প্রণয়ে তুমি পর্ব -০৫

#প্রনয়ে_তুমি
#পর্ব_৫
#writer_nahida_islam

-কথা পাড়া যাবে না এক নাম্বারের বদ মাইয়া।

-নিজে ইমাম সাহেব।

এবার ইফাজ রেগে গিয়ে অতসী হাতে জোরে চিমটি কাটতে ই অতসী চিৎকার দিয়ে উঠে।

অন্তু সামনের সিটে বসা ছিলো অতসীর চিৎকার শুনে পেছনে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

–কী হলো অতসী চিৎকার করছো কেনো?

-আপু আমার সাথে যে একটা রাক্ষস বসিয়েছেন ওর দাড়ালো অস্ত্রের মতো নখগুলা দিয়ে আমাকে চিমটি কেটেছে।

অন্তু ইফাজের দিকে তাকিয়ে বললো,

-এই জন্য ই ড্রাইভ করতে চাসনি।

-আরে না আপু আমাকে ভুল বুঝাবা না।

-আর কথা নয় আবার যদি এমন করিস তো তোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিবো তুই রিক্সা দিয়ে বাকি রাস্তা আসবি।

অন্তু সামনে তাকাতে ই ইফাজ অতসীর দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

-আমার নখ দাড়ালো অস্ত্রের মতো।

-তা নয় তো কী আপনার জন্মের পর মনে হয় আন্টি নখ কাটতে ভুলে গেছিলো।

-হে ভুলে গেছিলো কারণ তোমার মতো শয়তানের দাদি এসে মনে করিয়ে দিবে বলে।

এবার অতসী খুব জোরে বলে উঠলো,

-কী বললেন আমি শয়তানের দাদি অন্তু আপু তুমি শুয়েছো তো

হঠাৎ গাড়ি থেমে গেলো। অন্তু পিছনে তাকিয়ে বললো,

-ইফাজ গাড়ি থেকে নাম তুই…

-এই আপু এইবার আমি কিছু করিনি।

–ইফাজ তুই নেমে বাকি রাস্তা রিক্সা দিয়ে আসবি, ইফাজ আতসীর দিকে রাগি লুক দিয়ে তাকিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। আমি যদি তোমাকে এর বিচার না করি আমার নাম ও ইফাজ না।

অতসী মুখ চেপে হাসতেছে এখন শান্তিতে যাওয়া যাবে।

__________________

শপিং মলের সামনে আসতে ই দেখলাম অনিতা বেগম আর কিবরিয়া চৌধুরী দাড়িয়ে আছেন। আমাকে দেখে ইফাজের মা জড়িয়ে ধরলেন। মাথায় হাতবুলিয়ে দিয়ে বললেন,

-আমার মিষ্টি বৌমার জন্য আমি অনেক অনেক গিফট রেখেছে আপাতত আমার এই আন্টির আমার বৌমার। তা ইফাজ কোথায় অন্তু।

-গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছি বলেছি রিক্সা দিয়ে আসার জন্য।

-কেনো আবার কী করছে। যে রৌদ আমার ছেলেটাকে কেনো এ শাস্তি দিলি।

-ইফাজ এসে পড়বে কিছুক্ষনের মধ্যে। এখন চলো আমরা আস্তে আস্তে শপিং করতে থাকি।

শপিং মলে ডুকতে ই ফার্স্টে অতসীর জন্য শাড়ি দেখতে শুরু করলো, কিছুক্ষনের মধ্যে ই ইফাজ এসে পড়লো, অন্তু শাড়ির আচলটা অতসীর মাথায় দিয়ে দেখছিলো কেমন লাগে, আয়নার সামনে নিয়ে অতসীকে দাড় করায়,

-দেখো এখন কেমন লাগছে তোমাকে।

অতসী আয়নার দিকে তাকাতে ই ইফাজ অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,

-পেত্নীকে শাড়ি পড়লে পেত্নী ই লাগে সে আবার দেখার কী আছে।

-ইফাজ তুই অতসীকে কিছু বললি।

-কখন আমি কাকে কী বলবো। সব জায়গায় তুমি আমার দোষ দেখো আপু, আমি চলে ই যাবো আর থাকবো না তোমাদের সাথে।

-আমাদের সাথে তোকে রাখতে ও চাইনা তোর ড্রেসগুলা কেনা শেষ হলে যেখানে ইচ্ছে চলে যা।

অন্তু শাড়িটা নিয়ে যায়, অতসী ইফাজের দিকে তাকিয়ে বললো,

-পেত্নী কাকে বলেছেন।

-যে পেত্নী তাকে বলেছি।

-হনুমান কথাকার…

-এই বদ মেয়ে হনুমান কাকে বললা।

-যে হনুমান তাকে বলেছি।

ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে অতসী দ্রুত অন্তুর সাথে দাড়িয়ে পড়ে।

শপিং করা শেষ হলে অতসীকে নিয়ে ইফাজদের বাসায় যায়। কিন্তু অতসী বাসার ভেতের ডুকে না।

-ইফাজ অতসীকে নিয়ে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আস।

-বাবা আমার বাইকে তেল নাই।

তুষার দৌড়ে এসে বললো,

-আমার বাইকে তেল আছে আঙ্কেল আমি অতসীকে পৌছে দিয়ে আসছি।

-আচ্ছা যাও বাবা।

কিবরিয়া চৌধুরী চলে যেতে ই ইফাজ তুষারের সামনে দাড়িয়ে বলে,

-এতো শখ কেন রে তোর।

-আপনার সমস্যা কী? তুষার ভাইয়া চলুন আপনি আমাকে নামিয়ে দিয়ে আসুন।

-তুষার যাবে না।

-আপনাকে জিজ্ঞেস করছি আমি।

ইফাজ তুষারের বাইকের চাবি কেড়ে নিয়ে যায়। তুষারকে বাসার ভেতর ডুকিয়ে মেইন গেইট বন্ধ করে এসে নিজের বাইক স্টার্ট দেয়,

-উঠে বসো, আর আমার কিছু শর্ত আছে। আমার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বসবে আর বাইক থেকে পড়ে গেলে ও আমাকে টাচ করবা না।আর বাইকে উঠে কোনো কথা বলবা না।

-আপনার সাথে কথা বলার আমার কোনো ইচ্ছে নাই।

অতসী বাইকে উঠে মাঝখানে দুইটা বেগ রাখে বসে।

-আগে থেকে ই বলে দেই পড়ে গেলে আমার দোষ নাই।

অতসী আর কোনো কথা বললো না।

সুমি সকাল থেকে ইফাজকে অনবরত ফোন দিচ্ছে। কিন্তু একবারের জন্য ও কল রিসিভ করেনি ইফাজ। অতসী বেশ কয়েকবার খেয়াল করেছে ইফাজের ফোনে কল আসতেছে কিন্তু কিছু বলেনি। ইফাজ অতসীকে নামিয়ে দিয়ে এক মুহুর্তে জন্য ও দাড়ায়নি সাথে সাথে চলে গেছে। অতসী বাসায় ডুকে বাবার সাথে কথা বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

ইফাজ বাসায় ডুকে ই তুষারকে ডেকে আনে,

-এখন আমাকল ডাকিস কেন তখন তো দরজা লক করে চলে গিয়েছিলি।

-এসব কথা বাদ দে এই সুমিটা আমাকে ফোন দিয়ে জ্বালানি মারছে এমনি এই অতসী বদ মেয়েটার জন্য বাচি না তার উপর সুমি এক উটকো জামেলা।

-ব্লক করে দিলে ই তো পারিস।

-ব্লক করলে ও অন্য নাম্বার দিয়ে কল দিচ্ছে।

-তাহলে বলে দে তোর বিয়ে, অতসীর সাথে পরিচয় করিয়ে দে।

-আরে না এ কথা ভুলে ও বলা যাবে না তাহলে দেখা যাবে অতসীর পিছনে ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যে গুন্ডি মেয়ে এইটা।

-ওহ্ বাবা বিয়ের আগে ই এতো দরদ।

ইফাজ রাগি লুক দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

পরের দিন সকালে,

আজকে কোনো কাজ নাই, বিয়ের আরো কয়েকদিন বাকি এ কদিন কলেজ মিস দিলে চলবে না তাই অতসী কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলো।

কলেজে যাওয়ার পর ই রুহি এসে জড়িয়ে ধরলো,

-তুই কালকে আসলি না কেনো?

-এমনি কাজ ছিলো।

-কী এমন কাজ যে আমি শুনতে পারবো না।

-আরে তেমন কিছু না। তোর কী খবর বল।

-ওহ ভালো কথা তোকে বড় ক্লাসের আপুরা খুজে গেলো কেনো রে?

-কলেজে তো কাউকে আমি চিনি না তার উপর কোন আপু। এসব ভেবে লাভ নাই কারো প্রয়োজন পড়লে আবার এসে খুজে নিবে নে।

-আচ্ছা অনেকটা টাইম আছে আরো চল ক্যান্টিনের দিকে যাই।

অতসী সম্মতি দিতে ই রুহি অতসীর হাত ধরে ক্যান্টিনের দিকে যেতে ই কতোগুলো মেয়ে পথ আটকি দাড়ায়,

-তুমি অতসী তাই না,

-আপনি কে।

-আমি ইফাজের গার্লফ্রেন্ড?

-আমি তো ইফাজ না তো আমার কাছে আসছেন কেনো?

-তুমি নাকি ইফাজকে থাপ্পড় মেরেছো, আমাকে চিনো তুমি।

-প্রয়োজন পড়লে আপনাকে ও মারতে পারি।

-সাহস তো দেখছি অনেক তোর,

-আপনার সাহস কম থাকলে আমার থেকে ধার নিতে পারেন…

অতসী সামনের দিকে তাকাতে ই দেখে ইফাজ আসছে।
ইফাজ সুমিকে অতসীর সাথে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
অতসী খুব স্বাভাবিক ভাবে বললো,

-নিজে আমার সাথে পারেন না তাই কি গার্লফ্রেন্ড লেলিয়ে দিয়েছেন।

চলবে,

[ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here