প্রতিশোধ পর্ব -০৫ ও শেষ

#প্রতিশোধ
#মেঘাদ্রিতা_মেঘা
#৫ম_ও_শেষ_পর্ব
আমি তো আবিরকে এখন আর মারতে চাইনা।
তাহলে আবিরকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো কে?
তাহলে কি অধরার মৃ*ত্যু আর আবিরের এই এক্সিডেন্টের সাথে ওই একজনই জড়িত?

আবির এখনো আগের মতই আছে।
কোন উন্নতি নেই ওর।

আমি হসপিটালে গিয়ে ওর কাছে বসে থাকি।
কথা বলি,ওর সাথে।
কিন্তু ও কোন রেস্পন্স করেনা।
সারাদিন ওর পাশে বসে থেকে রাতে বাসায় ফিরি।

অল্প কিছু খেয়ে শুতে চলে যাই।
কিন্তু আমার তো ঘুম নেই চোখে।কিছু দিনই তো হয় অধরাকে হারিয়েছি।
আর তারই মধ্যে আবার আবিরের এই অবস্থা।
আর নিতে পারছিনা এসব।

ভোর হয়ে গেছে।
এক ফোটা ঘুম আমার দু চোখে আসেনি।

গেইট টা খুলে হাঁটতে চলে গেলাম।
অধরা আর আমি কত হেঁটেছি সকাল বেলা।

এখন সব কিছু শুধু স্মৃতি।

হাঁটাহাটি শেষ করে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে আবিরের কাছে চলে যাই আমি।

আবিরের সামনে বসে আছি,ওর সাথে একাই গল্প করছি।
দুপুর থেকে বিকেল হলো, বিকেল থেকে সন্ধ্যা।তখনই হঠাৎ করে আমার ফোন বেজে উঠে,

_মেঘা কই তুই?
_আম্মু আমি আবিরের এখানে।
_তাড়াতাড়ি বাসায় আয়,
_কি হয়েছে আম্মু?
_অধরার বাবা মারা গেছে।
_কি বলছো আম্মু?
কিভাবে মারা গেলো?
_ভোরে হাঁটতে গিয়েছিলো।
এরপর আর বাসায় ফিরেনি।
তারপর কে যেন নদীতে লাশ পেয়েছে।
সবাই ধারণা করছে,হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে ব্রিজে বসেছিলো হয়তো।
আর সেখান থেকেই হয়তো পড়ে গিয়ে এমন টা হয়েছে।

আম্মুর কথা গুলো শুনে লাইন টা কেটে দেই।

আর আবিরের কাছে গিয়ে ধীরেধীরে বলি,অধরার বাবা মারা গেছেন বুঝছো?তিনিই তোমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন না ছাদ থেকে?

ইশ!বেচারা।
মারতে চাইলেন তোমাকে।
আর শেষমেস কিনা তিনিই চলে গেলেন।

আবির!
তুমি জানো,অধরা না আত্ম*হত্যা করেনি।
ওকে না মেরে ফেলা হয়েছে।
আর ওকে কে মেরেছে জানো?ওর এই বাবা নামক জানো*য়ার টা।
শুধু তাইনা,ওকে মেরে সুই*সাইড এর নাম দিয়েছেন তিনি।
আর তাইতো ওর মৃ*ত্যুর পর কোন পুলিশি ঝামেলেও করতে চান নি সে।
আর না ময়না*তদন্ত।

আর তিনি ওকে মেরে নিজেই ছোট্ট একটা কাগজে লিখেছেন,
আমার মৃ*ত্যুর জন্য মেঘা দায়ী।

উনি আমার নাম কেন লিখেছেন জানো?
কারণ ওর বাবা মায়ের পরে ও আমাকে বেশি ভালবাসতো।
আর আমিও ঠিক তাই।
আর সেই ভালবাসা থেকেই আমি যদি ওর মৃত্যুর পেছনে কার হাত আছে এই রহস্য উদঘাটন করতে যাই।
তাই সে আমার নাম লিখেন ছোট্ট একটা কাগজে।যাতে এটা দেখে আমি ডিপ্রেশনে পড়ে যাই।

আর সেই কাগজ টা পাও তুমি।
আমি শুধু সেদিন কাঁদতে কাঁদতে ঝাপসা চোখে তোমার হাতে থাকা কাগজটার লিখাটাই পড়েছিলাম শুধু।
হাতের লিখা আর খেয়াল করিনি।
তখন কি আর এসব খেয়াল ছিলো।

প্রথম দিকে তো অনেক ডিপ্রেশনে ছিলাম।ও আমার নাম কেন লিখবে এই ভেবে।পরে মনস্থির করলাম আর মস্তিষ্ক বার বার একই কথা জানান দিচ্ছিলো,ও আত্ম*হত্যা করেনি।
ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।
আর যে মেরেছে সে আমার নামে নোট লিখেছে।
যাতে আমি ডিপ্রেশনে পড়ে যাই।
আর ওর মৃত্যুর রহস্য না খুঁজি।

তারপর তো ভেবে নিয়েছিলাম তুমিই ওকে খু*ন করেছো,নয়তো ওকে আত্ম*হত্যা করতে বাধ্য করেছো।
আর নোট টা তুমিই লিখেছো।
যেহেতু তুমি নিজে আমাকে কাগজটা দেখিয়ে লুকিয়ে ফেলেছো।

তাই আমি তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেই।
আর প্ল্যান করি বিয়ের দিনই তোমায় খু*ন করে আমার বান্ধবী হ*ত্যার প্রতিশোধ নেবো।

তাই তোমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করি।
প্রেমের সম্পর্কে জড়াই।

আর পৌঁছে যাই গায়ে হলুদ পর্যন্ত।
কিন্তু আমাদের গায়ে হলুদের দিনই আমি বুঝতে পারি,তুমি অধরাকে খু*ন করোনি।
কিভাবে বুঝতে পারি জানো?

যখন আমি অধরার একটা চিঠি পাই আমার ব্যাগে।

অধরা যেদিন মারা যায়,সেদিন আমরা এক সাথে ক্লাস ও করি।
আর সেদিন ও বাসায় ঢোকার সময় আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাও করে।
কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি সেদিন,কেন ও কান্না করছে।

আর সম্ভবত যখন ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিলো তখনই আমার ব্যাগে চিঠিটা রাখে।

ও মারা যাবার পর আমি আর আমার ওই ব্যাগটা ব্যবহার করিনি।
ব্যাগ টা আমায় অধরা কিনে দিয়েছিলো।
আর ওই ব্যাগ সামনে থাকলেই আমাকে ওর স্মৃতি কাঁদাবে,তাই ব্যাগ টা রেখে দিয়েছিলাম যত্ন করে।

আমাদের হলুদের দিন আমি যখন চোখে কাজল দিতে যাবো,তখন আমার মনে পড়ে আমি আর অধরা দুজন দুটো কাজল কিনেছিলাম অধরা মারা যাবার আগের দিন।
এক বান্ধবীর বিয়ে বলে শপিং ও করেছিলাম আমরা।

তাই আমি কাজল টা বের করার জন্য ব্যাগটা খুলি।
আর তখনই দেখতে পাই অধরার একখানা চিঠি।

সেখানে লিখা ছিলো,

মেঘা!
আমি না খুব ডিপ্রেশনে আছিরে।
তোকে সরাসরি কিভাবে কথা গুলো বলবো তা বুঝতে পারছিলাম না।লজ্জা হচ্ছিলো খুব।নিজের বাবার সম্পর্কে কিভাবে তোকে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিনা।
তাই লিখেই জানাচ্ছি,

মেঘা জানিস গতকাল আমি না আমার বাবাকে একটা মহিলার সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলি।আম্মু বাসায় ছিলোনা।
আমিও বাইরে ছিলাম।
এই সুযোগে তিনি ওই মহিলাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসেন।আমি বাসায় গিয়ে এই অবস্থা দেখায় তারা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
আর মহিলা চলে যাবার পর বাবা আমার রুমে আসেন।
আমি তখন খুব কান্না করি।আর তাকে জিজ্ঞেস করি,কেন এসব?
তাও আমার মা জীবিত থাকা অবস্থায়।

তিনি আমাকে বলেন সে নাকি ওই মহিলাকে বিয়ে করবে।
আর আমাকে বলেন,আমি যেন এই বিষয়ে আম্মুকে কিছু না জানাই।
তাহলে পরিণতি ভালো হবেনা।
জানিস মেঘা,আমি না কাল আমার বাবার ভিন্ন এক রুপ দেখেছি।

আমি খুব ডিপ্রেশনে পড়ে যাই বিষয় টা নিয়ে।

কিন্তু রাতেই বাবা আবার হঠাৎ আমার রুমে এসে হাজির হোন কাগজ পত্র নিয়ে।
আর তিনি আমাকে সই করতে বলেন সেখানে,আমি না পড়ে সই করতে চাইনি বলে আর জিজ্ঞেস করায় যে এটা কিসের কাগজ?
সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন।
তখন আমি তাকে বলি,তুমি না আমার বাবা।
এসব কি বলছো তুমি আমাকে?
কিভাবে পারছো এসব বলতে?আর এসব কাজ করতে।
আমার তো তোমাকে আজ বাবা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে।

তখন সে আমাকে বলে,বলিস না বাবা।তাছাড়া আমি তো তোর জন্মদাতাও না।
তুই আমার সন্তান না।
তোর মাকে তুই সহ আমি বিয়ে করেছি তোর বাবা মারা যাবার পর।শুধু মাত্র তোর বাবার সম্পত্তির লোভে।

বিশ্বাস কর মেঘা, আমার মাথায় না তখন আকাশ ভেঙে পড়ে।
আমি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম,এসব কি বলছো তুমি বাবা?
সে বললেন তোর মাকে যদি কিছু বলিস তাহলে তোকে আমি খু*ন করে ফেলবো।
আর তোর মাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
আমি লজ্জায় তোকে মুখে বলতে পারিনি কথা গুলো।যাকে এত দিন বাবা বলে এসেছি।তার সম্পর্কে বলতেও কেমন লাগছিলো।কয়েক বার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনিরে।তাই কলেজের কমন রুমে বসে চিঠিটা লিখলাম।
আর না পারছি আবিরকে কিছু বলতে।
আমি নিজের ভেতর নিজেই শেষ হয়ে যাচ্ছি।

আজ ভেবেছি আম্মুকে বলে দিবো সব।আম্মু বিকেলে বা সন্ধ্যায় নাকি চলে আসবে।
জানিস আজও সকালে এই ভদ্রলোক অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছেন আমায়,আমি কাগজ টায় সাইন করতে চাইনি বলে।
তিনি আমাকে নিজের মেয়ে না ভাবলেও আমিতো নিজের বাবাই জানি তাকে।
এসব না আমি আর নিতে পারছিনা।
আচ্ছা আম্মুকে বলা কি ঠিক হবে বলিস তো আমায়।
ভয় হয়,পরে যদি আম্মু আবার সহ্য করতে না পারে।
এমনিতেই সে স্ট্রোকের রোগী।
আর আম্মুকে বলে দিলে সে যদি সত্যি সত্যি খু*ন করে ফেলে আমায়।আর আম্মুরই বা যদি কিছু হয়ে যায় এসব সইতে না পেরে।
তাই বুঝতে পারছিনারে।
আমাকে একটু বলবি আমি কি করবো?
প্লিজ বলে দিস আমায় ফোনে।
আমি না খুব ডিপ্রেশনে আছিরে,খুব বেশি ডিপ্রেশনে আছি।
~অধরা।

আমি চিঠিটা পড়ে কাঁদতে থাকি।
তারপর বুঝি যে তোমাকে এত দিন আমি ভুল বুঝে এসেছি আবির।
আসলে ওর মৃত্যুর পেছনে যদি কারো হাত থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে ওর এই পাষন্ড বাবার।তোমার না।

তখন আমার কিছু করার মত অবস্থা ছিলোনা।
কারণ আমাদের হলুদের প্রোগ্রাম ছিলো।
আর এরপরই তোমার সাথে এই দূর্ঘটনা ঘটে।

তবে তোমাকে কেন সে মারতে চাইবে এটা আমার মাথায় আসছিলোনা।
পরে মনে হলো আবার আমাকে নিশ্চুপ করতেই কি এই প্ল্যান ছিলো।

যাইহোক,
আমি জানি সে প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হয়।
কারণ অধরাকে নিয়ে সে প্রায়ই হাঁটতে বের হতো।
আর আমিও সেখানে যেতাম।

আজও তাই সকাল হতেই চলে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি অধরার বাবা হাঁটতেছেন।
আমাকে দেখে অদ্ভুত একটা হাসি দিলেন।

আমি কাছে এগিয়ে যেতেই,

_এই পরিস্থিতিতেও মানুষ হাঁটতে বের হয়?তোমার মনে জোর আছে বলতে হয়।

_জোর টা ঠিক আপনার মতই তাইনা আংকেল?

_ঠিক বুঝলাম না।

_চলুন হাঁটি আংকেল।

আমি হাঁটতে হাঁটতে তাকে একটা ব্রিজে নিয়ে গেলাম।
যেই ব্রিজের নিচে অথৈ পানি।
এখানে অধরাকে নিয়ে আমি কতই না আসতাম।
তিনিও আসতেন আমাদের সাথে।
এসেই বসে পড়তেন ব্রিজের উপর।

আজও এসে বসে পড়েছেন।

আমি কথা না ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে,
আমার মাথা কাত করে তাকে সোজাসুজি জিজ্ঞেস করলাম,

_অধরাকে আপনিই মেরেছেন তাইনা?
আর আবিরকেও ছাদ থেকে আপনিই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন তাইনা?

তিনি কিছুটা শক হওয়ার মত তাকালেন আমার দিকে।
তারপর বিশ্রী একটা হাসি দিয়ে বললেন,

_বাহ এই না হলে অধরার বান্ধবী।
কি বুদ্ধিমতি তুমি মেঘা।
এত কিছু প্ল্যান করেও তোমার থেকে বাঁচা গেলোনা।উফ।

_কেন করলেন এমন টা?
অধরা না আপনার মেয়ে?
_আমি ওকে জন্ম দিয়েছি নাকি?
কে বলেছে ও আমার মেয়ে?
ওর বাবা তো মরে গেছে সেই কবেই,
ওর মাকে ও সহ আমি বিয়ে করেছি পরে।

_কেন করেছিলেন ওর মাকে ও সহ বিয়ে?যদি পিতৃহীন মেয়েটাকে পিতার আদরই না দিতে পারেন।

_কি আর বলবো বলো,তোমার কাছে কোন কিছু লুকিয়েও তো আর লাভ নেই।
তাই বলছি শোনো,

অধরার বাবার অনেক সম্পত্তি ছিলো।
তার যখন ক্যান্সার ধরা পড়ে তখন সে তার মেয়ের নামে সব সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান।
এমন কি আমরা যেই বাড়ীটাতে থাকি,ওটা অধরার বাবার ই বাসা।

এত সম্পত্তি পেলে,কেউ কি এমন সুযোগ হাতছাড়া করবে বলো?
তাই বিয়ে করি।

ভেবেছিলাম কৌশলে সব সম্পত্তি নিজের করে নিবো।
কিন্তু বেচারির কাছে আমার আসল রুপ ধরা পড়ে যায়।
তাই দ্রুত কাজ সমাধান করতে কাগজ পত্র নিয়ে হাজির হই।
কিন্তু নাছর বান্দা সই করবেনা।

প্রথম দিন ছেড়ে দিয়েছি।
পরে ভাবলাম এই মেয়ে তো ওর মাকে ঠিকই জানিয়ে দিবে সব।
তখন আমার আম ও যাবে আর ছালাও যাবে।
তাই পরের দিন আবার হাজির হই,আর বলি সাইন করতে।
ও জিজ্ঞেস করে কিসের জন্য সাইন করবো।
আমি বলি,তোর নামে যা কিছু আছে সব তুই আমাকে দিয়ে দিচ্ছিস।এটা লিখা আছে এখানে।

ও তখন চিল্লাতে লাগলো,আর বলতে লাগলো, ওর মাকে ও সব বলে দিবে।
আর সম্পত্তি,তা নাকি ও বেঁচে থাকতে জীবনেও আমার হবেনা।
তাই মেরে দিলাম।বালিশ টা মুখের উপর ধরলাম,কিছু ক্ষণ ছটফট করতে করতে একদম শান্ত হয়ে গেলো।
আর তারপর ঝুলিয়ে দিলাম ফ্যানের সাথে।
কি আর করবো বলো,এত দিন ধরে লালিত স্বপ্ন এইভাবে তো আর শেষ হয়ে যেতে দিতে পারিনা।

ওর মাকে দ্রুত ফোন করলাম,ওর মা ছিলো ওর খালার বাসায়।
ওর মা এসে মৃত মেয়েকে দেখতে পেলো।
বাকিটা তো সবই জানা তোমার।

_ছিঃ মানুষ এতটা জঘন্য হয় কি করে?
কেমন অমানুষ আপনি?
যেই মেয়ে আপনাকে নিজের বাবার জায়গা দিলো,তাকেই খুন করলেন?
তাও আবার সামান্য সম্পত্তির লোভে।
ছিঃ

আচ্ছা অধরাকে না হয় সম্পত্তির লোভে পড়ে মেরেছেন।
কিন্তু আবিরকে কেন মারতে চাইলেন?

_এই টুকুও বুঝোনা?
প্রথম বার তো একটা সুই*সাইড নোট লিখেছিলাম।
তোমাকে দায়ী করে।
যাতে তা দেখে তুমি ডিপ্রেশনে পড়ে যাও।
আর ঘাটাঘাটি না করো।

কাজে দিয়েছিলো নোট টা।
চুপও ছিলে তুমি।
আমি দেখেছিলাম নোট টা আবিরের হাতে পড়েছে।আর ও যে তোমাকে দেখিয়েছেও।

কিন্তু পরে যখন দেখলাম আবিরকেই তুমি আবার বিয়ে করতে যাচ্ছো।
কেন যেন মনে হলো,কোন ঘাপলাতো নিশ্চয়ই আছে এখানে।
যা আমি ঠিক ধরতে পারছিলাম না।কিন্তু ঘাপলা যা ই থাকুক আমার চিন্তা হলো এটা নিয়ে, তুমি আর আবির দুজন মিলে না আবার অধরার মৃ*ত্যুর কারণ খুঁজতে লেগে যাও।
একা কিছু না পারলেও দুজন মিলে যদি খুঁজো।

তাই আবিরকেও দুনিয়া থেকে বিদায় করতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু বেচারা মরার মত বেঁচে রইলো।

আমি তাকে হাসতে হাসতে বললাম,
এখন তাহলে আমিই আপনার একমাত্র পথের কাঁটা তাইনা?

আমাকেও কি এখন মেরে ফেলবেন?

আমি না আপনাকে আর সেই সুযোগ টা দিচ্ছিনা।

আর আমি না আমার বান্ধবী হ*ত্যার প্রতিশোধ নিলাম।ভালো থাকবেন উপাড়ে।

এই বলে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে ব্রিজ থেকে ফেলে দেই।আর সে পানিতে পানিতে পড়ে যায়।

আর সবাই জানলো,সে ক্লান্ত হয়ে ব্রিজ থেকে একাই পড়ে মা*রা গেছেন।

অধরা এবার ঠিকই খুশি হবে তাইনা আবির?

আমি কাঁদতে কাঁদতে আবিরকে কথা টা বলার পর আবির বলে উঠে,

_কান্না করোনা মেঘা।
তুমি কাঁদলে অধরা কষ্ট পাবে।
আমি আবিরের হাত ধরে বললাম,
ঠিক হয়ে গেছো তুমি?
থ্যাংক ইউ আল্লাহ!
কাঁদবোনা আমি।
আর একটুও কাঁদবোনা আবির।
আমি কেন কাঁদবো?
আজ তো আমার খুশির দিন,আমি যে আমার অধরার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে পেরেছি।

(সমাপ্ত)

যারা দীর্ঘ সময় ধরে আমার কাঁচা হাতের লিখাটা পড়েছেন।
অপেক্ষা করেছেন লিখাটার জন্য তাদের জানাই কৃতজ্ঞতা।জানিনা গল্পটি আপনাদের কেমন লেগেছে।অবশ্যই তা জানাবেন।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকুন সবাই।
আসসালামু আলাইকুম!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here