প্রণয়ের রং,পর্ব:৩

প্রণয়ের রং
পর্ব – ০৩

” সপ্ত রঙের ছোঁয়ায় রাঙা
মায়া জড়ানো মায়াবিনী
মনকে রাঙিয়ে দেয় প্রণয়ের রঙে ”

নিমিতা সামনে তাকাতেই দেখলো শুভ্র দাড়িয়ে। তার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। তার চোখে কিছু একটা আছে যার কারণে নিমিতা চোখে চোখ রাখতে পারছে না।

___” এমন কেন মনে হচ্ছে? কি ভাবছি এসব আমি ” মনে মনে ভাবতে ভাবতেই শুভ্রকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল।

___” এই যে নিমপাতা ”
বলেই নিমিতার পথ আগলে দাড়ালো শুভ্র। নিমিতা আস্তে করে তাকালো ওর দিকে।

___” এমন দেবী সেজে আসার কারণ? কারো বিয়ে টিয়ে নাকি?”

নিমিতা এটা শুনে অবাক হয়ে গেল। কি এমন সেজেছে ও!
___” একটু আগে যে ওর দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল সে এখন অপমান করছে!! কেমন লোক ইনি.. উটকো কোথাকার। ”
বিড়বিড়িয়ে আপনমনেই বলছে সে।

___” কি হলো বলো? ”
বলে মিটমিট করে হাসছে শুভ্র।

নিমিতা কপাল কুচঁকে শুধু একবার তাকালো ওর দিকে। তারপর এক সেকেন্ডের মধ্যে চলে গেল ওখান থেকে।

কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে নিতু, আবির ও মেধা দাড়িয়ে অপেক্ষা করছিল নিমিতার। নিমিতা ওদের দেখে এগিয়ে এলো এদিকটায়।

___” এই মেয়েটা আমায় বারবার পাগল করে দেয়। আর কতো মনের মধ্যে জমিয়ে রাখবো অনুভূতিগুলি। ”
নিমিতাকে দেখে মনে মনে ভাবছে আবির।

___” বড্ড ভালোবাসি এই মায়াবিনীকে। একদিন তোমায় নিজের করেই নেবো। ”

নিমিতা কাছে আসতেই __
___ ” বান্ধবী!! তোকে আজ দারুণ লাগছে!! দেখবি আজ ভার্সিটির সব ছেলেদের নজর তোর দিকেই থাকবে। ”
মেধা চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো।

___” শুধু কি আমাকেই? তোদের দুজনকে দেখে তো ছেলেরা অজ্ঞান হয়ে যাবে। নিতুকে আজ বেশিই সুন্দর লাগছে.. তাইনা আবির?”

হঠাৎ নিমিতার এই কথায় নিতু একদম অপ্রস্তুত হয়ে গেল। লজ্জায় লাল হয়ে গেছে ওর মুখ। মাথা নিচু করে আবিরকে আড়চোখে দেখছে সে।

নিতু ভালোবাসে আবিরকে। নিজেও জানে না কিভাবে ভালোবেসে ফেলেছে এই বাদঁরটাকে। শুধু নিমিতা জানে ওর মনের কথা। আবিরকে বলার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারেনি এখনো।

হঠাৎ এমন প্রশ্নে আবির খেই হারিয়ে ফেললো। সে তো নিমিতাকে নিয়ে ভাবছিলো। নিতুর দিকে ভালোভাবে দেখেওনি সে। এক পলক দেখলো নিতু কে।

___” ভালো লাগছে।”
বলেই চুপ হয়ে গেল।

___” চল হলরুমে যাই। দেরি হচ্ছে।” বলেই সবাইকে তাড়া দিলো আবির..

নবীণবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। এতো আয়োজন, ডেকোরেশন, মানুষগুলো সবকিছু অবাক চোখে দেখছে নিমিতা। এই পরিবেশটা খুব নতুন ওর কাছে। চারপাশটা দেখতে দেখতে হঠাৎ এক কোণায় চোখ আটকে গেল নিমিতার।

অফ-হোয়াইট পান্জাবীতে দাড়িয়ে আছে শুভ্র। পান্জাবির হাতদুটো কনুই অব্দি ফোল্ড করা। হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কি যেন বলছে কাউকে। অপলকভাবে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে শুভ্রকে।

শুভ্র কথা বলতে বলতে হঠাৎ দেখলো নিমিতা দেখছে তাকে। নিমিতা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো। তার হার্টবিট যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। প্রচন্ড অস্থির লাগছে নিজেকে।

সাহস করে সামনে তাকাতেই দেখলো শুভ্র তারদিকেই আসছে। এবার যেন ওর হার্ট চারগুণ জোরে বিট করছে। শুভ্র একদম কাছে এসে দাড়িয়েছে নিমিতার। নিমিতার এবার ভয় হচ্ছে। ওর হার্টবিটের শব্দ শুনে ফেলবে না তো!

___” লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলে আমায় নিমপাতা..? ”

নিমিতার হাত-পা এবার ঝিম মেরে গেল। তারমানে শুভ্র বুঝতে পেরেছে সে দেখছিলো তাকে!!

___” দূর থেকে কি আর ভালোভাবে খুটিয়ে দেখা যায় বলো। এই নাও একদম কাছে এসেছি তোমার। এখন দেখো মনভরে। তাকাও.. ”
বলেই মুচকি মুচকি হাসছে শুভ্র। মেয়েটাকে এভাবে লজ্জায় ফেলতে বড্ড ভালো লাগে ওর। লজ্জায় লাল হওয়া মুখটা দেখতে ভীষণ মায়া মায়া লাগে যে তার….

চলবে..
নিমিতা আনাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here