#প্রতিশোধ
#মেঘাদ্রিতা_মেঘা
#৪র্থ_পর্ব
সবাই নাচে এত টাই মগ্ন ছিলো যে এক পর্যায়ে নাচতে নাচতে আবির পা পিছলে ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়।
আর আমি একটা চিৎকার দিয়ে বলে উঠি,
আবিইইইইইইর..
আবিরকে দ্রুত হসপিটালে নেয়া হয়।
আবিরের অবস্থা খুবই খারাপ।
আমি সহ সবাই কান্না করছে আবিরের জন্য।
আবির বার বার আমার নাম নিচ্ছে।
ডাক্তারকে আবিরের কথা জিজ্ঞেস করায় আবির বলেছে আল্লাহকে ডাকুন।
আবির যখন বার বার আমার নাম নিচ্ছিলো তখন ডাক্তার বাইরে এসে বলে,মেঘা কে?
পেসেন্ট বার বার মেঘাকে ডাকছে।
ডাক্তারের কথা শুনে আমি আবিরের কাছে যাই।
আবিরের কাছে গিয়ে বসতেই আবির আমাকে বলে,
মেঘা!
আমি অধরাকে খুব বেশি ভালবাসি।
তুমি জানো আমি তোমাকে কেন বিয়ে করতে রাজি হয়েছি?
কারণ তুমি অধরার বান্ধবী।
আর অধরা আমাকে সব সময় বলতো তুমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড না,শুধু।
তুমি ওর আত্মাও।
তাই আমি তোমাকে বিয়ে করতে চেয়েছি।
যাতে আমি অধরাকে একবারে হারিয়ে না ফেলি।
তোমার মাঝে অন্তত অধরাকে যেন দেখতে পাই।
তবে তোমার সাথে এ কয়দিনের সম্পর্কে আমি সত্যি সত্যি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি।
আসলে কি জানো,ভালবাসা কখন কার প্রতি হয়ে যায় বলা যায়না।
তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও হুম।
আমি হয়তো তোমাকে বধূর সাজে দেখতে পারলাম না।
আমি তোমাকে ভালবাসি মেঘা।
তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।
আর শোনো,
আমি না ছাদ থেকে পড়ে যাইনি।
আমাকে না ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে।
এই কথা বলেই আবির চোখ বন্ধ করে ফেলে।
আর আমি ডাক্তার কে চিৎকার করে ডাকতে থাকি।
ডাক্তার এসে আবিরকে দেখে,
কিছু ক্ষণ দেখার পর,
ডাক্তার বলেন,
আবির কোমায় চলে গেছে।
আমি এবার খুব বেশি কাঁদতে থাকি।
আমাকে সবাই শান্তনা দেয়।
অধরা চলে গেলো,এদিকে আবিরের অবস্থাও আশংকাজনক।
যারাই আমার কাছের,তাদেরই কেন আল্লাহ আমার থেকে কেড়ে নিচ্ছেন।
সেদিন সারারাত আমি হসপিটালে থাকি।
পরের দিন সকালে আমাদের বিয়ে হবার কথা।
আর আজ আবিরের এই অবস্থা।
সকাল হতেই আবিরের আম্মু আমাকে বাসায় চলে যেতে বলেন।
আমি যেতে চাই না, তবুও সবাই আমাকে জোর করে বাসায় পাঠান।
আমি বাসায় গিয়ে কাঁদতে থাকি।
আর ভাবতে থাকি আবিরকে নিয়ে।
আমি ভেবেছিলাম আবিরই অধরাকে খু*ন করেছে বা আত্ম*হ*ত্যা করতে বাধ্য করেছে।
তাই আমি নিজেই ওকে প্রেম নিবেদন করি।
আর প্রেমের ফাঁদে ফেলি।
ইচ্ছে ছিলো ওকে আমি বিয়ের দিন নিজ হাতে খুন করবো।
কিন্তু হঠাৎ করেই হলুদের দিনই বুঝতে পারলাম ও অধরার মৃ*ত্যুর পেছনে নেই।
ওর কোন হাত নেই অধরার মৃ*ত্যুতে।
ও সত্যি সত্যি অধরাকে ভালবাসে।
তাই ওর উপর প্রতিশোধ নেয়ার চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।
আর ভেবেই নেই,অধরার জন্য হলেও আবিরকে বিয়ে করে নিবো।
আর তাছাড়া আবিরকে দেখেও বুঝতে পারছিলাম আবির আমাকে ভালবাসতে শুরু করেছে।
তাই বিয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাই মন থেকেই।
আমি তো আবিরকে এখন আর মারতে চাইনা।
তাহলে আবিরকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো কে?
তাহলে কি অধরার মৃ*ত্যু আর আবিরের এই এক্সিডেন্টের সাথে ওই একজনই জড়িত?
চলবে?
#