#প্রণয়াসিক্ত_চিরকুট💙
#পর্বঃ০২ + ০৩
#Rifat_Amin
প্রণয় বাসা থেকে বেড়িয়ে যেতেই আমি আবারো সেই নিউজটার উদ্দেশ্যে টিভিটা অন করলাম। কিন্তু হতাশ হতে হলো। ইতোমধ্যে নিউজটা শেষ হয়ে গেছে৷ কোথাও খুঁজেও পেলাম না। ওখানে তো অর্ক চৌধুরীর নামটা আমি স্পষ্ট শুনলাম। অথচ খাটাশ প্রণয় টিভিটাই অফ করে দিলো।
ঠিক তখনি দরজা খোলা দেখে ভীতরে প্রবেশ করলো অর্ক চৌধুরীর আম্মু। তিনি রুমে ঢুকেই সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললেন,
‘ প্রণয় বেড়িয়ে গেলো যে। তুমি আটকাতে পারলে না? ‘ -কুহু।
উনার মায়ের নাম কুজন। সবাই কুহু বলে ডাকে। উনার কথায় বেশ অবাক হতে হলো আমায়। সন্দিহান গলায় বললাম,
‘উনি কি প্রতিদিন রাত করে বেড়িয়ে যায়!’ -আমি
উনি আমার কথাটা স্পষ্ট এড়িয়ে যেয়ে বললেন,
‘ দেখোতো কান্ড। আজকের মতো স্পেশাল রাতে ছেলেটা কোথায় বেড়িয়ে গেলো। দাঁড়াও আমি ফোন করছি। ‘-কুহু
আমি আর প্রশ্ন করলাম না। নতুন বউয়ের এত প্রশ্ন করা মানায় না। উনি আমার সামনেই ফোন করলেন। কিন্তু ফোনটা সুইচডঅফ দেখালো। অতঃপর উনি বললেন,
‘ টেনশন করিও না মা। এক্ষুণি এসে যাবে। আচ্ছা তুমি কি অর্কের জন্য টেনশন করছো! ও আসলে মাঝে মাঝে উধাও হয়ে যায়। কোথায় যায় বলে যায় না। আবার দুএকদিনের মধ্যে ঠিক বাসায় এসে যায়। কিন্তু কে জানবে, বিয়ের সময় এমন পাগলামো করে বসবে ! তাই বাধ্য হয়ে প্রণয়ের সাথে তোমার বিয়েটা দিতে হলো৷ অর্ক যেমন আমার ছেলে। প্রণয় আমার নিজের না হলেও কখনো অন্য চোখে দেখিনি। তবে তুমি তো আমার পছন্দের বউ। এই বাড়িতে তুমি আমায় আরেক মা হিসেবে চিনবে। সে যাই হোক, প্রণয় নাকি তোমার ব্যাচমেট? তাহলে তো ভালোই হলো। ও কিন্তু অনেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। অনেক সাপোর্ট পাবা। যদিও গম্ভীর আর রাগটা একটু বেশী। তবে মানিয়ে নিলে সমস্যা হবে না ‘ -কুহু
উনার কথায় মনে কিছুটা সাহস পেলাম। কিন্তু প্রণয় যে কঠিন কথা বলে গেলো একটু আগে। তাতে ভয়টা তেমন কমছে না।
উনি আরো কিছুক্ষণ বসে থেকে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। আমি দরজাটা বন্ধ করে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলাম। এই পুরো বাড়িটা অর্কের বাবা অসীম চৌধুরী আর প্রণয়ের বাবা প্রান্তর চৌধুরীর। তাদের এক্সপোর্ট ইমপোর্টের বড় বিজনেস আছে। পুরো বিজনেসটা দুইভাই নিজ পরিশ্রমে দাঁড় করিয়েছেন। তাই তাদের দুজনার ছেলে অর্ক এবং প্রণয় বাবা-মায়ের বাধ্য ছিলো এবং দুইভাই প্রচন্ড মিশুক প্রকৃতির। যদিও প্রণয় অর্কের থেকে পাঁচ বছরের ছোট। প্রণয়ের যখন দশবছর বয়স। তখন কোনো এক কারণে ওর মা মারা যায়। তারপর থেকে প্রণয় আর অর্ক দুজনই কুজন আহমেদের কাছে মানুষ হচ্ছে।
তবে অর্ক চৌধুরীর একটা মাত্র বোন অবনী থাকলেও প্রণয়ের কোনো বোন নেই। সে এবার মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। কোনো এক কারণবসত সে বিয়েতে এটেন্ড করতে পারেনি। তবে খুব তারাতারি বাসায় এসে যাবে।
—
‘ এই মেয়ে, আমাকে ধরে বসো। পরে যাবে তো’ -আকিব
চমকে উঠলো নাদিয়া। এতক্ষণ সে আকিবকে নিয়ে কল্পনায় ডুবে ছিলো। হঠাৎ ওর থেকে এমন কথা শুনে সে যেনো হতবাক হয়ে গেলো। নাদিয়ার যে আকিবের বাইকে ওঠার সৌভাগ্য হয়েছে, এতেই সে মহাখুশি। ইহজগতে আর কিছু চাওয়ার নেই। থাকতে পারে না। অথচ আকিব কি না তাকে ধরে বসতে বলছে!
‘ আরে, আমি কি বাইকটা স্টার্ট করবো? তোমার বাসায় সবাই টেনশন করছো হয়তো! ‘ -আকিব
নাদিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে আকিবের ঘার ছুঁয়ে বসতেই সারা শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে গেলো যেনো। অতঃপর বাইকটা চলতে শুরু করলে সে উত্তেজনায় টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারলো না। মেহজেবিন, কথামালার সাথে এতক্ষণ শোক পালন করতে কখন যে এত রাত হয়ে গিয়েছে বুঝতেই পারেনি কেউ। মেহু আর কথুর বাসা কাছে হওয়ায় ওদের টেনশন ছিলো না। কিন্তু আমার তো একটু দূরে। পরে আঙ্কেল, আকিব ভাইয়াকে আমায় পৌঁছে দিতে বললো। আমি তো পারলে সেই সময়ে ডিস্কো ডান্স করি। কিন্তু মানসম্মানের ভয়ে কিছু করলাম না। আমি এসব ভাবতেই কখন যে বাসার কাছাকাছি এসে গেলাম বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ ভাইয়া ব্রেক করায় হুমরি খেয়ে পরলাম উনার উপর। সাথে সাথেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে এনে বললাম,
‘ সরি সরি ভাইয়া। বুঝতে পারিনি। -আমি
উনি মুখে বিরক্তসুচক ‘চ’ আওয়াজ করলেও বললেন,
‘ সমস্যা নেই। এটা তোমার বাসা না? যাও। ‘ -আকিব
আমি মাথা নাড়ালাম। আচ্ছা উনার উপর পরে যাওয়ায় কি উনি কি আমায় গায়ে পরা মেয়ে ভাবলো? ভাবতেও পারে। ধুর। কি ভুল করে বসলাম! আমি নম্রস্বরে বললাম,
‘ ভীতরে আসুন ভাইয়া। চা খেয়ে যান’ -আমি
উনি মুচকি হেসে বললেন,
‘ না না। অনেক রাত হলো। তুমি বরং যাও। আরেকদিন সুযোগ হলে খাবো ইন শা আল্লাহ ‘ -আকিব
আরে শুধু একদিন কেনো। আপনি তো আমার হাতে প্রতদিন চা-কফি, সব খাবেন। ইসস! ভাগ্য করে একটা খাটাস বান্ধবী পেয়েছি। নাহলে এরকম একটা স্বপ্নের পুরুষ কখনো পেতাম না। এসব ভাবতেই উনি বাইক ঘুরিয়ে চলে গেলেন।
বস্তুত আকিব ভাইয়াকে আমার অনেক ভালোলাগে, কিন্তু কখনো বলা হয়নি। আদৌ কখনো বলা হবে কি না কে জানে!
——
প্রণয় যখন বাসায় ফিরলো। তখন ঘড়িতে সময় রাত একটার কাটায়। চারদিকে তীব্র নিস্তব্ধতা। উনি রুমে এসেই টিশার্ট খুলতে খুলতে আমার দিকে একপলক তাকিয়ে বললেন,
‘ ঘুমাননি যে? রাত জেগে থাকার অভ্যাস আছে নাকি!’ -প্রণয়
‘ আপনার রুমে আমার কখনো ঘুম আসবে না! আর আপনি কোথায় ছিলেন এতক্ষণ? ‘ -আমি
উনি টি-শার্ট খুলে একটা হালকা পাতলা হাফ গেন্জি পরে বললেন,
‘আমি কাউকে কৈফিয়ত দেয়ার মানুষ না। এটা নিশ্চয়ই জানেন। যাই হোক, কিছু খাবেন? ‘ -প্রণয়
বাব্বাহ, ভালো মানুষের মতো খেতেও বলছে দেখছি। আমার যে খিদে পেয়েছিলো তা একেবারে ভুলেই গিয়েছিলাম। উনার কথায় মনে পড়লো। সেই কখন যে খেয়েছিলাম, আর কিছুই খাওয়া হয়নি। আমি বিছানা থেকে নেমে বললাম,
‘ হ্যাঁ খাবো। আপাতত আমার জন্য কফির ব্যবস্থা করুন’ -আমি
উনি আমাকে চমকে দিয়ে নিজেই কিচেনে গিয়ে এককাপ কফি বানিয়ে আনলেন। এই ছেলে যে এমন প্রকৃতির কে জানতো! আরো কত কি যে দেখতে হবে। আমি কফি হাতে নিতেই বললেন,
‘ আচ্ছা এই রুমে আপনি ঘুমান। আমি নাহয় বেলকণিতে ঘুমাচ্ছি। ‘ -প্রনয়
আমি চমকে উঠে বললাম,
‘ আরে আপনি কেনো বেলকণিতে ঘুমাবেন? এটা তো আপনার বাসা। ‘ -আমি
আমি ভালোমানুষের মতো কথাটা বললাম বটে। কিন্তু উনি আবার বললেন,
‘ ওহহ৷ তাহলে আপনি বরং সোফায় ঘুমান। আমি বেডে ঘুমাচ্ছি ‘ -প্রণয়
কথাটা বলেই উনি বেডে গা এলিয়ে দিলেন। আমি তীব্রস্বরে বললাম,
‘এই ছেলে। বিয়ে করে এবাড়িতে এসেছি বলে কি সোফায় ঘুমাতে বলবেন!’ -আমি
প্রণয় এতক্ষণ ধৈর্য্য ধারণ করে থাকলেও এবার বিছানা থেকে আকষ্মিক আমার বাহু চেপে ধরে বললেন,
‘ তাহলে আসেন একবেডে ঘুমাই। আপনি তো দেখছি বেডশেয়ার করার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছেন ! আপনাকে বিছানায় থাকতে বলছি, তাও রাজি নন। আবার সোফায় থাকতে বললাম, তাও রাজি হচ্ছেন না। তারমানে আমার সাথেই একবিছানায় থাকতে চাচ্ছেন? আপনাকে ভার্সিটিতে প্রথমদিন দেখেই বুঝেছিলাম আপনি ঠিক কেমন প্রকৃতির মেয়ে! যখনি অর্ক ভাইয়ার সাথে বিয়েটা ভাঙলো। আর অমনেই আপনি আমাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়ে গেলেন। বাহ!’ – প্রণয়
প্রণয় রেগে গিয়ে এতকথা বলতেই আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়লো। বিয়ের প্রথম রাতেই কি না আমায় এভাবে অপমান করে বসলেন! উনার সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ থাকতেই পারে না’হয়।
আমাকে কাঁদতে দেখে বাহু ছেড়ে দিলেন উনি। হাতদুটো ব্যাথায় তীব্র জ্বালা করছে। উনি আবারো বললেন,
‘ এসব অভিনয় বন্ধ করুন। আর আবারো বলছি, আমার থেকে দূরে থাকবেন। আর ভার্সিটিতেও কেউ যেনো জানতে না পারে আমি বিবাহিত। কথাটা জেনো মাথায় থাকে। ‘ -প্রণয়
আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। ঝপসা চোখে একবার ধোঁয়া উঠা কফির মগটার দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, এই মহুর্তে যদি নাদিয়া, মেহু আর কথা থাকতো। তাহলে হয়তো এতটা একাকী অনুভব করতাম না।
আমি বিছানায় ধপ করে বসে পড়লাম। উনি একটা বালিশ হাতে নিয়ে বেলকণিতে গেলেন। অতঃপর ঠাস করে থাই দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়লেন। তাৎক্ষণিক একটা সিগারেট ধরাতে ভুললেন না!
এ কার সাথে বিয়ে হলো আমার! যাই হয়ে যাক, আজকের রাতটা কোনোভাবে কাটিয়ে দেই। কাল আমার বন্ধুদের সাথে দেখা করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে!
—-
‘আম্মু, এটা কি ঠিক করলাম আমরা? প্রণয়ের ভালো করতে গিয়ে যদি হিতে বিপরীত কিছু হয়? ‘ -অর্ক
কুজন আহমেদ ব্রেকফাস্ট করে টেবিল থেকে উঠে বললেন,
‘কিছুই হবে না। তুই শুধু দুএকদিন বাসা থেকে দূরে থাক। আর আমরা তো ফাহুমিদার বাবা-মায়ের সাথে এই বিষয়ে কথা বলেছি। শুধু ফাহমিদা-প্রণয় জানে না আমরা আসলে তোর সাথে বিয়ে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু ওর বাবা-মা আগে থেকেই জানতো।
ছেলেটার হঠাৎ যে কি হলো! ফাহমিদাকে দেখে মনে হয়েছে, এই মেয়েই একমাত্র আমার প্রণয়কে ঠিক পথে আনতে পারে। তুই নিশ্চিন্তে থাক। ‘ – কুহু
অর্ক ডাইনিং টেবিল থেকে একটা আপেল হাতে উঠিয়ে তাতে কামর দিয়ে বললো,
‘ সম্প্রতি একটা বড়সড় খু/নে/র ঝামেলায় পড়ে গিয়েছি আম্মু। নিউজটা হয়তো শুনেছো। এই কারণে কয়েকদিন আমি বাসায় থাকবো না। আচ্ছা প্রণয়কে আমার বিভাগে ঢুকালে কেমন হয়। ও ভীষণ ধূর্ত। আশা করা যায় ও এই সাইটে অনেক ইমপ্রোভ করবে। ‘ – অর্ক
‘ এমনিতেই ছেলেটা কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে। তাতে পড়াশোনা আর বিজনেস দেখাশোনা তো আছেই। এই বয়সে আর চাপ দিস না ওরে। ‘ -কুহু
অর্ক মাথা নাড়িয়ে বললো,
‘ তাও বলে দেখিও। ‘ -অর্ক
ঠিক তখনি পেছনে কারো পরে যাওয়ার আওয়াজ হতেই অর্ক ও কুহু দুজন ফিরে তাকালো।…
চলবে?
#প্রণয়াসিক্ত_চিরকুট
#পর্বঃ০৩
#Rifat_Amin
বিয়ে হয়ে গেছে আজ দুদিন হলো। আর এক্ষুনি আমার ভার্সিটিতে যেতে মন উতলা হয়ে উঠছে। এই প্রণয়ের অন্ধকারময় রুমে একদম মন টিকছে না। কেমন যেনো শূন্যতা বিরাজ করে পুরো বাড়ি জুরে। কখন যে ভার্সিটি যাবো! আর বান্ধবীদের সাথে নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস জুরে দৌড়ে বেড়াবো! সেই আশায় প্রহর গুনছি। এই দুদিনে প্রণয়ের সাথে আমার তেমন কথা হয়নি। অবশ্য উনি নিজেও কথা বলেনি, আমিও আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাইনি। কিন্তু আজ ভার্সিটি যেতে হবে। উনিও যাবে কি না একটু জেনে নেই। প্রণয় এখনো বেলকণিতে ঘুমিয়ে আছে। সেদিন কোনো কম্বল না ঘুমালেও গতকাল ছোটখাটো বিছানা বানিয়ে দিয়েছি শয়-তানটার জন্য। আর এখন আরামছে ঘুমাচ্ছে। আমি উনার সামনে গিয়ে স্বষ্টস্বরে বললাম,
‘প্রণয়বাবু! আপনি কি ভার্সিটি যাবেন? যেতে চাইলে দয়া করে উঠে পড়ুন। আর না যেতে চাইলেও ঘুম থেকে উঠে আমাকে দিয়ে আসুন’ -আমি
প্রণয়ের কাঁচা ঘুম ভাঙ্গায় বেশ বিরক্ত হলেন। ড্যাবড্যাব করে চেয়ে বললেন,
‘কয়টা বাজে? ‘ -প্রণয়
‘ পঞ্চাশ মিনিট কম দশটা বাজে। তারাতাড়ি উঠে পড়ুন ‘ -আমি
প্রণয় ধড়ফড়িয়ে উঠে বললো,
‘ কিহহহ! দশটা বাজে! ওহহ শিট। ‘ -প্রণয়
আমি উনার ধ্যান ভাঙ্গাতে রুমের ভীতর থেকে একগ্লাস পানি এনে তার ছিঁটা উনার মুখের উপর দিতেই উনি বিরক্তের চরম মাত্রায় গিয়ে বললেন,
‘ এই মেয়ে, থা-প্প-ড় খেতে না চাইলে জলদি এখান থেকে চলে যাও। এমনিতেই একটা ক্লাস মিস করে গেলাম। ‘ -প্রণয়
আমি উনার কথায় মোটেও ভয় না পেয়ে ধপ করে সেই ছোট বিছানায় বসলাম। উদ্দেশ্য, উনার ফোন থেকে এক্সাক্টলি কয়টা বাজে তা দেখে নেয়া। কিন্তু যখনি উনার ফোনের ওয়ালপেপারে সময় দেখবো, সাথে সাথেই ছিটকে দূরে সড়ে গেলাম আমি। সেখানে একটা মাথা ফা-টানো মৃ-ত মানুষের ছবি। উনি বিষয়টা লক্ষ্য করতেই ফোনটা হাতে নিয়ে বললেন,
‘ কারেন্ট শক খেলেন নাকি! আশ্চর্য! ‘ -প্রণয়
‘ আপনার ফোনে লা-লা’শের ছবি দেয়া। ‘ -আমি
আমি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে কথাটা উচ্চারণ করতেই উনার তন্দ্রা কেটে গেলো। সাথে সাথই তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়ে ফোনটা আগের যায়গায় রেখে বললেন,
‘ মাত্র ৯ টা ১৫ বাজে। আর ওটা লা-শের ছবি ছিলো না। দেখুন ভালো করে। হয়তো ভুল দেখেছেন’ -প্রণয়
উনার কথা আমি বিশ্বাস করলাম না। তবুও জোরাজুরিতে ফোনে তাকিয়ে দেখলাম ওখানে একটা কার্টুন হাতে ছু/ড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! আমার ভয় কিছু কাটলো। কিন্তু আমি তো স্পষ্ট দেখলাম! উনি ফোনটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টে ঢুকিয়ে বললেন,
‘সকাল সকাল পাগলামি করতে আসছেন! যাই হোক, ঘুম থেকে উঠানোর জন্য ধন্যবাদ। আমি ফ্রেস হয়ে ভার্সিটি যাচ্ছি। আপনি যেতে চাইলে ড্রাইভার বলেন, পৌঁছে দিবে। ‘-প্রণয়
অতঃপর প্রণয় শাওয়ার নিতে চলে গেলো। অথচ আমি এখনো তব্দা মেরে দাঁড়িয়ে আছি। নিজের চোখ যে ভুল দেখেছে, এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো!
—
‘প্রণয়, ড্রাইভার এখন তোমার চাচিকে নিয়ে একটু বাইরে গেছে। তুমি ফাহমিদাকে বাইকে নিয়ে যাও। আর এর পর থেকে তুমি-ই ওকে ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করাবে! ‘ -প্রান্তর
সকাল সকাল প্রণয়ের বাবা প্রান্তর চৌধুরী পত্রিকা পড়ার জন্য ড্রইংরুমে বসেছিলেন। আজ একটু শরীর খারাপ থাকার কারণে তিনি অফিসে যাননি। অবশ্য তিনি না গেলেও সমস্যা নাই। কেননা অর্কের বাবা অসীম চৌধুরী বয়সে প্রান্তরের থেকে ছোট। এখন প্রান্তর চৌধুরীর বয়স হওয়ার কারণে অসীম চৌধুরীই বেশীরভাগ বিজনেস দেখাশোনা করেন। কিন্তু আমার একটা বিষয়ে খটকা লাগলো। সেটা হলো প্রান্তর চৌধুরী যদি অসীমের থেকে বড়ই হয়ে থাকেন। তাহলে প্রণয় অর্কের ছোটভাই কেনো? প্রান্তর চৌধুরী কি প্রণয়ের মতো আগে বিয়ে করেছিলেন! এদিকে ফরমাল ড্রেসআপ নিয়ে প্রণয় বের হয়েই বাবার এমন কথার জবাবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি বাবার অনুগত। সব কথা মেনে চলার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমাকে নিয়ে ভার্সিটি যাবেন, এটা যেনো মেনে নিতে পারলেন না। উনি আচ্ছা বলে আমাকে উনার সাথে বেড়িয়ে যেতে বললেন। সময় এখন সকাল দশটার কাছাকাছি। তপ্ত রোদে ঢাকাশহর কাহিল প্রায়। একটু পর দুপুর পরলে এই রাস্তায় কেউ ছাতা ছাড়া হাঁটতে পারবে বলে মনে হয় না। উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটা নেভি ব্লু শার্ট পড়েছেন। সাথে ব্লাক ফরমাল প্যান্ট। হাতে একটা গোল্ডেন ব্রেসলেটও আছে দেখছি! উনি বাসার বাইরে এসে বাইক স্টার্ট করে বললেন,
‘শুনুন, আমি কোনো মেয়েকে বাইকে উঠাই না। একটা রিক্সা ডেকে দিচ্ছি। ওখানে উঠে চলে যাবেন৷ এই কথা যেনো ভুলেও বাবা জানতে না পারে ‘ -প্রণয়
আমিও এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। উনার সাথে ভার্সিটি যাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই আমার। তার উপর মাথার উপর যেনো আগুন পড়ছে। আবার, যদিও উনার বাইকে উঠে ভার্সিটি যাই তাহলে কথা, নাদিয়া, মেহজেবিন প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করবে। আমিও স্পষ্টস্বরে বললাম,
‘আপনার বাইকে উঠার জন্য মনে হয় আমি ম-রে যাচ্ছি! বিদেয় হন প্লিজ ‘ -আমি
‘ এইযে মিস. রাগিণী৷ এত তেজ কেনো হ্যাঁ? মামা একটু দাঁড়ান তো। এই শাঁকচুন্নি মেয়েটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের সামনে নামিয়ে দিবেন। ‘- প্রণয়
আমাকে রাগিনী বলে সম্মোধন করায় বেশ রেগে গিয়ে কিছু একটা বলবো৷ তার আগেই প্রান্তর চৌধুরী বাড়ির মুল ফটকের বাইরে এসে দাঁড়ালেন। প্রণয় একটু চমকে উঠতেই উনি বললেন,
‘ ফাহমিদাকে বাইকে উঠাও। এরকম ভুল যেনো আর না হয়। ‘ -প্রান্তর
প্রণয় মাথা নাঁড়িয়ে ভালো ছেলের মতো আমাকে বাইকে উঠতে বললেন। আমিও অনিচ্ছা স্বত্বেও উনার বাইকে উঠে পড়লাম। চারদিকে তখন উত্তপ্ত রোদ। পুরো রাস্তায় তেমন কোনো কথা না হলেও ভার্সিটি পৌঁছানোর আগে আমি বললাম,
‘শুনুন। সবাই যে বললো, আপনার ভাই অর্ক চৌধুরী বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছে, কিন্তু উনি তো একটা কেস সমাধান করতে এখন রংপুরে আছেন। ‘ -আমি
আমার কথায় উনার কোনো ভাবাবেগ হলো না। উনি আপনমনে ড্রাইভ করে আমাকে ক্যাম্পাসে নামিয়ে দিলেন। সাথে সাথেই কথা আর মেহজেবিন আমায় মৌমাছির মতো ঘিরে ধরে বললো,
‘ কি ব্যাপার সোনা! একটা জামাই পালাতেই আরেকটা জামাইকে হাত করে ফেলছো দেখছি! ‘- কথা
মাত্র আমায় ক্যাম্পাসে নামিয়ে দেয়ায় প্রণয় সেখান থেকে বিন্দুমাত্র সরেনি। এদিকে কথু ওর বকবক চালিয়েই যাচ্ছে। আমি ইশারায় ওকে থামতে বললেও ও থামছে না। হঠাৎ সেখানে উনার বন্ধু সৈকত হাসান আসতেই প্রণয় রুদ্ধস্বরে বললো,
‘এই মেয়ের দেখছি সরম-লজ্জা কিছুই নেইরে সৈকত’ -প্রণয়
মেহজেবিন কথা শোনামাত্রই শাষিয়ে বললো,
‘ এই আপনার সাহস তো কম না। একটা ভদ্র মেয়েকে লজ্জাহীন অপবাদ দিচ্ছেন’ -মেহজেবিন
‘ওনারে ছেড়ে দে মেহু। হাজার হোক, উনি আমাদের জিজু। আমরা তো আর উনার মতো এত উচ্ছৃঙ্খল না। বউয়ের ফ্রেন্ডকে কিভাবে ট্রিট করতে হয় তাও তো শেখেনি। আবার আমাদের শিক্ষা দিতে আসছে। হুহ! -কথা
প্রণয়ের বউয়ের কথা শুনে সৈকত হতভম্ব হয়ে গেলো। বিষ্ময় কন্ঠে বললো,
‘দোস্ত তুই বিয়ে করেছিস! ‘-সৈকত
পুরো কথোপকথন জুরে আমি নিরবতা পালন করে থাকলাম। বিয়ে হওয়ার পর যেনো অনেক কিছু পাল্টে গেছে। চাইলেও আমি আর আগের মতো দৌড়ঝাঁপ করতে পারছি না। অথচ বন্দি নই।
—
রংপুরের সাতমাথায় এক মাঝারি সাইজের রেস্টুরেন্টে ঢুকলো অর্ক। অতঃপর একটা খালি টেবিল দেখে বসে দুপুরের খাবার অর্ডার করলো। এই দুপুরবেলা তেমন ভীর নেই রেস্টুরেন্টে। কিন্তু গরম যা পড়েছে! টিকে থাকা দায়৷ অর্ক একদম নিজের বেশভুষা পাল্টে ফেলেছে। সে কেসটাকে যতটা সহজ মনে করেছিলো, ততটাও সোজা মনে হচ্ছে না। বরং প্যাচ লেগে যাচ্ছে বারবার। এর আগে এমন বহু কেস সল্ভ করেছে সে। সেগুলোও ছিলো অত্যন্ত জটিল। কিন্তু এটার মতো নৃশংস নয়। এখানে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরেকটা খু-ন হয়ে যাচ্ছে। অর্ক খাওয়া শুরু করলে হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠে। ফোন চেক করে দেখলো ওর মায়ের নাম্বার থেকে কল এসেছে। সে ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে কুজন আহমেদ বললো,
‘ বাবু, বাসায় কবে আসবি?’-কুজন
‘মাত্র তো কেসটা শুরু হলো আম্মু। কতদিন লাগবে ঠিক বুঝতে পারছি না। আর এখন ঢাকায় ফিরে গেলেও বাসায় উঠতে পারবো বলে মনে হয় না। ‘- অর্ক
কুজন আহমেদ হতাশ হলেন। অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
‘ গতকাল যে শারমিন তোকে দেখে ফেলেছিলো, এখন ও যদি প্রণয়কে বলে দেয় তোর কথা! তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস!’- কুজন
শারমিন হলো চৌধুরী ভিলার একমাত্র বিশ্বস্ত কাজের লোক। কিন্তু বাড়িতে ঘটে যাওয়া যেকোনো ঘটনা অকপটে প্রকাশ করে দেয়া তাঁর স্বভাব। পেটে কথা রাখতে জানে না। যদিও এটা বাড়ির লোকদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে। বাড়ির ঘটনা একটুও বাইরে বের হবে না। অর্ক খাওয়ার মাঝে কথা বললেও এবার বেশ চিন্তায় ডুব দিলো। অতঃপর আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ফোনটা কেটে দিলো সে। খাওয়া শেষ করে একবার কেসটার বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিলো। সেই খু-ন হওয়ার যায়গা থেকে খু-নির চুল ব্যতীত অন্য কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। এটা যে আদৌ খু-নির চুল, তাও পরিষ্কার নয়। যদিও ডিএনএ টেস্ট করতে ল্যাব এ দেয়া হয়েছে। পরে ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশের কি-লা-র লিস্ট চেক করে দেখা যেতে পারে চুলটা আসলেই খু-নির কিনা!
—
ঘড়িতে রাত ১১ টা বেজে ৪৯ মিনিট। পুরো ল্যাব জুরে ভয়ংকর নিস্তব্ধতা। এই নিস্তব্ধতা ডক্টরদের জন্য আদর্শ সময়। নির্ভিঘ্নে কাজ করা যায়। ডক্টর শাহবাজ শরিফ গভীর মনোযোগ দিয়ে সেই কাজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। চারপাশে তখন মৃদু সোডিয়াম রঙ্গিন লাইট জ্বলছে। সেই আলোয় এক ভীষণ গম্ভীর মাধুর্য ছড়িয়ে পড়ছে পুরো ল্যাবজুরে। উনি ডিএনএ রিপোর্টটা সাবমিট করে চেয়ারে ঠেস দিতেই হঠাৎ ল্যাবের সব লাইট অফ হয়ে গেলো। কিন্তু তখনও কম্পিউটার স্ক্রিন অন। মানে কারেন্ট যায়নি! হঠাৎ পুরো রুম অন্ধকার হওয়ায় তিনি নিজের ফোন খুঁজতে লাগলেন। আশ্চর্যজনক ভাবে ফোনটা পকেটে নেই। অথচ তিনি বেশ মনে করতে পারছেন৷ একটু আগেই রেখেছেন ফোনটা। তিনি বেশ ভয় পেয়ে গেলেন। চারপাশটা কেমন শুনশান হয়ে গেলো। হঠাৎ একটা স্টিলের কিছু মেঝেতে পড়তেই এক ভয়ংকর শব্দ উৎপন্ন হলো। শাহবাজ শরিফ আঁতকে উঠে বললেন,
‘কে ওখানে? ‘-শাহবাজ
কেউ কোনো সাড়া দিলো না। অতঃপর হঠাৎ পুরো ল্যাবে আলো জ্বলে উঠায় এবার যেনো ধরে প্রাণ ফিরে পেলো ডক্টর শাহবাজ। সেকেন্ড কয়েক পর আস্তে আস্তে এক যুবক ল্যাবে প্রবেশ করলো। যুবকটাকে দেখেই ড. শাহবাজ মুচকি হেসে বললো,
‘ আরে তুমি! এত রাতে এখানে কেনো? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ‘ -শাহবাজ
যুবকটা কোনো প্রতিত্তোর করলো না। নির্দিধায় একটা চেয়ার টেনে বসলো। অতঃপর পকেট থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে তাতে টান দিয়ে বললো,
‘কি করছেন ড.? -যুবক
ড. শাহবাজ বেশ অবাক হলেন যুবকটার সিগারেট ধরাতে দেখে। তবুও বিস্ময় চেপে রেখে বললেন,
‘ আর বলিও না। এখন মাঝরাতে সিরিয়াল কি-লা-রের ডিএনএ টেস্ট করাতে হচ্ছে। তুমি বাসা যাওনি? ‘ -শাহবাজ
‘ না। আজ জরুরী কাজ আছে। তা ডিনএনএ টেস্ট কি হলো? ওখানে তো আমার নামও আছে বোধহয়। যদিও আমি সিরিয়াল কি-লা-র না। হা হা হা। একটু চেক করুন ‘ -যুবক
যুবকটা মজা করছে ভেবে ড. শাহবাজ নিজেও বেশ হাসলেন। অতঃপর ফাইনাল রিপোর্ট হাতে আসতেই তাঁর হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। মুখটা আপনাআপনি চুপসে গেলো। বিষ্ময়ভরা কন্ঠে বললো,
‘ আরে, রিপোর্টে তো তোমার নাম দেয়া! এটা কিভাবে সম্ভব! দাঁড়াও। হয়তো কোনো মিস্টেক হয়েছে ‘ – শাহবাজ
ঠিক তখনি ঘড়িতে ১২ টার ঘন্টা পড়লো। যুবকটা দাঁড়িয়ে হাত তালি দিতে দিতে বললো,
‘ হ্যাপি বার্থডে টু ইউ স্যার। হ্যাপি বার্থডে ডক্টর শাহবাজ শরিফ। আপনি কি জানেন, আজ আপনার বার্থডে? ‘ -যুবক
ড. শাহবাজ অবাক হয়ে বললো,
‘ আরে আসলেই তো। আমার তো মনেই ছিলো না! তুমি তাও মনে রাখছো! ‘ -শাহবাজ
‘ হ্যাঁ। মনে তো রাখতেই হবে। যাই হোক, জন্মদিন উপলক্ষে দুটো সত্য জানতে এলাম। আশা করি সঠিক জবাব পাবো। প্রথম কথা, আমার বোনকে কারা মে-রে-ছে? দ্বিতীয় কথা, আপনার কাছে সব রিপোর্ট থাকা স্বত্তেও কেনো সেটা প্রকাশ করেননি?। যদিও সব উত্তর আমার জানা, তবুও জানতে চাই আসলেই কি টাকার জন্য এত কিছু করেছেন? ‘ -যুবক
ড. শাহবাজের কাপাল দিয়ে ঘাম ছুটলো। তিনি কোনো জবাব দিতে পারলেন না। অনেক্ষণ কেটে গেলেও তিনি নিশ্চুপ থাকলেন। শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাম নির্গত হচ্ছে। প্রচন্ড ভয়ে মস্তিষ্ক কোনো কাজ করছে না। যুবকটা আবার বললো,
‘ প্রচন্ড দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আপনার এখন মৃ’ত্যু হবে। সেটা জন্মলগ্নেই। আর ম/রা/র আগে একটা সত্য জেনে রাখুন। এই সব খু-ন আমিই করেছি। আর ডিএনএ রিপোর্ট টাও সত্য। ‘ -যুবক
ড.শাহবাজ মহুর্তেই হার্ট অ্যাটাক করলেন। বুকে গাত দিয়ে ধরফরিয়ে চেয়ার থেকে পড়ে গেলেন। তবুও যুবকটা ছেড়ে দেয়ার পাত্র নয়। ঐ অবস্থাতেই মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে মাথা ফা-টিয়ে দিলো সে। মুখ থেত-লে দিলো। হাত পায়ে প্রচন্ডরকম আ-ঘাত করে নৃশংসভাবে হ-ত্যা করলো ড.শাহবাজ শরিফকে..
চলবে?