প্রণয়প্রেমিকের নেশাক্ত প্রণয়োণী পর্ব -০৩

#প্রণয়প্রেমিকের_নেশাক্ত_প্রণয়োণী
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৪

আরভীক সাহেব চোখের চশমা খুলে জমাটবদ্ধ হওয়া জলগুলো মুছে নেয়। কিঞ্চিৎ সময় ধরে মেডিক্যালে বসে ছিল সে। ফাহাদ সাহেবের সঙ্গে এসেছে। ফাহাদ নিসঙ্গের ন্যায় কাঠিন্য রুপে দাঁড়িয়ে আছে। আরভীক তার বন্ধুর মনের হাল বুঝতে পেরে তার কাঁধে হাত রেখে বলে,

‘ডুড মন খারাপ করিস না। দোয়া কর ভাবীর জন্য।’

ফাহাদ মলিন মুখে শুকনো হাসি দেয়। তার চেহারায় বিরসতা বিরাজমান। স্বেচ্ছায় বলে,

‘তিনটা বসন্ত পেরিয়ে গেল সাইবারাণীকে ছাড়া। আল্লাহ্ এ অবিচার না করলেও পারতেন তাই নয় কি!’

দীর্ঘশ্বাস ফেলে আরভীক ফাহাদকে জড়িয়ে ধরে। তার চোখ থেকে জল পড়ছে। দুজন বার্ধক্যে কৌঠায় উপনীত! আট বসন্ত পেরিয়ে যাওয়ার পর আরভীকের বয়স পঁয়তাল্লিশে ঠেকল। তার অর্ধাঙ্গিনীর তো সবেই চল্লিশ হয়েছে। কিন্তু মন খারাপের এক স্তর হলো আমাদের সাইবা! যার বয়স কম হলেও ভয়াবহ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয় সে। ফাহাদ দিশাহারা হয়ে কানাডার মধ্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তবে ফলাফল শূন্য! সাইবাও বুঝেছিল আল্লাহ্ তাকে নিয়ে যেতে চায়। বিধেয় তার আয়ু যতদিন ছিল ততদিন বাচ্চা ও স্বামীর সঙ্গে কাটিয়ে দেওয়ার পণ করে। নিজের মায়ের ন্যায় সাইবা মাকে মরণ দুয়ারে দেখে চার সন্তানের অন্তর পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। শ্রাবণী,জিসান,কেয়া ও মিহান একে অপরের হাত ছুঁয়ে বিদেয় নেয়। কেননা তাদের পিতৃধন আলাদা। দত্তক নিয়ে ছিল তাদের ফাহাদ ও সাইবা। যা সাইবার মৃত্যুর পর দায়িত্বের ভার গ্রাহ্য করে ফাহাদ। আরভীক সবটা জেনে ছিল ফাহাদের বিয়ের দ্বিতীয় দিন পর। ফাহাদ কুটিল কণ্ঠে বলে ছিল।

‘সাইবার শরীরে কঠিন রোগ বাসা বেঁধে আছে। গোপনে আমি চিকিৎসা করছি তার। কথার ছলে তাকে ঝিমিয়ে রাখি। তবে জানি না কতদিন সত্য লুকিয়ে থাকবে। সে জেনেই যাবে তখন যখন সে মা হতে পারবে না। সে জম্মগত অ…।’

বেদনাময় শব্দটি ফাহাদ মুখ থেকে বের করতে পারেনি। আরভীক সন্তপর্ণে বুঝে যায়। সেই সাইবাকে মা হওয়ার অনুভূতি দেওয়ার তাগিদ দেয় ফাহাদকে। তার পরিচিত হাকিমপাড়া মসলিসে চারজন ছেলেমেয়ে থাকে। তারা অনাথ! একে অপরের রোজগার খুব কষ্টে জোগান দেয়। বন্ধু কাছ থেকে সহায়তা কেঁদে দিয়ে ছিল ফাহাদ। আরভীক সেদিন সহায়তা স্বরুপ সন্তানের দেখা না দিলে হয়ত তার স্ত্রী সাইবা আফসোস ও কষ্টের সাগরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো। আজ ফাহাদ স্ত্রীর কবর যিয়ারতে এসে ছিল। আরভীক পড়ন্ত বিকেলে ফোনের মধ্যে ফাহাদকে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছিল। কেননা সে জানতো আজ তার সাইবা বোনের মৃত্যুবার্ষিকী। এ দিন ফাহাদ নিজের সত্তায় থাকে না, অন্যরকম হিংস্র,আবেগী রুপে উপনীত হয়। কখনো কখনো রুমবদ্ধ করে চিৎকার করে সাইবার নাম ধরে ডাকতো। ফোন অফ বলায় আরভীক সময় বিলম্ব না করে কবরস্থানের দিকে রওনা দেয়।
সেখানে গিয়ে শুদ্ধ কল্পনা মিলল। ফাহাদ একধ্যানে সাইবা নামের কবরের দিকে চেয়ে আছে। সন্তানেরা তাদের পর্যায়ে স্যাটেলেড। ফাহাদের দায়িত্বভার নেই। আছে শুধু অপেক্ষা তার সাইবার পাশে শায়িত হওয়ার।
আরভীক ফাহাদকে ধরে গাড়ির কাছে এগিয়ে যায়।

_____
মিসেস আনজুমা আকস্মিক স্বামীকে বের হতে দেখে থমকায়। তবে চুপ করে রইল কারণ তিনি জানে স্বামী তার বন্ধুর কাছে যাবে! আজীব নাশতার টেবিলে বইয়ে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। আয়েশা তার ভাইয়ের দিকে বিরক্তির দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। তার মতে,বিদ্যাসাগর হলো তার আজীব ভাই! বইয়ের আনাকানাচে কি আছে আগাগোড়া তার ভাইয়ের মস্তিষ্ক হজম করে ফেলেছে। আয়েশা রূক্ষ কণ্ঠে বলে,

‘ভাই খাওয়ার টেবিলে কেন পড়ছো হুম!’

‘তুই খেয়ে রেডি হো। কলেজে যেতে হবে না!’

আয়েশা মুখ ভেটকিয়ে চলে যায়। আনজুমা আজীবের মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরীয় গলায় বলে,

‘বাবা একটু মস্তিষ্ককে রেস্ট দে। এত পড়াও ভালো না।’

‘মা আমি শুধু চোখ বুলাচ্ছে পড়ছি না। পড়া ও চোখ বুলানোর মাঝে বিস্তৃত তফাৎ আছে। তুমি কি জানো চোখ দিয়ে আম….।’

‘বাপ অফ যাহ্। তোর ভাষণ শুনতে গেলে আমার আর তোর ও তোর ভাইয়ের বউ-নাতী/নাতনী দেখা লাগবে না।’

মায়ের কথায় হ্যাবলার মত তাকায় আজীব। সদ্য অনার্স শেষ করেছে। প্রশিক্ষণ সেন্টারে ভর্তি হবে আজ। তার জম্মগত ইচ্ছে সাইক্রাইটিস্ট হওয়া। বিধেয় তার ইচ্ছেকে মত দিয়ে আরভীক সাহেব পড়ার ব্যবস্থা ও সেন্টার ভর্তির ফরম ফিলআপ করে দেয়। আয়েশা দুই চুলে বেনি করে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ‘আজীব ভাই’ বলে ডেকে উঠে। আজীব মুখে স্যান্ডউইচের শেষ অংশ পুরে পানিটুকু ঢোক করে গিলে ফেলে। গাড়ির কাছে এসে দেখে তার বোন জুতোর ফিতাও শুদ্ধভাবে বাঁধেনি। কোমরে হাত রেখে কাঠিন্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সে। আয়েশা আমতা ভাব করে বলে,’পারিনা বাঁধতে।’
আজীব হতাশার শ্বাস ছেড়ে বলে,’সতেরো বছর হলি অথচ ফিতা বাঁধতে পারিস না। বলি তুই কেমনে সংসার করবি। যেখানে মোবাইলে তো টুনাটুনির সংসার চালাস।’
আয়েশা রাগমিশ্রিত কণ্ঠে ‘ভাইয়া’ বলে ধমকে উঠে। মেকি ক্রোধে বলে,

‘কবির অনেক ভালো ছেলে! হ্যা একটু রাগী তবে স্বামী রাগী না হলে রোমান্সে মজা আছে না।’

তব্দা খেয়ে যা আজীব। ঠোঁট ঈষৎ ফাঁক হয়ে গেল তার। যার ফলে আয়েশা চট করে আজীবের মুখে ললিপপ গুজে দেয়। থম মেরে সরু দৃষ্টিতে একপলক চেয়ে গাড়িতে উঠে দুজনে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)আয়েশা মুচকি হেসে বসে পড়ে। কবির আজীবের কলিগ। তবে তার জ্ঞানইন্দ্রিয় সক্ষম গণিত,বিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়কসমূহে। ফলে কবিরকে সেই বাসায় আয়েশার প্রাইভেট টিচার হিসেবে নিযুক্ত করে। আয়েশা গোপনে অনুরক্তি প্রকাশ করলেও কবিরের সামনে সে সিধাসাদা বিড়ালের মত ‘মেউ মেউ’ করার মত আলে পরিণত হয়। কবিরের রাগ তার কাছে কিউট লাগলেও পরিবারের সামনে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়না।

______

পাঁচদিন পর…..

আহিফা ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বিছানার এককোণায় বসে আছে। তাকে রাস্তা থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইংরেজি কোর্স ক্লাস শেষ করে টিউশনিতে গিয়ে ছিল। সেখানকার উম্যান অফ সিলিজা হলো ইংল্যাণ্ডের নামকরা মডেল। তার দুসন্তান ক্লেভ ও চ্যাম হলো জমজ ভাই ক্লাস সেভেনে পড়ে। তাদের ম্যাথ সাবজেক্টে খুটিনাটি বোঝ না থাকায় আহিফাকে টিচার নিয়োগ করেছে সিলিজা। কেননা একদিন আহিফা তাকে সহায়তা করে ছিল মুখ থুবড়ে পড়া থেকে। ব্যস তিনি কথার ছলে ইমপ্রেস হলো আহিফার উপর। ফলে তাকে সন্তানদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত করে। টিউশনি শেষে রাস্তায় নেমে যায়। কমচেয়ে কম দুঘণ্টা লাগবে তার বাসা অব্দি যেতে। অতএব ধীরস্থির পায়ে কদম ফেলে হাঁটা ধরে। তবে সেই কদম থমকে যায় নীল গাড়ির আগমনে। বুঁ বুঁ করে নীল গাড়ির হেডলাইটস আহিফার উপর ছুঁড়ে দিয়েছে গাড়ি চালক! আহিফা ইতস্ততবোধে কেঁপে উঠে। কাঁধের ব্যাগ চেপে ধরে রাস্তার ফুটপাতে উঠে যায়। নীল গাড়ির পাশ কেটে চলে যেতে নিলে সেই গাড়ি ধীরে পিছু আসছে। আহিফা বিনাশব্দে দৌড় লাগায়। পরণে জিন্স থাকায় তার হাঁটতে অসুবিধা হয়নি। তার পিছু হয়ে কেউ আসছে এতে তার সন্দেহ নেই। কেননা পিছু নেওয়া ব্যক্তির চলনের শব্দ জোরালো ভাবে কর্ণপাত হচ্ছে আহিফার কর্ণে। তবুও সে পিছু মোড়ল না। কদম পেড়িয়ে দৌড়ে গেল। আকস্মিক কারো সঙ্গে ধাক্কা লেগে সে মেঝেতে পড়ে যায়। ইতিমধ্যে পিছু নেওয়া ব্যক্তির চলনের শব্দ থেমে গিয়েছে। আহিফা ফোঁস করে শ্বাস ফেলে সামনে তাকিয়ে অবাক সহিতে ঘাবড়ে যায়। তার সামনে সাদা চামড়ার ভুড়িওয়ালা এক পুরুষ ওয়াইনের বোতল নিয়ে বিশ্রী নজরে পরখ করছে আহিফার আপাদমস্তক। ঢোক গিলে পরণের ড্রেস সটান করে ভুড়িওয়ালা ব্যক্তির পাশ কাটতে গেলে পুরুষটি তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ইংরেজি ভাষায় বিশ্রী কথা আওড়াতে লাগে। আহিফার শরীর শিউরে উঠল। সে মদখোড়কে ছাড়িয়ে কপাট রেগে চড় বসায়। পুরুষটি ক্ষেপে ওয়াইন আহিফার ড্রেসে ঢেলে দেয়। অন্যথায় তার হাত ধরে ভ্যান গাড়ির দিকে টানতে লাগল। কিন্তু বেশিদূর অব্দি যেতে পারেনি। কারণ এক শক্তপোক্ত পুরুষেলী হাত ভুড়িওয়ালা পুরুষের হাতটি চেপে ধরে। যে হাত দিয়ে সে আহিফাকে আঁকড়ে ধরেছিল সে হাতে চাপের যন্ত্রণায় হওয়ায় ভুড়িওয়ালা বিরস দৃষ্টিতে তাকায়। আহিফাও আতঙ্কগ্রস্থ দৃষ্টিতে চাই। এক নিমিত্তে তার দৃষ্টিতে ভেসে উঠল একরাশ আশ্চর্যতা। ভুড়িওয়ালার হাতে নিজের প্রণয়োণীর হাত দেখে ‘ছুহ্ ছুহ্’ শব্দ বের করে ব্যক্তিটি তার প্রণয়োণীর হাত চট করে ছাড়িয়ে নেয়। হাতটি ছেড়ে আহিফাকে নিজের পিঠের মধ্যে পাজকোলা করে উঠিয়ে নেয়। আহিফা ঘটনার প্রেক্ষিতে হা হয়ে যায়। ব্যক্তিটি অন্য কেউ নয় স্বয়ং আশফি দাঁড়িয়ে। আড়চোখে প্রণয়োণীর হাল দেখে বাঁকা হেসে বলে,

‘প্রিটিগার্ল প্লিজ হাগ মি টাইটলি! লাইক এ ব্যাকসাইড কাপল হাগ বেইব।’

আহিফা মুখ ফুলিয়ে নরম,নিরব শরীরের ভার করে আশফির পিঠে ছড়ে রইল। বুঝল কথায় ঘি উঠে না। তথাপি একঝাকুনি দিয়ে উঠে সে। আহিফা ভয়ের চটে ‘আহ্ পড়ে গেলাম’ চিৎকার করে বলে সপাটে জড়িয়ে ধরে। আশফি প্রশান্তি অনুভব করে তৎক্ষণাৎ হিংস্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ভুড়িওয়ালা পুরুষের উপর। সে মদের নেশায় ফাইট করার জন্য হাত নাড়িয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। আশফি মেকি হেসে দুঃখী গলায় শুধায়।

‘তোর মত পেটুকের জন্যে আমার এক হাতের থাপ্পড়ই যথেষ্ঠ।’

ডান হাতে থুথু দিয়ে বিক্ষোভিত রুপে চড় বসায় ভুড়িওয়ালার গালে। বেশ সে ঢুলুঢুলু পায়ে মাথা ঘুরিয়ে হঠাৎ মেঝেতে ঢলে পড়ে। আহিফা দেখে ভীতি কণ্ঠে আওড়ায়।

‘আমাকেও কি আপনি চড় দিবেন!’

‘নোপ বেইব তোমার সুশ্রী গালে চড় মেরে লাল করার চেয়ে চুমু খেয়ে গাল লাল করার মজাই আলাদা।’

মুখ ভেটকিয়ে আহিফা তার পেটে গুতা দেয়। আশফি চওড়া কণ্ঠে বলে,
‘তুমি দেখছি সেই ছোটবেলার মত আমার কোমর,পেট,পেটের নি…। না মানে ফুল বডির মধ্যে শুধু কোমরের আশপাশে খুব ইন্টারেস্ট রাখো। বলি ইন্টারেস্টই রাখবে নাকি আমাকেও তোমার প্রতি ইন্টারেস্টিং জাগাতে দেবে।’

‘সেটআপ হাল’কাট কোনখান! লাজলজ্জা,শরম,হায়া সব কোথায় গিয়ে ঠেকছে আপানর হুম!’

‘সেসব তো কবেই আচার বানিয়ে তোমার মত পুচকিকে খাওয়ে দিয়েছি।’

বিনিময়ে আহিফা চোখ ঘুরিয়ে ভাব নেয়। অথচ তার শরীরের পুরু ভার আশফিরপিঠে ঠেকে আছে। ব্যক্তিটি খোশমনে আদুরীয় গলায় আবদার করে।

‘প্রিটিআহু একবার আমার নাম ডাকবে তোমার গোলাপী ঠোঁটযুগল দিয়ে।’

একবাক্যের দ্বারা আহিফার শরীরে শিহরণ বয়ে গেল। ঠোঁটজোড়া ঈষঁৎ কেঁপে উঠল। মন চাইছে আশফির বলা কথায় নাম উচ্চারণ করতে তবে অতীত ভেবে নিশ্চুপ রইল। আহিফার মৌনতা দেখে যা বুঝার বুঝে নিল সে। আনমনে বলে,

‘প্রিটিআহু তুমি নাই বা ডাকলে আমার নাম,তবুও আমি পিছু ছাড়ব না তোমার। এই আশফি ফাওয়াজের হৃদয়ের সুতো তোমার হৃদয়ে ফুটিয়ে রেখেছি।’

সে হেঁটে গাড়ি অব্দি এসে আহিফাকে পেছন থেকে টান দিয়ে মুখোমুখি কোলে উঠিয়ে নিয়ে গাড়িতে বসে। কোমর চেপে রেখে ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে বলে। আহিফা মুখ ফুলিয়ে ছুটাছুটি করার বৃথা চেষ্টা চালায়। যার ফলে কাতুকুতু ফিলিং হওয়ায় সে আহিফার ঠোঁট আকঁড়ে ধরে। বিষম খায় সে। হাত দিয়ে আশফিকে ঠেলে ঠোঁট থেকে সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু না পারায় শান্ত হয়ে গেল। অন্যত্রে আশফি স্বেচ্ছায় ঠোঁট ছেড়ে জিভ দিয়ে ঠোঁটজোড়া মুছে লাজুক কণ্ঠে বলে,

‘কাতুকুতু দিয়ে চুমু খাওয়ার নিঞ্জা টেকনিক শিখছো হাহ্! হটিনটি গার্ল।’

কথাগুলো শুনে লজ্জায় মাথা কেটে যাওয়ার উপক্রম হলো আহিফার। বজ্জাত,হাল’কাট ইচ্ছাকৃত ঠোঁট চেপেছে এখন কিনা মত পাল্টে তর্ক করার ফন্দি আটঁকাল। না শিক্ষা দেবে সেও! পা দিয়ে আশফির পায়ে জোরালো চাপ দেয়। বেচারা আশফি ‘আহ’ করে আহিফাকে জোরে চেপে ধরে বুকের মাঝে। বেচারী ভেবেছিল রেহাই পাবে, হিতে বিপরীত কান্ড হলো চাপ দেওয়ায় আশফি তাকে চেপে ধরে রাখল। প্রশস্ত,উষ্ণতা মাধুর বুক পেয়ে ক্লান্ত হৃদয়ের সঙ্গে প্রশান্তির ন্যায় ঘুমিয়ে পড়ে আহিফা। মৃদু হেসে আশফি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।

রাত দশটা..

মুখোমুখি মাফিয়া স্টাইলে হাতের মধ্যে ব্রান্ডেড ওয়াচ,চুলগুলো একপাশে স্পাইক করা,মুখের মধ্যে বুকভরা বাঁকা হাসি,চোখের মধ্যে তিক্ষ্ণতা,পরণে শার্ট যার দু’বোতাম উম্মুক্ত হওয়ায় দেখতে নজরকাড়ক এক অভিনব পুরুষ লাগছে। ঢোক গিলে উত্তেজিত মনকে নিয়ন্ত্রণ করে নেয় আহিফা। আশফি হামি দিয়ে বিছানার নিকটস্থ হতে নেই। যা দেখে চোখ বড় বড় করে তৎক্ষণাৎ লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়ল।
আশফি ভ্রু কুঁচকে বলে,

‘বান্দরের মত পালাও কই সুন্দরী! এই বুক খোলা রেখেছি তোমার হাতে সম্মানহানি হওয়ার লোভে।’

‘মগজ কি রাস্তায় ফেলে আসছেন!’

‘এটা কিন্তু হেনস্তামূলক বাক্য।’

‘কি!’

‘এটা প্রশ্নাত্মক বাক্য।’

‘দেখেন ছ্যাঁচড়ামি ছেড়ে বের হোন রুম থেকে।’

‘ডালিং এটা কিন্তু বিতাড়িতমূলক বাক্য।’

‘তো মূলকখোড় রুমের মধ্যে থেকে আমার সঙ্গে ফস্টিনস্টি করতে বলব।’

‘এটা কিন্তু নটিটাইপ বাক্য।’

আহিফা ক্ষেপে ঠেলেঠুলে আশফিকে বের করে দেয়। বাসার থেকে তো বের করা অসম্ভব ফলে রুম থেকেই বের করে দিল। আশফি দরজার দিকে চেয়ে মুখ ফুলায় পরক্ষণে শয়তানি হেসে সুরেলা গলায় গান ধরে।

‘দরজা খুইলা যারে দেখুম তারে করুম বিয়া,
আমার বউ সাজাইয়া লইয়া যাইবো।
টোপর মাথায় দিয়া আহা…রে আহা…রে।
হো…ওও কয় যদি গরিব আমি কিছুই আমার নেই,
কমু আমি আইছো যখন তোমায় আমি চাইই…
আরে না পাইলে বাইন্দা রাখুম ওড়নাখানা দিয়া।😁
আহিফা দাঁতে দাঁত চেপে চিৎকার করে বলে,’সেটআপ’।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here