পাথরের_বুকে_ফুল🍁 part_25

পাথরের_বুকে_ফুল🍁
part_25

#writer_hafsa_alam🍂🍂

:
:
:
__এক গ্লাস পানি দিবেন?(ওয়াসেনাত করুন ভাঙা গলায় বলে উঠে)
:
:
রিমন দৌড়ে পানি নিয়ে আসে।পানি হাতে নিতেই ওয়াসেনাতের হাত কাঁপতে শুরু করে।তবুও নিজেকে বহু কষ্টে সংযোত করার চেষ্টা করেও গ্লাসটি বাঁচাতে পারলোনা।ঠাসসসস করে পরে বিকট এক শব্দ হল।ওয়াসেনাত অরিএানের দিকে তাকিয়ে আহত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠে…….
__সরি ইচ্ছে করে করি নি।
__কি হয়েছে তোমার?তোমার কি অসুস্থ লাগছে আমাকে বল?
__আমি পানি খাবো প্লিজ।(কষ্ট জড়িত কন্ঠে বলে উঠে)
:
:
রিমন আবার পানি নিয়ে আসে। কিন্তু এবার অরিএান নিজের হাতে ওয়াসেনাতের মুখে পানি ধরে।ওয়াসেনাত এক চুমুকে অর্ধেক পানি খেয়ে ফেলে।সাথে সাথে তার সব কিছু ঝাপসা মনে হয়।ওয়াসেনাত ধিরে ধিরেই অরিএানের বাহুতে নেতিয়ে পরে।ব্যাপারটা কেউই বুঝে উঠেতে পারলো না।অরিএান ওয়াসেনাতকে কোলে নিয়ে সিঁড়ির দিকে হাটা ধরলো।আর রিমনকে ডাক্তার ডাকতে বলল।অরিএানের পিছনে পিছনে ওয়াসেনাতের পরিবারের সবইও উপড়ে উঠে পরে।অরিএান ওয়াসেনাতকে সোজা নিজের রুমে নিয়ে শুইয়ে দেয় আর রিমিকে বলে ওয়াসেনাতের জামা চেন্জ করে দিতে। রিমি আলমারি খুলে প্রচণ্ড রকমের অবাক হয়।কারন অরিএানের আলমারি ভর্তি ওয়াসেনাতের জন্যে কিনা জামা কাপড়ে।ওয়াসেনাতের মা তার মেয়ের পাশে বসে আছে।ছেলেরা সবাই বাহিরে চলে আসে। অরিএান ওয়াসেনাতের বাবার সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠে………
__আমি কি আপনাকে বাবা ডাকতে পারি??আসলে খুব ছোটো বেলায় আমি বাবাকে হারিয়েছি।তাই বাবা ডাকটা আর ডাকা হয়ে উঠে নি।
:
ওয়াসেনাতের বাবা অরিএানকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে….
__অবশ্যই।তুমি আশিকের ছেলে।তোমার এই পরিচয়ই আমাকে বাবা ডাকার জন্যে যথেষ্ট। তোমার কি আমার কথা মনে আছে।ওওও আমি তো তোমাকে একবছর বয়সে দেখেছি।তোমার মনে থাকার কথা না।আমি তোমার বাবার প্রিয় বন্ধু ছিলাম।
__আপনি কি বাবার বন্ধু তৌপিক? (অবাক হয়ে)
__হুম কিন্তু তুমি কিভাবে যান?
__বাবা ছোটো বেলায় বলেছিল আপনার মেয়ে হলে তার সাথে আমার বিয়ে দিবে।তখন আমি ছোটো ছিলাম আর বেশ লজ্জাও পেতাম বাবার কথায়।কিন্তু নিয়োতি আপনার মেয়েকেই আমার বউ বানিয়ে দিয়েছে।এটাকেই বলে ভাগ্য। (চোখ মুছতে মুছতে বলে উঠে)
__হুম।ও আমাকেও এমন বলেছিলো যখন ভার্সিটি পড়তাম।কিন্তু কি থেকে যে…
__বাবা প্লিজ আমি পুরানো কথা ভাবতে চাই না।আর আজ আপনারা এখানেই থাকবেন।কাল ওয়াসেনাতকে নিয়ে যাবেন।
:
কথাটা শুনেই ওয়াসেনাতের বাবার বুক কেঁপে উঠে তবে কি অরিএান তার মেয়েকে মেনে নেই নি।ওয়াসেনাতের বাবা অরিএানের দিকে অসহায়ের মত তাকায়।অরিএান মুখে হাসির রেখা টেনে বলে উঠে……..
__ও কে ছাড়া আমার দম নিতেও কষ্ট হয় কিন্তু আমি চাই অনুষ্ঠান করে ওকে নিয়ে আসতে।এভাবে বিয়ে হবে আমি নিজেও জানতাম না।সো এখন আমি চাই সব নিয়মকানুন মেনেই ওকে আমার বাড়ি নিয়ে আসবো।আশাকরি বুঝতে পারছেন?
__ঠিক আছে।তুমি যেমন বলবে তেমনই হবে।ডাক্তার চলে এসেছে চল।
:
:
অরিএান ওয়াসেনাতের হাত ধরে বসে আছে।এই প্রথম সে ওয়াসেনাতকে বিনা হিজাবে দেখছে।অরিএান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওয়াসেনাতের কাধের উপড় দিয়ে বেয়ে আশা ওয়াসেনাতের কিছু চুলের দিকে।দীঘর কালো চুল।তবে বুঝা যাচ্ছে না কত লম্ব!!ডাক্তার বলেছে মানুষিক ভাবে আঘাত পেয়েছে তাই এমন সেন্সলেস হয়ে গেছে।অরিএান ওয়াসেনাতের চুলের ভাজে হাত বুলিয়ে চলেছে।তার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না এই পরীর মত মেয়েটা তার নিজের বউ।ভাবা যায়??অরিএান ওয়াসেনাতের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে চোখ ফিড়িয়ে নিলো।ঠোঁটের কাটা জায়গাটা দেখেই তার মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে। তার মন চাচ্ছে ওই লোকটাকে আবার খুন করতে। কিন্তু মৃত ব্যক্তিকে তো আর বার বার মারা যায় না।অরিএান ওয়াসেনাতের কাটা জায়গায় হাত ছোঁয়াতেই ওয়াসেনাত নরে উঠে।অরিএান হালকা হেসে রুম থেকে বাহিরে চলে যায়।
:
:
:
রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই। ওয়াসেনাত ঝাপসা চোখে তার আশেপাশে তাকিয়ে অপরিচিত পরিবেশের সাথে পরিচিত হতে চাচ্ছে। ওয়াসেনাত প্রথমে বুঝতে না পারলেও তার বেডের পিছনের দিকে বড় করে ছুলানো অরিএানের ছবি দেখে বুঝতে পারে এটা অরিএানের রুম।ওয়াসেনাত বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরে।তার সম্পূর্ণ শরীর ব্যথা করছে।তাতে তার তেমন মনোযোগ নেই। এই নতুন পরিবেশের সাথে পরিচিত হওয়ার প্রতিই এখন সে অধিক মনোযোগী। ওয়াসেনাত রুমের চারিপাশে একবার চোখ বুলালো।অপহোয়াইট রং এর একপাশ দেওয়াল বিশিষ্ট রুম। বাকি তিন পাশই কাঁচের। কাঁচের উপড়ে খুব সুন্দর সাদা পর্দা আর পর্দা। পর্দার আড়াকে দুই পাশে দুটি কাঁচের জানালাও আছে।যা দিয়ে চাঁদের আলো অনায়াসে ঘড়ে প্রবেশ করছে।একটা ব্যালকুনিও আছে সাথে এটাচ করা ওয়াসরুম। ।রুমে খুব সুন্দর একটি বেড রাখা আর তার দুপাশে দুটি বেড টেবিলে দুটি টেবিল লেম্প আছে।এক পাশে আলমারি তাও কাঁচের গ্লাসে আবৃত্ত, একপাশে একটা সাদা টেবিল। একটা ড্রেসিন টেবিল,একটা সোফাসেট আর একটা সুন্দর বুকশেলফ আছে।যাতে অসংখ্য বইয়ের ছড়াছড়ি ।সম্পূর্ণ রুমে নিজের অসংখ্য ছবি দেখে ওয়াসেনাত নিজেই ভোরকে যায়।এটা আসলে কার রুম তার নাকি অরিএানের এটা ভেবেই সে কুল পাচ্ছে না।ওয়াসেনাত নিজের প্রতিটি ছবিতে চোখ বুলিয়ে চলেছে।ছবিগুলো ক্যান্ডিট। আর ছবিগুলোর নিচে খানিকটা খালি জায়গায় খুব সুন্দর কিছু কাব্যের মত লেখা আছে।ওয়াসেনাত নিজের একটা ছবি দেখে অবাক হয়ে ভাবে এটা আবার কখন তুলো?ছবিটা অরিএানের সাথে প্রথম যে দিন মাঠে গিয়েছিল সে দিনের।ওয়াসেনাত পিছনে দুহাতের উপর ভর দিয়ে হালকা ঝুকে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আর রোদের কিরনে তার মুখ সোনালি রং ধারন করেছে।ছবির নিচে খুব সুন্দর করে দেখা:
:নিজেকে আমি ডুবিয়েছি তোমার সোনালি আভায় :🍁
:
:
ছেলেটার মাঝে এত কাব্যিক ভাব আছে ব্যাপারটা ওয়াসেনাতের জানা ছিলনা।ওয়াসেনাত আরো একটা ছবি দেখে থমনে দাড়ায় এটা তো প্রথম দিনের ছবি। কে তুলেছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে নিচে pc:rimon লেখা দেখে বুঝতে পারে ওই দিন রিমনও তাদের দেখে ছিল।ছবিটাতে ওয়াসেনাত বিরক্তি নিয়ে লাইটের তার খুলছে আর অরিএান কিছু তার হাতে হা করে তাকিয়ে আছে।ছবির নিচে লিখা আছে………..
:এযেনো এক অজানাপুরীর রাজ্যে আমি হারিয়েছি নিজেকে তোমারি মাঝে:
(আমার ফেইরিপরী…..🍁)
:
:
:
ওয়াসেনাত হতবম্ভ হয়ে পড়ছে আর দেখছে।ছবিগুলোর চারপাশে ফেইড়ি লাইটের আলো জলজল করে জ্বলছে।ওয়াসেনাত অরিএানের বড় ছবির দিকে তাকিয়ে আছে।সাদা কালো রং এর ছবি।ইডিট করে করেছে বুঝাই যাচ্ছে। অরিএান একটা হাতের আঙ্গুল দিয়ে একপাশের ভ্রু উঠিয়ে বাকা ঠোঁটে তাকিয়ে আছে।ইশশশশ কি সুন্দর লাগছে লোকটাকে।ভাবতেই ওয়াসেনাতের ভালো লাগছে।এই সুন্দর লোকটি এখন তার।নিজের চিন্তা ভাবনায় নিজেই লজ্জা পাচ্ছে ওয়াসেনাত।
:
:
:
অরিএান রুমে এসেই অবাক। ওয়াসেনাত দাড়িয়ে আছে।আর তার লম্বা চুলগুলো ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এত লম্বা চুল অরিএান এর আগে কখনো দেখে নি।কালো ঘন লম্বা চুলগুলো নিজেদের মত ফ্লোরে পরে আছে।এত সুন্দর চুল ওয়াসেনাতের ভাবতেই অরিএান অবাক হচ্ছে। এ জেন রূপান্জেল।রূপ কথায় রূপান্জেলের চুল এত বড় ছিল তার জানা আছে। কিন্তু রূপান্জেলের মত চুল যে তার ফেইরিপরীরও আছে এটা তার অজানা ছিল না।অজানা থাকারই কথা সে তো আগে ওয়াসেনাতের চুল দেখে নি।অরিএান পকেটে দুই হাত গুঁজে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে এক দৃষ্টিতে ওয়াসেনাতের চুলের দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েদের চুলে মাতাল করার শক্তি আছে এটা সে শুনেছে কিন্তু এই প্রথম সে নিজ চোখে তা দেখছে।অরিএানের মনে হচ্ছে সে জনম জনম ধরে এভাবেই তাকিয়ে থাকতে পারবে।
:
:
ওয়াসেনাত পিছনে ঘুড়ে তাকাতেই হেলান দিয়ে দাড়িয়ে থাকা অরিএানকে দেখতে পায়।ওয়াসেনাত সাথে সাথে নিজের চুল হাত দিয়ে গুটিয়ে হাত খোঁপা করতে শুরু করে অরিএান এটা দেখে বলে উঠে………
__আরে কি করছ?এখন তো আমি তোমার জামাই সো চুল তো দেখতেই পারি। তাই না?বাই দ্যা ওয়ে তোমার চুল কিন্তু পাগল করার মত!!
__সবাই কোথাই আমি বাসায় যাবো না?(কথা ঘুড়িয়ে বলে উঠে)
__তুমি কি জঙ্গলে আছ নাকি??
__মানে
__এখন তো তুমি বাসায় আছ।আজ কিন্তু আমাদের ফ্যাস্ট নাইট। কিন্তু অর্ধেক রাত তো তুমি ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিয়েছ।কিছু খাও নি।চলো খাবে তারপর তারপর..আচ্ছা থাক তারপরের টা পরে দেখা যাবে(বাকা হেসে বলে উঠে)
:
:
ওয়াসেনাত ভয়ে ঢোক গিলে। তারপর বলে উঠে….
__খুধা নেই
__ভয় পেয়েছ মনে হচ্ছে (খাবার ট্রলি থেকে টেবিলে রাখতে রাখতে)
__মোটেও না আপনাকে আমি ভয় কেন পাব।আরে আমি তো বাঘকে ও ভয় পাই না আর আপনিতো মানুষ।(ভাব নিয়ে)
__তাই (ওয়াসেনাতের পাশে বসতে বসতে)
__হুম।এই আপনি আমার পাশে কেন বসছেন? এত বড় রুমে কি জায়গার অভাব নাকি?জান দূরে গিয়ে বসেন।
__ও মাই গড ওয়াসু ইউ কল মি জান(অবাক হওয়ার ভান করে)
__আরে না আমি জান মানে জাইতে বলেছি।
__আবার জান ওহহ আল্লাহ এই মেয়ে আমাকে জান জান বলে জান নিবে নাকি?? (ওয়াসেনাতের মুখে খাবার দিতে দিতে)
__আশ্চর্য তো আমি কখন আপনাকে জান বললাম?
__এই মাএইত বললা।
__এই ফাইজলোর ও লিমিট থাকে এমন ফাইজলামির মানে কি? আর এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?আমি কি এলিয়েন? না কি আজই প্রথম দেখছেন?আর এসব কি অখাদ্য কুখাদ্য খাওয়াচ্ছেন? ছি কেমন যানি খেতে?জাস্ট ফালতু।
__কেন কি হয়েছে এগুলো তো ইতালিয়ান ডিস।আমার জানা মতে বেস্ট খাবার। কিন্তু তোমার কি হয়েছে?
__ছি এটাকে বেস্ট বলে?শালার ফ্রি তে দিলেও খাবো না।
__আমি তো ফ্রিতেই দিলাম আর তুমিও অনেকটাই খেয়েছ।সো ফালতু বকা বন্ধ কর।আর খাও
__হুয়াট? আমি ফালতু বোকি?
__না মিষ্টি বকো।(মুখ মুছতে মুছতে)
__আপনি কিন্তু আমার মজা নিচ্ছেন…এই কি করছেন.. এই আপনি হুট হাট কোলে তুলে নেন কেন?নামান বলছি?
__ইহহসসস্
:
:
:
অরিএান ওয়াসেনাতকে কোলে তুলে নেয়।আর হাটা ধরে। অরিএান কাঁচের সিঁড়ি বেয়ে উঠে চলেছে।তার রুমের মিনি ছাদে।ছাদে উঠেই ওয়াসেনাতকে নামিয়ে দেয়।ওয়াসেনাত নিচের দিকে তাকিয়েই চিৎকার করে অরিএানকে জড়িয়ে ধরে।আর বলে উঠে……
__এই আমাকে কোলে নিন।কাঁচ তো এখনই ভেঙ্গে যাবে মনে হয়।এটা আবার কেমন ছাদ?কাঁচের তৈরি কেন?দেখেন বাড়ি কাঁচ দিয়ে বানিয়েছেন ইটস ওকে। কিন্তু ছাদ কেন বানাবেন? পাগল নাকি?যদি ভেঙ্গে নিচে পরে যাই? আল্লাহ বাচাও।
__ওয়াসু এটা ওয়াল্ডের বেস্ট কাঁচ দিয়ে তৈরি।হাতিরাও যদি লাফালাফি করে তবুও ভাঙবে না।আর তুমি তো বাচ্চা মেয়ে।(ওয়াসেনাতকে নিজের বাহুতে জড়িয়ে বলে উঠে)
__হুয়াট বাচ্চা?ডোন্ট কল মি বাচ্চা?আমি মোটেও বাচ্চা না।
__গায়ে বড় হলেই বাচ্চা বড় হয়ে যায় না।
__আপনি আবার শুরু করেছেন?কত ভালো ভদ্র ছেলেইনা ভেবেছি কিন্তু আপনি তো বদের হাড্ডি।
__ওকে সরি।কিন্তু একটা জিনিস কি যান?
__কি?
__তুমি আমার কোলে উঠতে চাচ্ছো। কেন বলতো?কোলে উঠতে মজা বুঝি?(চোখ টিপ মেরে)
:
:
ওয়াসেনাত রাগে ফসফস করছে।তার নাকের ডগা লাল হয়ে আছে।অরিএান মুচকি হেসেঁ আবার ওয়াসেনাতকে কোলে নিয়ে ছাদের এক পাশে বিছানো বিছানায় বসিয়ে দেয়।ওয়াসেনাত অবাক হয়ে সব দেখছে।ফ্লোরে খুব সপ্ট বিছানা পাতা।আর তাতে ছোটো ছোটো চার কোনা কুশন। ওয়াসেনাতকে আরও অবাক করে দিয়ে অরিএান তার দুপাশের দেওয়ালে হাত দিয়ে তার দিকে ঝুকে আছে।ওয়াসেনাতের বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে।দুজনের ঠোঁট ছুঁই ছুঁই। অরিএান একদৃষ্টিতে ওয়াসেনাতের কাপাঁ ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে।ওয়াসেনাত ভয়ে চোখ বুজে নেয়।পিনপনে নিরবতা বিরাজ করছে।দুজনের শ্বাস দ্রুত গতিতে তাল মিলিয়ে এক আসাধারন শব্দের রূপকারে নাম নিচ্ছে। হঠাৎ চারিদিকে আলো জ্বলে উঠে।ওয়াসেনাত চট করে নিজের চোখ খুলতেই সোনালি সাদা আলোর সমাহারে অরিএানের এক অতিব মায়ার মুখ আবিষ্কার করে।ওয়াসেনাত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অরিএানের মায়া ভরা মুখের দিকে। হেন্ডস্যাম, সুন্দর আর লাবণ্য ময়ী চেহারার মাঝে এত দিন এই মায়া মাখা মুখ আবৃত ছিল, যে এত কাছে থেকেও সে এই মায়া আগে কখনো উপভোগ করতে পারে নি।মেয়েরা মায়াবি হয় কিন্তু ছেলেরা তো এমন হয় না!!এটাই তার ধারনা ছিল, কিন্তু অরিএান তা ভুল প্রমাণ করে দিল।ওয়াসেনাত অরিএানের সবুজ চোখে কোনো চাহিদাই দেখতে পেল না শুধু দেখেছে প্রাপ্তি। তার চোখ বলে দিচ্ছে এই প্রাপ্তির প্রতিক্ষায় ছিল সে।
:
:
অরিএান বাকা হেসেঁ ওয়াসেনাতের কোলে মাথা দিয়ে তার কোমড় জড়িয়ে জামার উপড় দিয়েই ওয়াসেনাতের পেটে মুখ গুঁজে। অরিএান ভেবে পায় না এই মেয়েকে আল্লাহ কি দিয়ে তৈরি করেছে?এত মাধুর্য,মায়া,সৌন্দর্য্য, রূপ,মন সব কিছু দিয়ে মোড়ানো এই মেয়ে। ইশশশ এই মেয়েই তার বউ। ভাবা যায়।এই মেয়েকে পাওয়া মানে আর কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মরে যাওয়া।এই অসংখ্য ফেইরি লাইটের আলো আর চাঁদের আলোর মিল বন্ধনে ওয়াসেনাতকে কি অপরূপই না লাগছে যা শুধু অরিএানই বুঝতে পেরেছে আর কাউকে তা বুঝানো সম্ভব না।অরিএান ওয়াসেনাতের লম্বা চুল গুলো ধরছে আর বলছে……
__তোমার চুল রূপান্জেলের মত।এটা কি তুমি যান?
__মনে হয় না।কারন রুপান্জেলের চুল আরো লম্বা।আর আমার চুল তো অত লম্বা না।আমার চুলের একটা রহস্য আছে শুনবেন(অরিএানের চুলে হাত রাখতে রাখতে)
__হুম বল।তোমার কথা শুনতে আমার দুকান মরিয়া হয়ে থাকে।
__আম্মুুুুর আমার চুল খুব পছন্দ তাই তিনি ছোটো বেলায় মাএ দুই তিন বার চুল ফেলেছে।তারপর থেকেই আর চুল ফেলে না আর কাটতেও দেয় না।যদিও আমি আমার চুল খুব ভালোবাসি তবুও আম্মু আরো বেশি ভালোবাসে।
__তাই (ওয়াসেনাতের পেটে মুখ গুঁজে)
__হহ..হু..হুম(কেঁপে কেঁপে বলে উঠে)আচ্ছা একটা কথা বলবেন?
__আর কখনো অনুমতি নিবে না?শুধু বলতে থাকবে।
__আপনি কি চাপে পরে বা আমার সমস্যা দেখে আমাকে দয়া করে বিয়ে করেছেন?
:
ওয়াসেনাতের এমন কথায় অরিএান মাথা তুলে একবার তাকিয়ে আবার মাথা গুঁজে বলে উঠে……
__ভালোবাসায় দয়া বলতে কিছু নেই।তুমি সেই মেয়ে যাকে প্রথম দেখায় আমি নিজের হার্টবিড মিস করেছি।তুমি সেই মেয়ে যে আমার পাথরের বুকে ফুল ফুটিয়েছ।তুমি আমার ফুল ওয়াসু।খুব ভালোবাসি তোমায়।তোমার এই মুখের দিকে তাকিয়েই আমি হাজার বছর পার করে দিতে পারবো।আর তুমি কি না বলছ দয়ার কথা।আর দয়াতো ওই মহান আল্লাহ করেছে আমার উপড়। তোমাকে আমার জীবনে পাঠিয়ে।আমি শুধু তোমার এই হাত ধরে বহু পথ পারি দিতে চাই।তুমি তো মরুভূমির বুকে পানির ঝর্ণা।তোমাকে দয়া করার সামর্থ্য নেই আমার।শুধু বলব ভালোবাসি। একটু আকটু নয় অনেক বেশি ভালোবাসি যা অপ্রকাশিত। ভালোবাসা কখনো বলে প্রকাশ করা যায় না এটা কি যান আছে তোমার?থাক পরে একদিন বলব।আজ আমি খুব ক্লান্ত তাই একটু শান্তির ছোয়াঁ আর ভালোবাসার পরশ মাখা হাত মাথায় বুলিয়ে দেও প্লিজ..খুব ঘুম পাচ্ছে।আচ্ছা তোমার কোলে কি ঘুমের ঔষুধ বা ক্লোরোফিল আছে নাকি?শুধু ঘুম পায়।ওই দিনও পেয়েছিল।
:
:
:
অরিএান নিজের মত কিছুসময় বকবক করে ঘুমিয়ে পরে। ওয়াসেনাত বিরতি বিহিন তার মাথায় হাত বুলাতে থাকে আর নিজের দৃষ্টি চারিদিকে বুলাতে শুরু করে।ছাদে অসংখ্য গাছ রয়েছে। বেশিরভাগ সাদা গোলাপের। লাইটের আলোতে মুক্তার মত জলজল করছে গোলাপ গুলো।সাথে আরো অনেক ফুল গাছও রয়েছে।ফুলগাছের টব গুলোর দক্ষিণ দিকে একটা দোলনা আছে।গোলাকার সাদা রং এর দোলনা।ছাদের চারপাশের রেলিং ফেইরি লাইটে মোড়ানো।ওয়াসেনাতের মনে হচ্ছে এটা ছাদ না এক গুচ্ছ ভালোবাসার ছোট্ট মহল।যেখানে তারা দুজন অনায়াসে এভাবে বসে কাটিয়ে দিতে পারবে।ওয়াসেনাত এবার অরিএানের দিকে তাকায়।কালো টাউজার আর সাদা টিশার্ট পরিহিত লোকটা পরম শান্তিতে তার কোলে উপুত হয়ে শুয়ে আছে।তার হাত গুলো ওয়াসেনাতের কোমড় আকড়ে আছে।আর একটা পা হাপ ভাজঁ করা আর একটা লম্বা করে মেলা।ওয়াসেনাত ভাবছে লোকটি কিভাবে তাকে এত ভালোবাসতে পারে????কিভাবে?এই কিভাবের উওর ওয়াসেনাত দূর আকাশের চাঁদের কাছে খুজে বেড়াচ্ছে………..
:
:
#চলবে…………………🍁

🍂……ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন……….এত বালতি ধন্যবাদের জন্যে আপনাদেরকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। এন্ড লাভ ইউ অল।অনেকেই লাভ ইউ আপু বলেছেন কিন্তু সবাইকে রিপ্লাই দিতে পারি না তাই এখানে দিয়ে দিলাম🤭..🌼

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here