#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :৯
সায়রা লোকটির শক্তির সাথে পারছেনা সে নিজের সর্বস্র শক্তি দিয়ে ছাড়া পাবার চেষ্টা করছে কিন্তু লোকটি জানোয়ারের মত তার উপর ঝাপিয়ে পড়েছে ।
সায়রা কোন ভাবে হাত দিয়ে ফুলদানীটা হাতে নিয়ে নেয় তার পর নিজের সব শক্তি নিয়ে লোকটির মাথায় বারি মারে ।লোকটি ব্যথায় হাতের বাধনঁ হালকা করতেই সায়রা সুযোগ বুঝে সেখান থেকে উঠে তারাতারি দরজার কাছে চলে যায় দরজা খুলে রুম থেকে বের হয়ে দৌড় দিয়ে কান্না করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামতে নেয় এমন সময়ই কারো সাথে ঢাক্কা লাগে সায়রার মাথা তুলে দেখে আরসাল দাড়িয়ে আছে ।
আরসাল সায়রাকে খুজঁতেই বাড়িতে এসেছিলো ।
আরসাল সায়রাকে দেখে স্থব্দ হয়ে যায় সায়রার কপাল কাটা রক্ত ঝোড়ছে ভয়ে কাপঁছে শরীরে উড়না নেই জামার পিছন দিক দিয়ে ছেড়া ।আরসালের আর বুঝতে বাকি রইলোনা কি হয়েছে ।
সায়রা আরসালকে দেখে তার বুকে মাথা রেখে তার শার্ট শক্ত করে জরিয়ে ধরে জোরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগে ।আরসালের শরীরের রক্ত দ্রুত চলছে ।মাথা কাজ করা অফ করে দিয়েছে তার রাগ ভয়ংকর পর্যায় !
সায়রাকে কলে তুলে নিজের রুমে নিয়ে আসে । সায়রা আরসালের বুকে মাথা ঠেকিয়ে আগের মতই কান্না করে যাচ্ছে নিজের পুরো শরীরের ভর আরসালের বুকের উপর ছেড়ে দিয়েছে আরসাল সায়রার গায়ের উপর চাদর জরিয়ে দিয়ে সায়রার মাথায় হাত রেখে শীতল কন্ঠে বলে
-“সায়রা এসব কে করেছে ?”
সায়রা ভয়ে কান্না করতে করতে বলতে লাগে
-“সা…সায়ন ভাইয়ার মামাতো ভাই ইমরুজ !”
আরসাল শুনেই রাগে গর্জন করে উঠে ।সাথে সাথে রিদ্ধি কে ফোন করে রিদ্ধিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কেগে বলতে লাগে
-“এখক্ষুনীই আমার রুমে আসো
এখন মানে এখনই !”
আরসালের ফোন পেয়ে রিদ্ধি দ্রুত পায়ে ২ মিনিটের ভিতরে চলে আসে ।এসে সায়রাকে দেখে রিদ্ধি তারাতারি করে সায়রার কাছে যেয়ে জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে
-“সায়রু এসব কি করে হলো ?
কে করেছে এসব !”
সায়রা রিদ্ধিকে ধরে ডুকরিয়ে ডুকরিয়ে কান্না করতে লাগে ।রিদ্ধি আর সায়রাকে কিছু জিগাসা করেনা সায়রাকে স্বাভাবীক করার চেষ্টা করছে এখনো সায়রার শরীর ভয়ে কাপঁছে ।
আরসাল কাবার্ডের ভিতর থেকে পিস্তলটা নিয়ে রিদ্ধিকে উদ্দেশ্য করে শান্ত গলায় বলল
-“সায়রার খেয়াল রেখ !”
রিদ্ধি বেশ বুঝতে পারছে এই শান্তি বড় কোন ঝড়ের পূর্বাভাস !
আরসাল বের হতেই রিদ্ধি সাথে সাথে সায়ন কে ফোন দিয়ে বাড়ির সবাইকে নিয়ে আরসালের রুমে আসতে বলে !
ইমরুজ নিজের রুমে তার বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে আর ড্রাক্স নিচ্ছে পুরো নেশায় ডুবে আছে ।আরসাল রুমের সামনে আসতেই দেখে রুমের দরজা বন্ধ জোরে লাথি দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ফেলে আরসালকে এভাবে প্রবেশ করতে দেখে ইমরুজ আর তার বন্ধুগণ ভয় পেয়ে যায় ।ইমরুজের কলিজায় ভয়ে কাপড়ঁ দিয়ে আছে তার ভয় করছে আরসাল সত্যি জেনে গেল নাকি ?
সে ভয়ে ভয়ে জিগাসা করে
-“আ…আরসাল ভাইয়া ক…কি হয়েছে এমন রেগে আ…আছেন কেন ?”
আরসাল কথার কোন উত্তর না দিয়ে ইমরুজকে নিচে ফেলে তার পেটের মধ্যে ইচ্ছে মত লাথি দিতে লাগে আর ভয়ংকর রেগে বলতে লাগে
-“কু** ,শু** জানোয়ার তোর সাহস কি করে হয় আমার সায়রা কে স্পর্শ করার ।
তোকে তো আমি আজ খুন করে ফেলবো তোর কলিজা টেনে ছিড়ে বের করবো !
তুই কোন সাহসে সায়রার দিকে হাত বারিয়েছিস !”
বলেই আরসাল ইমরুজের পেটে উরাধুরা পেটে লাথি মারতে লাগে ।ইমরুজ পেটে ধরে কান্না করতে করতে বলে
-“আমি কিছু করিনি !
সায়রা মিথ্যা বলছে ।”
পকেট থেকে পিস্তল বের করে ইমরুজের হাতে গুলি মেরে নিচু হয়ে তার গলা চেপে ধরে চিৎকার করে বলে
-“আমার সায়রা কখনো মিথ্যা বলেনা !”
বলেই পিস্তলটা ইমরুজের বুকে বাঁ পাশে ধরে ইমরুজ হাত পা ছুড়াছুড়ি করছে ছাড়া পাবার জন্য কিন্তু আরসালের সাথে পেড়ে উঠছে না যেই গুলি করতে নিবে হঠাৎ কেউ এসে আরসালের হাট আটকিয়ে ধরে ।আরসাল ঝাড়ি দিয়ে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে সায়ন ।
সায়র আরসালকে পিছন থেকে টেনে ধরে বলছে
-“ভাই তুমি কি করছো ও মরে যাবে !”
আরসাল ঝারি দিয়ে সায়নকে ফেলে বলে
-“আমি চাই ওকে মারতে ওই বাস্টার্ডের সাহস হয় কি করে আমার সায়রাকে ধরার ।
ওকে তো আমি !”
বলেই আবার তেড়ে ছেলেটির দিকে যেতে নেয় ততক্ষনে নিলুফা বেগম এসে ছেলেকে ধরে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় ।আরসাল তাকে উপেক্ষা করেই ইমরুজকে টেনে এনে আবার মারতে লাগে বেডের স্টান্ড দিয়ে পিটাতে লাগে বাড়ির সবাই এসে আরসালকে থামায় ।
ইমরুজকে নিলুফা বেগম হসপিটালে নিয়ে যায় ।আরসালের যেন কিছুতেই নিজের রাগ কমাতে পারছেনা তার ইচ্ছে করছে ইমরুজকে কুটিকুটি করে কেটে ভাগা দিতে ।
রিদ্ধি আয়নার সামনে বসে নিজের চুল খুলছে কিছু সময় আগেই মুনতাহা বেগম রিদ্ধিকে রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে ।উনার ভাষ্য মতে এই সময় রাত জাগা ঠি ক না ।রিদ্ধি সায়রার কাছে থাকার জন্য জোর করলেও তিনি থাকতে দেয়না ।রিদ্ধির ভিতর থেকে চিৎকার করে কান্না আসতে সায়রাকে এমন স্থব্দ হয়ে যেতে দেখে ।তার বার বার মনে হচ্ছে তার জন্যই সায়রার সাথে এসব কিছু হয়েছে যদি সে সায়রাকে না নিয়ে আসতো তাহলে তার সাথে এমন কিছুই হতো না !
সায়রার এই মনমরা স্থব্দ হয়ে যাওয়া তার সয্য হচ্ছে হচ্ছে ভিতর থেকে চিৎকার করে কান্না আসছে ।
সায়ন রুমে প্রবেশ করে দেখে রিদ্ধি গভীর চিন্তায় মগ্ন রিদ্ধির চোখ গুলো জলে টলটল করছে যেন এখনই চোখের পানি গড়িয়ে পড়বে ।
সায়ন রিদ্ধির কাধেঁ হাত রাখতেই রিদ্ধি সায়নের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দেয় হঠাৎ রিদ্ধির এমন ব্যবহারে সায়ন বেশ অবাক হয় সায়ন রিদ্ধির দিকে বিষ্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।রিদ্ধি রেগে চিৎকার করে বলে
-“ছুঁবেন না আমাকে !”
সায়ন রিদ্ধির কাছে এসে তার হাত স্পর্শ করতে করতে বলে
-“রিদ্ধি কি হয়েছে তোমার কেন এমন করছো !”
রিদ্ধি এবার কান্না করতে করতে বলে
-“কি ভাবেন আপনারা যে আপনাদের টাকা আছে বলে আপনারা সব কিছু করতে পারবেন !
আপনার এক ভাই জোর করে আমার বোনটাকে বিয়ে করেছে তার ইচ্ছে না থাকা শর্তেও সবসময় তার উপর জোরজবদস্তি করে।
আপনার মামাতো ভাই আজ আমার বোনের ইজ্জত হরণ করতে নিচ্ছিলো ।
আর আপনি ?
আপনিতো বিয়ের পর নিজের স্ত্রীকে অশীকার করেছেন আপনার কাছে বিয়েটার কোন মূল্যই ছিলোনা তাই কারন আমি কারো প্রেমে ডুবে ছিলেন আপনার কাছে আমার ভালোবাসার কোন মূল্য ছিলোনা শুধুই আদির জন্য আপনার সন্তানের জন্য আমাকে মেনে নিয়েছেন !
আচ্ছা আমাদের অনুভূতি ভালোবাসার কি কখনো আপনাদের কাছে কোন মূল্য নেই ?
আমরা সাধারন পরিবারের মেয়ে বলে কি আমাদের কোন সম্মান ,অনুভূতি ,ভালোবাসার অধিকার কিছু নেই !
বিয়ের পর সব সময় সবার সামনে বুকে কষ্ট চেপে হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করেছি কখনো কাউকে বুঝতে দেইনি আমাদের সম্পর্কের সত্যতা ।”
সায়নের রিদ্ধির এসব কথায় বেশ রাগ হচ্ছে ইচ্ছে করছে রিদ্ধিকে কানের নিচে দুটো দিতে ।রিদ্ধির কি তার ভালোবাসা নিয়ে এখনো কোন সন্দেহ আছে রিদ্ধি কি বোঝেনা সায়ন তাকে কতটা ভালোবাসে ?
নিজের রাগটাকে দমিয়ে সায়ন বলতে লাগে
-“তোমার এখন ও আমার ভালোবাসা নিয়ে সন্দেহ আছে ?”
-“সন্দেহ থাকাটা কি অস্বাভাবীক ?”
সায়ন রিদ্ধির হাত শক্ত করে ধরে টেনে নিজের কাছে এনে রিদ্ধির চোখে চোখ রেখে বলে
-“যদি আমার ভালোবাসা নিয়ে তোমার সন্দেহ থাকে তাহলে তোমার জীবনে আমি না থেকে তার জীবনে ফিরে যাওয়াই ভালো !”
বলেই রিদ্ধিকে ছেড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় ।রিদ্ধি সায়নের কথায় থ মেরে আগের মতই দাড়িয়ে থাকে !
আরসাল বারান্ধায় দাড়িয়ে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াচ্ছে কোন ভাবেই নিজের রাগটা কমাতে পারছেনা রাতের প্রায় ৩ টা বেজে গেছে বারান্ধার সিগারেটের ফিল্টার ভিছিয়ে আছে ।
আরসালের শরীরের রক্ত এখনো রাগে কিটকিট করছে ।চোখ বন্ধ করে আছে বার বার শুধু সায়রার সেই দৃশ্য ভেসে উঠছে যা তার রাগ কমার বদলে দ্বিগুন বাড়ছে হাত মুঠি করে দেয়ালের উপর বেশ কয়েকবার আঘাত করে রাগ কমানোর চেষ্টা করে ।
হঠাৎ ই সায়রার কথা মনে পড়তেই সে তারাতারি করে রুমের ভিতর প্রবেশ করে রুমে ডুকতেই আরসাল ভয় পেয়ে যায় মুহূর্তেই শরীরের রক্ত শূন্য হয়ে যায় !
চলবে…………❤️
Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন 😊😊😊
নেক্সট পার্ট শনিবার দিবো ❤️