পরানের দুলাভাই পর্ব -১৮

#পরানের দুলাভাই,
#সেলিনা আক্তার শাহারা,
#পর্ব—–১৮
————————–

অনেক ক্ষন হল নিতু কে ওটিতে নিয়ে গেছে মা ও বাচ্চা বাচাঁর চান্স ১% এর মত,

মুগ্ধ ওটির সামনে হেলান দিয়ে দারিয়ে আছে পলক হীন হয়ে এই দরজা খুললো বলে, একটুও জাতে দেরি না হয় তার নিতু আর বাচ্চার খবর নিতে,

অনিকা ও সাগর ওও চলে এসেছে তাদের ফোন দিয়ে কনিকা সব বলেছিলো,৷৷,গল্পের আসল লেখিকা সেলিনা আক্তার শাহারা। , তারা দুজন মাএ রেস্টুরেন্ট এএ ঢুকেছিলো, এই খবর পেয়ে এক মূহুর্ত্ব্য বিলম্ব করেনি দুজন,

অনিকা কেদেঁই যাচ্ছে, কারন নিতু বলেছিলো এই বাচ্চাটা নাকি অনিকারই সেই এটার মা হবে,
অনিকা কেদেঁ কেদেঁ সাগর বললে সাগর ও কেদেঁ দেয় এত মহান মেয়েটা ভাবা জায় সেদিন এর সিধান্ত আমার ভুল হয় নি তাহলে,

অনিকা বলছে আমার মত অলক্ষির কপালে হয়তো সন্তান সুখটাই নেই, আমায় দেবে বলেছিলো তাই এমন টা হচ্ছে, নিতুর শরিল থেকে অনেক রক্ত খরন হয়েছে বিলাশ এর শরিলেও সেই রক্ত এখন ও লেগে আছে,

বাড়ির প্রথম বাচ্চা, তাই সবারই অনেক শখেরও ছিলো, নিতুর বাবা মা সবাই এসেছে,

অনেক দূরে দারিয়ে মিতুর ওও মনটা বেজাই খারাপ,
ছোট বোন বা তার বাচ্চার জন্য নয়,

মুগ্ধর কাছ থেকে শুনা কথা গুলো,
মুগ্ধ বাড়িতে মিতুকে বলেছিলো তুমি যা চাইছো আমার কাছে তা আমার কাছে নেই,

মিতু একটু ঘাবরিয়ে গিয়েছিলো কারন তার চাওয়ার কথা মুগ্ধ জানে কি করে!!!!

মুগ্ধ এবার এক গাল হাসি দিয়ে বলে তুমি আমায় চাও না তা আগে থেকেই জানি তবে আমার সম্পত্তির জন্য আমায় চাও জাতে সব ভুগ করতে পারো, কি তাই তো!!!!

মিতুর চোখ এবার কপালে সে শুধু চুর এর মত করছে,

মুগ্ধ আবার বলে উঠলো মিতু আমি তোমার কোন কাজের না,
কারন নিতু মা হবে খবর পেয়ে আমার বাবা সব সম্পত্তি এবং এই বাড়িটাও নিতুর নামে করে দিয়েছে,

তাই তোমার যা চাই তা নিতুর কাছে,
আর সে না থাকলে কিছুই পাবেনা বলেই মুগ্ধ তাদের পিছন পিছন হাসপাতালে আসে,

মিতু এবার আকাশ থেকে পরলো, ধ্যাত এত কিছু না করে জদি নিতুকেই মন জয় করে রাকতাম তাহলে আমার টাকা পয়সার অভাব হত না,

মিতুও একটা ক্যাপ নিয়ে হাসপাতালে আসে তবে একটু দেরি করেই।

একটু পর পর নার্স বাহিরে এসে ছোটছে,
আবার নানান কিছু নিয়ে আবার ওটিতে ঢুকছে,

অনেক৷ ক্ষন পর ডাক্তার বের হয়ে এলো,
আর মুগ্ধর বাবার কাছে গিয়ে বললো পেসেন্ট আপনার কি হয়!!!

আমা আমার বৌ মা হয়!!

ওহ উনার স্বামী??

মুগ্ধ ছোটে এসে বললো আমি আমি পেসেন্ট এর স্বামি,

ডাক্তার অনেক ক্ষন চেয়ে একটা দির্ঘ নিশ্বাস ছেরে বললো নিন এই খানে একটা সই করুন!!

মুগ্ধ ডাক্তারের পানে চেয়ে হাতে কাগজ টা নিয়ে বললো কিসের কাগজ আর কেন সই করবো!!!

ডাক্তার হতাশ গলায় জবাব দিলো আপনার ওয়াইফ এর অবস্থা ভালো না বাচ্চা এখন ও তেমন পুস্ট হয় নি,
তাই আপনার বাচ্চা কে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হবে ৩ মাস এর মত।

আর এই অপারেশন এর পর হয়তো উনকে বাচানো সম্ভব হয়ে উঠবে না আর বেচেঁ থাকলেও কোমায় চলে জাবে, তাই আপনার সই চাই জাতে করে বাচ্চাও পেসেন্ট এর কিছু হলে হাসপাতাল ও ডাক্তার দের কোন সম্যসা নয় হয় তাই!!!

বলা শেষ করতে না করতেই মুগ্ধ ডাক্তার এর কলার চেপে ধরে আর বলে আমার নিতু আর বাচ্চার জদি কিছু হয় তোকে জেন্ত মাটিতে পুতে দিবো, বলেই ডাক্তার কে ঝাকতো লাগলো, সাগর ও বিলাশ এসে মুগ্ধকে বুঝানোর চেষ্টা করছে,

ডাক্তার এতে রাগ হয় নি, কারন ডাক্তারি পেশায় তাকে এমন বহু কেস হেন্ডেল করতে হয়েছে আর এই রকম সিচুয়েসন ও বহু বার হয়েছে,
ডাক্তার নিজের কলার ঠিক করে বললো শুনোন মি. আমরা আমাদের বেষ্ট টাই দিবো, আমরা চাই না একটা রুগির ও কিছু হক,
আর আপনি সাইন করতে জত দেরি করবেন ততোই দুজন এর ক্ষতি হবে এমনিতেই বহু রক্ত খরন হচ্ছে,

মুগ্ধ হতাস হয়ে দেয়াল পিঠ ঠেকিয়ে দারিয়ে আছে, নিতুর বাবা এসে মুগ্ধর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে নিতুর কপালে যা আছে তাই হবে বাবা সই টা করে দাও, সকলের এমন আকুল আবেদনে মুগ্ধ সই করতে বাদ্ধ হয়,

সই করা শেষ হলে ডাক্তারের দুই হাত চেপে ধরে অনুরুধি গলায় বললো প্লিজ ডাক্তার আমার বৌ আর বাচ্চাকে আমার বুকে ফিরিদে দিন প্লিজ ডাক্তার প্লিজ,আর নয়তো ওদের কিছু হলে আরেকটা লাশ আপনারা পাবেন,
বলেই মুগ্ধ চোখের পানি মুছে শক্ত গলায় বললো।

ডাক্তার মুগ্ধকে আশশাস দিয়ে তার পিঠে দুটা চাপর দিয়ে ভিতর এ চলে গেলো,

মিতু দূর থেকে সবই অনুসরন করছিলো,
মিতুর মনে এখন কি চলছে তা মিতুও মনে হয় জানা নেই,

সেতো শুধু মুগ্ধকে জেনো নিতু ছেরে দেয় তাই চেয়ে ছিলো তবে মরলেও কিছু জায় আসেনা কিন্তু নিতু মরলে লস ছারা আর কিছুই হবে না তা বেস বুঝতে পারছে মিতু।

একটু পর ডাক্তার বেরিয়ে আসে,
মুখে হতাশার ছাপ , সবাই দৌড়ে আসে ডাক্তার এর কাছে তাদের মনের উসুকতা ডাক্তার বেশ বুজতে পারছে,
কিন্তু মুগ্ধ একটু দূরে দারিয়ে আছে,

ডাক্তার এবার নিরবতা ভেংগে বললো বাচ্চা এখন তেমন পুষ্ট হয় নি তাই ওকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে,
চাইলে একটু পর দেখতে পাবেন দূর থেকে,
আর পেসেন্ট এর জ্ঞান ফিরেনি হয়তো ফিরবে কিনা জানা নেই, কোমাতে চলে জাওয়ার চান্সটাই বেশি,

বলেই ডাক্তার চলে গেলো,সবাই কান্নায় ভেংগে পরেছে তবে মুগ্ধ পাথর এর ন্যায় দারিয়ে আছে চোখে পানি নেই নাকি ফুরিয়ে গেছে তাও জানা নেই তার,

সন্ধায় আইসিওতে নিতুকে দেখতে জায় মুগ্ধও নিতুর মা,
মুগ্ধ একটা হাসি দিয়ে বললো বাহ কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছো সবার ঘুমটা কেড়ে এত টা নিষ্ঠুর তো ছিলে না তাহলে কেন কেন এমন করলে নিতু!!!

নিতুর কানেতো কথা পৌছায় নি তার, সে তো তার জ্ঞানেই নেই পরে আছে লাস হয়ে বাস।

সবাই বাচ্চাকে একে একে দেখে এলেও মুগ্ধ জায় নি তার ছেলে কে দেখতে,
হ্যা নিতুও মুগ্ধর একটা ছেলে হয়েছে, সবাই তাকে দেখে কান্না করছে নাক দিয়ে পাইপ এর সাহায্যে খাবার পোছাচ্ছে,
কাচেঁর বাক্সে এই ছোট্ট বাচ্চাটা বন্দি এটা দেখলে হয়তো পাশান এর ও মন টা গলে জাবে, হয়তো মিতুর ও গলে গেছে!!!!
আসলেই কি নাকি বাচ্চাকে দেখার পর তার চোখের পানি থামছেই না লুকিয়েও কাদঁছে মিতু, নাকি নাটকটাই করছে এবার একটু ভিন্ন ভাবে, তবে মিতুর কান্নার দিকে কারো খেয়াল নেই তারা মিতুর মুখটা দেখতে চায় না, নিতুর মা মিতুকে তার বাড়িতে ঢুকা নিষেধ করেছেন এমন অপয়া নির্লজ্জ মেয়ে আমার হতে পারেনা বলে তাকে অনেক শাসিয়ে ছেন তিনি,

দেখতে দেখতে ২ মাস পার হয়ে গেলো এই দুই মাসে একবার ও তার ছেলেকে দেখেনি কেও জুর করেও দেখা করতে নিতে পারেনি ২ মাস সে নিতুর পাশেই ছিলো নাওয়া খাওয়া বন্ধই প্রায় তার, পাগল এর মত নিতুর হাতটা ধরে বসে থাকে সে, নিতু কপালে চুমু দিয়ে হাত বুলায় সারা ক্ষন আর বলতে থাকে নিতু আমি কোন অন্যায় করিনি আমায় একটা কথা বলার সোজোগ দাও না প্লিজ,

বাচ্চাকে কাচেঁর বক্স থেকে মুক্ত করা হয়েছে আজ দু দিন, তবে মনে হয় ওখানেই ভালো ছিলো সে,
কারন এখন তাকে কেনা পাউডার দুধ খাওয়াতে হচ্ছে তবে ফিডার দিয়ে তাকে খাওয়ানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে উঠেছে , খিদায় বাচ্চা কান্না করতে করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, এই কান্না মুগ্ধর কানে আর বুকে রক্ত ঝরাচ্ছে, নিজের অংশকে আর কত দূরে ঠেলে রাখবে,

এমন চলতে থাকলে বাচ্চা বাচঁবেনা এমন উক্তি ডাক্তার দের,
মুগ্ধ এবার আর সামলাতে পারলে না অনিকার কোল থেকে বাচ্চাকে নিজের কোলে নিয়ে নেয়, তার কপালে আল্ত করে একটা চুমু একে দেয়,

এখন সবাই হা হয়ে আছে কারন বাবার কোলে জেতেই ছেলের কান্না অফ ভাবা জায় এই টুকু বাচ্চা সেও কিনা তার জন্মদাতাকে চেনে!”””

বাচ্চাটা চেয়ে রয়েছে মুগ্ধর দিকে মুগ্ধ অনেক ক্ষন চেয়ে থেকে বললো কিরে তুই এমন করছিস কেন, দুষ্টু হবি খুব মায়ের মত কষ্টই দিবি সবাইকে নাহহ।
তোর মা তো সবািকে কাদাচ্ছে একবার ও উঠে দেখলো না তোকেও না কেমন মা রে বাবা,

পাষান মা তোর বুঝলি, একা একাই বক বক করছে মুগ্ধ, এবার অনিকা ফিডার এএ দুধ এনে বাচ্চার মুখে তুলে টানতে পারছে না কারন বাচ্চাটা খুবই ছোট্ট তার মুখের তুলনায় নিপলসটা বহু বড়, তাই হালকা হাকলা চাপে মুখে দুই এক ফোটা দুধ দিচ্ছে অনিকা, মুগ্ধ এবার ছেলেকে বুকের সাথে মিশিয়ে বললো আয় তোর পাষন্ড মায়ের সাথে দেখা করিয়ে আনি, বলেই নিতুর কাছে নিয়ে গেলো তার বাচ্চাকে বাচ্চাটার নাম কি রাখবে মুগ্ধ ভাবছে,!!
নাহ এর নাম রাখা জাবেনা হয়তো নিতু শুনলে আমার গলাও চেপে ধরতে পারে, কারন নাম তো সে রাকবে বলে কবে থেকেই বায়না করেছে।

নিতুর বেড এর এক কোনায় বাচ্চাটাকে শুইয়ে দিয়ে নিতুকে একটা চুমু দিয়ে বললো এই নাও আমাদের ছেলে তুমি না বলেছিলে নাম তুমি রাখবে তা রাখো একন নয়তো আমিই ঠিক করে ফেলবো তাও আমার নামের সাথে মিলিয়ে একাই অনেক ক্ষন বক বক করে বললো হুম রাখলাম ওর নাম হবে নাম হবে ( মুখে হাত দিয়ে উপরে চেয়ে ভাবছে মুগ্ধ)

পিছন থেকে অনিকা এসে বলে নাম হবে ফুপ্পির নামে অনিক””

মুগ্ধ হাসি দিয়ে বলে তুমি যা বলবে তাই ওর নাম অনিকই হবে আর নিতুও খুশি হবে তুমি নাম রেখেছো শুনলো, –গল্পের আসল লেখিকা #সেলিনা_আক্তার_শাহারা আমি রাখলে হয়তো আমায় বালিশ চাপাও দিতো বলেই হালকা হেসে দিলো, তবে অনেক কষ্টের হাসি তার নিতু তো একটা কথার জবাব ও দিলো না,

একটু পরই অনিক আবার কান্না জুরে দেয়,
মুগ্ধ এবার আর কোলে নিলো না নিতুর কাছে আরো কাছে শুইয়ে দিলো আর বললো আমাদের কথা তো ওর কানে জায় না দেখতো বাবা তোর কান্নার আওয়াজ টা পৌছায় কিনা বলেই অন্য দিক ফিরে কাদঁছে মুগ্ধ কারন তার এই কান্নায় বুকে রক্ত ঝরছে অঝরে।

একটু পর মুগ্ধ খেয়াল করলো বাচ্চার কান্না থেমে গেছে তার ভিতরে ভয় বাসা বেধে উঠলো অনিক ঠিক আছেতো, মুগ্ধ পাশ ফিতেই সে দাড়িয়ে জায় আর চিৎকার করে উঠে ডাক্তার ডাক্তার বলে,

তার চিৎকার এ বাহির থেকে সবাই এসেছে, ডাক্তারও মিতুও মাএ এলো এসে মুগ্ধর চিৎকার শুনে রুমে ঢুকতেই সে দরজায় হেলান দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না শুরু করে দেয়,
সাথে বাকি সবাই মুগ্ধ মরার মত ঠায় দারিয়ে আছে,

চলবে!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here