচ্ছে তারা আজই ডিভোর্স কার্জ কারি হবে।
মিতু এসেছে আজ কোন কারন ছারাই তবে উদ্দেশ্য আজ অন্য কিছুর জা আজই সে করবে
আজকের পর থেকে পালটে জাবে সবার জিবন।
চলবে—